আপনি যদি একজন কর্মজীবী মেয়েকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেন, তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে—তারও একটি আলাদা পেশাগত দায়িত্ব ও সময়সূচি রয়েছে। অফিসে ৮–১০ ঘণ্টা কাজ করে সে ক্লান্ত হয়ে ফিরবে। তখন যদি আপনি আশা করেন সে আপনার জন্য গরম চা বানাবে, প্রতিদিন আপনার জামা কাপড় গুছিয়ে রাখবে, কিংবা আপনার মা-বাবার যত্ন করবে—তাহলে সেটা অন্যায় প্রত্যাশা। তাকে সাহায্য করতে হবে, বোঝাতে হবে আপনি তার পাশে আছেন, তাকে শুধু গৃহিণী ভাবলে চলবে না।
আবার আপনি যদি একজন গৃহিণীকে বিয়ে করেন, তবে এটাও মেনে নিতে হবে যে—সে আপনার আর্থিক দায়িত্ব ভাগ করে নিতে পারবে না। তার অবদান টাকা দিয়ে মাপা যাবে না, কারণ সে ঘরের প্রতিটি খুঁটিনাটি সামলাবে, সন্তানদের মানুষ করবে, আপনার পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখবে। সে হয়তো পে-স্লিপ দেখাতে পারবে না, কিন্তু তার কাজের মূল্য আপনি বুঝবেন সময়ের সঙ্গে।
আপনি যদি স্টাইলিশ অথচ কর্মহীন একজন মেয়েকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পছন্দ করেন, তাহলে মনে রাখতে হবে তার সাজগোজ, লাইফস্টাইল, ঘোরাঘুরি, ব্র্যান্ডের প্রতি আগ্রহ—এই সব কিছুর খরচ আপনার কাঁধে এসে পড়বে। আর আপনি যদি নিজেই তার চাহিদা পূরণে অক্ষম হন, তাহলে তার এই জীবনযাপন নিয়ে অভিযোগ করার নৈতিক অধিকার আপনার নেই।
আর আপনি যদি এমন একজন সাধারণ মেয়েকে বিয়ে করেন, যে মেকআপ দিয়ে মুখ ঢাকে না, নিজের ত্বকের দাগ-ছোপ লুকানোর চেষ্টা করে না, তাহলে তাকে ভালোবাসুন তার বাস্তবতা নিয়ে। তার মুখের ব্রণের দাগকে হীন করে দেখানো মানে হলো, আপনি এখনও বাইরের চাকচিক্যে মুগ্ধ। অন্য মেয়ের সঙ্গে তুলনা করে তার আত্মবিশ্বাস ভেঙে ফেলবেন না।
মনে রাখবেন, কাউকে কারো মতো বানানো যায় না। মানুষ পুতুল নয়, যাকে আপনি নিজের পছন্দমতো গড়ে নেবেন। মানুষ জন্মায় নিজস্ব স্বভাব, চাহিদা ও স্বপ্ন নিয়ে। সম্পর্ক মানে সমঝোতা, শ্রদ্ধা, গ্রহণযোগ্যতা। আপনি যেমন ত্রুটিহীন নন, তেমনি আপনার সঙ্গীকেও নিখুঁত হতেই হবে এমন দাবি অন্যায়।
একজন নারীকে একসাথে ঘরের রান্নাঘরে দক্ষ, অফিসে প্রফেশনাল, বিছানায় আকর্ষণীয়, অতিথির সামনে ভদ্র, পার্টিতে স্টাইলিশ, সন্তানের সামনে আদর্শ মা—সবকিছু হবার চাপ দেবেন না।
তাই ভালোবাসুন বাস্তব মানুষকে, কল্পনার চরিত্রকে নয়।
Dr.Tanvir Ahmed
Join: Child Disease and Surgical Care-BD (CDSC-BD)
#lifepartner #collected #পরিমার্জিত
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন