সবচেয়ে মিথ্যা কবিতাছত্র, কিন্তু সবচেয়ে বাস্তব তার অর্থ
কবি মুতানাব্বী বলেন,
بعيني رأيت الذئب يحلب نملة ........... ويشرب منها رائباً وحليبا
অর্থাৎ, আমি নিজের চোখে দেখলাম, একটি নেকড়ে বাঘ একটি পিঁপড়ের দুধ দোয়াচ্ছে, আর সে তার দই ও দুধ পান করছে!
তিনি বলেন, এটা সবচেয়ে মিথ্যা কবিতাছত্র এই জন্য যে, নেকড়ে দুধ দোয়াতে জানে না, আর আসলে পিঁপড়া দুধ দেয় না।
পক্ষান্তরে সবচেয়ে বাস্তব তার অর্থ এই জন্য যে, একদা আমি কূফা শহরের বাজারে এক মাছ-বিক্রেতা গরীব মহিলার পাশে ছিলাম। ইতিমধ্যে একজন বিশাল ধনী ও অহংকারী লোক এসে তাকে জিজ্ঞাসা করল, 'এক রতল মাছের দাম কত?' মেয়েটি বলল, 'পাঁচ দিরহাম স্যার!' ধনী লোকটি বলল, 'দূর! এক রতলে এক দিরহাম (নাও)।' মেয়েটি বলল, 'স্যার! মাছ আমার নয়। (এর মালিক অন্য একজন।) আর আমি এক রতলে পাঁচ দিরহাম ছাড়া বিক্রি করতে পারব না।' তা শুনে ধনী ব্যক্তিটি বলল, 'আমাকে দশ রতল মাছ দাও।'
এ কথা শুনে মহিলাটি খুব খুশি হলো এবং ধারণা করল যে, সে তাকে পঞ্চাশ দিরহাম প্রদান করবে। কিন্তু সে তাকে মাছ দিলে তা গ্রহণ ক'রে দশ দিরহাম ছুঁড়ে দিল এবং পিঠ ফিরে যেতে লাগল। মহিলাটি তাকে ডাক দিল, 'স্যার, স্যার!' আর সে অবস্থায় সে কেঁদে ফেলল। কিন্তু ধনী লোকটি কোন সাড়া দিল না। তা দেখে আমিও তাকে ডাক দিলাম, কিন্তু সে আমাকেও সাড়া দিল না। এই জন্য আমি এই কবিতাছত্রটি রচনা করলাম।
'নেকড়ে' বলতে আমার উদ্দেশ্য হলো ধনী লোকটি, আর 'পিঁপড়ে' হলো মাছ-বিক্রেতা গরীব মহিলাটি।
কি সুন্দর এই কবিতাছত্রটি! আর কতই না বাস্তব তার উদাহরণ আমাদের এই যুগে!
'কিছু বিবেক এমনও মরে আছে যে, লক্ষ টাকার বেতনে কর্মরত অফিসার ৩০০ টাকা উপার্জনকারী গরীব শ্রমিকদের কাছ থেকেও ঘুস বা তোলা আদায় ক'রে থাকে।'
বিশ লাখ টাকার গাড়ি-ওয়ালা ধনী লোক কোন ভিক্ষুক দেখে দুটি টাকা চলে যাওয়ার ভয়ে ভিতর থেকে গাড়ির কাঁচ বন্ধ ক'রে দেয়।
'আমি তো নীরবে দিয়েছি আমার সব,
দুটি ফল তার করি অধিকার, এত তারি কলরব।
এ জগতে হায়, সেই বেশি চায়, আছে যার ভূরি ভূরি,
রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙ্গালের ধন চুরি।'
**************************************
সংগ্রহ ও অনুবাদ >> আব্দুল হামিদ আল-ফাইযি আল-মাদানি
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন