এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

গল্প বন্ধন জয়ন্ত কুমার জয় ফেইসবুক থেকে নেওয়া

 " মা আমার পি"রিয়ড চলছে "

কথাটা শ্বাশুড়ি মাকে বলে লজ্জায় কুঁকড়ে গেলাম।ভ্রু কুঁচকে মা বললো 

" তাতে কি হইছে?তাই বলে এই ঠান্ডায় সকালে স্নান করতে হবে? "

" স্নান না করে তো রান্নাঘরে যেতে পারবো না।আপনার ছেলে অফিসে যাবে আটটায় "

মা বললো " পরোটা,আলু ভাজা করে দিচ্ছি সেটা খেয়ে যাবে "

পরোক্ষনেই বললো " মা এক কাজ করো,আলু এখানে এনে দিচ্ছি কে'টে দাও,আমি ময়দা মেখে পরোটা বানাচ্ছি "

" তুমি তো কো"মড়ের ব্যথা নিয়ে দাঁড়াতেই পারো না।এসব করবে কিভাবে? "

" ধূর বোকা মেয়ে,দু একদিন করলে কিছু হয়না।মেয়ে অসুস্থ হলে মা সাহায্য করবে না তো কে করবে? "

শ্রদ্ধায়,ভালোবাসায় আমার চোখে জল চলে এলো।রান্নাঘরের দরজায় বসে আলু কে'টে দিচ্ছি এমন সময় স্বামী ঘুমঘুম চোখে টলমলিয়ে ঘর থেকে বেড় হলো।অবাক হয়ে বললাম 

" তুমি আজ হঠাৎ এতো সকালে উঠছো! "

স্বামী ঘুম জড়িত স্বরে বললো " তোমার তো পি"রিয়ড চলছে,তাই ভাবলাম রান্নাটা আমিই করে নিই,তোমায় একটু রেস্ট দিই।তো উঠে দেখি মহারানী আমার আগেই উঠে গেছে " 

স্বামীর মুখে এমন কথা শুনে লজ্জায় ম"রে যেতে ইচ্ছে করলো।কেননা রান্নাঘর থেকে মা এসব শুনে মুচকি মুচকি হাসছিলো।স্বামীকে ইশারায় বোঝালাম রান্নাঘরে মা আছে।ইশারা বুঝে স্বামীর চোখমুখ কদমের মতো গোলগোল হয়ে গেলো।

রান্নাঘর থেকে শ্বাশুড়ি মা বললো " এভাবেই  ভালো,খারাপ সবরকম পরিস্থিতিতে একে অপরের পাশে থাকবি "

কথাটা শুনে স্বামী লজ্জায় রুমে চলে গেলো।মা ফিসফিস করে বললো 

" শোনো মা,এটা হলে শরীর অশুদ্ধি থাকে না।ধর্মে লেখা আছে,নারী মায়ের জাত।মায়ের জাত কখনো অশুদ্ধি থাকে না। "

গল্প-বন্ধন

জয়ন্ত_কুমার_জয়

ছিন্ন মুকুল – সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

 ছিন্ন মুকুল

– সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

সবচেয়ে যে ছোট্ট পিঁড়িখানি

সেইখানি আর কেউ রাখে না পেতে,

ছোট থালায় হয় নাকো ভাত বাড়া,

জল ভরে না ছোট্ট গেলাসেতে;

বাড়ির মধ্যে সবচেয়ে যে ছোট

খাবার বেলায় কেউ ডাকে না তাকে,

সবচেয়ে যে শেষে এসেছিল

তারি খাওয়া ঘুচেছে সব আগে।


সবচেয়ে যে অল্পে ছিল খুশি

খুশি ছিল ঘেঁষাঘেঁষির ঘরে,

সেই গেছে হায়, হাওয়ার সঙ্গে মিশে

দিয়ে গেছে জায়গা খালি করে।

ছেড়ে গেছে পুতুল, পুঁতির মালা,

ছেড়ে গেছে মায়ের কোলের দাবি;

ভয়-তরাসে ছিলো যে সবচেয়ে

সেই খুলেছে আঁধার ঘরের চাবি।


হারিয়ে গেছে- হারিয়ে গেছে, ওরে!

হারিয়ে গেছে বোল্-বলা সেই বাঁশি,

হারিয়ে গেছে কচি সে মুখখানি,

দুধে-ধোওয়া কচি দাঁতের হাসি।

আঁচল খুলে হঠাৎ স্রোতের জলে

ভেসে গেছে শিউলি ফুলের রাশি,

ঢুকেছে হায় শ্মশান ঘরের মাঝে

ঘর ছেড়ে তাই হৃদয় শ্মশান-বাসী।


সবচেয়ে যে ছোট কাপড়গুলি,

সেগুলি কেউ দেয় না মেলে ছাদে;

যে শয্যাটি সবার চেয়ে ছোট

আজকে সেটি শূন্যে পড়ে কাঁদে,

সব-চেয়ে যে শেষে এসেছিলো

সে গিয়েছে সবার আগে সরে,

ছোট্ট যে জন ছিলো রে সব চেয়ে

সে দিয়েছে সকল শূন্য করে।

,,,,,,,,,,,,

নটী আর নটীর পোলাদের বাংলা শাসনের ইতিবৃত্ত

 নটী আর নটীর পোলাদের বাংলা শাসনের ইতিবৃত্ত

এবং 

হিন্দি গান "মুন্নী বদনাম হুয়ি, ডার্লিং তেরে লিয়ে…" 


এড. সলীমুল্লাহ খান 

জজকোর্ট, কুমিল্লা।


মীরজফরই প্রথম ব্যক্তি যিনি মুন্নী বাঈ নামের বাঈজীকে নর্তকিকে অর্থাৎ একজন নটীকে বিয়ে করে বেগমের মর্যাদা প্রদান করেছিলেন। রাজা সম্রাট নবাবরা বহু দাসী মানে ঘরের পরিচারিকা কে বিয়ে করেছেন যা ইতিহাসে পাওয়া যায় কিন্তু রং মহলের নর্তকি বা কোন নটিকে বিয়ে করার ঘটনা তেমন একটা পাওয়া যায়না যেমন শাহজাদা সেলিমের নর্তকি আনারকলির সাথে প্রেম যেখানে ব্যর্থ, ইতিহাসের খল নায়ক হিসাবে বিখ‍্যাত মীরজাফরের প্রেম সেখানে সফল। তার এই প্রেম কাহিনী নিয়ে অমর প্রেমের গল্প, কবিতা, উপন্যাস রচিত হতে পারতো। 


প্রেমিক প্রবরদের কাছে সে হতে পারতো আদর্শ কিন্তু তা হয়নি, কারণ যেভাবে সফল হয়েছে সেভাবে সফল হওয়া লোকদের মানুষ মুখে কিছু না বললেও মনে মনে ঘৃণাই করে। পরে মীরজাফর রব্বু বাঈ নামে আরেকজন নটীকে বিবাহ করেছিলেন।


মীরজাফরের মৃত্যুর পর থেকে ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই দুই নটীর গর্ভজাত সন্তান এবং তাদের উত্তরাধিকাররা বাংলা বিহার উড়িষ্যার নবাব ছিল। 


কিন্তু তাদের নিয়ে ঐতিহাসিকদের কাছে না তেমন তথ্য পাওয়া যায়, না জনগণের মুখে কোন কথা শোনা যায়। 


কারণ, নটীর পোলাদের নিয়ে মাথা ঘামিয়ে ঐতিহাসিকগণ বা জনগণ সময় নষ্ট করতে চায়নি। ইতিহাস মহা নায়কদের পক্ষে হালালজাদা শাহজাদাদের পক্ষে হারামজাদাদের পক্ষে যায়না এটা ইতিহাসের একটা স্বভাবজাত গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। সিরাজের বিয়োগান্ত পতনের উপখ‍্যান মানুষের মুখে মুখে কিন্তু নবাবের আসনে শত শত বছর বসে থাকলেও নটীর পোলা নটীর পোলাই থাকে। এদেরকে জনগণ মনে রাখেনি।


২০১০ সালের জনপ্রিয় হিন্দি গান "মুন্নী বদনাম হুয়ি, ডার্লিং তেরে লিয়ে…", ১৯৯২ সালের পাকিস্তানি সিনেমার,"লাড়কা বদনাম হুয়া, হাসিনা তেরে লিয়ে…" গানের নকল। সঙ্গীত প্রিয় জনতা মুন্নীর বদনাম যতটুকু জানে লাড়কার বদনামের কথা ততটা জানে না। তেমনি জানেনা বা মনে রাখেনি শত শত বছর ধরে এই বিশাল এলাকার মসনদে আসীন ডামি শাসনকর্তাদের। 


*স্বাধীনতা যখন থাকেনা গনতন্ত্র যখন থাকেনা তখন "নটী আর নটীর পোলারা ক্ষমতার মসনদে থাকে এরপর যখন গনতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় গনতন্ত্রের সূর্য যখন আবার উদিত হয় তখন অণিবার্যভাবে নটী আর নটীর পোলাদের কবরের পাশ দিয়ে জনগণ থুথু দিয়ে তাদের কবর গুলোকে ঘৃণার সাগরে ভাসিয়ে দেয়। এটাই ইতিহাস আর ইতিহাসের অমোঘ শিক্ষা হলো আমরা কেউই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়ইনা।।


***বিঃদ্রঃ এটা আমার কোন মৌলিক লেখা নয়। ইতিহাসের বিশেষ একটি অংশ বিশেষ আমি সংগ্রহ করে একেবারে সংক্ষিপ্ত আকারে উপস্থাপনা করেছি। ইতিহাসের বর্নণা মাত্র। এটা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উদ্দেশ‍্য। কেউই পারসোনালি নিলে এটাও বোকামী হবে কেননা আপনি যদি গনতান্ত্রিক হন তাহলে এই ইতিহাস তো আপনার পক্ষে। ধন‍্যবাদ।


তথ্যসূত্র

সম্পাদনা

 Aftab, Tahera (১৯ অক্টোবর ২০১৮)। "Inscribing South Asian Muslim Women: An Annotated Bibliography & Research Guide"। BRILL – Google Books-এর মাধ্যমে।

 শাহরিয়ার জেড. আর ইকবাল (২০১২)। "মুন্নী বেগম"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।

 Khan, Abdul Majed (৩ ডিসেম্বর ২০০৭)। "The Transition in Bengal, 1756-75: A Study of Saiyid Muhammad Reza Khan"। Cambridge University Press – Google Books-এর মাধ্যমে।

 Banerjee, A. C. (১৯ অক্টোবর ১৯৮৩)। "English Law in India"। Abhinav Publications – Google Books-এর মাধ্যমে।

 McLane, John R. (২৫ জুলাই ২০০২)। "Land and Local Kingship in Eighteenth-Century Bengal"। Cambridge University Press – Google Books-এর মাধ্যমে।

 "The Tombs of Murshidabad"। ৮ মার্চ ২০০৮।

ফেইসবুক থেকে নেওয়া 

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সিনেমা বা টিভি ফ্রেমের অ্যাসপেক্ট রেশিও বা আকৃতির অনুপাত কেন গুরুত্বপূর্ণ


 সিনেমা বা টিভি ফ্রেমের অ্যাসপেক্ট রেশিও বা আকৃতির অনুপাত কেন গুরুত্বপূর্ণ


বর্তমানে আধুনিক বিশ্বের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ হল সিনেমা। কিন্তু একটা সিনেমা বানাতে কত প্রচেষ্টার দরকার হয় আর কত কিছুর দিকে খেয়াল রাখতে হয়, তা নিয়ে সাধারণ দর্শকদের খুব বেশি ধারণা নেই। 


সিনেমা বানানোর সময় রঙের ব্যবহার বা কালার গ্রেডিং কীভাবে করা হবে, প্রতিটি দৃশ্যের ফ্রেমিং কেমন হবে কিংবা ‘অ্যাসপেক্ট রেশিও’ কোনটা হবে, এ ধরনের অনেক বিষয় নির্মাতাদের মাথায় রাখতে হয়। মোটকথা, দর্শকদের সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা কেমন হবে তা নির্ধারণ করে দেয় এসব কিছু।


বিশেষ করে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক বিষয় হল অ্যাসপেক্ট রেশিও। নির্দিষ্ট একটি সিনেমা কীভাবে ফ্রেমে বন্দি করা হবে, সেটা নির্ভর করে এর অ্যাসপেক্ট রেশিও’র ওপর। এমনকি, সময়ের সাথে সাথে অ্যাসপেক্ট রেশিও পাল্টে যাওয়ার ফলে দৈনন্দিন জীবনে আমাদের ভিডিও ক্লিপ দেখার অভিজ্ঞতাও পাল্টে গেছে।


টিভি সেটও একটা সময় বর্গাকার বাক্সের আকারে তৈরি করা হত। অথচ সময়ের সাথে সাথে তা পাল্টে গেছে। এখন বেশিরভাগ টেলিভিশনই আয়তকার। এর সঙ্গেও অ্যাসপেক্ট রেশিও’র সম্পর্ক আছে।

.


# অ্যাসপেক্ট রেশিও বা আকৃতির অনুপাত আসলে কী?


প্রতিটা ভিডিও, কিংবা প্রতিটা সিনেমাই অনেকগুলি স্থিরচিত্র বা ছবি পরপর সাজিয়ে তৈরি করা হয়। এসব স্থিরচিত্রকে বলা হয় ফ্রেম। প্রতি সেকেন্ডে স্ক্রিনে যতগুলি ফ্রেম দেখা যায়, তাকে ‘ফ্রেম পার সেকেন্ড’ বা ‘এফপিএস’ (FPS) বলা হয়। একটি সিনেমায় ‘এফপিএস’কে অনেক সময় ‘ফ্রেম রেট’ও বলা হয়।


এখানে প্রতিটা ফ্রেম দৈর্ঘ্যে আর প্রস্থে কতখানি লম্বা আর চওড়া, সেটাই মূলত অ্যাসপেক্ট রেশিও বা আকৃতির অনুপাত। সহজে বললে, অ্যাসপেক্ট রেশিও হল পর্দার মাপ অনুসারে সিনেমার ফ্রেমের আয়তন বা অনুপাত। 


তাই যেকোনো স্ক্রিন বা পর্দায় একটি চলচ্চিত্রের সম্পূর্ণ ফ্রেমটা দেখতে হলে পর্দার আয়তনও তেমন থাকতে হবে। অর্থাৎ, যেই অ্যাসপেক্ট রেশিও’তে সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়েছে, সেটা পর্দায় দেখার জন্য পর্দার আয়তনের সঙ্গে অ্যাসপেক্ট রেশিও’র সামঞ্জস্য থাকতে হয়।


বিষয়টা আরো ভালভাবে বোঝার জন্য প্রথমে চিন্তা করুন একটি সিনেমা আপনি মুভি থিয়েটারে গিয়ে কীভাবে দেখবেন, সে ব্যাপারে। এরপরে ভাবুন, একই সিনেমা আপনার টেলিভিশন, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটের মত ডিভাইসে দেখতে কেমন মনে হবে? মোটকথা, সিনেমাটা আপনি যেখানেই দেখুন না কেন, সেটার ফ্রেমের আকার-আকৃতি ঠিক একই রকম থাকবে। এ কারণেই অ্যাসপেক্ট রেশিও এত গুরুত্বপূর্ণ।


অর্থাৎ, স্ক্রিন বা পর্দার আকার যেমনই হোক না কেন, অ্যাসপেক্ট রেশিও ঠিক থাকলে দর্শকরা সিনেমার প্রতিটা ফ্রেমই ঠিকঠাক দেখতে পান। এতে তাদের সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতায় প্রভাব পড়ে না। 


বর্তমানে নির্মিত প্রায় সবগুলি স্মার্টফোন বা টেলিভিশনের আকৃতির মধ্যে সামঞ্জস্য আছে। সবগুলিই আয়তকার। এর কারণ হল, মিডিয়ার দুনিয়ায় এখন সিংহভাগ ভিডিও ক্লিপ যেই অ্যাসপেক্ট রেশিও অনুসারে নির্মাণ করা হয়, তার অনুপাত হল ১৬:৯। ফ্রেমের আকৃতির এই অনুপাত বা অ্যাসপেক্ট রেশিও খুব সহজেই আয়তকার স্ক্রিন বা পর্দার পুরোটা জুড়ে দেখা যায়।


প্রশ্ন জাগতে পারে, ঠিক ১৬:৯ অ্যাসপেক্ট রেশিও কেন এখন এত বেশি দেখা যায়? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে অতীতে অন্যান্য যেসব অ্যাসপেক্ট রেশিও’র অনুপাত প্রচলিত ছিল, সেসব সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে।

.


# সময়ের সাথে সাথে অ্যাসপেক্ট রেশিও’তে আসা পরিবর্তন


১৮৯১ সালে নতুন এক ধরনের ভিডিও ক্যামেরা উদ্ভাবনের জন্য প্যাটেন্ট জমা দেন আমেরিকান উদ্ভাবক থমাস আলভা এডিসন। তার বক্তব্য অনুসারে, ‘কিনেটোগ্রাফ’ নামের সেই ক্যামেরা যন্ত্রটি “চোখের জন্য সেটাই করবে, ফোনোগ্রাফ যন্ত্র যেটা কানের জন্য করেছিল।”


তবে যন্ত্রটি তৈরি করার আগে এডিসন আর তার সহকর্মীদের ঠিক করতে হয়েছিল সেটা দিয়ে ধারণ করা চিত্র বা ফ্রেমের আকৃতি বা আকার কেমন হবে।


আমেরিকান ফটোগ্রাফি প্রতিষ্ঠান ‘কোডাক’ সে সময়ে বাজারে থাকা তাদের বক্স ক্যামেরায় ব্যবহারের জন্য ৭০ মিলিমিটার এর রোল ফিল্ম বিক্রি করত। 


এদিকে এডিসনের কোম্পানিতে প্রকৌশলী হিসেবে তখন কাজ করতেন উইলিয়াম ডিকসন। তিনি কোডাকের রোল ফিল্ম নিয়ে সেটা কেটে অর্ধেক করে ব্যবহার করেছিলেন তাদের কিনেটোগ্রাফ যন্ত্রের জন্য। তখন থেকেই ৩৫ মিলিমিটার ফিল্মের জন্ম। আজও সিনেমা শিল্পে ৩৫ মিলিমিটার ফিল্ম দিয়ে ভিডিও ধারণ করার প্রচলন রয়ে গেছে।


বলা হয়ে থাকে ইতিহাসের প্রথম চলচ্চিত্রের নাম হল ‘রাউন্ডহে গার্ডেন সিন’। চলচ্চিত্রটি ১:১ অ্যাসপেক্ট রেশিও’তে শ্যুট করা হয় এবং দর্শকদের দেখানো হয়। ৪.৩৩ সেকেন্ডের এই চলচ্চিত্রে মোট ৫২টি ফ্রেম বা চিত্র সংযুক্ত ছিল। এবং তাতে প্রতি সেকেন্ডে ১২টি ফ্রেম প্রদর্শন করা হয়েছিল। 


১:১ অনুপাতের অ্যাসপেক্ট রেশিও’তে নির্মিত এই সিনেমা বর্গাকার বাক্স আকৃতির পুরোনো টেলিভিশন সেটে কিন্তু খুব সুন্দরভাবে ফিট হবে। ‘ক্যাথোড রে টিউব’ বা ‘সিআরটি’ (CRT) টিভি নামের সেসব টেলিভিশন অন্তত বিংশ শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত খুবই জনপ্রিয় ছিল।


অন্যদিকে ইতিহাসের প্রথম বর্ণনামূলক চলচ্চিত্র ছিল ১ মিনিটের একটি ডকুমেন্টারি। শ্রমিকরা ‘লুমিয়ের কারখানা’ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে, এমন একটা দৃশ্য বন্দি করা হয়েছিল সেই ডকুমেন্টারিতে। যুগান্তকারী এই চলচ্চিত্রের অ্যাসপেক্ট রেশিও ছিল ১.৩৩:১। পরবর্তীতে একই মাপের অ্যাসপেক্ট রেশিও ৪:৩ হিসেবে পরিচিতি পায়।


৪:৩ অ্যাসপেক্ট রেশিও খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সিনেমা শিল্পের মানদণ্ড হয়ে ওঠে। কারণ তা এডিসন উদ্ভাবিত ৩৫ মিলিমিটার ফিল্মের ভিডিও ক্যামেরা দিয়ে ধারণ করা হত। 


একই সময়ে ‘অ্যাকাডেমি অফ মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান—এখন যারা অস্কার আয়োজন করে থাকে, তারা—অ্যাসপেক্ট রেশিও’র নতুন একটি মানদণ্ড নির্ধারণ করে। ‘অ্যাকাডেমি রেশিও’ নামে পরিচিত এই অ্যাসপেক্ট রেশিও’র মাপ ছিল ১.৩৭৫:১।


১৯৫০ এবং ৬০ এর দশকে ভিডিওগ্রাফিতে বড় ধরনের দুটি প্রযুক্তির উদ্ভাবন হয়। ‘প্যানাভিশন’ এবং ‘সিনেমাস্কোপ’ নামের সে দুটি ভিডিও ধারণের প্রযুক্তি আজও সিনেমা নির্মাতাদের কাছে জনপ্রিয়। এই ফরম্যাটে ২.৩৫:১ অ্যাসপেক্ট রেশিও ব্যবহার করা হয়। 


সাম্প্রতিক সময়ে “অ্যাভেঞ্জারস এন্ডগেম” এবং “১৯১৭” (1917) নামের দুটি সিনেমা এই ফরম্যাটে নির্মিত চলচ্চিত্রের উদাহরণ। যুক্তরাষ্ট্রে আরেকটি জনপ্রিয় অ্যাসপেক্ট রেশিও’র মাপ হল ১.৮৫:১।


এভাবে চলচ্চিত্র নির্মাতারা নতুনভাবে সিনেমা তৈরির চেষ্টা করতে থাকেন। ফলে তাদের কাজের মধ্য দিয়ে আরো নতুন নতুন ফরম্যাট এবং অ্যাসপেক্ট রেশিও আবিষ্কৃত হতে থাকে। কিন্তু এর ফলে একটা বড় সমস্যা দেখা দেয়। সেটা হল, এত সব হরেক রকম ফরম্যাট বা অ্যাসপেক্ট রেশিও কীভাবে একটা বর্গাকার টিভির স্ক্রিনে দেখানো যাবে?

.


# নিখুঁত সমাধান - ১৬:৯


বিভিন্ন ধরনের মাল্টিমিডিয়া ডিভাইসে ভিডিও ক্লিপ দেখার জন্য ১৬:৯ অ্যাসপেক্ট রেশিও কেন এত প্রচলিত? এর মূল কারণ হল, ৪:৩ এবং ২.৩৫:১ এর গড় করলে ১৬:৯ এর কাছাকাছি একটা মান পাওয়া যায়। 


অর্থাৎ, ১৬:৯ এর মধ্যে অনেক ধরনের অ্যাসপেক্ট রেশিওতে নির্মিত ভিডিও ক্লিপ দেখা সম্ভব হয়।


যেকোনো অনুপাতের পর্দা বা স্ক্রিনে কোনো ধরনের বিকৃতি ছাড়া সব ধরনের চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা সম্ভব নয়। কিন্তু অ্যাসপেক্ট রেশিও ১৬:৯ রাখা হলে মোটামুটি সব ধরনের ভিডিও একই স্ক্রিনে দেখা সম্ভব। 


দুটি পদ্ধতির মাধ্যমে ১৬:৯ অ্যাসপেক্ট রেশিওতে নির্মিত স্ক্রিনে সব মাপের ভিডিও দেখা যায়। সেগুলি হল:


১. পিলারবক্সিং: কোনো ভিডিও চলাকালীন ফ্রেমের বাম এবং ডানদিকে কালো রঙের দুটি বার থাকলে বুঝতে হবে এই ভিডিওতে পিলারবক্সিং আছে। চওড়ার হিসাবে স্ক্রিনের তুলনায় কোনো ভিডিওর ফ্রেমের প্রস্থ কম হলে পিলারবক্সিং পদ্ধতি কাজে লাগানো হয়।


২. লেটারবক্সিং: ২.৩৫:১ অ্যাসপেক্ট রেশিও’র মত বিভিন্ন ধরনের ওয়াইডস্ক্রিন ফরম্যাটের ভিডিও দেখতে হলে লেটারবক্সিং পদ্ধতি কাজে লাগানো হয়। এতে করে ১৬:৯ অ্যাসপেক্ট রেশিওতে নির্মিত স্ক্রিনে সিনেমার সম্পূর্ণ ফ্রেম দেখার জন্যে স্ক্রিনের ওপরে এবং নিচে কালো রঙের বার দেখা যায়।


আপনি ‘নেটফ্লিক্স’ ব্যবহার করে থাকলে হয়ত লক্ষ্য করেছেন যে, সেখানে ‘ফিট-টু-স্ক্রিন’ কিংবা ‘অরিজিনাল’ এর মত ভিডিও দেখার বিভিন্ন ধরনের বিকল্প অপশন থাকে। বিভিন্ন ধরনের মিডিয়া প্লেয়ার অ্যাপ্লিকেশনেও এ ধরনের অপশন দেখা যায়।


আধুনিক সব ডিভাইসের আয়তকার স্ক্রিনে অনেক ভিডিও কিংবা সিনেমার ফ্রেমের পুরোটা দেখতে হলে পিলারবক্সিং বা লেটারবক্সিং পদ্ধতি কাজে লাগাতে হয়। এতে স্ক্রিনের দুপাশে কালো রঙের বার দেখা যায়। কালো রঙের বারগুলি দেখতে না চাইলে আপনি ‘ফিট-টু-স্ক্রিন’ অপশন কাজে লাগাতে পারেন। কিন্তু এভাবে অ্যাসপেক্ট রেশিও উপেক্ষা করা হলে সিনেমার পুরো ফ্রেমটা স্ক্রিনে দেখা যাবে না।


যাহোক, ওপরে বর্ণিত এসব সুবিধার কারণে ১৬:৯ অ্যাসপেক্ট রেশিও এখন মিডিয়া ও গণমাধ্যম শিল্পের মানদণ্ডে পরিণত হয়েছে। সিনেমা, ভিডিওগেম বা টিভি-শো’র মত সব ধরনের হাই-ডেফিনিশন কন্টেন্ট এখন ১৬:৯ অ্যাসপেক্ট রেশিওতে ধারণ করা হয়। এমনকি, পুরনো দিনের সব মিডিয়া কন্টেন্ট আধুনিক ডিভাইসে দেখার উপযোগী করে রিমাস্টার করার জন্যও ১৬:৯ অ্যাসপেক্ট রেশিও নির্ধারণ করা হয়।


সবশেষে বলা যায়, অ্যাসপেক্ট রেশিও এমন একটি ধারণা, যে ব্যাপারে সাধারণ দর্শকরা খুব একটা মাথা ঘামান না। এতে করে আমরা বুঝতে পারি না যে, বর্তমানে সিনেমা বা টিভি-শো’র মত যত ধরনের ভিডিও দেখি, তা নির্মাণের ওপর এর প্রভাব কত বেশি।


লেখক এবং অধ্যাপক পল ডিউরো তার ‘রেটোরিক অফ দ্যা ফ্রেম’ বইয়ে যেমনটা লিখেছেন: কোনো সিনেমায় থাকা ফ্রেম অদৃশ্য বলে মনে হওয়ার মানে এই না যে, সেটা আসলেই অদৃশ্য। যত যাই হোক, আমরা আমাদের চারপাশে যা দেখি, সবই একেকটা ফ্রেম, যদি আমাদের তা দেখার চোখ থাকে।


#ফ্রেম #সিনেমা #টিভি

বুড়ি  মরে গেল। বুড়োটা ভাঁজ হয়ে থাকা চামড়ার মাঝে ছোট্ট বসে যাওয়া চোখখানা দিয়ে দেখলো...

 বুড়ি মরে গেল।

বুড়োটা ভাঁজ হয়ে থাকা চামড়ার মাঝে ছোট্ট বসে যাওয়া চোখখানা দিয়ে দেখলো...

কিছু জল চোখের কোণ থেকে ঝরে পড়লো...


'লোক দেখানো শোক'

চললো কিছুদিন, তারপর যেন এক নাটকের সমাপ্তি ঘটলো...


তার ব্যবহৃত শাড়ি নিয়ে মেয়েদের ভাগাভাগি চললো। কেউ বালিশের কভার বানাবে, কেউ বিছানার চাদর হিসেবে ব্যবহার করবে, কেউ কানের দুল নেবে, কেউ বালাজোড়া......


যার যার নিজের সংসারে যেন একটা বোঝা নেমে গেল...


বুড়ো একা বসে বসে দেখে তাদের কান্ডকারখানা...


মনের বাজারে স্মৃতির দর'কষাকষি করতে করতে সেটাও একসময় বিক্রি হয়ে যায় মস্তিকের কোন এক ফাঁক ফোকরে...


যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে যায়, বুড়ো একা হয়ে পড়ে, হাতের লাঠিখানায় ভর করে এদিক সেদিক পায়চারী করে...


সেদিন ছোট নাতনী এসে বলে গেল "দাদু দাদু, তুমি মরে গেলে কিন্ত এই লাঠিখানা আমার, আমি খেলবো.!"


এদিক থেকে বৌমা দৌড়ে আসে "দাঁড়া, তোকে আজ মেরে ফেলবো। এসব কথা বলতে নেই, বলেছি না.?


বুড়ো হাসে...

যে বৌমার এমন শাসন সেও গোপনে প্রতিবেশির কাছে গল্প করে বুড়োটার খালি কষ্ট, মরে গেলেই বাঁচে...


সেদিন নাতি তার বন্ধুদের নিয়ে তার ছোট ঘরে আড্ডা দিচ্ছে আর বলছে "দাদুর অবস্থাও বেশি ভাল না। কিছুদিনের মধ্যে উইকেট পড়ে যেতে পারে। তখন ওই ঘর আমার, তখন জমিয়ে আড্ডা হবে.!"


বুড়ো শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে...


দুই ছেলের মাঝে তো প্রায়দিন ঝগড়া লেগেই থাকে,

বুড়ো কার কাছে ক'দিন খাবে এই  নিয়ে...


বুড়োটা আজ কারো বাবা নয়, আজ কারো শ্বশুর নয়, কারো দাদুও নয়,

সে আজ শুধুই এক বোঝা...


আজ বুড়োর জন্মদিন। গত বছর বুড়িটা বেঁচে ছিল, তাও একটু পায়েশ রেঁধে খাইয়েছিলো...

আজ সারাটা দিন গেল, কেউ কিছুই বললো না...


কিই বা বলবে.! যার মৃত্যুর জন্য সকলে মুখিয়ে আছে, কি বা দরকার তাকে সেই জন্মের কথা মনে করিয়ে দেওয়ার.!


অথচ কিছুদিন আগে কত লোক খাইয়ে নাতনীর জন্মদিন পালন করা হলো...


বুড়োর  হিসেব টা জমা পড়ে আছে, কারণ তার মৃত্যুর পরেও তো অনেক মানুষকে খাওয়াতে হবে...


সেখানেও দুই ভাইয়ের ঝগড়া হবে খরচ করা নিয়ে...


বুড়িটার বেলা তে তো তাই হয়েছিল...


বুড়ো ভাবে, কিসের এ জীবন.? কাদের জন্য এতকিছু.!


বুড়ো চশমাটা চোখ থেকে নামিয়ে একটু মুছে নেয়। কেমন যেন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে... 


আকাশের দিকে তাকিয়ে বুড়ো একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো,

মনে মনে এটাই বললো "পৃথিবীর সমগ্র বাবা যেন বাবা হয়েই বাঁচে, বোঝা হয়ে নয়...!"


নিজেকে শক্ত করে গড়ে নিন,, এই স্বার্থপর দুনিয়াতে খারাপ পরিস্থিতিতে তোমার পাশে কেউ থাকবে না.....!!

.

.

.

.

.

.

.

.

.

সন্তানের জন্য বাবার লেখা অসাধারন এক চিঠি।ভালো লাগলে আপনার সন্তানদেরও পড়তে দিন

 সন্তানের জন্য বাবার লেখা অসাধারন এক চিঠি।ভালো লাগলে আপনার সন্তানদেরও পড়তে দিন


প্রিয় সন্তান,,

আমি তোমাকে ৩ টি কারনে এই চিঠিটি লিখছি...


১। জীবন, ভাগ্য এবং দুর্ঘটনার কোন নিশ্চয়তা নেই, কেউ জানে না সে কতদিন বাঁচবে।


২। আমি তোমার বাবা, যদি আমি তোমাকে এই কথা না বলি, অন্য কেউ বলবে না।


৩। যা লিখলাম, তা আমার নিজের ব্যক্তিগত তিক্ত অভিজ্ঞতা- এটা হয়তো তোমাকে অনেক অপ্রয়োজনীয় কষ্ট পাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে।


জীবনে চলার পথে এগুলো মনে রাখার চেষ্টা কোরো: 


১। যারা তোমার প্রতি সদয় ছিল না, তাঁদের উপর অসন্তোষ পুষে রেখোনা। কারন, তোমার মা এবং আমি ছাড়া, তোমার প্রতি সুবিচার করা কারো দায়িত্বের মধ্যে পড়েনা। আর যারা তোমার সাথে ভালো ব্যবহার করেছে - তোমার উচিত সেটার সঠিক মূল্যায়ন করা এবং কৃতজ্ঞ থাকা। তবে তোমার সতর্ক থাকতে হবে এজন্য যে, প্রতিটি মানুষেরই প্রতি পদক্ষেপের নিজ নিজ উদ্দেশ্য থাকতে পারে। একজন মানুষ আজ তোমার সাথে ভালো- তার মানে এই নয় যে সে সবসময়ই ভালো থাকবে। কাজেই খুব দ্রুত কাউকে প্রকৃত বন্ধু ভেবোনা। 


২। জীবনে কিছুই কিংবা কেউই "অপরিহার্য" নয়, যা তোমার পেতেই হবে। একবার যখন তুমি এ কথাটির গভীরতা অনুধাবন করবে, তখন জীবনের পথ চলা অনেক সহজ হবে - বিশেষ করে যখন বহুল প্রত্যাশিত কিছু হারাবে, কিংবা তোমার তথাকথিত আত্মীয়-স্বজনকে তোমার পাশে পাবেনা। 


3. জীবন সংক্ষিপ্ত।

আজ তুমি জীবনকে অবহেলা করলে, কাল জীবন তোমাকে ছেড়ে চলে যাবে। কাজেই জীবনকে তুমি যতো তাড়াতাড়ি মূল্যায়ন করতে শিখবে, ততোই বেশী উপভোগ করতে পারবে। 


৪. ভালবাসা একটি ক্ষণস্থায়ী অনুভূতি ছাড়া কিছুই নয়। মানুষের মেজাজ আর সময়ের সাথে সাথে এই অনুভূতি বিবর্ণ হবে। যদি তোমার তথাকথিত কাছের মানুষ তোমাকে ছেড়ে চলে যায়, ধৈর্য ধরো, সময় তোমার সব ব্যথা-বিষন্নতা কে ধুয়ে-মুছে দেবে। কখনো প্রেম-ভালবাসার মিষ্টতা এবং সৌন্দর্যকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেনা, আবার ভালবাসা হারিয়ে বিষণ্ণতায়ও অতিরঞ্জিত হবে না।


৫. অনেক সফল লোক আছেন যাদের হয়তো উচ্চশিক্ষা ছিলনা-  এর অর্থ এই নয় যে তুমিও কঠোর পরিশ্রম বা শিক্ষালাভ ছাড়াই সফল হতে পারবে! তুমি যতোটুকু জ্ঞানই অর্জন করোনা কেন, তাই হলো তোমার জীবনের অস্ত্র। কেউ ছেঁড়া কাঁথা থেকে লাখ টাকার অধিকারী হতেই পারে, তবে এজন্য তাকে অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে।


৬. আমি আশা করি না যে, আমার বার্ধক্যে তুমি আমাকে আর্থিক সহায়তা দিবে। আবার আমিও তোমার সারাজীবন ধরে তোমাকে অর্থ সহায়তা দিয়ে যাবনা। যখনি তুমি প্রাপ্তবয়স্ক হবে, তখনি বাবা হিসেবে আমার অর্থ-সহায়তা দেবার দিন শেষ। তারপর, তোমাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে- তুমি কি পাবলিক পরিবহনে যাতায়াত করবে, নাকি নিজস্ব লিমুজিন হাঁকাবে; গরীব থাকবে নাকি ধনী হবে। 


৭. তুমি তোমার কথার মর্যাদা রাখবে, কিন্তু অন্যদের কাছে তা আশা করোনা। মানুষের সাথে ভালো আচরন করবে, তবে অন্যরাও তোমার সাথে ভালো থাকবে- তা প্রত্যাশা করবেনা। যদি তুমি এটি না বুঝতে পারো, তবে শুধু অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রণাই পাবে। 


৮. আমি অনেক বছর ধরে লটারি কিনেছি, কিন্তু কখনও কোন পুরষ্কার পাইনি। তার মানে হলো এই যে- যদি তুমি সমৃদ্ধি চাও তবে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। বিনামূল্যে কোথাও কিছু জুটবে না। 


৯. তোমার সাথে আমি কতোটা সময় থাকবো- সেটা কোন ব্যাপার না। বরং চলো আমরা আমাদের একসাথে কাটানো মুহুর্তগুলো উপভোগ করি ...মূল্যায়ন করি। 


——————

ভালোবাসা সহ,

তোমার বাবা......


বাবাটি হলেন একজন চাইল্ড সাইকোলজিষ্ট এবং হংকং-এর প্রখ্যাত টিভি সম্প্রচারকারী। তার কথাগুলো বয়োজ্যেষ্ঠ, বয়োকনিষ্ঠ, বৃদ্ধ কিংবা তরুন, শিশু, আমাদের সবার জন্যই প্রযোজ্য। 


সংগৃহীত

কচ্ছপ আর খরগোশের গল্পটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু মজার বিষয় হল আমরা গল্পের শুধু প্রথম অংশটাই পড়েছি

 কচ্ছপ আর খরগোশের গল্পটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু মজার বিষয় হল আমরা গল্পের শুধু প্রথম অংশটাই পড়েছি।


আপনি কি জানতেন যে, এই গল্পের আরো ৩ টি অধ্যায় আছে! যা হয়তো আমরা কেউ কেউ পড়েছি বা শুনেছি, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই পড়িনি।


গল্পের বাকি অংশটুকু এবার জেনে নিন🥰🥰


🔰১ম অংশ:

 এই অংশটা আমরা ছোটবেলায় বইয়ে পড়ছি। এখানে খরগোশ ঘুমিয়ে যায়, আর কচ্ছপ জিতে যায়। প্রথমবার হেরে যাওয়ার পর খরগোশ বিশ্লেষণ করে দেখল তার পরাজয়ের মূল কারণ 'অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস।' তারমানে অতি আত্মবিশ্বাস যে কারো জন্যই ক্ষতিকর। আর কচ্ছপ বুঝল, লেগে থাকলে সাফল্য আসবেই!


🔰২য় অংশ: 

হেরে যাওয়ার পর এবার খরগোশ আবারো কচ্ছপকে দৌড় প্রতিযোগিতায় চ্যালেঞ্জ করল আর কচ্ছপও রাজী হল। 


এবার খরগোশ না ঘুমিয়ে দৌড় শেষ করল এবং জয়ী হল। খরগোশ বুঝল, মন দিয়ে নিজের সামর্থের পুরোটা দিয়ে কাজ করলে দ্রুত সফল হওয়া যায়। 


আর কচ্ছপ বুঝল, ধীর স্থির ভাবে চলা ভালো, তবে কাজে উপযুক্ত গতি না থাকলে প্রতিযোগীতা মূলক পরিবেশে জয়ী হওয়া অসম্ভব!


🔰৩য় অংশ:

কচ্ছপ এবার খরগোশকে আরেকবার দৌড় প্রতিযোগিতার আমন্ত্রন জানালো। খরগোশও নির্দিধায় রাজী হয়ে গেল। তখন কচ্ছপ বলল, "একই রাস্তায় আমারা ২ বার দৌড়েছি, এবার অন্য রাস্তায় হোক।" খরগোশও রাজী। অতএব নতুন রাস্তায় দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হল। 


যথারীতি খরগোশ জোরে দৌড় শুরু করে দিল। কচ্ছপও তার পিছন পিছন আসতে শুরু করল। কচ্ছপ যখন খরগোশ এর কাছে পৌঁছাল, দেখল খরগোশ দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু দৌড়ের শেষ সীমানায় যেতে পারেনি। 


কারণ দৌড়ের শেষ সীমানার আগে একটি খাল আছে। কচ্ছপ খরগোশ এর দিকে একবার তাকালো, তারপর তার সামনে দিয়ে পানিতে নেমে খাল পার হয়ে দৌড়ের শেষ সীমানায় পৌছে প্রতিযোগিতা জিতে গেল।


খরগোশ বুঝল, শুধু নিজের শক্তির উপর নির্ভর করলেই হবে না, পরিস্থিতি আর বাস্তবতা অনুধাবন করাও ভীষণ প্রয়োজনীয়! আর কচ্ছপ বুঝল, প্রথমে প্রতিযোগীর দূর্বলতা খুজে বের করতে হবে, তারপর সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে হবে।


গল্প কিন্তু এখানেই শেষ নয়‼️


🔰চতুর্থ অংশ: 

এবার খরগোশ কচ্ছপকে আরেকটি দৌড় প্রতিযোগিতার জন্য আহবান জানালো এই একই রাস্তায়। কচ্ছপ ও রাজী। কিন্তু এবার তারা ঠিক করল, প্রতিযোগী হিসেবে নয়, বরংএবারের দৌড়টা তারা দৌড়াবে সহযোগী হিসেবে!


শুরু হল প্রতিযোগিতা। খরগোশ কচ্ছপকে পিঠে তুলে দৌড়ে খালের সামনে গিয়ে থামলো।এবার কচ্ছপ খরগোশ এর পিঠ থেকে নেমে খরগোশকে নিজের পিঠে নিয়ে খাল পার হল।তারপর আবার কচ্ছপ খরগোশ এর পিঠে উঠে বাকী দৌড় শেষ করল আর এবার তার দু জনই একসাথে জয়ী হল।


📚এখান থেকে আমরা আসলে কি শিখলাম?


আমরা শিখলাম, ব্যক্তিগত দক্ষতা থাকা খুবই ভালো। কিন্তু দলবদ্ধ হয়ে একে অপরের দক্ষতাকে কাজে লাগাতে পারলেই আসে সত্যিকারের সাফল্য যেখানে সবাই বিজয়ীর হাসি হাসতে পারে।


আপনি কি এই গল্পটার পুরোটা আগে জানতেন? মজার এই গল্পটি শেয়ার করে সবাইকে পড়ার সুযোগ করে দিতে পারেন🥰🥰


কালেক্ট... Women Soldiers

কিভাবে বুঝবেন আপনার জমির দলিল বৈধ কি  না,,,

 কিভাবে বুঝবেন আপনার জমির দলিল বৈধ কি না?


জমি কেনা বা বিক্রি একটি গুরুত্বপূর্ণ লেনদেন, এবং এর সাথে জড়িত আইনি প্রক্রিয়াগুলি বোঝা জরুরি। জমির দলিল হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি যা মালিকানার অধিকার প্রমাণ করে। তাই, জমি কেনার আগে দলিলটি সঠিকভাবে যাচাই করে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


জমি কেনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ, এবং আইনি জটিলতা এড়াতে জমির দলিলের বৈধতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। একটি জমির দলিল বৈধ কিনা তা নির্ধারণ করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।


১. দলিলের মূল কপি পরীক্ষা করুন:


👉নিশ্চিত করুন যে দলিলটি সঠিকভাবে সাব-রেজিস্ট্রারের দ্বারা স্বাক্ষরিত এবং সিল করা আছে।

👉দলিলের মূল কপিতে থাকা ছবি এবং মালিকের বর্তমান ছবি মিলে যাচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করুন।

👉দলিলের সকল পাতায় সঠিকভাবে স্ট্যাম্প লাগানো আছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।


২. দলিলের তথ্য যাচাই করুন:


👉দলিলে উল্লেখিত মালিকের নাম, ঠিকানা, জমির পরিমাণ, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর ইত্যাদি তথ্য সঠিক কিনা তা খতিয়ান, দাগ খতিয়ান, এবং সরকারি রেকর্ডের সাথে মিলিয়ে দেখুন।

👉দলিলে উল্লেখিত সাক্ষীদের নাম এবং ঠিকানা সঠিক কিনা তা যাচাই করুন।


৩. আইনি পরামর্শ নিন:


👉একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া জমির দলিলের বৈধতা নিশ্চিত করার সবচেয়ে নিরাপদ উপায়।

👉আইনজীবী দলিলের সকল দিক বিশ্লেষণ করে আপনাকে দলিলটি বৈধ কিনা তা জানাতে পারবেন।


৪. অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করুন:

👉সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে জমির দলিলের তথ্য অনলাইনে যাচাই করতে পারেন।

👉কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও জমির দলিলের বৈধতা যাচাই করার সার্ভিস প্রদান করে।


৫. সতর্কতা অবলম্বন করুন:


👉দলিলের বৈধতা সম্পর্কে কোন সন্দেহ থাকলে দলিলটি ক্রয় করা থেকে বিরত থাকুন।

অসৎ ব্যক্তিদের প্রতারণার শিকার হতে সাবধান থাকুন।

👉জমি কেনার আগে জমির দলিলের বৈধতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপরে উল্লেখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করে আপনি একটি জমির দলিল বৈধ কিনা তা নির্ধারণ করতে পারবেন।


জমির দলিল বৈধ কিনা তা বোঝার জন্য কিছু প্রশ্ন ও উত্তর


১) দলিলে কি সকল প্রয়োজনীয় তথ্য আছে?


দলিলে জমির মালিকের নাম, ঠিকানা, জমির পরিমাণ, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর, মৌজা, উপজেলা, জেলা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে কিনা?

,👉দলিলের সাক্ষীদের নাম, ঠিকানা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে কিনা?

👉দলিলের স্বাক্ষর ও তারিখ স্পষ্টভাবে আছে কিনা?


২) দলিলের স্ট্যাম্প ও রেজিস্ট্রেশন


👉দলিলে সরকার নির্ধারিত স্ট্যাম্প ব্যবহার করা হয়েছে কিনা?

👉দলিলটি সঠিকভাবে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে কিনা?

রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর ও তারিখ স্পষ্টভাবে আছে কিনা?


৩) দলিলের মালিকানার ধরণ।


👉দলিলের মাধ্যমে মালিকানা কিভাবে অর্জিত হয়েছে (উত্তরাধিকার, ক্রয়, বিনিময়, দান ইত্যাদি)?

👉মালিকানার ধরণ কি (মালিকানা, দখল, ভাগচাষ ইত্যাদি)?

👉মালিকানার কোনো শর্ত বা বাধা আছে কিনা?


৪) জমির অবস্থা


👉জমি কি বাস্তবে বিদ্যমান?

👉জমির মালিকানা বিতর্কমুক্ত কিনা?

👉জমির উপর কোনো ঋণ বা বন্ধক আছে কিনা?


৫) আইনি পরামর্শ

জমির দলিল বৈধ কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া উচিত।


৬. দলিলের বয়স:

প্রশ্ন: কত বছরের পুরোনো দলিল বৈধ?

উত্তর: দলিলের বয়সের কোন নির্দিষ্ট সীমা নেই। তবে, 1976 সালের আগের দলিলগুলো "পুরাতন দলিল" হিসেবে বিবেচিত হয় এবং বৈধতা যাচাইয়ের জন্য অতিরিক্ত যাচাই-বাছাই প্রয়োজন হতে পারে।


৭. দলিলের ধরন:

প্রশ্ন: কত ধরণের জমির দলিল আছে?

উত্তর: বাংলাদেশে 4 ধরণের জমির দলিল আছে:

°দাগ নম্বর খতিয়ান

°মৌজা খতিয়ান

°সিএস খতিয়ান

°আরএস খতিয়ান


৮. দলিলের মালিকানা:


প্রশ্ন: দলিলে একাধিক মালিকের নাম থাকলে কী করবেন?

উত্তর: সকল মালিকের সম্মতি ছাড়া জমি বিক্রি করা যাবে না। মালিকানা পরিবর্তনের জন্য সকলের স্বাক্ষর এবং সম্মতি প্রয়োজন।


৯. দলিলের মিউটেশন:


প্রশ্ন: মিউটেশন কী?

উত্তর: মিউটেশন হলো জমির মালিকানা পরিবর্তনের নথিভুক্তি প্রক্রিয়া। নতুন মালিকের নাম খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য মিউটেশন করা আবশ্যক।


১০. দলিলের জালিয়াতি:

প্রশ্ন: জাল দলিলের বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী?

উত্তর: জাল দলিলে ভুল বানান, অস্পষ্ট তথ্য, মিথ্যা স্বাক্ষর, এবং অসঙ্গতিপূর্ণ তথ্য থাকতে পারে।


১১. দলিল যাচাই:

প্রশ্ন: জমির দলিল যাচাই করার সর্বোত্তম উপায় কী?

উত্তর: সাব-রেজিস্ট্রার অফিস: আপনি যেখানে জমি অবস্থিত সেখানকার সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে গিয়ে দলিলের মূল কপি এবং খতিয়ানের সাথে মিলিয়ে দেখতে পারেন।


ভূমি অফিস: আপনি যেখানে জমি অবস্থিত সেখানকার ভূমি অফিসে গিয়ে দলিলের তথ্য অনলাইনে যাচাই করতে পারেন।

আইনজীবীর পরামর্শ: একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া জমির দলিলের বৈধতা যাচাই করার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায়।


১২. দলিল সংক্রান্ত আইনি জটিলতা:


প্রশ্ন: জমির দলিল সংক্রান্ত আইনি জটিলতা সমাধানের জন্য কী করবেন?

উত্তর: জমির দলিল সংক্রান্ত আইনি জটিলতা সমাধানের জন্য একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করা উচিত।


উল্লেখ্য: এই তথ্যগুলো শুধুমাত্র সাধারণ ধারণার জন্য। জমির দলিলের বৈধতা যাচাই করার।


বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

কাটরা কী? বড় কাটরা, ছোট কাটরা এবং  হারিয়ে যাওয়া আরও কিছু কাটরা'র গল্প

 কাটরা কী? বড় কাটরা, ছোট কাটরা এবং 

হারিয়ে যাওয়া আরও কিছু কাটরা'র গল্প।

কাটরা সম্ভবত আরবি ‘কাতার’ বা ‘কাতারা’ শব্দ থেকে এসেছে, যার অর্থ খিলানযুক্ত ভবন। আরবি ও ফারসি সাহিত্যে এর উল্লেখ ‘ক্যারাভানসরাই’ বা ‘সরাইখানা’ নামে। কাটরা পথচারী ও ব্যবসায়ীদের জন্য নির্মিত, যা একটি অঙ্গনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে। অঙ্গনের চারদিকে থাকে বারান্দা, পরে কক্ষসমূহ। কক্ষসমূহে অতিথিরা রাত্রি যাপন করেন, তাদের বাহনের পশু ও ভ্রমণ সরঞ্জামাদি রাখা হতো অঙ্গনে। অতীতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রসারের ফলে সব দেশের বাণিজ্যপথের পাশেই নির্দিষ্ট দূরত্বে কাটরা নির্মিত হতো। বাণিজ্যের সুবিধার্থে বাংলাদেশেও কাটরা নির্মাণ হতো। এর উদাহরণ ঢাকায় মুঘল আমলে নির্মিত বড় কাটরা ও ছোট কাটরা।

বড় কাটরা: ঢাকার চকবাজারের দক্ষিণে বুড়িগঙ্গার তীরে অবস্থিত বড় কাটরায় ফারসি ভাষায় দুটি শিলালিপি আছে। একটিতে উৎকীর্ণ আছে, এ ভবন আবুল কাসেম কর্তৃক ১০৫৩ হিজরিতে নির্মিত। অন্যটিতে দেখা যায়, ১০৫৫ হিজরিতে শাহ সুজা স্থাপত্যটি কাটরা হিসেবে ব্যবহারের জন্য মীর আবুল কাসেমকে দিয়েছিলেন এই শর্তে যে, এ ওয়াকফ প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীগণ কাটরায় অবস্থানের যোগ্য কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো ভাড়া নিবে না। কাটরার ব্যয় নির্বাহের জন্য ২২টি দোকান ওয়কফ করে দেওয়া হয়। বড় কাটরা চতুর্ভুজাকৃতির এক অঙ্গনকে বেষ্টন করে নির্মিত হয়েছিল। এর প্রতি পার্শ্বে ২২টি কক্ষ ছিল। বর্তমানে এটি প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। দক্ষিণাংশের কাঠামো পুরোপুরি বর্তমান থাকলেও উত্তরাংশ সম্পূর্ণ বিলুপ্ত। পূর্ব ও পশ্চিমাংশের সামান্য কিছু রয়েছে। বড় কাটরার সংস্কারে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার আদি ভবনের বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন ঘটেছে।

ছোট কাটরা: বড় কাটরা হতে ১৮৩ মি. পূর্বে বুড়িগঙ্গা তীরে অবস্থিত যা নওয়াব শায়েস্তা খান ১৬৬৪ সালে নির্মাণ করেন। বড় কাটরা যে উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয়েছিল, প্রায় সে উদ্দেশ্যেই এটি নির্মিত হয়েছিল। পরিকল্পনা ও নির্মাণ কৌশলে ছোট কাটরা অবিকল বড় কাটরার মতো কিন্তু আকারে ছোট। ছোট কাটরার খিলানসমূহ তিনভাঁজবিশিষ্ট। মিনারগুলো মজবুত ও অন্য মুঘল মিনারের তুলনায় মোটা। প্রাসাদের সিঁড়ি ও মেঝে কাঠের তৈরী। সিঁড়িগুলো বেশ চওড়া। প্রবেশপথ দুটি এখনও চিত্তাকর্ষক। উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ বেষ্টিত চারপাশের ভবনাদি ও আদি ভবন বহুবার নবায়ন, পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন, নবায়ন এবং প্রাঙ্গণে দোকান-পসরার ঘেষাঘেষিতে এর পূর্ব আকৃতি ও সৌন্দর্য বিনষ্ট হয়ে গেছে।

অন্যান্য কাটরা: এ দুটি ছাড়াও ঢাকায় আরও অনেকগুলি কাটরার নাম পাওয়া যায়, যেমন: মুকিম কাটরা, মায়া কাটরা, বকশীবাজার কাটরা, মুঘলটুলি কাটরা, নওয়াব কাটরা, নাজির কাটরা, রহমতগঞ্জ কাটরা, ক্যারাভান ও বাদামতলী কাটরা প্রভৃতি। নাম পাওয়া গেলেও এদের সম্পর্কে খুব একটা জানা যায়নি। তবে, মুকিম কাটরা সম্পর্কে কিছুটা তথ্য পাওয়া যায়। মুকিম কাটরার কিছু অংশ মৌলভী বাজার ও বাকিটা চকবাজারে অবস্থিত।এলাকাটিকে এখনও মুকিম কাটরা বলা হয়। এলাকাটি মির্জা মুকিমের নাম অনুসারে হয়েছিল। যিনি ১৬৬২ সালে মীরজুমলার শাসনকালে এটি তৈরি করেন। এ কাটরার অস্তিত্ব এখন আর নেই।

ছবি: ১৮৭০ সালে তোলা বড় কাটরার ছবি

সৌজন্যেঃ ঋষণা রূপকথা-The First Myth


ভূমি বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য,জেনে নিন। 

 ভূমি বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য,জেনে নিন। 


🌻নামজারী কাকে বলে? 

ক্রয়সূত্রে/উত্তরাধিকার সূত্রে অথবা যেকোন সূত্রে জমির নতুন মালিক হলে নতুন মালিকের নাম সরকারি খতিয়ানভুক্ত করার প্রক্রিয়াকে নামজারী বলা হয়। 


🌻জমা খারিজ কাকে বলে? 

যৌথ জমা বিভক্ত করে আলাদা করে নতুন খতিয়ান সৃষ্টি করাকে জমা খারিজ বলে। অন্য কথায় মূল খতিয়ান থেকে কিছু জমির অংশ নিয়ে নতুন জোত বা খতিয়ান সৃষ্টি করাকে জমা খারিজ বলে। 


🌻খতিয়ান কাকে বলে? 

ভূমি জরিপকালে ভূমি মালিকের মালিকানা নিয়ে যে বিবরণ প্রস্তুত করা হয় তাকে “থতিয়ান” বলে। খতিয়ান প্রস্তত করা হয় মৌজা ভিত্তিক। আমাদের দেশে CS, RS, SA এবং সিটি জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। এসব জরিপকালে ভূমি মালিকের তথ্য প্রস্তত করা হয়েছে তাকে “খতিয়ান” বলে। যেমন CS খতিয়ান, RS খতিয়ান,BS খতিয়ান.... 


🌻পর্চা কাকে বলে? 

ভূমি জরিপকালে চূড়ান্ত খতিয়ান প্রস্তত করার পূর্বে ভূমি মালিকদের নিকট খসড়া খতিয়ানের যে অনুলিপি ভুমি মালিকদের প্রদান করা করা হ তাকে “মাঠ পর্চা” বলে। এই মাঠ পর্চা রেভিনিউ/রাজস্ব অফিসার কর্তৃক তসদিব বা সত্যায়ন হওয়ার পর যদি কারো কোন আপত্তি থাকে তাহলে তা শোনানির পর খতিয়ান চুড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হয়। আর চুড়ান্ত খতিয়ানের অনুলিপিকে “পর্চা” বলে। 


🌻মৌজা কাকে বলে? 

যখন CS জরিপ করা হয় তখন থানা ভিত্তিক এক বা একাধিক গ্রাম, ইউনিয়ন, পাড়া, মহল্লা আলাদা করে বিভিন্ন এককে ভাগ করে ক্রমিক নাম্বার দিয়ে চিহ্তি করা হয়েছে। আর বিভক্তকৃত এই প্রত্যেকটি একককে মৌজা বলে। 


🌻তফসিল কাকে বলে? 

জমির পরিচয় বহন করে এমন বিস্তারিত বিবরণকে “তফসিল” বলে। তফসিলে, মৌজার নাম, নাম্বার, খতিয়ার নাম্বার, দাগ নাম্বার, জমির চৌহদ্দি, জমির পরিমাণ সহ ইত্যাদি তথ্য সন্নিবেশ থাকে। 


🌻দাগ নাম্বার কাকে বলে? 

যখন জরিপ ম্যাপ প্রস্তুত করা হয় তখন মৌজা নক্সায় ভূমির সীমানা চিহ্নিত বা সনাক্ত করার লক্ষ্যে প্রত্যেকটি ভূমি খন্ডকে আলাদা আলাদ নাম্বার দেয়া হয়। আর এই নাম্বারকে দাগ নাম্বার বলে। একেক দাগ নাম্বারে বিভিন্ন পরিমাণ ভূমি থাকতে পারে। মূলত, দাগ নাম্বার অনুসারে একটি মৌজার অধীনে ভূমি মালিকের সীমানা খূটিঁ বা আইল দিয়ে সরেজমিন প্রর্দশন করা হয়। 


🌻ছুটা দাগ কাকে বলে? 

ভূমি জরিপকালে প্রাথমিক অবস্থায় নকশা প্রস্তুত অথবা সংশোধনের সময় নকশার প্রতিটি ভূমি এককে যে নাম্বার দেওয়া হয় সে সময় যদি কোন নাম্বার ভুলে বাদ পড়ে তবে ছুটা দাগ বলে। আবার প্রাথমিক পর্যায়ে যদি দুটি দাগ একত্রিত করে নকশা পুন: সংশোধন করা হয় তখন যে দাগ নাম্বার বাদ যায় তাকেও ছুটা দাগ বলে। 


🌻খানাপুরি কাকে বলে? 

জরিপের সময় মৌজা নক্সা প্রস্তুত করার পর খতিয়ান প্রস্তুতকালে খতিয়ান ফর্মের প্রত্যেকটি কলাম জরিপ কর্মচারী কর্তৃক পূরন করার প্রক্রিয়াকে খানাপুরি বলে। 


🌻আমিন কাকে বলে? 

ভূমি জরিপের মাধ্যমে নক্সা ও খতিয়ান প্রস্তত ও ভূমি জরিপ কাজে নিজুক্ত কর্মচারীকে আমিন বলে। 


🌻কিস্তোয়ার কাকে বলে? 

ভূমি জরিপ কালে চতুর্ভুজ ও মোরব্বা প্রস্তত করার পর সিকমি লাইনে চেইন চালিয়ে সঠিকভাবে খন্ড খন্ড ভুমির বাস্তব ভৌগলিক চিত্র অঙ্কনের মাধ্যমে নকশা প্রস্তুতের পদ্ধতিকে কিস্তোয়ার বলে। 


🌻খাজনা ককে বলে?

সরকার বার্ষিক ভিত্তিতে যে প্রজার নিকট থেকে ভূমি ব্যবহারের জন্য যে কর আদায় করে তাকে খাজনা বলে। 


🌻দাখিলা কাকে বলে? 

ভূমি কর/খাজনা আদায় করে যে নির্দিষ্ট ফর্মে ( ফর্ম নং১০৭৭) ভূমি কর/খাজনা আদায়ের প্রমান পত্র বা রশিদ দেওয়া হয় তাকে দাখিলা বলা হয়। 


🌻DCR কাকে বলে? 

ভূমি কর ব্যতিত আন্যান্য সরকারি পাওনা আদায় করার পর যে নির্ধারিত ফর্মে (ফর্ম নং ২২২) রশিদ দেওয়া হয় তাকে DCR বলে। 


🌻কবুলিয়ত কাকে বলে? 

সরকার কর্তৃক কৃষককে জমি বন্দোবস্ত দেওয়ার প্রস্তাব প্রজা কর্তৃক গ্রহণ করে খাজনা প্রদানের যে অঙ্গিকার পত্র দেওয়া হয় তাকে কবুলিয়ত বলে। 


🌻নাল জমি কাকে বলে? 

২/৩ ফসলি সমতল ভূমিকে নাল জমি বলা হয়। 


🌻খাস জমি কাকে বলে? 

সরকারের ভূমি মন্ত্রনালয়ের আওতাধিন যে জমি সরকারের পক্ষে কালেক্টর বা ডিসি তত্ত্বাবধান করেন এমন জমিকে খাস জমি বলে। 


🌻চান্দিনা ভিটি কাকে বলে? 

হাট বাজারের স্থায়ী বা অস্থায়ী অকৃষি জমির যে অংশ প্রজার প্রতি বরাদ্ধ দেওয়া হয় তাকে চান্দিনা ভিটি বলে। 


🌻ওয়াকফ কাকে বলে? 

ইসলামি বিধান অনুযায়ী কোন ভূমি তার মালিক কর্তৃক ধর্মীয় ও সমাজ কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের ব্যয় ভার বহন করার উদ্দেশ্যে কোন দান করাকে ওয়াকফ বলে 


🌻মোতয়াল্লী কাকে বলে? 

যিনি ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধান করেন তাকে মোতওয়াল্লী বলে। ওয়াকফ প্রশাসকের অনুমতি ব্যতিত মোতওয়াল্লী ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারে না। 


🌻দেবোত্তর সম্পত্তি কাকে বলে? 

হিন্দুধর্ম মতে,ধর্মীয় কাজের জন্য উৎসর্গকৃত ভূমিকে দেবোত্তর সম্পত্তি বলে। 


🌻ফারায়েজ কাকে বলে? 

ইসলামি বিধান মোতাবেক মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বন্টন করার নিয়ম ও প্রক্রিয়াকে ফারায়েজ বলে। 


🌻ওয়ারিশ কাকে বলে? 

ওয়ারিশ অর্থ উত্তরাধিকারী । ধর্মীয় বিধানের অনুয়ায়ী কোন ব্যক্তি উইল না করে মৃত্যু বরন করলে তার স্ত্রী, সন্তান বা নিকট আত্মীয়দের মধ্যে যারা তার রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে মালিক হওয়ার যোগ্যতাসম্পন্ন এমন ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণকে ওয়ারিশ বলে। 


🌻সিকস্তি কাকে বলে? 

নদী ভাংঙ্গনের ফলে যে জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায় তাকে সিকন্তি বলে। সিকন্তি জমি যদি ৩০ বছরের মধ্যে স্বস্থানে পয়ন্তি হয় তাহলে সিকন্তি হওয়ার প্রাক্কালে যিনি ভূমি মালিক ছিলেন তিনি বা তাহার উত্তরাধিকারগন উক্ত জমির মালিকানা শর্ত সাপেক্ষ্যে প্রাপ্য হবেন। 


🌻পয়ন্তি কাকে বলে? 

নদী গর্ভ থেকে পলি মাটির চর পড়ে জমির সৃষ্টি হওয়াকে পয়ন্তি বলে। 


🌻দলিল কাকে বলে?

যে কোন লিখিত বিবরণ আইনগত সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য তাকে দলিল বলা হয়। তবে রেজিস্ট্রেশন আইনের বিধান মোতাবেক জমি ক্রেতা এবং বিক্রেতা সম্পত্তি হস্তান্তর করার জন্য যে চুক্তিপত্র সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করেন সাধারন ভাবে তাকে দলিল বলে।


👨‍💼সংগ্রহে 

হাবীব উল্যাহ মিয়াজী 

সাংবাদিক ও আইনের ছাত্র

ফেইসবুক থেকে নেওয়া 

রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ ২৫-০৬-২০২৫

 রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ ২৫-০৬-২০২৫ আজকের সংবাদ শিরোনাম বিশ্ব পরিবেশ দিবসের উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা --- পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টি...