'পাটখালী' নামকরণের ইতিহাস
-------------------------------------------
'পাটখালী' শব্দটি খালী প্রত্যয়যুক্ত একটি সাধিত শব্দ।
পাট বা কোষ্টা বাংলাদেশ তথা বিশ্বে সোনালী আঁশের উদ্ভিদ বলে পরিচিত ও শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী একটি ফসল। এক গবেষণায় দেখা যায়, দক্ষিণ মাগুরার এই স্থানটির মাটি, পাট চাষের জন্য অধিক উপযোগী এবং উপমহাদেশে পাট চাষের শুরু হতে, পাট উৎপাদনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে। তাই স্থানটির নাম করণে 'পাট' শব্দটি 'সোনালী আঁশ' অর্থেই সমীচীন।
খাল থেকে খালী।
খাল শব্দের অর্থ দীর্ঘ খাত, জলপ্রবাহের খাই। শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে সংস্কৃত খাত থেকে, যার অর্থ গভীর নালা। খাল বা গভীর নালাকে ক্ষুদ্র বোঝাতে খালি/খালী ব্যবহৃত হয়।
বাংলাদেশে 'খালী' প্রত্যয়যুক্ত দুটি জেলাসহ একাধিক উপজেলা ও স্থানের নাম রয়েছে। নোয়াখালী, পটুয়াখালী, কুমারখালী, বোয়ালখালী, মহেশখালী, কালুখালী।
সুতরাং বলা যেতে পারে এখানে পাট সংশ্লিষ্ট ছোট খাল ছিল। যেখানে চৈত্র-বৈশাখে পানিশূন্য অবস্থায় পাট বোনা হত অথবা বর্ষা মৌসুমে পাট পঁচানো হতো বলে স্থানটিকে ডাকা হতো পাটের খাল। সময়ের পরিক্রমায় এবং উচ্চারণের সুবিধার্থে যা বর্তমান 'পাটখালী'
পাটখালী নাকি পাটোখালী
-------------------------------------
'নদী' শব্দটি লিখিত শুদ্ধরূপ হলেও আমরা কিন্তু উচ্চারণ করে থাকি 'নোদি'
বাংলা ভাষায় এরূপ অনেক শব্দ রয়েছে যেগুলো লিখিত রূপের বাইরে (ও) কার উচ্ছারণরীতি হয়। অনুরূপ তিন বা তার অধিক বর্ণে গঠিত শব্দের মধ্য-‘অ’-এর আগে যদি অ, আ, এ এবং ও-কার থাকে তবে সে-ক্ষেত্রে সে ‘অ’-এর উচ্চারণে ‘ও’-কারের প্রবণতা থাকে সমধিক। এমন কিছু শব্দ নিম্নরূপ:
লিখিতরূপ উচ্চারণরীতি
বামন বামোন্
কানন কানোন্
রাবণ রাবোন্
বামনখালী বামোনখালি
সাগরদাঁড়ি শাগোরদাড়ি
পাটখালী পাটোখালি
শতখালী শতোখালি
কতদিন কতোদিন
শব্দগুলোর উচ্চারণরীতিতে মধ্য বর্ণে 'ও' কার হলেও লিখিতরূপ কিন্তু 'ও' কার বিহীন। আলোচ্য
'পাটখালী' গ্রামটির লিখিত যাবতীয় নথিপত্র, দলিলদস্তাবেজেও তদ্রূপ 'পাটখালী' বানানটি 'ও' কার ছাড়া ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তাই লিখিতরূপে 'পাটখালী' লেখা যুক্তিযুক্ত, যা উচ্চারণরীতিতে পাটোখালী উচ্চারিত হয়।
আযম জোয়ারদার
পাটখালী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন