এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৪

ঢাকা পাচাস বারাস পেহলে' এবং একজন হেকিম হাবিবুর রহমান।

 'ঢাকা পাচাস বারাস পেহলে' এবং একজন হেকিম হাবিবুর রহমান।


১৯৪৫ সালে অল ইন্ডিয়া রেডিওর ঢাকা কেন্দ্রে প্রচারিত কথিকা-সিরিজ ‘ঢাকা আজছে পাচাস বারাস পেহলে’ ছিল হেকিম হাবিবুর রহমানের প্রত্যক্ষ করা ঘটনার ধারাভাষ্য। ১৯৪৯ সালে ওই কথিকা ‘ঢাকা পাচাস বারাস পেহলে’ নামে মুদ্রিত আকারে প্রকাশিত হয়। ওই পুস্তকে ঊনিশ শতকের শেষ দশক আগের ঢাকার সমকালীন সমাজ, সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রামাণ্য বিবরণ বিধৃত হয়েছে। এ গ্রন্থে সমকালীন ইতিহাসের এমন অনেক ঘটনা ও বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে, যা সচরাচর প্রাপ্ত ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হয়নি। সেদিক থেকে এই পুস্তকটির গুরুত্ব অপরিসীম। 


ড. মো. রেজাউল করিম মূল উর্দু ভাষা থেকে বইটি বাংলায় অনুবাদ করেন। গ্রন্থে ১৬টি অনুচ্ছেদে যথাক্রমে ইতিহাসের দৃষ্টিতে ঢাকা, ঢাকার শিল্প(মসলিন), টুপির কাহিনী, রমজান আগমন, ঢাকার রুটি, খাদ্য পরিবেশন, ঢাকার বিশিষ্ট খাবার, প্রসিদ্ধ খাবার, মিষ্টান্ন, পেশা, কুস্তি ও ব্যায়াম, খেলাধূলা, সংগীত, মেলা-পার্বণ, তবলা ও গান এবং হুক্কা, পান, চা প্রভৃতি বিষয়ে বিবরণ রয়েছে। গ্রন্থে ১৮৯৫ সালের ঢাকার ইতিহাস, সমাজ-সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রা বিষয়ে লেখকের প্রত্যক্ষ করা ঘটনার বিবরণ স্থান পেয়েছে। 


বিশ শতকের প্রথমার্ধে ঢাকা শহরে হেকিম হাবিব ছিলেন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তিনি শুধু একজন চিকিৎসকই নন, ছিলেন রাজনৈতিক নেতা, ইতিহাসবিদ, সাহিত্যসেবী ও সমাজকর্মী। ১৮৮১ সালে ছোট কাটরায় তাঁর জন্ম। ঢাকা সরকারি মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পর কানপুরে হজরত আশরাফ আলী থানভীর (র.) কাছ থেকে আরবি ব্যাকরণ ও লক্ষ্ণৌ, দিল্লি, আগ্রা থেকে ইউনানি চিকিৎসায় জ্ঞানার্জন করে ১৯০৪ সালে ঢাকায় ফিরে আসেন। ঢাকায় এসে ইউনানি চিকিৎসক হিসেবে এত খ্যাতি অর্জন করেন যে ব্রিটিশ সরকার ১৯৩৯ সালে তাঁকে ‘শাফাউল্ মুলক’ উপাধিতে ভূষিত করেন। 


হেকিম হাবিবুর রহমান নওয়াব সলিমুল্লাহর একজন রাজনৈতিক পরামর্শদাতা ছিলেন, পাশাপাশি গ্রন্থ রচনায়ও মনোনিবেশ করেন। অনেক লেখার মধ্যে ঢাকা সম্পর্কিত তাঁর দুটি বিখ্যাত বই হলো—আসুদগান-এ-ঢাকা (১৯৪৬) ও ঢাকা পাচাস বারাস পেহলে (১৯৪৯)। তাঁর কিছু অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে রক্ষিত আছে। ১৯০৬ সালে ঢাকা থেকে তিনি ‘আল মাশরিক’ নামক একটি উর্দু মাসিক পত্রিকা সম্পাদনা করেন। ১৯২৪ সালে খাজা আদেলের সঙ্গে যৌথভাবে ‘জাদু’ নামের অন্য একটি মাসিক পত্রিকাও প্রকাশ করেন।


তার প্রতিষ্ঠিত তিব্বিয়া হাবিবিয়া কলেজ বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো ইউনানি মেডিকেল কলেজ। এই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ইউনানি চিকিৎসার পথিকৃৎ। এখানে পড়াশোনা করা চিকিৎসকরা ডিপ্লোমা ইন ইউনানি মেডিসিন এন্ড সার্জারি উপাধি পেতো। এরই সাফল্যে পরবর্তীতে মিরপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইউনানি মেডিকেল কলেজে স্থাপন করে ব্যাচেলর ইন ইউনানি মেডিসিন এন্ড সার্জারি ডিগ্রি প্রদান করা শুরু হয়। 


দীর্ঘ ৪০বছর তিনি বঙ্গে লিখিত আরবি, ফারসি ও উর্দু বই সংগ্রহ করে 'সুলাসা গুসালা' নামে একটি ক্যাটালগ প্রকাশ করেন। ইনশায়ে শায়েকে মীর্জা গালিব ও ১৯শতকে ঢাকার উর্দু কবি খাজা হায়দার জান শায়েকের মধ্যকার পত্রাবলি তিনি সঙ্কলন করেন। তিনি উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক নিদর্শন ও মুদ্রা সংগ্রহ করেছেন। ১৯৩৬ সালে তিনি স্বর্ণ ও রৌপ্য মিলিয়ে মোট ২৩১টি পুরনো মুদ্রা ঢাকা জাদুঘরে দান করে যান। ১৯৪৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।


তথ্যসূত্র: 

ক। বাংলাপিডিয়া 

খ। ঢাকা পঞ্চাশ বছর আগে, প্রথমা প্রকাশনী

গ। ঢাকা পাচাস বারাস পেহলে, হাশেম সুফি।





কোন মন্তব্য নেই:

রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ ২৫-০৬-২০২৫

 রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ ২৫-০৬-২০২৫ আজকের সংবাদ শিরোনাম বিশ্ব পরিবেশ দিবসের উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা --- পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টি...