ইঞ্জিন হলো একটি জটিল যন্ত্রাংশের সমষ্টি যা একসাথে কাজ করে একটি শক্তি সরবরাহ করে। অনেকেই ইঞ্জিনের ভেতরে কোন কোন পার্টস আছে এবং সেগুলো কী কাজ করে, তা জানেন না। আজকের এই পোস্টে আমরা আলোচনা করব ইঞ্জিনের গুরুত্বপূর্ণ পার্টস, তাদের কাজ এবং কেন এসব জানাটা গুরুত্বপূর্ণ।
⠀
🔹 ইঞ্জিন পার্টস এর তালিকা ও তাদের কাজ
১. সিলিন্ডার (Cylinder)= সিলিন্ডার হচ্ছে ইঞ্জিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে জ্বালানি ও বায়ু মিশ্রণ পুড়ে শক্তি তৈরি হয়। চার সিলিন্ডার, ছয় সিলিন্ডার বা আট সিলিন্ডার যুক্ত ইঞ্জিন হতে পারে।
২. পিস্টন (Piston)= পিস্টন হলো সিলিন্ডারের ভেতরে চলমান একটি ধাতব বস্তু, যা জ্বালানি দহন থেকে উৎপন্ন শক্তিকে নিচে ঠেলে দেয়। এটি ক্র্যাংকশ্যাফট ঘোরাতে সহায়তা করে।
৩. ক্র্যাংকশ্যাফট (Crankshaft)= ক্র্যাংকশ্যাফট পিস্টনের উপরে নিচে চলাচলকে ঘূর্ণনশীল গতিতে রূপান্তর করে, যা প্রপেলার ঘূর্ণনে কাজে লাগে।
৪. ক্যামশ্যাফট (Camshaft)= ক্যামশ্যাফট ভালভ খোলার ও বন্ধ করার কাজ করে। এটি নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী ইনটেক এবং এক্সহস্ট ভালভ নিয়ন্ত্রণ করে।
৫. ভালভ (Valves)= ভালভ দুটি ধরণের হয়: ইনটেক ও এক্সহস্ট। ইনটেক ভালভ জ্বালানি ও বায়ুকে ইঞ্জিনে প্রবেশ করতে দেয়, এবং এক্সহস্ট ভালভ দহন শেষে গ্যাস নির্গত করে।
৬. স্পার্ক প্লাগ (Spark Plug)= পেট্রোল ইঞ্জিনে স্পার্ক প্লাগ থাকে, যা বায়ু ও জ্বালানির মিশ্রণে আগুন ধরায় এবং দহন শুরু করে।
৭. ফুয়েল ইনজেক্টর (Fuel Injector)= ফুয়েল ইনজেক্টর জ্বালানিকে সঠিক পরিমাণে এবং নিখুঁতভাবে সিলিন্ডারে প্রবেশ করায়। এটি আধুনিক গাড়িতে কার্বুরেটরের বিকল্প।
৮. কার্বুরেটর (Carburetor)= পুরাতন গাড়িতে ব্যবহৃত হয়। এটি বায়ু ও জ্বালানির সঠিক অনুপাতে মিশ্রণ তৈরি করে ইঞ্জিনে পাঠায়।
৯. রেডিয়েটর (Radiator)= ইঞ্জিন ঠান্ডা রাখার জন্য রেডিয়েটর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি কুল্যান্টের সাহায্যে ইঞ্জিনের অতিরিক্ত তাপ বাইরে বের করে দেয়।
১০. ওয়াটার পাম্প (Water Pump)= ওয়াটার পাম্প কুল্যান্টকে ইঞ্জিনের ভেতরে প্রবাহিত করে, যাতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
১১. টাইমিং বেল্ট / চেইন (Timing Belt / Chain)=ক্যামশ্যাফট ও ক্র্যাংকশ্যাফটকে সঠিক সময়ে ঘোরানোর দায়িত্ব পালন করে টাইমিং বেল্ট বা চেইন। যদি এটি ছিঁড়ে যায়, তাহলে ইঞ্জিনের বড় ক্ষতি হতে পারে।
১২. অয়েল পাম্প (Oil Pump)=ইঞ্জিন অয়েলকে প্রতিটি চলমান অংশে সরবরাহ করে। এটি ইঞ্জিনকে লুব্রিকেট করে ঘর্ষণ কমায় ও তাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
১৩. এয়ার ফিল্টার (Air Filter)= বাইরের বাতাসে থাকা ধুলো ও ময়লা পরিশোধন করে ইঞ্জিনে পরিষ্কার বাতাস সরবরাহ করে।
১৪. এক্সহস্ট ম্যানিফোল্ড (Exhaust Manifold)= দাহ্য গ্যাসগুলোকে একত্র করে এগুলো এক্সহস্ট পাইপে পাঠায় এবং বাইরে বের করে দেয়।
১৫. ইঞ্জিন কন্ট্রোল ইউনিট (ECU)= এটি একটি কম্পিউটার ইউনিট যা ইঞ্জিনের বিভিন্ন সেন্সর থেকে ডেটা নিয়ে পুরো ইঞ্জিন পরিচালনা করে।
⠀
কেন এইসব পার্টস সম্পর্কে জানা জরুরি?
অনেক সময় ইঞ্জিনে সামান্য সমস্যা দেখা দিলেও আমরা গুরুত্ব দেই না। কিন্তু যদি আপনি জানেন কোন পার্টস কী কাজ করে, তাহলে প্রাথমিক সমস্যা আপনি নিজেই চিহ্নিত করতে পারবেন। এতে সময় ও খরচ দুই-ই বাঁচে।
⠀ ইঞ্জিন রক্ষণাবেক্ষণের টিপস:
প্রতি ১হাজার থেকে ১৫শত ঘন্টাপর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করুন।নিয়মিত এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার বা পরিবর্তন করুন। কুল্যান্টের স্তর পর্যবেক্ষণ করুন। টাইমিং বেল্ট বা চেইনের অবস্থা চেক করুন। ECU ত্রুটি দেখালে অবহেলা না করে মেকানিক দেখান। s mohabbat safin
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন