এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ভালোবাসার গল্প ফেইসবুক থেকে নেওয়া

 "কি আশ্চর্য, আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরছেন কেন স্বামী?"


অনিমার কথায় শুভ্র রেগে বেলকনি থেকে চলে গেল। বিয়ের দুই মাস চলছে। অথচ অনিমা আজও শুভ্রকে ওর কাছে পর্যন্ত আসতে দেয়নি। যতবারই শুভ্র অনিমার কাছে গিয়েছে ততবারই অনিমা বলেছে,


"কি আশ্চর্য, আপনি আমার কাছে আসছেন কেন স্বামী?"


"কি আশ্চর্য, আপনি আমাকে কিস করছেন কেন স্বামী?"


"কি আশ্চর্য, আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরছেন কেন স্বামী?"


এসব শুনে শুভ্রর মাঝে মাঝে এক গ্লাস পানিতে ডুবে মরে যেতে ইচ্ছে করে। এইতো সেদিনের ঘটনা, অনিমার শাশুড়ি রাতের খাওয়ার সময় বললেন,


"বউমা আজ তরকারিতে লবণ বেশি হয়েছে। এরপর থেকে রান্নার সময় একটু খেয়াল রেখো।"


তখন অনিমা ওর শাশুড়ির কাছে গিয়ে বললো,


"কি আশ্চর্য, শাশুড়ি মা তরকারিতে তো লবণ বেশি হতেই পারে।"


অনিমার কথা শুনে ওর শাশুড়ি তাজ্জব বনে গেল।


"মানে?"


অনিমা তখন চেয়ারে বসে গালে হাত দিয়ে বললো,


"কি আশ্চর্য, মানুষ মাত্রই তো ভুল শাশুড়ি মা।"


অনিনার শাশুড়ি তখন শুভ্রর দিকে তাকিয়ে বললো,


"শুভ্র বউমা এভাবে কথা বলছে কেন?"


শুভ্রকে কিছু বলতে না দিয়ে অনিমা আবারো বললো,


"কি আশ্চর্য, আমি তো এভাবেই কথা বলি শাশুড়ি মা।"


অনিমার কথা শুনে ওর শাশুড়ি হা করে তাকিয়ে ছিল শুধু। কিছু বলতে পারেনি।


একদিন অনিমার বান্ধবীরা ওর কাছে আসলো। হাসি ঠাট্টার এক পর্যায়ে অনিমার এক বান্ধবী নিহারিকা জিজ্ঞেস করলো,


"কিরে জিজুর সাথে কেমন রোমান্স করিস হুম?"


অন্য সবাই এই প্রশ্নে হেসে উঠলেও অনিমার উত্তর শুনে সবাই থ হয়ে গেল,


"কি আশ্চর্য, তার সাথে আমি রোমান্স করবো কেন?"


অনিমার কথায় ওর আরেক বান্ধবী জিনাত বললো,


"মানে কি অনি? তুই জিজুর সাথে রোমান্স করবি না তো কি আমরা করবো?"


"কি আশ্চর্য, তোরা রোমান্স করবি নাকি করবি না সেটা আমাকে বলছিস কেন?"


অনিমার কথায় ওর সব বান্ধবীর মাথা ঘুরে উঠেছিল সেদিন।


এরপরের আরেক ঘটনা। একদিন শুভ্রর ফুপি এসে অনিমাকে জিজ্ঞাসা করলেন,


"কি ব্যাপার অনিমা, সুসংবাদ কবে পাবো?"


অনিমা তখন উত্তর দিয়েছিল,


"কি আশ্চর্য, আমি কি পত্রিকা নাকি যে সংবাদ দিব আপনাকে?"


অনিমার কথায় ফুপি অবাক হয়ে বললো,


"আরে মা, আমি বলছিলাম যে আমরা নাতি নাতনির মুখ দেখবো কবে? মানে তুমি আর শুভ্র বাচ্চা নিয়ে এখন কিছু ভাবছো না?"


অনিমা তখন এমন এক কথা বললো যে আশেপাশের সবাই বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল।


"কি আশ্চর্য, আমরা বাচ্চা নিয়ে কেন ভাববো? আপনাদের নাতি নাতনির দরকার হলে দারাজ থেকে অর্ডার করে নিন। এখন তো দারাজে অফারও চলছে। নিজেদের দাম অনুযায়ি নাতি নাতনি অর্ডার করে নিন।"


অনিমার এই কথা শুনে বেচারি ফুপি সেদিন সোফা থেকে ঠাস করে মাটিতে পড়ে গিয়েছিল। কারণ সে অজ্ঞান হয়ে গেছে।


সেদিনের পর থেকে সবাই অনিমার সাথে খুব মেপে মেপে কথা বলে।


আজকের রাতটা অন্য রকম। আকাশে থালার মতো ইয়া বড় চাঁদ উঠেছে। তার চারপাশে তাঁরারা মিটিমিটি করে জ্বলছে।


শুভ্র আজ অফিস থেকে ফিরে ফ্রেশ হয়ে অনিমাকে রেডি হতে বললো। আজ ওরা দু'জন ক্যান্ডেল লাইট ডিনারে যাবে।


রেস্টুরেন্টের ভেতরে এসে নির্দিষ্ট ফ্লোরে গিয়ে বসলো শুভ্র আর অনিমা। তখনই একজন মেয়ে ওয়েটার এসে ওদের দু'জনকে ওয়েলকাম জানালো। তারপর অনিমার দিকে তাকিয়ে বললো,


"ম্যাম আপনাকে খুব সুন্দর লাগছে।"


"কি আশ্চর্য, আমাকে সুন্দর লাগছে সেটা আপনি বলবেন কেন?"


অনিমার কথা শুনে মেয়েটা থতমত খেয়ে গেল।


"স্যরি ম্যাম।"


"কি আশ্চর্য, আপনি আমাকে স্যরি বলছেন কেন? এক কাজ করুন। এই স্যরি টাকে রোদে শুকিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে প্রতিদিন সকালে এক চামচ করে কুসুম গরম পানির সাথে মিক্স করে খাবেন। এটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।"


অনিমার কথা শেষ হতেই একটা আওয়াজ হলো। ঐ ফ্লোরে থাকা বাকি সবাই তাকিয়ে দেখলো, ঐ ওয়েটার মেয়েটা মাটিতে পড়ে আছে।


এটা দেখার পর শুভ্রর অবস্থাটা এমন,


"ছলছল নয়নে হাসিমাখা বদনে 🥺🙂"


শুভ্র আর কিছু না বলে অনিমাকে রেখেই রেস্টুরেন্ট থেকে বেড়িয়ে এলো। অনিমা শুভ্রর পেছন পেছন এসে বললো,


"কি আশ্চর্য, আপনি আমাকে রেখেই একা একা চলে এলেন কেন স্বামী?"


"তো আর কি করবো হ্যা?"


শুভ্রর রাগী কন্ঠস্বর শুনে অনিমা বললো,


"কি আশ্চর্য, আপনি রাগছেন কেন স্বামী? দেখেছেন আকাশে কত বড় চাঁদ উঠেছে। কি সুন্দর!"


অনিমার এমন কথা শুনে শুভ্র ভাবলো,


"এটাই সুযোগ। দেখি বউকে একটু রোমান্টিক বানানো যায় কিনা।"


যেই ভাবা সেই কাজ। শুভ্র অনিমার দিলে তাকিয়ে হেসে বললো,


"ফাগুনি পূর্নিমার রাতে চল পলাইয়ে যায়।"


শুভ্রর কথা শুনে অনিমা আশেপাশে তাকিয়ে বললো,


"কি আশ্চর্য, আমি আপনার সাথে পালাবো কেন স্বামী? আমার মা তো তাহলে আমাকে বকবে। কারণ মা বলেছে, কোনো ছেলের সাথে আমি পালিয়ে গেলে ঐ ছেলেটা আমার চোখ,কিডনি এসব বিক্রি করে আইফোন কিনবে।"


অনিমার কথা শুনে শুভ্র কিছু না বলে কাঁদতে কাঁদতে রাস্তায় বসে পড়লো।মনে মনে ভাবছে,


"কি এমন পাপ করেছিলাম যে এমন পাগল একটা বউ জুটলো আমার কপালে।"


কথাটা ভেবেই শুভ্র আরো জোরে জোরে কাঁদতে লাগলো।


আশে-পাশের সবাই শুভ্রকে এমন করে কাঁদতে দেখে অনিমার কাছে এসে বললো,


"উনি এইভাবে মাঝ রাস্তায় বসে কাঁদছেন কেন?"


অনিমা রাস্তা থেকে একটা মেয়ের হাত ধরে শুভ্রর কাছে গিয়ে ওর পাশে বসে বললো,


"কি আশ্চর্য, আপনি কাঁদছেন কেন? এই নিন একটা মেয়ে। এই মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যান আপনি। তারপর পর চোখ,কিডনি বেঁচে আপনি আইফোন কিনে নিয়েন।"


অনিমার এমন কথা শুনে আশে-পাশের সবাই দৌড়ে পালাতে লাগলো। আর শুভ্র অজ্ঞান হয়ে গেল।


অনিমা সবার দিকে তাকিয়ে নিজে নিজেই বললো,


"কি আশ্চর্য!"


★সমাপ্ত★


#রম্য_গল্প

#কি_আশ্চর্য


(Repost)

বিঃদ্রঃ এই গল্প দিয়েই গল্পের জগতে এসেছিলাম। দেখতে দেখতে গল্পের জগতে আসার এক বছর পূর্ণ হলো আজ। যারা যারা আমাকে এবং আমার গল্পকে ভালোবাসেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং অফুরন্ত ভালোবাসা। 

কোন মন্তব্য নেই:

জানা প্রয়োজন গায়রত কী? *******************

 ★জানা প্রয়োজন গায়রত কী? ************************** প্রিয় নবীজীর সাহাবীরা তাদের স্ত্রী'র নাম পর্যন্ত পরপুরুষকে বলতো না। এটাই গায়রত।তথা-(...