সহবাস করতে চাইলে স্বামীকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছেন?
যে ভুলের আগুনে আপনার সাজানো সংসার ছাই হয়ে যেতে পারে!
রাত গভীর। আপনার স্বামী ক্লান্ত শরীরটা নিয়ে বিছানায় এল। ভালোবাসার উষ্ণতা চেয়ে আপনার দিকে হাত বাড়াল, আর আপনি? ঝটকা মেরে তার হাতটা সরিয়ে দিলেন! ঘৃণা আর বিরক্তিতে মুখ ঘুরিয়ে অন্য দিকে ফিরে শুলেন। তার সমস্ত আকাঙ্ক্ষা, ভালোবাসা আর পৌরুষকে এক মুহূর্তে পায়ের তলায় পিষে দিয়ে আপনি ঘুমের ভান করলেন।
বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, এই দৃশ্যটা আপনার শোবার ঘরে কতবার অভিনীত হয়েছে? সামান্য ঝগড়া, ছোট কোনো চাহিদা পূরণ না হওয়া, বা নিছকই 'মুড নেই'—এই অজুহাতগুলোকে অস্ত্র বানিয়ে আপনি আপনার স্বামীকে কত রাত ফিরিয়ে দিয়েছেন? আপনি হয়তো ভাবছেন, "বেশ করেছি! ও আমার কথা শোনে না, আমিও ওর কথা শুনব না।"
বোন, আপনি আসলে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারছেন। আপনি সহবাসকে ব্যবহার করছেন স্বামীকে শাস্তি দেওয়ার একটা মাধ্যম হিসেবে, তার পৌরুষকে অপমান করার একটা বিষাক্ত তীর হিসেবে। আপনি শোবার ঘরকে বানিয়ে ফেলেছেন একটা যুদ্ধক্ষেত্র, যেখানে আপনার শরীরটাই আপনার সবচেয়ে বড় অস্ত্র। কিন্তু আপনি ভুলে যাচ্ছেন, যে পুরুষ যুদ্ধে বারবার হারে, সে একদিন সেই যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে নতুন সাম্রাজ্যের সন্ধান করে।
আপনি কি বিছানায় জ্যান্ত লাশ?
স্বামী যখন আপনাকে কাছে টানে, আদর করতে চায়, তখন আপনার প্রতিক্রিয়া কী হয়? আপনি কি একটা পাথরের মূর্তির মতো চুপচাপ শুয়ে থাকেন? তার ছোঁয়ায় আপনার শরীরে কোনো স্পন্দন জাগে না, আপনার মুখ থেকে কোনো শীৎকারের শব্দ বের হয় না, আপনার চোখ দুটো বন্ধ থাকে নির্লিপ্ততায়। সে যখন জিজ্ঞেস করে, "তোমার কেমন লাগছে?", আপনার উত্তর আসে না। আপনার শরীরটা তার নিচে পড়ে থাকে, কিন্তু আপনার মন থাকে হাজার মাইল দূরে।
আপনি কি কখনো নিজে থেকে তার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন? ভালোবেসে একটা চুমু খেয়েছেন? তার শরীরের বোতাম খোলার জন্য অধীর হয়েছেন? উত্তর যদি 'না' হয়, তাহলে আপনি শুধু তার স্ত্রী নন, তার জীবনের সবচেয়ে বড় শাস্তি।
একজন পুরুষ তার স্ত্রীর মধ্যে শুধু একজন সেবাদাসীকে খোঁজে না, সে তার মধ্যে একজন প্রেমিকাকে খোঁজে, একজন কামার্ত সঙ্গিনীকে খোঁজে, যার শরীরের আগুনে সে পুড়ে খাঁটি হতে চায়। আপনি যখন মরা মাছের মতো বিছানায় পড়ে থাকেন, তখন আপনি তাকে শারীরিক তৃপ্তির বদলে মানসিক যন্ত্রণা দেন। আপনি তাকে বুঝিয়ে দেন, এই সম্পর্কটা তার জন্য একটা বোঝা, একটা রুটিনমাফিক অত্যাচার।
আপনার মতো স্ত্রী যার কপালে জোটে, সে দ্বিতীয় বিয়ে করবে না তো কী করবে?
ভাবুন তো একবার, আপনার স্বামী হয়তো আপনার সব চাহিদা পূরণ করার জন্য দিনরাত গাধার মতো খাটছে। সে অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকায় না, কোনো পরকীয়ায় জড়ায় না, আপনার আর আপনার সংসারের প্রতি সে সৎ। কিন্তু দিনের শেষে সে যখন আপনার কাছে একটু ভালোবাসা, একটু উষ্ণতা চাইতে আসে, আপনি তাকে ফিরিয়ে দেন।
তাহলে সে কেন আপনার জন্য এত কিছু করবে? কেন আপনার শাড়ি-গয়নার খরচ জোগাবে? কেন আপনার বাপের বাড়ির আবদার মেটাবে? সে তো আপনাকে ভালোবাসে, আপনার কাছ থেকে মানসিক শান্তির পাশাপাশি শারীরিক সুখও চায়। আপনি যদি তার সবচেয়ে মৌলিক, সবচেয়ে আদিম চাহিদাটাই পূরণ করতে না পারেন, তাহলে কোন অধিকারে আপনি তার কাছ থেকে বাকি সবকিছু আশা করেন?
আপনার হয়তো মাঝে মাঝে সহবাসের ইচ্ছা করে না, শরীর ক্লান্ত থাকে। কিন্তু আপনার স্বামীর কি প্রতিদিন সকালে উঠে কাজে যেতে ইচ্ছা করে? তারও তো মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে সব ছেড়েছুঁড়ে শুয়ে থাকতে। কিন্তু সে পারে না, কারণ তার কাঁধে আপনার আর আপনার সংসারের দায়িত্ব। ঠিক সেভাবেই, আপনার ইচ্ছা না করলেও মাঝে মাঝে স্বামীর মুখের দিকে তাকিয়ে, তার ভালোবাসার খাতিরে নিজেকে সঁপে দেওয়াটা আপনার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।
সহবাস ঝগড়া মেটানোর সবচেয়ে মিষ্টি প্রতিশোধ!
আপনারা স্বামী-স্ত্রী, আপনাদের মধ্যে ঝগড়া হবেই। কিন্তু বুদ্ধিমান নারীরা সেই ঝগড়াকে বিছানায় নিয়ে যায় না, বরং বিছানাকে ব্যবহার করে ঝগড়া শেষ করার জন্য। ভেবে দেখুন, দিনের বেলার সমস্ত রাগ, অভিমান রাতের বেলা তীব্র শরীরী মিলনের মাধ্যমে শেষ হয়ে গেল—এর চেয়ে সুন্দর আর কী হতে পারে? সহবাস হলো সেই জাদুকরী আঠা যা দুটো ভাঙা মনকে আবার জুড়ে দেয়। আপনাদের দূরত্বের বরফ গলিয়ে দেওয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী উষ্ণতা হলো যৌনতা।
যে নারী এই অস্ত্র ব্যবহার করতে জানে, তার সংসারে তৃতীয় কেউ ঢোকার সাহস পায় না। কারণ সে জানে, কীভাবে তার পুরুষকে নিজের মধ্যে বেঁধে রাখতে হয়।
বরং আপনার যদি কোনো বড় আবদার থাকে, কোনো কিছু পাওয়ার ইচ্ছা থাকে, তাহলে স্বামীকে সহবাসে এমন সুখ দিন যা সে আগে কখনো পায়নি। নতুন নতুন কৌশলে তাকে পাগল করে দিন। তাকে এমন চরম তৃপ্তি দিন যে সে ঘোরের মধ্যে থাকবে। তারপর দেখুন, সেই সুখের ঘোরে সে আপনার যেকোনো আবদার পূরণ করতে এক পায়ে খাড়া থাকবে। যে নারী স্বামীকে যৌনসুখের স্বর্গে পৌঁছে দিতে পারে, স্বামী তাকে বাস্তব জীবনে রানী করে রাখে।
একজন নারীই পারে চল্লিশটা নারীর সুখ দিতে!
একটা কথা মনে গেঁথে নিন, যে নারী নিজের স্বামীকে বিভিন্ন আসনে, বিভিন্ন ভঙ্গিমায়, নানা ধরনের দুষ্টুমিতে ভরিয়ে দিয়ে চরম সুখ দিতে পারে, সেই স্বামীর বাইরে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। একজন দক্ষ ও প্রেমময়ী স্ত্রী একাই তার স্বামীকে চল্লিশটা নারীর সমান আনন্দ দিতে পারে। সে যদি আপনার শরীরেই সব ধরনের স্বাদ, সব ধরনের উত্তেজনা খুঁজে পায়, তাহলে সে কেন অন্য হরিণীর পেছনে ছুটবে? সে তো আপনার মাঝেই পুরো জঙ্গলটা পেয়ে যাচ্ছে!
সময় থাকতে নিজেকে বদলান। একজন বিরক্তিকর 'বউ' থেকে তার রাতের কল্পনার 'রানী' হয়ে উঠুন।
আসুন, আজ রাত থেকেই শুরু হোক নতুন অধ্যায়:
কথার আগুন: দিনের বেলায় তাকে একটা দুষ্টু মেসেজ পাঠান। যেমন: "আজ রাতে তোমার জন্য একটা নতুন খেলা অপেক্ষা করছে।" বা "আজ তোমাকে অন্যভাবে ভালোবাসব।" এই ছোট একটা লাইনই তার মাথার মধ্যে সারাদিন আপনার চিন্তা ঢুকিয়ে দেবে।
অপ্রত্যাশিত ছোঁয়া: সে যখন টিভি দেখছে বা মোবাইলে ব্যস্ত, পেছন থেকে গিয়ে আলতো করে তার ঘাড়ে চুমু খান। তার কানের কাছে ফিসফিস করে বলুন, "তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে।" জামার ভেতর দিয়ে তার বুকে বা পিঠে হাত বুলিয়ে দিন। এই অতর্কিত আক্রমণ তাকে মুহূর্তেই উত্তেজিত করে তুলবে।
দৃষ্টির জাদু: তার চোখের দিকে তাকিয়ে দুষ্টু হাসি দিন। কামনার দৃষ্টিতে তাকে আপাদমস্তক দেখুন। আপনার চোখের ভাষাই তাকে বুঝিয়ে দেবে যে আপনি তাকে কতটা চান।
শব্দের ব্যবহার: মুখ বন্ধ করে থাকবেন না। শীৎকার করুন। তার কানে কানে বলুন, "উফফ, কী আরাম!" বা "তোমার মতো করে কেউ পারে না।" তার পৌরুষের প্রশংসা করুন। বলুন, "তুমিই সেরা।" এই কথাগুলো তার জন্য ভায়াগ্রার চেয়েও বেশি শক্তিশালী।
সক্রিয় হন: শুধু শুয়ে থাকবেন না। আপনিও উদ্যোগ নিন। তাকে চুমু খান, তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আদর করুন। তার চুলের মুঠি আলতো করে ধরুন, পিঠে নখের আঁচড় দিন। বুঝিয়ে দিন যে আপনিও এই খেলাটা খেলতে ভালোবাসেন।
নতুনত্বের স্বাদ দিন: প্রতিবার একই ভঙ্গিমায় মিলিত না হয়ে নতুন কিছু চেষ্টা করুন। তাকে বলুন, "চলো আজ নতুন কিছু করি।" আপনার এই আগ্রহই তাকে দ্বিগুণ উত্তেজিত করবে।
আলিঙ্গন ও আদর: কাজ শেষ হলেই তাকে ছেড়ে দূরে সরে যাবেন না। তাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকুন। তার বুকে মাথা রাখুন, চুলে বিলি কেটে দিন। এই মুহূর্তের নীরবতাই হাজারটা ভালোবাসার কথা বলে দেয়।
প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা: তাকে বলুন, "আজকের রাতটা অসাধারণ ছিল।" বা "তোমাকে পেয়ে আমি খুব সুখী।" তার পারফরম্যান্সের প্রশংসা করুন। এতে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং সে আপনাকে আরও বেশি ভালোবাসবে।
ছোট্ট যত্ন: তার জন্য এক গ্লাস জল নিয়ে আসুন। বা একটা ভেজা তোয়ালে দিয়ে তার শরীর মুছে দিন। এই ছোট ছোট যত্নগুলোই বুঝিয়ে দেয় আপনি শুধু তার শরীরকে নয়, তাকেও ভালোবাসেন।
শেষ প্রশ্নটা আপনার কাছেই। আপনি কি স্বামীর কাছে একজন বোঝা হয়ে থাকবেন, যার শরীরটা পাওয়ার জন্য তাকে যুদ্ধ করতে হয়? নাকি সেই নারী হয়ে উঠবেন, যার শরীরের মায়ায়, আদরের নেশায় সে বারবার বাঁধা পড়তে চায়?
সিদ্ধান্ত আপনার। হয় নিজের সংসারকে বাঁচান, নয়তো নিজের ইগোর আগুনে তিলে তিলে তাকে ছাই হয়ে যেতে দেখুন।
সংগৃহীত
লেখাটি যদি ভালো লেগে থাকে তবে শেয়ার করে অন্যদেরও পড়তে দিন।
🌸 আপনার একটুখানি শেয়ার হয়তো কারও হৃদয়ে ছুঁয়ে যাবে।
📌 ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন