♦️♦️সন্তান জন্মদানে অক্ষম পুরুষের যেমন বিয়ে করার অধিকার নেই। সংসার দিতে অক্ষম পুরুষেরও বিয়ে করার কোনো অধিকার থাকতে নেই।
প্রত্যেক বিবাহিত মেয়েদের সংসার হচ্ছে তার বিবাহগত অধিকার। কোনো মানুষকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করলে আপনাকে জবাবদিহিতা করতে হবে।
প্রতিটি মেয়েদের বিয়ে হলে একটা আলাদা সংসার সাজাতে দেওয়া উচিত। অথচ আমাদের সমাজে বেশির ভাগ মেয়েদের বিবাহিত জীবন পার করতে শ্বাশুড়ি মায়ের সংসারে।
মায়ের সংসার, শাশুড়ীর সংসার দেখতে দেখতে একটা মেয়ের আর সংসার হয়ে উঠে না। সে হয়ে উঠে আরেক মা না হয় আরেক শাশুড়ী। কিন্তু ঘরের বউদের আর কোন সংসার হয় না। এভাবেই বছর ঘুরে চলে সাইকেল। কেন কেউ চায় না এভাবে জানি না।
আমি এক আপুকে চিনি। বিয়ের পর স্বামী তিনমাস দেশে থাকার পর বিদেশ চলে গেছে বউকে শ্বশুর বাড়ি রেখে। বিয়ে নামক সার্টিফিকেট কাঁধে ঝুলিয়ে মেয়েটা বাবার বাড়িতেই থেকে গেল।
বর তিন বছর পর পর আসে আর তাকে একটা সন্তান উপহার দিয়ে চলে যায়। বারো বছরের বিবাহিত জীবনে সে তিন সন্তানের মা হয়। অথচ তার নিজের কোনো সংসার হয় না।
সে ভ্রাম্যমান জীবনযাপন করে। কিছু দিন বাবার বাড়ি, কিছুদিন শ্বশুর বাড়ি, কিছু দিন বোনের বাড়ি করে। ভাইয়ের বাড়ি এসে অধিকার ফলালে ভাইয়ের বউর মন খারাপ। শ্বশুর বাড়ি এসে অধিকার ফলালে জায়ের মন খারাপ।
সে শিকড়বিহীন পরগাছার মতো একডাল থেকে আরেক ডালে ছুটে বেড়ায়। তার সব হয়, অথচ সংসার হয় না।
শ্বাশুড়ি মায়েদের সংসারে মেয়েদের কত কিছু নেই। সবচেয়ে বড় কথা তাদের একটা সংসার নেই। অথচ সংসারের প্রধান উপকরন স্বামী ও সন্তান সবই আছে।
নিজের সংসারের শখের জিনিস কিনতে পারার যে আনন্দে, সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিস অপছন্দ হলে যে বেদনা। যে কখনো কিনতে পারেনি, বা যার কখনো কেনার প্রয়োজন হয়নি, সে এই নির্মল আনন্দ থেকে, পরিচ্ছন্ন বেদনা থেকে বঞ্চিত হয়।
হয়তো ভাবছেন সংসার গঠনের প্রধান হাতিয়ার স্বামী আছে, সন্তান আছে। তাহলে সংসার নেই কেন? সংসারও আছে! তবে সেখানে ঘরের বউদের অবস্থান বিশাল বটবৃক্ষের কাছে ক্ষুদ্র একটা ডালের যে অবস্থান। সংসার তাদের শ্বাশুড়ি মায়ের।
ইনশাআল্লাহ আমি যদি কখনো পুত্র সন্তানের জননী হই যখনই পুত্রের বিয়ে হবে তখনই আলাদা করে দিবো। খুব কাছেই রাখবো কিন্তু সব আলাদা সংসার হবে। মেয়েটা তার রুম, তার পছন্দের কিছু কর্নার, বারান্দা, রান্নাঘর থেকে সব কিছু নিজের হাতে সাজাবে। যেখানে অবজেকশন দেয়ার কেউ থাকবে না। যেখানে কোনবেলা ক'মুঠো ভাত রান্না করবে সেটা জানার জন্য পায়চারি করতে হবে না।
দিন শেষ এ সবাই একা। তাই যে যার মত ভালো থাকুক, একা থাকুক। কেন আমাদের অন্যের লাইফে ইন্টারফায়ার করা লাগবে। কেন আমাদের অন্যের উপর ডিপেন্ডেবল’ হতে হবে।
কবরে আপনার আমার একা যেতে হবে। তাই আমল করুন, মানুষের সাথে ভালো ব্যাবহার করুন, অন্যের থেকে আশা ছেড়ে দিন। আপনি আপনার দ্বায়িত্ব পালন করে যান। দিন শেষ এ আপনার কোন অভিযোগ থাকবে না। আর কেউ আপনার প্রতিও অভিযোগ রাখবে না। বিশ্বাস করুন এভাবেই জীবন অনেক সহজ। আপনি যেমন অন্যের স্বপ্ন পূরণে বাধা দিবেন না, ঠিক আপনার স্বপ্ন পূরণে সময় লাগবে না।
একদিন হয়তো আজ যে ঘরের বউ তার ও সংসার হবে, কিন্তু তখন হয়তো সংসার করার যে ইচ্ছেটা একসময় হতো সে ইচ্ছেটা মরে যাবে। সকালের সোনা রোদের আনন্দ আপনি দুপুরের কড়কড়ে রোদে পাবেন না...... 🙂🙃
🌻
©Mishu
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন