💕"নববর্ষ, বৈশাখ আর রবীন্দ্রনাথ-একই আলোর তিন নাম"💕
✔ সংসারের সমস্ত মোহ ও সঙ্কীর্ণতার ঊর্ধ্বে যে "সকলের চেয়ে বড়", সেই অনন্ত সত্যের কাছে আত্মসমর্পণের মধ্যেই নববর্ষের তাৎপর্য খুঁজে পেতেন রবীন্দ্রনাথ।
✔ ১৩৩৮ সালের ১ বৈশাখে শান্তিনিকেতন থেকে ইন্দিরাদেবীকে লেখেন:
“কলকাতা থেকে নববর্ষ বিদায় নিয়েছে… আজ যদি আশ্রমে থাকতিস তাহলে দেখতে পেতিস এখানে এটা বেঁচে আছে।”
এই 'বেঁচে থাকা'র অর্থ তাঁর কাছে ছিল— নববর্ষ কেবল একটি দিন নয়, বরং বাকি ৩৬৪ দিনের সাথেও যার এক গভীর সেতুবন্ধন।
✔ নববর্ষের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের আত্মিক সম্পর্ক বহু চিঠিপত্র, কবিতা ও গানের পাতায় ছড়িয়ে আছে। কখনও আশ্রমজীবনের ব্রতপালনের আহ্বানে, কখনও আত্মউন্নয়ন ও শুদ্ধতার অঙ্গীকারে, আবার কখনও বা মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জীবনের জয়গানে।
✔ শান্তিনিকেতনে নববর্ষের সূচনা হয়েছিল ১৩০৯ সালের ১ বৈশাখে। এই দিনটিতে গুরুদেব নিজ হাতে অতিথি আপ্যায়ন করতেন, প্রিয়জনদের চিঠিতে আশীর্বাদ পাঠাতেন, নতুন দিনের জন্য করতেন আত্মপ্রত্যয়।
“এই যে নববর্ষ আজ জগতের মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছে, এ কি আমাদের হৃদয়ের মধ্যে প্রবেশ করতে পেরেছে?”
✔ এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি নিজেই পথ দেখিয়েছেন:
“নতুন মানুষ আজ আমার মধ্যে নতুন আরম্ভে আনন্দিত—এই বোধকে জাগাতে হবে।”
✔ ১৩৪৮ সালের বৈশাখ, জীবনের শেষ নববর্ষে, রবীন্দ্রনাথ ক্লান্ত দেহে হলেও লিখে গেলেন এক মহাজাগরণের গান—
“জয় জয় জয় রে মানব-অভ্যুদয়…”
যে গান আজও আমাদের নববর্ষের সূর্যোদয়ে নবজীবনের আশ্বাস জাগায়।
বাংলা নববর্ষ, বৈশাখ আর রবীন্দ্রনাথ—এ যেন সময়ের একই নদীতে মিলিত তিনটি ধারা।
প্রতি বছর বৈশাখ আসে নতুন আলো, নতুন সংকল্প আর রবীন্দ্রনাথের অমর বাণী নিয়ে। সেই আলোর পথে চলা হোক আমাদের আজকের প্রার্থনা।
✍️ লিখেছেন: নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন