এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

বুধবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২৪

রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ - ১২-০১-২০২৪,,,,,,,

 রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ

তারিখ - ১২-০১-২০২৪


আজকের সংবাদ শিরোনাম          


জাতির পিতা এবং মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের শ্রদ্ধা নিবেদন ——— দেশের সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার শেখ হাসিনার। 


নতুন সরকারের সামনে রয়েছে তিন চ্যালেঞ্জ—রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ———  বলেছেন ওবায়দুল কাদের। 


তথ্যের অবাধ স্বাধীনতা নিশ্চিতের পাশাপাশি গণমাধ্যমে অসত্য তথ্য প্রকাশ রোধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানালেন নবনিযুক্ত তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।


 প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দিনের সফরে নিজ জেলা গোপালগঞ্জ যাচ্ছেন আগামীকাল ——— স্থানীয় জনগণের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা।


ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের বিমান হামলায় নিহত ৫। 


এবং অকল্যান্ডে টি—টোয়েন্টি ক্রিকেট সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ৪৬ রানে পরাজিত করেছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড।

ফেইসবুক থেকে নেওয়া 

১মিনিট সময় নিয়ে পড়েন, আল্লাহ যেন সকলের গোনাহ মাপ করে দেন।,,,,,,, ফেইসবুক থেকে নেওয়া

 ১মিনিট সময় নিয়ে পড়েন, আল্লাহ যেন সকলের গোনাহ মাপ করে দেন।

১. “সুবহানাল্লাহ”(سبحان الله⁦)

২.“আলহামদুলিল্লাহ”(الحمد لله)

৩.“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”(لأ إله إلا الله)

৪.“আল্লাহু আকবার”(الله اكبر)

৫.“আস্তাগফিরুল্লাহ”(استغفر الله)

৬.“আল্লাহুম্মাগফিরলি”(اللهم اغفر لي)

৭.“ইয়া রব্বিগফিরলি”(يا رب اغفر لي)

৮.“আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান-নার”(اللهم اجرني من النار)

৯.“সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম”(صلى الله عليه وسلم)

১০.“লা হাওলা ওয়ালা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ”(لا هول ولا قوه الا بالله)

১১.“লা ইলাহা ইল্লা আংতা সুবহানাকা ইন্নি কুংতু মিনায জোয়ালিমিন”(لأ إله إلا أنت سبحانك إني كنت من الظالمين)

১২.“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাঃ”(لأ إله إلا الله محمد رسول الله صلى الله عليه وسلم)


পড়া শেষে আলহামদুলিল্লাহ

ফেইসবুক থেকে নেওয়া 

ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম রাহিমাহুল্লাহ বলেন,  একজন মুমিন বান্দা দশটি কারণে শয়তান থেকে নিরাপত্তা পেতে পারেঃ,,,,, ফেইসবুক থেকে নেওয়া

 ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম রাহিমাহুল্লাহ বলেন, 

একজন মুমিন বান্দা দশটি কারণে শয়তান থেকে নিরাপত্তা পেতে পারেঃ 


১- আল্লাহর কাছে শয়তান থেকে আশ্রয় চাওয়া বা আউযুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজীম পড়া। 

২- সূরা ফালাক ও নাস পড়া। 

৩- আয়াতুল কুরসী পাঠ করা। 

৪- সূরা আল বাকারাহ পাঠ করা। 

৫- সূরা আল বাকারার শেষ দুটি আয়াত পাঠ করা। 

৬- সূরা গাফির (মুমিন) এর শুরু থেকে পাঠ করা। 

৭- “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদীর।” ১০০ বার পাঠ করা। 

৮- অধিক হারে আল্লাহর যিকির। 

৯- বাড়তি দৃষ্টি, বাড়তি কথা, বাড়তি খাওয়া ও বাড়তি মেলামেশা থেকে বেঁচে থাকা। 

১০- ওজু ও সালাত। 


[ ইবনুল কাইয়্যেম, বাদায়েউল ফাওয়ায়েদ ২/২৬৭] [ উল্লেখ্য, উপরের সবগুলো কুরআন ও হাদীসের ভাষ্য দ্বারা সাব্যস্ত ]


ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম রাহিমাহুল্লাহ বলেন, 

একজন মুমিন বান্দা দশটি কারণে শয়তান থেকে নিরাপত্তা পেতে পারেঃ 


১- আল্লাহর কাছে শয়তান থেকে আশ্রয় চাওয়া বা আউযুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজীম পড়া। 

২- সূরা ফালাক ও নাস পড়া। 

৩- আয়াতুল কুরসী পাঠ করা। 

৪- সূরা আল বাকারাহ পাঠ করা। 

৫- সূরা আল বাকারার শেষ দুটি আয়াত পাঠ করা। 

৬- সূরা গাফির (মুমিন) এর শুরু থেকে পাঠ করা। 

৭- “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদীর।” ১০০ বার পাঠ করা। 

৮- অধিক হারে আল্লাহর যিকির। 

৯- বাড়তি দৃষ্টি, বাড়তি কথা, বাড়তি খাওয়া ও বাড়তি মেলামেশা থেকে বেঁচে থাকা। 

১০- ওজু ও সালাত। 


[ ইবনুল কাইয়্যেম, বাদায়েউল ফাওয়ায়েদ ২/২৬৭] [ উল্লেখ্য, উপরের সবগুলো কুরআন ও হাদীসের ভাষ্য দ্বারা সাব্যস্ত ]

ফেইসবুক থেকে নেওয়া 

মৃত্যু  নিয়ে এতো সুন্দর লেখা আগে পড়িনি একটু পড়েই দেখুন না জাযাকাল্লাহ।

 মৃত্যু নিয়ে এতো সুন্দর লেখা আগে পড়িনি

একটু পড়েই দেখুন না🙏 জাযাকাল্লাহ।❤️


পরলোকগত কুয়েতি লেখক আব্দুল্লাহ যারাল্লাহ তার মৃত্যুর আগে লিখে যাওয়া কিছু অনুভূতি -


"মৃত্যু নিয়ে আমি কোনো দুশ্চিন্তা করবো না, আমার মৃতদেহের কি হবে সেটা নিয়ে কোন অযথা আগ্রহ দেখাবো না। আমি জানি আমার মুসলিম ভাইয়েরা করণীয় সবকিছুই যথাযথভাবে করবে।"


يُجَرِّدُونَنِي مِنْ مَلَابِسِي


তারা প্রথমে আমার পরনের পোশাক খুলে আমাকে বিবস্ত্র করবে,


يَغْسِلُونَني


আমাকে গোসল করাবে,


يَكْفِنُونَنِي


(তারপর) আমাকে কাফন পড়াবে,


يُخْرِجُونَنِي مِنْ بَيْتِي


আমাকে আমার বাসগৃহ থেকে বের করবে,


يَذهَبُونَ بِي لِمَسَكِنِي الجَدِيدِ (القَبْرُ)


আমাকে নিয়ে তারা আমার নতুন বাসগৃহের (কবর) দিকে রওনা হবে,


وَسَيَأتِي كَثِيرُونَ لِتَشْيِيْعِ الجَنَازَتِي


আমাকে বিদায় জানাতে বহু মানুষের সমাগম হবে,


بَلْ سَيَلْغِي الكَثِيرُ مِنهُم أَعْمَالَهُ وَمَوَاعِيدَهُ لِأَجْلِي دَفْنِي


অনেক মানুষ আমাকে দাফন দেবার জন্য তাদের প্রাত্যহিক কাজকর্ম কিংবা সভার সময়সূচী বাতিল করবে,


وَقَدْ يَكُونُ الكَثِيرُ مِنهُم لَمْ يَفَكِّرْ في نَصِيحَتِي يَوماً مِنْ الأيّامِ


কিন্তু দুঃখজনকভাবে অধিকাংশ মানুষ এর পরের দিনগুলোতে আমার এই উপদেশগুলো নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করবে না,


أَشْيَائِي سَيَتِمُّ التَّخَلُّصُ مِنهَا


আমার (ব্যক্তিগত) জিনিষের উপর আমি অধিকার হারাবো,


مَفَاتِيحِي


আমার চাবির গোছাগূলো,


كِتَابِي


আমার বইপত্র,


حَقِيبَتِي


আমার ব্যাগ,


أَحْذِيَتِي


আমার ‍জুতোগুলো,


وإنْ كانَ أَهْلِي مُوَفِّقِينَ فَسَوفَ يَتَصَدِّقُونَ بِها لِتَنْفَعَنِي


হয়তো আমার পরিবারের লোকেরা আমাকে উপকৃত করার জন্য আমার ব্যবহারের জিনিসপত্র দান করে দেবার বিষয়ে একমত হবে,


تَأَكِّدُوا بِأَنَّ الدُّنيا لَنْ تَحْزَنْ عَلَيَّ


এ বিষয়ে তোমরা নিশ্চিত থেকো যে, এই দুনিয়া তোমার জন্য দু:খিত হবে না অপেক্ষাও করবে না,


وَلَنْ تَتَوَقَّفْ حَرَكَةُ العَالَمِ


এই দুনিয়ার ছুটে চলা এক মুহূর্তের জন্যও থেমে যাবে না,


وَالاِقْتِصَادُ سَيَسْتَمِرُ


অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কিংবা ব্যবসাবাণিজ্য সবকিছু চলতে থাকবে,


وَوَظِيْفَتِي سَيَأتِي غَيرِي لِيَقُومَ بَها


আমার দায়িত্ব (কাজ) অন্য কেউ সম্পাদন করা শুরু করবে,


وَأَمْوَالِي سِيَذْهَبُ حَلَالاً لِلوَرَثِةِ


আমার ধনসম্পদ বিধিসম্মত ভাবে আমার ওয়ারিসদের হাতে চলে যাবে,


بَينَمَا أنا سَأُحَاسِبُ عَليها


অথচ এর মাঝে এই সম্পদের জন্য আমার হিসাব-নিকাশ আরম্ভ হয়ে যাবে,


القَلِيلُ والكَثِيرُ.....النَقِيرُ والقَطمِيرُ......


ছোট এবং বড়….অনুপরিমাণ এবং কিয়দংশ পরিমান, (সবকিছুর হিসাব)


وَإن أَوَّلَ ما مَوتِي هو اِسمِي !!!!


আমার মৃত্যুর পর সর্বপ্রথম যা (হারাতে) হবে, তা আমার নাম!!!


لِذَلكَ عِنْذَما يَمُوتُ سَيَقُولُونَ عَنِّي أَينَ "الجُنَّةُت"...؟


কেননা, যখন আমি মৃত্যুবরণ করবো, তারা আমাকে উদ্দেশ্য করে বলবে, কোথায় “লাশ”?


وَلَن يَنَادُونِي بَاِسمِي....


কেউ আমাকে আমার নাম ধরে সম্বোধন করবে না,


وَعِندَما يُرِيدُونَ الصَّلاةَ عَلَيَّ سِيَقُلُونَ اُحْضُرُوا "الجَنَازَةَ" !!!


যখন তারা আমার জন্য (জানাযার) নামাজ আদায় করবে, বলবে, “জানাযাহ” নিয়ে আসো,


وَلَن يُنَادُونِي يِاسْمِي ....!


তারা আমাকে নাম ধরে সম্বোধন করবে না….!


وَعِندَما يَشْرَعُونَ بِدَفنِي سَيَقُولُونَ قَرِّبُوا المَوتَ وَلَنْ يَذكُرُوا اِسمِي ....!


আর, যখন তারা দাফন শুরু করবে বলবে, মৃতদেহকে কাছে আনো, তারা আমার নাম ধরে ডাকবে না…!


لِذَلِكَ لَن يَغُرَّنِي نَسبِي وَلا قَبِيلَتِي وَلَن يَغُرَّنِي مَنْصَبِي وَلا شَهرَتِي ....


এজন্যই দুনিয়ায় আমার বংশপরিচয়, আমার গোত্র পরিচয়, আমার পদমযার্দা, এবং আমার খ্যাতি কোনকিছুই আমাকে যেন ধোঁকায় না ফেলে,


فَمَا أَتْفَهُ هَذِهِ الدُّنْيَا وَمَا أَعْظَمَ مُقَلِّبُونَ عَليهِ .....


এই দুনিয়ার জীবন কতই না তুচ্ছ, আর, যা কিছু সামনে আসছে তা কতই না গুরুতর বিষয়…


فَيا أَيُّهَا الحَيُّ الآنَ ..... اِعْلَمْ أَنَّ الحُزْنَ عَليكَ سَيَكُونُ على ثَلَاثَةٍ أَنْواعٍ:


অতএব, (শোন) তোমরা যারা এখনো জীবিত আছো,….জেনে রাখো, তোমার (মৃত্যুর পর) তোমার জন্য তিনভাবে দু:খ করা হবে,


1ــ النَّاسُ الَّذِينَ يَعْرِفُونَكَ سَطْحَيّاً سَيَقُولُونَ مِسْكِينٌ


১. যারা তোমাকে বাহ্যিক ভাবে চিনতো, তারা তোমাকে বলবে হতভাগা,


2ــ أَصْدِقَاؤُكَ سَيَحْزُنُونَ سَاعَات أَو أَيَّامَاً ثُمَّ يَعُودُونَ إِلَى حَدِيثِهِم بَلْ وَضَحِكَهُم.....


২. তোমার বন্ধুরা বড়জোর তোমার জন্য কয়েক ঘন্টা বা কয়েক দিন দু:খ করবে, তারপর, তারা আবার গল্পগুজব বা হাসিঠাট্টাতে মত্ত হয়ে যাবে,


3ــ الحُزْنُ العَمِيقُ فِي البَيْتِ سَيَحْزُنُ أَهْلِكَ أُسْبُوعاً.... أُيسْبُوعَينِ شَهراً ....شَهرَينِ أَو حَتَّى سَنَةً وَبَعْدَهَا سَيَضْعُونَكَ فِي أَرْشِيفِ الذَّكَرِيّاتِ !!!


৩. যারা খুব গভীর ভাবে দু:খিত হবে, তারা তোমার পরিবারের মানুষ, তারা এক সপ্তাহ, দুই সপ্তাহ, একমাস, দুইমাস কিংবা বড় জোর একবছর দু:খ করবে। এরপর, তারা তোমাকে স্মৃতির মণিকোঠায় যত্ন করে রেখে দেবে!!!


اِنْتَهَتْ قِصَّتُكَ بَينَ النَّاسِ وَبَدَأَتْ قِصَّتُكَ الحَقِيْقِيّةِ وَهِيَ الآخِرةُ ....


মানুষদের মাঝে তোমাকে নিয়ে গল্প শেষ হয়ে যাবে, অত:পর, তোমার জীবনের নতুন গল্প শুরু হবে, আর, তা হবে পরকালের জীবনের বাস্তবতা,


لَقدْ زَالَ عِندَكَ:


তোমার নিকট থেকে নি:শেষ হবে (তোমার):


1ــ الجَمَالُ


১. সৌন্দর্য্য


2ــ والمَالُ


২. ধনসম্পদ


3ــ والصَحَّةُ


৩. সুস্বাস্থ্য


4ــ والوَلَدُ


৪. সন্তান-সন্তদি


5ــ فَارقَت الدَّور


৫. বসতবাড়ি


6ــ القُصُورُ


৬. প্রাসাদসমূহ


7ــ الزَوجُ


৭. জীবনসঙ্গী


وَلَمْ يَبْقِ إِلَّا عَمَلُكَ


তোমার নিকট তোমার ভালো অথবা মন্দ আমল ব্যতীত আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না,


وَبَدَأَتِ الحَيَاةُ الحَقِيقَيَّةُ


শুরু হবে তোমার নতুন জীবনের বাস্তবতা,


وَالسُّؤَالُ هُنا : ماذا أَعْدَدْتَ لِلقُبَرِكَ وَآخِرَةَكَ مِنَ الآنَ ؟؟؟


আর, সে জীবনের প্রশ্ন হবে: তুমি কবর আর পরকালের জীবনের জন্য এখন কি প্রস্তুত করে এনেছো?


هَذِهِ حَقِيقَةٌ تَحْتَاجُ إلى تَأمَّلٍ


*ব্স্তুত: এই জীবনের বাস্তবতা সম্পর্কে তোমাকে গভীর ভাবে মনোনিবেশ করা প্রয়োজন,*


لِذَلِكَ أحرصُ عَلى :


এজন্য ‍তুমি যত্নবান হও,


1ــ الفَرَائِضِ


১. ফরজ ইবাদতগুলোর প্রতি


2ــ النَّوَافِلِ


২. নফল ইবাদতগুলোর প্রতি


3ــ صَدَقَةُ السِّرِّ


৩. গোপন সাদাকাহ’র প্রতি


4ــ عَمَلُ الصَّلِحِ


৪. ভালো কাজের প্রতি


5ــ صَلاةُ اللَّيلِ


৫. রাতের নামাজের প্রতি


لَعَلَّكَ تَنْجُو....


যেন তুমি নিজেকে রক্ষা করতে পারো….


إِنْ سَاعَدْتَ عَلى تَذْكِيرِ النَّاسِ بِهَذِهِ المُقَالَةِ وَأنتَ حَيُّ الآنَ سَتَجِدُ أَثَرَ تَذكِيرِكَ في مِيزَانِكَ يَومَ القِيامَةِ بِإِذْنِ اللهِ .....


এই লিখাটির মাধ্যমে তুমি মানুষকে উপদেশ দিতে পারো, কারণ তুমি এখনো জীবিত আছো, এর ফলাফল আল্লাহ’র ইচ্ছায় তুমি কিয়ামত দিবসে মিজানের পাল্লায় দেখতে পাবে,


قال الله تَعالى : ((فَذَكِّرْ فَإِنَّ الذِّكْرَ تَنْفَعُ المُؤمِنِينَ))


আল্লাহ বলেন: ((আর স্মরণ করিয়ে দাও, নিশ্চয়ই এই স্মরণ মুমিনদের জন্য উপকারী))


لِمَاذَا يَخْتَارُ المَيِّتِ "الصَّدَقَةَ لو رَجَعَ للدُّنيا....


তুমি কি জানো কেন মৃতব্যক্তিরা সাদাকাহ প্রদানের আকাঙ্খা করবে, যদি আর একবার দুনিয়ার জীবনে ফিরতে পারতো?


كَمَا قَالَ تَعَالى: ((رَبِّ لَو لا أَخَّرْتَنِي إلى أَجَلٍ قَرِيبٍ فَأَصَّدَّقَ....))


আল্লাহ বলেন: ((হে আমার রব! যদি তুমি আমাকে আর একটু সুযোগ দিতে দুনিয়ার জীবনে ফিরে যাবার, তাহলে আমি অবশ্যই সাদাকাহ প্রদান করতাম….))


ولَمْ يَقُلْ :


তারা বলবে না,


لِأعتَمَرَ


উমরাহ পালন করতাম,


أو لِأُصَلَّي


অথবা, সালাত আদায় করতাম,


أو لِأصُومُ


অথবা, রোজা রাখতাম,


قالَ العُلَماءُ : ما ذَكَرَ المَيِّتُ الصَّدَقَةَ إلا لِعَظِيمِ مَا رَأى مِن أَثَرِها بَعدَ مَوتِهِ


আলেমগণ বলেন: মৃতব্যক্তিরা সাদাকাহ’র কথা বলবে, কারণ তারা সাদাকাহ প্রদানের ফলাফল তাদের মৃত্যুর পর দেখতে পাবে,


فَأَكْثِرُوا مِنَ الصَّدَقَةِ وَمِن أَفضَلِ ما تَتَصَدَّقُ بِهِ الآنَ 10 ثَوَان مِنْ وَقْتِكَ لِنشَرِ هذا الكَلامَ بِنِيَّةِ النَّصْحِ فَالكَلمَةُ الطَّيِّبَةُ صَدَقَةٌ.


আর, গুরুত্ববহ এই সাদাকাহ’র কাজটি তুমি এই কথাগুলো ছড়িয়ে দিয়ে মাত্র ১০ সেকেন্ড সময় ব্যয় করে করতে পারো, যদি তোমার উদ্দেশ্য হয় এর মাধ্যমে মানুষকে উপদেশ প্রদান করা। কারণ, উত্তম কথা হল এক ধরণের সাদাকাহ।।।!


 সংগৃহিত

ফেইসবুক থেকে নেওয়া 

ফেরেশতারা যাদের জন্য দুআ করেঃ পর্বঃ৩,,,,, ফেইসবুক থেকে নেওয়া

 ফেরেশতারা যাদের জন্য দুআ করেঃ পর্বঃ৩


🌸জামাতে নামাজ আদায়কারীদের জন্য : যারা মসজিদে গিয়ে জামাতের সহিত নামাজ আদায় করে, ফেরেশতারা তাদের জন্যও দোয়া করেন। এদের তিন ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন : এক. যারা মসজিদে প্রথম কাতারে নামাজ আদায় করে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৯৮৭)। দুই . যারা কাতারের ডান দিকে নামাজ পড়ে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫৭৮)। তিন. যারা কাতারের মাঝখানে খালি জায়গা পূরণ করে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৯৮৫)


🌸যারা মুসলিম ভাইয়ের জন্য দোয়া করে : রাসুল (সা.) বলেছেন, কোনো মুসলিম তার অনুপস্থিত ভাইয়ের জন্য দোয়া করলে তা কবুল করা হয় এবং তার মাথার কাছে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত থাকে। যখন সে তার ভাইয়ের জন্য কল্যাণের দোয়া করে তখন নিযুক্ত ফেরেশতা বলে, আমিন। অর্থাত্ ‘হে আল্লাহ, কবুল করুন এবং তোমার জন্য অনুরূপ (তোমার ভাইয়ের জন্য যা চাইলে আল্লাহ তোমাকেও তা দান করুন)।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৮৮)


🌸সৎপথে চললে : যারা ঈমান আনে, আল্লাহর নির্দেশ পালনকরত সৎপথে চলে এবং আল্লাহর কাছে তাওবা করে, আল্লাহর ফেরেশতারা তাদের জন্য দোয়া করতে থাকেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা আরশ ধারণ করে আছে এবং যারা এর চারপাশে আছে, তারা তাদের রবের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে প্রশংসার সঙ্গে এবং তার ওপর ঈমান রাখে, আর মুমিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে বলে, হে আমাদের রব, আপনি দয়া ও জ্ঞান দ্বারা সব কিছুকে পরিব্যাপ্ত করে রেখেছেন। অতএব যারা তাওবা করে এবং আপনার পথ অবলম্বন করে, আপনি তাদের ক্ষমা করুন। আর জাহান্নামের শাস্তি থেকে আপনি তাদের রক্ষা করুন।’ (সুরা গাফির, আয়াত : ৭)


🍀রামাদানের আর বেশি দিন নেই , কুরআন পড়ার অভ্যাস করবো এখন থেকেই





ফেইসবুক থেকে নেওয়া 


জাহান্নাম থেকে বাচার আরও পাচটি উপায়:,,,,,,,,, ফেইসবুক থেকে নেওয়া

 🍀জাহান্নাম থেকে বাচার আরও পাচটি উপায়: 


৬. হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘কোনো ব্যক্তি যদি জান্নাতের জন্য আল্লাহর কাছে তিনবার প্রার্থনা করে, তাহলে জান্নাত তখন বলে, হে আল্লাহ! তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান। আর কোনো ব্যক্তি তিনবার জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাইলে জাহান্নাম তখন আল্লাহর কাছে বলে, হে আল্লাহ! তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৫৭২)


৭. রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি ধারাবাহিকভাবে জোহরের আগে চার রাকাত ও পরে চার রাকাত নামাজ আদায় করবে, মহান আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেবেন।’ (ইবনে মাজাহ : ১১৬০, আবু দাউদ, হাদিস : ১২৬৯)


৮. আবু বকর ইবনে শায়বা, আবু কুরায়ব ও ইসহাক ইবনে ইবরাহিম (রহ.)... আবু বকর ইবনে উমর ইবনে রুয়াইবা (রহ.) তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি সূর্যোদয়ের ও সূর্যাস্তের আগে অর্থাৎ ফজর ও আসরের সালাত আদায় করে, সে কখনো জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। তখন বসরার এক ব্যক্তি তাঁকে বলেন, আপনি কি এটা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছ থেকে শুনেছেন? তিনি বলেন হ্যাঁ। তখন ওই ব্যক্তি বলল, আমি এই মর্মে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি নিজ কানে তা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছ থেকে শুনেছি এবং আমার হৃদয়ে তা গেঁথে রেখেছি। (মুসলিম, হাদিস : ১৩১১)


৯. রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে, কিয়ামতের দিন সে এমনভাবে উপস্থিত হবে যে তার ওপর জাহান্নাম হারাম।” (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৪৬৮২)


১০. আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদের জানিয়ে দেব না, কোন ব্যক্তির জন্য জাহান্নাম হারাম এবং জাহান্নামের জন্য কোন ব্যক্তি হারাম?


যে ব্যক্তি মানুষের কাছাকাছি (জনপ্রিয়), সহজ-সরল, নম্রভাষী ও সদাচারী (তার জন্য জাহান্নাম হারাম)।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৪৮৮)


🍀আজ কুরআন পড়া হয়েছে?





আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ সল্লল্ল-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন নিষ্পাপ, উনার আগের এবং পরের কোনো গুনাহ ছিল না, ,,,,,, ফেইসবুক থেকে নেওয়া

 ⭕ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ সল্লল্ল-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন নিষ্পাপ, উনার আগের এবং পরের কোনো গুনাহ ছিল না, তবুও তিনি দৈনিক সত্তরবারের অধিক [কোনো কোনো হাদীস মোতাবেক, একশত বারেরও অধিক] তওবা ইস্তিগফার করতেন!


🔸 কেন করতেন জানেন.? তিনি আল্লাহ তা'য়ালাকে ভালবাসতেন, তিনি উম্মত তথা আমাদেরকে ভালবাসতেন, তাই আমাদেরকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য তিনি দৈনিক সত্তর থেকে একশ বারেরও অধিক ইস্তিগফার করতেন।


🔹 যেই নবীজি [সাঃ] এর কোনো প্রকার গুনাহ ছিল না, তবুও তিনি দৈনিক একশ বারেরও অধিক তওবা ইস্তিগফার করতেন, তাহলে তারই উম্মত হয়ে আমাদের দৈনিক কতবার তওবা ইস্তিগফার করা দরকার একটু ভেবে দেখুন তো.!


🔸 প্রতিনিয়ত গুনাহের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছি আমরা। কবীরা, সগীরা, জাহেরী, বেতেনী, শিরকী, বেদাতী, জানা অজানা, ইচ্ছায় অনিচ্ছায় কত গুনাহই না করছি আমরা প্রতিদিন, প্রতিটি মূহুর্তে।


🔹 শ্রেষ্ঠ নবীর শ্রেষ্ঠ উম্মত আমরা, কিন্তু আজ গুনাহের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ হয়ে গিয়েছি, আমলও করি আবার গুনাহও করি.. আবার অনেকে আমলও করতে পারি না, কিন্তু গুনাহটা ঠিকই বহাল রাখি।


🔸 মালিকের সামনে তো একদিন দাড়াতেই হবে, প্রতিটি দিনের, প্রতিটি মূহুর্তের গুনাহের জন্য জবাবদীহী করতে হবে, সেইদিন আমরা পারবো তো আল্লাহর কাছে জবাবদীহী করতে..?? পারবো তো প্রতিটি গুনাহের উপযুক্ত কারন পেশ করতে..??


🔹 পারবো নাহ‌.! কেউই পারবো নাহ.!! কারোরই সেদিন ক্ষমতা থাকবে না মালিকের সামনে দাঁড়িয়ে কৃতকর্মের হিসাব দেওয়ার মতো..!! তাই আসুন আমরা আজকে এখন থেকেই গুনাহের কাজগুলো ছেড়ে দেই, মহান আল্লাহ তা'য়ালার নিকট ক্ষমা প্রার্থণা করি, প্রতিদিন একশ বারের অধিক তওবা ইস্তিগফার করি।


🔸 মোনাজাতে আল্লাহকে বলি! হে আরশের মালিক, জমিনের মালিক, সারা বিশ্ব জাহানের মালিক ইয়া আল্লাহ্! যাই ভুল করেছি, না জেনে ভুল করেছি অথবা জেনে বুঝেই করেছি, আপনি তো মহান ক্ষমাশীল, ক্ষমা করাকে পছন্দ করেন, আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন, আমি আর সেই ভুলগুলো কখনও কোনো দিন করবো না.! এভাবে চোখের পানি ফেলে মোনাজাতে আল্লাহর কাছে বলেই দেখুন না, তিনি আপনাকে ক্ষমা না করে পারবেন না ইন শা আল্লাহ।


🔲 তাই বিশ্বাস রাখুন, বেশি বেশি করে তওবা ইস্তিগফার করুন, দৈনিক কমপক্ষে ১০০ বার করে পাঠ করুনঃ-


“আস্তাগফিরুল্ল-হ”, “আস্তাগফিরুল্ল-হাল্লাযি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বইয়্যুম ওয়া আতুবু ইলাইহি লা হাওলা ওয়ালা ক্বুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” 💝✅





শয়তানের হাত থেকে বাচার ১০ টি উপায়,,,,,,,, ফেইসবুক থেকে নেওয়া

 শয়তানের হাত থেকে বাচার ১০ টি উপায় 

.

ইমাম ইবনুল ক্বয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন ১০টি উপায় রয়েছে যা বান্দাকে শয়তানের হাত থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে-

.

১. আল্লাহর কাছে শয়তান থেকে আশ্রয় চাওয়া

২. সূরা ফালাক তেলাওয়াত করা

৩. সূরা নাস তেলাওয়াত করা

৪.আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াত করা

৫. সূরা বাকারা তেলাওয়াত করা

৬. সুরা বাকারার শেষ অংশ তেলাওয়াত করা

৭. সূরা গফির এর প্রথম অংশ তেলাওয়াত করা

৮. লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির - এই দোয়াটি বেশি বেশি পড়া

৯. বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করা

১০. অধিকাধিক অপ্রয়োজনীয় কথা, নজর, খাওয়া-দাওয়া এবং মানুষের সাথে মেলামেশা থেকে বিরত থাকা

.

- (বাদায়েউল ফাওয়াঈদ (২/২৬৭)

ফেইসবুক থেকে নেওয়া 

বিক্রয় কৌশল,,,,,,

 *বিক্রয় কৌশল:* আমরা যারা পন্য বিক্রির সাথে জড়িত তাহাদের কে কিছু কথা মনে করানো: 


১) *বিক্রয় কর্মী :* আমি এক জন বিক্রয় কর্মী মনে প্রানে বিশ্বাস করা। মাথায় একটি বিষয় রাখতে হবে বিক্রয়, বিক্রয় এবং বিক্রয়। 

নিজের শরীরের ঘাম ঝরিয়ে কাপড় ভিজিয়ে ভ্যাগের পরিবর্তন করতে পারলেই সফল বিক্রয় কর্মী।

২) *সেরা কোম্পানি:* আমি যে কোম্পানিতে কাজ করি সেটাই সেরা কোম্পানি বিশ্বাস করা। দেশে অনেক কোম্পানি আছে তাদের কথা সারাদিন চিন্তা করলে এক টাকাও পকেটে আসবে না।

৩) *সেরা পন্য:* আমি যে পন্য বিক্রির সাথে জড়িত সেটাই সমজাতিও 

সব সেরা পন্যের মধ্যে আমারটাই সেরা পন্য নিজেকে বিশ্বাস করতে হবে।

৪) *পন্য সম্পর্কে জানা:* আমি যে পন্য বিক্রি করবো সেটার তার উপাদান, উপকারিতা ভাল ভাবে জানতে হবে।

৫) *উপস্থাপন:* পন্য টি দোকানদারের কাছে স্বাবলিল ভাবে উপস্থাপন করা। মনে রাখতে হবে আমার উপস্থাপনের উপর নির্ভর করবে বিক্রয়।

৬) *ধৈর্য ধরা:* ধৈর্য একটি মহত গুন। আল্লাহ ধৈর্যশীলকে পছন্দ করেন। ধৈর্যের ফল মিষ্টি।

৭) *মূল্যায়ন:* দোকানদারের কথার মূল্যায়ন করা।মনে রাখতে হবে Customer is the king।

দোকানদার আমাদের কাছে রাজা।

৮) *কথা হজম করা:* কথা হজম করা একটি বড় গুন। যতই ব্যর্থ হই না কেন মাথা গরম করা যাবে না। 

মনে রাখতে হবে

 * রেগে গেলাম তো হেরে গেলাম *

৯) *বিক্রয় মানেই টার্গেট।* টার্গেট আছে বলেই বেতন আছে। টার্গেট পজিটিভ নিতে হবে। 

টার্গেট বোঝা মনে না করে 

পন্যের প্রসার বাড়াতে হবে। 

তাহলেই টার্গেট অর্জন করা সম্ভব। 

১০) *ইনসেনটিভ* : মাথার ভিতর ইনসেনটিভ থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে 

* যত গুড় তত মিষ্টি, 

যত ইনসেনটিভ, তত মজা*।

১১) *দৃঢ় বিশ্বাস* : মনে প্রানে 

বিশ্বাস করা আমি পারবো। 

আমার দ্বারা সম্ভব।  

আমিই পারবো। 

আমিই সেরাদের সেরা হবো।


 *সর্বোপরি :* 

আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখা,

তার কাছেই সবাইকে 

ফিরে যেতে হবে।

 এই জন্য ধর্মীয় কাজ করা।


 ছুটি– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,,,,, ফেইসবুক থেকে নেওয়া

 ছুটি

– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


বালকদিগের সর্দার ফটিক চক্রবর্তীর মাথায় চট করিয়া একটা নূতন ভাবোদয় হইল; নদীর ধারে একটা প্রকাণ্ড শালকাষ্ঠ মাস্তুলে রূপান্তরিত হইবার প্রতীক্ষায় পড়িয়া ছিল; স্থির হইল, সেটা সকলে মিলিয়া গড়াইয়া লইয়া যাইবে।


যে ব্যক্তির কাঠ আবশ্যক-কালে তাহার যে কতখানি বিস্ময় বিরক্তি এবং অসুবিধা বোধ হইবে, তাহাই উপলব্ধি করিয়া বালকেরা এ প্রস্তাবে সম্পূর্ণ অনুমোদন করিল।


কোমর বাঁধিয়া সকলেই যখন মনোযোগের সহিত কার্যে প্রবৃত্ত হইবার উপক্ৰম করিতেছে এমন সময়ে ফটিকের কনিষ্ঠ মাখনলাল গম্ভীরভাবে সেই গুঁড়ির উপরে গিয়া বসিল; ছেলেরা তাহার এইরূপ উদার ঔদাসীন্য দেখিয়া কিছু বিমর্ষ হইয়া গেল।


একজন আসিয়া ভয়ে ভয়ে তাহাকে একটু-আধটু ঠেলিল, কিন্তু সে তাহাতে কিছুমাত্র বিচলিত হইল না; এই অকাল-তত্ত্বজ্ঞানী মানব সকল প্রকার ক্রীড়ার অসারতা সম্বন্ধে নীরবে চিন্তা করিতে লাগিল।


ফটিক আসিয়া আস্ফালন করিয়া কহিল, “দেখ, মার খাবি। এইবেলা ওঠ্‌।”


সে তাহাতে আরও একটু নড়িয়াচড়িয়া আসনটি বেশ স্থায়ীরূপে দখল করিয়া লইল।


এরূপ স্থলে সাধারণের নিকট রাজসম্মান রক্ষা করিতে হইলে অবাধ্য ভ্রাতার গণ্ডদেশে অনতিবিলম্বে এক চড় কষাইয়া দেওয়া ফটিকের কর্তব্য ছিল— সাহস হইল না। কিন্তু, এমন একটা ভাব ধারণ করিল, যেন ইচ্ছা করিলেই এখনি উহাকে রীতিমতো শাসন করিয়া দিতে পারে, কিন্তু করিল না ; কারণ, পূর্বাপেক্ষা আর-একটা ভালো খেলা মাথায় উদয় হইয়াছে, তাহাতে আর-একটু বেশি মজা আছে। প্রস্তাব করিল, মাখনকে সুদ্ধ ওই কাঠ গড়াইতে আরম্ভ করা যাক।


মাখন মনে করিল, ইহাতে তাহার গৌরব আছে; কিন্তু, অন্যান্য পার্থিব গৌরবের ন্যায় ইহার আনুষঙ্গিক যে বিপদের সম্ভাবনাও আছে, তাহা তাহার কিম্বা আর-কাহারও মনে উদয় হয় নাই।

ছেলেরা কোমর বাঁধিয়া ঠেলিতে আরম্ভ করিল— ‘মারো ঠেলা হেঁইয়ো, সাবাস জোয়ান হেঁইয়ো।’ গুড়ি একপাক ঘুরিতে না-ঘুরিতেই মাখন তাহার গাম্ভীর্য গৌরব এবং তত্ত্বজ্ঞান -সমেত ভূমিসাৎ হইয়া গেল।


খেলার আরম্ভেই এইরূপ আশাতীত ফললাভ করিয়া অন্যান্য বালকেরা বিশেষ হৃষ্ট হইয়া উঠিল, কিন্তু ফটিক কিছু শশব্যস্ত হইল। মাখন তৎক্ষণাৎ ভূমিশয্যা ছাড়িয়া ফটিকের উপরে গিয়া পড়িল, একেবারে অন্ধভাবে মারিতে লাগিল। তাহার নাকে মুখে আঁচড় কাটিয়া কাঁদিতে কাঁদিতে গৃহাভিমুখে গমন করিল। খেলা ভাঙিয়া গেল।


ফটিক গোটাকতক কাশ উৎপাটন করিয়া লইয়া একটা অর্ধনিমগ্ন নৌকার গলুইয়ের উপরে চড়িয়া বসিয়া চুপচাপ করিয়া কাশের গোড়া চিবাইতে লাগিল।


এমন সময় একটা বিদেশী নৌকা ঘাটে আসিয়া লাগিল। একটি অর্ধবয়সী ভদ্রলোক কাঁচা গোঁফ এবং পাকা চুল লইয়া বাহির হইয়া আসিলেন। বালককে জিজ্ঞাসা করিলেন, “চক্রবর্তীদের বাড়ি কোথায়।”


বালক ডাঁটা চিবাইতে চিবাইতে কহিল, “ওই হোথা।” কিন্তু কোন্ দিকে যে নির্দেশ করিল, কাহারও বুঝিবার সাধ্য রহিল না।


ভদ্রলোকটি আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, “কোথা।”


সে বলিল, “জানি নে ?” বলিয়া পূর্ববৎ তৃণমূল হইতে রসগ্রহণে প্রবৃত্ত হইল। বাবুটি তখন অন্য লোকের সাহায্য অবলম্বন করিয়া চক্রবর্তীদের গৃহের সন্ধানে চলিলেন।


অবিলম্বে বাঘা বাগ্‌দি আসিয়া কহিল, “ফটিকদাদা, মা ডাকছে।”


ফটিক কহিল, “যাব না।”

বাঘা তাহাকে বলপূর্বক আড়কোলা করিয়া তুলিয়া লইয়া গেল ; ফটিক নিষ্ফল আক্রোশে হাত পা ছুড়িতে লাগিল।


ফটিককে দেখিবামাত্র তাহার মা অগ্নিমূর্তি হইয়া কহিলেন, “আবার তুই মাখনকে মেরেছিস।”


ফটিক কহিল, “না, মারি নি।


“ফের মিথ্যে কথা বলছিস।”


কখ্‌খনো মারি নি। মাখনকে জিজ্ঞাসা করো।”


মাখনকে প্রশ্ন করাতে মাখন আপনার পূর্ব নালিসের সমর্থন করিয়া বলিল, “হাঁ, মেরেছে।”


তখন আর ফটিকের সহ্য হইল না। দ্রুত গিয়া মাখনকে এক সশব্দ চড় কষাইয়া দিয়া কহিল, “ফের মিথ্যে কথা!”


মা মাখনের পক্ষ লইয়া ফটিককে সবেগে নাড়া দিয়া তাহার পৃষ্ঠে দুটা-তিনটা প্রবল চপেটাঘাত করিলেন। ফটিক মাকে ঠেলিয়া দিল।


মা চীৎকার করিয়া কহিলেন, “অ্যাঁ, তুই আমার গায়ে হাত তুলিস!”


এমন সময়ে সেই কাঁচাপাকা বাবুটি ঘরে ঢুকিয়া বলিলেন, “কী হচ্ছে তোমাদের।”


ফটিকের মা বিস্ময়ে আনন্দে অভিভূত হইয়া কহিলেন, “ওমা, এ যে দাদা, তুমি কবে এলে।” বলিয়া গড় করিয়া প্রণাম করিলেন।


বহু দিন হইল দাদা পশ্চিমে কাজ করিতে গিয়াছিলেন। ইতিমধ্যে ফটিকের মার দুই সন্তান হইয়াছে, তাহারা অনেকটা বাড়িয়া উঠিয়াছে, তাহার স্বামীর মৃত্যু হইয়াছে, কিন্তু একবারও দাদার সাক্ষাৎ পায় নাই। আজ বহুকাল পরে দেশে ফিরিয়া আসিয়া বিশ্বম্ভরবাবু তাঁহার ভগিনীকে দেখিতে আসিয়াছেন।


কিছুদিন খুব সমারোহে গেল। অবশেষে বিদায় লইবার দুই-একদিন পূর্বে বিশ্বম্ভরবাবু তাঁহার ভগিনীকে ছেলেদের পড়াশুনা এবং মানসিক উন্নতি সম্বন্ধে প্রশ্ন করিলেন। উত্তরে ফটিকের অবাধ্য উচ্ছৃঙ্খলতা, পাঠে অমনোযোগ, এবং মাখনের সুশান্ত সুশীলতা ও বিদ্যানুরাগের বিবরণ শুনিলেন।


তাঁহার ভগিনী কহিলেন, “ফটিক আমার হাড় জ্বালাতন করিয়াছে।”

শুনিয়া বিশ্বম্ভর প্রস্তাব করিলেন, তিনি ফটিককে কলিকাতায় লইয়া গিয়া নিজের কাছে রাখিয়া শিক্ষা দিবেন।


বিধবা এ প্রস্তাবে সহজেই সম্মত হইলেন।


ফটিককে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেমন রে ফটিক, মামার সঙ্গে কলকাতায় যাবি?”


ফটিক লাফাইয়া উঠিয়া বলিল, “যাব।”


যদিও ফটিককে বিদায় করিতে তাহার মায়ের আপত্তি ছিল না, কারণ তাঁহার মনে সর্বদাই আশঙ্কা ছিল- কোন্ দিন সে মাখনকে জলেই ফেলিয়া দেয় কি মাথাই ফাটায়, কি কী একটা দুর্ঘটনা ঘটায়, তথাপি ফটিকের বিদায়গ্রহণের জন্য এতাদৃশ আগ্রহ দেখিয়া তিনি ঈষৎ ক্ষুন্ন হইলেন।


‘কবে যাবে’, ‘কখন্ যাবে’ করিয়া ফটিক তাহার মামাকে অস্থির করিয়া তুলিল; উৎসাহে তাহার রাত্রে নিদ্রা হয় না।


অবশেষে যাত্রাকালে আনন্দের ঔদার্য-বশত তাহার ছিপ ঘুড়ি লাটাই সমস্ত মাখনকে পুত্রপৌত্রাদিক্রমে ভোগদখল করিবার পুরা অধিকার দিয়া গেল।


কলিকাতায় মামার বাড়ি পৌঁছিয়া প্রথমত মামীর সঙ্গে আলাপ হইল। মামী এই অনাবশ্যক পরিবারবৃদ্ধিতে মনে-মনে যে বিশেষ সন্তুষ্ট হইয়াছিলেন তাহা বলিতে পারি না। তাঁহার নিজের তিনটি ছেলে লইয়া তিনি নিজের নিয়মে ঘরকন্না পাতিয়া বসিয়া আছেন, ইহার মধ্যে সহসা একটি তেরো বৎসরের অপরিচিত অশিক্ষিত পাড়াগেঁয়ে ছেলে ছাড়িয়া দিলে কিরূপ একটা বিপ্লবের সম্ভাবনা উপস্থিত হয়। বিশ্বম্ভরের এত বয়স হইল, তবু কিছুমাত্র যদি জ্ঞানকাণ্ড আছে।


বিশেষত, তেরো-চৌদ্দ বৎসরের ছেলের মতো পৃথিবীতে এমন বালাই আর নাই। শোভাও নাই, কোনো কাজেও লাগে না। স্নেহও উদ্রেক করে না, তাহার সঙ্গসুখও বিশেষ প্রার্থনীয় নহে। তাহার মুখে আধো-আধো কথাও ন্যাকামি, পাকা কথাও জ্যাঠামি এবং কথামাত্রই প্রগল্‌ভতা। হঠাৎ কাপড়চোপড়ের পরিমাণ রক্ষা না করিয়া বেমানানরূপে বাড়িয়া উঠে; লোকে সেটা তাহার একটা কুশ্রী স্পর্ধাস্বরূপ জ্ঞান করে। তাহার শৈশবের লালিত্য এবং কণ্ঠস্বরের মিষ্টতা সহসা চলিয়া যায়; লােকে সেজন্য তাহাকে মনে মনে অপরাধ না দিয়া থাকিতে পারে না। শৈশব এবং যৌবনের অনেক দোষ মাপ করা যায়, কিন্তু এই সময়ের কোনো স্বাভাবিক অনিবার্য ত্রুটিও যেন অসহ্য বোধে হয়।


সেও সর্বদা মনে-মনে বুঝিতে পারে, পৃথিবীর কোথাও সে ঠিক খাপ খাইতেছে না; এইজন্য আপনার অস্তিত্ব সম্বন্ধে সর্বদা লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী হইয়া থাকে। অথচ, এই বয়সেই স্নেহের জন্য কিঞ্চিৎ অতিরিক্ত কাতরতা মনে জন্মায়। এই সময়ে যদি সে কোনাে সহৃদয় ব্যক্তির নিকট হইতে স্নেহ কিম্বা সখ্য লাভ করিতে পারে তবে তাহার নিকট আত্মবিক্রীত হইয়া থাকে। কিন্তু তাহাকে স্নেহ করিতে কেহ সাহস করে না; কারণ সেটা সাধারণে প্রশ্রয় বলিয়া মনে করে। সুতরাং তাহার চেহারা এবং ভাবখানা অনেকটা প্রভুহীন পথের কুকুরের মতো হইয়া যায়।


অতএব, এমন অবস্থায় মাতৃভবন ছাড়া আর-কোনো অপরিচিত স্থান বালকের পক্ষে নরক। চারি দিকের স্নেহশূন্য বিরাগ তাহাকে পদে পদে কাটার মতো বিধেঁ। এই বয়সে সাধারণত নারীজাতিকে কোনো-এক শ্রেষ্ঠ স্বর্গলোকের দুর্লভ জীব বলিয়া মনে ধারণা হইতে আরম্ভ হয়, অতএব তাঁহাদের নিকট হইতে উপেক্ষা অত্যন্ত দুঃসহ বোধহয়।


মামীর স্নেহহীন চক্ষে সে যে একটা দুর্গ্রহের মতো প্রতিভাত হইতেছে, এইটে ফটিকের সব চেয়ে বাজিত। মামী যদি দৈবাৎ তাহাকে কোনো-একটা কাজ করিতে বলিতেন তাহা হইলে সে মনের আনন্দে যতটা আবশ্যক তার চেয়ে বেশি কাজ করিয়া ফেলিত- অবশেষে মামী যখন তাহার উৎসাহ দমন করিয়া বলিতেন, “ঢের হয়েছে, ঢের হয়েছে। ওতে আর তোমায় হাত দিতে হবে না। এখন তুমি নিজের কাজে মন দাও গে। একটু পড়ো গে যাও”—তখন তাহার মানসিক উন্নতির প্রতি মামীর এতটা যত্নবাহুল্য তাহার অত্যন্ত নিষ্ঠুর অবিচার বলিয়া মনে হইত।


ঘরের মধ্যে এইরূপ অনাদর, ইহার পর আবার হাঁফ ছাড়িবার জায়গা ছিল না। দেয়ালের মধ্যে আটকা পড়িয়া কেবলই তাহার সেই গ্রামের কথা মনে পড়িত।


প্রকাণ্ড একটা ধাউস ঘুড়ি লইয়া বোঁ বোঁ শব্দে উড়াইয়া বেড়াইবার সেই মাঠ, ‘তাইরে নাইরে নাইরে না’ করিয়া উচ্চৈঃস্বরে স্বরচিত রাগিণী আলাপ করিয়া অকর্মণ্যভাবে ঘুরিয়া বেড়াইবার সেই নদীতীর, দিনের মধ্যে যখন-তখন ঝাঁপ দিয়া পড়িয়া সাঁতার কাটিবার সেই সংকীর্ণ স্রোতস্বিনী, সেই-সব দল-বল উপদ্রব স্বাধীনতা, এবং সর্বোপরি সেই অত্যাচারিণী অবিচারিণী মা অহর্নিশি তাহার নিরুপায় চিত্তকে আকর্ষণ করিত।


জন্তুর মতো একপ্রকার অবুঝ ভালোবাসা কেবল একটা কাছে যাইবার অন্ধ ইচ্ছা, কেবল একটা না দেখিয়া অব্যক্ত ব্যাকুলতা, গোধূলিসময়ের মাতৃহীন বৎসের মতো কেবল একটা আন্তরিক ‘মা, মা’ ক্রন্দন- সেই লজ্জিত শঙ্কিত শীর্ণ দীর্ঘ অসুন্দর বালকের অন্তরে কেবলই আলোড়িত হইত।

স্কুলে এতবড়ো নির্বোধ এবং অমনোযোগী বালক আর ছিল না। একটা কথা জিজ্ঞাসা করিলে সে হা করিয়া চাহিয়া থাকিত। মাস্টার যখন মার আরম্ভ করিত তখন ভারক্লান্ত গর্দভের মতো নীরবে সহ্য করিত। ছেলেদের যখন খেলিবার ছুটি হইত তখন জানালার কাছে দাড়াইয়া দূরের বাড়িগুলার ছাদ নিরীক্ষণ করিত; যখন সেই দ্বিপ্রহর-রৌদ্রে কোনো-একটা ছাদে দুটিএকটি ছেলেমেয়ে কিছু-একটা খেলার ছলে ক্ষণেকের জন্য দেখা দিয়া যাইত তখন তাহার চিত্ত অধীর হইয়া উঠিত।


এক দিন অনেক প্রতিজ্ঞা করিয়া অনেক সাহসে মামাকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিল, “মামা, মার কাছে কবে যাব।” মামা বলিয়াছিলেন, “স্কুলের ছুটি হোক।”


কার্তিক মাসে পূজার ছুটি, সে এখনো ঢের দেরি।


এক দিন ফটিক তাহার স্কুলের বই হারাইয়া ফেলিল। একে তো সহজেই পড়া তৈরি হয় না, তাহার পর বই হারাইয়া একেবারে নাচার হইয়া পড়িল। মাস্টার প্রতি দিন তাহাকে অত্যন্ত মারধোর অপমান করিতে আরম্ভ করিলেন। স্কুলে তাহার এমন অবস্থা হইল যে, তাহার মামাতো ভাইরা তাহার সহিত সম্বন্ধ স্বীকার করিতে লজ্জা বোধ করিত। ইহার কোসো অপমানে তাহারা অন্যান্য বালকের চেয়েও যেন বলপূর্বক বেশি করিয়া আমোদ প্রকাশ করিত।


অসহ্য বোধ হওয়াতে একদিন ‘ফটিক তাহার মামীর কাছে নিতান্ত ‘অপরাধীর মতো গিয়া কহিল, “বই হারিয়ে ফেলেছি।”


মামী অধরের দুই প্রান্তে বিরক্তির রেখা অঙ্কিত করিয়া বলিলেন, “বেশ করেছ! আমি তোমাকে মাসের মধ্যে পাঁচবার করে বই কিনে দিতে পারি নে।”


ফটিক আর-কিছু না বলিয়া চলিয়া আসিল— সে যে পরের পয়সা নষ্ট করিতেছে, এই মনে করিয়া তাহার মায়ের উপর অত্যন্ত অভিমান উপস্থিত হইল ; নিজের হীনতা এবং দৈন্য তাহাকে মাটির সহিত মিশাইয়া ফেলিল।


স্কুল হইতে ফিরিয়া সেই রাত্রে তাহার মাথাব্যথা করিতে লাগিল এবং গা সির্‌সির্‌ করিয়া আসিল। বুঝিতে পারিল, তাহার জ্বর আসিতেছে। বুঝিতে পারিল, ব্যামো বাধাইলে তাহার মামীর প্রতি অত্যন্ত অনর্থক উপদ্রব করা হইবে। মামী এই ব্যামোটাকে যে কিরূপ একটা অকারণ অনাবশ্যক জ্বালাতনের স্বরূপ দেখিবে তাহা সে স্পষ্ট উপলব্ধি করিতে পারিল। রোগের সময় এই অকর্মণ্য অদ্ভুত নির্বোধ বালক পৃথিবীতে নিজের মা ছাড়া আর-কাহারও কাছে সেবা পাইতে পারে, এরূপ প্রত্যাশা করিতে তাহার লজ্জা বোধ হইতে লাগিল।


পরদিন প্রাতঃকালে ফটিককে আর দেখা গেল না। চতুর্দিকে প্রতিবেশীদের ঘরে খোঁজ করিয়া তাহার কোনো সন্ধান পাওয়া গেল না।


সেদিন আবার রাত্রি হইতে মুষলধারে শ্রাবণের বৃষ্টি পড়িতেছে। সুতরাং তাহার খোঁজ করিতে লোকজনকে অনর্থক অনেক ভিজিতে হইল। অবশেষে কোথাও না পাইয়া বিশ্বম্ভরবাবু পুলিসে খবর দিলেন।


সমস্ত দিনের পর সন্ধ্যার সময় একটা গাড়ি আসিয়া বিশ্বম্ভরবাবুর বাড়ির সম্মুখে দাঁড়াইল। তখনো ঝুপ্‌ ঝুপ্‌ করিয়া অবিশ্রাম বৃষ্টি পড়িতেছে, রাস্তায় এক-হাঁটু জল দাঁড়াইয়া গিয়াছে।


দুইজন পুলিশের লোক গাড়ি হইতে ফটিককে ধরাধরি করিয়া নামাইয়া বিশ্বম্ভরবাবুর নিকট উপস্থিত করিল। তাহার আপাদমস্তক ভিজা, সর্বাঙ্গে কাদা, মুখ চক্ষু লোহিতবর্ণ, থর থর করিয়া কাঁপিতেছে। বিশ্বম্ভৰবাবু প্রায় কোলে করিয়া তাহাকে অন্তঃপুরে লইয়া গেলেন।


মামী তাহাকে দেখিয়াই বলিয়া উঠিলেন, “কেন বাপু, পরের ছেলেকে নিয়ে কেন এ কর্মভোগ। দাও ওকে বাড়ি পাঠিয়ে দাও।”


বাস্তবিক, সমস্ত দিন দুশ্চিন্তায় তাঁহার ভালোরূপ আহারাদি হয় নাই এবং নিজের ছেলেদের সহিতও নাহক অনেক খিট্‌মিট্‌ করিয়াছেন।


ফটিক কাঁদিয়া উঠিয়া কহিল, “আমি মার কাছে যাচ্ছিলুম, আমাকে ফিরিয়ে এনেছে।”


বালকের জ্বর অত্যন্ত বাড়িয়া উঠিল। সমস্ত রাত্রি প্রলাপ বকিতে লাগিল। বিশ্বম্ভরবাবু চিকিৎসক লইয়া আসিলেন।


ফটিক তাঁহার রক্তবর্ণ চক্ষু একবার উন্মীলিত করিয়া কডিকাঠের দিকে হতবুদ্ধিভাবে তাকাইয়া কহিল, “মামা, আমার ছুটি হয়েছে কি।”


বিশ্বম্ভরবাবু রুমালে চোখ মুছিয়া সস্নেহে ফটিকের শীর্ণ তপ্ত হাতখানি হাতের উপর তুলিয়া লইয়া তাহার কাছে আসিয়া বসিলেন।


ফটিক আবার বিড় বিড, করিয়া বকিতে লাগিল; বলিল, “মা, আমাকে মারিস নে, মা। সত্যি বলছি, আমি কোনো দোষ করি নি।”


পরদিন দিনের বেলা কিছুক্ষণের জন্য সচেতন হইয়া ফটিক কাহার প্রত্যাশায় ফ্যাল্‌ফ্যাল্‌ করিয়া ঘরের চারি দিকে চাহিল। নিরাশ হইয়া আবার নীরবে দেয়ালের দিকে মুখ করিয়া পাশ ফিরিয়া শুইল।


বিশ্বম্ভরবাবু তাহার মনের ভাব বুঝিয়া তাহার কানের কাছে মুখ নত করিয়া মৃদুস্বরে কহিলেন, “ফটিক, তোর মাকে আনতে পাঠিয়েছি।”


তাহার পরদিনও কাটিয়া গেল। ডাক্তার চিন্তিত বিমর্ষ মুখে জানাইলেন, অবস্থা বড়োই খারাপ।


বিশ্বম্ভরবাবু স্তিমিত প্রদীপে রোগশষ্যায় বসিয়া প্রতি মুহূর্তেই ফটিকের মাতার জন্য প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন।


ফটিক খালাসিদের মতো সুর করিয়া করিয়া বলিতে লাগিল, “এক বাও মেলে না। দো বাও মেলে—এ-এ না।” কলিকাতায় আসিবার সময় কতকটা রাস্তা স্টীমারে আসিতে হইয়াছিল, খালাসিবা কাছি ফেলিয়া সুর করিয়া জল মাপিত; ফটিক প্রলাপে তাহাদেরই অনুকরণে করুণস্বরে জল মাপিতেছে এবং যে অকুল সমুদ্রে যাত্রা করিতেছে, বালক রশি ফেলিয়া কোথাও তাহার তল পাইতেছে না।


এমন সময়ে ফটিকের মাতা ঝড়ের মতো ঘরে প্রবেশ করিয়াই উচ্চকলরবে শোক করিতে লাগিলেন। বিশ্বম্ভর বহুকষ্টে তাঁহার শোকোচ্ছাস নিবৃত্ত করিলে, তিনি শয্যার উপর আছাড় খাইয়া পড়িয়া উচ্চৈঃস্বরে ডাকিলেন, “ফটিক! সোনা! মানিক আমার !”


ফটিক যেন অতি সহজেই তাহার উত্তর দিয়া কহিল, “অ্যাঁ।”


মা আবার ডাকিলেন, “ওরে ফটিক, বাপধন রে।”


ফটিক আস্তে আস্তে পাশ ফিরিয়া কাহাকেও লক্ষ্য না করিয়া মৃদু স্বরে কহিল, “মা, এখন আমার ছুটি হয়েছে মা, এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি।”

ছবি কৃতজ্ঞতা - সস্মিত দাস

ফেইসবুক থেকে নেওয়া 




রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ ২৫-০৬-২০২৫

 রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ ২৫-০৬-২০২৫ আজকের সংবাদ শিরোনাম বিশ্ব পরিবেশ দিবসের উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা --- পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টি...