বাসর রাতে রুমে ঢুকতেই পিচ্চি বউয়ের কোলে ওঠার আবদার শুনেই আমি বিস্মিত।
-- তখন বাজে রাত আটটা, আমি সচরাচর এত তাড়াতাড়ি ঘুমাই না, তাই আমি জামা কাপড় চেঞ্জ করে, রুমে আসলাম, এমন সময় আশা এসে আমার পায়ে সালাম করলো,
-- আমি বলে উঠলাম, এই কি করছিস তুই? এসব কি?
-- আশা: কেন তোমাকে সালাম করছি, আম্মু বলে দিয়েছে বিয়ের প্রথম রাতে নাকি স্বামীকে সালাম করতে হয়, আর এখন থেকে তুমি তো আমার বর এজন্য তোমাকে সালাম করলাম।
-- ওমা তাই নাকি, পিচ্চি মেয়ের আবার বর, আরে আর এসব করতে হবে না, তুই কি উপরে উঠবি নাকি আমার পা ধরে ঘুমাবি বল?
-- আশা: আরে এমন করতেছ কেন, আমি কিন্তু এখন তোমার বউ।
-- আহারে, কি কথা, যা ঘুমিয়ে পড়।
-- আশা: কেন তুমি আমাকে কোলে করে উঠাবে না?
-- এইরে শখ কত, আমার অত রোমান্টিক হবার ইচ্ছা নাই, আমার আপু নিজে নিজে উঠে পড়, আর শোন অত মন খারাপ করিস না, যা ঘুমিয়ে পড়।
-- আশা: তোমার কি খুব ঘুম পাচ্ছে, তুমি ঘুমাও আমি তোমার মাথা টিপে দেই, কেমন?
-- আজ সূর্যটা কোন দিকে উঠছিল রে, তোকে তো আগে ৫০ টাকা দিতে চেয়েও মাথা টিপানো যায়নি আজ তুই নিজে থেকে ওর মাথা টিপে দিতে চাচ্ছিস কেন ব্যাপারটা কি বলতো? তোর কি আজ জ্বর হয়েছে রে আপু, জ্বরের ঘোরে আবোল তাবোল বলতেছিস।
-- আশা: কিহ, তুই আমাকে, আপু বললি আমি কি তোর আপু?
-- আপু নয়তো কি রে? তুই তো আমার আপন মায়ের আপন বোনের নিজের মেয়ে, সেই সূত্রে তুই তো আমার আপুই হোস, আর শোন এর চেয়ে আর বেশি অধিকার খাটাবি না বুঝলি, বিয়েটা আমি এখন করতে চাচ্ছিলাম না বাবা মার জোর করে আমাদের বিয়েটা দিয়েছে এমন না যে বিয়েটা আমি মেনে নেইনি, সামনে আমার পরীক্ষা আর তোর সামনে পরীক্ষা, তাই আমি চাচ্ছি এই মুহূর্তে আমি বউ বউ খেলা খেলবো না।
-- আশা: প্লিজ তুই পাগলামি করিস না সামনে তোর পরীক্ষা মন দিয়ে লেখাপড়া কর সেটাই ভালো হবে, রাত অনেক হয়েছে ঘুমিয়ে পড়, আমাকে একটা বালিশ দে আমি সোফায় ঘুমাই আর তুই বিছানাতে ঘুমা।
-- না পারে না, এখন তুই আমার শুধু আপু নস এখন তুই আমার বউয়ের মত আপু বুঝলি তাই কিছু একটা হয়ে যেতে পারে এজন্য একসাথে ঘুমাবো না তুমি আমাকে ক্ষমা কর।
-- আর শোন পিচ্চি মেয়ে পিচ্চি মেয়ের মত থাক, খবরদার বেশি পাকামো করবি না ঠিক আছে, আর বেশি কথা বললে আমি কিন্তু বাহিরে গিয়ে শুয়ে পড়বো।
-- আশা: এই তোমার বাহিরে যাওয়ার দরকার নাই আমি বিছানাতেই ঘুমাচ্ছি আর তুমি যাও সোফায় ঘুমাও, ওকে।
-- এইতো আমার লক্ষী বউ। ঠিক বুঝতে পারছিস।
-- আমার কথা শুনে মেয়েটা মন খারাপ করে ঘুমিয়ে পড়ল, আমার কি দোষ আমাকে তো জোর করে আম্মু বাল্য বিবাহ দিল, মেয়েটার জন্য খুব খারাপ লাগতেছে কিন্তু কি আর করা কিছুই করার নাই এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছে বলতেই পারবোনা একদম এক ঘুমে সকাল হয়ে গেছে, তখন আশা জোরে জোরে চিল্লাইতেছে।
-- আশা: এই ওঠো, সকাল হয়ে গেছে।
-- না আম্মু আরেকটু ঘুমাতে দাও না আজ কলেজ নাই যাও একটু পরে উঠতেছি।
-- আশা: এ কি বললা তুমি নাউজুবিল্লাহ, আমি তোমার কোন পোষের আম্মু বল।
-- আরে আরে তুই আমি তো খেয়ালই করিনি, এত সকাল সকাল ডাকছিস কেন যা আমি আরেকটু ঘুমাবো।
-- আমি কই তোমাকে ডাকতাছে, আম্মু বলছে এজন্য ডাকলাম।
-- আম্মু ডাকছে তো কি হয়েছে, তুই, বলতে পারলি না যে ঘুমাচ্ছে, তাইতো এক কথায় সব শেষ হয়ে যেত, আচ্ছা ঠিক আছে এত পাকামি করিস না তুই যা আমি আসতেছি।
-- মেয়েটা একটু মন খারাপ করে নিচে চলে গেল আজ কেন জানিনা আমার বারবার মনে হচ্ছে আমার সাথে এটা ঠিক করলাম না এটা বোধহয় এটা বোধহয় বেশি রুট ব্যবহার হয়ে গেল, তাড়াহুড়ো করে নিচে নামলাম, আম্মুকে বললাম দাও দাও তাড়াতাড়ি খেতে দাও, আম্মু অমনি বলে উঠলো।
-- আম্মু: আগে তো আমাকেই খুব বলতিস কাজের লোক রেখে নাও, কাজের লোক না এনে তোকে বউ এনে দিলাম।
-- আশা আমাকে বলে উঠলো, আমি থাকতে তুমি আম্মুকে ডাকতেছ কেন? আমাকে বললেই তো হয়, ওকে দিচ্ছি দাঁড়াও।
-- এই বাচ্চা মেয়ে এত পাকামি করিস না তো, বাচ্চা মেয়ে বাচ্চা মেয়ের মত থাকবি, এখন বেশি কথা না বলে আমাকে খেতে দে, আমি একটু বাইরে যাব।
-- আশা: এই শোনো না, আমার কিছু জিনিস লাগবে, আর তাছাড়া বিয়ের পর তো আমরা সেভাবে কোথাও ঘুরিনি, আজকে একটু আমাকে বাহিরে নিয়ে যাবা।
-- পিচ্চি মেয়ের শখ কত, তোর কি কি লাগবে আমাকে লিখে দিস আমি নিয়ে আসবো নে বাইরে ঘোড়ার সময় নেই আমার।
-- আশা: এসব কথা কেন জানিনা মেয়েটাকে বলার পর আমার কিছুতে ই ভালো লাগছিল না তাই আমি তিনটার সময় ওকে বললাম, তুই রেডি হয়ে থাকিস বিকেলে নিয়ে তোকে বের হব কি কি লাগবে মনে করে বলিস কেমন?
-- ঠিক বিকাল ৩ টায় আশা রেডি হয়ে আমাকে বলতেছে, এই মশাই, বাইরে যাবা না তোমাকে না আজ আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা।
-- যা তুই রেডি হয়ে নে, আমি উঠতেছি, তোর জন্য একটু শান্তিতে ঘুমাতেও পারি, না দিলি তো আমার কাঁচা ঘোমটা নষ্ট করে সালার পেত্নী একটা যা ভাগ রেডি হও।
-- আশা: এই তুমি আমার সাথে এভাবে কথা বলছ কেন আমি কিন্তু আম্মুকে সব বলে দিবো বুঝলে।
-- এই আমাকে কিছু বলিস না আচ্ছা ঠিক আছে সরি যা তুই রেডি হয়েনে।
-- আমি তো রেডি হয়েছি তুই চোখটা খুলে একটু দেখ না নীল শাড়িতে আমাকে ঠিক কেমন লাগছে, কিন্তু প্রবলেম একটা হইছে জানিস।
-- ও মা এতো দেখছি আমার পরীর মত আপু বসে আছে।
-- আশা: কি হ আবার তুই আমাকে আপু বললি আমাকে কি বলে দেবো আমি সব।
-- আরে না না, বলিস না, ওকে ওকে পরীর মত আপু না পরীর মত বউ, এবার তো হয়েছে সালার পিচ্চি, তা তোর কি সমস্যা তুই যে বললি তোর একটা প্রবলেম হয়েছে।
-- আশা: এই দেখ না ব্লাউজের হুকটা খুলে গেছে লাগাতে পারছি না, একটু লাগিয়ে দাও না প্লিজ।
-- শালার পিচ্চি, তোকে কি আমি এমনি পিচ্চি বলি, ব্লাউজের হুকটা লাগানোর সাধ্য হয়নি তোর আবার হয়েছিস বউ, ভীষণ হাসি পাচ্ছে আমার।
-- আশা: এই কথায় কথায় তুমি আমারে পিচ্চি বলো কেন।
-- পিচ্চিরে পিচ্চি বলবো না তো কি বলবো, এই নে লাগিয়ে দিলাম, আপু হিসেবে কিন্তু, বউ বললে কিন্তু না, হয়েছে তোর, বের হবা এখন।
-- আশা: এই তুমি সব সময় এত রুট কথা বলো কেন? এভাবে বলতে পারোনা, কিগো হইছে তোমার, শালা রস কস হীন।
-- আমি এভাবে এখনই বলতে পারব না, পিচ্চি তুই আগে বড় হ তারপর দেখা যাবে।
-- আশা: তার আগেই তুমি আমাকে তুমি করে বলবা বাজি ধরে নাও।
-- জিনা, এটা আপাতত সম্ভব হচ্ছে না, ওকে চল আর তর্ক না করে, বেরিয়ে পড়ি।
আমি বাইক নিয়ে বের হয়ে গেলাম… কেউ দেখে ফেললে বিপদ… দুইটা হেলমেট নিয়েই বের হয়েছি… স্পিড বাড়াতে না বাড়াতেই পেছন থেকে আশা আমায় শক্ত করে জড়িয়ে ধরে…তারপর হঠাৎ সে বলে ওঠে…..
চলবে পরের পর্বের লিংক কমেন্টে।
#পিচ্চি_প্রেয়সী
প্রথম পর্ব
লেখক: #ফাহিম_চৌধুরী
আপনারা সবাই নেক্সট নেক্সট করেন কেনো আমি প্রায় সব গল্পের পরবর্তী পর্বের লিংক কমেন্টে দিয়ে রাখি তো ভালো করে চেক করবেন আর নাহয় আমার Opornota - অপূর্ণতা 彡 পেজ ফলো করবেন সেখানেও নেক্সট পার্ট গুলো পাবেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন