এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫

নিজেকে ভালো রাখার জন্য কিছু দরজা বন্ধ রাখাই শ্রেয়

 নিজেকে ভালো রাখার জন্য কিছু দরজা বন্ধ রাখাই শ্রেয়


সবাইকে ধরে রাখতে হয় না।

সব সময় সদয় থাকলে, মানুষ সেটা অধিকার ভাবতে শুরু করে।

একটা সময় বুঝেছি—নিজের মনের জানালা সব সময় খোলা রাখলে, ধুলা-বালি ঢুকবেই।

তাই এখন দরজা জানালা বুঝে খুলি। সম্পর্ক বুঝে রাখি।


আগে ভাবতাম, সম্পর্ক মানেই নিরন্তর খোঁজ নেওয়া, সময় দেওয়া, আপস করা।

এখন বুঝি—মানুষের কিছু আচরণ নিজের সম্মানের সাথে যায় না।


কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করি:

❶ এক আপু ছিল, প্রায়ই টাকা ধার নিত।

ফেরত দিতে ভুলে যেত, মনে করিয়ে দিলে বলত—“আরে না, দিয়ে দিয়েছি তো!”

কিন্তু মাসের পর মাস কেটে যেত, টাকাও আসত না, দৃষ্টিও বদলাত।

অদ্ভুত ব্যাপার, সে প্রায়ই আমার বাসায় আসত, খেত-দিতাম, গল্প করতাম।

কিন্তু আমি একবার ওর বাসায় গেলাম , প্লাস্টিকের গ্লাসে পানি দিয়ে বলেছিল, ‘কাজ আছে, পরে দেখা হবে।’

সেদিনই বুঝেছিলাম—মানবিকতা একতরফা হলে, সেটা বোকামি হয়ে দাঁড়ায়।”


❷ এক বন্ধু ছিল, শুধু নিজের সুবিধামতো যোগাযোগ রাখত।

ওর প্রেমে ঝামেলা, তখন আমি therapist!

ওর বাড়ির সমস্যা, আমি lawyer!

কিন্তু আমি যখন একটু মন খারাপ করে বলি, “আজকে খারাপ লাগছে”—সে reply করে, “আমি একটু busy”।

আজও ইনস্টায় দেখে, ক্যাফেতে বসে latte খাচ্ছে।

আমি আর বিরক্ত হই না, কারণ বুঝে গেছি—কারো কাছে তুমি প্রয়োজন, কারো কাছে তুমি মানুষ। আমি দ্বিতীয় দলে থাকতে চাই।


❸ এক আত্মীয়, সবসময় ছুটি পেলেই আমার বাসায় আসত,

বাচ্চারা খেলত, আমি রান্না করতাম, গল্প করতাম, ওরা খুশি হতো।

একবার হঠাৎ আমার বাসায় গ্যাস নেই, ভেবেছিলাম, ওদের বাসায় খেয়ে আসব।

গিয়ে দেখি, ও বলছে “আমরা একটু বাইরে যাচ্ছি, আরেকদিন এসো।”

তখনই বুঝলাম—সব ‘আপনজন’ আসলে আপন না, অনেকে শুধু সুবিধাজনক জায়গা খোঁজে।

সেই দিন থেকে আমি শুধু দূর থেকেই সালাম দেই, ঘর পর্যন্ত আর ঢুকি না।


❹ এক কলিগ, আমার থেকে বারবার ফাইল তৈরিতে সাহায্য নিয়েছে।

নিজের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফোন করে ধরিয়ে রাখত,

আর আমার কাজের সময়? বলত, “তুই তো পারিস! তোর জন্য এটা কি এমন কঠিন?”

কিন্তু অফিসে প্রমোশনের প্রশ্নে একবার আমাকে বাদ দিয়ে নিজের নাম প্রস্তাব করেছিল।

সেই দিনই বুঝেছিলাম—যাদের কাছে তুমি ‘পারফেক্ট মেশিন’, তারা কখনও তোমাকে মানুষ ভাবে না।

সেই সম্পর্কের তার কেটে দিয়েছি, শান্তিতে আছি।


❺ এক বান্ধবী, সব সময় আমার কাছ থেকে সাজগোজ, শপিং, ছবি তোলা—সব কিছুতেই সাহায্য নিত।

সে একবারও আমার কাজের বিষয়ে জিজ্ঞেস করেনি।

আমার একটি প্রজেক্টে সাহায্য চাইলে বলেছিল, “এই সময় আমার শরীর ভালো না।”

অথচ আমি তাকে ইনস্টায় দেখলাম ব্রাইডাল ট্রায়ালে ব্যস্ত।

সেদিন বুঝলাম—কিছু মানুষ তোমার উদারতাকে ব্যবহার করে, যতক্ষণ না তুমি সীমারেখা টানো।

আমি সেটা করেছি, সময় মতো।


কিছু সম্পর্ক, যেগুলোর ভার কেবল একপাশে পড়ে থাকে:

এক পরিচিত আপু ছিলেন, সব সময় ফোন দিতেন শুধুই নিজের দুঃখ শোনাতে।

একদিন যখন আমিই ভেঙে পড়েছিলাম, আর তাকে বলতে চেয়েছিলাম, তখন তিনি বলেছিলেন, “আরে এসব বিষয় আমি বুঝি না, পরে কথা বলি।”

আমি বুঝে গেছি, উনি আমার দুঃখের জন্য না, নিজের আরাম খোঁজার জন্য যোগাযোগ রাখেন।


এক বন্ধুর জন্মদিনে আমি কেক নিয়ে গেলাম, অথচ আমার জন্মদিনে সে একবারও ফোন দেয়নি। বলেছিল, ওই দিন নেটওয়ার্ক ছিল না। আমি মনে মনে বলেছি—বন্ধুত্ব যদি নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভর করে, তাহলে সেটা রাখারও দরকার নেই।


একবার এক আত্মীয়ের বাসায় দাওয়াতে গিয়েছিলাম।

চোখে মুখে হাসি, কিন্তু কথার ভেতরে ছিল কাঁটা।

একটা মন্তব্য—“তুমি তো কিছু করো না, বাসাতেই থাকো বেশি”—সেই একটা বাক্য আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছিল, সব দাওয়াত সম্মান নয়, কিছু দাওয়াত শুধুই ফর্মালিটি।সেই থেকে আমি ‘না’ বলতে শিখেছি।


✅ কী করা উচিত:

 • নিজের ইচ্ছার বাইরে কাউকে খুশি করতে যেও না।

সম্মান তখনই থাকে, যখন তা আত্মসম্মান নষ্ট না করে।

 • সময়মতো দূরত্ব তৈরি করো।

একবারের অপমান সহ্য করলে, মানুষ দ্বিতীয়বার সেটা অভ্যাস করে ফেলে।

 • যারা কেবল নিজের প্রয়োজনে খোঁজ নেয়, তাদের জন্য আলাদা বাউন্ডারি রাখো।

ওদের কথা শুনো, হাসো, কিন্তু মন খুলে দিও না।

 • ‘না’ বলাটা শিখে ফেলো—এটা আত্মরক্ষা।

‘না’ বললে অনেকে দূরে সরে যাবে, কিন্তু ওদের না যাওয়াটাই বিপদ।


❌ কী করা উচিত নয়:

 • বেশি ভদ্র হতে গিয়ে নিজেকে ছোট করো না।

“ভদ্র” হবার চেষ্টায় অনেকেই নিজের অনুভূতির কবর দিয়ে ফেলে।

 • যারা একবার আঘাত করেছে, তাদের বারবার সুযোগ দিও না।

‘দ্বিতীয় সুযোগ’ মানে অনেক সময় ‘দ্বিতীয়বার কষ্ট’।

 • ভুল মানুষদেরকে ঠিক করার দায়িত্ব নিও না।

তুমি কাউন্সেলর নও, থেরাপিস্ট নও—তুমি একজন মানুষ, যার নিজের অনুভূতির যত্ন নেওয়াও জরুরি।

 • নিজের অবস্থান বোঝাতে গিয়ে চোখে জল এনো না।

যে বোঝে না, সে কান্না দেখেও ব্যস্ত থাকবে অন্য কাজে।


আজ আমি কেমন?

 • নিজের জায়গা বোঝাতে শিখেছি।

 • ভালোবাসা দিতে আগে ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্যতা দেখি।

 • অপরাধবোধ ছাড়াই ব্লক করি, মিউট করি, দূরে যাই—কারণ সেটা আমার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য দরকারি।


🔚  সব সম্পর্ক পবিত্র নয়,

সব সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ নয়,

সব সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হওয়াও জরুরি নয়।


তোমার জীবনের প্রতিটা মানুষ যদি তোমার স্পেস, সম্মান আর সংবেদনশীলতা বুঝতে না পারে—তবে সেই সম্পর্ক শুধু নামমাত্র একটা বোঝা।


জীবন ছোট, সময় অল্প। সব জায়গায় খুশি ছড়াতে গিয়ে নিজেকে ধ্বংস কোরো না।


নিজেকে ভালোবাসো, নিজের মনকে গুরুত্ব দাও।

কিছু দরজা বন্ধ রাখো—সেটা তোমার শান্তির জন্য।

Facebook copy

#fyp #friendsforeverkuwentuhan

কোন মন্তব্য নেই:

এই ২০ টি এক্সেল ফর্মুলা সবার আগে শেখা উচিত।

 এক্সেলে নতুন হলে চাকরি, অফিস কিংবা ফ্রিল্যান্সিংয়ে এগিয়ে যেতে চাইলে এই ২০ টি এক্সেল ফর্মুলা সবার আগে শেখা উচিত। এই ফর্মুলাগুলো জানলে এক্সেল...