#ব্যাখ্যাঃ বন্ধুগণ,চাকরি শব্দের উৎপত্তি হয়েছে চাকর থেকে।চাকর তুর্কী শব্দ, এর মানে হল দাসত্ব।ইংরেজ শাসনামলে যখন আমরা আক্ষরিক অর্থেই দাস ছিলাম তখন তারা শাসনকার্যের সুবিধার্থে আমাদের দেশীয় লোক নিয়োগ দিত নিম্ন শ্রেণীর কর্মচারী হিসাবে।আর এই দেশের মানুষের মূল সমস্যাই হল সাদা চামড়ার মানুষ দেখলে হুশ হারায়ে ফেলে। তাদের পাংখাপুলার, বাবুর্চি, ঝাড়ুদার, আয়া সব হত উপমহাদেশীয়। তাদের কাছে আমাদের লেভেল ছিল ওই পর্যন্তই এবং সবচাইতে অদ্ভূত ব্যাপার হল, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকেও তারা ওভাবেই তৈরি করল যেন শিক্ষিত হবার পর সবাই চাকর হতে পারে।পাখি উড়ে গেলেও যেমন পালক ফেলে যায় তেমন ইংরেজরা চলে গেলেও তাদের তৈরি সিস্টেম থেকে গেল।বাচ্চাদের ছোট বেলা থেকেই ভাল চাকর হিসাবে গড়ে তোলা শুরু হল।বর্তমানে একজন মানুষের সাফল্যের মাপ- কাঠিই হল ভাল একটা চাকরি।আমি ফেসবুকে অনেক কেই দেখি নিজের জব নিয়ে ব্র্যাগ করতে।নিজের বসের সাথে সেলফি দিতে বা ছবি দিয়ে আনন্দে গদগদ হয়ে যেতে।প্রমোশন নিয়ে নাচতে।কিন্তু সত্য কথা হচ্ছে আপনার সাথে আপনার বাসার কাজের বুয়ার স্পেসিফিক তফাৎ নেই। কিভাবে?ওকে মিলিয়ে দেখেন, বুয়া মাস শেষে বেতন পায়, আপনিও পান।বুয়া কামাই দিলে বুয়ার বেতন কাটেন, সেইম গোজ টু ইউ।বুয়া রান্না বান্না ধোয়া মোছা করে কারণ তার কাজে এটুকু শিক্ষাই যথেষ্ট।আপনি অংক ইংরেজী হিসাব বিজ্ঞানে ভাল।কারণ আপনার কাজে ওসব শিক্ষা লাগে।বুয়া লেট করে আসলে আপনি তাকে গালমন্দ করেন, আপনি লেট করে একদিন অফিসে যান দেখি।এখন, বুয়ার রান্না ভাল হলে, বা কাজ ভাল হলে আপনি তার বেতন বাড়িয়ে দেন, এবং তাকে ভাল দুইটা কথা বলেন। এখন আপনার জায়গায় আপনার বস আর বুয়ার জায়গায় নিজেকে বসিয়ে চিন্তা করে দেখেন।আলটিমেটলি চাকরি জীবি মানেই চাকর, বস মানেই মালিক।শব্দের বলার ধরণ আর ভাষাটাই বদলায় অর্থ বদলায় না।আপনাকে একদিন মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করার মানে কিন্তু এই না যে আপনি বিরাট কিছু হয়ে গেছেন।এটা হল আপনাকে নবউদ্যমে লাথি মারার পূর্বপ্রস্তুতি।আপনার কাজের বুয়া না পোষালে আপনার বাসার কাজ লাথি মেরে ভাগতে পারে।আপনি এত সহজে চাকরি ছাড়তে পারবেন না।তাইলেই বোঝেন কিছু কিছু ক্ষেত্রে চাকরীজীবির পজি শন বুয়ারও নিচে।জানি সবগুলো কথা সবজায় গায় খাটে না।ভিন্নতা থাকবেই কিন্তু ভিন্নতা উদাহরণ হতে পারে না।এটাও বলতে পারেন, দেশে এত লোক বেকার হেন তেন।আমি বলব বেকার না থেকে নিজে চেষ্টা করে কিছু করলেই পারে।যারা চাকরিজীবি চিন্তা করে দেখেন, আপ- নাদের বেশির ভাগের মালিকই আপনার তুলনায় শিক্ষাগত যোগ্যতায় অনেক নিচে।তারা আপনাকে চাকরী দেবার মত হেডাম দেখাইতে পারলে আপনার কি হাত পায়ের কমতি আছে নাকি?কিন্তু আমি জানি আপনারা পারবেন না।মায়ের দুধ ছাড়ার পর থেকেই আপ- নাদের ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে ভাল চাকর হবার।মোটিভেশন স্পীচও আপনারা এই ব্যাপারেই শোনেন যে কিভাবে ভাল চাকর হতে পারব, কিভাবে ভাল কাজ পাব।একজন মানুষ কোন পর্যায়ে গেলে সফল হবে তার সীমাটা সে নিজেই নির্ধারণ করে।আমার সোনার বাংলা দেশের ছেলেদের দৌড় চাকরি পর্যন্তই। পাশের দেশ ভারত এই চাকরির চক্কর থেকে ধীরে ধীরে বাইরে আসছে।ওদের দেশে অসংখ্য স্টার্ট আপ হয়। ফ্লিপকার্ট, জাবং, ট্রিভাগো। ছোট ছোট পোলাপান কলেজ পাশ করার আগেই মিলিয়ন ডলারে খেলে।শুধু অ্যাপ দিয়ে মিলিয়ন ডলার ইন্ডাস্ট্রী দাড় করিয়ে ফেলে।আমাদের দেশ এখান থেকে বের হতে পারবে না সহজে।বাপের থাকলে বসে খাবে আর না থাকলে চাকর হবে। তবে অনেকেই এখন চেষ্টা করছে নিজে কিছু করার। তবে সেই চেষ্টাটা খুব নগণ্য আর যারা করছে তাদের অধিকাংশই শো অফ করে আর একজন আরেক জনের পিছে লেগেই সময় পায় না।No hard feelings.আপনার পেশা নিয়ে বলার অধিকার আমার নাই।আমি জাস্ট আত্ম উপলদ্ধ্বিটা বললাম।butthurt হবার কিছু নাই।আল্লাহ মহান।আল্লাহ আমাদের সকলকে সঠিক জ্ঞান দান করুন।জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।জয় হোক দেশরত্ন জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবং এদেশের জনগণের।আল্লাহ সহায় হোন।আমিন।
মোঃআবুল কালাম আযাদ,
এডভোকেট,
জজ কোর্ট,লক্ষ্মীপুর।বাংলাদেশ।
মোবাঃ০১৭১৬৫৫৫৩১২
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন