" সারা মেঘালয় জুড়েই ছড়িয়ে রয়েছে জীবন্ত সেতু, যা দিয়ে নিশ্চিন্তে পারাপার হন স্থানীয় বাসিন্দারা "
************************************
সাধারণভাবে আমরা আমাদের চারপাশে কংক্রিট বা লোহার তৈরি ব্রিজ দেখে থাকি। কিন্তু ভারতবর্ষের মেঘালয় রাজ্যে এমনই একটি ব্রিজ দেখতে পাওয়া যায় যাকে জীবন্ত ব্রিজ বলে মনে করা হয়। ঝুলন্ত এই ব্রিজ মেঘালয়ের অনেক মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম।
সমগ্র মেঘালয় রাজ্যের ৭২টি গ্রামজুড়ে বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১০০টি জীবন্ত ব্রিজ আছে। এই সেতুগুলোর কারণে সম্প্রতি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের অস্থায়ী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে মেঘালয়। এই সেতুগুলোর নাম দেওয়া হয়েছে ‘জিংকিয়েং জেরি: লিভিং রুট ব্রিজ কালচারাল ল্যান্ডস্কেপস অব মেঘালয়’।
সেতুগুলো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবেই তৈরি হয়েছে। কবে ও কীভাবে এসব সেতু তৈরি হয়েছে তা জানা সম্ভব না হলেও চেরাপুঞ্জির সেতুগুলোর প্রথম লিখিত প্রমাণ ১৮৪৪ সালের এশিয়াটিক সোসাইটি অব বেঙ্গল জার্নালে পাওয়া যায়।
সেখানে আদিবাসী খাসি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির মানুষরা বসবাস করেন। ইউনেস্কোর মতে, ‘এই কাঠামোগত ইকোসিস্টেম শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চরম জলবায়ু পরিস্থিতিতে মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে এক গভীর সম্প্রীতি ঘটিয়েছে।’
শুধুমাত্র মেঘালয়েই নয় বরং এ ধরনের জীবন্ত সেতু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সমস্ত আর্দ্র অঞ্চলেই দেখা যায়। মেঘালয়ের এই সেতুগুলো আশপাশের ৭৫টিরও বেশি প্রত্যন্ত গ্রামে সংযোগের সুবিধা দেয়। এখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা নিশ্চিন্ত এই সেতু পারাপার করতে পারেন।
এ ধরনের সাসপেনশন ব্রিজগুলি মূলত নদীর নিকটবর্তী বিভিন্ন শক্তপোক্ত গাছগুলির শিকড় ও ডালপালাকে একসঙ্গে মিলিয়ে তৈরি করা হয়।আদ্র অঞ্চলের এই গাছের শিকড় ও ডালপালাগুলি এতটাই মজবুত হয় যে নিশ্চিন্তে এই ব্রিজটির ওপর দিয়ে মানুষ একস্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে।
এ ধরনের সেতুগুলো খুবই মজবুত হয়। মেঘালয়ের সবচেয়ে বড় লিভিং রুট ব্রিটটির বয়স আনুমানিক ১৫০ বছরেরও বেশি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। একসঙ্গে ৫০ জন এই সেতু দিয়ে চলাচল করতে পারেন।
মেঘালয়ের পর্বতময় ভূ-খণ্ডগুলোতে ছোট ছোট নদী বা নালার এপার ওপারের মধ্যে যোগাযোগ রাখতে স্থানীয় আদিবাসীরা রাবার গাছের শেকড় দিয়েই মূলত তৈরি করেছে এই প্রাকৃতিক সেতু। যা দেখতে প্রতিদিন কয়েক হাজার পর্যটক এসে ভিড় করেন। মেঘালয়ের রাজধানী শিলং থেকে ৯২ কিলোমিটার দক্ষিণে মাওলিনং গ্রামে এই সেতুর অস্তিত্ব সবথেকে বেশি দেখা যায়।
ফেইসবুক থেকে নেওয়া
![]() |
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন