বীজ_থেকে_চারা_উৎপাদনের_কৌশল_ও_পরিচর্যা:
(শেয়ার করে টাইমলাইনে রেখে দিন)
বেশিরভাগ গাছই বীজের মাধ্যমে উৎপাদনযোগ্য। তবে বীজ থেকে চারা উৎপাদন হবে কিনা তা প্রথমত সৃষ্টিকর্তার আগ্রহ। একটু চেষ্টা করলেই ঘরে বসেই উৎপাদন করা সম্ভব বীজ থেকে চারা।
বীজের মাধ্যমে চারা উৎপাদনের জন্য বীজতলার মাটি ভালোভাবে ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। বীজ থেকে চারা পেতে হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা ও প্রয়োগ করা জরুরি:
#বীজ_জার্মিনেশন এর নিয়মঃ
(শেয়ার করে টাইমলাইনে রেখে দিন)
>>>শিম, বরবটি,লাউ, শষা,তরমুজ,করলা,রকমেলন ইত্যাদি (বড় বীজ) জাতীয় বীজ জার্মিনেশন এর নিয়মঃ
১। প্রথমে রোদে ১ ঘন্টা রাখতে হবে. কারন বীজ গুলি সুপ্ত অবস্থায় থাকে,রোদ পেলে সুপ্ততা ভাংগে।
২। গ্লাসে পরিষ্কার পানিতে বীজের খোলসের উপর নির্ভর করে ১২ থেকে ২৪ ঘন্টা বীজ ভিজিয়ে রাখুন।পেঁপে বীজ ৪৮ ঘন্টা।
৩। পানি ছেকে বীজ গুলি টিস্যু পেপার এ মুরিয়ে হালকা(খুবই অল্প) পানি স্প্রে করে বক্সে (যেন বাতাস না ঢুকে এমন বক্স বা বয়ামে) রেখে দুই থেকে চার দিন পর চেক করুন। অনেক বীজে বেশী সময় লাগতে পারে।
৪। দেখবেন বীজ অংকুরিত হচ্ছে।বীজ অংকুরিত হওয়ার সাথে সাথে অংকুর বড় না করে অংকুরিত বীজ সীড ট্রে, আইস্ক্রীমের কাপ বা টবে আস্তে করে লাগাবেন যেন বীজ এর অংকুর না ভাংগে। বীজের উপরে হালকা মাটি দিবেন। পানি দিয়ে দিন।
৫। প্রতিদিন সময় করে পানি দিবেন।
৬। ১৫ থেকে ২০ দিন পর বড় টবে লাগিয়ে দিতে পারবেন। ও নিয়মিত পরিচর্যা করুন।
>>>টমেটো,মরিচ,ক্যাপসিকাম, তাল বেগুন,স্টবেরী(ছোট বীজ) জাতীয় বীজ জার্মিনেশন এর নিয়মঃ
১। প্রথমে কড়া রোদে ১ ঘন্টা রাখতে হবে। কারন বীজ গুলি সুপ্ত অবস্থায় থাকে,রোদ পেলে সুপ্ততা ভাংগে।
২। গ্লাসে পরিষ্কার পানিতে ১০-১২ ঘণ্টা বীজ ভিজিয়ে রাখুন।
৩। বীজ লাগানো টবে বা সীড ট্রে বা পাত্রের মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। ঝুরঝুরে কিছু মাটি আলাদা করে রাখতে হবে যেটা বীজ বপনের পর দিতে হবে। মাটির সাথে সম্ভব হলে বালু, জৈব সার, ভার্মি কম্পোস্ট, হাড়ের গুড়া বা কোকোপিট ব্যবহার করলে হয়।তাহলে মাটি জমাট বাধে না ঝুরঝুরে থাকে।
৩। পানি ছেকে বীজ গুলি টব বা পাত্রে বিছিয়ে দিন। তার উপরে হালকা করে ঝুরঝুরে মাটি দিয়ে দিন এমনভাবে যেন বীজ দেখা না যায়।
৪। পাত্রে পানি স্প্রে করে দিন।
৫। টব বা পাত্রের উপরে পলিথিন দিয়ে বেধে রাখুন (যেন বাতাস না ঢুকে) বা ভেজা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখুন এবং অন্ধকার ছায়া যুক্ত স্থানে রেখে তিন থেকে সাত দিন পর চেক করুন। বীজ অংকুরিত করার জন্য অন্ধকার ও তাপ উৎপন্ন হলে দ্রুত অংকুরিত হয়। ৭ দিন থেকে ১ মাস লাগে অংকুরিত হতে বীজ বেধে।
৬। দেখবেন বীজ অংকুরিত হচ্ছে। তারপর পলিথিন খুলে পানি স্প্রে করে রেখে দিন,
৭।প্রতিদিন সময় করে হালকা পানি স্প্রে দিবেন।
৮। ১৫ থেকে ৩০ দিন পর বড় টবে লাগিয়ে দিতে পারবেন। ও নিয়মিত পরিচর্যা করুন।
..........................................
১) বীজ বপনের স্থান নির্বাচন:
বীজতলা, পলিব্যাগ বা যে কোনো পাত্রেই বিজ বপন করতে পারবেন।
২) মাটি তৈরি:
ঝুরঝুরে বেলে দো-আঁশ মাটি ২০%, ভার্মি কম্পোস্ট ৩০%, শুকনা গোবর সার ১০%, কোকোপিট এর গুড়া,৩০% হাড়ের গুড়া ৬%, বালু ৪%
এই উপাদান গুলো মিশিয়ে মাটি প্রস্তুত করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
৩) শুধু কোকোপিট বা শুধু ভার্মি আবার ভার্মি ও কোকোপিট মিশিয়ে বিজ বপন করা যায়।
৪)অঙ্কুরিত করণ:
বিজ অঙ্কুরিত করার ক্ষেত্রে বিজতলার উপর চট বিছিয়ে দিতে পারেন। এতে জার্মিনেশনের হার বেড়ে যায়। এরপর সেই বস্তার উপর থেকেই স্প্রে আকারে পানি দিন। এতে ভেতরেই আদ্রতা বৃদ্ধি পেয়ে বিজ দ্রুত অঅঙ্কুরিত হবে।
৫) বাড়তি যত্ন:
*বিজ বপনের আগে বিজ গুলোকে কিছুটা সময় হাইড্রোজের পার অক্সাইড এর দ্রবনে ভিজিয়ে নিতে পারেন । হাইড্রোজেন পার অক্সাইড মূলত বিজের জীবাণু ধ্বংস করে ।
*বিজ বপনের পর সেই বিজতলায় বা পাত্রে যেই পানিটা স্প্রে করবেন সেইটা সাধারণ পানি ব্যাবহার না করে ছত্রাকনাশক মিশিয়ে ব্যাবহার করতে পারেন।
৬) চারা হওয়ার পর পরিচর্যা:
*চারা লাগানোর ৮ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত কোন কিছু করতে হবে না।
*টবে বা বীজতলায় চারা লাগানোর পর আগাছা বেশি হয়, ফুলের জমিতে নিড়ানি দিয়ে এবং মাটি আলগা করে দিতে হবে, তারপর মাটিতে ডিএমপি সার শুধু গাছের পাশে ছিটিয়ে দিয়ে পানি দিতে হবে।
*চারা যখন বড় হবে তখন গাছের গোড়ায় মাটি দিতে হবে। ফুল আসার পর পর্যাপ্ত পানি দিলে ফুল বড় হয় এবং ফুলের রং ভালো হয়।
*মাটিতে পানি সাধারণত খুব ভোরে অথবা সন্ধ্যার আগে দিতে হবে, প্রচন্ড রোদে মাটিতে পানি দেওয়া যাবে না কারণ এতে চারার ক্ষতি হয়।
*গাছে বেশি ফুল পেতে চাইলে ‘‘স্টপিং পদ্ধতিতে’’ গাছের ডগা কেটে দিতে হবে। এতে গাছে ডালপালা ও বেশি ফুল হবে। চারা অবস্থায় ‘ডায়থেন এম-৪৫’ এবং ‘রোভরাল’ এই দুই প্রকার ওষুধ স্প্রে করলে রোগ ও পোকার আক্রমণ কম হবে।
*গাছের তাড়াতাড়ি বৃদ্ধির জন্য থিওভিট ১০ লিটার পানিতে ২ চা চামচ মিশিয়ে স্প্রে করা যেতে পারে, গাছে কুঁড়ি আসলে থিওভিট দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
*৩ থেকে ৪ পাতা বিশিষ্ট সবল চারা রোপণের জন্য ভাল। বিকালে যখন রোদের তাপ কমে যাবে তখন চারা রোপণ করতে হবে। চারা থেকে চারার দূরত্ব হবে ৬ ইঞ্চি।
*চারাগুলো লাগানোর আগে পাত্রে পানি নিয়ে দুই চা চামচ ডায়াথেন- এম ৪৫ ওষুধ মিশিয়ে চারাগুলো ঐ পানিতে ভিজিয়ে ৫ থেকে ৬ মিনিট পর তুলে লাগালে চারার মৃত্যুহার অনেক কম হবে।
*চারা রোপণের ৩০ থেকে ৪৫ দিন পর ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
(সংগ্রহ)
(ছবিতে টিস্যু পেপার পদ্ধতিতে মরিচ বীজ জার্মিনেশন থেকে পরিনত চারা গাছ এর বিভিন্ন ধাপ গুলা দেওয়া হলো)
ফেইসবুক থেকে নেওয়া হলো
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন