এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

সোমবার, ৩ মার্চ, ২০২৫

সাত পাকে বাঁধা'র শুটিংয়ে তীব্র আবেগে ফড়ফড় করে ছিঁড়ে দিয়েছিলেন সৌমিত্রের পাঞ্জাবি,তারপর ডিরেক্টরকে বললেন আজ স্বামীর সঙ্গে রাগারাগি হয়েছে,এই ভাবে ছিঁড়ে দিয়েছি ওর পাঞ্জাবিটা!

 'সাত পাকে বাঁধা'র শুটিংয়ে তীব্র আবেগে ফড়ফড় করে ছিঁড়ে দিয়েছিলেন সৌমিত্রের পাঞ্জাবি,তারপর ডিরেক্টরকে বললেন আজ স্বামীর সঙ্গে রাগারাগি হয়েছে,এই ভাবে ছিঁড়ে দিয়েছি ওর পাঞ্জাবিটা!

মিথ নাকি নিছক গপ্প! সত্য, মিথ্যা যাই হোক বাংলা সিনেমায় সুচিত্রা সেন গ্ল্যামারের শেষ কথা,কখনও চিলতে আর প্রাণখোলা হাসির ঝলকে তিনি ঝড় তুলেছেন দর্শক মনে৷ প্রাচ্যের গ্রেটা গার্বো তাঁকে বলা হতো,বোধহয় তিনি যেমন খ্যাতির শিখরে থাকতে থাকতে প্রচারের সার্চলাইট থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন নিজেকে,শত অনুরোধে আর ফেরেন নি রুপোলি পর্দায়৷


৫২/৪/১ বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড হয়ে গিয়েছিল রূপকথার স্বপ্নপুরী৷ কিন্তু ঠিক কেন তিনি গিয়েছিলেন অন্তরালে! আসলে কী খ্যাতি,সৌন্দর্য,কিংবদন্তি হয়েও তিনি চেয়েছিলেন সাধারণ হয়ে থাকতে!আর সেই কারণে কী স্বেচ্ছা নির্বাসন!

১৯৪৭সালে দিবানাথ-সুচিত্রা সেনের বিয়ে,৫৩সালে ছবির জগতে আসেন,৩৫বছরের কেরিয়ারে মোট ছবি ৬০,বাংলা ৫৩,হিন্দি সাতটি৷ তরুনকুমারের স্মৃতিকথা থেকে শুরু করে সর্বত্র প্রকাশিত একের পর এক ছবি যখন হিট করছে তখন সুচিত্রা সেন পারিশ্রমিক বাড়ানোর কথা তুলেছিলেন,এমন কি উত্তমকুমারের মাথায় নাকি তিনি ঢুকিয়ে দেন!


পাঁচের দশকে সুচিত্রার 'বোল্ড'আই মেকআপ বিখ্যাত চোখদুটি কে করে তুলেছিল মোহময়ী,ওই চোখের চাওনিতে কেঁপে যেত আসমুদ্রহিমাচল৷ এই প্রসঙ্গে মনে পড়ছে মাধুরী দীক্ষিতের কথা,তাঁর রূপ,অভিনয়েও কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী কেঁপেছে। তিনি বলছেন তাঁর মা ছিলেন সুচিত্রা সেনের অন্ধ ভক্ত৷ কলকাতায় এক পারিবারিক অনুষ্ঠানে এসে কাউকে না জানিয়ে তিনি চলে গিয়েছিলেন সুচিত্রার নতুন ছবি দেখতে৷

মাধুরী নিজে বলেছেন কলকাতার চিত্র সাংবাদিকরা নাকি তাঁর সঙ্গে সুচিত্রা সেনের মুখের মিল খুঁজে পেতেন, সুচিত্রা সেনের একটি ছবি তিনি হলে গিয়ে দেখেছেন সেটি 'আঁধি'৷টিভিতে দেখেছেন 'বোম্বাই কা বাবু'৷মাধুরীর কথায় সাদা-কালো ছবি,কি অসাধারণ সুন্দরী,তিনি যদি ওই রূপের কণামাত্র পেতেন!


মাধুরী বিনয়ী এভাবে বলেছেন,কিন্তু তিনিও শ্রদ্ধার আসনে রেখেছেন সুচিত্রা সেন কে, বলেছেন কতজন পারে গনগনে সূর্যের তাপে নিজেকে আড়াল করতে?অর্থের গরিমা যেখানে বিশাল ব্যবধানে হেরে গিয়েছে সুচিত্রা সেনের ব্যক্তিত্বের কাছে৷

একটা প্রশ্ন কিন্তু ওঠে, আসলে কি মহানায়িকা শুধুমাত্র পর্দায় রোম্যান্টিক নায়িকা হিসেবে ভালবাসার স্বার্থক রূপায়ন করেছেন?বাংলা চলচ্চিত্রে তাঁর অবদান কী শুধুমাত্র উত্তম-সুচিত্রা জুটি!কিন্তু তথ্য বলছে উত্তমকুমার ছাড়া তাঁর অভিনয় করা ছবিতে সুচিত্রা সেনের অভিনয়ের বিচ্ছুরণ দর্শক,চিত্র সমালোচকরা দেখেছেন,মোহিত হয়েছেন,প্রশংসা করেছেন৷'সাত পাকে বাঁধা',অথবা 'দীপ জ্বেলে যাই',দুটো ছবি সেকথা বলে৷বসন্ত চৌধুরী ছিলেন 'দীপ জ্বেলে যাই'ছবিতে সুচিত্রা সেনের বিপরীতে,আক্ষরিক অর্থে রোম্যান্টিক প্রেমের ছবি নয়,কিন্তু ছবির শেষ দিকে সুচিত্রা সেন পাগল হয়ে ডাক্তারদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন 'বিশ্বাস করুন আমি অভিনয় করিনি.আমি অভিনয় করতে পারি না'৷তবে এটুকু বলতে পারি তিনটি ছবি তিনি করি,করি করেও করে উঠতে পারেন নি, যদি তিনি সত্যজিৎ রায়ের 'দেবী চৌধুরাণী', 'ঘরে-বাইরে', বা পূর্ণেন্দু পত্রীর 'চতুরঙ্গে'অভিনয় করতেন,বলা যায় তাঁর অভিনয় দক্ষতা,ক্ষমতা নিয়ে পর্যালোচনা হত একটু আলাদা মাত্রায়,অন্যভাবে৷ আজ সুচিত্রা সেনের প্রয়াণ দিবসে মহানায়িকাকে আমারা স্মরণ করি।

সংগৃহীত

ধর্ষক রা সাতজন ছিলো বাবা....। আর ওদের মধ্যে একজন কে আমি বিয়ে করতে চাই।।।

 ধর্ষক রা সাতজন ছিলো বাবা....। আর ওদের মধ্যে একজন কে আমি বিয়ে করতে চাই।।।


ওয়াট....??


হ্যা বাবা ঠিকই বলছি আমি।। ওই ছেলেকে বিয়ে আমার করতেই হবে।।।


পুরো পরিবারের লোকজন থ সেজে গেলো আমার কথায়।।। জানি অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে এখন আমায়।।। কিন্তু আজকে কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করবো না আমি।।। কাউকে এ বিষয়ে কোনো কইফিয়তও দিতে প্রস্তুত না আমি।।। আর এ কথাটি জোরেই বলে ফেললাম সবার সামনে। তারপর মজলিস থেকে ওঠে আমার ঘরে চলে গেলাম।।


(বিঃ দ্রঃ “ রম্য কাহিনী/ গল্প" গল্পের সবগুলো পর্ব একসাথে পেতে এখানে ক্লিক করুন)আজকে নিজের মধ্যে একটা প্রশস্তি অনুভব করছি।। সবার সামনে এ রকমভাবে কথা বলতে পেরে খুব ভালো ফিল করছি আমি।। এই প্রথম আমার পরিবারের সামনে এমন উচু গলায় কথা বললাম।। আর এ নিয়ে আমার ভেতর কোনো অনুতপ্ততা কাজ করছে না।।। বরং মনে হচ্ছে আরো আঘাত দিয়ে কথাগুলো বলা উচিত ছিলো।।।


সম্ভ্রান্ত এক বড় পরিবারে জন্ম আমার।। বলতে গেলে সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছি আমি।। কখনও কোনো ব্যাপারে আমার চাওয়া, না পাওয়া ওয়ে ওঠেনি।। আর পরিবারের আদর সেতো আর বলে বোঝাবার মতো নয়।।


আমার সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তিত্ব আমার বাবা।। উনার রাজকীয় চলাফেরা, সবার সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া সবই তার রাজকীয় চলাফেরার প্রতীক বহন করে।। এতসবকিছুর মাঝেও তিনি তার মেয়েকে সময় দিতেও এতটুকু ভুল করে না। আর আমার চাওয়াকে তো নিমিষেই মিটিয়ে দিতো বাবা।। তাইতো আমার কাছে বাবার জনপ্রিয়তা সবার তুঙ্গে।।


কিন্তু এত প্রভাবশালীতার মাঝেও আমার সাথে এ রকম এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে, তা কেউ কখনও স্বপ্নেও ভাবেনি।। এমনকি কারো সাথে ব্যক্তি গত শত্রু তাও ছিলো না আমার বা আমার পরিবারের।


যদিও ব্যাপারটা আমার পরিবারের বাইরে কেউ জানে না।। কিন্তু জানতেই বা কতদিন??


আর এই চিন্তা নিয়েই আমার পরিবারের এত মাথাব্যথা।। তাইতো আমাকে ফিরে পেতেই সবার এমন ঘোট পাকিয়ে প্রশ্নউত্তর পর্ব চললো বেশ কিছুক্ষণ।


কিন্তু আমার কঠিন থেকে কঠিনতম কথার ব্যাড়াজালে সবাই যে হতবাক, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।।


এই তিনদিন আমার পরিবার আমাকে হন্নে হয়ে খুজেছে।। কিন্তু কোনো খোজ মিলাতে পারেনি।।


তাইতো আমার কাছ থেকে বারবার জানার চেষ্টা করছে আমি ওদের কাউকে চিনতে পেরেছি কিনা??


আমি জানি না ওদের পেলে কি করবে আমার


পরিবার?? তবে আমি নিশ্চিত এতবড় ঘটনা, এমনিতেই


আমার পরিবার ছেড়ে কথা বলবে না কাউকে খুজে পেলে।। এরমধ্যে আমার বলা কথাটা তাদেরকে আরো


পুড়িয়ে মারছে।। একে একে সবারই একটাই প্রশ্ন, আমি কেনো এরকম ঘটনার পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে


চাচ্ছি?? রংধনুর রং !


তখনো ঘরের দরজা বন্ধ করেই বসে আছি।


বারবার বাড়ির লোকের জ্বালাতন আর ভালো লাগছে না।।


তাই তো চিৎকার করে মাকে বললাম প্লিজ আমাকে একা থাকতে দাও মা।। তারপর অবশ্য আর কেউ আসে নি।। আমি জানালার পাশে বসে আছি।। সূর্যের প্রখর তাপ প্রায় নিঃশেষ হয়ে এসেছে।। আকাশে লাল নীলিমার রেখা ফুটে ওঠেছে।। জানালাটা আরেকটু খুলে দিলাম।। চোখের কোনে লেপ্টে থাকা জলবিন্দু ওরনা দিয়ে হালকা মুছে নিলাম।। উদাস মনে আকাশের পরিবর্তনের দৃশ্যটা উপভোগ করছিলাম ভাংগা হৃদয়ে এতটুকু আশা জাগানোর নেশায়।।ওরা সাতজন ছিলো।। ভার্সিটির ক্লাস শেষ করে নির্জনে বাড়ি ফিরছিলাম শহরের রাস্তা বেয়ে।


আমার পছন্দের ব্রীজের ওপর আসতেই একটা কার আমাকে নিস্তব্ধ ভাবে তুলে নিলো।। তারপর আমার স্মৃতির পাতা জ্ঞান শূন্য হয়ে আসছিলো।। যখন সজ্ঞানে ফিরে এলাম, তখন নিজেকে অচেনা রুমে আবিষ্কার করলাম।। খুব ভয় লাগছিলো আমার।। ভয়ে চিৎকার করে ওঠলাম, কিন্তু ফিরতি প্রতিধ্বনি আরো ভয়ানক ভাবে ধরা দিলো আমার কানে।। মনে হলো এ স্থান জনশূন্যতার আধারে ভরে আছে।।


আমি গুটিশুটি মেরে ঘরের এক কোনে নিজেকে লুকিয়ে রাখলাম।। কিছুক্ষন পর দরজা খোলার আওয়াজে আরো ভীত সন্তপ্ত হয়ে পড়লাম।।


কয়েকজন যুবক ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে রুমে প্রবেশ করলো।।


আর অদ্ভুত চাহনি নিয়ে আমার দিকে

তাকিয়ে ছিলো। যেনো ক্ষুধার্ত হায়েনার সামনে একখন্ড মাংসপিণ্ড।।


আমি ভয়ে নিজেকে আরো জড়িয়ে নিলাম।। আর বললাম


কে আপনারা প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন।।। আমার কথায় তারা রাজ্য জয়ের হাসি দিয়ে লুটিয়ে


পড়তে লাগলো।।


হঠাৎ ই কারো পায়ের আওয়াজে থমকে দাড়ালো ওরা।। একদম নিশ্চুপ ভঙ্গিতে দাড়িয়ে গেলো।।। আমিও কিছুটা বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকলাম।।।। !


বেশ সুদর্শন এক লম্বা পুরুষ, মাথার ঝাকরা চুলগুলো ঠিক করতে করতে রুমে প্রবেশ করলো।। ওকে দেখে সবাই সরে দাড়ালো এবং সালাম দিলো।। বুঝলাম ইনি এদের

পালের গোদা।। রুমে ঢুকে বেশ কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো।। তারপর উষ্ণ হাসি দিয়ে চুল ঠিক করতে করতে আমার সামনে এসে বসলো।। আমি চরম ভীত সন্তপ্ত হয়ে পড়লাম।। আমার থুথনিতে হাত দিয়ে চোখটা তুলে ধরে বললো


বাহ্ খুব সুন্দর হয়েছে তো তুমি ...!! ঘৃনা, রাগ, ভয় তিনটাই চরম আকার ধারন করলো আমার মনে।।। খুব শান্ত ভীত হয়ে


একবার শুধু বললাম কে আপনি?? আর আমাকে এভাবে ধরে এনেছেন কেনো?? প্লিজ ছেড়ে দিন।।


কিছু না বলে ছেলেটি উঠে দাড়ালো।। পেছন ফিরে ওদের জিজ্ঞেস করলো,, খেতে দিয়েছিস ওকে।।।


ওদের মধ্যে একজন বলে ওঠলো – দেমাগ দেখিয়ে খায়নি বড় ভাই।।।কথাটি শুনে হাসি দিয়ে আবার আমার কাছে এসে গালে আলতো করে ছুয়ে বললো


রাগ দেখাতে নেই।। খেয়ে নাও।। আমি তখন ক্রোধে আরেকবার বলে ওঠলাম


আমায় ছেড়ে দে বলছি, আমার বাবা জানতে পারলে তোদের একজনকেও বাচিয়ে রাখবে না।।।


ছেলেটি দাড়াতে যাচ্ছিল, কিন্তু আমার কথা শুনে রাগে তার চোখগুলো নিমিষেই লাল হয়ে গেলো।


আমার দিকে ভয়ানক রাগি চোখে তাকিয়ে খাবারের প্লেটটা ছুড়ে মারলো আর বললো


-কি বললি আরেকবার বল?? তোর বাবার এত দম .....?? এই


একে এখুনি বুঝিয়ে দেয় ওকে কেনো এখানে আনা হয়েছে।।। ওর বাবার কলিজার মতো মেয়ের এমন হাল


করবি যেনো কোথাও মুখ দেখাতে না পারে

বলেই চলে যাচ্ছিলো!!


তারপর....


wait for next part........

Follow.. Najrul Islam Akash

নায়ক সালমান শাহ্‌ ও নায়িকা মৌসুমী একই সিনেমা দিয়ে একই সালে আসেন। 

 নায়ক সালমান শাহ্‌ ও নায়িকা মৌসুমী একই সিনেমা দিয়ে একই সালে আসেন। সে অনুযায়ী ১৯৯৬ সাল ছিল দুইজনের ক্যারিয়ারেরই ৪র্থ বছর। এ বছর সালমান শাহ্‌ এর মোট ৯ টি সিনেমা মুক্তি পায়। অন্যদিকে নায়িকা মৌসুমীর মুক্তি পায় ১১ টি সিনেমা। মৌসুমীর মুক্তি পাওয়া সেই ১১ সিনেমা ছিল-  ১.রাক্ষস ২.শয়তান মানুষ ৩.ফাঁসির আসামী ৪.ঘাত প্রতিঘাত ৫.পাপের শাস্তি ৬.সুখের স্বর্গ ৭.স্বজন ৮. হারানোর প্রেম ৯.বাঘিনী কন্যা ১০. আত্মত্যাগ ১১.গরিবের রানি।

এই ১১ সিনেমার মধ্যে অর্ধেকের বেশি মানে ৬ টাতেই নায়িকা মৌসুমী ছিল গুরুত্বহীন বা কোনোটাতে দ্বিতীয় নায়িকা। আবার কোনোটাতে দ্বিতীয় নায়িকারও যে গুরুত্ব বা উপস্থিতি থাকে সেটাও ছিল না। পাশাপাশি উক্ত সিনেমাগুলোর গান দিয়েও আলোর ছিটেফোঁটা পায়নি। এদিকে বাকি যে ৫টা ছিল সেসবেও ২/৩ টা ছাড়া বাকিগুলোতে সে গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। তবে হ্যাঁ, এ পাঁচটাতে সেই প্রধান নায়িকা ছিল।


আসলে প্রথম সিনেমার সাফল্য এবং প্রেসদের একতরফা সুপ্রচার পাবার পরেও যদি ক্যারিয়ারের ৪র্থ বছরেই সিনেমাতে তার চরিত্রের এ অবস্থা হয় তখন তাকে কি বলা যায়? অথচ এ সব সিনেমা ছিল তার বিয়ের আগে সাইন করা। মানে বিয়ের আগেই তার সিনেমা বাছাই ও চরিত্রের গুরুত্ব এমনটি ছিল। তবুও কারণে-অকারণে প্রেসরা মৌসুমীকে নির্লজ্জের মত সুপ্রচার দিয়ে গেছিল। যার বিন্দুমাত্র কারন ছিল না। হ্যাঁ, এ সময়টাতে মৌসুমীর বেশ ভাল জনপ্রিয়তা ছিল, শুধু এটার জন্যই সেসময়ের ম্যাগাজিনগুলো তাদের নির্লজ্জতা চালিয়ে গিয়েছিল। অথচ সিনেমাতে সে সময়েও তার উপস্থিতি বেশিরভাগ মূল্যহীন ছিল। যা অতীত সময়ে আর কোনো তারকার ক্ষেত্রে ঘটেনি। এমন ক্রেজ পাওয়া তারকার ক্ষেত্রে তো অবশ্যই না।


অন্যদিকে একই বছরে আসা সালমান শাহ্‌ এর মুক্তি পাওয়া ৯ সিনেমা ছবিতেই সংযুক্ত করা আছে। সিনেমাগুলোর দিকে চোখ দিলেই বুঝা যাচ্ছে সালমান তার ক্যারিয়ারের কাজের ব্যাপারে কতটা সচেতন ছিল। তার মুক্তি পাওয়া এই ৯ সিনেমার সবগুলোতেই সালমান ছিল প্রধান হিরো। অথচ তখন তারকাবহুল সিনেমার যুগ চলছিলো। যদিও সালমান অভিনীত এই ৯ সিনেমার মধ্যেও কিছু তারকাবহুল সিনেমা ছিল। কিন্তু তারপরেও সেসব সিনেমাতে নায়ক চরিত্রে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রটা ওই সালমানেরই ছিল।

পাশাপাশি প্রায় সবগুলো সিনেমার নামও খুব সুন্দর ছিল। বাণিজ্যিক চটকদার নাম বলতে শুধু, সত্যের মৃত্যু নেই আর মায়ের অধিকারই যা। বাকি সবগুলোই সহজ,সরল এবং প্রাঞ্জল ছিল। চটুল কোনো বাণিজ্যিক নাম ছিল না।

চরিত্রের বিচারে বা গুরুত্বে তোমাকে চাই,স্বপ্নের পৃথিবী,বিচার হবে,জীবন সংসার, প্রিয়জন,চাওয়া থেকে পাওয়াতে সে গল্পের নায়িকার নায়ক। যার সবগুলোতেই সালমান ছিল উজ্জ্বল। একমাত্র চাওয়া থেকে পাওয়া,প্রিয়জন সিনেমার গল্পই সাদামাটা ছিল। তবে উক্ত সিনেমাদ্বয় সাদামাটা হলেও স্মার্ট উপস্থাপনের জন্য বিশেষ ছিল। 

বাকি সিনেমাগুলোর মধ্যে মায়ের অধিকারে তো সালমানই সব। আর সত্যের মৃত্যু নেই এর গল্পতে সত্য মিথ্যার খেলা তো  তারা মা-ছেলেই খেলেছে। আসলে নায়িকা শাবানার সাথে সালমানের এটা তৃতীয় কাজ। এর আগে তার সাথে কন্যা দান ও স্নেহ করে। সেখানেও তাদের মা-ছেলের স্নেহ পাওয়া না পাওয়া নিয়ে গল্প আগায়। আর কন্যাদানেও কন্যা দেয়া-নেয়া করে তারা দুইজন (যদিও এখানে আলমগীর ও লীমাও সমান গুরুত্বপূর্ণ ছিল)।

যাইহোক, সবশেষে রইল এই ঘর এই সংসার। সেখানেও সালমানের গুরুত্ব ও অভিনয় চমৎকার ছিল। উক্ত সিনেমাতে তমালিকা অত্যন্ত ভাল করার পরেও সালমান শাহ্‌ গুরুত্ব ও অভিনয়ে কোনটাতেই ম্লান হবার সুযোগ রাখেনি।


এই ছিল একই সাথে আসা দুই নায়ক-নায়িকার ১৯৯৬ সালের ব্যবচ্ছেদ। উক্ত বছরেও এতো সুন্দর ক্যারিয়ার সালমান পার করার পরেও প্রেসদের এতোটুকু সুপ্রচার সে পায়নি। বরং বিভিন্ন নিউজে এ বছর তাকে নায়িকা নির্ভর বানিয়ে দিয়ে বিভিন্ন লেখা প্রচার করা হয়। অন্যদিকে নায়িকা মৌসুমী এতো বাজে ও গুরুত্বহীন বিভিন্ন সিনেমা নিয়ে বছর পার করার পরেও একের পর এক সুপ্রচার পেয়ে গেছে। কিন্তু তাদের এ সুপ্রচার দর্শক সমাজে কখনোই মৌসুমীর জন্য সুফলতা বয়ে আনেনি।

আর আনবেই কিভাবে?

ক্যারিয়ারের ৪র্থ বছরেই যদি কোনো তারকার সিনেমার অবস্থা এই হয় তাহলে কিভাবে দর্শক তাকে গ্রহণ করবে বা প্রিয়তে রাখবে? যার জন্যই এ বছর থেকে মৌসুমী যে পিছিয়ে পড়ে আর কখনো কোনো দিন আগাতে পারেনি বা এগিয়ে আসেনি। হ্যাঁ, এমন গুরুত্বহীন অসংখ্য সিনেমার কল্যাণে নায়িকাদের লিস্টে জায়গা পেয়েছে বা লেখকরা দিয়ে গেছে। কিন্তু শীর্ষ নায়িকা বা সবার প্রথম পছন্দ আর সে হতে পারেনি।


যেদিন রোজ হাশরে করতে বিচার তুমি হবে কাজী,,,,,কাজী নজরুল ইসলাম🌷 দেদেহ পরিশুদ্ধ

 যেদিন রোজ হাশরে করতে বিচার

তুমি হবে কাজী

সেদিন তোমার দিদার আমি

পাব কি আল্লাহজী?

যেদিন রোজ হাশরে...


সেদিন নাকি তোমার ভীষণ কাহার রূপ দেখে

পীর পয়গাম্বর কাঁদবে ভয়ে "ইয়া নাফসি" ডেকে

সেই সুদিনের আশায় আমি নাচি এখন থেকে

আমি তোমায় দেখে হাজার বার

দোজখ যেতে রাজী

আল্লাহ, তোমায় দেখে হাজার বার

দোজখ যেতে রাজী

যেদিন রোজ হাশরে,,,,


যে রূপে হোক বারেক যদি দেখে তোমায় কেহ

দোজখ কি আর ছুঁতে পারে পবিত্র তার দেহ?

সে হোক না কেন হাজার পাপী

হোক না বে-নামাজী

যেদিন রোজ হাশরে,,,,


ইয়া আল্লাহ, তোমার দয়া কত

তাই দেখাবে বলে

রোজ হাশরে দেখা দেবে

বিচার করার ছলে

প্রেমিক বিনে কে বুঝিবে

তোমার এ কারসাজি

যেদিন রোজ হাশরে করতে বিচার

তুমি হবে কাজী

সেদিন তোমার দিদার আমি

পাব কি আল্লাহজী?

যেদিন রোজ হাশরে করতে বিচার

তুমি হবে কাজী


🌷কাজী নজরুল ইসলাম🌷

দেদেহ পরিশুদ্ধ

শিল্পী নাহিদ নিয়াজী,,,,,

 শিল্পী নাহিদ নিয়াজী

---------------------------------------------------

নাম তাঁর নাহিদ মুসলে উদ্দিন। তবে তিনি নাহিদ নিয়াজী নামেই সমধিক পরিচিত।


তিনি পাকিস্তানের বিশিষ্ট কবি সাজ্জাদ সারোয়ার নিয়াজীর মেয়ে আর বাংলাদেশি সঙ্গীতজ্ঞ, সুরকার, গীতিকার মুসলে উদ্দিনের স্ত্রী।


জন্মেছিলেন ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৪১ সালে লাহোরে। 


এদেশের ছায়াছবিতে বাংলায় তাঁর কিছু গাওয়া গান নিয়ে এই আসরে আমার সামান্য কিছু লেখার প্রয়াস। 


'আকাশের ঐ মিটিমিটি তারার সাথে কইবো কথা' মুসলে উদ্দিনের লেখা ও সুর করা এই গানটি ষাটের দশকে তাঁকে রাতারাতি তারকাখ্যাতি এনে দেয়।


জনাব মুসলে উদ্দিনের লেখা ও সুর করা সেই সময়ের আরেক সুপার ডুপার আধুনিক মৌলিক হিট গান 'ওগো সোনার মেয়ে যাও গো শুনে' তাঁরা দ্বৈতকণ্ঠে গেয়েছিলেন সেই ষাটের দশকের শুরুতে।


নাহিদ নিয়াজীর আরেকটি মাস্টারপিস হলো 'নতুন নামে ডাকো আমায়।' 


এই গানটির কথা লিখেছেন– আহমেদ জামান চৌধুরী ও সুর করেছেন– আলী হোসেন সাহেব। ছবির নাম 'নতুন নামে ডাকো।'


সরকার কবিরউদ্দিন, সুচন্দা, আনিস, বেবী জামান ও অন্যান্য কলাকুশলী অভিনীত ১০ মার্চ ১৯৬৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবির পরিচালক ছিলেন মমতাজ আলী।


সিকান্দর আবু জাফরের লেখা ও আলতাফ মাহমুদের সুর করা 'আপন দুলাল' ছবিতে তাঁর শ্রুতিমধুর গান 'সখা হে তোমার সাথে আজ আমার নতুন খেলা'।


এছাড়াও তিনি নেপথ্য কন্ঠদান করেছেন ইন্ধন, শীতবসন্ত, নয়া জিন্দেগী, তানসেন প্রভৃতি চলচ্চিত্রে। আধুনিক গানও গেয়েছেন নাহিদ নিয়াজী।


কিছুদিন আগে এক টেলিভিশন স্বাক্ষাতকারে তিনি প্রয়াত স্বামী মুসলে উদ্দিন ও বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলতে বলতে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।


জনাব মুসলে উদ্দিন বাংলার বধু নাহিদ নিয়াজীকে নিয়ে অনেক আগেই ইংল্যান্ডে স্থায়ী হয়েছিলেন।


৭১'র মুক্তিযুদ্ধের আগে পাকিস্তান সরকারের সর্বোচ্চ সন্মানে ভূষিত জনাব মুসলে উদ্দিন ২০০৩ সালে মারা যান।


নাহিদ নিয়াজী বর্তমানে সন্তানদের নিয়ে বার্মিংহামেই আছেন।


তাঁর জন্য রইল শুভ কামনা।

অসাধারণ একজন বাবার অসাধারণ চিন্তা ধারার গল্প! """

 অসাধারণ একজন বাবার অসাধারণ চিন্তা ধারার গল্প!

"""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""

এক কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার সঙ্গে আজ আলাপ হলো। ভদ্রলোক অটোচালক। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়ে পাস করেছিলেন। কিন্তু সংসারের চাপে আর পড়াশোনা করা সম্ভব হয়নি। ভদ্রলোকের গায়ের রং বেশ কালো। লম্বা চেহারা, মাথায় সাদার থেকে কালো চুলের আধিক্য বেশি। সস্তার জামা-প্যান্ট পরেছিলেন, কিন্তু বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। 

গল্প করতে করতেই জানতে পারলাম, ভদ্রলোকের এক মেয়ে। মেয়ে বি এড কমপ্লিট করে চাকরির পরীক্ষায় বসছে। 

ভদ্রলোক হেসে বললেন, আমার মা যখন আমার বিয়ে দিয়েছিলেন তখন ফর্সা বউ এনেছিলেন। তার কারণ নাতি-নাতনি যাই হোক সে যেন ফর্সা হয়। কিন্তু আমার মায়ের সে ইচ্ছেতে জল ঢেলে দিয়ে আমার কন্যা আমার গায়ের রং পেলো। আমিও আদর করে তার নাম দিলাম কৃষ্ণকলি। 

মেয়ে আমার সব কাজে পারদর্শী। লেখাপড়াতেও খুব ভালো। 

ভদ্রলোক বললেন, মেয়ের বিয়ের জন্য পাত্র খুঁজছি। গায়ের রং কালো বলে তেমন মনের মত পাত্র পাচ্ছিও না। 

আমার মনে হলো, এই হোলো আমাদের সমস্যা। চামড়ার মেলানিনের পরিমাণের হেরফেরে সমস্ত গুন চাপা পড়ে গিয়ে সে হয়ে যাবে কম দামি। সহানুভূতির গলায় বললাম, চিন্তা করবেন না। আপনার মেয়ের এত গুন, ওর খুব ভালো বিয়ে হবে। দুমিনিট কথা বলার পরে অবশ্য বুঝলাম, উনি কারোর সহানুভূতি চান না। 

ভদ্রলোক একটু হেসে বললেন, আসলে ওর একটা খুব ভালো সম্বন্ধ এসেছিল। বিয়ে ফাইনাল হয়ে গিয়েছিল। পাত্র সরকারি চাকরি করে। দেখতে শুনতে ভালো, ভালো ফ্যামিলি ওদের। 

কিন্তু আমিই ভেঙে দিলাম বিয়েটা। 

আমি অপ্রস্তুত হয়ে বললাম, মানে কেন ভেঙে দিলেন? অনেক পণ চেয়েছিল নাকি?

ভদ্রলোক ঘাড় নেড়ে বললেন, না। এক পয়সাও নিতো না। 

আমি বিস্মিত হয়ে বললাম, তাহলে?

ভদ্রলোক আমাকে চূড়ান্ত চমকে দিয়ে বললেন, আমার মেয়ে প্রতি মুহূর্তে অপমানিত হচ্ছিলো তাই।

আমি কিছুই না বুঝে বললাম, বুঝতে পারছি না দাদা। 

ভদ্রলোক আক্ষেপের গলায় বললেন, আত্মীয়- স্বজন দিনরাত আমার কলিকে বলছিলো, তুই খুব ভাগ্যবতী, তুই খুব লাকি যে তোর অমন ফর্সা, সুদর্শন ছেলের সঙ্গে বিয়ে হচ্ছে। 

ছেলের বাড়ির দিকের আত্মীয়রাও নাকি বলেছে, তুমি খুব লাকি কৃষ্ণকলি , নাহলে তোমার এমন গায়ের রঙে অমন ছেলে পাওয়া দুষ্কর। 

মেয়ে সেদিন প্রায় কাঁদো কাঁদো হয়ে আমার কাছে এসে বললো, বাবা আমি এতটা ভাগ্যবতী হতে চাইনি। ছেলেও নাকি মেয়েকে ফোন করে বলেছে, কেমন লাগছে তোমার আমার সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়ে? নিজেকে নিশ্চয়ই খুব লাকি মনে হচ্ছে!

এসব কথা শুনেই আমি ভেবে দেখলাম, আমার মেয়ে তার কপালের ভার নিজেই বইতে পারবে। এতটা ভাগ্যবতী হতে হবে না তাকে লোকের দয়ায়। 

তাই বাড়ির সকলের অমতে গিয়েই আমি বিয়েটা ভেঙে দিলাম। যাদের মনে হবে, বিয়ে করে আমার মেয়েকে ভাগ্য ফিরিয়ে দিচ্ছে না, তাদের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেব। ভাগ্যবতী শব্দের ভার বহন করার দরকার নেই কলির। 

যদি চাকরি পায় ভালো, নাহলে আরেকটা অটো কিনে দেব, ও চালাবে। নিজের ভাগ্য নিজে তৈরি করবে। কারোর দয়া লাগবে না ওর। 

আমি অভিভূত হয়ে দেখছিলাম ভদ্রলোককে। বললাম, তো বিয়েটা ভেঙে দেবার পরে আপনার মেয়ের কি বক্তব্য?

ভদ্রলোক বললেন, মেয়ে আমার কানে কানে বলেছে, আমার বাবা বেস্ট। ভদ্রলোক বললেন, আরে ওর গায়ের রং আমার মতন, ভাবনাও আমার মতনই হবে না! লোকে আমাকে বলছে.. কন্যাদায়গ্রস্ত বাবার নাকি এত তেজ ভালো নয়! আমি বলেছি, কন্যা আমার কাছে দায় নয়, আমার অহংকার।

অকারণে লোকের করুণার পাত্রী হতে যাবে কেন? কি নেই ওর? সব আছে ওর। আমি ওকে সবটুকু দিয়ে মানুষ করেছি। কোনো অবহেলা পায়নি ও কোনোদিন। 

আমি বললাম, বিশেষ করে ওর এমন বাবা আছে। 

সত্যি বলতে কি ওই অদেখা কৃষ্ণকলির আদরে ভাগ বসাতে খুব ইচ্ছে করছিল। 

কৃষ্ণকলিরা এভাবেই মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। কারোর দয়ায় সৌভাগ্যবতী না হয়ে, নিজের চেষ্টায় নিজের পরিচয় গড়ে নিক।

সংগৃহীত পোস্ট।❤️❤️❤️❤️❤️❤️

ও আমার বন্ধু গো চিরসাথী পথ চলা,তোমার ই জন্য গড়েছি  আমি মঞ্জিল ভালোবাসা'......

 'ও আমার বন্ধু গো চিরসাথী পথ চলা,তোমার ই জন্য গড়েছি  আমি মঞ্জিল ভালোবাসা'......

 ১৯৯৩ সালের সাড়া জাগানো 'কেয়ামত থেকে কেয়ামত' সিনেমায় অভিনয় করে আপামর দর্শকদের বিমোহিত করেছিলেন নবাগত সালমান শাহ ও মৌসুমী। এই ছবিতেই কন্ঠ সম্রাজ্ঞী রুনা লায়লার সাথে প্লেব্যাকে অভিষেক ঘটে এক তরুণ গায়কের, প্রথম প্লেব্যাকেই বাজিমাৎ। বাংলা সিনেমার গানের জগতে প্রবেশ করলো তারুণ্য যুগ, পরবর্তীতে বেশ কয়েক বছর ধরে প্লেব্যাকে সমধুর কন্ঠে দর্শকদের মুগ্ধ করা এই গায়ক হচ্ছেন আমাদের সবার সুপরিচিত কন্ঠশিল্পী 'আগুন'।


'আমার স্বপ্নগুলো কেন এমন মনে হয়, মনটা কেন বারবার ভেঙ্গে যায়', প্রয়াত  আইয়ুব বাচ্চুর সুরে নিজের লিখা ও কন্ঠে 'কত দু:খে আছি' এলব্যামের এই গানটি গেয়ে নিজের প্রতিভার আরেকবার জানান দিয়েছিলেন তিনি। আধুনিক গানের ইতিহাসে এই গানটি এক ভিন্নমাত্রা যোগ করেছিল।


একাত্তরের মা জননী কিংবা 'পৃথিবীতে সুখ বলে যদি কিছু থেকে থাকে', সিনেমার এই গান গুলো  জায়গা করে নিয়েছে কালজয়ী গানের তালিকায়। প্রথম সিনেমার দারুন সাফল্যের পরেই সালমান শাহর সাথে বেশ জনপ্রিয় জুটি তৈরি হয়। অন্তরে অন্তরে, তুমি আমার, বিক্ষোভ, সুজন সখি, জীবন সংসার সহ সালমানের প্রায় সব ছবিতেই তিনি বেশ কয়েকটি গান করেন।


'মাথায় পড়েছি সাদা ক্যাপ, হাতে আছে অজানা এক রঙিন ম্যাপ', হুমায়ূন আহমেদের 'দুই দুয়ারী' সিনেমার এক অবিস্মরণীয় গান এটি। আগুন জাতীয় পুরস্কার এই গান দিয়েই পেতে পারতেন কিন্তু পান নি। রিয়াজের লিপেই হৃদয়ের আয়না সিনেমার  'কেন আঁখি ছলছল' গানটাও বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। 'মোর প্রিয়া হবে রানী দেবো খোঁপায় তারার ফুল' এর মত ক্ল্যাসিক নজরুল গীতি নিজের কন্ঠের মাধুর্যতায় আপন করে নিয়েছেন। এছাড়া পাগল মন সিনেমার গানগুলো দর্শকমহলে বেশ সাড়া পায়। 


'ও আমার জন্মভূমি' এখনো অনেক রাত সিনেমার এই গানের জন্য বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন। এই সিনেমাতেই তিনি প্রথম অভিনয় করেন। পরবর্তীতে ঘেটুপুত্র কমলা, ৭১ এর মা জননী, অমি ও আইসক্রিমওয়ালা ছবিতে অভিনয় করেন। এছাড়া জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক 'রঙের মানুষ' সহ অনেক নাটকেই অভিনয় করেছেন। 


'পুত কইরা দিমু আমি পুত কইরা দিমু' ডিপজলের লিপে এরকম গান গেয়ে সমালোচিতও হয়েছেন। পরপর বেশ কয়েকটা এইরকম গানে কন্ঠ দিয়ে এক সময় গ্রহণযোগ্যতা কমে যেতে থাকে, আর নিজেও অনিয়মিত হয়ে পড়েন প্লেব্যাক থেকে।


বিখ্যাত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব খান আতাউর রহমান ও কন্ঠশিল্পী নীলুফার ইয়াসমিন দম্পতির একমাত্র ছেলে তিনি, কিংবদন্তি গায়িকা সাবিনা ইয়াসমিন সম্পর্কে আপন খালা হন, আর রুমানা ইসলাম বোন হন। ছোটবেলা থেকেই সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে পরিচিত ছিলেন। আশির দশকের শেষে 'স্যাডেন' ব্যান্ডে যুক্ত হন, বছর পাঁচেক পর আবার ছেড়েও দেন। এখন পর্যন্ত ১৩টি এলব্যাম বেরিয়েছে, রবীন্দ্র সঙ্গীত ও গেয়েছেন। বাংলা সিনেমার গানের জগত থেকে ছিটকে পড়া এই গায়ক নিয়ে অনেকেরই আছে আক্ষেপ, আফসোস। 


ছবিতে নব্বই দশকে একটা কনসার্টে গান শোনাচ্ছেন আগুন।


কার্টেসী: হৃদয় সাহা/ বাংলাদেশের দুষ্প্রাপ্য ছবি সমগ্র


#bdcs #agun #musician #banglahitsong #1990s #itihaserkhojegiridhar #giridhardey #ইতিহাসেরখোঁজেগিরিধর #বাংলাদেশের_দুষ্প্রাপ্য_ছবি_সমগ্র

দ্য আলকেমিস্ট বই থেকে ১০টি শিক্ষা

 **দ্য আলকেমিস্ট বই থেকে ১০টি শিক্ষা**  


পাওলো কোয়েলহোর বিখ্যাত বই **"দ্য আলকেমিস্ট"** শুধুমাত্র একটি গল্প নয়, বরং জীবনের গভীর শিক্ষা ও অনুপ্রেরণার এক অনন্য সৃষ্টি। এটি আমাদের স্বপ্নকে অনুসরণ করার, জীবনের চ্যালেঞ্জগুলোকে সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করার এবং আত্ম-উন্নতির পথ প্রদর্শন করে। নিচে বইটির গুরুত্বপূর্ণ দশটি শিক্ষা নিয়ে আলোচনা করা হলো:  


### ১. **নিজের স্বপ্নকে অনুসরণ করা**  

জীবনে সফল হতে হলে অবশ্যই নিজের স্বপ্নকে অনুসরণ করতে হবে। বইয়ের প্রধান চরিত্র সান্তিয়াগো তার স্বপ্নপূরণে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে, তবুও সে নিজের লক্ষ্য থেকে সরে আসেনি। এতে বোঝা যায়, স্বাচ্ছন্দ্য ছেড়ে বেরিয়ে আসা এবং সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া জীবনের আসল সাফল্যের চাবিকাঠি।  


### ২. **হৃদয়ের কথা শোনা**  

বইটি শেখায়, নিজের হৃদয়ের কথাই সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাওয়া উচিত। চলার পথে অন্যদের পরামর্শ মূল্যবান হতে পারে, তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নিজের মনের কথা শুনতে হবে। কারণ, নিজের হৃদয়ই জানে প্রকৃতপক্ষে কী চাই।  


### ৩. **আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে বাস্তবতা মেলানো**  

আধ্যাত্মিকতা ও বাস্তবতার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে পারলে জীবনের অর্থ আরও গভীর হয়। বইটি মনে করিয়ে দেয়, পৃথিবীর অনেক বড় অর্জন সম্ভব হয়েছে কারণ মানুষ নিজেদের সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করেছে এবং আধ্যাত্মিক চিন্তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছে।  


### ৪. **ভয়কে জয় করা**  

ভয় মানুষের উন্নতির প্রধান বাধা। সান্তিয়াগোর যাত্রায় দেখা যায়, ভয়কে জয় করেই জীবনের লক্ষ্য পূরণ সম্ভব। ব্যর্থতার ভয়কে পিছনে ফেলে সাহস নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা বইটি খুব সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করে।  


### ৫. **অধ্যবসায়ের শক্তি**  

সাফল্যের জন্য অধ্যবসায় অপরিহার্য। সান্তিয়াগোর অটল অধ্যবসায় ও ধৈর্য তাকে তার স্বপ্নের ধনভাণ্ডার পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছে। জীবনে কোনো লক্ষ্য অর্জন করতে হলে স্থির লক্ষ্য নিয়ে বারবার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।  


### ৬. **ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া**  

ভুল হওয়া মানে হেরে যাওয়া নয়। বরং প্রতিটি ভুল শেখার একটি সুযোগ। সান্তিয়াগো তার ভুলগুলোকে শিক্ষায় পরিণত করে আরও দৃঢ়ভাবে এগিয়ে গেছে। বইটি শেখায়, ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া স্বপ্নপূরণের পথে একটি বড় ধাপ।  


### ৭. **সত্যকে গ্রহণ করা**  

সত্য যত কঠিনই হোক, সেটিকে মেনে নেওয়ার মানসিকতা থাকা উচিত। বইটির ভাষায়, "সত্যিকারের কোনো কিছু কখনো হারিয়ে যায় না।" সত্যের মুখোমুখি হওয়া আমাদের জীবনের উন্নতিতে সাহায্য করে।  


### ৮. **ভালোবাসার শক্তি**  

ভালোবাসা শুধু আবেগ নয়, এটি স্বপ্নপূরণে প্রেরণা জোগাতে পারে। সান্তিয়াগো ও ফাতিমার ভালোবাসা তাদের স্বপ্নপূরণে সাহায্য করেছে। সঠিক মানুষের ভালোবাসা জীবনের বড় লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।  


### ৯. **বর্তমানে বাঁচা**  

অনেক সময় আমরা ভবিষ্যতের চিন্তায় বর্তমানকে উপেক্ষা করি। অথচ সুখী হতে হলে বর্তমানকে উপভোগ করতে হবে। জীবনের প্রকৃত সৌন্দর্য বর্তমানের মুহূর্তগুলোতেই লুকিয়ে আছে।  


### ১০. **জীবন একটি যাত্রা**  

বইটি জীবনকে একটি চলন্ত ট্রেনের সঙ্গে তুলনা করেছে। জীবনে পরিবেশ, চাওয়া-পাওয়া সবকিছু পরিবর্তন হবে, কিন্তু যাত্রা চলতে থাকবে। প্রতিটি মুহূর্তকেই মূল্য দেওয়া উচিত।  


**উপসংহার:**  

*"দ্য আলকেমিস্ট"* বইটি আমাদের জীবনের গভীর অর্থ বোঝায় এবং সাহস, অধ্যবসায়, ভালোবাসা ও স্বপ্নের গুরুত্বকে সামনে আনে। এটি শুধু একটি বই নয়, বরং জীবনের পথপ্রদর্শক।


collected

মনে করো আমি নেই... ॥,,,,লেখক: ©️ কিছু কথা ॥ কিছু সুর। তথ্য সংগ্রহ ও কৃতজ্ঞতা স্বীকার:

 ॥ মনে করো আমি নেই... ॥


তখন আমি বারো কি পনেরো,

ইন্টারনেট, ইউটিউব, ফেসবুক এইসব তো দূর অস্ত, বাড়িতে টিভিও ছিল না। আর প্রত্যন্ত গ্রামে বাড়ি হওয়ার দরুন তখনও ইলেকট্রিসিটি আসেনি। একান্নবর্তী পরিবার ছিল আমাদের। সন্ধ্যা নামলেই হ্যারিকেন লন্ঠনের আলোয় গোল হয়ে বসে পড়াশোনা, আড্ডা, বিনোদন সবই চলত। আর ছিল প্রানের সঙ্গী– এক বিশাল কাঠের বাক্সওয়ালা রেডিও।


এমনই এক সন্ধ্যায় বাবা, মা, পিসি, কাকা, কাকীমা সবাই মিলে বসে সান্ধ্য চা সহযোগে শোনা হচ্ছে রেডিও।

ঘড়িতে (সম্ভবতঃ) ৫:৪৫, বিবিধ ভারতী তে ঘোষণা হল– আকাশবাণী কলকাতা, বিবিধ ভারতী প্রচার তরঙ্গের অনুষ্ঠান শুনছেন ২২৬.৭ মিটারে অর্থাৎ ১৩২৩ কিলো হার্জ এ। শুরু হচ্ছে বিজ্ঞাপনদাতা দ্বারা আয়োজিত অনুষ্ঠান– “মনের মতো গান”।

অতঃপর ঘোষণা— আজকের অনুষ্ঠানের প্রথম গানটি শুনতে চেয়ে অনুরোধ পাঠিয়েছেন- এই বলে, ঠিকানা সহ বাবার নাম এবং তারপর একে একে আমাদের সবার নাম। বাবা-ই চিঠি টা লিখেছিল গানটা শুনতে চেয়ে। বাবা তো খুশিতে আত্মহারা। হবারই কথা! প্রায় বছরখানেক ট্রাই করার পর নিজের অনুরোধের গান নাম-ঠিকানা সহ রেডিওতে, তাও আবার একেবারে শুরুতেই। এ যেন ঠিক লটারি লাগার মতো খুশি। তখনকার আনন্দগুলোই অন্য ধরনের ছিল। আজকের ইন্টারনেটের যুগে যা কল্পনাতীত।


যাইহোক, তারপর বেজে উঠল সেই গান—


“মনে করো আমি নেই,

বসন্ত এসে গেছে..

কৃষ্ণচূড়ার বন্যায়,

চৈতালী ভেসে গেছে...”


গানের শিল্পীর নাম শুনে সেদিনের আমি অবাক হয়ে বাবাকে বললাম – ওই দ্যাখো বাবা, এটা তো লতা মঙ্গেশকরের গান, ওরা বোধহয় ভুল করে সুমন কল্যাণপুর বলল।

তখন বাবা বলল— না রে, এটা সুমন কল্যাণপুর এরই গান। ওর গলাটাই লতার মতো।


বড় হতে হতে শিল্পীর আরো কিছু গান শুনলাম। চিনলাম শিল্পীকে। সুমন কল্যাণপুর। যাঁর কণ্ঠের ভীষণ মিল ছিল লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে।

এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরাও তাঁর গান শোনে, পছন্দ করে, কিন্তু আমি হলফ করে বলতে পারি, বেশিরভাগই লতা মঙ্গেশকরের গান ভেবেই শোনে।

গতকাল পেরিয়ে এলাম শিল্পীর জন্মদিন। তবে পোস্ট টা লিখতে লিখতে অনেক রাত হয়ে যাওয়ায় পোস্ট করা হয়ে ওঠেনি। আজ করলাম।


হ্যাঁ যেকথা বলছিলাম, লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে তাঁর কন্ঠের অদ্ভুত মিল। আর ঠিক এটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাঁর কেরিয়ারের ক্ষেত্রে। তাই তিনি আজকে প্রায় অচেনা।


আধুনিক বাংলা গান, বাংলা ছায়াছবির গান অনেক গাইলেও সুমন কল্যাণপুর আদতে বাঙালি নন। কিন্তু তিনি তাঁর কয়েকটি গান দিয়েই বাঙালিদের বড্ড আপন ছিলেন।


সেসময় রেডিও আর রেকর্ডের যুগে সুমন কল্যাণপুরের গান শুনলে আমার মতো প্রায় সব শ্রোতারাই বিভ্রান্ত হয়ে যেতেন তাঁর গাওয়া গান শুনে। ভাবতেন– এটা তো লতা মঙ্গেশকরের গলা।


এই "Identity crisis" যে কতখানি অস্বস্তির কারণ একজন শিল্পীর কাছে, তা বোধহয় বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই এই বিভ্রান্তি শুধু শ্রোতাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, সুমনের জীবনের বড় একটা অংশকে আচ্ছন্ন করেছিল। রেডিওতে সুমনের গান বাজানোর পরে অনেক সময় তাঁর নাম ঘোষণা করা হতো না। এমনকি শুরুর দিকে রেকর্ডেও তাঁর নাম দেওয়া হতো না।


লতার কণ্ঠস্বরের সঙ্গে মিল থাকায় সুমনকে প্রায়শই তাঁর ছায়ার মতো বাঁচতে হয়েছে। অথচ, এটা সুমনের লতা-কণ্ঠের অনুকরণ নয়, বরং লতাকে অনুসরণ করেই সুমনের সংগীতযাত্রা শুরু। কলেজজীবনে তিনি লতার গান গেয়ে চমকে দিতেন সবাইকে।

বলুন তো, ঈশ্বর একরকম কন্ঠ উপহার দিলে তাঁর কি দোষ? 


সুমনের কণ্ঠে যেমন ছিল অসামান্য সুরেলা গভীরতা, তেমনি বাংলা, হিন্দি, তামিল—সব ভাষাতেই ছিল তাঁর স্পষ্ট উচ্চারণ। সংগীত পরিচালকরাও বুঝেছিলেন, এই গুণগুলো তাঁকে প্লেব্যাকের জন্য আদর্শ করে তুলেছে। তবু পঞ্চাশ-ষাটের দশকে লতা মঙ্গেশকর এবং আশা ভোঁসলের মতো তারকার দাপটে সুমন কল্যাণপুরকে প্রায়শই সংগীত পরিচালকদের “থার্ড চয়েস” হয়ে থাকতে হয়েছে। যখন কোনও গান রেকর্ডিংয়ে লতা সময় দিতে পারতেন না বা প্রযোজকদের বাজেট লতার পারিশ্রমিক সামলাতে পারত না, তখনই সুমন কল্যাণপুরের ডাক পড়ত।


তবে সবসময় এমন ছিল না। কিছু সময়ের জন্য সুমন কল্যাণপুর মহম্মদ রফির সঙ্গে একের পর এক ডুয়েট গেয়ে নিজের আলাদা অবস্থান তৈরি করেছিলেন।


লতা এবং রফির মধ্যে রয়্যালটি বিতর্ক চলাকালীন, রফির সঙ্গে লতার পরিবর্তে গান গাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন সুমন। ১৪০টিরও বেশি ডুয়েট গান রয়েছে এই জুটির...

“আজকাল তেরে মেরে পেয়ার কে চর্চে”,

“তুমনে পুকারা অউর হাম চলে আয়ে”,

“না না করতে প্যার তুম্হি সে কর ব্যাঠে”,

“দিল নে ফির ইয়াদ কিয়া”,

“ইতনা হ্যায় তুমসে প্যার মুঝে”,

“অ্যায়সে তো না দেখো”


মান্না দে-র সঙ্গে—

“না জানে কাঁহা তুম থে”


হেমন্ত মুখোপাধ্যায় (হেমন্ত কুমার) এর সঙ্গে—

“তুম্হি মেরে মিত হো”


মুকেশ এর সঙ্গে—

“ইয়ে কিসনে গীত ছেড়া”


আবার শিল্পীর একক কন্ঠে —

“না তুম হামে জানো”

“প্যাহলা প্যাহলা প্যার”


— এমনই অনেক চিরন্তন গান আজও সুমনের চিরসবুজ কণ্ঠস্বরের সাক্ষী।


সুমন কল্যাণপুরের জন্ম ১৯৩৭ সালের ২৮ জানুয়ারি, অবিভক্ত বাংলার ঢাকা শহরে। তবে তাঁর পূর্বপুরুষরা কর্নাটকের উদুপি জেলার হেমাদি গ্রামের বাসিন্দা। সুমনের পিতা শঙ্কর রাও হেমাদি ছিলেন সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার উচ্চপদস্থ কর্মচারী। ১৯৪৩ সালে চাকরিসূত্রে তাঁদের পরিবার মুম্বাইয়ে (তখনকার বম্বে) চলে আসে। দক্ষিণ ভারতীয় শিকড়, বাংলা ও হিন্দির প্রতি দখল, এবং গানের প্রতি ভালোবাসায় ভর করে মুম্বাইয়ের পরিবেশে বেড়ে ওঠেন সুমন।


মুম্বাইয়ের কলম্বিয়া হাইস্কুলে পড়াশোনা চলাকালীনই গানের তালিম নিতে শুরু করেন সুমন। একদিকে গান, অন্যদিকে ছবি আঁকায় তাঁর ছিল অসাধারণ দক্ষতা। জেজে স্কুল অফ আর্টসে ভর্তি হওয়া এই প্রতিভাবান শিল্পী কিশোরীবেলায় প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক কেশব রাও ভোলের নজরে আসেন। তিনিই সুমনকে প্লেব্যাকের দিকনির্দেশনা দেন। সুমনের কণ্ঠে ছিল এমন এক মাধুর্য, যা তাঁকে ক্লাসিক্যাল গান ছেড়ে আধুনিক ও প্লেব্যাকের জন্য আরও বেশি উপযুক্ত করে তুলেছিল।


১৯৫৪ সালে 'মঙ্গু' ছবিতে সুমন কল্যাণপুরের প্লেব্যাক যাত্রা শুরু হয়। এরপর 'দরওয়াজা' ছবিতে তালাত মাহমুদের সঙ্গে তাঁর গান জনপ্রিয়তা পায়। শঙ্কর-জয়কিষণ, শচীনদেব বর্মণ, মদনমোহন, নৌশাদ—সব বড় সংগীত পরিচালকের সঙ্গেই কাজ করেছেন সুমন।


সুমনের বিয়ে হয় মুম্বাইয়ের ব্যবসায়ী রামানন্দ কল্যাণপুরের সঙ্গে। সুমনের কেরিয়ারের অন্যতম উল্লেখযোগ্য দিক ছিল তাঁর স্বামীর সমর্থন। তিনি সব রেকর্ডিংয়ে স্ত্রীকে নিয়ে যেতেন, যাতে সংগীতজীবনে কোনও বাধা না আসে।


বাংলা সংগীত জগতেও সুমন কল্যাণপুর একটি বিশেষ নাম।

“আমার স্বপ্ন দেখা দুটি নয়ন”

কিংবা

“মনে করো আমি নেই, বসন্ত এসে গেছে”

তারপর

“কাঁদে কেন মন আজ কেউ জানে না”

গানগুলো আজও আমাদের মনে দোলা দেয়।


আঁধার আকাশে মেঘের ডাকে আজও মন গেয়ে ওঠে —

“বাদলের মাদল বাজে গুরু গুরু...”


কিংবা, কোনো স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় জর্জরিত এক নিঃসঙ্গ হৃদয়ের আবেগময় জীবন্ত প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠে—

“শুধু স্বপ্ন নিয়ে খেলা চলেছে...”


বাংলার নিখাদ সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছে যা এযুগেও সমান প্রাসঙ্গিক, জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য।


হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে মান্না দে—সবাই সুমনের প্রতিভার স্বীকৃতি দিয়েছেন।  


লতার কণ্ঠস্বরের সঙ্গে মিল থাকার কারণে সুমন কল্যাণপুরকে প্রায়শই আড়ালে পড়তে হয়েছে। তবু তাঁর কণ্ঠে যে মাধুর্য ছিল, তা আজও বহু শ্রোতার মনে গেঁথে আছে।


‘মনিহার’ ছবির–

“দূরে থেকো না, আরো কাছে এসো”-র মতো আবেদনময়ী গানে যেমন শ্রোতারা রোমাঞ্চিত হয়েছে,

তেমনই ‘কৃষ্ণ সুদামা’ ছবির–

“তোরা হাত ধর প্রতিজ্ঞা কর” গানটি বন্ধুত্বের চিরন্তন প্রতীক হয়ে থেকে গেছে।


আজ সুমন কল্যাণপুর নব্বই ছুঁই ছুঁই।

তবে এত অবহেলা সত্ত্বেও জীবনের প্রতি তাঁর কোনও আক্ষেপ নেই। মেয়ে চারুল অগ্নি আমেরিকাবাসী হলেও তাঁর নাতনি ভারতে এসে সুমনের নামে একটি এনজিও খুলেছেন।


সঙ্গীতের বাইরে সুমন কল্যাণপুর চিত্রাঙ্কন, বাগান করা, বুনন ও রান্নায় আগ্রহী। তিনি বিভিন্ন সময়ে দেশ-বিদেশে সঙ্গীতানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন এবং তাঁর সুরেলা কণ্ঠের মাধ্যমে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন।


তাঁর সঙ্গীত জীবনের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ২০০৯ সালে মহারাষ্ট্র সরকারের লতা মঙ্গেশকর পুরস্কার, ২০১৫ সালে গদিমা পুরস্কার এবং ২০২২ সালে মির্চি মিউজিক লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। ২০২৩ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারত সরকার তাঁকে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত করে।


সুমন কল্যাণপুরের সঙ্গীত জগতের অবদান ও তাঁর সুমধুর কণ্ঠস্বর সঙ্গীতপ্রেমীদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে। সারাটা জীবন তিনি নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। তবুও শ্রোতাদের বিভ্রান্তি যেন তাঁকে চিরকাল একপ্রকার ব্রাত্য করেই রেখেছে বলা যায়।


তাঁর গাওয়া সেই গানগুলোই যেন তাঁর জীবনের গল্প বলে—

“আমার স্বপ্ন দেখা দুটি নয়ন

হারিয়ে গেল কোথায় কখন,

কেউ তা জানে না।”

______________________

লেখক: ©️ কিছু কথা ॥ কিছু সুর।

তথ্য সংগ্রহ ও কৃতজ্ঞতা স্বীকার: The Wall (শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়), Bharat Discovery, Biography pot, Kafal Tree, Saregama, Gaane Sune Ansune.

______________________________________

এই লেখা, অথবা লেখা থেকে কোনো অংশ নিলে লেখকের নামসহ তথ্যসূত্র উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক।

মৃণালিনী দেবী মৃত্যুর আগে কবিগুরুকে একটি গান শোনাতে বলেছিলেন। 

 মৃণালিনী দেবী মৃত্যুর আগে কবিগুরুকে একটি গান শোনাতে বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এতদিন কবি রবীন্দ্রনাথকে সবাই চেয়েছে, শুধু আমি বাদে। আমি শুধু মানুষ রবীন্দ্রনাথকে চেয়েছিলাম।


নদীর যেমন সাগর, পাখির যেমন আকাশ, আমারও তেমনি রবীন্দ্রনাথ। কিন্তু আজ বড় বেশী করে আমার কবি রবীন্দ্রনাথকে দেখতে ইচ্ছা করছে। বিশেষত সেই গানটি আমার বিশেষ করে মনে পড়ছে। আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসারে/পরাণসখা বন্ধু হে আমার।


 বলতে বলতে মৃণালিনী দেবীর চোখ দুটি সহসা গভীর ঘুমে ছেয়ে গেল। বললেন আমি এবার ঘুমাবো। এবার এই ঝড়েররাতে আমায় গান শুনিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দাও। আর রবীন্দ্রনাথ তখন সংজ্ঞাহীন, বেহুঁস অথবা খেপা, বাতুল, বাউরার মতো গেয়ে চলেছেন,

   “আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসারপরানসখা বন্ধু হে আমার। আকাশ কাঁদে হতাশ-সম, নাই যে ঘুম নয়নে মম- দুয়ার খুলি হে প্রিয়তম, চাই যে বারে বার।”


গান শেষ হতেই মৃণালিনীর নাম ধরে ডেকে উঠলেন কবি। ততক্ষণে তিনি নেই। নীরব। ডাকলেন, ছোটোবউ। তিনি নীরব। এবং অবশেষে এক নিবিড় ও অন্তরঙ্গ নাম ধরে ডেকে উঠলেন তিনি।


ডাকলেন, ছুটি। একমাত্র রবি ঠাকুর ওনাকে এই নামে ডাকতেন। ছুটি তখন সারাজীবনের জন্য ছুটি পেয়ে গেছেন।


সংগৃহীত

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর' সত্যজিৎ রায়ের খাতায় "একটি শিশিরবিন্দু" কবিতাটা লিখে দিয়েছিলেন। সত্যজিৎ রায় তখন ছোট, মায়ের হাত ধরে শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ কে দেখতে গিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য হাতে করে একটা খাতা নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে গুরুদেবের সাথে দেখা হলে সত্যজিৎ রায়কে গুরুদেব বলেন খাতাটা আমার কাছে থাক, তুমি এই  শান্তিনিকেতনের চারিপাশ ঘুরে দেখো। পরে ঘুরে এসে দেখেন স্বাক্ষরের পাশাপাশি গুরুদেব এই "একটি শিশির বিন্দু" কবিতাটি লিখে দিয়েছেন। আসলেই রবীন্দ্রনাথ প্রথম সত্যজিৎ রায়কে দেখে চিনতে পেরেছিলেন। এই ছেলে একদিন বাংলার নক্ষত্র হবে। আসলেই তিনি ঋষি কবি তো, এই জন্যই দূর দৃষ্টি সম্পন্ন 

মানুষ ছিলেন। 


বহু দিন ধ'রে বহু ক্রোশ দূরে

বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে

দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা,

দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।


দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া

ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া

একটি ধানের শিষের উপরে

একটি শিশিরবিন্দু।


" তুমি একটু বোসো তো, আমি  চরিত্রটা বানিয়ে ফেলি।" - সত্যজিৎ রায়।


#বাঙালী  


রাজেশ কবিরাজ

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

এই ২০ টি এক্সেল ফর্মুলা সবার আগে শেখা উচিত।

 এক্সেলে নতুন হলে চাকরি, অফিস কিংবা ফ্রিল্যান্সিংয়ে এগিয়ে যেতে চাইলে এই ২০ টি এক্সেল ফর্মুলা সবার আগে শেখা উচিত। এই ফর্মুলাগুলো জানলে এক্সেল...