![]() |
ডাঃ ভিতলকাস ও হোমিওপ্যাথি
প্রথম পর্ব
★ জন্ম --- ১৯৩২ সালের ২৫শে জুলাই, গ্রীসের রাজধানী এথেন্সে,
★ মাধ্যমিক লেভেলের পড়াশোনা শেষ করে এথেন্সের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হন, এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক হন,
★ দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে ইঞ্জিনিয়ারিং এর চাকরি পেয়ে চলে যান, এবং সেখানে চাকরিতে জয়েন করেন, তখন তার বয়স ২৫ বছর।
★ ১৯৫৯ সাল, ভিতলকাসের বয়স তখন ২৭ বছর, দক্ষিণ আফ্রিকায় কাটছে তার প্রবাসী জীবন,
★ একদিন সন্ধ্যায় তিনি তার এক বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে যান। ঐ বন্ধুটি হোমিওপ্যাথির বইপত্র পড়তেন। তার টেবিলে ছিল উইলিয়াম বোরিকের একটি মেটিরিয়া মেডিকা,
★ যারা পড়াশোনা করতে ভালোবাসে তারা যে কোন বইপত্র পেলেই পাতা উল্টে দেখতে চায়। কি ব্যাপারের বই কৌতূহলবশতঃ দুই চার লাইন পড়তেও চায়। ভিতলকাসও তেমনি বইটি উল্টেপাল্টে দেখতে থাকলেন।
★ তার ইচ্ছা হলো এই বইটি তিনি কিনে ভালভাবে পড়বেন। বন্ধুটির কাছ থেকে বইটি কেনার প্রাপ্তিস্থান জেনে নিলেন।
★ পরদিনই তিনি নির্দিষ্ট দোকানে গিয়ে বইটি কেনেন এবং গোড়া থেকেই পড়তে শুরু করেন।
★ প্রতিটি ঔষধ পড়তে তার খুব মজা লাগছিল, খুব ভালো লাগছিল। নিজের আত্মজীবনীতে তিনি বলেছেন, এমন কি খাওয়ার সময়ও টেবিলে বইটি রেখে তিনি পড়েছিলেন।
★ দুই দিনের মধ্যে তিনি বোরিকের মেটিরিয়া মেডিকা বইটি পড়ে শেষ করেন।
★ তিনি লিখেছেন --
" গভীর প্রেমঘটিত ব্যাপারের মতন হোমিওপ্যাথিক ঔষধের উপরে একটা নেশায় যেন আমাকে পেয়ে বসে "।
★ বইটি পড়ে শেষ করার পরের দিনই তিনি আবার ওই দোকানে যান এবং হোমিওপ্যাথি বিষয়ক আরো গোটা দশেক বই কেনেন।
★ কাজের ফাঁকে ফাঁকে প্রতিদিন প্রায় ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা সময় তিনি ঐসব হোমিওপ্যাথিক বইগুলি পড়তে থাকেন।
★ হোমিওপ্যাথিকে তিনি এতটা বেশি ভালোবেসে ফেললেন যে মনে করলেন কোন প্রতিষ্ঠানিক হোমিওপ্যাথিক স্কুল বা কলেজে তিনি ভর্তি হয়ে পড়বেন।
★ ইংল্যান্ডের ডাঃ ক্লার্কের এক ছাত্র ডাঃ নোয়েল পুডেফাটস সেই সময় দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি ছোট হোমিওপ্যাথিক স্কুল খুলে ছিলেন। স্কুলটির নাম ছিল -- নোয়েল পুডেফাটস স্কুল।
★ ভিতলকাস এখানে ভর্তি হলেন, এবং ১৯৬২ সালে ঐ কলেজের একটি ডিপ্লোমা সার্টিফিকেট পেলেন।
★ হোমিওপ্যাথির প্রতি ঐ স্বল্প শিক্ষায় তিনি সন্তুষ্ট হলেন না। তিনি খোঁজ করতে থাকলেন কোথায় আরও ভালোভাবে বিশদে হোমিওপ্যাথিক কোর্স পড়া যায়!
★ ঐ সময় হোমিওপ্যাথি শিক্ষার পীঠস্থান ছিল কলকাতার " দ্য ক্যালকাটা হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ "।
★ ভিতলকাস চাকরি ছেড়ে কলকাতায় এলেন এবং দ্য ক্যালকাটা হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজে ভর্তি হলেন। হোমিওপ্যাথির উপর তিনি D M S কোর্স করলেন।
★ এরপর দেশে ফেরার আগে তিনি বোম্বেতে যান এবং বোম্বে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজেও পুনরায় সেখানকার লাইসেনসিয়েট ডিপ্লোমা শিক্ষালাভ করেন৷
★ তিনি গ্রীসে ফিরলেন। তার মনে হয়েছিল হোমিওপ্যাথির উপর যে শিক্ষা তিনি পেয়েছেন তা প্র্যাকটিক্যাল বা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তাই তিনি নিজে আরও বইপত্র জোগাড় করে হোমিওপ্যাথি বিষয়ে গভীর অধ্যায়নে মনোনিবেশ করেন। ধ্যানমগ্ন ঋষির ন্যায় তিনি দিনরাত হোমিওপ্যাথির উপরে পড়াশোনায় মগ্ন থাকলেন।
★ তখন গ্রীসে হোমিওপ্যাথির বিশেষ প্রচলন ছিল না। গ্রীসের থেকে ইউরোপের সুইজারল্যান্ডে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার প্রচলন বেশি থাকায় ভিতলকাস সুইজারল্যান্ড যাত্রা করেন। এখানকার গস্টাড নামের একটি শহরে তিনি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা আরম্ভ করেন এবং অচিরেই একজন ভালো হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হিসাবে নাম করেন।
★ ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৭, মাত্র ১ বছর সুইজারল্যান্ডে থাকার পর ভিতলকাস নিজের দেশ গ্রিসে ফেরার মনস্থির করেন।
★ ১৯৬৭ সালে তিনি রাজধানী এথেন্সেে একটি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করেন এবং আগ্রহী কিছু চিকিৎসককে হোমিওপ্যাথিক শিক্ষাদানও শুরু করেন।
★ আস্তে আস্তে সেখানকার মানুষজন এবং চিকিৎসক সমাজ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে পরিচিত হয়ে ওঠে। মডার্ন এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় শিক্ষাপ্রাপ্ত হয়েও অনেক চিকিৎসক তার কাছে হোমিওপ্যাথিক প্রশিক্ষণ নিতে আসতে থাকেন।
★ বহির্বিশ্বের হোমিওপ্যাথদের সাথে যোগাযোগ করে মাত্র দু বছরের মধ্যে ১৯৬৯ সালে তিনি এথেন্সে ২৪তম আন্তর্জাতিক হোমিওপ্যাথিক কংগ্রেস অনুষ্ঠিত করেন।
★ এই বছরেই তিনি একটি হোমিওপ্যাথিক মেটিরিয়া মেডিকা লিখলেন। বইটির নাম দিলেন ---হোমিওপ্যাথি, মেডিসিন অফ দ্যা নিউম্যান।
বইটি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের কাছে জনপ্রিয়তা ও প্রশংসা লাভ করে। বইটিতে তিনি মাত্র ৫২ টি ঔষধ লিখেছিলেন।
নিচে বইটির একটি পাতার স্ক্রিনশর্ট দিলাম।
( লেখাটা কন্টিনিউ হবে )
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন