এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

শনিবার, ৪ মে, ২০২৪

প্যমাইকেল মধুসূদন দত্তের জিবনী

 প্যারিসের এক দোকানে মাইকেল মধুসূদন দত্তের চোখে পড়ল বিদ্যাসাগরের বই। মাইকেল দোকানদারকে বললেন এই লেখক আমার একজন মস্ত বন্ধু। মাইকেল মধুসূদনের জীবনে বন্ধুর থেকে আরও বেশি কিছু ছিলেন বিদ্যাসাগর। বিদেশে টাকার অভাবে মাইকেল চরম দূর্ভোগে,পরিত্রাতা বিদ্যাসাগর মহাশয়। ব্যারিস্টারি পাশ করে কলকাতা হাইকোর্টে প্রাকটিসের জন্য অনুমতি প্রার্থনা। কিন্তু মাইকেলের চরিত্র নিয়ে আপত্তি একাধিক বিচারপতির। চরিত্র সম্বন্ধে কয়েকখানা উপযুক্ত সার্টিফিকেট পেলে আশা আছে। মাইকেল একাধিক প্রশংসাপত্র যোগাড় করেছেন। ১৮৬৭ সালে বিদ্যাসাগর মহাশয়,রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রসন্নকুমার সর্বাধিকারী একসাথে মাইকেল কে প্রশংসাপত্র দিয়েছেন। ১৮৬৭ সালের ৩ মে জজেরা একমত হয়ে মাইকেল কে কলকাতা হাইকোর্টে ব্যারিস্টারি করার অনুমতি দিলেন।


মাইকেল ফ্রান্সে এসেছেন বছর খানেক হল দেশ থেকে এক কানাকড়িও আসেনি। চরম দুর্দশা বললে কম বলা হয়। জিনিসপত্র সব বন্ধক সঙ্গে প্রচুর ধারদেনা। এমন অবস্থা মাইকেল প্রায় জেলে যায়। তখন তিনি বিদ্যাসাগরের শরণ নিলেন। চিঠি দিলেন পরপর দুটো।  মাইকেল নিশ্চিন্ত নন দুটো চিঠি লিখেও, যদি বিদ্যাসাগর চিঠিগুলো না পেয়ে থাকেন! জীবনযুদ্ধে বেঁচে থাকা কত কঠিন প্রতি মুহূর্তে অনভূত হচ্ছে।স্ত্রী,কন্যা নিয়ে উপোস করার মত অবস্থা। বাধ্য হয়ে এক পাদ্রীর থেকে পঁচিশ ফ্রাঁ ধার করলেন। কয়েক দিনের মধ্যে একটু আশার  আলো দেখা গেল। দিগম্বর মিত্র আটশো টাকা পাঠিয়েছেন। তবে মাইকেলের ধার দেনার যা বহর আটশো টাকা কিছুই নয়। একদিন হেনরিয়েটা কাঁদতে কাঁদতে মাইকেলের পড়ার ঘরে এসে বললেন ছেলেমেয়েরা মেলায় যেতে চায়, কিন্তু তাঁর কাছে আছে মাত্র তিন ফ্রাঁ। সংসারে অভাব, অনটন মারাত্মক। মাইকেল হেনরিয়েটা কে মনখারাপ করতে নিষেধ করে বললেন  আজই ডাক আসবার কথা ছিল, সুখবর নিশ্চয়ই আসবে। কেননা তিনি যাঁর কাছে টাকার জন্য আবেদন করেছেন তাঁর প্রতিভা,জ্ঞান প্রাচীন ঋষিদের মত,শক্তি ইংরেজদের সমতুল,প্রাণ বাংলার মায়েদের মত। মাইকেল ভুল কিছু বলেন নি, একঘন্টা বাদে বিদ্যাসাগরের চিঠি এল।দেড়হাজার টাকা তিনি পাঠিয়েছেন। সত্যি হল বারবার টাকা দিয়ে মাইকেলকে বাঁচিয়েছেন বিদ্যাসাগর, তিনিই তাঁর আসল পরিত্রাতা।


অবশ্য ততদিনে মাইকেলের কলমে সৃষ্টির জোয়ার, মেতে উঠেছেন সৃষ্টি সুখের উল্লাসে। সংক্ষিপ্ত সময়,সংখ্যায় পাঁচ বছরে মাইকেল বাংলা নাটক ও কাব্যকে  নিস্তরঙ্গ পুষ্করিণী থেকে মহাসমুদ্রে পরিণত করে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে ফেলেছেন।  মধুসূদনের 'তিলোত্তমাসম্ভব' কাব্য প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৬০ সালের মে মাসে। অমিত্রাক্ষর ছন্দে সেই প্রথম বাংলা কাব্য লেখা হল। গোড়ার দিকে মাইকেলের অমিত্রাক্ষর বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পছন্দই হয় নি। কিন্তু কিছুদিন পরে বিদ্যাসাগরের মতের পরিবর্তন হয়। মাইকেল যা লেখেন সব কিছুর মধ্যে তিনি ' Great merit' দেখতে পান।


তবে  অভাব,অভাব মাইকেলের নিদারুণ অভাব। অভাবের শেষ নেই। তাতে কি একদিন একটা ঠিকাগাড়িতে বিদ্যাসাগরের বাড়িতে এলেন মাইকেল। কোচম্যানকে দিলেন আধুলি নয়,টাকা নয় আস্ত মোহর। কোচম্যানকে এত বেশি দেওয়া আদপে অপব্যায়,বিদ্যাসাগরের কাছে দু-চার কথা মাইকেল কে শুনতে হল। কিন্তু তিনি যে মাইকেল মধুসূদন দত্ত, বললেন, বিদ্যাসাগর আজ দুদিন যাবৎ এই কোচম্যান আমাকে নানা জায়গায় নিয়ে গিয়েছে। ওকে বেশি আর কী দিলাম! ব্যারিস্টার মাইকেল দেশে ফিরলে তাঁর জন্য সুকিয়া স্ট্রীটে একটা বাড়ি সাহেবি কায়দায় বিদ্যাসাগর সাজিয়ে রেখেছিলেন। মাইকেল সেখানে না উঠে স্পেনসেসের মত বিলাশবহুল হোটেলের তিনটে ঘর ভাড়া নিয়েছেন। একা মানুষ,ব্যারিস্টারি করে অর্থাগম হয় কিন্তু ব্যায় করেন অনেক বেশি।ঢালাও হাতে খরচ করেন, বন্ধুবান্ধবরা খাওয়া দাওয়া করেন।মাসে হাজার টাকার কমে চলে না। হেনরিয়েটা ও ছেলেমেয়েদের জন্য তিন- চারশ টাকা বিদেশে পাঠাতে হয়। আগের ঋণ শোধ হয়নি আবার বিদ্যাসাগরের কাছে ধার চাইলেন মাইকেল।


বিদ্যাসাগর মহাশয় কে অবশ্যই অগাধ শ্রদ্ধা করতেন মাইকেল। ১৮৬৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি লন্ডন থেকে তিনি বিদ্যাসাগরকে চিঠিতে লেখেন: My trust in God and after god in you. এর ছয় বছর আগে মাইকেল বিদ্যাসাগরের একটা স্ট্যাচুর জন্য নিজের মাইনের অর্ধেক টাকা চাঁদা দিতে রাজি হয়েছেন। সেজন্য রাজনারায়ণ বসু কে চিঠি লিখেছেন। আবার বিদ্যাসাগর স্বয়ং তাঁর স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ চাঁদা দিতে রাজি হননি।

ব্যারিস্টারি ছেড়ে মাইকেল কিছুদিন চাকরি করলেন। অভাব কিছুতেই দূর হয় না। এদিকে শরীর ভেঙে গিয়েছে। চাকরি ছেড়ে ১৮৭২ সালে আবার ব্যারিস্টারি আরম্ভ করলেন। তখন স্বাস্থ একেবারে ভেঙে পড়েছে,শরীরে অনেক অসুখ।বিপুল ঋণ। বছর ঘুরতে না ঘুরতে মাইকেল মৃত্যুশয্যায়।  বালবন্ধু গৌরদাস মধুকে দেখতে যান এবং দেখতে পান — ‘‘সে তখন বিছানায় তার রোগযন্ত্রণায় হাঁপাচ্ছিল। মুখ দিয়ে রক্ত চুঁইয়ে পড়ছিল। আর তার স্ত্রী তখন দারুণ জ্বরে মেঝেতে পড়ে ছিল।’’


পরদিন মাইকেলকে ভর্তি করানো হয় আলিপুরের জেনারেল হাসপাতালে, গলার অসুখ তো ছিলই, যকৃতের সিরোসিস থেকে দেখা দিয়েছিল উদরী রোগ। 

১৮৭৩ এর ২৬ জুন হেনরিয়েটা চলে গেলেন। মাইকেল এই সংবাদ এক পুরনো কর্মচারীর কাছ থেকে জানতে পারলেন। ২৯ জুন রবিবার মাইকেলের অন্তিম অবস্থা ঘনিয়ে এল। বেলা দুটোর সময় চিরঘুমের দেশে চলে গেলেন মধু কবি। তবে বেদনার বিষয় মৃত্যুর পর মাইকেলের শেষকৃত্য নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। কলকাতার খ্রিস্টান সমাজ তাঁকে সমাহিত করার জন্য মাত্র ছয় ফুট জায়গা ছেড়ে দিল না। কবির মরদেহে পচন ধরল। অবশেষে এগিয়ে এলেন অ্যাংলিকান চার্চের রেভারেন্ড পিটার জন জার্বো। বিশপের অনুমতি ছাড়াই, জার্বোর উদ্যোগে, ৩০ জুন বিকেলে, মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টারও পরে লোয়ার সার্কুলার রোডের কবরস্থানে মাইকেলকে সমাধিস্থ করা হয়।


মাইকেলের মৃত্যুর অনেক গুলো বছর পরে কয়েকজন ভদ্রলোক উদ্যোগী হলেন মাইকেলের সমাধিস্থলের উপর কোনও স্মৃতিস্তম্ভ নেই, কোনও চিহ্ন নেই।চাঁদা তুলে একটা স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে অস্থি পঞ্জর রক্ষা করতে হবে। চাঁদার জন্য বিদ্যাসাগরের কাছে লোক গেলে বিদ্যাসাগরের চোখে জল চলে এল। বিনীত নিবেদন করে লোকদের তিনি বললেন দ্যাখো, প্রাণপণ চেষ্টা করে যাঁর জান রাখতে পারিনি তাঁর হাড় রাখবার জন্য আমি ব্যস্ত নই।


পুস্তক ঋণ,করুণাসাগর বিদ্যাসাগর ,ইন্দ্র মিত্র 


প্রথম ভালবাসার চমক!

 প্রথম ভালবাসার চমক!

 কিশোর রবিকে  প্রথম প্রেমের পাঠ দিয়েছিলেন   মারাঠা সুন্দরী আনা। 

কবি যার নাম দিয়েছিলেন  "নলিনী"

"বাতাসে বহিছে প্রেম,  নয়নে লাগিল নেশা,কারা যেন ডাকিল পিছে,  বসন্ত এসে গেছে!" 

রবীন্দ্রনাথের  বয়েস তখন  সতের।

 বিলেত যাবেন।

 কবি এসেছেন মেজদা সত্যেন্দ্রনাথের আহমেদাবাদের বাসায়। 

কবি বিলেত যাবেন তাই ভাইটাকে একটু কেতাদুরস্ত করার জন্য নিজের কাছে নিয়ে এলেন।

ইংরেজি ভাষাটা ভাল করে বলতে হবে। 

বিলিতি আদবকায়দা শিখতে হবে। তাই ভাইটিকে এনেছেন। 

কিছুদিন নিজের কাছে রাখার পর সত্যেন্দ্রনাথ ভাবলেন রবিকে এমন একটি পরিবারে মেশার সুযোগ করে দিতে হবে যেখানে সব বিলিতি আদবকায়দা চলে।

বাড়ির প্রায় সবাই বিলেতফেরত। 

কবিকে  বোম্বাই পাঠালেন বন্ধু   ডাঃ  আত্মারাম পান্ডুরঙের বাড়িতে।

একজন  আধুনিক মনস্ক মারাঠি পণ্ডিত। 

সত্যেন্দ্রনাথের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক। 

রবীন্দ্রনাথ এলেন আত্মারাম পান্ডুরঙ্গের বাড়িতে।

আত্মারামের মেয়ে অন্নপূর্ণা।

 ডাক নাম আনা।

 বয়েস কুড়ি।

কবির থেকে বয়েসে তিন বছরের বড়।

 রবীন্দ্রনাথকে ইংরেজি শেখানো আদবকায়দা সব শেখানোর ভার আনাই পেল।

এদিকে আনা ছিল এক  শিক্ষিতা সুন্দরী দুরন্ত পাহাড়ি ঝর্ণা।

তার ওপরে বিলেতফেরত মেয়ে। 

রবীন্দ্রনাথকে প্রথম প্রেমের পাঠ  এই  আনাই  একদা দিয়েছিল।

কিন্তু প্রেমের বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন প্যাসিভ। 

নিরুত্তাপ। 

আর আনা ছিল  আ্যাকটিভ। সক্রিয়।

" আমারে তুমি অশেষ করেছ, - এমনি লীলা তব - ফুরায়ে ফেলে আবার ভরেছ জীবন নব নব।"

কবিকে শেখাতে গিয়ে শিক্ষয়িত্রী আনাই  প্রেমে পড়ে গেল  কিশোর ছাত্রটির প্রতি।

রবীন্দ্রনাথকে  তিনি নতুন করে আর কি শেখাবেন?

শুধু বাড়িতে  পড়ে এত ভালো ইংরেজি বলছে,লিখছে!

আনা অবাক! 

কি অপূর্ব তাঁর ভাষায় বিচরণ। 

কবি তখন" ভারতী"  পত্রিকায়  ধারাবাহিক " কবিকাহিনি" লিখছেন আর সেই রচনার ইংরেজি অনুবাদ করে আনাকে শোনাচ্ছেন।

আনা মন্ত্রমুগ্ধ! 

দু'হাত গালে রেখে বড়বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে  কবির দিকে।

আনা ভাবছে শুধু ভাবছে  এই ছেলেকে সে কি শেখাবে? 

তার চেয়ে এখন লেখাপড়া থাক, ওকে এখন বরং প্রেমের পাঠ একটু শেখানো যাক।

একদিন আনা রবিকে বললো,তুমি কি আমাকে একটা নতুন নাম দিতে পারো না?  

যে নামে এই পৃথিবীর আর কেউ আমায় ডাকবে না একমাত্র তুমি? 

কবি বিহ্বল! 

কবি আনার নাম দিলেন " নলিনী "। এই সেই নলিনী যাঁর নাম  "কবিকাহিনি" তে বারবার উঠে এসেছে।

নলিনীকে নিয়ে কবির রোমান্টিক আবেগ ছুঁয়ে গেছে তাঁর এই  গানের সুরে " শুন নলিনী খোলো গো আঁখি /ঘুৃম এখনো  ভাঙ্গিল কি!..." 

