#মিনু গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
![]() |
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : বন্যা সারা সকাল মিসেস সালমার বাসায় কাজ করে, তাকে খালাম্মা বলে ডাকে। সে মিসেস সালমার যাবতীয় কাজে সাহায্য করার চেষ্টা করে। দিবা শাখার একটি স্কুলেও সে পড়ে। পড়ালেখায় সে পিছিয়ে নেই। শুধু প্রকৃতির কোনো কিছুর সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠেনি; সে সময়ই বা তার কোথায়? তার নিজের জীবন আর কাজ নিয়েই সে ব্যস্ত। প্রকৃতিতে নয়, নিজের কাজেই সে শান্তি খুঁজে পায়। বন্যা তার কাজ দিয়ে, কথা দিয়ে মিসেস সালমাকে এমন করে নিয়েছে যে মিসেস সালমাও বন্যাকে পরিবারের অন্য সদস্যের মতোই মনে করে।
ক. মিনু কার বাড়িতে থাকত?
খ. ষষ্ঠ ইন্দ্ৰিয় বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. অবস্থানগত দিক থেকে উদ্দীপকের বন্যা ও মিনুর মধ্যে যে বৈসাদৃশ্য লক্ষ করা যায়— তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘বন্যার শিক্ষা ছিল প্রাতিষ্ঠানিক, আর প্রকৃতি হচ্ছে মিনুর পাঠশালা’– কথাটি বিশ্লেষণ করো।
প্রশ্নের উত্তর
ক মিনু দূরসম্পর্কের পিসিমার বাড়িতে থাকত।
খ. ষষ্ঠ ইন্দ্ৰিয় বলতে পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের বাইরে একটি বিশেষ দিক অর্থাৎ মনকে বোঝানো হয়েছে।
প্রত্যেক মানুষেরই পাঁচটি ইন্দ্রিয় আছে। লেখক এই পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের বাইরে মানুষের ভেতরে এক প্রকার অদৃশ্য অনুভূতির কথা বলেছেন। সে অনুভূতির উৎস হলো মানুষের মন বা হৃদয়। ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলতে এই মনকেই বোঝানো হয়েছে।
গ. শারীরিক অক্ষমতা এবং মানসিক অবস্থার বিচারে উদ্দীপকের বন্যা ও মিনুর মধ্যে বৈসাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।
‘মিনু’ গল্পের মিনু বাক্ ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী মেয়ে। বাবা-মা না থাকায় দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের বাসায় থাকে। সে বাড়ির সকল কাজ মনোযোগ দিয়ে করে । তার কোনো সঙ্গী না থাকায় প্রকৃতির সঙ্গেই গড়ে উঠেছে সখ্য। যে স্বপ্ন দেখে তার বাবা একদিন ফিরে আসবে। আর এই স্বপ্নই তাকে সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করতে সাহায্য করে।
উদ্দীপকের বন্যা যে বাসায় কাজ করে, সেই বাসার সে সদস্যের মতো হয়ে উঠছে। সে স্কুলে পড়ে, নিজের জীবন ও কাজ নিয়েই তার ব্যস্ততা। পারিবারিকভাবেও সে সবার সাথে মিশে গেছে, কিন্তু মিনু তা পারেনি। কাজ আর আত্মভাবনায় ডুবে থাকে মিনু। বন্যার তেমন দুঃখ না থাকলেও মিনুর মধ্যে বাবার জন্যে প্রতীক্ষার কষ্ট লক্ষ করা যায়। তাই দুজনের মধ্যে অবস্থানগত বৈসাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।
ঘ. বন্যা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করলেও মিনু শিক্ষা লাভ করেছে প্রকৃতি থেকে।
‘মিনু’ গল্পে মিনু একই সাথে বাক্ ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী এবং পিতামাতা হারা এতিম। সাধারণ মানুষের ভালোবাসা না পাওয়ায় প্রকৃতিকেই সে আপন করে নিয়েছে। মনে মনে সে সৃষ্টি করেছে কল্পনার জগৎ। ভোরবেলার নতুন সূর্যকে নিজের জ্বালানো চুল্লির সঙ্গে তুলনা করতেই তার ভালো লাগে। হলদে পাখি দেখে তার মনে পুলক জাগে। ভোরের শুকতারাকে সে নিজের সই বানিয়েছে, কেননা এত ভোরে সেই তাকে সঙ্গ দেয়। প্রকৃতি থেকেই সে প্রতিনিয়ত শিক্ষালাভ করে।
অন্যদিকে উদ্দীপকের বন্যা বাড়ির কাজ করলেও সে পেয়েছে গৃহকর্তার ভালোবাসা। সে স্কুলে গিয়ে শিক্ষালাভের সুযোগ পায়। পরিবারের সদস্যের মতোই জীবন অতিবাহিত করে। তাই তাকে প্রকৃতি থেকে শিক্ষা নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
অর্থাৎ বন্যা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষালাভের সুযোগ পেলেও মিনুর ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। সে বিরূপ সমাজে বসবাস করায় মানুষের সহানুভূতি পাচ্ছে না। আর তাই পাঠশালারূপ প্রকৃতি থেকেই মিনু শিক্ষা লাভ করেছে । প্রকৃতি তার নিয়মের মাধ্যমে মিনুকে শিক্ষা দিয়ে চলেছে।
এমন সব প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার দিতে ভুলবেন না।
Collected
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন