#বরবটি_কিভাবে_আবাদ_চাষাবাদ_করবেন:
#জলবায়ুঃ
অপেক্ষাকৃত উচ্চ তাপমাত্রায় বরবটি ভালো জন্মে। উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় বরবটি গাছ ভালো জন্মে।
#মাটিঃ
দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি বরবটি চাষের জন্য উপযোগী। মাটির পিএইচ ৫.৫ থেকে ৭.৫-এর মধ্যে হলে সেসব মাটিতে বরবটি চাষ করা যায়।
বীজ বপনের সময়ঃ
বরবটির বীজ বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে উপযুক্ত সময়।
তবে আশ্বিন-কার্তিক মাসেও বীজ বপন করা যায়।
#বরবরি_জাতঃ
নাইস গ্রীন/ বান্টি/ লালতীর -১০৭০/শক্তি / কেগরনাটকি/আলো/ তন্নী/বারি বরবটি-১/সবুজ সংকেত/কেগর নাটকী/ গ্রীন ফিল্ড/ ইউনাইটেড-৫৮/ ইউনাইটেড-৫৭০/ /স্টিকলেস/গ্রীণ-১১২০/বরবটি-৫০৫
#জমি_তৈরিঃ
জমি পরিষ্কার করে ৪ থেকে ৫টি চাষ ও মই দিয়ে ভালোভাবে জমি তৈরি করতে হবে। সার মিশিয়ে জমি সমান করার পর তা বেড আকারে খন্ড করতে হবে।
#বেড তৈরিঃ
বেডের আকার হবে ১ মিটার চওড়া ও জমির দৈর্ঘ্য অনুযায়ী লম্বা। প্রতি বেডের মাঝে ৫০ সেন্টিমিটার চওড়া নালা থাকবে। নালার গভীরতা হবে ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার। নালার মাটি তুলে দুপাশের বেড উঁচু করে দিতে হবে। প্রতি বেডের মাঝে ৬০ সেন্টিমিটার দূরত্ব রেখে জোড়া সারি দাগ টানতে হবে।
#বীজ_বপনঃ
সারিতে ৩০ সেন্টিমিটার পর পর ১টি করে বীজ বুনে দিতে হবে। একই সময় পলিব্যাগে কিছু চারা তৈরি করে রাখলে যেসব জায়গায় বীজ গজাবে না সেসব ফাঁকা জায়গায় পলিব্যাগের চারা রোপণ করে পূরণ করা যাবে। মার্চ থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে সাধারণত বরবটির বীজ বোনা হয়।
#বীজ হারঃ
শতক প্রতি ৪০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন।
#রোপণ দূরত্বঃ
বরবটি সারি থেকে সারি ৬০ সেন্টিমিটার দূরত্বে বীজ/চারা ৩০ সেন্টিমিটার দূরে দূরে বীজ বুনতে হয়।
#সার পরিমান
প্রতি শতকে সারের পরিমান:
গোবর ৪০ কেজি
ইউরিয়া ৮০০ গ্রাম
টিএসপি ৮০০ গ্রাম
পটাশ ৭৫০ গ্রাম
জিপসাম ৩০০ গ্রাম
জিংক ৩০ গ্রাম
বোরন ৩০ গ্রাম
বিঘা প্রতি ৩৩ শতকে সারের পরিমান:
গোবর ১২০০ কেজি
ইউরিয়া ২৫ কেজি
টিএসপি ২৫ কেজি
পটাশ ২২ কেজি
জিপসাম ১০ কেজি
জিংক ১ কেজি
বোরন ১ কেজি
#সার_প্রয়োগ_পদ্ধতিঃ
জমি তৈরির সময় সম্পূর্ণ গোবর সার, টিএসপি, জিপসাম, বোরন, জিংক অক্সাইড এবং ১/৩ ভাগ এমওপি সার বীজ বপনের পূর্বে জমির সাথে ভাল ভাবে মিশিয়ে দিতে হবে । পরবর্তীতে ইউরিয়া এবং এমওপি সার বীজ বপনের ২০ এবং ৪০ দিন পর অর্থাৎ চারার বৃদ্ধি পর্যায়ে, ফুল- ফল ধরার সময় দুই ভাগ করে প্রয়োগ করতে হবে।
#সেচঃ
জমিতে পানির যাতে অভাব না হয় সেজন্য প্রয়োজন অনুসারে শুকনার সময় সেচ দিতে হবে। নালার মধ্যে পানি ঢুকিয়ে সেচ দিলে গাছের শিকড় সে পানি টেনে নিতে পারে।
#পানি_নিষ্কাশনঃ
বৃষ্টির পানি যাতে আটকে না থাকে সেজন্য নালার আগাছাও পরিষ্কার করে দিতে হবে ।
#আগাছা_পরিষ্কারঃ
জমি সব সময় আগাছা পরিষ্কার রাখতে হবে। বিশেষ করে গাছের গোড়ার আগাছা পরিষ্কার রাখতে হবে।
#বাউনি_দেয়াঃ
চারা বড় হলে মাচা বা বাউনি দিতে হবে। ঠিকমতো বাইতে পারলে বীজ বোনার ৪০-৪৫ দিন পরই ফুল-ফল ধরে। না হলে ফল ধরতে দেরি হয়ে যায়। প্রতি বেডের ঠিক মাঝখানে বা বরবটির দুটির সারির মাঝে বেডের দুপাশে ১.৫ মিটার লম্বা দুটি বাঁশের খুঁটি পুঁতে তার মাথায় শক্ত জিআই তার টেনে বাউনির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সারিতে প্রতি দুটি বরবটি গাছের মাঝে একটি করে কাঠি বা কঞ্চি পুঁতে সেসব কাঠির মাথা জিআই তারের সাথে ইংরেজী ‘এ’ অক্ষরের মতো বেঁধে তার সাথে গাছ লতিয়ে দেয়া যেতে পারে। বরবটির জন্য বাউনি খুব গুরুত্বপূর্ণ। বরবটির লতা যত বেশি মুক্তভাবে বাইতে পারে তত বেশি ফলন বাড়ে।
#ফসল তোলাঃ
বীজ বোনার ৪০ থেকে ৪৫ দিন পর থেকেই বরবটি তোলা শুরু করা যায়। হাত দিয়ে বোঁটা ছিঁড়ে বরবটি তোলা যায়। তবে ছুরি দিয়ে বোঁটা কেটে তোলা ভালো। এতে গাছের ক্ষতি কম হয়। কচি অবস্থায় ফল তুলতে হবে। যখন দেখা যাবে ফলে বীজ গঠিত হয়েছে কিন্তু বীজ পুষ্ট ও পরিপূর্ণভাবে বড় হয়নি, খোসার রং স্বাভাবিক সবুজ আছে, বরবটির খোসা মসৃণ আছে, বীজ ফুলে যাওয়ায় বরবটি গিঁট গিঁট ও কুঁচকানো হয়নি এরূপ অবস্থায় বরবটি তুলতে হবে।
#ফলনঃ
হেক্টরপ্রতি ১৬ থেকে ১৭ টন।
নতুন কোন ভালো জাত থাকলে কমেন্টে জানাবেন
মোঃ ফরিদুল ইসলাম
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা
ব্লকঃ ভোটমারী,কালিগঞ্জ, লালমনিরহাট।
ফেইসবুক থেকে নেওয়া
![]() |
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন