এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

রবিঠাকুরের আদরের কণ্যা মাধুরীলতা দেবীর আজ ১৬/০৫/ ১০৬-তম প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি

 রবিঠাকুরের আদরের কণ্যা মাধুরীলতা দেবীর আজ ১০৬-তম প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি। 

      🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏

মাধুরীলতা দেবী (বেলা) ঠাকুর। (জন্ম: ২৫ অক্টোবর ১৮৮৬—মৃত্যু: ১৬ মে ১৯১৮ সাল)। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে প্রথম বাবা হওয়ার আনন্দে ভাসিয়েছিল যে শিশু মেয়েটি, তার নাম কবি রেখেছিলেন ‘মাধুরীলতা’, তার ডাক নাম ছিল ‘বেলা’।

মাধুরীলতা বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মৃণালিনী দেবীর জ্যেষ্ঠ সন্তান। তাঁর জন্মের সময় রবীন্দ্রনাথের বয়স ছিল ২৫ বছর। মৃণালিনীর তখনো ১৩ পূর্ণ হয়নি।

কবির একান্ত স্নেহের দুলালী মাধুরীলতা বা বেলা ছিলেন অপরূপ সুন্দরী ও বুদ্ধিমান। ছোটবেলা থেকেই বাবা-মাসহ বাড়ির আর সবারই প্রিয় ছিলেন, সবার কাছ থেকেই প্রচুর আদর পেতেন বেলা।

বাবা রবীন্দ্রনাথ যখন জমিদারি পরিদর্শনের জন্য মহালে যেতে আরম্ভ করেন, মাধুরীলতার বয়স তখন বছর চারেক। তখন থেকেই তিনি বাবাকে চিঠি লিখতে শুরু করেন। জোড়াসাঁকোয় রচিত, কবির বিখ্যাত কবিতা, ‘যেতে নাহি দিব,–তে ‘কন্যা মোর চারি বছরের’ উল্লেখে স্পষ্টই, কবিতাটি মাধুরীলতার কথা মনে করেই লেখা। তাঁর কাবুলিওয়ালা গল্পের ‘মিনি’ চরিত্রটি সম্পর্কে তিনি নিজেই হেমন্ত বালা দেবীকে চিঠিতে লিখে জানিয়েছিলেন—

‘মিনি আমার বড় মেয়ের আদর্শে রচিত, বেলাটা ঠিক অমনি ছিল। মিনির কথায় প্রায় বেলার কথাই সব তুলে দিয়েছি।’

শুধু সৌন্দর্য বা বুদ্ধিতে নয়, বালিকা মাধুরীলতার স্বভাবও ছিল স্নেহশীল ও দয়ালু। আর কেবল মানুষের প্রতি নয়, কীট পতঙ্গ অবধি, মাধুরীলতার মমতা ও করুণা প্রসারিত ছিল। তা লক্ষ্য করে বাবা রবীন্দ্রনাথ ‘ছিন্নপত্রাবলী’র একটি চিঠিতে লিখেছিলেন—

‘বেলার মনটি ভারী দয়ালু। খোকা (রথীন্দ্রনাথ) সেদিন একটি পিঁপড়ে মারতে যাচ্ছিল দেখে বেলা নিষেধ করার কত চেষ্টা করল, দেখে আমার ভারী আশ্চর্যবোধ হলো, আমার ছেলেবেলায় ঠিক এ রকম ভাব ছিল, কীট-পতঙ্গকে কষ্ট দেওয়া আমি সহ্য করতে পারতুম না।’

সন্তানদের শিক্ষার ব্যাপারে রবীন্দ্রনাথের তীক্ষ্ণ মনোযোগ ছিল। এর জন্য প্রভূত ব্যয় করতেও তিনি কুণ্ঠিত ছিলেন না। মেয়ের জন্য তিনি ইংরেজির শিক্ষিকা রেখেছিলেন। মেয়েদের শিক্ষিকার কাছে তার দাবি ছিল, ইংরেজি ভাষার সঙ্গে সঙ্গে তাদের যেন পিয়ানো বাজানো ও সেলাই শিক্ষা দেওয়া হয়। লন্ডনে থাকাকালে ‘স্কট’ পরিবারের মেয়েদের শিক্ষা লাভের পদ্ধতি ও শিক্ষাক্রম দেখেছিলেন, নিজের কন্যাদের বেলায় সেই আদর্শ হয়তো তাঁর মনে প্রভাব ফেলেছিল।

গৃহশিক্ষিকা ও বাবার সযত্নে মাধুরীলতা মাত্র ১৩ বছরে এতটাই দক্ষতা অর্জন করেছিলেন যে, ইংরেজিতে কবিতা রচনা করতে পারতেন। ভাই রথীন্দ্রনাথের একাদশতম জন্মদিনে পনেরো ছত্রের একটি কবিতা উপহার দিয়েছিলেন যার শুরুটা ছিল—

Thin heart must be

As pure, As the, Lily that

Blooms on the tea,

মাধুরীলতার গৃহশিক্ষিকা ছিলেন মিস পার্সনস্, তিনি ছাড়াও লরেন্স ও মিস আ্যালজিয়োরের কথা জানা যায়।

১৯০০ সালের মাঝামাঝি, রবীন্দ্রনাথের কন্যা ‘বেলা’র বিয়ের জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠলেন, তখনও তাঁর বয়স ১৪ পূর্ণ হয়নি।

কবি বিহারীলাল চক্রবর্তীর তৃতীয় ছেলে শরৎকুমার চক্রবর্তীর সঙ্গে ১০ হাজার ৫ টাকা যৌতুক দিয়ে মাধুরীলতার বিয়ে হয় ১৯০১ সালের ১১ জুন। শরৎকুমারের বয়স তখন ৩০। রবীন্দ্রনাথের থেকে ৯ বছরের ছোট ও মৃণালিনী দেবীর চেয়ে ৪ বছরের বড় তখন জামাতা শরৎকুমার। যৌবনে বিবাহের প্রবক্তা রবীন্দ্রনাথ কেন যে এত তাড়াতাড়ি কন্যাদের বিবাহ দেওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন, এটি তাঁর জীবনের একটি না–মেলা অঙ্ক। সে বিবাহ দিতে গিয়ে অনেক অপমান, লাঞ্ছনা ও আর্থিক ক্ষতি তাঁকে স্বীকার করতে হয়েছিল। কূলশীলের দিক দিয়ে শরৎকুমার বিশ্বকবির মেয়ের উপযুক্ত ছিলেন না বলে সে বিয়ে তাদের আত্মীয়স্বজনদের মনঃপূত হয়নি। এ জন্য অনেক আত্মীয়স্বজন সে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া থেকে বিরত থাকেন। তৎকালীন সমাজবিরুদ্ধ এ বিয়ের জন্য কবিকে কিছু কিছু লাঞ্ছনাও ভোগ করতে হয়েছে।

রবীন্দ্রনাথের মেয়েদের মধ্য একমাত্র, মাধুরীলতারই বুদ্ধিচর্চার দিকে কিছুটা ঝোঁক ছিল। তাঁর লেখার হাতও ছিল ভালো। চমৎকার ছোট গল্প লিখতেন। রবীন্দ্রনাথ সম্পাদিত নবপর্যায় বঙ্গদর্শনে মাধুরীলতার ‘সৎপাত্র’ গল্প প্রকাশিত হয়েছিল। প্রাচীনপন্থী মুজফ্ফরপুর শহরে স্ত্রী শিক্ষা বিস্তারে তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখেন। স্বামীর বন্ধুদের নিজের হাতে নানারকম রান্না করে খাওয়ানো তার একটা বিশেষ শখ ছিল।

মা-ভাই–বোনের অকাল মৃত্যু মাধুরীলতাকে খুব অশান্ত করে তুলেছিল। শ্বশুরের টাকায় শিক্ষা সমাপ্ত করে শরৎকুমার বিলেত থেকে ফিরে এলে রবীন্দ্রনাথ মেয়ে জামাইকে তাঁর জোড়াসাঁকোর বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করেন। সেখানে আগে থেকেই কবির কনিষ্ঠা কন্যা মীরা দেবী সপরিবারে বসবাস করতেন। দুই বোনের সম্পর্ক তখন থেকেই কোনো অজ্ঞাত কারণে তিক্ত হয়ে উঠে। দুই বোনের সম্পর্কের এতই অবনতি ঘটে যে, তিন বছর পর শরৎ ও মাধুরীলতাকে জোড়াসাঁকোর বাড়ি ছেড়ে ভাড়া বাড়িতে উঠতে হয়। মাধুরীলতা বিশ্বাস করতেন, তাদের দুই বোনের মনোমালিন্য, ঝগড়াঝাঁটিতে বাবা রবীন্দ্রনাথ গোপনে কনিষ্ঠা কন্যা মীরা দেবীর পক্ষে থাকতেন। তখন থেকেই বাবার প্রতি তাঁর বিরূপতা জন্মে, সেই বিরূপতার রেশ তাঁর মৃত্যু অবদি ছিল। রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর আত্মীয়–অনাত্মীয়, পরিচিত–অপরিচিত গোটা দেশের মানুষ তাঁকে অভিনন্দন জানাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু যাননি শুধু তাঁর আদরের দুলালী মাধুরীলতা ও জামাই শরৎকুমার।

১৯১৭ সালে মাধুরীলতার ক্ষয়রোগ ধরা পড়লে রবীন্দ্রনাথ নিয়মিত কন্যাকে দেখতে গিয়েছেন, চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করেছেন। মেয়েজামাই পছন্দ করতেন না, তবু কবি কন্যার পাশে গিয়ে বসে থাকতেন।

নিঃসন্তান মাধুরীলতা ১৭ বছর শরৎকুমারের সঙ্গে সংসার জীবন কাটান। শ্বশুর রবীন্দ্রনাথকে উপেক্ষা করলেও শরৎ ও মাধুরীর বৈবাহিক জীবন ছিল মধুর। ৪৮ বছর বয়সে স্ত্রী বিয়োগের পর আবার বিয়ে করাই ছিল স্বাভাবিক, কিন্তু শরৎ তা করেননি।

মাধুরীলতার স্মরণে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে মাধুরীলতা বৃত্তি প্রবর্তন করেন। পলাতকা কাব্যগ্রন্থের শেষ প্রতিষ্ঠা কবিতাটি কন্যার মৃত্যুর অব্যবহিত পরেই লিখেছিলেন কবি—


এই কথা সদা শুনি ‘গেছে চলে-গেছে চলে’

তবু রাখি বলে

বলো না সে নাই

সে কথাটা মিথ্যা তাই

কিছুতেই সহেনা যে

মর্মে গিয়ে বাজে

মানুষের কাছ





কোন মন্তব্য নেই:

সোশ্যাল মিডিয়াতে ইনকাম ও তার বাস্তবতা,,,,

 📲 সোশ্যাল মিডিয়াতে ইনকাম ও তার বাস্তবতা 🎥 বাস্তবতা না বুঝে রিলস বানানোর নামে জীবনের ভারসাম্য হারানো… বর্তমানে বহু তরুণ-তরুণী ফেসবুক, ইনস...