সাম্প্রতিক দিনে নাসার বহু প্রতীক্ষিত যুগ্ম-উপগ্রহ মিশন ‘এসকেপেড’–এর উৎক্ষেপণ পিছিয়ে গেছে। মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডল ও সৌর বায়ুর পারস্পরিক প্রভাব নিয়ে গবেষণার জন্য পরিকল্পিত এই মিশনটি নির্ধারিত সময়ে পাঠানোর প্রস্তুতি থাকলেও, শক্তিশালী এক সৌরঝড় মহাকাশ আবহাওয়াকে অস্থিতিশীল করে তোলে। নাসার নিয়ন্ত্রকরা তাই উৎক্ষেপণ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যতক্ষণ না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বাবা ভাঙ্গা আবার আলোচনায়
সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে নতুন আলোচনার ঢেউ—বুলগেরিয়ার রহস্যময় ভবিষ্যদ্বক্তা বাবা ভাঙ্গা আবারও শিরোনামে। অনুসারীদের দাবি, বহু বছর আগে তিনি তীব্র সৌরঝড় ও মহাজাগতিক অস্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। বর্তমান সৌরঝড় ও নাসার মিশন বিলম্বকে কেন্দ্র করে অনেকে বলছেন, বাবার ভবিষ্যদ্বাণীর আরেকটি মিল পাওয়া গেছে।
১৯৯৬ সালে মৃত্যুবরণ করা বাবা ভাঙ্গা—যাকে অনেকেই ‘বলকানের নস্ত্রাদামুস’ বলে ডাকেন—প্রতি বছরই নানা ভবিষ্যদ্বাণীর কারণে আলোচনায় উঠে আসেন। তাঁর অনুসারীরা দাবি করেন, রাজকুমারী ডায়ানার মৃত্যু থেকে শুরু করে কোভিড-১৯ মহামারী, বহু ঘটনাই তিনি আগে থেকেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
সৌরঝড়ের বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা
বর্তমান যে সৌরঝড় পৃথিবীর দিকে ধেয়ে এসেছে, তাকে বিশেষজ্ঞরা “ক্যানিবাল স্টর্ম” বলে উল্লেখ করছেন। এটি পূর্ববর্তী দুর্বল সৌরঝড়গুলিকে গ্রাস করে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যেই এই ঝড় রেডিও সংকেত বিঘ্নিত করেছে এবং ২০১২ সাল থেকে ব্রিটিশ জিওলজিক্যাল সার্ভে যে পরিমাপ শুরু করেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিস্তর বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ঝড়ের পরবর্তী ধাপ দৈনন্দিন জীবনের বহু ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে—যেমন যোগাযোগ ব্যবস্থা, জিপিএস পরিষেবা, এমনকি পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা উপগ্রহের গতিপথ।
বাবা ভাঙ্গার আরও আলোচিত ভবিষ্যদ্বাণী
বাবা ভাঙ্গা ইউরোপ ও রোম সম্পর্কেও ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। বিভিন্ন অনলাইন প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, তিনি নাকি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে আগামী ১৯ বছরের মধ্যে ইউরোপের চেহারা আমূল বদলে যাবে এবং বিপুল জনসংখ্যা হ্রাস পাবে। তাঁর কথিত ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, ‘আজকের ইউরোপ ২০৪৪ সালের শেষে আর থাকবে না।’ মহাদেশটি প্রায় জনশূন্য হয়ে বিরানভূমিতে পরিণত হবে—এমনই ইঙ্গিত তিনি দিয়েছিলেন।
বিজ্ঞান বনাম কুসংস্কার
যদিও বিজ্ঞানীরা এসব ভবিষ্যদ্বাণীর সঙ্গে সৌরঝড় বা নাসার মিশন বিলম্বের কোনো সম্পর্ক দেখেন না, তবে সামাজিক মাধ্যমে রহস্যময়তার আবহ সব সময়ই আলোচনাকে আরও জোরালো করে তোলে। সৌরঝড়ের প্রভাব ও প্রযুক্তিনির্ভর পৃথিবীর সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বাস্তবসম্মত বিশ্লেষণ দিচ্ছেন। অন্যদিকে, কুসংস্কার ও ভবিষ্যদ্বাণী মিলিয়ে নতুন বিতর্ক ও কৌতূহলও জনমনে ছড়িয়ে পড়ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন