এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫

গাইবান্ধা জেলার নাম করণের ইতিহাস:

 গাইবান্ধা জেলার নাম করণের ইতিহাস:

গাইবান্ধা জেলার নামকরণ নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই। জানা যায়, জেলাটির মূল ভূখন্ড ছিল নদীর তলদেশে, কালক্রমে যা নদীবাহিত পলিতে ভরাট হয়। এ অঞ্চলে সংঘটিত একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের ফলে নদী তলদেশের উত্থান ঘটে এবং স্থলভূমিতে পরিণত হয়। ব্রহ্মপুত্র নদসহ তিস্তা ও যমুনা নদীবাহিত পলি মাটি দিয়েই গড়ে উঠেছে আজকের গাইবান্ধা। এই গাইবান্ধা নামকরণ নিয়ে দু’টি ধারণা প্রচলিত আছে। 


গাইবান্ধা নামকরণ প্রসঙ্গে গাইবান্ধার ইতিহাস ও ঐতিহ্য গ্রন্থ থেকে জানা যায়, জেলা শহরের বর্তমান অবস্থানের গাইবান্ধা নামকরণ ঠিক কবে নাগাদ হয়েছে তার সঠিক তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। তবে রংপুরের কালেক্টর ইজি গ্লেজিয়ার ১৮৭৩ সালে যে রিপোর্ট প্রণয়ন করেছিলেন সেই রিপোর্টে গাইবান্ধা নামটি ইংরেজীতে লেখা হয়েছে জিওয়াইইবিএএনডিএ (GWEBANDA) এবং সেটির অবস্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ঘাঘট পাড়ের কথা। এই ঘাটট-ই যে ঘাঘট নদী সেটা বলা যায়। রংপুরে গ্লেজিয়ার সাহেবের পূর্বে কালেক্টর ছিলেন জেমস রেনেল। 


জেমস রেনেলের প্রণীত রেনেল জার্নালস থেকে জানা যায়, ঘাঘট নদী ১৭৯৩ সালেও সে সময়ের নদীগুলোর চাইতে ছোট আকৃতির ছিল বলেই ঘাঘটকে খাল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আবার এই তথ্য থেকে আরেকটা বিষয় বলা যায় যে, ১৭৯৩ সালেও মানস নদী ছিল। ঘাঘট নদীর মতই। অপর যে বিষয়টি এই দুটি তথ্য থেকে অবহিত হওয়া যায়, তা হলো ১৭৯৩ সালে গাইবান্ধা নামটি উল্লেখযোগ্য ছিল না। ১৮৭৩ সালে ইজি গ্লেজিয়ার তার রিপোর্টে গাইবান্ধা নামটি উল্লেখ করেন। সম্ভবত ১৭৯৩ সালের আগে ঘাঘট নদীর তীরবর্তী এই স্থানটি একটি পতিত ভূখভ এবং গোচারণ ভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। জনবসতি ছিল না বলেই রংপুরের কালেক্টরদের রিপোর্টে গাইবান্ধা নামটি ১৮৭৩ সালের আগে উল্লেখিত হয়নি। 


গাইবান্ধার নামকরণ সম্পর্কে প্রচলিত একটি কিংবদন্তীতে বলা হয়েছে, মহাভারত রচনার প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে বর্তমান গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় এক হিন্দু রাজার প্রাসাদ ছিল। তার নাম ছিল রাজা বিরাট। মৎস্য দেশের এই বিরাট রাজার গো-ধনের কোন তুলনা ছিল না। তার গাভীর সংখ্যা ছিল ষাট হাজার। মাঝে মাঝে ডাকাতরা এসে বিরাট রাজার গাভী লুণ্ঠন করে নিয়ে যেতো। সে জন্য বিরাট রাজা একটি বিশাল পতিত প্রান্তরে গো-শালা স্থাপন করেন। গো-শালাটি সুরক্ষিত এবং গাভীর খাদ্য ও পানির সংস্থান নিশ্চিত করতে। নদী তীরবর্তী ঘেঁসে জমিতে স্থাপন করা হয়। সেই নির্দিষ্ট স্থানে গাভীগুলোকে বেঁধে রাখা হতো। প্রচলিত কিংবদন্তী অনুসারে এই গাভী বেঁধে রাখার স্থান থেকে এতদাঞ্চলের কথ্য ভাষা অনুসারে এলাকার নাম হয়েছে গাইবাঁধা এবং কালক্রমে তা গাইবান্ধা নামে পরিচিতি লাভ করে। 


আবার অনেকেই মনে করেন, গাইবান্ধা নামটি রাজা বিরাটের সময় প্রচলিত ছিল না। মোশারফ হোসেন প্রণীত দিনাজপুরের ইতিহাস গ্রন্থের ১০ পৃষ্ঠায় ঐতিহাসিক বুকাননের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাজা বিরাট কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে পঞ্চ পাণ্ডবের পক্ষালম্বন করে সপুত্রক নিহত হন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব ৩২০০ সালে (হিন্দু পঞ্জিকা)। অথচ ‘‘গাইবান্ধার ইতিহাস ও ঐতিহ্য শীর্ষক’’ গ্রন্থের ১০ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে যে, সম্রাট আকবরের শাসনামলে প্রণীত ‘‘আইন-ই আকবরী’’ গ্রন্থে তৎকালীন ঘোড়াঘাট সুবা’র আওতায় মোট ৮৪টি মহালের বর্ণনা পাওয়া যায়। এ সবের মাঝে বালকা (বেলকা), বালাশবাড়ী (পলাশবাড়ী), তুলশীঘাট, সা-ঘাট/সেঘাট (সাঘাটা), কাটাবাড়ী ইত্যাদি নাম থাকলেও গাইবান্ধা বলে কোন মহালের নাম উল্লেখ নেই। এ থেকে বোঝা যায় যায় যে, ষোড়শ শতাব্দীতেও গাইবান্ধা নামটির উদ্ভব ঘটেনি। সুতরাং, রাজা বিরাটের গো-চারণ ভূমি থেকে ‘‘গাইবান্ধা’’ নামটির উদ্ভব হয়েছে এরূপ ধারণা যথার্থ নয়। 


সুতরাং, সত্যিকার অর্থে গাইবান্ধা নামটি খুব প্রাচীন নয়। হয়তোবা এতদাঞ্চলের কোন ব্যক্তির গাই বাঁধার বিশেষ কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে লোকেরা এ অঞ্চলকে গাইবান্ধা বলে ডাকতে থাকে এবং এক পর্যায়ে তা এ অঞ্চলের নাম হিসেবে পরিগণিত হয়। যেমন— হাতীবান্ধা, মহিষবান্ধা, বগবান্ধা এ জাতীয় আরও স্থানের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। 


১৮৭৫ সালের পূর্বে গাইবান্ধা নামে এতদাঞ্চলে তৎকালীন সরকারের কোন ইউনিট ছিল না। তবে, রংপুর জেলায় সাদুল্লাপুর ও ভবানীগঞ্জ থানা নিয়ে ১৮৫৮ সালের ২৭ আগষ্ট ভবানীগঞ্জ নামে একটি মহকুমা গঠিত হয়। ১৮৭৫ সালে ভবানীগঞ্জ মহকুমা নদীভাঙ্গনের কবলে পড়লে মহকুমা সদর ঘাঘট নদীর তীরবর্তী গাইবান্ধা নামক স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়। পরে এর নাম পরিবর্তন করে গাইবান্ধা মহকুমা নামকরণ করা হয়। আশির দশকে মহকুমাগুলোকে জেলায় রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে ১৯৮৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধা মহকুমা জেলায় রূপান্তরিত হয়। গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, পলাশবাড়ী, সাদুল্লাপুর, গোবিন্দগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা জেলা। বর্তমানে পৌরসভা রয়েছে চারটি ও ইউনিয়ন ৮১টি। জনসংখ্যা রয়েছে ২৪ লাখ ৭১ হাজার ৬৮১ জন, মৌজা ১০৯২টি, গ্রাম ১৩৯২টি, রেলপথ ৫৬ কিলোমিটার ও মহাসড়ক রয়েছে ৩২.৮ কিলোমিটার। 


তথ্যসূত্র: অনলাইন, উইকিপিডিয়া।


#Gaibandha #History #গাইবান্ধা #ইতিহাস #ঐতিহ্য #নামকরণ

কোন মন্তব্য নেই:

রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ ২৫-০৬-২০২৫

 রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ ২৫-০৬-২০২৫ আজকের সংবাদ শিরোনাম বিশ্ব পরিবেশ দিবসের উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা --- পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টি...