কয়েকটি গুণের ওপর মেহনত করিয়া আমল করিতে পারিলে দ্বীনের উপর চলা অতি সহজ।
গুণ কয়টি হলো—
১/ কালেমা ২/ নামায ৩/ এলেম ও জিকির ৪/ একরামুল মুসলিমিন ৫/ সহি নিয়ত ৬/ তাবলীগ
১/ কালেমা
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।
কালেমার অর্থ
আল্লাহ তা’আলা ছাড়া কোন মাবুদ নেই আর হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তায়ালার প্রেরিত রাসুল ও আমাদের নবী।
কালিমার উদ্দেশ্য
আমাদের দুই চোখে যা কিছু দেখি না দেখি আল্লাহ ছাড়া সবই মাখলুক আর মাখলুক কিছুই করতে পারে না আল্লাহর হুকুম ছাড়া আর আল্লাহ সবকিছু করতে পারেন মাখলুকের কোন প্রকার সাহায্য ছাড়া। একমাত্র হুযুর সাল্লাল্লাহু সালামের নূরানী তরিকায়ে দুনিয়া এবং আখেরাতের শান্তি ও কামিয়াবি।
কালেমার লাভ
যে ব্যক্তি এ কালেমা একবার পাঠ করবে আল্লাহ পাক তার পিছনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিবেন, (সুবহানাল্লাহ)।
হাদিসে আছে যে ব্যক্তি প্রতিদিন এ কালেমা 100 বার পাঠ করবে কিয়ামতের দিন তার চেহারা পূর্ণিমার চাদের মতো উজ্জ্বল করে উঠাবেন।(সুবহানাল্লাহ)
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি পরিপূর্ণভাবে অজু করে অতঃপর কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করে আল্লাহ পাক তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেন সেই ব্যক্তি যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।(সুবহানাল্লাহ)
হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এরশাদ করেন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর চেয়ে বড় কোন আমলেই এবং এটি গুনাহকে মাফ না করে ছাড়ে না।(সুবহানাল্লাহ
নামাজ
নামাজের উদ্দেশ্যঃ
হুজুরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেভাবে নামাজ পড়তে বলেছেন এবং সাহাবাদেরকে যেভাবে নামাজ শিক্ষা দিয়েছেন সেভাবে নামাজ পড়ার যোগ্যতা অর্জন করার চেষ্টা করা।
নামাজের ফজিলতঃ
যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামায সময়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে গুরুত্ব সহকারে আদায় করবে আল্লাহ পাক তাকে নিজ দায়িত্বে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন মানে যে ব্যক্তি নামাযের ব্যাপারে যত্নবান হবেন আল্লাহপাক তাঁর জিম্মাদারী নিবেন আর যে ব্যক্তি নামাযের ব্যাপারে যত্নবান হবেন না আল্লাহ তার কোনো দায়িত্ব নেবেন না।(সুবহানাল্লাহ)
হুজুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- কেয়ামত দিবসে সর্বাগ্রে নামাজের হিসাব নেওয়া হবে ; যদি এটা ঠিক হয় তবে বাকি আমল ও ঠিক বলে প্রমাণিত হবে আর নামাজ ত্রুটিপূর্ণ হলে অবশিষ্ট আমল ও ত্রুটিপূর্ণ হবে।(সুবহানাল্লাহ)
নামাজ হাসিল করার তরিকাঃ ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে আদায় করি। ওয়াজিব ও সুন্নাত নামাযের প্রতি যত্নবান হই ও কাজা নামাজ গুলো খুঁজে খুঁজে আদায় করি।নামাজের লাভ জানিয়ে অপর ভাইকে দাওয়াত দেই ও সমগ্র উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য দোয়া করি।
ইলম ও জিকিরঃ
মাকসাদঃ আল্লাহ তায়ালার কখন কি আদেশ ও নিষেধ তা জেনে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তরিকা অনুযায়ী আমল করা।
লাভঃ
কোন ব্যক্তি ইলমে দ্বীন হাসিল করার সময় মারা গেলে সে শহীদ মর্তবা লাভ করবে।(সুবহানাল্লাহ)
হযরত আবু জার রাযিআল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন আমি হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে শুনেছি যে যে ব্যক্তি ইলমে দ্বীন শিক্ষা করার জন্য পথে বাহির হয় আল্লাহ পাক তার জন্য বেহেশতের রাস্তা সহজ করে দেন, আর ফেরেশতাগণ তালেবে ইলমের সম্মানের জন্য নূরের পাখা বিছিয়ে দেন এবং আসমান জমিনের সকল মাখলুক তার জন্য ইস্তেগফার করতে থাকে। (সুবহানাল্লাহ)
এলেম হাসিল করার তরিকাঃ এলেম দুই ভাগে শিখি। ১/ ফাযায়েল ২/ মাসায়েল। ফাজায়েলে এলেম তালিম ই হালকা থেকে আর মাসায়েলে এলেম উলামায়ে কেরামদের কাছ থেকে জেনে নেই।
জিকিরের মাকসাদঃ সকল সময় আল্লাহর ধ্যান ও খেয়াল অন্তরে পয়দা করা।
জিকিরের ফজিলতঃ
যে ব্যক্তি জিকির করতে করতে জিহ্বাকে তরতাজা রাখবে কেয়ামতের দিন সে হাসতে হাসতে জান্নাতে প্রবেশ করবে।(সুবহানাল্লাহ)
জিকিরের মজলিস ফেরেশতাদের ই মজলিস।(সুবহানাল্লাহ)
আল্লাহপাক যাকেরিণ দের জন্য ফেরেশতাদের উপর গর্ব করে থাকেন।(সুবহানাল্লাহ)
জিকির হাসিল করার তরিকাঃ শ্রেষ্ঠ জিকির হল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ আর আফজাল জিকির হলো কুরআন তেলাওয়াত করা ; সকাল বিকাল তিন তসবিহ পাঠ করা।
একরামুল মুসলিমিনঃ
মাকসাদঃ প্রত্যেক মুসলমান ভাই এর কিমত জেনে তার সম্মান করা।
ফজিলতঃ
যদি কোন ব্যক্তি কোন মুসলমান ভাইয়ের উপকার করার চেষ্টা করে তবে আল্লাহ পাক তাকে ১০ বছর নফল এত্বেকাফ করার সওয়াব দান করবেন।(সুবহানাল্লাহ)
একরাম হাসিল করার তরিকাঃ আমরা আলেমদের তাজ্বীম করি, বড়দের শ্রদ্ধা করি, ছোটদের স্নেহ করি। এর ফজিলত জানিয়ে অপর ভাইকে দাওয়াত দেই।(সুবহানাল্লাহ)
সহিহ নিয়তঃ
আমরা যে কোন নেক কাজ করি তা আল্লাহ তায়ালা কে রাজি এবং খুশি করার জন্যই করি।
নিয়ত কে সঠিক রেখে সামান্য খুরমা পরিমাণ দান করলেও আল্লাহপাক সেটাকে বাড়িয়ে উহুদ পাহাড় পরিমান করার সওয়াব দান করেন, আর যদি নিয়ত সঠিক না থাকে তবে পাহাড় পরিমান ও দান করলে খুরমা পরিমাণ সোয়াব পাওয়া যাবে না।(সুবহানাল্লাহ)
সঠিক নিয়ত হাসিল করার তরিকাঃ প্রত্যেক কাজ করার আগে লক্ষ্য করি যে এতে আল্লাহর হুকুম ও হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তরিকা ঠিক আছে কিনা এবং তা আল্লাহকে রাজি-খুশি করার জন্য করছে কিনা। প্রত্যেক কাজের পর এস্তেগফার পড়ি ও এর লাভ জানিয়ে অপর ভাইকে দাওয়াত দেই।
দাওয়াত ও তাবলীগঃ
আল্লাহর দেওয়া জান আল্লাহর দেওয়া মাল ও সময় নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় বের হয়ে জান ও মালের সহি ব্যবহার শিক্ষা করা।
প্রথমে চার মাস সময় লাগিয়ে এই কাজ শিক্ষা করি এবং মৃত্যু পর্যন্ত এ কাজ করার নিয়ত করি।
আল্লাহ পাক বলেন তোমরা সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি মানুষের মঙ্গলের জন্যই তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে, তোমাদের শ্রেষ্ঠত্বের কারণ এই যে তোমরা সৎ কাজের আদেশ কর এবং অসৎ কাজের নিষেধ কর।(সুবহানাল্লাহ)
আল্লাহর রাস্তায় বের হয়ে নিজের জরুরতে ১ টাকা খরচ করলে সাত লক্ষ টাকা সদকা করার ছোয়াব আমলনামায় পাওয়া যায়। এ রাস্তায় বের হয়ে একটি আমলের বদৌলতে ৪৯ কোটি নেকি আমল আমল নামায় পাওয়া যায়। (সুবহানাল্লাহ)
সমাপ্ত।
সংগ্রহ বিশিষ্ট সাংবাদিক মুহতারাম তুফায়েল গাজালী সাহেবের টাইমলাইন থেকে।
কপি
পেস্ট
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন