এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

সোমবার, ৩ জুন, ২০২৪

নূরজাহান : ইতিহাসের অলিখিত এক সম্রাজ্ঞী!

 নূরজাহান :

ইতিহাসের অলিখিত এক সম্রাজ্ঞী!


সম্রাটদের সবাই চেনেন। তবে, সম্রাটদের পেছনে রাজ্যপরিচালনায় যুগে যুগে এমন অনেক সম্রাজ্ঞী কাজ করেছেন, যাদের নাম মানুষ জানে না। আর যদি জেনেও থাকে, সেটাও শুধু একজন রানি বা সম্রাটের প্রেমিকা হিসেবে। কিন্তু শুধু নামে সম্রাজ্ঞী ছিলেন না ইতিহাসের সমস্ত সম্রাটের রানিরা। আর তেমনই এক সম্রাজ্ঞীর কথাই আজ বলব আপনাদের। বলছিলাম নূরজাহানের কথা।


নূরজাহান নিয়ে গান আছে, বই আছে। মানুষ নূরজাহান নামের একজন নারীর কথা জানে। নিশ্চয় আপনিও শুনেছেন এই নাম। কিন্তু কে ছিলেন নূরজাহান? একজন কাঠপুতুলের মতো সম্রাজ্ঞী? একদম নয়! নূরজাহান ছিলেন সম্রাট জাহাঙ্গীরের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি মানুষ। সম্রাট অন্য কাউকে দেখে এতো বেশি খুশি হননি, যতটা নূরজাহানকে দেখে হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হতে সময় লেগেছিল যদিও।


নূরজাহান শব্দের অর্থ জগতের আলো। এই নারী জন্ম নেন ১৫৭৭ সালে। মেহেরের বাবা ছিলেন গিয়াস বেগ। তার বাবা গিয়াস বেগ ও মা যখন তেহেরান থেকে ভাগ্যের সন্ধানে হিন্দুস্তান আসছিলেন তখন পথের মধ্যেই নির্জন মরু প্রান্তে এক বাবলা গাছের তলায় জন্ম হয় মেহের উন নিসার।


গল্প শোনা যায় যে, এই সময় গিয়াস বেগ ও তার পত্নী এমন দুর্দশায় পড়েছিলেন যে মেয়েকে বাঁচাবার কোনো উপায় না পেয়ে তারা পথের মাঝেই মেয়েকে শুইয়ে রেখে রওনা হন। আশা ছিল কোনো সহৃদয় ব্যক্তি যদি তাকে পায় নিয়ে আশ্রয় দেবে। কিন্তু কিছুদূর যাবার পরই শিশু কন্যার কান্না শুনে তারা আর থাকতে পারলেন না। ফিরে এসে মেয়েকে বুকে চেপে নিঃসহায়, নিঃসম্বল গিয়াস বেগ এসে পৌঁছালেন লাহোরে। এবার তার ভাগ্য পরিবর্তন হল। আকবর বাদশার সুনজরে পড়েন তিনি, আর ছোট মেয়ে মেহেরের স্থান হলো মুঘল হেরেমে।


জাহাঙ্গীর তখনও সম্রাট হননি। তিনি খুব পছন্দ করে ফেলেন মেহের উন নিসাকে। কিন্তু মেহের উন নিসার বিয়ে হয়ে যায় শের আফগানের সাথে। জাহাঙ্গীর প্রচণ্ড চেষ্টা করেন শের আফগানকে মেরে ফেলার। কয়েকবার চেষ্টা করেও অবশ্য সফল হননি তিনি। শের আফগান ছিলেন অসম্ভব শক্তিশালী। ফলে শের আফগানের কাছের মানুষদের সাহায্য নেন জাহাঙ্গীর এ সময়। আর এভাবে তিনি সফলও হন।


পরবর্তী সময়ে শের মারা গেলে জাহাঙ্গীরের সাথে বিয়ে হয় নূরজাহানের। মেহেরের নাম এ সময় বদলে ফেলেন সম্রাট। নূরজাহান ঘরে বসে থাকার পাত্রী ছিলেন না। জানা যায়, অন্যান্য সম্রাজ্ঞীদের চাইতে অনেক বেশি শক্তিশালী ছিলেন তিনি। প্রায়ই সম্রাটের সাথে বাঘ শিকারে যেতেন নূরজাহান। শক্তিশালী বাঘ শিকারি হিসেবে তার খ্যতি ছিল। কথিত আছে তিনি ৬টি গুলি দিয়ে ৪টি বাঘ শিকার করেছিলেন। তার বীরত্বের কবিতাও লিখেছেন অনেক কবি। একসময় সম্রাটের বন্ধু হয়ে গিয়েছিলেন এই নারী।


ইংরেজ দূত টমাস রো সে সময় খুব কাছ থেকে দেখেন নূরজাহান ও সম্রাট জাহাঙ্গীরকে। তিনি লিখে গেছেন যে, সে সময় নূরজাহানই আসলে দেশ শাসন করতেন। জাহাঙ্গীর ছিলেন নামকে ওয়াস্তে সম্রাট। সেই সময়কার মুদ্রাতে জাহাঙ্গীর এর সঙ্গে নূরজাহানের ছবিও ছাপা হতো।


নূরজাহান নিজে ছিলেন কবি। তার কবরের গাঁয়ে তার রচিত দুটি লাইন দেখতে পাওয়া যায়। ফরাসিতে লেখা। কবি সত্ত্যন্দ্রনাথ দত্ত বাংলায় অনুবাদ করেন লাইনগুলো :


“গরিব গোরে দ্বীপ জেলো না,


ফুল দিও না কেউ ভুলে,


শ্যামা পোকার না পোড়ে পাখ,


দাগা না পায় বুলবুলে।"


নূরজাহান শেষ জীবনে খুব একটা ভালো ছিলেন না। সিংহাসন দখল আর এই সংক্রান্ত চক্রান্তই ছিল এর পেছনের মূল কারণ। নূরজাহান নিজের প্রথম পক্ষের মেয়ের স্বামীকে সিংহাসনে দেখতে চেয়েছিলেন। জাহাঙ্গীরের সন্তান শাহজাহান এতে করে ক্ষেপে যান। তিনি জাহাঙ্গীরকে বন্দি করেন। সেখান থেকে সম্রাটকে বের করে আনেন নুরজাহান। পালিয়ে যান দূরে। ১৬৪৫ সালে ১৭ ই ডিসেম্বর ৬৮ বছর বয়সে মারা যান এই নারী।

কলমে Utpal Kanti Dhar 

সূত্র : ডন, হিস্টোরিফররয়ালউইম্যান ; Odhikar news

ি

কোন মন্তব্য নেই:

জানা প্রয়োজন গায়রত কী? *******************

 ★জানা প্রয়োজন গায়রত কী? ************************** প্রিয় নবীজীর সাহাবীরা তাদের স্ত্রী'র নাম পর্যন্ত পরপুরুষকে বলতো না। এটাই গায়রত।তথা-(...