*মায়ের আঁচল*
আমার মনে হয় যে আঁচল কী তা আজকের বাচ্চারা জানে না , কারণ হ'ল আজকাল মায়েরা আর শাড়ি পরে না।
আঁচল অতীতের জিনিস।
মায়ের আঁচলের মূলনীতি ছিল মাকে মর্যাদা দেওয়া।
উপরন্তু, উনুন থেকে গরম কোন পাত্র নামানোর সময়, আঁচল গরম পাত্রটি ধরতেও কার্যকর ছিল।
আঁচল ছিল এক অনন্য বস্তু । আঁচলের মহিমার উপরে অনেক কিছু লেখা যায়।
আঁচল শিশুদের ঘাম / চোখের জল মুছাতে, নাকের সর্দি মুছাতে, নোংরা কান / মুখ পরিষ্কার করার জন্যও ব্যবহৃত হত। মাও আঁচলকে তোয়ালে হিসাবে ব্যবহার করতেন। খাবার খেয়ে মায়ের আঁচলে মুখটা পরিষ্কার করিয়ে দেওয়া আমাদের একটি খুশীর বিষয় ছিল।
কখনও কখনও, চোখের ব্যথার ক্ষেত্রে মা তার আঁচলকে গোল করে পাকিয়ে তাতে ফুঁ মেরে , গরম করে চোখের উপর রাখতেন, সমস্ত ব্যথা তখন অদৃশ্য হয়ে যেত ।
মায়ের কোলে ঘুমন্ত বাচ্চার জন্য কোলটি গদি এবং মায়ের আঁচল ঢাকার চাদর হিসাবে কাজ করত ।
যখনই কোনও অচেনা লোক বাড়ীতে আসত, শিশুটি মায়ের আঁচলের একটি আড়াল নিয়ে তাকে দেখত। শিশু যখনই কোনও বিষয়ে লজ্জা বোধ করত, তখন সে ঐ আঁচল দিয়ে মুখটি ঢেকে রাখত এবং আঁচলের ভেতর লুকিয়ে পড়ত ।
যখন বাচ্চাদের মায়ের সাথে বাইরে যেতে হত , তখন মায়ের আঁচল গাইড হিসাবে কাজ করেত । যতক্ষণ শিশুটির হাত আঁচল ধরে থাকত পুরো জগৎ তার মুঠোয় থাকত ।
শীতকালে যখন আবহাওয়া ঠান্ডা থাকত , তখন মা তাকে আঁচল দিয়ে চারপাশে জড়িয়ে শীত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করতেন।
আঁচল এপ্রোন হিসাবেও কাজ করত। আঁচল গাছ থেকে পড়া আম, জাম, খেজুর এবং মিষ্টি সুগন্ধযুক্ত ফুল কুড়িয়ে আনতেও ব্যবহৃত হত। আঁচল, ঘরে রাখা জিনিস থেকে ধুলো মুছে ফেলতেও খুব সহায়ক ছিল।
আঁচলে একটি গিঁট দিয়ে, মা একটি চলন্ত ব্যাঙ্ক সঙ্গে রাখতেন এবং যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকত তবে মাঝে মাঝে তিনি সেই ব্যাঙ্ক থেকে কিছু পয়সা দিতেন ।
আমার মনে হয় না বিজ্ঞান এত উন্নতি করার পরেও আঁচলের বিকল্প কিছু খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছে।
*মায়ের আঁচল এক মায়াবী অনুভূতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি পুরানো প্রজন্মের অন্তর্ভুক্ত এবং সর্বদা আমার মায়ের ভালবাসা এবং স্নেহ অনুভব করি, যা আজকের প্রজন্মের সম্ভবত বোঝার বাইরে* । 🌻
Collected❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️
![]() |
ফেইসবুক থেকে নেওয়া