এবার একটি বিশেষ ঘটনা রবীন্দ্রনাথের নিজের কথা 

 তা বই থেকে তুলে ধরছিঃ

"আর একদিন সে আচমকা বলল, জানো,কোনো মেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে যদি তার দস্তানা কেউ চুরি করতে পারে, তবে তার অধিকার জন্মায় মেয়েটিকে চুমো খাওয়ার।বলে খানিকবাদে আমার আরাম কেদারায় নেতিয়ে পড়ল নিদ্রাবেশে।

ঘুম ভাঙতেই সে চাইল পাশে তার দস্তানার দিকে।  একটিও কেউ চুরি করেনি।"

চুমু খাওয়ার লোভ দেখিয়েও আনা কবিকে দিয়ে  তার দস্তানা চুরি করাতে পারল না।

তাই আনারও চুমু পাওয়া  হল না। 

কিন্তু আনা কবির মনে প্রথম প্রেমের আলো পৌঁছে দিয়েছিল।  যা কবিকে নব নব সৃষ্টির পথে এগিয়ে দিয়েছিল।

 কিন্তু কবি শুধু দূর থেকে ফুলের সৌরভটুকু নিয়েছেন।

এরপর আনা বিয়ে করে  তাঁর পূর্ব পরিচিত  বরোদার এক কলেজের উপাধ্যক্ষকে।

আইরিশ যুবক।  

নাম  হ্যারল্ড লিটলডেল।

 গভীর দু:খের,  বিয়ের পর মাত্র ছত্তিশ বছর বয়েসে টি বি রোগে আনা চলে গেল! 

কবি আনাকে সারাজীবন ভুলতে পারেন নি।

  কবি ডি এল রায়ের সুযোগ্য পুত্র দিলীপ রায়ের সঙ্গে বন্ধুর মত মিশতেন। যদিও দিলীপ রায় বয়েসে অনেক ছোট ছিলেন। পরিণত বয়েসে কবি একবার দিলীপ রায়কে  বলেছিলেন...

" কিন্তু একটা কথা আমি বলতে পারি গৌরব করে যে, কোন মেয়ের  ভালোবাসাকে আমি কখনও ভুলেও অবজ্ঞার চোখে দেখিনি, তা সে ভালবাসা যে রকমই হোক না কেন।"

এই হলেন রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর স্বর্গীয় ভালবাসা।


তথ্য সূত্রঃ

রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়/ গোপনচারিণী / দীপ প্রকাশন

প্রশান্ত কুমার পাল (রবিজীবনী/ আনন্দ পাবলিশার্স ও আরো কিছু লেখা ছুঁয়ে  গেছে। 

 


ঋণ: অনুমিতা সেনগুপ্ত। 

সম্ভবত: সত্তুরের দশক। কলেজ স্ট্রীটের মোড়। কিছু জরুরী বই কিনতে গেছেন কিংবদন্তী নায়ক উত্তম কুমারের ছোটভাই ও খ্যাতনামা অভিনেতা তরুণ কুমা

 সম্ভবত: সত্তুরের দশক। কলেজ স্ট্রীটের মোড়। কিছু

জরুরী বই কিনতে গেছেন কিংবদন্তী নায়ক উত্তম কুমারের ছোটভাই ও খ্যাতনামা অভিনেতা তরুণ কুমার। এমন সময় দেখেন পুটিরামে দাঁড়িয়ে 'তিনি'।

পাহাড় প্রমান মিষ্টি কিনতে ব্যাস্ত। মুখোমুখি হতেই সেই

অনাবিল হাসি। ঢাকাই তোপ ধেয়ে আসে -- "আরে বুড়া! যাস কই...?" তরুণবাবু বলেন - বই কিনতে।

"বই কিনবি! তা বেশ বেশ...তবে তার আগে আমার লগে চ।" তরুণ কুমার দেখেন ঘোর বিপদ। কিন্তু উপায় নেই! 'সিনিয়র' আর্টিস্ট এবং অগ্রজ বলে কথা। একবার আমতা আমতা করে বলতে গেলেন "আসলে একটু কাজ ছিল যে..."। 

"ওইসব পরে হইবো গিয়া। আমার লগে আয়। মিষ্টির হাঁড়িটা ল। আজ আমার মাস্টারমোসাই'র জন্মদিন। চল তর লগে আলাপ করামু গিয়া।দেখবি, খুব ভাল মানুষ।" এরপর আর কোন কথা চলেনা।


'তিনি' চলেন আগে আগে, পিছনে বিশালকায় মিষ্টির হাঁড়ি- হাতে তরুণ কুমার। কলেজ স্ট্রিট, হেদো ছাড়িয়ে বিবেকানন্দ স্ট্রীটের কাছে শীর্ণকায় গলি।তার মধ্যে ততোধিক ক্লিস্ট একটি বাড়ির সামনে দাঁড়ালেন 'তিনি'। সন্ধে নেমেছে শীতের কলকাতায়। চারিদিক বেশ অন্ধকার। ঘরণী এক চিলতে তুলসীতলায় বাতি দিচ্ছেন। শাঁখ বাজছে কোথাও। তরুণবাবু ঠিক ঠাহর করতে পারছেনা যে কোথায় এলেন! একি অদ্ভুত রহস্য! 


এমন সময় বাড়ির বাইরে থেকেই আকাশবাতাস কাঁপিয়ে আবার 'ঢাকাই' গর্জন- "মাস্টারমোসাইইইই... আইসা পড়ছি।" মাতৃসমা সেই মহিলা হেসে বললেন, "ভেতরে যাও বাবা..উনি বসে আছেন।" ভদ্রমহিলাকে প্রণাম করে তরুণ কুমারকে সাথে নিয়ে সামনের ঘরে সটান ঢুকে পড়লেন 'তিনি'। 


খুবই অনাড়ম্বর, আটপৌরে ঘর। একটি খাট, তক্তপোষ, টেবিল , চেয়ার,জলের কুজো,মশারি,এস্রাজ,এবং সব ছাপিয়ে ঘরভর্তি উপচে পড়া বই'র সাম্রাজ্য। 

সাদা চাদর জড়ানো এক অভিজাত প্রৌঢ় বসে। অন্ধকারে মুখ ভাল করে দেখতে পাচ্ছিলেননা তরুণবাবু। তখনো অগ্রজের নির্দেশে মিষ্টির হাঁড়ি হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। গৃহিণী আলো নিয়ে ঘরে প্রবেশ করতেই যেন মাটি দুলে উঠলো! তরুণবাবু দেখেন তার সামনে বসে আছেন বিশ্ববিখ্যাত পদার্থবিদ আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসু। এই তবে তার ভানুদার'মাস্টারমোসাই'! 


ততক্ষণে গুরু-শিষ্য সংবাদ শুরু হয়ে গেছে! 

আচার্য ধীর কন্ঠে তার গৃহিণীকে বললেন

"দেখেছো উষা (উষাবতী বসু) কেউ মনে রাখেনি... অথচ সাম্য কিন্তু কোনদিন ভোলেনা।" 

দিগ্বিদিক কাঁপিয়ে হেসে ওঠেন 'তিনি'। গুরুমা'কে উদ্দেশ্য করে বলেন, "মাসীমা, মালপো খামু...আছে নাকি দুইখান?" 


খুব কম লোকেই জানেন ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসল নাম সাম্যময় ব্যানার্জি এবং তিনি সত্যেন বসুর পদার্থ বিজ্ঞানের প্রিয় ছাত্রদের অন্যতম।,,,,,,,,

সংগৃহিত

বিবাহিত ভাইবোনেরা অবশ্যই পড়বেন।

 বিবাহিত ভাইবোনেরা অবশ্যই পড়বেন।💝


বিয়ের পর দয়া করে স্বামী-স্ত্রী বেশিদিন দূরে থাকবেন না। বিশ্বাস করুন ভালো থাকার জন্য অনেক বেশি টাকার দরকার একদম-ই নেই | দরকার আপনার ভালোবাসার |

.

জীবন থেকে যে একটা সেকেন্ড চলে যায় সেটা আমরা আর কখনো ফিরে পাই না | আর আপনি বছরের পর বছর স্ত্রী, সন্তান রেখে বহুদূরে পরে আছেন!

.

এই কি জীবন? কোথায় সুখ? কোথায় আপনার স্ত্রীর জন্য ভালোবাসা? কোথায় সন্তানের জন্য স্নেহ?

.

হ্যাঁ, টাকা-পয়সা জীবনে অনেক দরকার কিন্তু; ভেবে দেখেন তো সারাদিনে ৩০০ টাকা রোজগার করা মানুষটা যখন দিনশেষে বাসায় ফিরে তার সামনে পানি দেওয়ার জন্য একজন মানুষ আছে, সে রাতে তার স্ত্রী, সন্তানদের পাশে ঘুমাতে পারে, তার অসুস্থতায় তার স্ত্রী তাকে সেবা করে, তার সন্তান দূর থেকে তাকে দেখে দৌড়ে এসে কোলে ওঠে |

.

কোনো নারীর জীবন থেকে এমন সময় কেঁড়ে নিবেন না যে সময়টায় সে শুধু আপনাকে কাছে চায় |

.

বাইরে গেলে যখন তার চোখে পরে পাঞ্জাবি পরা কোনো এক ছেলে তার প্রিয়তমার হাত ধরে রাস্তা পার করে দিচ্ছে, তখন আপনার স্ত্রীর ভেতর থেকে দীর্ঘশ্বাস বের হওয়া ছাড়া আর কিছু-ই করার থাকে না |

..

আপনি সারাদিন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে টাকা রোজগার করে বউকে দামী শাড়ি আর গহনা-ই পরিয়ে গেলেন | কিন্তু যে সময়গুলো আপনারা হারিয়েছেন সেটা আর আসবে না কোনোদিন | উত্তপ্ত প্রেম টাকার তলায় চাপা দিয়ে দিলেন |

.

আপনার সন্তান যখন রাস্তায় দেখে কোনো বাবা তার ছেলেকে রঙিন বেলুন কিনে দিচ্ছে, তখন সে আপনাকে খোঁজে |

.

সন্তান যখন দেখে তার বয়সী বাচ্চা তার বাবার হাত ধরে মাদ্রাসা/স্কুলে যাচ্ছে তখন সে আপনাকে খুব মিস করে|

সন্তানের জন্য মাসে এতো হাজার টাকা না পাঠিয়ে হাত ধরে মাদ্রাসা/স্কুলে দিয়ে আসুন |

.

সে আপনার আদর্শে বড় হবে |


তখন সে আপনার কাছে ৫ টাকার প্রয়োজনে ১০ টাকা চাইবে না | বরং ১০ টাকার কাজ টা ৫ টাকায় মিটমাট করার চেষ্টা করবে |

.

কাজের চাপে আপনি সারাদিনে বউকে মনে করার তেমন সময়ও পান না অনেক সময় | এদিকে দুপুরের নাওয়া-খাওয়া শেষ করার পর আপনার স্ত্রীর অলস বিকালে আর সন্ধ্যা নেমে আসতে চায় না |

জানালা দিয়ে সে বাইরে তাকিয়ে দূরের ঐ নীল আকাশে রং বেরঙের কত কী দেখে | দেখে না শুধু আপনাকে |

.

মাঝরাতে ঘুম ভাঙার পর বাম পাশে আপনাকে না পেয়ে বুকে আকাশ সমান বোঝা নিয়ে আপনার স্ত্রী ঘুমিয়ে যায় | এভাবেই আপনার বয়স ৫০ পেড়িয়ে যাবে, স্ত্রীর চোখ ধূসর হয়ে আসবে |

.

হলো না আপনাদের কদম হাতে বৃষ্টিতে ভেজা

আর হলো না আঁকাবাকা রাস্তায় পা মিলিয়ে সামনে হাটা হলো না | সন্তান বুকে নিয়ে ঘুমানো|

.

হলো টাকার পাহাড়, বিষের পাহাড়, বিষাদের পাহাড় | যার চাপায় পিষে যাবে কতগুলো রঙিন স্বপ্ন, পিষে যাবে স্ত্রীর প্রেম, খসে যাবে আপনার যৌবন |



নারকেল চাষে নতুন হুমকি সাদা মাছির দমন ব্যবস্থাপনা।

 নারকেল চাষে নতুন হুমকি সাদা মাছির দমন ব্যবস্থাপনা।

-----------------------------------------------------------------

বিভিন্নস্থানে নারকেল গাছে ব্যাপক আকারে সাদা মাছির আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে রাতারাতি পাতা সাদা হয়ে যাচ্ছে। ছোট হচ্ছে নারকেলের আকার। ভেতরের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এটি কোন পোকা-মাকড়ের আক্রমণ না। এটিকে সাদা মাছি বলা হয়।


ইংরেজিতে এই সাদা মাছিকে ‘Rugose Spiralling Whitefly’ অথবা সংক্ষেপে ‘আরএসডব্লিউ (RSW)’ (বিজ্ঞানসম্মত নাম: Aleurodicus rugioperculatus Martin) বলা হয়। বাংলায় একে সাধারণভাবে ‘নারকেলের সাদা মাছি’ বলতেই পারেন। যেহেতু, এই প্রজাতিটি বিজ্ঞানী মহলের কাছে বেশ নতুন, ফলে এদের সম্বন্ধে খুব বেশি তথ্য এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি। এর আদি নিবাস অবশ্য মধ্য আমেরিকা। উত্তর আমেরিকার বেশ কিছু কীট বিশেষজ্ঞ এদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর জানার জন্যে নিরন্তর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।


সাদা মাছি সনাক্তকরণ:


পাতার নিচের অংশ থেকে রস শুষে খেয়ে ফসলের প্রভূত ক্ষতিসাধন ছাড়াও এরা অনর্গল ‘হানি ডিউ’ অথবা আঠাল মধুর ন্যায় মিষ্ট তরল নিঃসরণ করতে থাকে। এই ‘হানি ডিউ’ আশে পাশের এবং নিচের পাতায় পড়ার পর তার উপর ‘ব্ল্যাক শুটি মোলড’ বা কালো রঙের ছোপ বিশিষ্ট ছত্রাক বাসা বাঁধে। এর ফলে গাছের পাতার উপরিভাগ সম্পূর্ণ কালো আস্তরণে ঢেকে যায় এবং তা গাছের সালোকসংশ্লেষন প্রক্রিয়ায় বাঁধা প্রদান করে।


নারকেলের সাদা মাছির পূর্ণাঙ্গ দশা সাধারণ সাদা মাছির তুলনায় ৩ গুণ (প্রায় ২.৫ মিলিমিটার) বড় হয় এবং এরা বেশ অলস প্রকৃতির। একটি পূর্ণাঙ্গ মাছির ডানার রঙ সাদা হয় এবং অগ্রভাগের ডানায় হালকা বাদামী রঙের ছোপ দেখতে পাওয়া যায়। পুরুষ মাছির দেহের নিম্নভাগে সাড়াশির ন্যায় গঠন দেখতে পাওয়া যায়।


সাদা মাছি নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল:


» যেসব পাতায় কালো ছোপ বা ‘Black Sooty Mould’ রয়েছে, সেখানে ১% স্টার্চের দ্রবণ স্প্রে করুন। স্টার্চ শুকিয়ে গেলে তা পাঁপড়ের মত কালো ছোপ গুলি সমেত উঠে আসবে।


» বাগানে প্রতি নারিকেল গাছে হলুদ রঙের আঠালো ফাঁদ বা Yellow Sticky Trap ব্যবহার করুন।


» বাগানে বন্ধু পোকা/natural predator চাষাবাদ করতে হবে।


» প্রকোপ খুব বেশি হলে পাতায় এবং গাছের কাণ্ডে ০.৫% নিম তেলের মিশ্রণ স্প্রে করতে পারেন।


» যেহেতু, এটি নতুন ধরনের একটি কীট, তাই কোনভাবেই একই কীটনাশক বার বার ব্যবহার করা যাবে না। একই রাসায়নিক বারংবার ব্যবহার করলে এরা সহজেই তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। তার ফলে পরবর্তীকালে তাদের নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়তে পারে। যদি, নিম তেল প্রয়োগে একান্তই সুফল না পাওয়া যায়, তবে এই নিম্নলিখিত, রাসায়নিকের মিশ্রণ যেমন-

Acephate ৫০ + Imidacloprid ১.৮ SP (১ মিলিলিটার/লিটার পানি), Buprofezin ১৫ + Acephate ৩৫ WP (১ মিলিলিটার/ লিটার পানি) অথবা Thiamethoxam ১২.৬ + Lambda cyhalothrin ৯.৫ ZC (০.৫ মিলিলিটার/ লিটার পানি) তরল সাবান সহযোগে ব্যবহার করতে পারেন।


যেহেতু নারকেল গাছ অনেক লম্বা। এ কারণে ফুট পাম্পের মাধ্যমে স্প্রে করতে হয় এবং সব গাছে একসঙ্গে করতে হয়। আসলে এটি ভালভাবে দমন করতে হলে সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থার মাধ্যমে দমন করা দরকার।


সকাল ০৭ টার সংবাদ তারিখ: ০৪-০৫-২০২৪

 সকাল ০৭ টার সংবাদ

তারিখ: ০৪-০৫-২০২৪


সংবাদ শিরোনাম:


‘শান্তির সংস্কৃতি’ সংক্রান্ত বাংলাদেশের প্রস্তাব জাতিসংঘে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত -সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘নেসা সেন্টার’।


দীর্ঘ ছুটি শেষে মাধ্যমিক স্কুল খুলছে আজ, প্রাথমিক বিদ্যালয় আগামীকাল।


চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ই মে।


সরকারকে চাপে ফেলতে গিয়ে বিএনপি নিজেরাই চাপে আছে - বললেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।


রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে আশাবাদী বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া।


গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছুতে ইসরাইল ও হামাসের প্রতি পুনরায় আহ্বান জানালেন জাতিসংঘ প্রধান।


গতরাতে চট্টগ্রামে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ।

কতটুক বাচবেন!

 কতটুক বাচবেন!

- ৬০ বছর? বড়জোর ৭০ নাহয় ৭৫ বছর! খুব লাকি হলে ৮০+!

এক বছরে ৩৬৫ দিন হয়! প্রতিদিনে ৮৬৪০০ সেকেন্ড! 


খুব বেশি সময় নিয়ে আসেননিতো!

টিক টক করে করে সেকেন্ড কিন্তু চলে যাচ্ছে! 

টুপ করে হাতে জমে থাকা সব সেকেন্ড শেষ হয়ে আসবে একদিন! 


একজন মানুষের কাছে যখন কয়েকশো কোটি টাকা থাকে তখন তাকে টাকার বিলাসিতা মানায়! যার কাছে কয়েকশো টাকা আছে তাকে কিন্তু টাকার বিলাসিতা মানায়না!

আপনার আয়ু যদি কয়েক হাজার বছর হতো তাইলে সময়ের বিলাসিতা আপনাকে মানাতো! 

এতো অল্প আয়ুতে মন খারাপ, কষ্ট, পচা ব্যাপারস্যাপার গুলোতে সময় নষ্টের সুযোগ কই!?


ফ্যামিলিকে সময় দিন, ভালো বই পড়ুন, টুক করে বেড়িয়ে আসুন চমৎকার কোন জায়গায়! রাত জেগে আকাশ দেখুন! ভোরের সূর্যোদয় দেখুন! 

সন্ধ্যায় পাখিরা কিভাবে ঘরে ফেরে সেটা দেখুন!

নদীর ঢেউ অনুভব করুন!


ভরা পূর্ণিমাতে এবং ভরা অমাবস্যায় তীব্র জোয়ারে ফুসে ওঠা সাগরকে দেখুন! 

প্রতিদিন সময় করে আধাঘন্টা কোন শিশুবাবুর সাথে থাকুন! নিষ্পাপ আনন্দের ঔচ্ছল্য দেখুন! 

স্রষ্টাকে স্মরণ করুন!


পৃথিবী কতো সুন্দর সেটা ফীল করুন!

নি:শ্বাস কতোটা সুন্দর সেটা অনুভব করুন!


চমৎকার একটা কথা আছে জানেনতো?

- Don't count the days, make the days count!!  😊


হ্যাপ্পি লাইফিং..


সংগৃহীতঃ জয়ন্তী ভারতী❤️

অদ্ভুত লীলাখেলা

 নিজের রুমে বসে আছি হঠাৎই রান্নাঘরে আমার ভাবী আমার স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বললেন,

-শোনো! তোমাদের লজ্জা হওয়া উচিৎ এভাবে অন্যের উপর বসে বসে খাওয়ার কারণে। তোমার স্বামীতো কিছু করেইনা উল্টো সারাদিন বখাটে ছেলেপেলেদের মতো টই টই করে ঘুরে বেড়ায়। আর কত দিন এভাবে খাবে? আমার স্বামীতো আর তোমাদের জন্য বস্তা ভরে কামাই করে না তাইনাহ? তুমি তোমার স্বামীকে বুঝিয়ে বলবা একটু। জায়গা জমির ভাগ পেয়েছে বলেই যে অন্যের কামাই খাবে এটা কেমন কথা? তোমরা আলাদা হয়ে যাও নয়তো আমরাই আলাদা হয়ে যাবো। বুঝছো?

ভাবীর এমন কথায় রাইসা বেশ ইতোস্তত ভঙ্গিতে বললো,

-না না ভাবী! আপনারা কেন আলাদা হবেন? বড় ভাইয়া সেই তরুণ বয়স থেকে এই বাড়ির প্রতিটি মানুষকে নিঃস্বার্থভাবে দেখে এসেছে। সেই হিসেবে আপনারাই এই বাড়ির উপযুক্ত অংশীদার। আপনি একদম চিন্তা করবেন না, আমি আপনার দেবরকে অচিরেই একটি চাকরী না হোক অন্ততঃপক্ষে একটি কাজ হলেও করতে বলবো। আর আমারও লজ্জা হয় এভাবে অন্যের উপর বসে বসে খেতে। চিন্তা করবেন না কিছুদিনের মধ্যেই আমরা আলাদা হয়ে যাবো।

ভাবী কিছুটা নাক শিটকানো ভঙ্গিতেই বললেন,

-হুম তাই যেন হয়।

.

আমি এই ঘর থেকে তাঁদের কথোপকথন শুনে আমার মনের মধ্যে প্রবল জেদ চেপে বসলেও সেটা বাহিরে প্রকাশ করার আর সাহস পেলাম না। কারণ এমনিতে ভাবীতো ঠিকই বলেছেন যে আমি কোনো কাজ করিনা তবে একটি চাকরীর জন্য যে কম চেষ্টা করে যাচ্ছি তাও কিন্তু মিথ্যে নয়। তাছাড়া এভাবে প্রতিনিয়ত আমার স্ত্রীর অপমানিত হওয়াতে আমার মনেও বারবার কড়া নাড়ে। 

ভাবীর কাছ থেকে এমন অপমানজনক কথা শুনে প্রত্যেক মেয়েরই তাঁর স্বামীর প্রতি ভয়ঙ্কর রাগ ঝাড়ার কথা ছিল কিন্তু অবাক করা বিষয় হল রাইসা রান্নাঘর থেকে আমাদের রুমে এসে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে গোসলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমার মনে হল এতক্ষণ যাবৎ ও ভাবীর মুখ থেকে যেই কথাগুলো শুনলো সেগুলো সে গায়েই মাখেনি। নিরবতা ভেঙ্গে আমি বললাম,

-ভাবী কি বললো তোমাকে?

রাইসা জানে ভাবীর সমস্ত কথাই আমি শুনেছি তবুও সে আলনার কাপড়গুলো গোছাতে গোছাতে বললো,

-কি আর বলবে? প্রতিদিন যা বলে সেটাই বলেছে।

-তোমার খারাপ লাগেনা এসব শুনলে?

-লাগে মাঝেমধ্যে তবে স্বামীর অসহায়ত্বটাও তো দেখতে হবে তাইনাহ? তুমিতো চাকরির জন্য চেষ্টা করছোই, যদি না করতে তবে বেশি খারাপ লাগতো।

মেয়েটির এমন কথায় আমি ওর মুখের দিকে অবাক নয়নে তাকিয়ে থাকি এবং প্রতিবারই মনে হয় প্রভু হয়তো ওকে এক্সট্রা কোনো উপকরণ দিয়েই তৈরি করেছেন। রাইসার মতো এতোটা ধৈর্য্যশীল মেয়ে বাস্তব জীবনে আমি খুব কমই দেখেছি।

.

আমি তখন সবে অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি। আমার বাবা মারা গিয়েছিলেন আমার শিশুকালেই আর সেই থেকেই আমার বড় ভাই আমাদের মা ছেলের এই ছোট্ট সংসারের হাল ধরেছিলেন।

আমার মা যখন মুমূর্ষু অবস্থায় বিছানায় পরেছিলেন তখনই তিনি বড় ভাইয়ের কাছে এক অনাকাঙ্ক্ষিত আবদার করে বসেন। মায়ের ইচ্ছা ছিল মৃত্যুর আগে আমার বিয়ে দেখে যাওয়া কিন্তু অমন ছাত্রাবস্থাতে এই যুগে বিয়ে করাটা স্বাভাবিকভাবেই সমাজের শিক্ষিত মানুষের নিকট চোখে বিঁধে যাওয়া কাঁটা বৈকি কিছু নয়। তবুও আমার হাজারো অনিচ্ছাসত্ত্বেও বড় ভাইয়া অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাইসার মতো এমন নমনীয় মনের অধিকারী মেয়েকে আমার বউ বানিয়ে আনেন। যদিও কোনো পরিবারই এমন অপরিপক্ব অনার্স পড়ুয়া ছেলের কাছে নিজেদের মেয়েকে সমর্পণ করতে চাননি কিন্তু আমার স্ত্রীর বাবা না থাকায় ওর পরিবার অনেকটা সুযোগ সন্ধানীর মতোই নিজেদের মেয়েকে এবাড়িতে বউ রূপে পাঠিয়ে দেন।

আমার মা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমাদের প্রতি ভাবীর হিংসা বিদ্বেষ ক্রমেই বাড়তে থাকে। কারণ একেতো আমি কোনো কাজ করিনা এরমধ্যে আবার বড় ভাইয়ের উপর বসে বসে আমি এবং রাইসা ফ্রিতেই খাচ্ছি। স্বভাবতই এগুলো কোনো নারীই মেনে নিবে না সেখানে ভাবীর কথাতো বাদই দিলাম। 

.

রাতে আমি আর রাইসা নিজেদের রুমে বসে গল্পগুজব করছি হঠাৎই ভাইয়ার রুম থেকে চিৎকার চেচামেচির আওয়াজ শুনে দুজনেই কানটা একটু খাঁড়া করলাম। যতটুকু বুঝতে পারলাম যে ভাবী আমাদের ব্যপারেই ভাইয়ার সাথে ঝগড়া করছে। একপর্যায়ে ভাইয়া ঝগড়ার মাঝেই ভাবীর গালে চড় বসিয়ে দিলেন। অবস্থা ক্রমেই বেগতিক হচ্ছে দেখে আমরা আর একমুহূর্ত দেরী না করে তাঁদের রুমে পাড়ি জমাই। আমাদের দেখে ভাবীর রাগের মাত্রাটা বোধহয় আরো একটু বাড়লো। তিনি অনেকটা আক্রোশ কন্ঠেই আমাদের শুনিয়ে শুনিয়ে ভাইয়াকে বললেন,

-তোমার ভাই আর ভাইয়ের বউয়ের প্রতি যখন এতোই দরদ উতলিয়ে পরছে তবে তাঁদের নিয়েই তুমি এবাড়িতে থাকো। আমি কালই বাপের বাড়িতে চলে যাবো।

এই বলেই যখন তিনি রুম থেকে বের হতে যাবেন তখনই রাইসা তাঁর হাত ধরে থামাতে গিয়েও ব্যর্থ হল। তিনি অনেকটা ঝাড়ি দিয়েই রাইসার হাতটি ছুটিয়ে হনহন করে বের হয়ে গেলেন।

এমন পরিস্থিতি দেখে আমি ভাইয়াকে শান্ত স্বরে বলে উঠলাম,

-ভাইয়া, আমি একটা কাজ পেয়েছি। কালই রাইসাকে নিয়ে অন্যত্র পাড়ি জমাবো। তুমি আর চিন্তা করোনা এসব নিয়ে।

-ধুর কি বলিস! তোর ভাবীর কথায় কি সবকিছু হবে নাকি। এই বাড়িতে আমার যেমন অংশীদারিত্ব আছে তেমনি তোরও আছে। তুই এখানেই থাকবি ও যা বলার বলুক।

-থাক, আমরা চাইনা আমাদের কারণে তোমাদের মধ্যে কোনো অশান্তির সৃষ্টি হোক। আর এই বাড়িতে আমার অংশীদারিত্ব আছে সেটা আমি অস্বীকার করছি না তবে তুমি এই পর্যন্ত আমাদেরকে যেভাবে নিঃস্বার্থভাবে দেখে এসেছো সেই তুলনায় এই বাড়িতে তোমাদের থাকার যৌক্তিকতাটুকুই বেশি। আমরাতো মাঝেমধ্যেই বেড়াতে আসবো। তুমি একদম চিন্তা করবেনা আমাদের নিয়ে।

সেদিন ভাইয়াকে অনেক আত্মবিশ্বাস নিয়ে কথাগুলো বললেও পরবর্তীতে বাড়ি ছেড়ে চলের আসার পর বাস্তবতার কাঠিন্যতার মাঝে ভালোই আটকে গিয়েছিলাম। একজন শিক্ষিত ছেলের সিএনজি চালানোটা যে কতটা অপমানজনক ছিল সেটা আমি খুব ভালো করেই বুঝতে পারতাম। তবুও কোনো কাজই অসম্মানের নয় এই ধারণা মনে পুঁষে রেখে এবং আমার স্ত্রী এই অসহায়ত্বের মাঝেও আমার পাশে থাকায় নিজের মনে এক অন্যরকম প্রশান্তি অনুভব করতাম। তবে এতোকিছুর মাঝেও আমাদের সংসারে সুখের কোনো কমতি ছিল না। একটা সময় প্রভুর কল্যাণে আমি বেশ ভালো বেতনের একটি চাকরিও পেয়ে যাই। সেদিন আমার মনে হয়েছিল ভালো কিছু পেতে হলে অবশ্যই পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই।

.

অফিস থেকে বাসায় ফিরেছি হঠাৎই ভাইয়ার নাম্বার থেকে কল আসলো। রিসিভ করতেই অপরপাশ থেকে কান্নামিশ্রিত কন্ঠে আমার ভাবী বলে উঠলেন,

-তুমি তাড়াতাড়ি ঢাকা মেডিকেলে চলে আসো। তোমার ভাইয়া এ্যাক্সিডেন্ট করেছেন। প্লিজ তাড়াতাড়ি আসো।

ভাবীর কথা শুনে আমি অনেকটা নাওয়া খাওয়া ভুলেই আমার স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে রওয়ানা দেই।

শেষপর্যন্ত অজস্র চেষ্টা করার পরেও ভাইয়াকে বাঁচাতে পারিনি। ভাইয়ার এভাবে অকাল মৃত্যুতে স্বভাবতই আমার কষ্টের মাত্রাটা বেশ তীক্ষ্ণই ছিল বটে। আমার স্ত্রীও যে একমাত্র ভাসুরের এমন মৃত্যুতে কষ্ট লোপণ করেনি তাও কিন্তু নয়। ভাবী বারবারই অতি শোকে মূর্ছা যাচ্ছিলেন আর আমার দুই ভাতিজিও বাবার এমন মৃত্যুতে কাঁদতে কাঁদতে চোখের অবশিষ্ট জলটুকুও খুইয়ে ফেলেছিল।

.

ভাইয়ার মৃত্যুর দুইমাস চলে গেছে এমনকি এখন পরিস্থিতিটাও বেশ স্বাভাবিক হয়ে গেছে। আজ রাতে যখন ঘুমানোর প্রস্তুতি নিবো ঠিক তখনি রাইসা আমাকে বলে উঠলো,

-শোনো, ভাবী আজ কল দিয়েছিল।

-কেনো?

-না মানে সিমুর স্কুলের কয়েকমাসের বেতন নাকি বকেয়া রয়ে গেছে। ওর বেতন না দিলে নাকি স্যারেরা পরীক্ষা দিতে দিবেনা তাই তোমার কাছে কিছু টাকা চেয়েছিল ধার হিসেবে।

আমি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললাম,

-কাল বিকাশে পাঠিয়ে দিও।

.

এর কিছুদিন পর হঠাৎই এক অচেনা নাম্বার থেকে আমার ভাতিজি আমাকে ফোন দিয়ে বললো,

-চাচ্চু! এক লোক আমাদের বাসার সবকিছু নিয়ে যেতে এসেছে। ঐ লোক নাকি আম্মুর কাছে টাকা পেত, তুমি তাড়াতাড়ি আসো।

ভাতিজির ফোন পেয়ে নিজেকে আর স্থির রাখতে পারলাম না বরং তৎক্ষনাৎ রাইসাকে নিয়ে সেখানে রওয়ানা দিলাম। উপস্থিত হতেই দেখতে পাই ভাবী সেই লোকের নিকট অজস্র আকুতি মিনতি করছে কিন্তু লোকটি কোনোভাবেই তাঁর কথা না শুনে কিছু লোক নিয়ে ঘরের দামি দামি আসবাবপত্র গুলো বস্তায় ভরছে। আমি এমন কান্ড দেখে এগিয়ে গিয়ে লোকটিকে বললাম,

-ঐ মিয়া আর একটা জিনিসে যদি হাত লাগে তাহলে খবর আছে। সবগুলো জায়গা মতো রাখেন। কতটাকা পাবেন বলেন?

-দশ হাজার।

-ওকে এই নেন। আর সবকিছু জায়গা মতো রেখে এখনি বাসা থেকে বের হন।

অতঃপর লোকটি চলে যেতেই ভাবী কান্নায় রাইসার উপর ঢলে পরলেন। পরক্ষণেই কান্নামাখা স্বরে বললেন,

-তোমরা যদি আজ না আসতে তবে আমার যা সম্মান ছিল তার সাথে সাথে ঘরের মালামালও ওরা নিয়ে যেত।

-আচ্ছা! আমি থাকতে আপনি ওদের থেকে টাকা ধার নিতে গেলেন কেন? আমি কি মরে গিয়েছি নাকি?

-তোমার কাছে আর কত টাকা ধার চাইবো বলো। তোমাদেরকে আমি এতবার অপমান করার পরও তোমরা কিছু মনে না করে আমাকে টাকা ধার দিয়েছিলে। আমাকে ক্ষমা করে দিও তোমরা। আমি আজ সত্যিই এই দুটো মেয়েকে নিয়ে অসহায়।

রাইসা তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বললো,

-ভাবী! বড় ভাইয়া আমাদের যে কতটা সাহায্য করেছিল সেটা আমরা ভুলে যাইনি। আর আপনার দেবর আপনাকে কোনো টাকা ধার দেয়নি বরং এগুলো নিজের দায়িত্ববোধ থেকে এমনিতেই দিয়েছে আর ভবিষ্যতেও দিয়ে যাবে।

রাইসার কথায় আমি তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলাম না। কারণ মেয়েটি এমনই যে কখনোই নিজের মনে কোনো প্রতিশোধের আগুন প্রজ্জ্বলিত করে না। আমার যদিও ভাবীর মতো এমন অহংকারী মহিলার দায়িত্ব গ্রহণের ব্যপারে কোনো ইচ্ছাই ছিল না তবে আমার এমন নমনীয় হৃদয়ের অধিকারী স্ত্রীর সিদ্ধান্ত আদৌ আমার পক্ষে রিজেক্ট করা সম্ভব নহে। সত্যিই এমন হিংসা বিদ্বেষহীন মনের অধিকারী মেয়ে সমাজে খুব কমই আছে। তবে এই কথাও চিরন্তন সত্য যে সময় সবার সবসময় এক যায়না। একটা সময় ভাবী আমাদের অপমান করে বাড়িছাড়া করেছিল আর আজ তিনিই কিনা আমাদের উপর নির্ভরশীল। ইহা সত্যিই প্রভুর এক অদ্ভুত লীলাখেলাই বটে।

.

.

*অদ্ভুত লীলাখেলা

.

সমাপ্তির দ্বারপ্রান্তে

Misk Al Maruf

শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪

ইচ্ছে  করে হারিয়ে যাই আবার ছেলেবেলাতে আবার গিয়ে মেতে উঠি ছোট্টবেলার খেলাতে।

 ইচ্ছে করে হারিয়ে যাই আবার ছেলেবেলাতে

আবার গিয়ে মেতে উঠি ছোট্টবেলার খেলাতে।


ইচ্ছে করে আবার আমি গাঙ্গে গিয়ে নৌকাবাই

হারিয়ে যাওয়া পুতুলটারে আবার এনে বউ সাজাই।


সাত সকালে সবাই মিলে আবার গিয়ে ফুল তুলি

ফাঁদ পাতিয়া ধরি বনের ময়না টিয়া বুলবুলি।


ইচ্ছে করে আবার গিয়ে ঘুড়ির সুতায় ধার লাগাই

ইচ্ছে করে আবার গিয়ে বৃষ্টি ভিজে আম কুড়াই।


ইচ্ছে করে আবার গিয়ে সবাই মিলে স্কুল পালাই

আবার গিয়ে কঞ্চি দিয়ে লাঙ্গল জোয়ান মই বানাই।


ইচ্ছে করে গাড়ি বানাই তাল সুপারির ডাল দিয়ে

পুতুল খেলার ঘর বাঁধি সেই কলাপাতার চাল দিয়ে।


ইচ্ছে করে আবার গিয়ে শাপলা তুলি দল বেঁধে

সবাই মিলে নাচি পায়ে শাপলা ডাটার মল বেঁধে।


ইচ্ছে করে গাঙ্গে আবার বড়শি ফেলি জালটানি

ইচ্ছে করে মায়ের মধুর সেই বকা সেই গাল শুনি।


আজকে আমি হারিয়ে যাব সেই সে মধুর শৈশবে

আর কে যাবি আমার সাথে আয় রে তোরা আয় সবে।


স্মৃতির কান্না

ফেরদৌস আহাম্মদ।


আমার কালের চিত্র বইটি কেউ সংগ্রহ করতে চাইলে মেসেজ করুন আমার পেইজে অথবা ফোন করুন আমার এই নাম্বারে।


খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা টপিক.. ফেইসবুক থেকে নেওয়া

 খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা

টপিক.. 😊

অবশ্যই পড়ার চেষ্টা করবেন.. 🙏🏿


১৮০০/১৯০০ সালে দেশ দখল করে সম্পদ লুট করা হত, ইউরোপিয়ানরা এটা করেছে ।


এখন করা হয় অর্থনীতি লুট, 

আমাদের দেশের প্রধান সম্পদ - কৃষি লুট হয়ে যাচ্ছে ।


এই যেমন ধরেন, আমাদের দেশের যত সবজি, সব বীজের জন্য আমরা দেশি বীজ ধ্বংস করে বিদেশী হাইব্রিড বীজের উপর নির্ভরশীল হয়ে গেছি । 


বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) তথ্য অনুযায়ী স্থানীয়ভাবে মাত্র ৭ শতাংশ বীজ উৎপাদিত হয়। বাকি ৯৩ শতাংশই আমদানি করতে হয়। 


কিভাবে এটা হল ?

কেন হল ?


//.\


সবুজ বিপ্লবে নর্মান বর্লাগ গমের উপরে পরিক্ষা নিরিক্ষা করেন এবং সিলেক্টিভ মডেল এবং বায়োটেকনোলজি নিয়ে ।  যে জাত গুলো ফাঙ্গাস এবং রোগ প্রতিরোধি সেগুলোকে নিয়ে ফসল ফলানর চেস্টা করেন।


এটা এতই বেশি উতপাদন করা শুরু করে যে, ১৯৫৩ সালে শুরু করা প্রজেক্ট এর কারনে, মেক্সিকোর খাবারের সমাধান হবার পরেও তারা রফতানি করা শুরু করে ১৯৬৩ সালেই ।

এই সাফল্য পাকিস্তান এবং ইন্ডিয়াতেও প্রভাব ফেলে এবং এখানেও একই উপায়ে ফসল ফলানো শুরু হয় । পাকিস্তান ১৯৬৫ তে ৫ মিলিয়ন টনকে ১৯৭০ এ ৮ মিলিয়ন টনে নিয়ে যায় ।


এরপরে এটার বীজকে হাইব্রিড বীজ নাম দিয়ে এমন বীজ বাজারে নিয়ে আসা হয় যে বীজ একবার ফলন দেয়, কিন্তু সেই ফসলের বীজ আবার বুনলে তেমন বেশি ফলন হয় না ।


অতিরিক্ত বেশি উতপাদনের ফলে, চাষিরা বেশি লাভের আশায় বেশি পরিমানে এই ধরনের হাইব্রিড বীজ চাষাবাদ শুরু করে । 


আর, বিভিন্ন ন্যাটিভ বীজ গুলো সারা দুনিয়াতেই গুরুত্ব হারাতে থাকে ।

ফলে, বর্তমানে সারা দুনিয়াতেই পুজিবাদি কোম্পানিদের বীজের রাজত্ব । 


যেখানে আমাদের দেশের চাষিরা প্রতি ফলনের পরেই দেশী বীজ নিজেরাই সংরক্ষণ করতেন - এখন তেমনটা হয় না । 

এমনকি ধান বীজ পর্যন্ত চাষিরা বাজার থেকে কেনে । 


আমাদের দেশের ডলার সংকট চলছে খবরের কাগজে আমরা সবাই জানি । 

কোনভাবে যদি মাত্র ২ মাস বীজ আমদানি বন্ধ থাকে, তাহলে সামনের শীতের সিজনে  কাচা মরিচের কেজি ১২০০ তেও পাবেন ?


//.\


ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়ে আমেরিকা একটা নতুন  পলিসি নেয়, ফুড অ্যাজ আ ওয়েপন ।


তারা মাঠের পর মাঠ ফসল পুড়িয়ে দিত যেন ভিয়েতনামিজরা খাবার না পায় । এই পলিসি থেকেই আসে বর্তমানের ফুড পলিসি । 


আফ্রিকার আছে সবচে বেশি  জমি অথচ সেখানের অনেক দেশেই মানুষ পুস্টিকর খাবার পায়না । 

ভারতীয় উপমহাদেশে আছে সবচে উর্বর জমি অথচ এখানে ৭০% শিশু পুস্টিকর খাবার পায়না ।


হাইব্রিড ফসল উতপাদন বাড়ায়, কিতু পুস্টি মান বিচারে তা ১০ গুণ কম পুস্টি দেয় । মনোক্রপ, যেখানে একটা ফসলই এক জমিতে ফলানো হয় সেখানে উতপাদন ত বাড়ে, কিন্তু এতে করে ফসলের সারের খরচ, কীটনাশক ব্যাহার এর খরচ যায় বেড়ে ।


আমরা ফসলে ইউরিয়া দেই যা নাইট্রোজেন দেয় মাটিতে, অথচ অইখানেই পলিক্রপ করলে, যেকোন ডাল জাতীয় কোন সবজি করলে সেটাই মাটিতে নাইট্রোজেন ফিক্স করে দিত ।

অথচ, ইউরিয়া দেয়ার কারনে পোকারা বেশী আসে । 


আমরা, সার দিয়ে খরচ বাড়াই, কীটনাশক দিয়ে খরচ আরো বাড়াই । 


এই বীজে তাদের উপর নির্ভরশীল আমরা, সেই ফসল যেন তাদেরই দেয়া কীটনাশক সহনশীল হয় সেটাই তারা তাদের ল্যাবে ডিজাইন করে আমাদের চাষীদের দেয় ।


এরপরে, তারা ট্রেনিং দেয়, বৃত্তি দেয়, তাদের তৈরি সিলেবাস আমাদের গেলায় - এবং এদের পক্ষে মিডীয়াও সাফাই গায় । 


আমরা পেট ভরে ত খাই, কিন্তু পুস্টি না পেয়ে পাই ক্যান্সার ! 


এরপরে তাদেরই বানানো ঔষধ খাই । 


এইসব সমস্যার সমাধান করবে কে ? 

কে বিড়ালের মুখোশ পড়ে থাকা চিতাবাঘের সামনে গিয়ে লড়াই করবে ? !!


//.\


আমেরিয়াক্য কোণ চাষী যদি ভুট্টা বীজ সংরক্ষন করেন পরের সিজনে লাগানর জন্য - তবে তিনি সেই কোম্পানির বীজ রাখার দায়ে জেলে যাবেন এবং বিরাট অংকের অর্থ দন্ড দিতে বাধ্য থাকবেন । 


পেটেন্ট করা আছে, কেউ বীজ সংরক্ষণ করতে পারবে না । 

তাকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কাছে থেকেই বীজ কিনতে হবে । 


আমাদের বাজারের কোণ বীজের দোকানে আপনি দেশি বীজ পাবেন না । ব্যাক্তি পর্যায়ে দেশি জাতের সবজি বীজ প্রায় বিলুপ্ত । 


এই যে ৩২০০ কোটি টাকার বীজ আমদানি করতে হয় - এইভাবে লুট করা আমাদের বীজের বাজার ফিরে পাবার তেমন আর কোন উপায় নাই । 


কিছুই, না, ইন্দোনেশিয়া আর ভারত যদি আমাদের কাছে বীজ না পাঠায় - তবে পরের সীজনে দেশের ৭০% জমিতে ফসল ফলবে না । 


এই যে বীজের ব্যাবসা  তাদের হাতে আমরা তুলে দিয়েছি - এটাকে তারা কিভাবে ব্যাবহার করবে  ? 

শুধুই কি ব্যাবসা হিসেবে নাকি অস্ত্র হিসেবে?

জানা প্রয়োজন গায়রত কী? *******************

 ★জানা প্রয়োজন গায়রত কী? ************************** প্রিয় নবীজীর সাহাবীরা তাদের স্ত্রী'র নাম পর্যন্ত পরপুরুষকে বলতো না। এটাই গায়রত।তথা-(...