এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫

মুসলমানদের জ্ঞান চুরি করেই গড়ে উঠেছে পাশ্চাত্য সভ্যতা,,, সাইকোলজি এবং বিজ্ঞানের অজানা সব তথ্য ফেইসবুক থেকে নেওয়া

 মুসলমানদের জ্ঞান চুরি করেই গড়ে উঠেছে পাশ্চাত্য সভ্যতা


– সত্য ইতিহাসের এক অপহৃত অধ্যায়


আমরা যখন পাশ্চাত্য সভ্যতার কথায় মুগ্ধ হই, তার প্রগতি, প্রযুক্তি আর বিজ্ঞানচর্চায় বিস্মিত হয়ে যাই—তখন অনেকেই ভুলে যাই, এর শিকড় কোথায়। ইতিহাসের গহীনে পা ফেললে আমরা দেখতে পাই, এই তথাকথিত আধুনিক সভ্যতার ভিত রচনা করেছিলেন মূলত মুসলিম জ্ঞানী-গুণীজনরা। অথচ সেই ইতিহাস আজ গোপন, বিকৃত, অথবা ছদ্মবেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।


আলো ছড়িয়ে দেওয়া এক জাতি


খ্রিস্টীয় ৮ম থেকে ১৩শ শতাব্দী পর্যন্ত সময়কে ইতিহাসবিদরা বলেন “ইসলামের স্বর্ণযুগ”। এই সময়টাতেই মুসলিম বিশ্বে উদ্ভব হয় জ্ঞানবিজ্ঞানের রেনেসাঁ—যা ইউরোপ তখন কল্পনাও করতে পারত না। বাগদাদ, কায়রো, কর্ডোভা, সামরকন্দ—এ সব ছিল জ্ঞানের রাজধানী। অ্যালজেব্রা, অপটিকস, জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসা, দর্শন, ভূগোল—সবখানেই মুসলিম মনীষীরা রেখে গেছেন অমোচনীয় ছাপ।


তবে সেই আলো যে শুধু তাদের সমাজেই সীমাবদ্ধ ছিল তা নয়, বরং ইউরোপের অন্ধকার যুগে তারাই দিয়েছিল প্রথম আলোর স্পর্শ। কিন্তু ইতিহাসের নিষ্ঠুর রচয়িতারা সেই আলোর উৎসকে মুছে ফেলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।


নাম পাল্টে ইতিহাস দখল


একটি পরিকল্পিত প্রক্রিয়ায় ইউরোপীয় প্রভাবশালী বুদ্ধিজীবীরা মুসলিম বিজ্ঞানীদের নাম ও আবিষ্কারগুলো নিজেদের নামে চালিয়ে দেয়। অনেক ক্ষেত্রে মুসলিম বিজ্ঞানীদের নাম ইউরোপীয় রূপ দিয়ে পরিবর্ধিত করা হয়, যাতে তাঁদের আরব-মুসলিম পরিচয় অস্পষ্ট হয়ে যায়।


নিচে এর কিছু নিদর্শন তুলে ধরা হলো:


মূল নাম বিকৃত নাম (পশ্চিমা রূপ)


আল বাত্তানী -রেথেন (Rethen)

ইউসুফ আল-ঘুরী- জোসেফ টি. প্রিজড

আল রাজী- রাজম (Rhazes)

ইবনে সিনা- এভিসেনা (Avicenna)

ইবনে হাইশাম- হ্যাজেন (Alhazen)

ইবনে রুশদ- এভেরুন (Averroes)

খোয়ারেজমি -আলগরিদম (Algorithm)

যারকালী মারজাকেল

আল খাসিব -বুবাথের


জ্ঞান চুরির গোপন ঘাঁটি: টলেডো


দশম শতকে স্পেনের টলেডো শহর হয়ে উঠেছিল মুসলিম পাণ্ডুলিপি পাচার ও অনুবাদের কেন্দ্র। ইউরোপীয় ছাত্ররা দলবেঁধে আসত এই শহরে মুসলিম জ্ঞান আহরণ করতে। সেখান থেকে তা অনুবাদের নামে আত্মসাৎ করা হতো। ১২শ শতাব্দীর অনুবাদক গেরহার্ট ভন ক্রেমোনা একাই নব্বইটির মতো মুসলিম পাণ্ডুলিপি অনুবাদ করেন।


আরেক অনুবাদক প্লেটো ভন টিতোলী আল-বাত্তানীর জ্যোতির্বিদ্যার বই অনুবাদ করে নাম দেন Handbook of Astronomy, যা পরে টলেমির নামে পরিচিত হয়ে যায়। এভাবে বহু মুসলিম আবিষ্কার ও গবেষণা পাশ্চাত্যের বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিত হতে শুরু করে।


চক্রান্তের প্রমাণ : ইতিহাসবিদদের কলমে


বিশ্বখ্যাত ইতিহাসবিদরা এই চুরির ঘটনাকে ইতিহাসের অস্বীকারযোগ্য সত্য হিসেবে স্বীকার করেছেন। তাঁদের মতে:


> “মুসলিমরাই প্রথম গ্রিক জ্ঞানকে অনুবাদ করে নতুনভাবে ব্যাখ্যা দেন এবং ইউরোপকে তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পাশ্চাত্য সভ্যতার ভিত্তিই এই আরবদের মাধ্যমেই স্থাপিত।”

— Gustav Lebon, George Sarton, Sir T. Arnold, Hitti, Draper, Briffault, Joseph Hell প্রমুখ


বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য একজন গবেষক হলেন ড. ফুয়াদ সেজগিন (Fuat Sezgin)। তিনি ফ্রাঙ্কফুর্ট ইউনিভার্সিটির ইতিহাসের অধ্যাপক এবং মুসলিম বিজ্ঞানীদের অবদান নিয়ে এক জীবনের গবেষণা চালিয়েছেন। তিনি ইস্তাম্বুলের বিভিন্ন লাইব্রেরিতে আবিষ্কার করেন প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার মুসলিম পাণ্ডুলিপি। তাঁর মতে, বিশ্বব্যাপী প্রায় ১৫০ লক্ষেরও বেশি আরবি বৈজ্ঞানিক পাণ্ডুলিপি ছড়িয়ে আছে। তিনি প্রতিষ্ঠা করেন Institute for the History of Arabic-Islamic Science, যা আজও মুসলিমদের গৌরবোজ্জ্বল অতীতের প্রামাণ্য দলিল।


ফুয়াদ সেজগিন বলেন:


> “যেভাবে মুসলিম বিজ্ঞানীদের কাজ চুরি করা হয়েছে, তা নিছক অনুবাদ নয়—এ এক পরিকল্পিত আত্মসাৎ।”


চুরি করা জ্ঞানের ওপর গড়া আধিপত্য


ইউরোপীয় আধিপত্য যুগে আরব পাণ্ডুলিপি অনুবাদকে নিষিদ্ধও করা হয়েছিল, যাতে আরবদের জ্ঞানকেই তাদের নামে চালানো যায়। পরে একে একে ফ্রান্সের কাস্ট্রেস, টোলাউজ, রেইমস ও প্যারিস; ইতালির ট্রাবজোন প্রভৃতি শহরে গড়ে ওঠে অনুবাদ ও বেনামে চালানোর গোপন কেন্দ্র।


এভাবে গড়ে ওঠে একটি অজানা ইতিহাস—যেখানে মুসলিমরা হয়ে গেল পরাধীন আর তাদের জ্ঞান হয়ে গেল পাশ্চাত্যের প্রভুত্বের অস্ত্র।


কেন জানা জরুরি?


আমাদের সন্তানেরা আজও পশ্চিমা পাঠ্যবইয়ে মুখস্থ করছে সেই জ্ঞান, যা আসলে তাদের পূর্বপুরুষদেরই সম্পদ ছিল। তারা জানেই না ‘Algorithm’ শব্দটা এসেছে মুসলিম গণিতবিদ খোয়ারেজমি থেকে, বা ‘Avicenna’ নামে পরিচিত ছিলেন আমাদের ইবনে সিনা।


এই ইতিহাস জানাটা শুধু গর্বের ব্যাপার নয়—এটা আমাদের অধিকার। ইতিহাসের অধিকার। সত্য প্রতিষ্ঠার অধিকার।


উপসংহার: ইতিহাসকে ফিরিয়ে আনুন


এই ইতিহাস আমাদের মুখস্ত করতে হবে না, হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন জানে, তারা কোনো অনুগ্রহে নয়, অধিকারেই জ্ঞানের উত্তরাধিকারী। তাই ইতিহাস জানুন, ছড়ান, আর সচেতন হোন—কারণ চুরি করা সত্যকে আবার নিজের করে তোলা এক ধরনের ন্যায়বিচার।


তথ্য:


1. Fuat Sezgin, Geschichte des Arabischen Schrifttums, Frankfurt University Archives


2. George Sarton, Introduction to the History of Science


3. Hitti, Philip K., History of the Arabs


4. Briffault, Robert, The Making of Humanity


5. Encyclopedia Britannica (ইবনে সিনা, আল বাত্তানী প্রভৃতি প্রবেশিকা)


6. Pickthall, M., Islam and the Modern World


7. Roger Bacon, Opus Majus


8. Documentary: 1001 Inventions and the Library of Secretb

কোন মন্তব্য নেই:

কেন ৬০ সেকেন্ডে মিনিট, ৬০ মিনিটে ঘণ্টাঃ

 ➡️ কেন ৬০ সেকেন্ডে মিনিট, ৬০ মিনিটে ঘণ্টাঃ   ➡️ কেন এক মিনিটকে ভাগ করে ৬০ সেকেন্ড ধরা হয়েছে, বা উল্টোভাবে বললে কেন ৬০ সেকেন্ড মিললে এক মিনি...