এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

শনিবার, ৪ মে, ২০২৪

প্রথম ভালবাসার চমক!

 প্রথম ভালবাসার চমক!

 কিশোর রবিকে  প্রথম প্রেমের পাঠ দিয়েছিলেন   মারাঠা সুন্দরী আনা। 

কবি যার নাম দিয়েছিলেন  "নলিনী"

"বাতাসে বহিছে প্রেম,  নয়নে লাগিল নেশা,কারা যেন ডাকিল পিছে,  বসন্ত এসে গেছে!" 

রবীন্দ্রনাথের  বয়েস তখন  সতের।

 বিলেত যাবেন।

 কবি এসেছেন মেজদা সত্যেন্দ্রনাথের আহমেদাবাদের বাসায়। 

কবি বিলেত যাবেন তাই ভাইটাকে একটু কেতাদুরস্ত করার জন্য নিজের কাছে নিয়ে এলেন।

ইংরেজি ভাষাটা ভাল করে বলতে হবে। 

বিলিতি আদবকায়দা শিখতে হবে। তাই ভাইটিকে এনেছেন। 

কিছুদিন নিজের কাছে রাখার পর সত্যেন্দ্রনাথ ভাবলেন রবিকে এমন একটি পরিবারে মেশার সুযোগ করে দিতে হবে যেখানে সব বিলিতি আদবকায়দা চলে।

বাড়ির প্রায় সবাই বিলেতফেরত। 

কবিকে  বোম্বাই পাঠালেন বন্ধু   ডাঃ  আত্মারাম পান্ডুরঙের বাড়িতে।

একজন  আধুনিক মনস্ক মারাঠি পণ্ডিত। 

সত্যেন্দ্রনাথের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক। 

রবীন্দ্রনাথ এলেন আত্মারাম পান্ডুরঙ্গের বাড়িতে।

আত্মারামের মেয়ে অন্নপূর্ণা।

 ডাক নাম আনা।

 বয়েস কুড়ি।

কবির থেকে বয়েসে তিন বছরের বড়।

 রবীন্দ্রনাথকে ইংরেজি শেখানো আদবকায়দা সব শেখানোর ভার আনাই পেল।

এদিকে আনা ছিল এক  শিক্ষিতা সুন্দরী দুরন্ত পাহাড়ি ঝর্ণা।

তার ওপরে বিলেতফেরত মেয়ে। 

রবীন্দ্রনাথকে প্রথম প্রেমের পাঠ  এই  আনাই  একদা দিয়েছিল।

কিন্তু প্রেমের বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন প্যাসিভ। 

নিরুত্তাপ। 

আর আনা ছিল  আ্যাকটিভ। সক্রিয়।

" আমারে তুমি অশেষ করেছ, - এমনি লীলা তব - ফুরায়ে ফেলে আবার ভরেছ জীবন নব নব।"

কবিকে শেখাতে গিয়ে শিক্ষয়িত্রী আনাই  প্রেমে পড়ে গেল  কিশোর ছাত্রটির প্রতি।

রবীন্দ্রনাথকে  তিনি নতুন করে আর কি শেখাবেন?

শুধু বাড়িতে  পড়ে এত ভালো ইংরেজি বলছে,লিখছে!

আনা অবাক! 

কি অপূর্ব তাঁর ভাষায় বিচরণ। 

কবি তখন" ভারতী"  পত্রিকায়  ধারাবাহিক " কবিকাহিনি" লিখছেন আর সেই রচনার ইংরেজি অনুবাদ করে আনাকে শোনাচ্ছেন।

আনা মন্ত্রমুগ্ধ! 

দু'হাত গালে রেখে বড়বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে  কবির দিকে।

আনা ভাবছে শুধু ভাবছে  এই ছেলেকে সে কি শেখাবে? 

তার চেয়ে এখন লেখাপড়া থাক, ওকে এখন বরং প্রেমের পাঠ একটু শেখানো যাক।

একদিন আনা রবিকে বললো,তুমি কি আমাকে একটা নতুন নাম দিতে পারো না?  

যে নামে এই পৃথিবীর আর কেউ আমায় ডাকবে না একমাত্র তুমি? 

কবি বিহ্বল! 

কবি আনার নাম দিলেন " নলিনী "। এই সেই নলিনী যাঁর নাম  "কবিকাহিনি" তে বারবার উঠে এসেছে।

নলিনীকে নিয়ে কবির রোমান্টিক আবেগ ছুঁয়ে গেছে তাঁর এই  গানের সুরে " শুন নলিনী খোলো গো আঁখি /ঘুৃম এখনো  ভাঙ্গিল কি!..." 

এবার একটি বিশেষ ঘটনা রবীন্দ্রনাথের নিজের কথা 

 তা বই থেকে তুলে ধরছিঃ

"আর একদিন সে আচমকা বলল, জানো,কোনো মেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে যদি তার দস্তানা কেউ চুরি করতে পারে, তবে তার অধিকার জন্মায় মেয়েটিকে চুমো খাওয়ার।বলে খানিকবাদে আমার আরাম কেদারায় নেতিয়ে পড়ল নিদ্রাবেশে।

ঘুম ভাঙতেই সে চাইল পাশে তার দস্তানার দিকে।  একটিও কেউ চুরি করেনি।"

চুমু খাওয়ার লোভ দেখিয়েও আনা কবিকে দিয়ে  তার দস্তানা চুরি করাতে পারল না।

তাই আনারও চুমু পাওয়া  হল না। 

কিন্তু আনা কবির মনে প্রথম প্রেমের আলো পৌঁছে দিয়েছিল।  যা কবিকে নব নব সৃষ্টির পথে এগিয়ে দিয়েছিল।

 কিন্তু কবি শুধু দূর থেকে ফুলের সৌরভটুকু নিয়েছেন।

এরপর আনা বিয়ে করে  তাঁর পূর্ব পরিচিত  বরোদার এক কলেজের উপাধ্যক্ষকে।

আইরিশ যুবক।  

নাম  হ্যারল্ড লিটলডেল।

 গভীর দু:খের,  বিয়ের পর মাত্র ছত্তিশ বছর বয়েসে টি বি রোগে আনা চলে গেল! 

কবি আনাকে সারাজীবন ভুলতে পারেন নি।

  কবি ডি এল রায়ের সুযোগ্য পুত্র দিলীপ রায়ের সঙ্গে বন্ধুর মত মিশতেন। যদিও দিলীপ রায় বয়েসে অনেক ছোট ছিলেন। পরিণত বয়েসে কবি একবার দিলীপ রায়কে  বলেছিলেন...

" কিন্তু একটা কথা আমি বলতে পারি গৌরব করে যে, কোন মেয়ের  ভালোবাসাকে আমি কখনও ভুলেও অবজ্ঞার চোখে দেখিনি, তা সে ভালবাসা যে রকমই হোক না কেন।"

এই হলেন রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর স্বর্গীয় ভালবাসা।


তথ্য সূত্রঃ

রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়/ গোপনচারিণী / দীপ প্রকাশন

প্রশান্ত কুমার পাল (রবিজীবনী/ আনন্দ পাবলিশার্স ও আরো কিছু লেখা ছুঁয়ে  গেছে। 

 


ঋণ: অনুমিতা সেনগুপ্ত। 

কোন মন্তব্য নেই:

জানা প্রয়োজন গায়রত কী? *******************

 ★জানা প্রয়োজন গায়রত কী? ************************** প্রিয় নবীজীর সাহাবীরা তাদের স্ত্রী'র নাম পর্যন্ত পরপুরুষকে বলতো না। এটাই গায়রত।তথা-(...