"যতোই উপকারি হোক গরীবেও মোটা চাইলের ভাত খেতে চায় না; কেউ কিনে না চামারা ধান। নিজেদের পিঠা খেতে হয় তাই এখনও আবাদ করি " এক চামারা চাষির আক্ষেপ। এ যেন সৈয়দ মুজতবা আলী বর্ণিত সেই অচ্ছেদ্য চক্র।
গভীর পানির ধান চামারা । বন্যার পানিতেও টিকে থাকার অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে চামারার; পানি বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে ধানগাছ। গভীর পানিতে আবাদ হয় তাই চামারা ধান চাষ করতে রাসায়নিক সার বি*ষ লাগে না।
টাঙ্গাইল , মানিকগঞ্জ, ঢাকা জেলার নদীর তীরবর্তী নিম্নভূমিতে এই ধানের আবাদ এখনও টিকে আছে।
এই ধানের চাল মোটা ও লাল রঙের হয়। এই চালের ভাত মিঠা স্বাদের। চামারা চাল পুষ্টি সমৃদ্ধ তো বটেই, স্বাদও দারুন। এর খিচুড়ি অসাধারণ, পিঠাও সুস্বাদু।
বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেক জমি প্লাবন সমভূমি। এই জমিগুলি আমন মৌসুমে অনাবাদী থাকে কারণ পানিতে যে ধানগুলি হয় তার চাল মোটা। যতোই উপকারি হোক মোটা চাল গরীবেও খায় না। সবাই ফেয়ার এন্ড লাভলী মার্কা সাদার চেয়েও বেশি সাদা চিকন চালের ধান খেতে চায়।
খাদ্যাভাস পরিবর্তনের কারণে চামারা সহ অন্যান্য পানির ধানের আবাদ কমে গেছে; উপযোগিতা হারাইছে মিনিকেটের কাছে। অথচ চামারার স্বাদ বুঝাতেই এই গ্রাম্য বচন আছে- "ইস্টির মধ্যে মামারা যদি থাকে নানি, ধানের মধ্যে চামারা যদি থাকে পানি"
সচেতন হোন দিনে অন্তত একবেলা লাল চালের ভাত বা পান্তা খান। শিশু ও গর্ভবতী মায়ের ভাতের থালায় লাল চালের ভাত দিন।
তথ্যসূত্রঃ ১. জাগরনীয়া.কম ২.প্রিয়.কম ৩. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন।
ছবি- গভীর পানির চামারা ফুল ফাইবার মোটা চাল।
লেখা- হাসান মেহেদি (সংশোধিত)
ছবি: অনুপ বিশ্বাস এবং অন্যান্য।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন