দুদিন আগে প্রিঙ্গেলস নামের এক কৌটা বি*ষ কিনেছিলাম। পিতা হিসেবে দুনিয়ার কোটি কোটি পিতার মতোই আমিও আমার সামর্থ্য অনুযায়ী সন্তানের জন্য ভালোটাই কেনাকাটা করার চেষ্টা করি। গত রোববার উত্তরা শুটিং থেকে ফেরার পথে রাতে তেমনই একটা কেনাকাটা করেছিলাম। মগবাজার পুনাক সেন্টারের লাজফার্মা থেকে নির্বাণের জন্য একটা কিটকাট এবং ছোট কৌটার একটা প্রিঙ্গেলস চিপস কিনি।
যেতে যেতে রাত হয়ে যাওয়ায় আমার পুত্র সেটা আর সেদিন খায়নি। পরদিন আবার শুটিং থাকায় আমি খুব সকালে বের হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু রাতে বাসায় ফিরে দেখি, অবস্থা ভ*য়াবহ। নির্বাণ প্রিঙ্গেলস চিপস খেয়ে কী পরিমান ভীতিকর অবস্থায় পড়েছিলো, তা বাসায় ঢুকে তার চেহারা এবং বর্ণণার ভঙ্গি দেখে বুঝতে পারছিলাম। সে পরের ঘন্টাখানেক মুখে কিছু নিতে পারছে না এতো বাজে স্বাদ চিপসের। তার মায়ের অবস্থা আরও খারাপ। রীতিমতো অসুস্থ হয়ে পড়েছে একটা চিপস অর্ধেক খেয়ে।
আমি অর্ধেকের চেয়ে কম মুখে দিয়েও দেখলাম, প্রায় বমি করার অবস্থা। বলা যায়, বি*ষ এটা। আমি সঙ্গে সঙ্গে ফোন দিলাম সেই শাখায়। ম্যানেজার ধরে, প্রথমত অস্বীকার এবং পাশ থেকে একজন রীতিমতো চেচিয়ে উঠলেন, আরে এসব খারাপ হয় নাকি? আমি বিষয়টা ভালোভাবে শেষ করতে চেয়েছিলাম। পরে ওই লোকের চিৎকার শুনে, ম্যানেজারকে বললাম, আমি এসে পাশের ওই লোককে খাওয়াতে চাই।
ম্যানেজার কাকুতি মিনতি শুরু করলো। আমি বিনীতভাবে ফোন রেখে দিলাম। আজ গিয়ে স্বশরীরে তাদের শাখায় উপস্থিত হয়ে বললাম। তারা আজ স্বীকার করলো তাদের প্রিঙ্গলসে এমন সমস্যা পাওয়া গেছে। আরও একজন অভিযোগ দিয়েছে। আমি ম্যানেজারকে বললাম, তাহলে আপনারা এসব বিক্রি করেন কেনো? সে বলল, তাহলে এটা যে খারাপ, কীভাবে পরীক্ষা হবে? আমি বললাম, তার মানে এসব পরীক্ষা করবেন ক্রেতাদের খাইয়ে? ক্রেতাদের অসুস্থ করে? আর জবাব দিলেন না।
তারপর ম্যানেজারকে বললাম, আপনি খান। প্রথমে গাইগুই করে একটা নিয়ে মুখে দিয়ে তার দশ ভাগের এক অংশ খেয়ে বলল, সরি স্যার এটা খাওয়ার মতো না। আমি বললাম, এখানে এটা জানাতেই এসেছি। তারপর তাদের অনেক অনুরোধ এটা দিয়ে যান। আমরা প্রিঙ্গেলস কোম্পানির বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকারে মামলা করবো। আমি বললাম, আমি করতে পারি না? এটা দিতে আসিনি। এটা খারাপ দেখাতে এসেছি কেবল। তারপরও তাদের অনেক অনুনয়। আমি চলে এলাম।
অবাক হতে হয়, প্রিঙ্গলসের একটা দেড়শ টাকার চিপস পুরোটাই বিষ। বাইরে লেখা এক্সপায়ার ডেট ঠিক, কিন্তু ভেতরে ভ*য়ংকর অখ্যাদ্য। এটা কোনও পরীক্ষা ছাড়াই বাজারজাত করছে তারা। এবং লাজফার্মার মতো ফার্মেসিও কোনও দায় ছাড়া বিক্রি করে চলছে। আমি হয়তো বিষয়টা ওখানেই শেষ করে আসতাম। কিন্তু শিশুখাদ্য নিয়ে ছাড় দিলে ওই অন্যায়ের দায় আমার উপরও বর্তায়।
সকলের কাছে বিনীত অনুরোধ, প্রিঙ্গলস টিপস বাচ্চার মুখে দেওয়ার আগে মা বাবা খেয়ে দেখবেন। আর লাজফার্মার খাবার এবং ওষুধও ভালোভাবে যাচাই করে নেবেন। সংস্কারের এই হাওয়ায় এসব বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের নজর দেওয়া খুব জরুরি। বাচ্চাদের মুখে তুলে দেওয়ার জন্য কত ভালো জায়গাতে দায় ও দ্বিধাহীন বি*ষ বিক্রি করে চলছে নির্বোধ প্রতিষ্ঠান ও লোকজন...
- Isteaque Ahmed
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন