শিশু যদি অন্যের গায়ে হাত তোলে🤷♀️, করণীয় কী?
শিশুরা বড় হওয়ার পথে তাদের আবেগ প্রকাশের সঠিক উপায় সবসময় জানে না। কখনো কখনো তারা রাগ, হতাশা বা মনোযোগ আকর্ষণের জন্য অন্যের গায়ে হাত তুলতে পারে। এই আচরণ স্বাভাবিক হলেও, সঠিক সময়ে সঠিক দিকনির্দেশনা না পেলে এটি অভ্যাসে পরিণত হতে পারে। তাই বাবা-মা ও অভিভাবকদের দায়িত্ব হলো ধৈর্যের সাথে শিশুকে শেখানো — কীভাবে অনুভূতি প্রকাশ করতে হয়, সহনশীলতা বজায় রাখতে হয়।
যখন শিশু গায়ে হাত তোলে, তখন করণীয়:💁♀️
১. শান্তভাবে থামানো👶
প্রথমেই শিশুর আচরণ থামাতে হবে, তবে চিৎকার বা শাস্তির মাধ্যমে নয়। নরম অথচ দৃঢ় কণ্ঠে বলুন, "না, গায়ে হাত দিতে নেই " সোনা"।" শিশুর চোখের দিকে তাকিয়ে এই বার্তা দিন যাতে সে গুরুত্ব অনুভব করে।
২. কারণ খোঁজা👶
শিশু কেন এমন করল তা বোঝার চেষ্টা করুন। সে কি ক্লান্ত? ক্ষুধার্ত? মনোযোগ চাইছে? না বুঝে খেলছে? কারণ বুঝলে সমস্যার সমাধান সহজ হবে। অবশ্যই তার ছোট্ট আচরনকেও খেয়াল করুন।
৩. বিকল্প আচরণ শেখানো👶
শুধু "না" বললেই হবে না, বরং শিশুকে দেখাতে হবে সঠিক আচরণ কেমন। বলুন, "যদি কিছু চাও, কথা বলো," বা "বন্ধুর সাথে আলতো করে হাত ধরো।" প্রয়োজনে ছোট নাটক বা খেলাধুলার মাধ্যমে চর্চা করানো যেতে পারে। নিজেই হতে পারেন তার রোল মডেল। আপনারাও অন্যদের সাথে বিনয়ের সাথে কথা বলুন।
৪. কঠোরতা নয়, দৃঢ়তা👶
রাগ না করে শান্তভাবে নিজের সীমারেখা স্পষ্ট করুন। শিশুর প্রতি সহানুভূতি দেখান, কিন্তু আচরণের জন্য তাকে দায়ী না করে সমস্যার প্রতি মনোযোগ দিন।
৫. নিরাপত্তা নিশ্চিত করা👶
যদি পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে যায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট শিশুদের আলাদা করুন এবং সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। শিশুরা নিরাপদ বোধ করলেই শেখার পরিবেশ তৈরি হয়।
৬. ঘটনা পরবর্তী আলোচনা👶
ঘটনার পর যখন সবাই শান্ত, তখন শিশুর সাথে আলাপ করুন। সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা দিন কেন গায়ে হাত তোলা অন্যায় এবং কীভাবে অন্যভাবে তার অনুভূতি প্রকাশ করা যায়।
৭. ইতিবাচক আচরণের প্রশংসা করা👶
যখন শিশু শান্তভাবে বা ঠিকভাবে তার আবেগ প্রকাশ করে, সাথে সাথে তাকে উৎসাহ দিন। এতে করে ভালো আচরণের পুনরাবৃত্তি বাড়বে। এতে করে বারবার সে ভালো কাজ করতে উৎসাহ পাবে।
বিদ্র:
শিশুদের আচরণ শেখানো ধৈর্যের কাজ। মনে রাখতে হবে, শিশুরা বড়দের আচরণ থেকেই শেখে। তাই আমাদের নিজেদেরও নম্র, দৃঢ় ও ধৈর্যশীল হতে হবে। শিশুকে ভালোবাসা ও নির্দেশনার মাধ্যমে বেড়ে উঠার সঠিক পথ দেখান — তবেই সে ভবিষ্যতে একজন আত্মবিশ্বাসী, সহানুভূতিশীল মানুষ হয়ে উঠবে। তার ইমোশন বোঝার চেষ্টা করুন, আপনি তার সকল ভরসার স্থান, অসহায়ের মতো তাকে না বুঝে মিসগাইড করে, একা ছেড়ে দেবেন না।
ধন্যবাদ 🙏
©️shebikamit
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন