জেনে রাখা ভালোহাত দিয়েই বেলা মাপো
31/05/2024
‘দিনের আলো নিবে এল,
সুয্যি ডোবে-ডোবে।
আকাশ ঘিরে মেঘ জুটেছে
চাঁদের লোভে লোভে।’
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর’ কবিতার এই পঙ্ক্তিগুলো নিশ্চয়ই পড়েছ। ধরো, এমন এক জায়গায় তুমি আছ, যেখানে কোনো ঘড়ি নেই, বাতি বা আগুন নেই। আর তখন দিনের আলো নিভে আসছে, কী করবে তুমি? নিশ্চয়ই তড়িঘড়ি করে একটা নিরাপদ জায়গা খুঁজে বের করবে? কিংবা খাবার খুঁজবে? তবে সবার আগে জানতে হবে, সূর্যটা আর কতক্ষণ আলো দেবে। চারদিক অন্ধকার হয়ে আসার আগেই যে সব ব্যবস্থা করে ফেলতে হবে। অর্থাৎ সূর্যাস্ত ঠিক কতক্ষণ পরে হবে, তা জানা তখন জরুরি। কিন্তু ঘড়ি না দেখে তা বুঝবে কী করে? খুব সহজ একটা পদ্ধতি আছে। আর এ জন্য কোনো সরঞ্জামেরও দরকার পড়বে না; তোমার দুটি হাতই যথেষ্ট। দিনের শেষ বেলার আলো মাপার এই পদ্ধতিটা বেশ প্রাচীন। যখন ঘড়ি ছিল না, মানুষ তখন এই উপায় কাজে লাগিয়ে সূর্যাস্তের সময় বের করত। তাহলে চলো, ধাপে ধাপে উপায়টি জেনে নিই।
মনে রেখো
এই পদ্ধতি তোমার ভৌগোলিক অবস্থানের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। অর্থাৎ তুমি পৃথিবীর কোথায় দাঁড়িয়ে আছ, সেটার ওপরও নির্ভর করবে। যেমন প্রতিবছর ২২ ডিসেম্বর সূর্য মকরক্রান্তি রেখা বরাবর অবস্থান করে। সহজ করে বললে, সূর্য সে সময় পৃথিবীর ঠিক পেট বরাবর অবস্থান করে। ফলে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ সূর্য থেকে কিছুটা দূরে হেলে পড়ে। এ কারণে উত্তর গোলার্ধে তখন রাত হয় সবচেয়ে বড় আর দিন সবচেয়ে ছোট। উল্টো ঘটনা ঘটে দক্ষিণ গোলার্ধে। ফলে তুমি যদি তেমন কোনো সময়ে উত্তর বা দক্ষিণ গোলার্ধে থাকো, তখন এই পদ্ধতি কাজে লাগানোর আগে আরও কিছু হিসাব করে নিতে হবে।
যাহোক, আমরা আপাতত বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান মাথায় রেখেই হিসাবটা করি। বাংলাদেশের অবস্থান গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে। অর্থাৎ এখানে সূর্য মোটামুটি সারা বছরই অবস্থান করে ঠিক মাথার ওপর। তাই সকালে সূর্য উঠে ধীরে ধীরে ঠিক মাথার ওপর দিয়ে যেতে যেতে ডুবে যায়। ফলে এখানে পদ্ধতিটা ভালো মতোই খাটবে। তবে এখানেও ‘কিন্তু’ আছে।
আর কেবল বাংলাদেশেই না, দুনিয়ার যে জায়গায়ই থাকো না কেন, স্থানীয় পরিবেশের কথাটাও মাথায় রাখতে হবে। তুমি যদি বান্দরবানের মতো পাহাড়ি এলাকায় যাও এবং যদি দাঁড়িয়ে থাকো প্রশস্ত সমতলে, তাহলে সূর্যের আলো একটু আগেভাগেই নিভে আসবে। কারণ, সূর্য যে আড়াল হবে পাহাড়ে। আবার সুন্দরবনের মতো বনাঞ্চলে যদি যাও, সেখানেও সূর্যের আলো হারিয়ে যাবে দ্রুত। কারণ, গাছপালা যে সূর্যকে আড়াল করে ফেলবে।
আরেকটি বিষয়, তোমার হাতের আকার। বয়সে যারা ছোট, স্বাভাবিকভাবেই তাদের হাতের আকারও ছোট। কিন্তু এই পদ্ধতি আদতে বড়দের হাত দিয়ে মাপার জন্য সবচেয়ে জুতসই। তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। তুমি একদিন সূর্যের নিচে হাত রেখে ঘড়ি দেখে যাচাই করে নাও তোমার একেকটি আঙুল সমান কত মিনিট। আর তা বের করতে পারলেই অবশিষ্ট দিনের আলো মাপা তোমার কাছে এক কি খুব বড়জোর দুই হাতের মামলা!
01708-411997
(10am-6pm, Phone & WhatsApp)
epaper@prothomalo.com
© স্বত্ব প্রথম আলো 2024 | সম্পাদক ও প্রকাশক: মতিউর রহমানপ্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০-২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫
![]() |
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন