এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

কবিত্ব যে মারাত্মক একটা অসুখ সে বিষয়ে তাঁর মনে বিন্দুমাত্র দ্বিধা ছিল না

 কবিত্ব যে মারাত্মক একটা অসুখ সে বিষয়ে তাঁর মনে বিন্দুমাত্র দ্বিধা ছিল না। মনে করতেন প্রতিভা এক ধরনের পাগলামি। অথচ যেদিন বায়রণের' Corsair ' প্রকাশ হল সেদিন বিক্রি হল দশ হাজার কপি। সেকাল কেন একালেও কোন কবির কবিতার বই একদিনে অত কপি বিক্রি স্বপ্ন।


লোকে বায়রণের কবিতা পড়তেন মন্ত্রমুগ্ধের মত, কবিতাই ছিল তাঁর অসাধারণ জনপ্রিয়তার মূল কারণ, কবিতার নায়ক হিসেবে পাঠকরা বায়রণকে ভেবে নিতেন। স্বয়ং গ্যেটে বায়রণ সম্পর্কে বলেছিলেন লোকে ইংরেজরা যাই বলে বলুক ইংল্যান্ডের সত্যি যদি কিছু দেখাবার থাকে তবে শেকসপীয়রের পরে বায়রণ।হয়ত বায়রণের কবিতার প্রথম দিকের দ্যুতি আজ আর নেই,কবিত্বের বিচারে তিনি শেলী,কীটসের নীচে! কিন্তু রোম্যান্টিক কবির মূর্তি হিসেবে নিঃসঙ্গ এবং রহস্যময় জীবন কাটানোর জন্য বায়রণ চিরকাল উজ্জ্বল হয়ে থাকবেন। তখন বায়রণের পর পর কাব্যগ্ৰন্থ প্রকাশিত হয়েছে।শেলী,কিটসের মত দুজন তরণ আব্যপ্রয়াসী অপলক বিস্ময়ে চেয়ে দেখলেন বায়রণকে।তারা মনে করতেন বায়রণ তাদের চেয়ে অনেক বড় কবি। স্বয়ং কিটস বলেছিলেন " হায় আমি যদি বায়রণের মত লিখতে পারতাম। 


কাব্য প্রতিভা প্রকাশের আগেই বায়রণের প্রেমিক প্রতিভার বিকাশ।ষোলো বছর বয়সে প্রথমবার উন্মত্ত ভালবাসায় পড়েছিলেন। প্রেমিকার নাম মেরি সাওয়ার্থ।ট্রিনিটি কলেজে পড়ার সময় কবিতার বই প্রকাশ হল বায়রণের। আপত্তি উঠল সেই বই নিয়ে, নিজের হাতে বায়রণ বইয়ের সব কপি পুড়িয়ে ফেললেন। মেয়েরা সত্যি চুম্বকের মত তাঁকে টানত, অনেক রমণীর সাথে বায়রণ সম্পর্কে জড়িয়েছেন। তবে সর্বাগ্ৰে নাম করতে হয় ক্যারোলিনের। বায়রণকে চোখে দেখার আগে তিনি তিনি তাঁর কবিতা পড়ে তাঁর সম্বন্ধে জেনে মুগ্ধ হয়েছিলেন। নির্লজ্জতা ছিল ক্যারোলিনের, বায়রণের প্রতি উন্মাদ ভালবাসা জানাতে তিনি কখনও স্থান কাল পাত্রের তোয়াক্কা করেন নি।সব পার্টিতে বায়রণের কণ্ঠলগ্না হয়ে থাকতেন।এমন কি নিজের সব রত্ন অলঙ্কার প্রেমিক কে দিতে চেয়েছিলেন। উভয়ের প্রকাশ্য প্রেমলীলায় দেশে ঢি-ঢি পড়ে গেল। তবে শ্রেষ্ঠ কবি আর অভিজাত পরিবারের রমণীর প্রেমে এল বাধা এল, লন্ডনে গসিপ চর্চার বিষয় বায়রণের প্রেম। সম্পর্কটা শেষ পর্যন্ত তিক্ত হল। ওদিকে বায়রণকে বিয়ে করলেন অ্যান ইসাবেলা মিলব্যাঙ্ক।


তবে তারা সুখী হননি,মিলব্যাঙ্ক একদিন বায়রণ কে ছেড়ে গেলেন।মানুষ হিসেবে বায়রণ ছিলেন সংবেদনশীল,স্বভাবে বেপরোয়া হলেও উদার, অভিমানী।একের পর এক কাব্যগ্ৰন্থে তখন অসমান্য জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। কিন্তু পৃথিবীতে সবার সব দিন সমান যায় না। বায়রণের জন্য ইংল্যান্ড আর নিরাপদ নয়।কারণ নেপোলিয়ন কে তিনি পছন্দ করতেন। শেষ পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ উঠল সেই সব অভিযোগ প্রায় রাজদরবারে পৌঁছে যায়। তবে আদালতের কাঠগড়ায় না উঠলেও জনগণের বিচারে তিনি দোষী। শেষ পর্যন্ত কবি যেদিন মাতৃভূমি ছাড়লেন সেদিন বায়রণ কে দেখে অসংখ্য রমণী চোখের জল ফেলে।প্রেমিকারা বায়রনের জন্য কী-ই না করেছে। যেমন এক অভিজাত পরিবারের সুন্দরী মহিলা বায়রনকে প্রেম নিবেদন করার জন্য বালকের ছদ্মবেশ ধরেছিল। আবার কেউ প্রেম নিবেদনের জন্য  ইংল্যান্ড থেকে ইতালি পর্যন্ত পুরো রাস্তা তার পিছু নিয়েছিল।

সেই বছর বায়রণের শ্রেষ্ঠ কাব্য 'ডন'প্রকাশিত হয়।জেনিভায় এসে শেলীর সাথে বন্ধুত্ব হল।প্রবাসেও তিনি অনেক নারীর সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছেন।কুমারীর থেকে বিবাহিতা রমণীর সাথে তাঁর সম্পর্ক হয়েছে।গ্ৰীসের প্রতি তীব্র ভালবাসা ছিল তখন তুর্কীদের আক্রমনে গ্ৰীস বিপর্যস্ত। সেইসময় শরীর অসুস্থ হয়, মৃত্যুর আগে বারবার বলেছেন কেন একবার দেশে ফিরলেন না। তবে মাতৃভূমিতে না ফিরলেও ভাবপ্রবণ জনপ্রিয় ইংরেজ কবি লর্ড বায়রন- ‘ইংল্যান্ডের রোমিও’ হিসেবে জনপ্রিয়।ইংরেজি সাহিত্যের সর্বকালের সর্বাধিক আলোচিত কবিদের একজন লর্ড বায়রন। প্রয়াত হয়েছিলেন  ১৯ এপ্রিল বয়স তখন মাত্র ৩৬ বছর ।কবির প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।।


পুস্তক ঋণ,বরণীয় মানুষ,স্মরণীয় বিচার, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

Immage courtesy- Wikipedia

কোন মন্তব্য নেই:

সৌন্দর্যের দেবী ক্লিওপেট্রাআত্মহনন করেন, একটি বিষাক্ত সাপ তুলে নিয়েছিলেন হাতে, আর সেই মুহূর্তে সাপ ছোবল মারে তাঁর বুকে।

 সৌন্দর্যের দেবী ক্লিওপেট্রাআত্মহনন করেন, একটি বিষাক্ত সাপ তুলে নিয়েছিলেন হাতে, আর সেই মুহূর্তে সাপ ছোবল মারে তাঁর বুকে। ক্লিওপেট্রা ....মিশ...