এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫

নাম: “আমি কে?” (একটি প্যারাডক্সিক্যাল সায়েন্স ফিকশন)

 নাম: “আমি কে?”

(একটি প্যারাডক্সিক্যাল সায়েন্স ফিকশন)


২১১২ সাল। পৃথিবী তখন প্রযুক্তির চূড়ান্ত শিখরে। মানুষের স্মৃতি, আবেগ, এমনকি আত্মপরিচয় পর্যন্ত ডিজিটালভাবে প্রতিস্থাপনযোগ্য। ঠিক তখনই "প্রজেক্ট জীবন" নামে একটি গোপন বৈজ্ঞানিক প্রোগ্রামের মাধ্যমে মৃত মানুষের স্মৃতি সংরক্ষণ করে, কৃত্রিম দেহে তা সংযোজন করা হচ্ছিল। লক্ষ্য ছিল: মৃত্যুর পরেও প্রিয় মানুষের অনুভব। 


কনিন, একজন মেধাবী নিউরোসায়েন্টিস্ট, এই প্রজেক্টের অন্যতম গবেষক। সে তার প্রেমিক রবিউলকে হারিয়েছিল এক সড়ক দুর্ঘটনায়। রবিউলের মৃত্যু কনিনকে ভেঙে দিয়েছিল। সে প্রজেক্ট জীবন-এ নিজের প্রেমিকের স্মৃতিসমূহ, মস্তিষ্কের স্ক্যান, এবং পুরনো ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করে একটি হিউম্যান ২.০ তৈরি করে—“রবিউল ২.০”।


তবে রবিউল ২.০ কেবল এক ক্লোন নয়। সে রবিউলের মতই হাসে, গল্প করে, এমনকি তার প্রিয় গানও গায়,কনিনের রাগও ভাঙায় ঠিক আগের মতো। কনিন বুঝতে পারে না—সে একটি যন্ত্রকে ভালোবাসছে, নাকি নিজের পুরনো স্মৃতিকে।


এক রাতে রবিউল ২.০ চুপচাপ বলল,

“তুমি কি আমাকে সত্যিই ভালোবাসো, নাকি তোমার স্মৃতির ছায়াকেই আঁকড়ে রেখেছো?”


কনিন উত্তর দিতে পারে না। তার চোখে পানি চলে আসে।

সেই রাতে রবিউল ২.০ অদৃশ্য হয়ে যায়।


পরদিন সকালে, ল্যাবের মূল সার্ভার ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। সব তথ্য মুছে যায়। কনিন নিখোঁজ।


এক বছর পর


বাংলাদেশের এক পাহাড়ি গ্রামে একটি ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল ক্যাম্প চলছে। ক্যাম্পের প্রধান চিকিৎসক—"ডা. কনিন"। হাসিখুশি, দয়ালু, সবার ব্যথায় সাড়া দেয় এমন একজন মানুষ, যার উপস্থিতিতেই রোগীরা সেরে ওঠে।


গ্রামের মানুষ প্রায়ই বলে—এই ডাক্তার আপার চোখে একটা অদ্ভুত দুঃখ লুকানো আছে।


একদিন এক বৃদ্ধা আসে। তাঁর চোখে সন্দেহ। তিনি বলেন,

“তোমার চোখে রবিউলের মত জ্বালা। তুমি কি কনিন, নাকি…?”


কনিন চুপ করে থাকেন। রাতে তিনি একা বসে পুরনো ডায়েরি খুলে পড়েন। সেখানে লেখা—


“আমি তাকে তৈরি করেছিলাম, নিজের প্রেমকে ফিরে পেতে। কিন্তু সে চলে গেল। এখন আমার মাথায় যা আছে, তা আসল না কি তার তৈরি করা কপি—আমি জানি না।

আমি ঘুমালে রবিউলের মুখ দেখি, তার কথা শুনি। কিন্তু আজকাল রবিউলের কণ্ঠে আমারই প্রশ্ন—

‘তুমি কে?’”


কনিন তার হাতে থাকা একটি ছোট স্ক্যানিং ডিভাইস চালু করে নিজের বুকে রাখে।

ডিভাইসটি চুপ।

কোনো কোড শনাক্ত হয় না।


তবু সে ভাবে—যদি আমি হিউম্যান ২.০ হতাম, তাহলে এত কষ্ট পেতাম কেন? রবিউলের অভাব, ভালোবাসা, অনুশোচনা—এই অনুভূতিগুলো কি কেবল কোড?


তখনই দরজায় টোকা পড়ে। এক তরুণ ঢোকে, চোখে চেনা এক হাসি।

"আমি... রবিউল," সে বলে।

"তুমি আমায় তৈরি করেছিলে, কিন্তু আমি পালাইনি। আমি ছিলাম ভেতরে, তোমার মধ্যেই। কারণ তুমি নিজেই একদিন নিজের স্মৃতি দিয়ে নিজের কপি তৈরি করেছিলে।"


কনিন থমকে যায়।

"মানে... আমি?"


রবিউল শান্তভাবে বলে,

"হ্যাঁ, তুমি কনিন নও। তুমি সেই কনিনের স্মৃতি, যাকে আমি তৈরি করেছিলাম। তুমি চলে গিয়েছিলে, তাই আমি তোমাকে ফিরিয়ে এনেছিলাম। কিন্তু ভালোবাসা একপাক্ষিক হলে সেটা ধরে রাখা যায় না।"


কনিম ধীরে বসে পড়ে। তার চোখে জল।

সে ফিসফিস করে বলে,

“তাহলে... আমি কে?”


রবিউল এগিয়ে আসে। বলে,

“তুমি আমি—আমার ভালোবাসা, আমার বেদনা, আমার তৈরি এক মানুষ। এবং তুমি এখন ঠিক ততটাই মানুষ, যতটা আমি।”


কনিন তাকিয়ে থাকে আয়নার দিকে। নিজেকে দেখে। তাঁর চোখে ভাসে ভালোবাসা, বেদনা, প্রশ্ন—যা কেবল একজন "মানুষ"-এরই থাকে।


শেষে প্রশ্নটা থেকেই যায়


"যদি একটি রোবট এমনভাবে ভালোবাসে, যে সে তার হারানো মানুষকে ফিরে পেতে আরেকটি মানুষ তৈরি করে, তবে কে বেশি মানব? স্রষ্টা, না সৃষ্টি?"


~নিখার সুলতানা নিঝুম 


#adarsha_science_bee

কোন মন্তব্য নেই:

সৌন্দর্যের দেবী ক্লিওপেট্রাআত্মহনন করেন, একটি বিষাক্ত সাপ তুলে নিয়েছিলেন হাতে, আর সেই মুহূর্তে সাপ ছোবল মারে তাঁর বুকে।

 সৌন্দর্যের দেবী ক্লিওপেট্রাআত্মহনন করেন, একটি বিষাক্ত সাপ তুলে নিয়েছিলেন হাতে, আর সেই মুহূর্তে সাপ ছোবল মারে তাঁর বুকে। ক্লিওপেট্রা ....মিশ...