প্রিয় অভিভাবক, আপনাকে বলছি!
•
ভালো ছাত্র/ ছাত্রীর খেতাব, জিপিএ-৫ সার্টিফিকেটের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ভালো মানুষ হওয়া। ভালো রেজাল্টের পাশাপাশি সন্তানকে ভালো ছাত্র ও ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলুন।
•
ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্তানকে উচ্চ বেতনে পড়াচ্ছেন বলে আর কোনো খোঁজখবর নেয়ার প্রয়োজন নেই- এমন ভ্রান্ত ধারণাকে প্রশ্রয় দেবেন না। আপনার সন্তানের দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে।
•
সন্তানকে তার সহপাঠীদের সাথে পড়ালেখা, ফলাফল বা অন্য কোনোকিছু নিয়েই তুলনা করবেন না।
সে তার মতো অনন্য- এ বিশ্বাস নিয়েই তাকে এগোতে উদ্বুদ্ধ করুন।
•
পরীক্ষার হল থেকে বের হতেই প্রশ্ন ধরে ধরে উত্তর জানতে চাওয়া/অন্যদের সামনে এ নিয়ে তাকে অপদস্থ করা/বাসায় গিয়েও বকাঝকা করা থেকে বিরত থাকুন।
উৎসাহ দিয়ে তাকে পরবর্তী পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে সহায়তা করুন।
•
সন্তানের সামনে তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা শিক্ষক-শিক্ষিকার সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকুন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়মকানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন।
•
সন্তানকে সকালে ভরপেট নাশতায় অভ্যস্ত করান। স্কুলের জন্যে ঘরে তৈরি টিফিন ও পানি সাথে দিতে সচেষ্ট থাকুন।
•
অভিভাবক বৈঠকে মা ও বাবা দুজনেই অংশ নেয়ার চেষ্টা করুন।
•
সন্তানের কৃতিত্ব বা সাফল্যে 'আমার ছেলে/ মেয়ে' আর ভুল কিছু করে ফেললে 'তোমার ছেলে/ মেয়ে' বলে মা ও বাবা পরস্পরকে দোষারোপ করা থেকে বিরত থাকুন।
•
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় নোটিশ, নিয়ম, প্রতিদিনের পড়া, স্কুলে সহপাঠী ও শিক্ষকদের সাথে কেমন কাটল-তা সন্তানের কাছ থেকেই জানুন।
•
সন্তানের খোঁজখবর রাখার জন্যে সহপাঠী ও শিক্ষকের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন।
•
সন্তান ছোটখাটো ভুল করলে সাথে সাথেই বিচার-দরবার-শাস্তি না করে বুঝিয়ে বলুন।
•
সন্তানকে দায়িত্ব-সচেতন ও লক্ষ্যাভিসারী করে গড়ে তুলুন। তাহলে সে নিজ থেকেই ক্ষতিকর অভ্যাস বর্জনে সচেষ্ট হবে।
•
ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার প্রয়োজন আছে কিন্তু ইংলিশ কালচারের কোনো প্রয়োজন আমাদের নেই। তাই সন্তানকে ইংলিশ মিডিয়ামে না পড়িয়ে প্রয়োজনে ইংলিশ ভার্সনে পড়ান।
•
পড়ার সময় মোবাইল ফোন নিজের কাছ থেকে দূরে রাখতে সন্তানকে উৎসাহিত করুন।
•
১৮ বছর বয়স হওয়ার আগে সন্তানকে স্মার্টফোন দেবেন না।
পরীক্ষায় ভালো করলে বিলাসদ্রব্য/প্রযুক্তিপণ্য কিনে দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দেবেন না।
•
সন্তানকে দেশ-বিদেশের নানা গল্প, শিক্ষামূলক বই ও স্মরণীয় ব্যক্তিদের জীবনী পড়তে উৎসাহিত করুন। বইমেলায় অংশ নিন।
গ্রন্থাগারে নিয়ে যান। বই পড়ার অভ্যাস তার পাঠকসত্তাকে জাগ্রত করবে।
•
সহপাঠীর সাথে কোনো দ্বন্দ্বে অভিভাবকেরা পারতপক্ষে জড়াবেন না। তাদেরকেই মীমাংসা করতে দিন। না হলে শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে ফেলুন। তবে কখনোই সন্তানের অন্যায়ের পক্ষ নিয়ে অপর সহপাঠী ও অভিভাবকদেরকে শাসাবেন না, হুমকি-ধমকি দেবেন না।
•
সন্তানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার মাসখানেক আগেই বাসার সবাই টিভি দেখার প্রবণতা কমিয়ে দিন। তাহলে সন্তানকেও টিভি না দেখতে উদ্বুদ্ধ করতে পারবেন।
•
সন্তানের নামে জনে জনে অভিযোগ ও দুর্নাম করবেন না। সন্তানের ভালো আচরণ ও গুণগুলোর প্রশংসা করুন। উৎসাহিত করুন তার দুর্বলতাগুলো অতিক্রম করতে। এতে সে আত্মবিশ্বাসী ও শুদ্ধাচারী হয়ে গড়ে উঠবে।
•
সন্তানের সাফল্য কামনায় সবসময় দোয়া ও দান করুন।
________________
রেফারেন্স: শুদ্ধাচার
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন