এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২৪

গ্রাম পরিচিতি- পর্ব-৩ "বেরইল-পলিতা" মাগুরা সদর, মাগুরা।,,,, তাজ আহমেদ ফেইসবুক থেকে

 গ্রাম পরিচিতি-

পর্ব-৩

"বেরইল-পলিতা"

মাগুরা সদর, মাগুরা।


তাজ আহমেদ 

উত্তরা, ঢাকা।


বেরইল-পলিতা একটি সমৃদ্ধ গ্রাম। 

ইতিহাস-ঐতিহ্য ছোট পরিসরে লেখা খুবই কষ্টসাধ্য। তদুপরি, আমি কোন পেশাদার লেখক নয়। মনের সুখেই লিখে থাকি। তত্ত্ব এবং তথ্যে কিছুটা ত্রুটি হতে পারে।

যা মার্জনীয়।


বেরইল নামে আমরা অধিকাংশজন জানি কিংবা গ্রামের পরিচয় দিয়ে থাকি। এমন কি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন জায়গাতেই বেরইল নামেই সমধিক পরিচিত এবং লিপিবদ্ধ।

গ্রামটির সঠিক নাম হবে "বেরইল-পলিতা"।


 কয়েকশ বছরের ইতিহাস সমৃদ্ধ গ্রাম এই বেরইল-পলিতা।

শুরুতে বিরুল অতপর বেরুল কালের বিবর্তনে আজ বেরইল-পলিতা নাম ধারণ করেছে। তবে অনেকেই বুরোল বিল হতে বেরইল শব্দটা এসেছে বলেও বলে থাকেন।


এই গ্রামের নামকরণের সঠিক সাল পাওয়া যায়নি, তবে ১৭৫৭ থেকে ১৮০০ সালের কোন এক সময় গ্রামটির নামকরণ হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। 


এক সময় হাসানগঞ্জ নামেও বেরইল-পলিতা কে নামকরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। 


শান্ত-নবগঙ্গা তীরের পলি মাটির গন্ধে গড়ে উঠেছে এই জনপদ। আদি থেকেই গ্রামীণ পরিবেশ ছিল খুবই সুখকর এবং শিক্ষা সমৃদ্ধ আধুনিক জনপদ।


বৃটিশ আমলের শেষের দিকেই মূলত গ্রামটি সবথেকে বেশি উন্নয়নের দিকে ধাবিত হতে থাকে।


যার মূল পুরোধা ছিলেন মৌলভী আব্দুল আওয়াল সাহেব।

যিনি বৃটিশ আমলের একদম শেষ সময়ে এই অঞ্চলের এম.এল.এ নির্বাচিত হন।


এছাড়াও......শেখ আব্দুল লতিফ, চান কাজী, আলী মিয়া, খন্দকার উমর আলী, খন্দকার কেরামত সাহেব, আতিয়ার রহমান নান্নু মিয়া, রেজাউল মিয়া, শেখ শফিকুল ইসলাম, খন্দকার মহব্বত আলী, কাজী তোহিদুল ইসলাম (প্লুটো কাজী), কাজী হুকায়েত হোসেন (রোকন কাজী),

অধ্যাপক মীর মাহাবুবুর রহমান,  প্রাক্তন প্রিন্সিপাল (মাগুরা হো শ সো সরকারী কলেজ এবং যশোর এম এম কলেজ)

সাহেবদের নাম সর্বাগ্রে উচ্চারিত হয়।


ইতিহাস সমৃদ্ধ এই  গ্রামটিতে ছোট বড় মিলিয়ে কমবেশি ১২ টি বংশের বসবাস আছে।

আদি বাস হিসাবে শিকদার বংশ প্রথম বসবাস শুরু করেন।

অতপর খন্দকার বংশ, মোল্যা বংশ, শেখ,  মির্জা, কাজী, মুন্সি , মিয়া, কাজী২, মোল্যা২, শেখ২, গাজী অত্যন্ত সম্মানিত বংশ হিসাবে বেশ সমাদৃত।


বেরইল পলিতা গ্রামের কাজী মমতাজুল হক এতদঅঞ্চলে প্রথম মুসলিম বি.এ পাশ ব্যক্তি ছিলেন। 

জনাব নাজির আহমেদ মিয়া ১৯২৫ সালে ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটির অধীনে মেট্রিকুলেশন পাশ ছিলেন। 

অধ্যাপক মুন্সি ছাদেক আলী,  কাজী হরমুজ উদ্দিন ছিলেন উচ্চ শিক্ষিত। 

কাজী হরমুজ উদ্দিন সেকালে যশোর অঞ্চলের ঋণ শালিশী বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন।

কাজী নজরুল ইসলাম- নহাটা রাণী পতিত পাবণী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্বনামধন্য শিক্ষক ছিলেন। স্কুলের ছেলে মেয়েদের সুন্দর হাতের লেখার জন্য অত্র অঞ্চলে যার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল।


খন্দকার কেরামত আলী, কাজী তারিকুজ্জামান,  কাজী সাইফুজ্জামান মন্নু স্যার,  কাজী মঞ্জুর, 

ডাঃ হাবিবুর রহমান (লুলু), ডাঃ মুজাহিদুল ইসলাম (প্লেটো),

অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমানও এই গ্রামের গর্বিত সন্তান।


মন্নু স্যার ছিলেন সেকালের কৃতি ফুটবল প্লেয়ার এবং তদপরবর্তী মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষক। 

অধ্যাপক ডাঃ হাবিবুর রহমান লুলু আমেরিকা প্রবাসী। যিনি আমেরিকাতে অত্যন্ত প্রসিদ্ধ একজন ডাক্তার। 

ডাঃ কাজী মুজাহিদুল ইসলাম অত্র অঞ্চলের গরীব-মেহনতি মানুষের চিকিৎসা সেবায় অত্যন্ত সু-পরিচিত নাম।

বিভাগীয় জেলা খুলানা'র খালিশপুরে উনার প্রতিষ্ঠিত "খালিশপুর ক্লিনিক" স্বাস্থ্য সেবায় নজীর স্থাপন করে চলেছেন আজও। অসুস্থতাজনিত যেকোন সু-পরামর্শ দেওয়াসহ প্রতিনিয়ত স্বল্পখরচে কখনও বিনামূল্যে এই সেবা উনি দিয়ে থাকেন।

 

বেরইল-পলিতা গ্রামে বৃটিশ আমলে মৌলভী আঃ আওয়াল সাহেবের হাতে প্রতিষ্ঠিত রয়েছে মেয়েদের প্রাথমীক বিদ্যালয়, দারুল হুদা ফাজিল মাদ্রাসা,  গ্লার্লস হাই স্কুলসহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মক্তব।

অত্যন্ত ক্ষণজন্মা এই মানুষটি মাত্র ৪৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।


এছাড়াও অত্র গ্রামে ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াহেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। 

১৯৮৭ সালে নাজির আহমেদ ডিগ্রি কলেজ। প্রতিষ্ঠাতা   প্রয়াত আতিয়ার রহমান নান্নু মিয়া। যিনি অত্র ইউনিয়নের ৪ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যানও ছিলেন। 

তাছাড়া স্বনামধন্য ব্যবসায়ী হিসাবেও সহোদর চুন্নু মিয়াসহ উনি সু-পরিচিত ছিলেন।

উল্লেখ্য গার্লস স্কুল,  ফাজিল মাদ্রাসা এবং গার্লস প্রায়মারী স্কুল স্থাপিত হয়েছে ১৯৩৭ সালে।


সর্বশেষ গ্রামের শিকদার পাড়াতে মীর মাহাবুবুর রহমান আরেকটি সম্মিলনী দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত করেছেন।


খেলাধুলাতেও রয়েছে বেশ পরিচিতি। প্রায় শত বছ র পূর্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বেরইল সুন্দরবন ক্লাব। 


বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে রয়েছে গৌরব উজ্জ্বল বীরোচিত ইতিহাস এবং ঐতিহ্য; বেরইল-পলিতা গ্রামকে ঘিরে।  বেশ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্ম হয়েছে এই গ্রামে। 

শহীদ মির্জা আকরাম হোসেন(মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক), কাজী সাজ্জাদ হোসেন, কবি কাজী আজাদ,

কাজী কবীর ( দঃ পাড়া),  মির্জা আতিয়ার রহমান,  মির্জা ইউনুস, আঃ হক মিয়া, আঃ হাকিম মিয়া, আতিয়ার রহমান মিয়া, হাফিজার মিয়া, মির্জা আলী হোসেন,  খন্দকার জবের, মুন্সি রাশেদ, নাজির মুন্সি উল্লেখযোগ্য।


 উৎসর্গঃ সদ্য প্রয়াত বেরইল মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজবাহার ভাইকে।  শিক্ষা এবং ছাত্র-ছাত্রী বান্ধব জনপ্রিয় শিক্ষক ছিলেন। উনার বিদেহী আত্নার শান্তি কামনা করে শেষ করছি। আমিন। ছুম্মা আমিন।


০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ইং।

ফেইসবুক থেকে নেওয়া 




কোন মন্তব্য নেই:

রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ ২৫-০৬-২০২৫

 রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ ২৫-০৬-২০২৫ আজকের সংবাদ শিরোনাম বিশ্ব পরিবেশ দিবসের উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা --- পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টি...