চুল
সত্য ঘটনা অবলম্বন...
Nusrat Haq
(বিশ্বাস অবিশ্বাস একান্ত আপনার ব্যাপার আমাকে জড়াবেন না।)
চুল গুলো আর পেলো না। আর আমার বর ব্যাপারটা এমনিতেই উড়িয়ে দিলো।
দিন দিন সমস্যা বাড়ছিলো। জামাই আমাকে ডাক্তার দেখায়। ডাক্তার বলে হরমোন এর সমস্যা৷
ওষুধ দিলো আমাকে।
আর এদিকে ফেনি থেকে মা আসলো৷
ঘটনাটা শুরু হওয়ার পর থেকে আমার জামাই এর সাথে আমার কোনো রকম সহবাস হয়নি এমনকি আমার জামাই আমার কাছে ও আসতে পারতো না।
আমার জামাই কাছে আসলে আমার খারাপ লাগতো অসহ্য হতো।
খালি মনে হতো তাকে ছেড়ে দিলে আমি ভালো থাকবো।
মা তখন আমাকে সাথে করে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসলো আমার জামাই একা ওখানে।
এখানে আসার পর মা আমাকে হুজুর দেখালো। হুজুর আমাকে দেখে বলে ফেললো আমাকে খারাপ জিনিস এ আছর করছে।
আম্মা ভয় পেলো।
তখন হুজুর বললও তাড়াতাড়ি এটার চিকিৎসা করান।
তখন আম্মা রাজি হলো।
তখন হুজুর এর সাথে আমাদের চুক্তি হলো ছাড়াই দিবে ৩১ টা রক্ত জবা একটা লাল শাড়ি আর নগদ ১০ হাজার টাকা।
রাতের দিকে হুজুর আসতে বললও তখন নাকি জ্বীনটাকে চালান দিয়ে আনবে।
তো রাতে খেয়েদেয়ে আমি গেলাম।
আম্মা আব্বা সহ৷
ওখানে যাওয়ার পর আমার আর কিছু মনে নেই তবে আম্মার কাছ থেকে শুনছি
জ্বীনটাকে আমার শরীরের উপর ভর করে আনা হয়ছে।
তখন হুজুর জ্বীনটাকে জিজ্ঞেস করে আমার শরীরে কিভাবে ভর করলো।
১ম এ জ্বীনটা বলতে চায়নি যখন হুজুর তাকে আঘাত করলো তখন বললও
ও চলার সময় ওর গায়ে চুল লাগে।
তখন চুলের গন্ধ আর আমার মুখের গন্ধ পায়। তখন বেলকুনির দিকে আসে গন্ধ টা খুঁজে খুঁজে।
তারপর বেলকুনির নিচে আমার অনেক চুল পায় আর আমার থুথুর গন্ধ নাকি তার অনেক পছন্দ হয় তাই সে আমার উপর ভর করে।
তখন হুজুর বলে ভর করছোস ঠিক আছে কিন্তুু ওর খতি কেন করছোস।
ওর পরিবারে কেন অশান্তি করছোস।
জ্বীন টা বলে ওর জামাই এর সাথে কথা বললেও আমার সেটা সহ্য হয়না তাই।
হুজুর তখন বলে ওকে ছেড়ে দে।
জীন বলে না ছাড়বোনা।
এরকম তর্ক বির্তক চলতে থাকে জ্বীন আর হুজুরটার মধ্যে রাত ২ টা পযন্ত।
শেষে জ্বীন টা রাজি হয় একটা ছাগল আর ৫ কেজি মিস্টি তাকে দিলে সে চলে যাবে।
আমার বাপ তাতে রাজি হয়।
জ্বীন বললও ঠিক আছে কালকে রাত ১ টায় ৩ রাস্তার মোড়ে দিয়ে আসবেন এগুলো আমি আর জ্বালাবো না।
এরপর চলে যায় আর আমার হুশ আসে।
আমি বাড়ি চলে আসি আমাকে হুজুর কিছু পানি পড়া আর তাবিজ দেয়৷
পরের দিন রাতে হুজুর সহ আমার বাপ সহ তিন রাস্তার মোড়ে ছাগল আর মিস্টি দিয়ে আসে।
আলহামদুলিল্লাহ ভালো হলাম। এরপর ৪ দিন এর মত বাপের বাড়ি থাকলাম। তারপর জামাই আসলো নিতে চলে আসলাম।
তারপর আলহামদুলিল্লাহ প্রায় দেড় মাসের মতো ভালো ছিলাম এরপর সমস্যা টা আবার শুরু হয়।
কিন্তুু অনেক কম।
২০১৭ শেষ হলো ২০১৮ শুরু হলো।
আমার জামাই একটু কথা বললেও আমি তাকে জুতা কিংবা এটা সেটা মেরে দিতাম।
আমার জীবনটাকে একদম ত্যানা ত্যানা বানিয়ে দিছে।
আমার মা হুজুরটার সাথে আবার যোগাযোগ করে।
কিন্তুু হুজুরটা বলছে এবার আর পারবেনা।
কারন জ্বীনটা অনেক খারাপ আর হুজুর এর পরিবারের মানুষের উপর ও খতি করতেছিলো।
অনেক অনুরোধ করার পর ও হুজুর রাজি হলো না।
এবার বাবা মা আমাকে নিয়ে অনেক হুজুর এর কাছে যায় কিন্তুু কেউ ছাড়াতে পারে না।
অনেক টাকা পয়সা খরচ হয়।
এমন অবস্থা হয়েছে আমার জামাইকে দেখলে আমি কাপড়ে চোপড়ে মূএ ত্যাগ করে দিতাম।
আমি মাঝে মাঝে বুজতাম কেউ আমার সাথে সহবাস করছে। যখন ঘুমিয়ে থাকতাম।
কিন্তুু আমার বরের সাথে আমার কোনো রকম শারীরিক সম্পকই হতো না।
আমার মা থাকতো আমার সাথে। আমার বরকে মা অনেক বার বলছে যে আমাদের বাড়িতে নিয়ে যেতে কিন্তুু আমার বর দেয়নি।
আমার বর আমাকে এতো ভালোবাসতো যে আমাকে না দেখলে নাকি তার ভালো লাগতো না।
আমি যখন একা থাকতাম বা ঘুৃমিয়ে থাকতাম তখন জ্বীনটা আমায় বলতো তোর মুখের থুথুর গন্ধ আমার অনেক ভালো লাগে।
এখন এটা কি স্বপ্ন নাকি বাস্তব এ বলছে যার ব্যাখ্যা আমি দিতে পারবো না।
আপনাদের একটা অবাক করার বিষয় বলি আমি যদি মুখ থেকে কথাও থুথু ফেলতাম সেই জায়গায় আর থুথু থাকতো না।
১ম ১ম অবাক হতাম এই মাএ থুথু ফেললাম সেটা গেলো কই।
পরের জানতে পারলাম জ্বীনটা সেটা খেয়ে ফেলে।
এমনকি আমি যদি বাথরুম এ ও থুথু ফেলতাম সেটা আর থাকতো না। আমি থুথু ফেলে থুথুর দিকে তাকিয়ে থাকতাম যা চোখের নিমিষেই ব্যনিস হয়ে যেতো।
দিন দিন আমার অবস্থা এত খারাপ হতে লাগলো বলার মতো না অনেক হুজুর, বৌদ্ধ,মঘা,শ্যামি,জুম্মা, দেখিয়েছি কিন্তুু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
অনেক টাকা উড়িয়ে ফেলেছে আমার জামাই প্রায় ২ লাখের উপরে কিন্তুু আমি ভালো হচ্ছিনা।
দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছিলাম। পিরিয়ড হতো না চুলতো ছিলোই না পুরো টাক।
২০১৯ এর আগষ্ট মাসে আমার জামাই এর বদলি হলো৷ চিটাগাং এর নতুন ব্রিজ।
ওখানে গেলাম কিন্তুু সমস্যা মোটেও কমলো না।
আমার আমাদের সাথেই থাকতো আমার মা আর বর মিলে সব কাজ করতো আমি একটা কাজ ও করতাম না।
এমনকি বিছানাই প্রস্বাব করে দিতাম। জামা কাপড়ে বাথরুম করে দিতাম।
আমার জামাই সেটা নিজেই পরিস্কার করতো কি বলবো।
দিন যেতে থাকে। হুজুর রা আমাকে এত এত তেলপড়া তাবিজ পড়া দিতো যে বলার মতো না। হুজুরা সরিষার তেল আমাকে কেজিয়ে কেজিয়ে খাওয়াইছে।
গায়ের ভিতরে মনে হয় ১০ কেজি ছিলো তাবিজের ওজন।
বহু কস্টে এবার বান্দরবনের এক পাহাড়ির দেখা পেলাম।
তখন ২০১৮ র ডিসেম্বর মাস কনকনে ঠান্ডা ।
উনি একদম বৃদ্ধ মহিলা ছিলেন ঠিক মতো কথা ও বলতে পারতেন না।
তিনি বললেন তিনি পারবেন এই বদ জ্বীনটাকে ছাড়াতে। কিন্তুু ভালো হওয়ার পর উনাকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হবে।
আমার বর তাতে ও রাজি হলো।
১ম দফায় ১০ হাজার দিলো।
এরপর শুরু হলো কাজ টানা ২১ দিন ওই পাহাড়ে থাকতে হবে।
উনি পাহাড়ের উপরেরই থাকতো। উনাকে জুম্মা বলা হতো।
ডিসেম্বর এর শীতের দিন খুব কস্ট ছিলো। কনকনে ঠান্ডা সারা রাত পাহাড়ের উপরে চিকিৎসা করতেন।
জ্বীন টাকে যখন শোয়ার করতেন তিনি বলতেন কখনও ছেড়ে যাবেন না আমাকে।
খুব বদজ্বীন ছিলো।
২১ দিনের দিন তাকে বতলে বন্ধ করা হয়।
কিন্তুু জ্বীন টা বলেছিলো উনি নাকি আমার বাচ্চা আর স্বামীকে কেড়ে নিবেন।
আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ হলাম।
জীবনের নতুন সুর্য দয় উদয় হলো। ২০১৯ ডুকলো।
আলহামদুলিল্লাহ পুরো পুরি ভাবে সুস্থ । ওই মহিলাটা আমাকে বললেন যে কখনও যেন চুল বাহিরে না ফেলি আর থুথু না দি। তাছাড়া অনেক সময় মানুষের চুল দিয়ে বিভিন্ন পাখিরা ঘর বাঁধার সময় খড়খুটোর সাথে দেয়।
আমাদের ইসলামে ও চুল নখ এগুলোকে দাফন করতে বলা হয়েছে।
কারন হলো অনেক সময় কুফুরি করার সময় এসব চুল নখ জ্বীনের মাধ্যমে খুঁজে নিয়ে গিয়ে ওগুলোতে কুফুরি করে। ধরেন আপনি বিদেশে অথচ আপনার চুল বা নখ দিয়ে কুফুরি করে এটা কিভাবে সম্ভব আপনাদের কাছে মনে হয়।
কারন এটা জ্বীন দ্বারা করানো হয়।
এজন্য সবসময় বিসমিল্লাহ বলে মাটিতে দাফন করে দিবেন তাহলে আর কারো সাধ্যনেই সেটা নেওয়ার।
তারপর আমার চুল আস্তে আস্তে গজাতে লাগলো। আমার আগের রুপ লাবন্য আমি ফিরে পেলাম।
সুখেই দিন যাচ্ছিলো আমার।
মা ও বাড়িতে চলে গেলো।
জামাইর সাথে সবসময়ে হাসিখুশিতে আছি।
জামাই বুকে নেওয়া ছাড়া আমাকে ঘুমায় না।
কিন্তুু সুখের দিন বেশি দিন রইলো না।
১৯ মার্চ ২০১৯ সালে বর হাসপাতাল থেকে আসলো।
তারপর নিজের হাতে বিরায়ানি রান্না করলো। একসাথে খেলাম।
তারপর দুজনে অনেক সময় ধরে ভালোবাসাতে মগ্ন ছিলাম। সেদিন দুজন দুজনের প্রতি অনুভূতি গুলো অন্যরকম ছিলো যা বলার মতো না।
আমার কাছে মনে হলো সেটাই হয়তো শেষ দিন ছিলো।
আমি তাকে বলেছি।
সে হেসে উড়িয়ে দিলো। তারপর আমাদের বাচ্চাকে আর আমাকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে গেলো।
রাত ২ টা হবে সে হঠাৎ করে রক্তবমি করতে থাকে।
আর আমি পাশের কোয়াটার এর মানুষ দের ডাকতে লাগলাম।
হঠাৎ করে রক্ত বমি আমি ভয় পেয়ে যায়।
পাশের কোয়াটার এর সবাই মিলে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
হাসপাতালে নেওয়ার সময় সে আমার হাত ধরে রাখে।
বাচ্চা টাকে পাশের বাসার এক ভাবির কাছে রেখে যায়। আমার শশুর শাশুড়ী মা বাবা সবাইকে কল দি।
হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর তারা সেলাইন দেয়। সেলাইন চলাকালীন তখন সে বলে বাবুকে দেখে রাখিও৷
এই বলে সে হঠাৎ কেমন যেনো করতো লাগলো। তারপর আমার ভালোবাসা আমার প্রান দুনিয়া ছেড়ে চলে যায়।
আমার ওই সময়ের অবস্থা আপনাদের বুজাতে পারবো না।
পাগলের মতো তাকে বলছিলাম বাবু উঠো না। তুমি ছাড়া একা কিভাবে থাকো। এই বাবু উঠোনা।
আমাদের বাবু তোমার জন্য কান্না করতেছে।
আমাদের পরিবার এর সবাই আসলো৷
তার লাশ বাড়িতে নেওয়া হলো তখন আমার সেন্স ছিলোনা।
তাকে দাফনের একটু সময় আগে আমার সেন্স আসে।
আর তার বুকের উপর পড়ে কাঁদতে থাকি।
শুধু বলতে থাকি আমাকে রেখে একা কিভাবে তুমি চলে গেলে আমার আর বাবু কি হবে।
২০ মার্চ ২০১৯ বিকাল ৫ টায় তার দাফন হয়।
আমার ইচ্ছে করতেছিলো সবকিছুর বিনিময়ে হলেও তাকে ফিরে পেতে।
আমি পাগল হয়ে যায় শুধু তার ছবি বুকে নিয়ে কাঁদতে থাকি।
বিছানাই শুয়লে ইচ্ছে হতো তাকে জড়িয়ে ধরি।
আসলে তাকে ছাড়া অনেক কস্টে আমি বেঁচে আছি।
এরপর প্রায় স্বপ্ন দেখতাম আমাকে বোতলে ভরার শাস্তি তোকে দিলাম।
তোর জামাইকে কেড়ে নিলাম।
এটা কি আমার মনের ভুল নাকি অন্য কিছু আমি জানিনা।
এটাও জানিনা আমার জামাই এর মৃত্যুর পিছনে কি তার হাত আছে কিনা।।
আল্লাহর উপর সব ছেড়ে দিছি। কিন্তুু সেই জ্বীনটা এখন আর ডিস্টার্ব আমাকে করে না।
তবে আমার মনে হয় জ্বীনটা হয়তো কোনো খতি করেছে।
দেড় বছরের মতো হলো তার মৃত্যুর।
এখনও মরার মতো বেঁচে আছি। তার স্মৃতি আমি আজও ভুলতে পারিনি।
এখন বাপের বাড়ি আছি মেয়েকে নিয়ে।
আমার শুধু ইচ্ছে হয় আমার জামাইকে জড়িয়ে ধরতে। তার শরীরের গন্ধ একটা বার পেতে।
আমি ফিরে পেতে চায়৷
এমন কোনো নামাজ নেই আমি তার জন্য কাঁদি না।
আমি জানি না আমি বেঁচে থাকবো কিনা। আমার ইচ্ছে হয় আমি আমার বাচ্চা টাকে মায়ের কাছে রেখে নিজে আত্মহত্যা করে মরে যায়।তাহলে যদি জামাইকে পেতাম। কিন্তুু আমি জানি আত্মহত্যা মহাপাপ। আমি এখন আর তাকে ছাড়া বাঁচতে পারছিনা।
দোয়া করবেন আমার জন্য জানি না আমার শেষ পরিনতি কি।
আমার প্রান প্রিয়ো বোনেরা আমি নুসরাত হক তোমাদের কাছে একটাই অনুরোধ করবো চুল কিংবা নঝ থুথুদিয়ে যেখানে সেখানে ফেলবে না।
মাটিতে বিসমিল্লাহ বলে দাফন করবে। আমি চায় না আমার এই বোনটার মতো কোনো বোনের এমন অবস্থা হোক।
অবশ্যই সাবধান হবেন।।
বিশ্বাস অবিশ্বাস আপনার ব্যাপার।
collected
Part 1:https://www.facebook.com/share/p/1A4VQLsNAn/
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন