ইপসম সল্ট (ম্যাগনেসিয়াম সালফেট)
![]() |
এপসম সল্ট হচ্ছে একটি রাসায়নিক যৌগ যেখানে ম্যাগনেসিয়াম, সালফার ও অক্সিজেন রয়েছে। ইপসম সল্ট বা ম্যাগনেশিয়াম সালফেট গাছের জন্য বেশ উপকারী একটি জিনিস। এর ব্যবহার জানা থাকলে গাছের অনেক সমস্যার সহজেই সমাধান করা যায়।
ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে গাছে কিছু লক্ষণ দেখা যায়। যার মাধ্যমে বুঝতে হবে গাছে ম্যাগনেসিয়ামের অভাব হয়েছে। আসুন জেনে নিই লক্ষণ গুলো:
* পুরোনো গাছ ঝিমিয়ে পড়লে
* টবে বসানো নতুন চারা ঝিমিয়ে পড়লে
* গাছের পাতার রং ফ্যাকাশে বা হলুদ হয়ে গেলে
* গাছের পাতা কুঁকড়ে গেলে
* গাছের বৃদ্ধি কমে গেলে
* গাছ দুর্বল হয়ে গেলে
* গাছের ফুল, ফল কম হলে বা ছোট হলে
এইসব লক্ষণ দেখা দিলে বুঝতে হবে গাছে ম্যাগনেসিয়াম সালফেটের অভাব হয়েছে।
ব্যবহার: ৩ ভাবে এপসম সল্ট গাছে ব্যবহার করা যায়।
১. স্প্রে এর মাধ্যমে পাতায় ব্যবহার
২. পানিতে মিশিয়ে টবের মাটিতে ব্যবহার
৩. রিপটিং এর সময় সরাসরি মাটিতে ব্যবহার।
১. স্প্রে এর মাধ্যমে পাতায় ব্যবহারের নিয়ম
এক লিটার পানিতে ১ টেবিল চামচ এপসম সল্ট নিয়ে ভালো ভাবে মিশিয়ে পাতায় ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।
* মাসে ১ বার। গাছের যতই সমস্যা থাকুক না কেন ১ বারের বেশি স্প্রে করা যাবে না।
* ভোর বেলা অথবা সন্ধ্যার সময় এই স্প্রে করতে হবে।
কখনোই রোদ্রের মাঝে স্প্রে করা যাবে না।
এপসম সল্ট স্প্রে করার ৩ দিন আগে ও ৩ দিন পরে অন্য কোনো সার বা কীটনাশক বা অন্য কোনো কিছু গাছে স্প্রে করা যাবে না।
২. টবের মাটিতে ব্যবহারের নিয়ম
এক লিটার পানিতে ২ টেবিল চামুচ এপসম সল্ট নিয়ে ভালো ভাবে মিশিয়ে টবের মাটিতে দিতে হবে।
* অথবা সরাসরি টবের মাটিতেও দেয়া যাবে। সেক্ষেত্রে টবের ওপরের মাটি আগে নিড়ানি (টবের ওপরের মাটি খুঁচিয়ে নেয়া) দিয়ে নিতে হবে। তারপর ১০ ইঞ্চি / ১২ ইঞ্চি টবের জন্য ১ চামচ এবং এর ছোট টবে হাফ চা চামুচ এপসম সল্ট দিতে হবে। এরপর মাটির সাথে মিশিয়ে ভালোভাবে পানি দিয়ে দিতে হবে।
* মাসে ১ বার ব্যবহার করতে হবে।
৩. রিপটিং এর সময় সরাসরি মাটিতে ব্যবহারের নিয়ম
রিপটিং শক অর্থাৎ টবে নতুন কোনো চারা বসালে বা পুরোনো কোনো গাছ বড় টবে রিপটিং করার সময় অনেক সময় গাছ ঝিমিয়ে পরে। এটা রিপটিং শকের কারণে হয়ে থাকে।
ব্যবহারের নিয়ম : প্রতি টবের মাটির সাথে ১/২ চামচ এপসম সল্ট ব্যবহার করতে হবে।
* সব ধরনের গাছে যেমন ইন্ডোর প্ল্যান্ট,আউটডোর প্ল্যান্ট, ফুল গাছ , ফল গাছ , সবজি গাছে দেয়া যাবে।
সতর্কতা:
যে সবজি গুলো সরাসরি বা রান্না করে খাওয়া হয় যেমন বিভিন্ন ধরণের শাক, শশা, ধনিয়া পাতা ইত্যাদি তে এপসম সল্ট স্প্রে না করে মাটিতে দেয়া ভালো।
উপকারিতা :
* গাছের সালোক সংশ্লেষণে ইপসম সল্ট বেশ ভালো কাজ করে।
* এটির প্রয়োগে ফলের মিষ্টতা বাড়ে। সেইসঙ্গে ফল, ফুল ঝরে পড়াও কমায়।
* অনেক সময় টবের মাটি থেকে গাছ নাইট্রোজেন ও ফসফরাস নিতে পারে না। ইপসম সল্ট এ ক্ষেত্রে ভালো মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
* টবে আগাছা হতে দেয় না।
* কিছু পোকার আক্রমণের হাত থেকে গাছকে রক্ষা করে, এটি গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
*গাছের পাতার রং সুন্দর এবং উজ্জ্বল (চকচকে) হয়।
*গাছকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
* ফুলের রং গাড়ো এবং উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
* ফুল ও ফলের আকার বড় হতে সাহায্য করে।
* শিম জাতীয় গাছের পচন রোধ করে ইপসম সল্ট।
🪴 ইপসম সল্ট ৯০ টাকা কেজি
🪴 ভার্মি কম্পোস্ট ১০ টাকা কেজি
🪴 হাড়ের গুড়া ৪৫ টাকা কেজি
🪴 শিং কুচি ৯৫ টাকা কেজি
🪴 নিম খৈল ৯৫ টাকা কেজি
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন