গল্প থেকে শিক্ষা
একজন ব্যক্তি ছিলেন, তার নাম ছিল সূরদাস। তিনি জন্ম থেকেই অন্ধ ছিলেন। তবে সূরদাস ছিলেন অত্যন্ত বুদ্ধিমান। অনেক কষ্ট করে তিনি পড়াশোনা শিখেছিলেন এবং বিবাহযোগ্য হয়ে ওঠেন। সূরদাসের বাবা-মা তার বিয়ে ঠিক করেন। তার স্ত্রী সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন এবং সূরদাসের বুদ্ধিমত্তায় মুগ্ধ হয়ে তাকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।
বিয়ের পর দুজনের জীবন সুন্দরভাবে চলতে থাকে। সূরদাসের স্ত্রী প্রতিটি কাজে তাকে সাহায্য করতেন।
কিছুদিন পর তাদের ঘর আলো করে এক পুত্রসন্তান জন্ম নেয়। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, সূরদাসের স্ত্রী একদিন চোখের রোগে আক্রান্ত হন এবং দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। ফলে, দুজনের জীবন খুব কঠিন হয়ে পড়ে। স্ত্রী যখন রান্না করতেন, তখন কুকুর এসে খাবার খেয়ে যেত, যার ফলে তারা না খেয়েই থাকতেন।
একদিন সূরদাস গ্রামের এক জ্ঞানী ব্যক্তির কাছে গেলেন এবং নিজের দুঃখের কথা বললেন। সেই ব্যক্তি তাকে পরামর্শ দিলেন, “যখন তোমার স্ত্রী রান্না করবে, তখন তুমি ঘরের দোরগোড়ায় বসে লাঠি পেটাতে থাকো। এতে কুকুর ভয় পাবে এবং ঘরে আসবে না।”
সূরদাস এই উপদেশ মেনে চলতে শুরু করলেন। কিছুদিন এভাবেই চলল। তবে একদিন সূরদাস ও তার স্ত্রী মারা যান, আর তাদের ছোট সন্তান একা হয়ে গেল।
গ্রামের লোকেরা সেই ছেলেটির যত্ন নিল এবং বড় হয়ে গেলে তার বিয়ে দিয়ে দিল।
বিয়ের পর সূরদাসের ছেলে দেখল, তার মা রান্না করার সময় তার বাবা দোরগোড়ায় বসে লাঠি পেটাতেন। তাই সে নিজেও একই কাজ করতে লাগল, যদিও তার চোখ একেবারে সুস্থ ছিল।
একদিন এক গ্রাম্য বৃদ্ধ ছেলেটিকে এমন করতে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি এটা কেন করছো?”
ছেলেটি উত্তর দিল, “আমি জানি না, তবে আমার বাবা এমন করতেন, তাই আমিও করছি।”
তখন বৃদ্ধ হেসে বললেন, “আমি তোমার বাবাকে এই কাজ করতে বলেছিলাম, কারণ তোমার বাবা-মায়ের চোখ ছিল না। কুকুর যেন খাবার না খেয়ে নেয়, সে জন্যই তোমার বাবা লাঠি পেটাতেন। কিন্তু তুমি তো দেখতে পাও! তোমার এটা করার কোনো প্রয়োজন নেই।”
এই কথা শুনে সূরদাসের ছেলে হতবাক হয়ে গেল এবং সে তখনই সেই অভ্যাস বন্ধ করে দিল।
নৈতিক শিক্ষা:
কোনো কাজ করার আগে আমাদের জানতে হবে কেন সেটি করছি। না জেনে কোনো কাজ করাটা ভুল হতে পারে।।।
#অনুপ্রেরণা #মোটিভেশনাল
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন