এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

গল্পের নাম:চার্লি, তুমি কি সত্যিই ছিলে? লেখক: নীল আহমেদ

 গল্পের নাম:চার্লি, তুমি কি সত্যিই ছিলে?

লেখক: নীল আহমেদ


সালটা ২০১৯

তখন আমার অনার্স ফার্স্ট ইয়ারের প্রথম বর্ষ শেষ হয়েছে। কলেজ ছুটি, ক্লাস নেই, আর বাসাতেও খুব একটা ব্যস্ততা নেই।

একদিন দুপুরবেলা, ফেসবুকে স্ক্রল করতে করতে হঠাৎ এক ধরনের খেলার ভিডিও চোখে পড়লো।

নাম শুনলাম  চার্লি চার্লি খেলা।


ভিডিওতে দেখাচ্ছে, কিছু ছেলে একটা কাগজে হ্যাঁ-না লিখে কলম বসিয়ে ডাকছে  চার্লি নামের এক আত্মাকে। এরপর নাকি কলম নিজে নিজেই ঘুরে উত্তর দিচ্ছে।


আমি হেসে ফেললাম, এ সবই নাটক।

কিন্তু জানো, ওই হাসির মধ্যেই কেমন যেন একটা অদ্ভুত কৌতূহল জন্ম নিল। মনে হতে লাগল, আমি নিজেই একবার করে দেখি না! সব কিছুতো ফোনে দেখি, এবার নিজের চোখে দেখে নিই এটা আসলে কী


সেদিন বিকেলে বাসায় আমি একাই ছিলাম।

ঘরের দরজা বন্ধ করে টেবিলে বসলাম। একটা সাদা কাগজ নিয়ে চারটি কোণ করে লিখলাম  হ্যাঁ, না, হ্যাঁ, না।

তারপর দুইটা কলম নিয়ে একটা অপরটার ওপর ক্রস করে রাখলাম। আশপাশে বাতাস একদমই নেই, জানালা বন্ধ, আমি একা। চারপাশ এত চুপচাপ ছিল যে, নিজের নিঃশ্বাসের আওয়াজ পর্যন্ত শুনতে পাচ্ছিলাম।


আমি ধীরে কণ্ঠে বললাম,

চার্লি, তুমি কি এখানে আছো?


প্রথমে কিছুই ঘটলো না।

তখন আবার বললাম,

চার্লি, তুমি কি আমার সঙ্গে খেলবে?


এইবার আমার নিঃশ্বাসে হালকা দোলা লাগতেই উপরের কলমটা একটু কেঁপে উঠলো।

আমি চমকে উঠলাম।

না! এটা কাকতালীয়,নিজেকে বোঝালাম। কিন্তু কলমটা ধীরে ধীরে ঘুরে গিয়ে "হ্যাঁ"-এর দিকে থেমে গেল।


হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেল আমার। কানে তখন কেবল নিজের হৃদস্পন্দনের আওয়াজ।

আমি এক ঝটকায় কলম দুটো সরিয়ে দিলাম।

মাথার ভেতর কেবল একটাই কথা ঘুরছে, এই খেলাটা কি মজা করে করা যায়?

তবে এটাও ভাবছিলাম হয়তো সবই কাকতালীয়।


কিন্তু রাতটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে আতঙ্কের রাত।


সেদিন রাত ১২টার পর।

আমি তখন বিছানায় শুয়ে আছি, আলো নিভানো, কেবল মোবাইল হাতে নিয়ে গেম খেলছিলাম।

হঠাৎ মনে হলো, আমার ঘরের দরজার বাইরে কেউ ধীরে ধীরে হাঁটছে।


ধুপ,    ধুপ,    ধুপ,


শব্দটা যেন একদম মেঝের কাছ দিয়ে আসছে।


আমি ঘামে ভিজে যাচ্ছি, কিন্তু সাহস করে কান পেতে শুনি  শব্দটা থেমে গেছে।


ধীরে ধীরে দরজার দিকে তাকালাম। নিচের ফাঁকা অংশ দিয়ে মনে হলো, কারো ছায়া দাঁড়িয়ে আছে।

আমি লাফ দিয়ে উঠে দরজা খুললাম।


কেউ নেই।

ঘরের বাইরেও নেই।


আমি দরজা বন্ধ করে আবার বিছানায় এলাম। এবার ভালোভাবে লাইট জ্বালিয়ে রাখলাম। নিজেকে বোঝালাম, মনের ভুল। এসব কিছুই না।


কিন্তু ঠিক ১২টা ৪৫ মিনিটে হঠাৎ করে আমার দেওয়ালে ঝুলে থাকা ঘড়িটা বিকট শব্দে পড়ে গেল।

একদম ফেটে পড়েনি, কিন্তু কাঁটাগুলো যেন ঘুরতে ঘুরতে স্থির হয়ে গেল এক জায়গায়।

আমি দৌড়ে ঘড়ি তুলে আবার তাকালাম   ঠিক তখন, আমার পড়ার টেবিলের ওপর রাখা সেই কাগজের মাঝখানে নিজে থেকেই আবার একটুখানি বাতাসে কাঁপলো।


কোনো জানালা খোলা ছিল না। দরজাও বন্ধ ছিল। আমি জানি, বাতাস আসেনি।

তাহলে?


এরপর যা ঘটলো, তা আজও বিশ্বাস করা কঠিন।

আমার ঘরের লাইট হঠাৎ ঝাপটাতে শুরু করল টিক টিক  টিক  করে একটার পর একটা ফ্ল্যাশ।

বালিশের নিচে রাখা মোবাইলটা একাই আলো জ্বালাল।

স্ক্রিনে কিছু লেখা নেই, কিন্তু সাদা আলোতে আমি পরিষ্কার দেখতে পেলাম ঘরের দেয়ালের এক কোণায় দাঁড়িয়ে আছে একটা ছায়ামূর্তি।

একটা মানুষের মতো, কিন্তু মুখ নেই। চুল নেই। চোখ শুধু গভীর দুইটা ফাঁপা গর্ত।


সে দাঁড়িয়ে আছে। তাকিয়ে আছে যেন বহুদিন ধরে আমার অপেক্ষায় ছিল।


আমি গলা শুকিয়ে গিয়েছিল। কিছু বলার শক্তি ছিল না।


সে ধীরে ধীরে আগাতে লাগল।

এক পা  দুই পা 

তারপর আমার একেবারে সামনে এসে দাঁড়িয়ে কানে কানে বলল


তুমি তো আমাকে ডাকেছিলে এবার আমি চলে যাব না।


আমি আর কিছু মনে রাখতে পারিনি।


পরদিন মা ফিরে এসে দেখে আমি ঘরের মেঝেতে পড়ে আছি। চোখ খোলা, মুখ সাদা, ঠোঁট শুকিয়ে গেছে।

ঘরের সব কিছু এলোমেলো, আর দেয়ালের ঠিক মাঝখানে লেখা

চার্লি এখানেই আছে।


তখন থেকে আজ পর্যন্ত আমি আর কোনোদিন ওই খেলাটা খেলিনি।

আর কারো সামনেও সেই নাম উচ্চারণ করিনি।


তবে এখনো মাঝেমধ্যে রাতে ঘুম থেকে উঠে দেখি

আমার টেবিলের উপরে সেই কাগজটা পড়ে আছে,

আর উপরের কলমটা একা একাই নড়ছে


@collected

কোন মন্তব্য নেই:

আলেমরা রাষ্ট্র চালাবে কিভাবে? তারা কি অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আইন পড়ে?

 আলেমরা রাষ্ট্র চালাবে কিভাবে? তারা কি অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আইন পড়ে? আরে কূপমন্ডুক! আলেমরা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে যা পড়ে তোরা...