এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

১৬৩১ সালে মমতাজ মহলের স্মৃতিতে মোগল সম্রাট শাহজাহান তাজমহল নির্মাণের আদেশ দেন। একই সময়ে, ১৬৩৬ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি। দুইটি স্থাপত্যই বিশ্ববিখ্যাত—তবে একটির শিকড়ে শোক ও সৌন্দর্যের আরেকটির ভিত গড়ে উঠেছে জ্ঞান ও শিক্ষার ওপর।

 ১৬৩১ সালে মমতাজ মহলের স্মৃতিতে মোগল সম্রাট শাহজাহান তাজমহল নির্মাণের আদেশ দেন। একই সময়ে, ১৬৩৬ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি। দুইটি স্থাপত্যই বিশ্ববিখ্যাত—তবে একটির শিকড়ে শোক ও সৌন্দর্যের আরেকটির ভিত গড়ে উঠেছে জ্ঞান ও শিক্ষার ওপর।


তাহলে প্রশ্ন জাগে: একসময় যারা তাজমহল বানাচ্ছিল, অন্যদিকে তারা কি চাইলে হার্ভার্ড বানাতে পারতেন না?


শুধু তাজমহল নয়, ভারতবর্ষের ইতিহাসজুড়ে ছড়িয়ে আছে অগণিত প্রাসাদ, উদ্যান, সমাধি আর সোনা-রুপার অলংকারের গল্প। অথচ সেই যুগেও হাজার হাজার মানুষ ছিল শিক্ষাহীন, চিকিৎসাহীন, দারিদ্র্যপীড়িত।


এমনকি আজও আমরা প্রায়শই দেখি—উপমহাদেশের ধনকুবেরদের অর্থ ব্যয় হয় ব্যক্তিগত বিলাসিতা, বিয়ের শোভাযাত্রা, নায়ক-নায়িকা দিয়ে নাচানো কিংবা নামজাদা রিসোর্টে একচেটিয়া ভোগে।


অথচ পশ্চিমে দৃশ্যটা একেবারে আলাদা।


বিল গেটস, ওয়ারেন বাফেট, মার্ক জুকারবার্গ—বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় থাকা এদের অনেকেই জীবনের শেষে তাদের সম্পদ বিলিয়ে দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাদের লক্ষ্য: পৃথিবীকে একটু ভালো করে রেখে যাওয়া। তারা হাসপাতাল গড়েন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি তহবিল তৈরি করেন, চিকিৎসা গবেষণায় অনুদান দেন।


সম্প্রতি একজন মার্কিন ধনকুবের নারী তার জীবনের সব সঞ্চয় দান করে গেছেন আলবার্ট আইনস্টাইন মেডিকেল স্কুলে। ফলাফল? সেখানকার ছাত্রছাত্রীদের এখন আর শিক্ষাঋণ নিতে হবে না—তারা ফ্রি পড়তে পারবে। একজন অচেনা নারী আজীবনের জন্য রয়ে যাবেন ভবিষ্যৎ ডাক্তারদের হৃদয়ে। সেই কৃতজ্ঞতা থেকে তারা হয়তো হাজার মানুষকে সেবা করবে।


এই মানবিক মূল্যবোধটাই সত্যিকার উন্নয়নের ভিত্তি।

উপমহাদেশের চিত্র কিছুটা করুণ।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল নবাব সলিমুল্লাহর সহায়তায়। এরপর কী?


আর কোনো বিশিষ্ট ধনকুবের কি নিজ উদ্যোগে এমন কোনো বিশ্ববিদ্যালয় গড়েছেন? তথ্যভিত্তিক পরিসংখ্যান বলছে—ভারত, বাংলাদেশ কিংবা পাকিস্তানে প্রতিষ্ঠিত উচ্চমানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বেশিরভাগই রাষ্ট্রনির্ভর। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ধনকুবেরদের অংশগ্রহণ থাকলেও তা মূলত লাভের উদ্দেশ্যে, জনসেবার মানসে নয়।


এদিকে আমেরিকার বহু নামী বিশ্ববিদ্যালয় যেমন - স্ট্যানফোর্ড, কর্নেল, রকফেলার, কার্নেগি মেলন—এসব সবই কোনো না কোনো দানশীল ব্যক্তির নামধারী। তারা ব্যবসা করেছেন, সম্পদ গড়েছেন, তারপর সেই সম্পদ মানবতার সেবায় উৎসর্গ করেছেন।


আমাদের সংস্কৃতি কেন পিছিয়ে?


উপমহাদেশে ধনকুবের হওয়া মানেই—ছেলের বিয়েতে হীরার কোট, মেয়ের বিয়েতে সোনার পালঙ্ক, গাড়ির বহর, আর ফটোসেশনে নামজাদা সেলিব্রিটি।


কেউ কেউ জীবনের শেষে মসজিদ, মন্দির বা গীর্জা গড়েন সমাজসেবার তকমা জুটিয়ে নেওয়ার আশায়।

তারপর মৃত্যুর পরেই শুরু হয় সম্পদের জন্য উত্তরাধিকারীদের হানাহানি, মামলা-মোকদ্দমা, এমনকি মারামারি।


আলফ্রেড নোবেল ইউরোপের ধনকুবের ছিলেন। মৃত্যুর আগমুহূর্তে তিনি তার সম্পদের প্রায় পুরোটাই দিয়ে গিয়েছিলেন নোবেল পুরস্কার প্রবর্তনের জন্য।

তাঁর বদৌলতেই আজ পৃথিবীর সেরা বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, শান্তিপ্রিয় ব্যক্তিরা সারা বিশ্বের স্বীকৃতি পান।


কিন্তু তিনি যদি আমাদের উপমহাদেশে জন্মাতেন?


সম্ভবত তিনি ছেলের পৈত্রিক জমিতে তিনতলা বাড়ি করতেন, মেয়ের বিয়েতে দিল্লি থেকে ডিজে আনাতেন, এবং শেষ বয়সে দুইটা ঘর মসজিদে লাগিয়ে “দাতব্য” হিসেবে প্রশংসা কুড়াতেন।


এই লেখার উদ্দেশ্য তুলনা করা নয়, বরং আত্মবিশ্লেষণ।

একজন ধনকুবের কী করবেন, সেটি অবশ্যই তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তবে আমাদের সংস্কৃতিতে যদি ‘দান’ শব্দটি লোক দেখানো অনুষ্ঠান না হয়ে, সত্যিকারের মানবিক দায়িত্ববোধ হয়ে ওঠে—তাহলেই হয়তো আমরাও বিশ্বমানবতার অগ্রযাত্রায় অংশ নিতে পারব।


একদিন যদি আমাদের কেউ—বিল গেটসের মতো একটি স্কুল গড়ে দেন, কোনো দরিদ্র শিক্ষার্থীর ঋণ মকুব করে দেন, কিংবা গবেষণার জন্য অর্থ তহবিল দেন, সেটিই হবে সত্যিকার নায়কোচিত আচরণ।


যেদিন এই ট্রেন্ড শুরু হবে, সেদিন হয়তো আমরা এক-একজন শাহরুখ বা সালমানের চেয়েও বড় নায়ক পাবো—যারা নাচিয়ে নয়, গড়ে দিয়ে ইতিহাসের পাতায় অমর হবেন।


©️ An Animeshো

কোন মন্তব্য নেই:

কাজী নজরুল ইসলাম যখন বেঁচে ছিলেন, তখন বেচারার সমস্যা ছিল এই যে মোল্লারা তাঁকে ডাকতেন কাফের, এবং হিন্দুরা বলতো যবন। যেহেতু তিনি বিলেত ফেরত ছিলেন না, তাই বিদ্বানরা তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখার দৌড় নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতো। 

 কাজী নজরুল ইসলাম যখন বেঁচে ছিলেন, তখন বেচারার সমস্যা ছিল এই যে মোল্লারা তাঁকে ডাকতেন কাফের, এবং হিন্দুরা বলতো যবন। যেহেতু তিনি বিলেত ফেরত ছ...