মাতৃভূমি অনুরাগী কাজী নজরুল ইসলাম।
তার অসংখ্য সংগীত বিভাগের মধ্যে ছয় ঋতু নিয়ে একটি সংগীত পরিবেশন করেছেন মাতৃভূমি রুপ বর্ণনায়।
প্রকৃতির বুকে নিঃশব্দে যে প্রেমের লীলা চলে তার ঐ রূপ দর্শণে বিভোর কবি—গেয়ে উঠলেন:—
একি অপরূপ রূপে মা তোমারে
হেরুনী পল্লী জননী
ফুলেও ফসলে কাদামাটি জলে
ঝলমল করে লাবণী।
হেরুনি পল্লী জননী ।
প্রকৃতির বৈচিত্র রূপ রূপায়ণে যে বিস্ময়কর ভাষা নির্মাণ কৌশল এবং ছন্দের সহস্র দল পদ্মের উপর তার কাব্য বাণীর চঞ্চল লীলা পদচারণা সৌন্দর্য কল্পনায় নতুন সাহিত্য সাধনার অনুপ্রেরণা ও সাহস যোগায় বিস্মীতির অন্তরালে বিরল প্রতিভাবান কবির সাহিত্য সৃষ্টি আমাদের মুগ্ধ করে। মাতৃভূমির মাতৃভাষার প্রতি প্রগাঢ় ভক্তিও গভীর অনুরাগের পরিচয় পাওয়া যায়।
মেঘ বিহীন খর বৈশাখে উত্তপ্ত দগ্ধ কাতর বসুন্ধরা চাতকের কাছে আর্জি বৃষ্টি পাওয়ার জন্য।
রৌদ্রতাপ্ত বৈশাখে তুমি
চাতকের সাথে চহো জল
আম কাঁঠালের মধুর গন্ধে
জ্যৈষ্ঠ মাতায় তরুতল
ঝঞ্ঝার সাথে প্রান্তরে মাঠে
কভু খেল লয়ে অসনী।
হেরুনি পল্লী জননী।
প্রকৃতির সৃষ্ট ও সৌন্দর্য কবি মুগ্ধ, তাঁর কল্পনায় রোমান্টিক ভাবা বেগের লালিত শ্যামলী বাংলার স্বরসতা /কমলতা /পূর্ণশ্রী ও স্নিগ্ধ লাবণ্য তার কাব্য লক্ষীর কাননে বিকশিত। শীতের শেষে বসন্তের আগমনী সংগীতটির ভূমিকা পাঠক বৃন্দ কে আকৃষ্ট করে।।
শীতের শূন্যে মাঠে ফেরো তুমি
উদাসী বাউলের সাথে মা
ভাটিয়ালি গাও মাঝিদের সাথে
কীর্তন শোন রাতে মা
ফাগুনের রাঙা ফুলের আবিরে
রাঙাও নিখিল ধরণী ।
হেরুনী পল্লী জননী।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন