এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

শনিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৪

স্যানোরার সাথে বেড়ে ওঠা ১৯৭১। #গিফট_ইভেন্ট

 স্যানোরার সাথে বেড়ে ওঠা ১৯৭১।

#গিফট_ইভেন্ট


শীতকালটা বড্ড ছোট, ঝপ করে সন্ধ্যা হয়ে যায়। আমরা খেলার মাঠ থেকে  ঘরে ফিরে দেখি   ঝিঁঝিঁ পোকারা ততক্ষনে আসর জমিয়ে বসেছে। সচরাচর বাবাকে আমরা এই সময়ে হাতে বাজারের ব্যাগ আর খবরের কাগজ নিয়ে অফিস থেকে ফিরতে দেখি।  সেদিন হঠাত অফিস ফেরত বাবা হাতে  চৌকোনা এক বাক্স নিয়ে বাসায় ঢুকলেন। বাক্স রহস্য উদ্ধারে উন্মুখ ছেলে মেয়েদের সামনে বাবা আয়েশ করে বসে বাক্স খুললেন। 

হ্যারিকেনের মৃদু আলোর বৃত্তের ভেতরে গোল হয়ে বসা ভাই বোনদের বিস্ফারিত চোখের সামনে চৌকোনা বাক্স থেকে বের হলো মাখন রঙের ঝক ঝকে এক রেডিও। এক ব্যান্ডের রেডিও, নাম স্যানোরা। দাম একশত দশ টাকা। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে যোগ হলো প্রথম বিলাস সামগ্রী, আধুনিকতা। সত্তুরের শুরুর দিকের সেই শীত সন্ধ্যা আমাদের পরিবারে দারুণ উষ্ণতা নিয়ে এসেছিল। 

চান্দা ব্যাটারী ভরে অনেক রাত পর্যন্ত খবর আর গান শোনা হোল। মনে আছে মধ্যরাতে 'পাক শার জামিন' শুনে আমরা ঘুমাতে গিয়েছিলাম। 


অফিস থেকে ফিরে বাবার প্রথম এবং নিয়মিত কাজ  ছিলো রেডিওতে খবর শোনা। এ এক অদ্ভুত নেশা।  খবর শোনার ঐ সময়টায় আমাদের কোন রকম শব্দ করাও নিষেধ ছিল।

এখন মনে হয় বাবার ঐ একাগ্রতা সেই সময়েরই অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। অসহযোগ আন্দোলন, বিদ্রোহ আর মুক্তির জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষার সাথে শঙ্কা আর অনিশ্চয়তা বাবার মতন আরো অনেককেই খবরমুখী করে তুলেছিল। একাত্তরের যুদ্ধের সময় বাবার ঐ সম্পদ আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং মর্যাদাবান হয়ে উঠলো। মিডিয়াম ওয়েভে স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্র খুব ভালো ধরা যেত। আমরা এখান থেকে ওখানে পালিয়ে বেড়াই  সঙ্গে বাবার স্যানোরা। রাতের বেলায় ঘর অন্ধকার করে লেপের তলায়  রেডিও অন করে শোনা হত মুক্তিযুদ্ধের খবর। স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্র।  মধ্য দুপুরে আকাশবানী কোলকাতায় নিলীমা সান্যাল 

স্কুলের হেড মিস্ট্রেসের মতন গুরু গম্ভীর গলায় পড়তেন বাংলা খবর, যার প্রায় পুরোটা জুড়ে থাকতো মুক্তিযুদ্ধ। আর সন্ধ্যায় দেবদুলাল বন্দোপাধ্যায়ের  অসাধারন গলায় সংবাদ পর্যালোচনা । রাতে নিচু  ভলিউমে আপেল মাহমুদের দেশাত্নবোধক গান। আর ছিল চরমপত্র !  এতো কম ভলিউমে  যে রেডিওকে কেন্দ্র করে বাবা আর মামাদের চার পাচটা মাথা বৃত্ত তৈরী করে থাকতো। স্বাধীনতা- বিজয়, সে অন্য কাহিনি। 

১৬ ডিসেম্বর বিকেলে ঐ রেডিও তার দীর্ঘদিনের মিনমিনে গলা ভুলে পূর্ণ শক্তিতে বেজে ওঠে। বিজয় নিশান উড়ছে ঐ... সে এক সময় এসেছিল আমাদের জীবনে।


স্বাধীনতার পরে আমরা ফিরে এলাম পরিত্যক্ত ভাঙ্গাচোরা বাড়িতে। আমাদের সাথে ফিরে এলো স্যানোরাও। বছর খানেকের মধ্যেই কী এক অজানা কারনে বাবা তার অমূল্য সম্পদটি আমাদের দুই ভাইয়ের হাতে তুলে দিলেন। তুলে দিলেন মানে, আমরা একটু আধটু নিজের মতন করে স্টেশন বাছাই করতে পারি আর কী!  শর্ত ছিলো খবরের সময়টুকু  অবশ্যই তাকে দিতে হবে। আমরা তাতেই আনন্দে আত্মহারা। 

'দূর্বা ঘাসে বিচালি, সবার প্রিয় পূবালি' । বিজ্ঞাপন তরঙ্গের প্রায় সবকটা বিজ্ঞাপন মুখস্ত হয়ে গেল এক সপ্তাহের মধ্যে। আব্দুল জব্বার, খুরশিদ আলম, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকি, সৈয়দ হাদী, আঞ্জুমান আরা, সাবীনা ইয়াসমিন, শাহনাজ রহমতুল্লাহ এদের  আমার তখন নিকটাত্মিয় মনে হতো। 


'৭৪ এর দুর্ভিক্ষ আমাদের হঠাত করেই বয়েসের চেয়ে বড় করে ফেললো।  সূর্য ওঠার আগে  বড়দের সাথে আমরাও 'ন্যায্যমূল্যের' দোকানে লাইন দেই। গুঁড়ো দুধ, টিনের কৌটায় সারডিন মাছ, বড় চারকোনা নোনতা বিস্কুট, কম্বল এসব পাওয়া যেত রিলিফ হিসেবে। পরে এসব কিনতে হতো সরকারী  কম দামের ( ন্যায্য মূল্যের দোকান) দোকান থেকে। সেটাও লাইন দিয়ে। টর্চ আর রেডিওর ব্যাটারীও কেনা হতো লাইন দিয়ে। দীর্ঘ, সর্পিল এবং ধীর গতির লাইনে দাঁড়িয়ে বড়দের খিস্তি খেউর আর পাশের চায়ের দোকানের লাল দোপাট্টা মল মলের মাঝে হঠাত করেই কানে আসে "ওগো নিরুপমা করিও ক্ষমা '। কিশোর কুমার।

কখনো হেমন্ত'র আমায় প্রশ্ন করে নীল ধ্রুব তারা'। আমাদের অনভ্যস্ত কানে দারুণ লাগে। আমরা তখন আব্দুল জব্বারের তুমি কি দেখেছ কভু' আর বশির আহমেদের  'হরিণ হরিণ নয়ন কেন ছলো ছলো'র মধ্যে পড়ে আছি। অতঃপর  এক সময়  রেডিওর নব ঘুড়িয়ে আমরাই পেয়ে যাই গুপ্তধন। বিবিধ ভারতী, আগরতলা আর কোলকাতার অনুরোধের আসর। মান্না দে, কিশোর কুমার, হৈমন্তী শুক্লা আর হেমন্ত'র গানের বন্যায় ভেসে যাতে থাকি আমরা দুই ভাই। কত সহজেই না বলে ফেলা গেলো কথাগুলো, অথচ এসব গান শোনা  সহজসাধ্য ছিলনা মোটেই। কোলকাতা আর আগরতলার অনুরোধের আসর গুলো হতো ঠিক সন্ধ্যা বেলায়। খেলার মাঠ থেকে ফিরে আমাদের তখন চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে স্কুলের পড়া পড়তে হতো। চেঁচিয়ে, কারন পাশের ঘরের বাবাকে জানাতে হবে পড়ছি, ফাঁকি দিচ্ছি না। ওরই মাঝে কখনো অত্যন্ত নিচু ভলিঊমে শোনা হতো একটা বা দুটি গান। আসরের শেষ গানটি হতো সবচেয়ে 'দামী', সবচেয়ে বেশী অনুরোধ পাওয়া। অনেক সময়ই সেটা শোনা হতোনা। আরেকটা অনুষ্ঠান ছিল, পূর্বাঞ্চলীয় শ্রোতাদের অনুরোধের আসর। এটা হতো অনেক রাতে, সাড়ে দশটা এগারোটার দিকে। আমাদের জন্য সেটা ছিল অনেকটা সেহরী খাবার মতন। আমাদের ঘুমানোর বাঁধা সময় ছিল ন'টায়। যেদিন অনুরোধের আসর থাকতো সেদিন রাতে আমাদের পড়াশোনার পাট যেন আর শেষই হতে চাইতোনা। আসলে এটা ছিল জেগে থাকার এক কষ্টসাধ্য কসরত। তবুও কি ভালভাবে গান শোনার উপায় আছে ! বাবা ওপাশ থেকে ধমকাচ্ছেন এখনো কেন ঘুমাচ্ছিনা, রেডিও কেন এখনো অন ইত্যাদি। আমরা দুই ভাই তখন নেশাগ্রস্ত, আমাদের ঠেকায় কে? আমারা দুজন একই বিছানায় ঘুমাই। দুজনের বালিশের মাঝখানে রাখা হয়েছে রেডিও। দু'জনের দুই কান লেগে থাকে রেডিওর  দুই দিকের শরীরে। মিন মিন করে লতিয়ে ওঠে সুর ! লতা, হেমন্ত, অনুপ আমাদের কানে কানে গেয়ে যায় তাদের সেই সব গান। কিন্তু সমস্যা হলো, একেতো সস্তা মিডিয়াম ওয়েভ রেডিও তার উপর নিয়ন্ত্রিত শব্দ( বাবার ভয়ে), আবহাওয়া খারাপ থাকলে আরো করুন অবস্থা! শব্দ ক্ষীণ হতে হতে কোথায় যে হারিয়ে যায়। আবার যখন ফিরে আসে তখন মাঝ খানের লাইনগুলো গাওয়া হয়ে গেছে। হারিয়ে যাওয়া শব্দ আর সুর শুনতে আমাদের কি প্রানান্ত চেষ্টা বাড়ির এমাথা থেকে ওমাথা  লম্বা তার টেনে এরিয়েল বানানো হলো। তখন মনে হতো, আহা! একটা ভালো রেডিও যদি আমাদের থাকতো !


প্রযুক্তির সেরা হোম থিয়েটার এখন আমার বাড়িতে। হিন্দি আর ইংরেজির চাপে আমার বাংলা গানের অবস্থা ক্ষীণতোয়া নদীর মতন হলেও কখনো কখনো বান ডাকে। এখনো হেমন্ত, মান্না, হৈমন্তীর গান বাজে। শব্দের কোন ওঠা নামা নেই। আধুনিক শব্দ প্রযুক্তির গুনে ঘরের প্রতিটি কোনে স্পষ্ট সুরেলা আওয়াজ। কিন্তু প্রান নেই ! মনে হয়  কি যেন একটা নেই, অথচ থাকার কথা ছিল। আগের মতন আর উন্মাতাল করেনা। 

তালপাতার বাঁশীটি আর আগের মতন বাজেনা...


আমার বন্ধু ফখরুল প্রায়ই পুরানো গানের কথা বলে আমার বালকবেলা মনে করিয়ে দেয়। স্মৃতির এই টুকরোটুকু তার জন্য।         

       

গোলাম সারোয়ার খসরু।



শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৪

রাত ৮টা৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ - ৩০-০৮-২০২৪

 রাত ৮টা৩০ মিনিটের সংবাদ

তারিখ - ৩০-০৮-২০২৪


আজকের সংবাদ শিরোনাম


আর কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেবে না সরকার --- সিদ্ধান্ত উপদেষ্টা পরিষদে।


গুম বিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করলো বাংলাদেশ।


বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষ জনশক্তি নিতে আগ্রহী কুয়েত --- রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতে বললেন দেশটির রাষ্ট্রদূত।


প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ --- অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতার অঙ্গীকার।


শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ। 


গাজায় পোলিও টিকা দেওয়ার অনুমতি দিতে মানবিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরাইল --- ডব্লিউএইচও-র ঘোষণা।    


এবং রাওয়ালপিন্ডিতে স্বাগতিক পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিতীয় ও শেষ ক্রিকেট টেস্ট শুরু হচ্ছে আজ --- সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামবে টাইগাররা।

বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৪

কাজী নজরুল সম্পর্কে যে ২০টি তথ্য আপনি না-ও জেনে থাকতে পারেন।

 কাজী নজরুল সম্পর্কে যে ২০টি তথ্য আপনি না-ও জেনে থাকতে পারেন।


কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ছিল বিচিত্র আর বহুবর্ণিল। তাঁর সেই জীবনের কতটুকুই-বা আমরা জানি? আজ নজরুলজয়ন্তীতে নজরুল-গবেষকদের লেখা বিভিন্ন বই ও পত্রিকা ঘেঁটে এখানে বিদ্রোহী কবি-সম্পর্কিত এমন ২০টি তথ্য তুলে ধরা হলো, যেগুলো আপনি না-ও জেনে থাকতে পারেন!


🌹১. নজরুলের জীবন কোনো নিয়মের জালে আটকা ছিল না। যখন যা ভালো লাগত, তিনি তা-ই করতেন। দিন নেই, রাত নেই হই হই রব তুলে উঠে পড়তেন কোনো বন্ধুর বাড়িতে। তারপর চলত অবিরাম আড্ডা আর গান!


🌹২. নজরুলের লেখার জন্য কোনো বিশেষ পরিবেশ লাগত না। গাছতলায় বসে যেমন তিনি লিখতে পারতেন, তেমনি ঘরোয়া বৈঠকেও তাঁর ভেতর থেকে লেখা বের হয়ে আসত।


🌹৩. নজরুল ইসলাম কোনো অনুষ্ঠানে গেলে ঝলমলে রঙিন পোশাক পরতেন। কেউ তাঁকে রঙিন পোশাক পরার কারণ জিজ্ঞাসা করলে বলতেন, রঙিন পোশাক পরি অনেক মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য। অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত তথ্য দিয়েছেন, নজরুল তাঁর ঝলমলে পোশাকের ব্যাপারে বলতেন, ‘আমার সম্ভ্রান্ত হওয়ার দরকার নেই। আমার তো মানুষকে বিভ্রান্ত করবার কথা!’


🌹৪. নজরুলের পাঠাভ্যাস ছিল বহুমুখী। তিনি পবিত্র কোরআন, গীতা, বাইবেল, বেদ, ত্রিপিটক, মহাভারত, রামায়ণ যেমন পড়তেন, তেমন পড়তেন শেলি, কিটস, কার্ল মার্ক্স, ম্যাক্সিম গোর্কিসহ বিশ্বখ্যাত লেখকদের লেখা। রবীন্দ্রনাথের ‘গীতবিতান’-এর সব কটি গান মুখস্থ করে ফেলেছিলেন তিনি!


🌹৫. বাংলা গানে নজরুলই একমাত্র ব‌্যক্তি, যিনি সব ধরনের বিষয় নিয়ে গান লিখেছেন। তাঁর গানের সংখ্যা অনেকে চার হাজার বললেও আসলে তিনি গান লিখেছিলেন প্রায় আট হাজারের মতো, যার অধিকাংশই সংরক্ষণ করা যায়নি।


🌹৬. বাঙালি কবিদের মধ্যে নজরুলই ছিলেন সবচেয়ে বেশি রসিক। তাঁর কথায় হাসির ঢেউ উঠত। হিরণ্ময় ভট্টাচার্য ‘রসিক নজরুল’ নামে একটি বই লিখেছেন। যাঁরা বইটি পড়েননি, তাঁদের পক্ষে বোঝা কষ্টকর নজরুল কী পরিমাণ রসিক ছিলেন! একটা উদাহরণ দেওয়া যাক, একবার এক ভদ্রমহিলা নজরুলকে খুব স্মার্টলি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনি কি পানাসক্ত?’ নজরুল বললেন, ‘না, বেশ্যাসক্ত!’ কবির কথায় ভদ্রমহিলার মুখ কালো হয়ে গেল। আর তক্ষুনি ব্যাখ্যা করলেন নজরুল, ‘পান একটু বেশি খাই। তাই বেশ্যাসক্ত, অর্থাৎ বেশি+আসক্ত = বেশ্যাসক্ত!’


🌹৭. নজরুলের প্রেমে পড়েননি, এমন পুরুষ কিংবা নারী খুঁজে পাওয়া ভার। তাঁর চরম শত্রুরাও তাঁর ভালোবাসার শক্তির কাছে হার মেনেছেন। কবি বুদ্ধদেব বসু নজরুলকে প্রথম দেখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে। তিনি লিখেছেন, ‘সেই প্রথম আমি দেখলাম নজরুলকে। এবং অন্য অনেকের মতো যথারীতি তাঁর প্রেমে পড়ে গেলাম!’ শুধু বুদ্ধদেব বসু নন, তাঁর স্ত্রী প্রতিভা বসুও নজরুলের প্রেমে পড়েছিলেন। সেই কাহিনি নিয়ে তিনি লিখেছেন ‘আয়না’ নামে একটি গল্প। কী অবাক কাণ্ড! স্বামী-স্ত্রী দুজনেই একই লেখকের প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছেন!


🌹৮. কাজী নজরুল ইসলাম প্রচুর পান ও চা খেতেন। লিখতে বসার আগে পর্যাপ্ত পরিমাণ চা আর এক থালা পান নিয়ে বসতেন তিনি। পান শেষ করে চা, এরপর আবার চা শেষ করে পান খেতেন। তিনি বলতেন, ‘লেখক যদি হতে চান/ লাখ পেয়ালা চা খান!’


🌹৯. নজরুল ছিলেন সত্যিকারের হস্তরেখা বিশারদ। তিনি অনেকের হাত দেখে যা বলতেন, তা-ই ঘটতে দেখা গেছে। একবার এক লোককে বললেন, আপনার বিদেশযাত্রা আছে, লোকটি সত্যিই কয়েক দিনের মধ‌্যে বিদেশ চলে গেল! আরেকজনকে বললেন, ‘আপনি পৃথিবীর বাইরে চলে যেতে পারেন।’ পরে ওই লোকটির মৃত্যু ঘটেছিল!


🌹১০. মাঝেমধ্যে রাগান্বিত হলে নজরুল তাঁর সামনে যদি কোনো বই-খাতা পেতেন বা কাগজ পেতেন, তা ছিঁড়ে কুচি কুচি করে ফেলতেন।


🌹১১. অর্থের ব্যাপারে নজরুল ছিলেন ভয়াবহ বেহিসাবি। হাতে টাকা এলেই তা বন্ধুবান্ধব নিয়ে আমোদ-ফুর্তি করে শেষ করে দিতেন। আর বলতেন, ‘আমি আমার হাতের টাকা বন্ধুদের জন্য খরচ করছি। আর যখন ওদের টাকা হবে ওরাও আমার জন্য খরচ করবে, চিন্তার কোনো কারণ নেই।’


🌹১২. নজরুল তাঁর দুই পুত্রের ডাকনাম সানি (কাজী সব্যসাচী) আর নিনি (কাজী অনিরুদ্ধ) রেখেছিলেন তাঁর দুই প্রিয় মানুষ সান ইয়াত-সেন ও লেনিনের নামানুসারে।


🌹১৩. নজরুল তাঁর সন্তানদের খুবই ভালোবাসতেন। এমনকি তিনি তাঁদের নিজ হাতে খাওয়াতেন আর ছড়া কাটতেন, ‘সানি-নিনি দুই ভাই/ ব্যাঙ মারে ঠুই ঠাই।’ কিংবা ‘তোমার সানি যুদ্ধে যাবে মুখটি করে চাঁদপানা/ কোল-ন্যাওটা তোমার নিনি বোমার ভয়ে আধখানা।’


🌹১৪. নজরুল ছিলেন সত্যিকারের জনদরদি মানুষ। একটি ঘটনা দিয়ে তার প্রমাণ দেওয়া যেতে পারে। দক্ষিণ কলকাতার এক দরিদ্র হিন্দু মেয়ের বিবাহ। কোনোরকমে কন্যা বিদায়ের আয়োজন চলছে। নজরুল খবরটি পেলেন। তিনি দ্রুত বাজারে গেলেন। এক হিন্দু বন্ধুকে নিয়ে বিয়ের বাজার করলেন। তারপর ধুমধাম করে মেয়েটির বিয়ে হলো। মেয়ের বাবা নজরুলকে প্রণাম করে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘আমরা আপনাকে ভুলব না কোনো দিন।’ এমনই ছিলেন কবি। তাঁর বাড়িতে সাঁওতাল, গারো, কোল—সবাই দল বেঁধে আসতেন। আপ্যায়িত হতেন উৎসবসহকারে।


🌹১৫. নজরুল কবিতা ও গানের স্বত্ব বিক্রি করে উন্নত মানের একটি ক্রাইসলার গাড়ি কিনতে পেরেছিলেন। এই গাড়ি ছিল সেই সময়ের সবচেয়ে বিলাসবহুল ও দামি।


🌹১৬. নজরুল ট্রেনের প্রথম শ্রেণির কামরা ভাড়া করে মাঝেমধ্যে প্রমোদভ্রমণে যেতেন।


🌹১৭. নজরুলের দৃষ্টিশক্তি ছিল অসামান্য। তিনি গভীর অন্ধকারেও বহুদূরের কোনো জিনিস স্পষ্ট দেখতে পেতেন।


🌹১৮. নজরুল ছিলেন অসম্ভব রকমের ক্রীড়াপ্রেমী। সময় পেলেই তিনি ফুটবল খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে ছুটতেন বন্ধুবান্ধব নিয়ে। যেদিন বাড়ি থেকে সোজা খেলা দেখতে যেতেন, সেদিন দুই পুত্র সানি আর নিনিকে সঙ্গে নিতেন। একবার খেলা দেখতে গেছেন। স্টেডিয়ামে পাশে বসে আছেন হুমায়ূন কবির। খেলা ভাঙার পর ভিড়ের মধ্যে দুই পুত্র খানিকটা আড়ালে চলে গেল। হঠাৎ পেছন থেকে নজরুলের হাঁকডাক শোনা গেল, ‘সানি কোথায়? নিনি কোথায়?’ মাঠসুদ্ধ লোক হাঁ হয়ে নজরুলকে দেখছে। এরই মধ্যে দুই পুত্রকে ঠেসে ধরে ট্যাক্সি করে বাড়ি নিয়ে এসে তিনি স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন।


🌹১৯. নজরুল বেশ দক্ষ দাবাড়ু ছিলেন। যেদিন বিশেষ কোনো কাজ থাকত না, সেদিন তিনি দাবা খেলতেন। খেলায় এমন মগ্ন হতেন যে খাওয়া-নাওয়ার খেয়ালও থাকত না। মাঝেমধ্যে নজরুলের বাড়িতে দাবার আসর বসাতে আসতেন কাজী মোহাতার হোসেন ও হেম সোম।


🌹২০. কলকাতায় নজরুলের তিনতলা বাড়ির সামনে ছিল একটা ন্যাড়া মাঠ। খেলা নিয়ে বহু কাণ্ড ঘটেছে ওই মাঠে। একবার জোর ক্রিকেট খেলা চলছে। নজরুল গ্যালারি অর্থাৎ বারান্দায় দাঁড়িয়ে খেলারত তাঁর দুই পুত্রকে জোর উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে বড় পুত্র সানি এল ব্যাট করতে। প্রথম বলেই ছয়! নজরুলের সে কি দাপাদাপি! ঠিক পরের বল আসার আগে তিনি চিৎকার করে বলে উঠলেন, ‘সানি, ওই রকম আরেকটা মার।’ ব্যস বাবার কথায় উত্তেজিত হয়ে দিগ্‌বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে ব্যাট চালাল পুত্র। ব্যাট অবশ্য বলে লাগল না। লাগল উইকেটকিপারের চোয়ালে! বেশ রক্তারক্তি অবস্থা! অবশেষে খেলা বন্ধ করা হলো।


এমনই নানা রঙের মানুষ ছিলেন নজরুল। যাঁর জীবনে দুঃখ-কষ্টের অভাব ছিল না, আবার রং-রূপেরও অভাব ছিল না। পৃথিবীর খুব কম মানুষই বোধ হয় এমন  মহাজীবনের অধিকারী হন। বুদ্ধদেব বসু যথার্থই বলেছিলেন, ‘কণ্ঠে তাঁর হাসি, কণ্ঠে তাঁর গান, প্রাণে তাঁর অফুরান আনন্দ—সব মিলিয়ে মনোলুণ্ঠনকারী এক মানুষ।’


___ সংগৃহিত

নিজের লেখা বইতেও মানুষ মিথ্যা লিখে??????!!!!! 99-BOফেইসবুক থেকে নেওয়া

 নিজের লেখা বইতেও মানুষ মিথ্যা লিখে??????!!!!!


ডালিমের স্ত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল কে❓


আচ্ছা বছরের পর বছর যার বউকে তুলে নিয়ে যাবার গল্প আমাদের শোনানো হয়, সেই মেজর ডালিমের এ বিষয়ে বক্তব্য কি? 


নিজের লেখা "যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি" বইয়ে ডালিম বলেছে-


"... ১৯৭৪ সালের মাঝামাঝি ঘটে এক বর্বরোচিত অকল্পনীয় ঘটনা। আমার খালাতো বোন তাহ্‌মিনার বিয়ে ঠিক হল কর্নেল রেজার সাথে। বিয়ের দু’দিন আগে ঢাকায় এলাম কুমিল্লা থেকে। ঢাকা লেডিস ক্লাবে বিয়ের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। পুরো অনুষ্ঠানটাই তদারক করতে হচ্ছিল নিম্মী এবং আমাকেই। আমার শ্যালক বাপ্পি ছুটিতে এসেছে ক্যানাডা থেকে। বিয়েতে সেও উপস্থিত। রেডক্রস চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফার পরিবারও উপস্থিত রয়েছেন অভ্যাগতদের মধ্যে। বাইরের হলে পুরুষদের বসার জায়গায় বাপ্পি বসেছিল। তার ঠিক পেছনের সারিতে বসেছিল গাজীর ছেলেরা। বয়সে ওরা সবাই কমবয়সী ছেলে-ছোকরা। হঠাৎ করে গাজীর ছেলেরা পেছন থেকে কৌতুকচ্ছলে বাপ্পির মাথার চুল টানে, বাপ্পি পেছনে তাকালে ওরা নির্বাক বসে থাকে। এভাবে দু’/তিনবার চুলে টান পড়ার পর বাপ্পি রাগান্বিত হয়ে ওদের জিজ্ঞেস করে- চুল টানছে কে?


'আমরা পরখ করে দেখছিলাম আপনার চুল আসল না পরচুলা' জবাব দিল একজন। পুচঁকে ছেলেদের রসিকতায় বাপ্পি যুক্তিসঙ্গত কারণেই ভীষণ ক্ষেপে যায় ও বাপ্পিকে যে ছেলেটি চুলে টান দিয়েছিল তাকে ধরে ঘর থেকে বের করে দেয় । এ ঘটনার কিছুই তখন আমি জানতাম না। বিয়ের আনুষ্ঠিকতার প্রায় সবকিছুই সুষ্ঠভাবেই হয়ে যায়। হঠাৎ দু’টো মাইক্রোবাস এবং একটা কার এসে ঢুকল লেডিস ক্লাবে। কার থেকে নামলেন স্বয়ং গাজী গোলাম মোস্তফা আর মাইক্রোবাস দু’টো থেকে নামল প্রায় ১০-১২ জন অস্ত্রধারী বেসামরিক ব্যক্তি। গাড়ি থেকেই প্রায় চিৎকার করতে করতে বেরুলেন গাজী গোলাম মোস্তফা।


'কোথায় মেজর ডালিম? বেশি বার বেড়েছে। তাকে আজ আমি শায়েস্তা করব। কোথায় সে?' ঘটনার আকস্মিকতায় আমিতো হতবাক! আমি অত্যন্ত ভদ্রভাবে তাকে জিজ্ঞেস করলাম- 'ব্যাপার কি? এ সমস্ত কিছুর মানেই বা কি?' তিনি তখন ভীষণভাবে ক্ষীপ্ত। একনাগাড়ে শুধু বলে চলেছেন- 'গাজীরে চেন না। আইজ আমি তোরে মজা দেখামু। তুই নিজেরে কি মনে করছস?'


তার ইশারায় অস্ত্রধারীরা সবাই তখন আমাকে টানা-হেচড়া করে মাইক্রোবাসের দিকে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে বাইরে হৈ চৈ শুনে নিম্মী এবং খালাম্মা বেরিয়ে এসেছেন অন্দরমহল থেকে।আমাকে জোর করে ঠেলে উঠান হল মাইক্রোবাসে।আমাকে গাড়িতে তুলতেই খালাম্মা এবং নিম্মী দু’জনেই গাজীকে বলল, ওদের সাথে আমাদেরকেও নিতে হবে আপনাকে। ওদের একা নিয়ে যেতে দেব না আমরা। 'ঠিক আছে; তবে তাই হবে' বললেন গাজী। 


গাড়ি চলছে সেকেন্ড ক্যাপিটালের দিকে। আমি তাকে বললাম- 'গাজী সাহেব আপনি আমাদের নিয়ে যাই চিন্তা করে থাকেন না কেন; লেডিস ক্লাব থেকে আমাদের উঠিয়ে আনতে কিন্তু সবাই আপনাকে দেখেছে। তাই কোন কিছু করে সেটাকে বেমালুম হজম করে যাওয়া আপনার পক্ষে কিছুতেই সম্ভব হবে না'। 


আমার কথা শুনে কি যেন ভেবে নিয়ে তিনি আবার তার গাড়িতে গিয়ে উঠলেন। কাফেলা আবার চলা শুরু করল। তবে এবার রক্ষীবাহিনীর ক্যাম্পের দিকে নয়, গাড়ি ঘুরিয়ে তিনি চললেন ৩২নং ধানমন্ডি প্রধানমন্ত্রীর বাসার দিকে। আমরা হাফ ছেড়ে বাচলাম। 


কলাবাগান দিয়ে ৩২নং রোডে ঢুকে আমাদের মাইক্রোবাসটা শেখ সাহেবের বাসার গেট থেকে একটু দূরে একটা গাছের ছায়ায় থামতে ইশারা করে জনাব গাজী তার গাড়ি নিয়ে সোজা গেট দিয়ে ঢুকে গেলেন ৩২নং এর ভিতরে। সেকেন্ড ফিল্ড রেজিমেন্ট তখন শেখ সাহেবের বাড়ি পাহারা দিচ্ছে। একবার ভাবলাম ওদের ডাকি, আবার ভাবলাম এর ফলে যদি গোলাগুলি শুরু হয়ে যায় তবে ক্রস-ফায়ারে বিপদের ঝুঁকি বেশি। এ সমস্তই চিন্তা করছিলাম হঠাৎ দেখি লিটুর ঢাকা ক-৩১৫ সাদা টয়োটা কারটা পাশ দিয়ে হুস্‌ করে এগিয়ে গিয়ে শেখ সাহেবের বাসার গেটে গিয়ে থামল। লিটুই চালাচ্ছিল গাড়ি। গাড়ি থেকে নামল এসপি মাহবুব। নেমেই প্রায় দৌড়ে ভিতরে চলে গেল সে। লিটু একটু এগিয়ে গিয়ে রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে অপেক্ষায় রইলো সম্ভবত মাহ্বুবের ফিরে আসার প্রতীক্ষায়। লিটু এবং মাহ্বুবকে দেখে আমরা সবাই আস্বস্ত হলাম। র্নিঘাত বিপদের হাত থেকে পরম করুণাময় আল্লাহ্‌’তায়ালা আমাদের বাচিঁয়ে দিলেন।


লিটু যখন মাহ্‌বুবের বাসায় গিয়ে পৌঁছে মাহবুব তখন মানিকগঞ্জ থেকে সবেমাত্র ফিরে বিয়েতে আসার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল। হঠাৎ লিটুকে হন্তদন্ত হয়ে উপরে আসতে দেখে তার দিকে চাইতেই লিটু বলে উঠল- 'মাহবুব ভাই সর্বনাশ হয়ে গেছে। বিয়ে বাড়ি থেকে গাজী বিনা কারণে ডালিম-নিম্মীকে জবরদস্তি গান পয়েন্টে উঠিয়ে নিয়ে গেছে'।


একথা শুনে মাহবুব স্তম্ভিত হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীকেই খবরটা সবচেয়ে আগে দেওয়া দরকার কোন অঘটন ঘটে যাবার আগে। গাজীর কোন বিশ্বাস নাই; ওর দ্বারা সবকিছুই সম্ভব। মাহবুব টেলিফোনের দিকে এগিয়ে যায়। হঠাৎ টেলিফোনটাই বেজে উঠে। রেড টেলিফোন। মাহবুব ত্রস্তে উঠিয়ে নেয় রিসিভার। 


প্রধানমন্ত্রী অপর প্রান্তে-

'মাহবুব তুই জলদি চলে আয় আমার বাসায়। গাজী এক মেজর আর তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের ধইরা আনছে এক বিয়ার অনুষ্ঠান থ্যাইকা। ঐ মেজর গাজীর বউ-এর সাথে ইয়ার্কি মারার চেষ্টা করছিল। উপযুক্ত শিক্ষা দিতে হবে। বেশি বাড় বাড়ছে সেনাবাহিনীর অফিসারগুলির'।


সব শুনে মাহবুব জানতে চাইলো- 'স্যার গাজী সাহেবকে জিজ্ঞেস করুন মেজর ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের কোথায় রেখেছেন তিনি?'


'ওদের সাথে কইরা লইয়া আইছে গাজী। গেইটের বাইরেই গাড়িতে রাখা হইছে বদমাইশগুলারে' -জানালেন প্রধানমন্ত্রী।


'স্যার গাজী সাহেব ডালিম আর নিম্মীকেই তুলে এনেছে লেডিস ক্লাব থেকে। ওখানে ডালিমের খালাতো বোনের বিয়ে হচ্ছিল আজ।' -জানাল মাহবুব।


'কছ কি তুই!' প্রধানমন্ত্রী অবাক হলেন।


'আমি সত্যিই বলছি স্যার। আপনি ওদের খবর নেন আমি এক্ষুণি আসছি।'


এই কথোপকথনের পরই মাহবুব লিটুকে সঙ্গে করে চলে আসে ৩২নং ধানমন্ডিতে। মাহ্‌বুবের ভিতরে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই রেহানা, কামাল ছুটে বাইরে এসে আমাদের ভিতরে নিয়ে যায়। আলম ও চুল্লুর রক্তক্ষরণ দেখে শেখ সাহেব ও অন্যান্য সবাই শংকিত হয়ে উঠেন।


'হারামজাদা, এইডা কি করছস তুই?' গাজীকে উদ্দেশ্য করে গর্জে উঠলেন শেখ মুজিব- 'ডালিম আর নিম্মীর কাছে মাফ চা' । আর আমারে উদ্দেশ্য কইরা শেখ মুজিব বললেন- 'তুই গাজীরে মাফ কইরা দে। আর গাজী তুই নিজে খোদ উপস্থিত থাকবি কন্যা সম্প্রদানের অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত'।


অনেকটা মোড়লী কায়দায় একটা আপোষরফা করার চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী। চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে নিম্মী এবং আমাকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি। খালাম্মা ঠিকমত হাটতে পারছিলেন না। কামাল, রেহানা ওরা সবাই ধরাধরি করে ওদের উপরে নিয়ে গেল। শেখ সাহেবের কামরায় তখন আমি, নিম্মী আর গাজী ছাড়া অন্য কেউ ছিল না। নিম্মী দুঃখে-গ্ল্যানিতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল। শেখ সাহেব ওকে জড়িয়ে ধরে সান্তনা দিতে চেষ্টা করছিলেন। অদূরে গাজী ভেজা বেড়ালের মত কুকড়ে দাড়িয়ে কাঁপছিল।


সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে আসছিলাম ঠিক সেই সময় শেখ সাহেব বললেন- 

'আমার গাড়ি তোদের পৌঁছে দেবে'।

'তার প্রয়োজন হবে না চাচা। বাইরে লিটু-স্বপনরা রয়েছে তাদের সাথেই চলে যেতে পারব। ..."


এবার বলুন এই গল্পে শেখ কামালের ভূমিকা কি?


গোয়েবলসীয় তত্ত্বে বিশ্বাসী গুজববাজদের অন্যতম একটি টপিক - শেখ কামাল মেজর ডালিমের বৌকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। বছরের পর বছর এমন এক রূপকথার ডুগডুগি বাজিয়ে চলেছে তারা, বলাই বাহুল্য - এদের কথায় অনেকেই বিভ্রান্ত হয়।


চারটি নিষিদ্ধ বই চাইলে অর্ডার করতে পারেন আমাদের কাছে : 


আমি মেজর ডালিম বলছি 

আমার ফাঁ * সি চাই 

স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশ 

যা দেখেছি, যা বুঝেছি, যা করেছি 

কিছু কথা কিছু ব্যথা 

মুক্তির পথ


বাংলাদেশের রাজনৈতিক হ * ত্যা কান্ডের সূচনা পর্ব ইতিহাসের কাঠগড়ায় আওয়ামীলীগ।

99-BO ফেইসবুক থেকে নেওয়া 


সকাল ৭টার সংবাদ তারিখ: ২৯-০৮-২০২৪ খ্রি:।

 সকাল ৭টার সংবাদ

তারিখ: ২৯-০৮-২০২৪ খ্রি:।


আজকের শিরোনাম:-…


অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে দেশ পুর্নগঠনে সহায়তা করার জন্য কানাডাকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা।


দেশের চাহিদা মেটাতে ৯০ হাজার মেট্রিকটন সার এবং ২০ হাজার মেট্রিকটন মসুর ডাল আমদানির পৃথক প্রস্তাব সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটিতে অনুমোদন।


দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি - ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত।


প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন না করে সেই অর্থ বন্যা দুর্গতদের সহায়তায় দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।


বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন বাতিল।


দেশব্যাপী হাই-টেক পার্কগুলোর নামকরণ সংশ্লিষ্ট জেলার নামে হবে - জানালেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা৷ 


ইয়েমেনে আকস্মিক বন্যায় অন্তত ১২ জনের মৃত্যু। 


নেপালকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতলো বাংলাদেশ।

বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৪

সকাল ৭টার সংবাদ তারিখ: ২৮-০৮-২০২৪ খ্রি:।

 সকাল ৭টার সংবাদ

তারিখ: ২৮-০৮-২০২৪ খ্রি:।


আজকের শিরোনাম:-


দেশে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি, ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত - বন্যায় এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৭।


বাংলাদেশ পুনর্গঠন প্রচেষ্টায় সহযোগিতার জন্য একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিনিধিদল পাঠাবে তুরস্ক - প্রধান উপদেষ্টার সাথে ফোনালাপে জানালেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।


আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারে সার্ক’কে পুনরুজ্জীবিত করার আহ্বান ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের।


আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে রাশিয়া - বললেন ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত।


জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার।


আজ সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে স্বাগতিক নেপালের মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ।

পড়ালেখায় দ্রুত উন্নতি করার ১০টি কার্যকরী টিপস!

 ✅পড়ালেখায় দ্রুত উন্নতি করার ১০টি কার্যকরী টিপস!

১। প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠুন। ফলে আপনি অন্যদের থেকে বেশি সময় পাবেন পড়াশোনার জন্য।


২। প্রতিদিন নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখুন। এটি আপনাকে অন্যদের চেয়ে দিন দিন এগিয়ে নিয়ে যাবে।


৩। আগামীকাল কী পড়বেন তা আগের দিন প্ল্যান করে আলাদা খাতায় লিখে রাখুন এবং পরের দিন সেই প্ল্যান অনুযায়ী পড়ুন। ভাগ ভাগ করে পড়লে পড়তে ভালো লাগবে। (খাতার নাম দিতে পারেন "স্টাডি প্ল্যান খাতা")


৪। প্রতি সপ্তাহ ও মাসে কোন কোন সাবজেক্ট বা বই শেষ করবেন তা প্ল্যান করে খাতায় লিখে রাখুন। এতে করে দ্রুত কোনো বই বা সাবজেক্ট শেষ করতে পারবেন।


৫। কঠিন বিষয়গুলো প্রতিদিন অল্প অল্প করে পড়ুন এবং লিখে লিখে হালকা শব্দ করে পড়ার চেষ্টা করুন। এতে করে কঠিন বিষয়গুলো খুব ভালো করে শেখা হবে এবং বেশি দিন মনে থাকবে।


৬। যে কোনো বিষয়ে কন্সেপ্ট ক্লিয়ার করে পড়ুন। নিজে নিজে না বুঝলে অন্যের সাহায্য নিন। না বুঝে কোনো কিছু মুখস্থ করবেন না এবং পড়ার সময় পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ার চেষ্টা করুন।


৭। মোবাইল, ইন্টারনেট, ফেইসবুক, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, ইমোতে কম সময় ব্যয় করুন। এতে করে আপনার পড়ায় বেশি সময় দিতে পারবেন।


৮। অযথা আড্ডা বা ঘুরাফেরা করে সময় নষ্ট করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আপনার মাথায় খারাপ ও অনর্থক চিন্তা কম আসবে এবং বেশি করে পড়ার সুযোগ পাবেন।


৯। প্রতিদিন আপনার স্বপ্নটাকে অন্তত সকাল, বিকাল, রাতে ঘুমানোর আগে একবার করে স্মরণ করুন। প্রয়োজনে আপনার স্বপ্নটিকে পড়ার টেবিলে উপর লিখে রাখতে পারেন। যেমন- " আমি ডাক্তার হবো, "আমি শিক্ষক হবো"। এটি আপনাকে বেশি বেশি পড়তে উৎসাহ জোগাবে।


১০। নেতিবাচক চিন্তাশীল মানুষদের পরিহার করে চলুন এবং যতটুকু সম্ভব ইতিবাচক চিন্তাশীল মানুষদের সংস্পর্শে থাকার চেষ্টা করুন। এর ফলে করে আপনার ভিতরে ভালো কিছু করার অনুপ্রেরণা জাগবে।


কখনো হতাশ হবেন না। খারাপ সময়ে ধৈর্য ধারণ করে লক্ষ্য ঠিক রেখে পরিশ্রম করে যান।  ভালো ফল পাবেন।


সংগৃহীত 

মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৪

রংপুর নিয়ে কবিতা,,,,,,,,

 রংপুর নিয়ে কবিতা সবাই কে পড়ার জন্য অনুরোধ করা হলো :👇👇


রংপুর হইল বিভাগ হামার, আমি হইলাম

মুই,

আমরা'র বদল হামরা বলি, তুমির বদল তুই।

রোদকে মোরা অইদ বলি, ছায়াকে

বলি

ছ্যায়া,

ছেলেকে চ্যাংড়া  বলি, কেমন মজা

ভায়া।

বাগানকে হামরা ক্ষ্যাত বলি, ভূমিকে

বলি

ভুই,

তামাক হইল তাংকু হামার, সূচ হইল সুই।

মরিচ

হইল আকালি ভাইরে, বেগুন হইল

বাইগোন,

পাটের বদল কোষ্টা বলি, চালুনির বদল

চাইলোন।

উঠান হইল খুলি হামার, জামা হইল

পিরান,

এ্যাতো ব্যস্ত হওছেন ক্যানে, এ্যালা

একনা

জিরান।

অনেক হইল ম্যাল্লারে ভাই, সুপারি হইল

গুয়া,

রক্ত হইল অক্ত হামার, ফাকা হইল ধুয়া।

আসমান হামার দ্যাওয়া বাহে, বৃষ্টি

হইল

ঝড়ি,

কূয়া হইল চুয়া হামার, রশি হইল দড়ি।

স্বামীকে বলি ভাতার হামরা, লুঙ্গি

হইলো

তবন,

বউ হইল মাইয়্যা হামার, ব্রাশ হইল দাতন।

জামা হইল আঙ্গা হামার, ছাদের নাম

চাং,

লাউকে মোরা কদু বলি, মারকে বলি

ডাং ...

আরও মজা আছে বাহে জুরাই যাইবে

পরান,

ধীরে ধীরে যাওছি হামার, অল্প

একনা

অরান।

দাওয়াত দিলে জিয়াপোত বুঝি, বন্যা

মানে

বান,

ক্ষিধা পাইলে ভোক লাগে, চাঁদকে

বলি

চান।

বর্ষা মানে বাইশ্যা হামার, ব্যাড়া

হইল

টাটি,

রংকে মোরা অং বলি, কন্যা যখন

বেটি।

সাদা হইল ধলা বন্ধু, রাস্তা হইল ঘাটা,

আমন

হইল হেউত হামার, শাপলা হইল ভ্যাটা।

রিক্সাওয়ালা মামু হামার,

নিন্দুকেরাও কহে,

রংপুরিয়া ভাষার মত নাইতো মজা

বাহে ❤️


highlight

সকাল ৭টার সংবাদ তারিখ: ২৭-০৮-২০২৪ খ্রি:।

 সকাল ৭টার সংবাদ

তারিখ: ২৭-০৮-২০২৪ খ্রি:।


আজকের শিরোনাম:-


দেশে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত - ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩, ক্ষতিগ্রস্ত ৫৭ লাখের বেশি মানুষ।


সবাইকে বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির - জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এ আহ্বান জানান তিনি।


প্রতিটি নাগরিকের অধিকার সুরক্ষা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব - বললেন প্রধান উপদেষ্টা।


সচিবালয়ে অবরোধ, ভাঙচুর ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আনসার-এর ৩৮৮ সদস্য কারাগারে।


গাজায় ইসরাইলের নতুন কোরে সরে যাওয়ার নির্দেশের ফলে ত্রাণ তৎপরতা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে জাতিসংঘ। 


কাঠমান্ডুতে ভারতকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ - ফাইনালে বাংলাদেশ নেপালের মুখোমুখি হবে আগামীকাল।

সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪

সকাল ৭টার সংবাদ তারিখ: ২৬-০৮-২০২৪ খ্রি:।

 সকাল ৭টার সংবাদ

তারিখ: ২৬-০৮-২০২৪ খ্রি:।


আজকের শিরোনাম:-


ছাত্র-জনতার স্বপ্ন পূরণে বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক নতুন বাংলাদেশ গড়তে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ    - জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া প্রথম ভাষণে দেশবাসীর সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা।


দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরো উন্নতি, ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত - নতুন করে কোনো এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা নেই - জানালেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব।


ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে জাতিসংঘের সহায়তা চাইলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা।


পিলখানা হত্যাকাণ্ডে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের।


সচিবালয় ও প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ।


নানা আয়োজনে দেশে উদযাপন করা হচ্ছে জন্মাষ্টমী - দেশের হিন্দু সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা।


পাকিস্তানে পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৬ জন নিহত।


কাঠমান্ডুতে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ পুরুষ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপের ‍দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ ভারতের মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ।

এই ২০ টি এক্সেল ফর্মুলা সবার আগে শেখা উচিত।

 এক্সেলে নতুন হলে চাকরি, অফিস কিংবা ফ্রিল্যান্সিংয়ে এগিয়ে যেতে চাইলে এই ২০ টি এক্সেল ফর্মুলা সবার আগে শেখা উচিত। এই ফর্মুলাগুলো জানলে এক্সেল...