এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

অনুগল্প অতীত

আমার যখন বিয়ে হয় তখন আমি কেবল দশম শ্রেনির ছাত্রী। আমার বাবা ছিলো না, এমন না যে সে অন্যত্র ছিলেন বা বিয়ে করছেন। যখন আমি দ্বিতীয় শ্রেনিতে পড়ি তখন সে স্টোক করে মারা যান। আমরা ছিলাম চার বোন। আমার বড় তিন জন। আমার মা বড় তিন জনকে বিয়ে দিয়ে মা*রা গেলেও আমার কোনো ব্যাবস্থাই তিনি করে যেতে পারেন নি। বাবার মৃত্যুর পড়ে বোনেরা যতটুকু আদর ভালোবাসা দিতো, মা মারা যাওয়ার পর তা যেনো কর্পুরের মতো উবে যায়। তখন শুরু হয়েচিলো আমার জিবনের চরম খেলা। মাসের দশ দিন এক বোনের বাড়ি তো বাকি দশ দিন আরেক জনের বাড়ি। না তাদের বাড়িতে আমি নাইয়োর যেতাম না। তাদের ছেলে মেয়ে লালন পালনের জন্য, সংসারের ভারি কাজ গুলো করানোর জন্য তাদের বাড়িতে থাকতাম। বিনিময়ে তারা হয়তো আমার হাত খরচ টা চালাতো। এমনি একদিন বিকেলে যখন স্কুল থেকে ফিরেছি, আমার বড় বুবু রুবি আমার হাতে একটা শাড়ি দিয়ে বললো যাতো এইটা পড়ে আয়। 

বুবু আমি তো শাড়ি পড়বার পারি না। 

আইচ্ছা দারা তোরে আমি পড়াই দেই, মাজার বুবুর কথা শুনে পিছনে তাকালাম। 

আমি শাড়ি পরমু কেন বুবু। আইজকা কি বাড়িত কনো অনুষ্ঠান নাকি। তখন আমার সেজো বুবু বলে কেন রে রুমি আইজকা তোর বিয়া। 

রুবি বুবু মেজো বুবুকে তাগাদা দিয়ে বললো যা হালিমা ওরে তারাতাড়ি রেডি করা মেহমান রা সেই কহন থেইকা বইসা আছে। 

বোনেদের কথায় আমার মুখটা চুপসে গিয়েছিলো৷ বুক ভরা সব স্বপ্ন ভেঙ্গে যেনো চুরমার হয়ে যাচ্ছিলো। চাইলেও সেই দিন মুখ ফুটে বলতে পারি নি আমি বিয়ে করবো না বুবু। আমি পড়তে চাই । 

হালিমা বুবু আমাকে সুন্দর করে শাড়ি পড়িয়ে হাতে শরবতের ট্রেটা দিয়ে বলেছিলো যা হেদের আপ্যায়ন কর। যাইয়া সুন্দর কইরা ছালাম দিবি। বুল যেনো না হয়। 

বোনের কথায় সে দিন শুধু ঘাড় নারিয়ে স্বিকার করেছিলাম।

এরপর সব ঘটনা কেমন দ্রুতই ঘটে গেলো। ছেলের বোন আমার হাটা দেখলো, মাথার চুল খুলে দেখলো। আমার কোমর ছাওয়া চুল দেখে সেইদিন পাত্রের বোন আমাকে পছন্দ করেছিলো। পাত্রের কাকি যখন বলরো তা রান্না কেমন পারো, তখন আমার বোন জামাই বলেছিলো আমার শালি একদম খাসা সোনার টুকরা। সব রানবার পারে। পিঠা পায়েস, কসা মাংস সব। আমাগো বাড়ির রান্দন তো ওই করে। 

আমি তখনো পাত্রের দিকে তাকিয়ে দেখিনি। 

মাগড়িবের কিছু পড়ে আমার আর জামিলের বিয়ে পড়ানোর জন্য কাজি আসে। কাজি যখন কবুল বলতে বলে তখন আমি জিবনের হিসাব মিলাতে ব্যাস্ত। আমার জিবনটা এমন কেনো। 

বোনের নিম্ন সরের ধমকে আমার হুশ হয়। 

এই রিমি কবুল বলস না ক্যান? 

ধীরে ধীরে তিন বার কবুল বলে দেই। 

আমার জন্য যে এরা এতটুকুই করেছে নেটাই তো অনেক। 

বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে বোনেরা খুব সুন্দর করে বুজিয়ে বলে দেয় স্বামির সাথে কি করতে হবে। তার সব কথা যেনো মেনে চলি। কোনো প্রতিবাদ যেনো না করি।

কাঠের পুতুলের মতো আমি শুধু শুনেছিলাম। 

স্বামী মানে আমার কাছে তখন বিষাক্ত কিছু। কিন্তু আমার ধারনা সম্পূর্ণ ভুল প্রমানিত হয়। যখন সে রুমে ডুকেই বলে, একি তুমি এখনো এই সব ভারী কাপড় পড়ে আছো কেন। যাও চেন্জ করে আসো। 

তার দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেকেছিলাম সেই প্রথম বার। 

ওভাবে তাকিয়ে আছো কেন, অনেক দেখতে পাবে আমায়। তোমার ব্যাক্তিগত সম্পত্তি আমি, কেউ কেড়ে নিবে না। এখন যাও তাড়াতিড়ি ফ্রেশ হয়ে এসো। 

সেই দিন থেকেই বদলাতে শুরু করেছিলো আমার জিবনের মরিচীকা ধরা চাঁকা।  

ধীরে ধীরে সেই শ্যামপুরুষের ভালোবাসায় আটকা পড়ি আমি। আমাদের মধ্যে বন্ধু, প্রেম, ভালোবাসা সবি তৈরি করে দিয়েছিলেন উপড়ওয়ালা। বড্ড পাগল ছিলো আমার জন্য।

বিয়ের রাতে যেখানে সব পুরুষ নিজের চাহিদা মিটাতে ব্যাস্ত থাকে সেখানে জামিল আমার রেজাল্ট শিট গুলো দেখে বলেছিলো তুমি তো অনেক মেধাবী ছাত্রী। তুমি কি আরো পড়তে চাও। 

ছোট করে হু বলতেই তিনি ব্যাস্ত হয়ে পড়েন ঢাকার উত্তরা ক্যান্টমেন্ট স্কুলে আমার এডমিশনের জন্য। সে দিন সারা রাত সে ল্যাপটপে বসে ছিলেন। যেখানে আমি পড়াশোনার সব স্বপ্ন ছেড়ে দিয়ে ছিলাম সে যেনো নতুন করে আমাকে বাচতে শিখালো। 

নতুন এক ভোর উপহাড় দিয়েচিলো সে আমায়। 

সে আমকর জন্য এতটাই পাগল ছিলো যে কখনো এক দিনের বেশি আমি আমার বাড়িতে থাকতে পারি নি। আমার সব বিষয়ে তার এতো বেশি খেয়াল ছিলো যা কখনো বলে বুঝানো যাবে না। আমার চুলে নিয়ম করে তেল দিয়ে দিতেন। রাতে বাসায় ফিরে চুল বেনুনী করে দিতেন। 

তার ছোয়ায়ই আমি গ্রাম্য রিমি থেকে তৈরি হয়েছি আজকের এই প্রতিবাদি রিমি। 

লেবার পেইন নিয়ে এই সবি ভাবছিলাম আমি। মানুষটার মুখ একদম শুকিয়ে গেছে যেনো আমার না তারি ব্যাথা করছে। আমার চাইতে বেশি ছটফট জামিল ই বেশি করছে। 

একবার আমার কাছে আসছে তো একবার নার্সের কাছে যাচ্ছে। 

নার্স যখন জানালো বেবি নরমালে হবেনা, তখন জামিলের মুখে আধার নেমে এসেছে যেনো। ডক্টরের কাছে রিকোয়েস্ট করে সেও আমার সঙ্গে অটিতে ছিলো। ওটির প্রতিটা মূহুর্ত সে ছটফট করে কাটিয়েছে। এর পর আসে সেই কাক্ষিত সময় যখন আমার মেয়ে জন্ম হয়।

আমার মেয়ে যখন চিৎকার করে কাদছিলো তখন জামিল আমাকে আর মেয়েকে জড়িয়ে ধরে বললো, তুমি আমার জীবনের শ্রেষ্ট সম্পদ উপহার । তোমাকে হারানোর ভয় আমাকে কুরে করে শেষ করে দিচ্ছিলো। 

                 

             ----------------সমাপ্ত------------------------

কোন মন্তব্য নেই:

সৌন্দর্যের দেবী ক্লিওপেট্রাআত্মহনন করেন, একটি বিষাক্ত সাপ তুলে নিয়েছিলেন হাতে, আর সেই মুহূর্তে সাপ ছোবল মারে তাঁর বুকে।

 সৌন্দর্যের দেবী ক্লিওপেট্রাআত্মহনন করেন, একটি বিষাক্ত সাপ তুলে নিয়েছিলেন হাতে, আর সেই মুহূর্তে সাপ ছোবল মারে তাঁর বুকে। ক্লিওপেট্রা ....মিশ...