চশমা পরা মেয়েটি বুয়েটর ছাত্রী শোভা।
২য় ছবিটি তার মা প্রতিমা রানী দাশের।
অনেকেই এদের চিনে থাকবেন। বছরখানেক আগে ভাইরাল হওয়া, অভিনন্দন এর জোয়ারে ভাসা মা মেয়ের গল্প
শোভা যখন গর্ভে তখন প্রতিমা রানীর স্বামী মারা যান। স্বামীর বাড়িতে ভালো সম্পত্তি'ই ছিলো; কিন্তু সবকিছু থেকে বঞ্চিত করে গর্ভবতী প্রতিমাকে স্বামীর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তারপর গিয়ে উঠেন বাপের বাড়ি। কিছুদিন থাকার পরে আপদ মনে করে গুনধর ভাইও তাদের তাড়িয়ে দেন।
এরপর তারা আশ্রয়ের খোঁজে উঠেন প্রতিমা রানীর পিসির বাড়িতে। সেখানে কিছুদিন থাকতে পারে কিন্তু কতদিনই বা পরের বাড়িতে থাকা যায়। গৃহপরিচারিকার কাজ নিয়ে চলে যান। তাদের ছোট একটা বারান্দায় থাকেন মা মেয়ে। কিন্তু একজনে কাজ করে দুজনকে খাবার দিতে নারাজ গৃহিণী। ফলে এই চাকরি চলে যায়। এরপর অপমান লজ্জার মাথা খেয়ে আবার ভাইয়ের কাছে থাকার জন্য ভিক্ষা চাইতে হয়। কদিন থাকার পরে সামান্য কারনে আবার বাড়ি থেকে বের করে দেন।
স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রতিবেশীরা তাকে বিয়ে দিতে চায়। মেয়ের নিরাপত্তার কথা ভেবে ২য় বিয়েতে রাজী হন মা। স্বামী চালচুলোহীন চা দোকানে কাজ করেন। একদিন কাজ করে তো দুইদিন বসে থাকে। তবে প্রতিনিয়ত ঝগড়া এবং স্ত্রীকে মারধরে বেশ কামেল লোক ছিলেন তিনি। সপ্তম শ্রেণি থেকে টিউশনি করতে হয় শোভাকে। পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পাওয়া শোভার যেদিন এসএসসির পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষা সেদিন সৎপিতাও তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেন। সারারাত না পড়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে সকালে পরীক্ষা দিতে হয় শোভাকে। কিন্তু যাবে আর কোথায় তার মায়ের তো আর নিজের জায়গাজমি নাই। তাই শত অপমান লাঞ্ছনা সহ্য করেও ফিরতে হয় সেই সৎবাবার কাছেই।
এসএসসিতে গোল্ডেন প্লাস পাওয়ার রেজাল্টের দিনও তাদেরকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর তারা স্থায়ীভাবে সৎবাবার ঘর ছেড়ে চলে আসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে। তার মা কাজ নেন চকলেট আচারের কারখানায়। অর্থকষ্ট, পুষ্টিকর খাবারের অভাবে মা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। মেয়েরও হাড্ডিসার অবস্থা। এখান থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে চান্স হয় বুয়েটে।"
তাই ভেঙে পড়া যাবেনা কোন অবস্থাতেই লেগে থাকেন আপনি হাল না ছাড়লে ঈশ্বর আপনাকে ঠিক দেখবেন একদিন।
সংগৃহীত তথ্যঃ
ফেইসবুক থেকে নেওয়া
![]() |
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন