এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪

শাশুড়ীকে সাথে সম্পর্ক ভালো রাখার কিছু টেকনিক।

 শাশুড়ীকে সাথে সম্পর্ক ভালো রাখার কিছু টেকনিক।


১.বিয়ের পর পরই সংসারের গিন্নী হতে যাবেন না কারন এই সংসার টাকে তৈরি করেছে আপনার শাশুড়ি তাই তাকে নিজের আপন করে নেন তাহলে সবি আপনার।


২.রান্না করতে গেলে শাশুড়িকে জিজ্ঞাসা করে রান্না করুন,প্রয়োজনে তার পছন্দের খাবার রান্না করুন।


৩.অবসর সময়ে একা সময় না কাটিয়ে শাশুড়ির সাথে তার বিয়ের পরের কথাগুলো জানতে চান,এতে আপনার শাশুড়ি পুরোনো সব স্মৃতিতে ঘুরে আসতে পারবে আপনাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হবে।


৪.ভালো শাশুড়িদের কিছু ইসলামিক বই শাশুড়িকে উপহার দেন তাহলে অনেকটা উপকার হতে পারে।


৫.নিজের জন্য কিছু শপিং করতে গেলে শাশুড়ির জন্যও কিনে আনুন দেখবেন খুব খুশি হবে।


৬.শাশুড়ির সাথে একসাথে বসে খাওয়া দাওয়া করুন।


৭. শাশুড়ির চুলে তেল দিয়ে দেন,চুল আচড়িয়ে দেন।


৮. শাশুড়িকে শুনিয়ে শুনিয়ে আপনার মায়ের কাছে শাশুড়ির নামে ইনিয়ে বিনিয়ে প্রশংসা করুন দেখবেন মন গলে যাবে।


৯.শাশুড়ী রেগে বকা দিলে চুপ করে থাকুন,দেখবেন রাগ কমে গেলে নিজ থেকেই কথা বলবে।তর্কে জড়ালে ঝগড়া বাড়বে।


১০.শাশুড়ী অসুস্থ হলে সেবা করুন,বাড়ি থেকে বাইরে গেলে শাশুড়ির অনুমতি নেন।বাসায় ফিরলে বাহির থেকে শাশুড়ির প্রিয় খাবার কিনে আনুন।


১১.আশেপাশের মানুষের কাছে শশুর বাড়ির সবার সম্পর্কে প্রশংসা করুন ইনশাআল্লাহ সবাই ভালোবাসবে।


১২. আর শাশুড়ী কখনো মা হয় না এসব ধারনা মুছে ফেলুন।সব মানুষ এক রকম না তাই মানিয়ে নিতে শিখুন। যদি ভালো লাগে

এটাই আমার পেজ ফলো করুন


ভালোবাসা দিয়েই...

ভালোবাসা অর্জন করা সম্ভব!🙂


ছাতা আবিষ্কৃত হয়েছিল আজ থেকে প্রায় চার হাজার বছর আগে।

 ছাতা আবিষ্কৃত হয়েছিল আজ থেকে প্রায় চার হাজার বছর আগে। ঠিক কোথায় এবং কারা প্রথম ছাতা আবিষ্কার করেছিল এই নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কেউ বলে মিশরীয়রা প্রথম ছাতা আবিস্কার করে আবার কেউ বলে চাইনিজরা। তবে প্রাচীন মিশর, গ্রীস এবং চীন দেশের চিত্রকর্মে ছাতার নিদর্শন পাওয়া যায়। ছাতা প্রথমে ব্যবহৃত হত সুর্যের তাপ থেকে রক্ষা পাবার জন্য এবং মহিলারাই ছিল মুলত ছাতা ব্যবহারকারী। তবে বৃষ্টি প্রতিরোধ করার জন্য প্রথম ছাতার ব্যবহার শুরু করে চাইনিজরা। ছাতা আবিষ্কারের কাহিনী অনেক পুরাতন হলেও অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত ছাতার আকৃতি ছিল অনেক বড় এবং ওজনও ছিল বেশী। যেহেতু ছাতার রডগুলো ছিল কাঠের বা তিমি মাছের কাঁটার এবং হাতল ছিল প্রায় দেড় মিটার লম্বা তাই ছাতার গড় ওজন বেশী ছিল, আনুমানিক ৪-৫কেজি।


ডারউইনের জীবনের এই ১০ তথ্য কি জানতেন? চার্লস রবার্ট ডারউইনের সঙ্গে সবার আগে যে শব্দগুচ্ছ কানে বাজে, তা হল বিবর্তন তত্ত্ব। তবে, তার বিশ্ব ভ্রমণ নিয়েও নানা সময় নানা গল্প শোনা গেছে। এর বাইরেও বেশ ঘটনাবহুল জীবন কেটেছে ডারউইনের। আসুন, তার জন্মদিনে মিলিয়ে নেই তার কোন কোন গল্প জানা আছে আগে থেকেই – ১. একই দিনে জন্মেছিলেন এব্রাহাম লিংকন ও চার্লস ডারউইন এব্রাহাম লিংকন ও ডারউইন দুজনই ১৮০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তবে তাদের কাজের ক্ষেত্র ছিল বেশ ভিন্ন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ষোড়শ প্রেসিডেন্টের জন্ম কেনটাকি অঙ্গরাজ্যে কাঠের গুড়ি দিয়ে তৈরি একটি ঘরে। আর একইসময় কেনটাকি থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত ইংল্যান্ডের প্রাচীন শহর শ্রুজব্রি বা শ্রোউজব্রি শহরের এক ধনী পরিবারে জন্ম হয় ডারউইনের। ২. বিবর্তন তত্ত্ব প্রকাশে ২০ বছরের অপেক্ষা রাজকীয় নৌবাহিনীর জাহাজ ‘এইচএমএস বিগল’-এ ডারউইনের পাঁচ বছরের সমুদ্রযাত্রা শেষ হয়েছিল ১৮৩৬ সালে। এ যাত্রা ডারউইনের অমূল্য গবেষণা অর্থাৎ বিবর্তনে প্রকৃতিক নির্বাচনের তত্ত্বে উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। তবে তার এ যুগান্তকারী ধারণা মানুষ ও ধর্মযাজকদের মধ্যে শঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। আর ১৮৫৮ সালের আগ পর্যন্ত বিবর্তন নিয়ে কোনো তত্ত্ব জনসমক্ষে উপস্থাপন করেননি তিনি। পরবর্তীতে, ব্রিটিশ প্রকৃতিবিদ আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেসের সঙ্গে একটি যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে নিজের তত্ত্ব নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে যান ডারউইন। এর ঠিক পরের বছরই নিজের মূল কাজ “প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রজাতির উৎপত্তি বা জীবের সংগ্রামের মাধ্যমে টিকে থাকা” নিয়ে তথ্য প্রকাশ করেন তিনি। ৩. দীর্ঘদিন অসুস্থতায় ভুগেছেন ডারউইন বিশ্ব ভ্রমণের লম্বা সফর শেষে ফিরে আসার পর ক্লান্ত হয়ে পড়েন ডারউইন। এর পর থেকেই একজিমা, বমি ভাব, মাথাব্যথা ও হৃদজনিত রোগের মতো দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায় ভুগতে থাকেন তিনি। এমন শারীরিক সমস্যা নিয়ে সারা জীবনই লড়াই করতে হয়েছে ডারউইনকে। অনেকের ধারণা, ভ্রমণের সময় ডারউইন ‘চাগাস’ নামের এক পরজীবীবাহিত রোগে আক্রান্ত হন, যার ফলে তার হৃদযন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি শেষ পর্যন্ত এ রোগেই ডারউইনের মৃত্যু হয়েছিল। ৪. তালিকা বানিয়েছিলেন বিয়ের ভাল-মন্দ নিয়ে এমনকি হৃদয় বা অনুভূতির বিষয়েও ডারউইনের যৌক্তিক মতবাদ রয়েছে। নিজের বিয়ের আগে অর্থাৎ ১৮৩৬ সালে বিয়ের ভাল-মন্দ দিক নিয়ে একটি তালিকা তৈরি করেছিলেন ডারউইন। তালিকার ভাল দিকগুলোর মধ্যে ছিল– ‘বিয়ে’, ‘সন্তান,’ ‘নিত্যনতুন সঙ্গী (ও বৃদ্ধ বয়সে বন্ধু) ... বা কুকুরের চেয়ে ভাল কিছু’ ও ‘বাড়ির যত্ন নেওয়ার মতো কেউ’। আর মন্দ দিকের মধ্যে ছিল– ‘বিয়ে না করা’, ‘যেখানে সেখানে যাওয়ার স্বাধীনতা’, ‘ক্লাবে পটু পুরুষদের কথোপকথন’ ও ‘সময়ক্ষেপণ’। ডারউইনের এই তালিকায় অবশ্য পারিবারিক বন্ধনের জন্য কাউকে বিয়ে করার কথা উল্লেখ না থাকলেও ১৮৩৯ সালে নিজের ফার্স্ট কাজিন এমা ওয়েজউডকে বিয়ে করেছিলেন ডারউইন। ৫. মেডিকেল স্কুল থেকে বেরিয়ে আসা ডারউইনের বাবা একজন সফল ডাক্তার ছিলেন। ছেলেকেও নিজের মতো একজন সফল ডাক্তার বানাতে চেয়েছিলেন তিনি। ১৮২৫ সালের গ্রীষ্ম শেষে নিজ বাবার কাছে একজন শিক্ষানবিশ হিসাবে কাজ শুরু করেন ডারউইন। পরবর্তীতে, যুক্তরাজ্যের অন্যতম শীর্ষ ‘ইউনিভার্সিটি অফ এডিনবার্গ’-এর মেডিকেল স্কুলেও পড়তে গিয়েছিলেন তিনি। তবে ডারউইন রক্তপাত ঘৃণা করতেন। এমনকি সে সময় মেডিকেল কলেজের বক্তৃতা শুনেও বিরক্ত হয়েছিলেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায়, নিজের বাবার স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করে মেডিকাল স্কুল ছেড়ে দেন ডারউইন। ৬. ১৮ বছর ধরে ১০ পাউন্ডের নোটে ছিল ডারউইনের ছবি ২০০০ সালের শুরুতে ব্রিটিশ ১০ পাউন্ড নোটের পেছনে রাজকীয় জাহাজ ‘এইচএমএস বিগল’-এর একটি ছবি’সহ দাড়িওয়ালা ডারউইনের প্রতিকৃতি ছিল। সে নোটের পেছনে একটি ম্যাগনিফাইং লেন্স, ডারউইনের ভ্রমণে দেখা বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীও দেখা যেত। তবে, ২০১৮ সালে এ ১০ পাউন্ডের নোট ছাপানো বন্ধ করে দেয় ‘ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড’। ৭. ‘সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট’ কথাটি তার নিজের নয় বিবর্তনবাদের গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বটি ডারউইনের নিজের হলেও ‘সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট’ শব্দটি আসলে প্রথম ব্যবহার করেছিলেন ইংরেজ দার্শনিক হার্বার্ট স্পেন্সার। ১৮৬৪ সালে প্রকাশিত বই ‘প্রিন্সিপালস অফ বায়োলজি’তে ডারউইনের জৈবিক ধারণার সঙ্গে নিজের অর্থনৈতিক ও সমাজতাত্ত্বিক তত্ত্বের যোগসূত্র খুঁজে বের করতে প্রথম এই ‘সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট’ শব্দটি ব্যবহার করেন তিনি। অন্যদিকে, ১৮৬৯ সালে নিজের বই ‘অরিজিন অফ দ্য স্পিশিজ’-এর পঞ্চম সংস্করণে প্রথমবারর মতো এই শব্দটির ব্যবহার করেন ডারউইন। ৮. সমাহিত হয়েছেন ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে ডারউইন ১৮৮২ সালের ১৯ এপ্রিল মারা যান। নিজের জীবনের শেষ ৪০ বছর কাটানো গ্রামে তাকে সমাহিত করার প্রস্তুতি শুরু করে ডারউইনের পরিবার। তবে এর বিপরীতে, ডারউইনকে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে সমাধিস্থ করার জন্য জোর প্রচার শুরু করেন তার বন্ধু ও সহকর্মীরা। সংবাদপত্র ও জনসাধারণের চাহিদার প্রেক্ষিতে ওয়েস্টমিনস্টারের তৎকালীন ডিন এই দাবি মেনে নেন। মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর ইংল্যান্ডের সবচেয়ে শ্রদ্ধেয় গীর্জায় নিজের সহকর্মী বিজ্ঞানী জন হার্শেল ও আইজ্যাক নিউটনের পাশে সমাহিত করা হয় ডারউইনকে। ৯. ছিলেন ধর্মশাস্ত্রের ছাত্র “আমি তখন বাইবেলের প্রতিটি শব্দের কঠোরতা ও আক্ষরিক সত্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করিনি,” পরবর্তী সময়ে লিখেছিলেন ডারউইন। তবে বিশ্ব ভ্রমণ ও তিন সন্তানের মৃত্যুর পর ডারউইনের ধর্মীয় বিশ্বাস নড়বড়ে হতে শুরু করে। তিনি নিজেকে কখনোই নাস্তিক হিসেবে দাবি করেননি। এর পরিবর্তে, নিজেকে একজন অজ্ঞেয়বাদী হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি। অজ্ঞেয়বাদ হচ্ছে– এমন দার্শনিক চিন্তা বা ধারণা, যেখানে কোন ঈশ্বর বা পরমসত্ত্বা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব বা নিরস্তিত্ব উভয়ই মানুষের অজানা ও এটি তাদের দ্বারা কখনও জানা সম্ভব হবে না। ১০. তার বইয়ের পূর্ণ নাম কী ছিল সাধারণভাবে ‘দ্য অরিজিন অফ স্পিশিজ’ নামে বইটি পরিচিত হলেও ডারইউনের লেখা বইটির পূর্ণ নাম হচ্ছে - ‘অন দ্য অরিজিন অফ স্পিশিজ বাই মিনস অফ ন্যাচরাল সিলেকশন, অর দ্য প্রিজার্ভেশন অফ ফেভার্ড রেইসেস ইন দ্য স্ট্রাগল ফল লাইফ’।

ডারউইনের জীবনের এই ১০ তথ্য কি জানতেন?


চার্লস রবার্ট ডারউইনের সঙ্গে সবার আগে যে শব্দগুচ্ছ কানে বাজে, তা হল বিবর্তন তত্ত্ব। তবে, তার বিশ্ব ভ্রমণ নিয়েও নানা সময় নানা গল্প শোনা গেছে। এর বাইরেও বেশ ঘটনাবহুল জীবন কেটেছে ডারউইনের।


আসুন, তার জন্মদিনে মিলিয়ে নেই তার কোন কোন গল্প জানা আছে আগে থেকেই –


১. একই দিনে জন্মেছিলেন এব্রাহাম লিংকন ও চার্লস ডারউইন


এব্রাহাম লিংকন ও ডারউইন দুজনই ১৮০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তবে তাদের কাজের ক্ষেত্র ছিল বেশ ভিন্ন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ষোড়শ প্রেসিডেন্টের জন্ম কেনটাকি অঙ্গরাজ্যে কাঠের গুড়ি দিয়ে তৈরি একটি ঘরে। আর একইসময় কেনটাকি থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত ইংল্যান্ডের প্রাচীন শহর শ্রুজব্রি বা শ্রোউজব্রি শহরের এক ধনী পরিবারে জন্ম হয় ডারউইনের।


২. বিবর্তন তত্ত্ব প্রকাশে ২০ বছরের অপেক্ষা


রাজকীয় নৌবাহিনীর জাহাজ ‘এইচএমএস বিগল’-এ ডারউইনের পাঁচ বছরের সমুদ্রযাত্রা শেষ হয়েছিল ১৮৩৬ সালে। এ যাত্রা ডারউইনের অমূল্য গবেষণা অর্থাৎ বিবর্তনে প্রকৃতিক নির্বাচনের তত্ত্বে উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। তবে তার এ যুগান্তকারী ধারণা মানুষ ও ধর্মযাজকদের মধ্যে শঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। আর ১৮৫৮ সালের আগ পর্যন্ত বিবর্তন নিয়ে কোনো তত্ত্ব জনসমক্ষে উপস্থাপন করেননি তিনি।


পরবর্তীতে, ব্রিটিশ প্রকৃতিবিদ আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেসের সঙ্গে একটি যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে নিজের তত্ত্ব নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে যান ডারউইন। এর ঠিক পরের বছরই নিজের মূল কাজ “প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রজাতির উৎপত্তি বা জীবের সংগ্রামের মাধ্যমে টিকে থাকা” নিয়ে তথ্য প্রকাশ করেন তিনি।


৩. দীর্ঘদিন অসুস্থতায় ভুগেছেন ডারউইন


বিশ্ব ভ্রমণের লম্বা সফর শেষে ফিরে আসার পর ক্লান্ত হয়ে পড়েন ডারউইন। এর পর থেকেই একজিমা, বমি ভাব, মাথাব্যথা ও হৃদজনিত রোগের মতো দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায় ভুগতে থাকেন তিনি।


এমন শারীরিক সমস্যা নিয়ে সারা জীবনই লড়াই করতে হয়েছে ডারউইনকে।


অনেকের ধারণা, ভ্রমণের সময় ডারউইন ‘চাগাস’ নামের এক পরজীবীবাহিত রোগে আক্রান্ত হন, যার ফলে তার হৃদযন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি শেষ পর্যন্ত এ রোগেই ডারউইনের মৃত্যু হয়েছিল।


৪. তালিকা বানিয়েছিলেন বিয়ের ভাল-মন্দ নিয়ে


এমনকি হৃদয় বা অনুভূতির বিষয়েও ডারউইনের যৌক্তিক মতবাদ রয়েছে। নিজের বিয়ের আগে অর্থাৎ ১৮৩৬ সালে বিয়ের ভাল-মন্দ দিক নিয়ে একটি তালিকা তৈরি করেছিলেন ডারউইন।


তালিকার ভাল দিকগুলোর মধ্যে ছিল– ‘বিয়ে’, ‘সন্তান,’ ‘নিত্যনতুন সঙ্গী (ও বৃদ্ধ বয়সে বন্ধু) ... বা কুকুরের চেয়ে ভাল কিছু’ ও ‘বাড়ির যত্ন নেওয়ার মতো কেউ’। আর মন্দ দিকের মধ্যে ছিল– ‘বিয়ে না করা’, ‘যেখানে সেখানে যাওয়ার স্বাধীনতা’, ‘ক্লাবে পটু পুরুষদের কথোপকথন’ ও ‘সময়ক্ষেপণ’।


ডারউইনের এই তালিকায় অবশ্য পারিবারিক বন্ধনের জন্য কাউকে বিয়ে করার কথা উল্লেখ না থাকলেও ১৮৩৯ সালে নিজের ফার্স্ট কাজিন এমা ওয়েজউডকে বিয়ে করেছিলেন ডারউইন।


৫. মেডিকেল স্কুল থেকে বেরিয়ে আসা


ডারউইনের বাবা একজন সফল ডাক্তার ছিলেন। ছেলেকেও নিজের মতো একজন সফল ডাক্তার বানাতে চেয়েছিলেন তিনি। ১৮২৫ সালের গ্রীষ্ম শেষে নিজ বাবার কাছে একজন শিক্ষানবিশ হিসাবে কাজ শুরু করেন ডারউইন। পরবর্তীতে, যুক্তরাজ্যের অন্যতম শীর্ষ ‘ইউনিভার্সিটি অফ এডিনবার্গ’-এর মেডিকেল স্কুলেও পড়তে গিয়েছিলেন তিনি।


তবে ডারউইন রক্তপাত ঘৃণা করতেন। এমনকি সে সময় মেডিকেল কলেজের বক্তৃতা শুনেও বিরক্ত হয়েছিলেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায়, নিজের বাবার স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করে মেডিকাল স্কুল ছেড়ে দেন ডারউইন।


৬. ১৮ বছর ধরে ১০ পাউন্ডের নোটে ছিল ডারউইনের ছবি


২০০০ সালের শুরুতে ব্রিটিশ ১০ পাউন্ড নোটের পেছনে রাজকীয় জাহাজ ‘এইচএমএস বিগল’-এর একটি ছবি’সহ দাড়িওয়ালা ডারউইনের প্রতিকৃতি ছিল। সে নোটের পেছনে একটি ম্যাগনিফাইং লেন্স, ডারউইনের ভ্রমণে দেখা বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীও দেখা যেত।


তবে, ২০১৮ সালে এ ১০ পাউন্ডের নোট ছাপানো বন্ধ করে দেয় ‘ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড’।


৭. ‘সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট’ কথাটি তার নিজের নয়


বিবর্তনবাদের গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বটি ডারউইনের নিজের হলেও ‘সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট’ শব্দটি আসলে প্রথম ব্যবহার করেছিলেন ইংরেজ দার্শনিক হার্বার্ট স্পেন্সার। ১৮৬৪ সালে প্রকাশিত বই ‘প্রিন্সিপালস অফ বায়োলজি’তে ডারউইনের জৈবিক ধারণার সঙ্গে নিজের অর্থনৈতিক ও সমাজতাত্ত্বিক তত্ত্বের যোগসূত্র খুঁজে বের করতে প্রথম এই ‘সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট’ শব্দটি ব্যবহার করেন তিনি।


অন্যদিকে, ১৮৬৯ সালে নিজের বই ‘অরিজিন অফ দ্য স্পিশিজ’-এর পঞ্চম সংস্করণে প্রথমবারর মতো এই শব্দটির ব্যবহার করেন ডারউইন।


৮. সমাহিত হয়েছেন ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে


ডারউইন ১৮৮২ সালের ১৯ এপ্রিল মারা যান। নিজের জীবনের শেষ ৪০ বছর কাটানো গ্রামে তাকে সমাহিত করার প্রস্তুতি শুরু করে ডারউইনের পরিবার।


তবে এর বিপরীতে, ডারউইনকে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে সমাধিস্থ করার জন্য জোর প্রচার শুরু করেন তার বন্ধু ও সহকর্মীরা। সংবাদপত্র ও জনসাধারণের চাহিদার প্রেক্ষিতে ওয়েস্টমিনস্টারের তৎকালীন ডিন এই দাবি মেনে নেন। মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর ইংল্যান্ডের সবচেয়ে শ্রদ্ধেয় গীর্জায় নিজের সহকর্মী বিজ্ঞানী জন হার্শেল ও আইজ্যাক নিউটনের পাশে সমাহিত করা হয় ডারউইনকে।


৯. ছিলেন ধর্মশাস্ত্রের ছাত্র


“আমি তখন বাইবেলের প্রতিটি শব্দের কঠোরতা ও আক্ষরিক সত্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করিনি,” পরবর্তী সময়ে লিখেছিলেন ডারউইন।


তবে বিশ্ব ভ্রমণ ও তিন সন্তানের মৃত্যুর পর ডারউইনের ধর্মীয় বিশ্বাস নড়বড়ে হতে শুরু করে। তিনি নিজেকে কখনোই নাস্তিক হিসেবে দাবি করেননি। এর পরিবর্তে, নিজেকে একজন অজ্ঞেয়বাদী হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।


অজ্ঞেয়বাদ হচ্ছে– এমন দার্শনিক চিন্তা বা ধারণা, যেখানে কোন ঈশ্বর বা পরমসত্ত্বা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব বা নিরস্তিত্ব উভয়ই মানুষের অজানা ও এটি তাদের দ্বারা কখনও জানা সম্ভব হবে না।


১০. তার বইয়ের পূর্ণ নাম কী ছিল


সাধারণভাবে ‘দ্য অরিজিন অফ স্পিশিজ’ নামে বইটি পরিচিত হলেও ডারইউনের লেখা বইটির পূর্ণ নাম হচ্ছে - ‘অন দ্য অরিজিন অফ স্পিশিজ বাই মিনস অফ ন্যাচরাল সিলেকশন, অর দ্য প্রিজার্ভেশন অফ ফেভার্ড রেইসেস ইন দ্য স্ট্রাগল ফল লাইফ’।

সমুদ্র সৈকত বলতে প্রথমেই আমাদের সবার চোখে সামনে কি ভেসে ওঠে

 সমুদ্র সৈকত বলতে প্রথমেই আমাদের সবার চোখে সামনে কি ভেসে ওঠে? ধূসর বালিতে ঢাকা বিস্তীর্ণ তটে ক্রমাগত আছড়ে পড়ছে একের পর এক ঢেউ। কিন্তু ধরুন তো এমন কোনো সমুদ্র সৈকতে আপনি গেছেন যেখানে গিয়ে দেখলেন সেখানে সৈকতের রং স্বাভাবিক নয়, শুধুই লাল। 


ভাবছেন রূপকথার কোনো দেশের গল্প শোনাতে এসেছি আপনাদের সামনে। না সেরকম কোনো ব্যাপার এখানে নেই। আমাদের এই পৃথিবীতে ভূমির প্রকৃতির বৈচিত্রের অন্ত নেই। পৃথিবীতে যে সমস্ত সমুদ্র সৈকত রয়েছে তাদের মধ্যে শুধু ব্যতিক্রম চীনের পানজিয়াং সমুদ্র সৈকত।


গ্রীষ্মের রক্তরাঙা কৃষ্ণচূড়া অথবা বসন্তের লাল পলাশের সৌন্দর্য্য দেখে যদি আপনার মন ভালো লাগে তাহলে এই জায়গা আপনার জন্য একদম পারফেক্ট। একথা নিশ্চিত করে বলতে পারি,এখানে এলে রক্তিম এই সমুদ্র সৈকত আপনাকে নিয়ে যাবে প্রকৃতির এক অন্য জগতে।


চীনের রাজধানী বেইজিং থেকে মাত্র ৬ ঘন্টা দূরত্বে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকতে প্রকৃতির এই রংবাজি দেখলে আপনিও অবাক হয়ে যাবেন। দূর থেকে এক ঝলক দেখলে মনে হবে,কেউ লাল রঙের কার্পেট বিছিয়ে রেখেছে গোটা সৈকত জুড়ে।


এই সমুদ্র সৈকত জুড়ে আপনি দেখতে পাবেন শুধু লাল রংয়ের অস্তিত্ব। ভাবছেন লাল রঙের সমুদ্র সৈকত এমনটাও আবার হয় নাকি? হ্যাঁ চীনের এই পানজিয়াং সমুদ্র সৈকতে এলে আপনার এমন অভিজ্ঞতাই হবে। তবে এই লাল রঙের জন্য সমুদ্রের বালি কিন্তু দায়ী নয়। বরং এর পেছনে আছে একটি অন্য গল্প‌


পানজিয়াং এই লাল সমুদ্র সৈকতের পিছনে রয়েছে সুয়েডা নামক এক শৈবালের কাহিনী। পুরো লিয়াওয়া বদ্বীপ জুড়েই দেখতে পাওয়া যায় এই শৈবালের উপস্থিতি। এপ্রিল ও মে মাসের দিকে জন্মানো এই শৈবালগুলির শরৎকালেই আসল রূপ দেখতে পাওয়া যায়। এপ্রিল মে মাসে এলে কিন্তু আপনি এই লাল রং দেখতে পাবেন না। এই সময় জন্মানো সবুজ শৈবালগুলি সমুদ্রের নোনা জল শোষণ করে ক্রমশ পরিবর্তন করতে থাকে তাদের রং।


শরতের শুরুতে এই শৈবালগুলির রং প্রথমে থাকে কমলা,তারপরে গোলাপী এবং সবশেষে টকটকে লাল। বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে অর্থাৎ পরিপূর্ণ শরতের সময় এই সমুদ্র সৈকত এক আলাদাই অনুভূতি। এই সময় দূর থেকে দেখলে মনে হয় কে যেনো লাল রঙের গালিচায় ঢেকে দিয়েছে পুরো পানজিয়াং সমুদ্র সৈকত।


চীনের এই পানজিয়াং সমুদ্র সৈকত শুধু যে তার মনভোলানো রূপের জন্য বিখ্যাত তাই নয় বরং এটি পক্ষী প্রেমীদের জন্য আদর্শ একটি গন্তব্যস্থল। এখানে দেখতে পাওয়া যায় প্রায় ২৬০ রকমের পাখি আর ৩৯৯ রকমের বন্য প্রাণী। তাই এই পশু ও গাছপালা মিলিয়ে এখানে তৈরি হয়েছে খুব জটিল এক ইকোসিস্টেম।


এছাড়াও এই এলাকায় পাওয়া যায় বিলুপ্তপ্রায় মুকুটধারী সারস পাখি আর কালো ঠোঁটের শঙ্খচিল। এখানে সারস পাখি এতটাই বেশি দেখা যায় যে পানজিয়াংকে অনেক সময় " সারসের ঘর " বলেও অভিহিত করা হয়। ১৯৮৮ সালে এলাকাটিতে গাছপালা ও পশুপাখি সংরক্ষণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।


চীনের উত্তর অঞ্চলে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকতের আসল সৌন্দর্য বা রূপ উপলব্ধি করতে হলে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যেতে হবে। কারণ এই সময় ওই শৈবালগুলির রং এতটাই উজ্জ্বল রক্তবর্ণ হয় যে সেই সৌন্দর্য্য থেকে চোখ ফেরানো যায় না।


প্রধানত লাল এই শৈবালের কারণে এই পানজিয়াং সমুদ্র সৈকতটি চীনের অন্যতম একটি বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে উঠেছে। তবে পর্যটকদের কাছে একটি দুঃখের বিষয় যে পুরো সমুদ্র সৈকতের সব অংশে তাদের যাওয়া নিষেধ। 


পুরো সমুদ্র সৈকতটির কিছুটা অংশ উন্মুক্ত থাকে সকলের জন্য। শুধু তাই নয় দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চালু থাকে এই ব্যবস্থা। অর্থাৎ সেই সময়ের পরে গেলে আপনি এর সৌন্দর্য উপলব্ধি করার সুযোগ হাতছাড়া করতে পারেন।


এই প্রতিবেদন পড়ার পরে যদি চীন ভ্রমণের কথা মাথায় এসে থাকে তাহলে অবশ্যই দেখে আসুন রাজধানী বেইজিং থেকে মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকতটি। তবে মাথায় রাখবেন শুধুমাত্র শরৎকাল হলে তবেই উপলব্ধি করতে পারবেন বিচিত্র এই সৈকতের আসল রং ও রূপ।


মুন্দারি গোত্র, দক্ষিণ সুদানের।

 মুন্দারি গোত্র, দক্ষিণ সুদানের।


এ গোত্রের কোনো পুরুষ নির্দিষ্ট কোনো নারীকে বিয়ে করার মনস্থির করলে, অবশ্যই সেই নারীকেই জানাতে হবে। অত:পর, নারীটি যদি সেই নির্দিষ্ট পুরুষটিকে নিজের বিবাহের যোগ্য মনে করে, তাহলে নিজের জামাকাপড় ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিশপত্র নিয়ে, পুরুষটির বাড়িতে গিয়ে থাকতে আরম্ভ করবে। এই পুরো প্রক্রিয়ায়, একটিবারের জন্যও, কোনোভাবেই, পছন্দের কনেটিকে বিয়ে করার আগ্রহের কথাটি কনের বাবাকে জানাবে না পুরুষটি। একদম না। ভুল করেও না। যদি বাবাকে জানায়, তাহলে, বাবা তার আত্মীয়স্বজন নিয়ে এসে কন্যার পাণিপ্রার্থী পুরুষটিকে ইচ্ছেমতোন পেটাবে; বেদম প্রহার যাকে বলে। এই পেটানোটি সেই গোত্রের আইনে বৈধ, এর জন্য কোনোই শাস্তি নেই। এবং এই পেটানোর একমাত্র কারণ─ কোনো নারীকে বিয়ের আগ্রহের কথাটি সেই নারীকে না-জানিয়ে তার বাবা বা অন্য অভিভাবককে জানানোর অর্থ: বাবা ও কন্যা উভয়কেই অপমান করা, যেহেতু, পুরুষটি বিয়ে তো বাবাকে করছে না, করতে চাইছে তার কন্যাকে।


মুন্দারি গোত্রের ঐতিহ্য, এবং নারী ও সংসারের প্রতি মর্যাদা প্রদর্শনের গভীর দর্শন এটি। ভাবা যায়?


তো, নারীটি জামাকাপড় নিয়ে চলে এলো হবু স্বামীর বাড়িতে। এরপর, ব্যাপারটি বুঝে নিয়ে, সেই বাড়িতে আসবে নারীর পরিবারের অভিভাবকেরা। এসে, তারা তাদের কন্যার, অর্থাৎ কনের, পণ নির্ধারণ করে জানিয়ে দেবে পুরুষটির কাছে। সেই নির্ধারিত পণ পরিশোধ করতেই হবে পুরুষটিকে; না-করে বা না-পেরে, হবু স্ত্রীকে বাপেরবাড়ি ফেরত পাঠানোর বা বিয়ে না-করার আর কোনোই সুযোগ নেই পুরুষটির কাছে। নেই মানে নেই। কারণ─ নারীটির যোগ্যতার ভিত্তিতে তার যোগ্য-পণমূল্য জেনেবুঝেই তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে পুরুষটি, এবং নির্দিষ্ট যোগ্যতার নারীর জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ পণমূল্য নির্ধারণ করাই থাকে মুন্দারি সমাজে─ এটাই নিয়ম। উল্লিখিত এই পণের পরিমাণ, তাকে বিয়েতে আগ্রহী পুরুষটির ক্ষমতার বাইরে নয় কখনোই। একারণে, মুন্দারি সমাজে, কোনো পুরুষই স্বেচ্ছাচারীভাবে যাকেতাকে বিয়ের জন্য পাগলামি করতে পারে না, নিজের ব্যক্তিগত বা পারিবারিক যোগ্যতার আওতার মধ্যকার নারীকেই বিয়ে করতে পারে সে। ফলে, মুন্দারি সমাজে নারীপুরুষের মধ্যে পরস্পরকে পাওয়ার অসম আগ্রহ, কিংবা না-পেয়ে আত্মহন বা নির্যাতন, এসবের উদাহরণ নেই। অর্থাৎ─ তুমি যাকে নিয়ে সংসার করবে, তার সামাজিক মূল্য তোমাকে জানতেই হবে। সে তো খেলনা নয়। সংসার ছেলেখেলা নয়।


এবং, উল্লিখিত এই পণমূল্যটি মোটেই পুরুষের উপরে অর্থনৈতিক চাপের মতো পরিমাণের নয়─ সৌন্দর্যটি এখানেই! এটা স্রেফ নিজের ও আকাঙ্ক্ষিতা নারীর সামাজিক অবস্থান জেনে রাখার পদ্ধতি মাত্র। মুন্দারি গোত্রের সভ্যতা ভাবুন তো এবার!


এবার আসি পণমূল্যে। কনের এই পণ কখনোই নগদ অর্থে নির্ধারিত হয় না, লেনদেনও নগদে হয় না। হবু স্বামী তার হবু স্ত্রীকে এই পণ দেবে গরুতে। হ্যাঁ, গরু। কনেপক্ষের অভিভাবকেরা তাদের কন্যার পণ নির্ধারণ করবে গরুর সংখ্যায়। যতোটি গরু দাবি করা হবে তাদের কন্যার শিক্ষাদীক্ষা ও মানমর্যাদা অনুযায়ী, ততোটি গরুই দিয়ে দেবে হবু জামাই তার শ্বশুরপক্ষকে। এবং, পণের গরুর সংখ্যা নিয়ে পুরুষকে প্রকৃতপক্ষে মোটেই চাপে ফেলা হয় না─ এই পণের সৌন্দর্যটি এখানেই। মুন্দারি গোত্রের প্রত্যেক বাড়িতে গরু গিজগিজ করছে! ওরা গরু খায় না, বিক্রিও করে না। গরুতে ভরপুর প্রতিটি বাড়ি। 


মুন্দারি গোত্রের একজন কন্যার বিয়ের পণের গরু সর্বোচ্চ ৭০টি পর্যন্ত হতে পারে।


এ গোত্রের পরিবারে, পুত্রসন্তানের চেয়ে কন্যাসন্তান বেশি আরাধ্য; কারণ─ যতো বেশি কন্যাসন্তান, ততো বেশি গরুর মালিক হওয়ার সম্ভাবনা। এবং, এ গোত্রের চমৎকার একটি সংস্কৃতি হচ্ছে─ এরা নগদ অর্থের পরিমাপে কাউকে ধনী এবং মর্যাদাসম্পন্ন গণ্য করে না, এ গোত্রে সে-ই বেশি ধনী ও সম্ভ্রান্ত যার মালিকানায় বেশি সংখ্যক গরু আছে।


মুন্দারি গোত্র, চমৎকার ঐতিহ্যের একটি গোত্র বটে। মানুষের মূল্যায়ন করতে জানে এরা।


Salah Uddin Ahmed Jewel

#মুন্দারি

তথ্যসূত্র: আফ্রিকান হিস্ট্রি আর্কাইভ

ফেইসবুকের গল্প

 দীর্ঘ ১৫ বছর লন্ডন শহরে কাটিয়েছি। লন্ডনের অলিগলিসহ রাজবাড়ি থেকে মুচির দোকান পর্যন্ত; এমনকোনো জায়গা নেই- যেখানে আমার পায়ের ছাপ পড়েনি। নতুন শহর। নতুন দেশ। যদি নতুন কিছু শিখি।

.

অনেক কিছু দেখার মাঝে এক জুতো পলিশওয়ালা দেখেছি। যাকে কথ্য বাংলায় মুচি বলি। লিভারপুল স্ট্রিট আন্ডার গ্রাউন্ডে এক সাদা ইংরেজ সে। আমার মনে হয় সে আমার দেখা শ্রেষ্ঠ মুচি। কোনো কথা নেই মুখে। চোখ ঠিক জুতোতে। একমনে পলিশ করে চলেছে। মনে হয় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কাজে সে নিজেকে নিমগ্ন রেখেছে। কেউ-কেউ জুতো না খুলেই পা রাখছে তার সামনে। সে তার মুখের দিকে না তাকিয়েই একমনে তার কাজ করে চলেছে। দেখে যেনো মনে হয় একজন ঝানু শিল্পী ছবি আঁকছে একমনে। অনেকবার দাঁড়িয়েছি, দেখেছি তার এই শিল্পকলা অবাক বিস্ময় নিয়ে। আমি তখন লিভারপুল স্ট্রিট বার্গারকিং-এ কাজ করি। একজন সেলস ম্যান হিসেবে। বলতে গেলে আমার মত হাজারের ওপর বাঙালি সেখানে কাজ করে নানা ফুড সপে। আমার ইচ্ছে হত, ইশ! আমি যদি ওই জুতো পলিশওয়ালার মতো হতে পারতাম! সারাদিন একমনে জুতো পলিশ করে যেতাম। কিন্তু সেটা সম্ভব নয়। কেন নয়? ওই যে পাছে লোকে কিছু বলে। আমি জুতো পলিশ করছি শুনে বন্ধুরা সবাই রে রে করে উঠবে। তারপর আবার ওখানকার কাউন্সিল থেকে পারমিট বের করতে হবে। দেখাতে হবে ওই কাজটায় দক্ষ আমি। বিজনেস লাইসেন্স। একখণ্ড জায়গার লিজ। ম্যালা হাঙ্গামা। 

.

একদিন সময় করে সাহস নিয়ে গিয়েছিলাম সেই জুতো পলিশওয়ালার কাছে, তার সাথে আলাপ করতে। খুব গম্ভীর মানুষ সে। মনে হয় তার ঠোঁটদুটো এমনভাবে সেলাই করা; যেন তার ফাঁকগলে কথা বের হবার কোন উপায় নেই। অভিবাদন জানিয়ে সরাসরি জানতে চাইলাম তার নাম। সে প্রথমে দেখলো আমায়। ঠোঁটের কোণে একটুকরো হাসি মিশিয়ে নাম বলল, জাস্টিন। আমি যেচে শুরু করে দিলাম আলাপ। খুব ভদ্রলোক সে। কোন প্রশ্ন করে না। শুধু উত্তর দেয়। জানলাম এটা তার ফ্যামিলি বিজনেস। বাপ্ও এই কাজ করেছেন। এমনকি তার দাদাও। সে থাকে নটিংহিল গেট-এ। মানে পশ এরিয়াতে। তার একটিই মেয়ে- পড়ে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। জাস্টিন বছরে নয়মাস কাজ করে। বাকিসময় কাটায় ফ্রান্সে। মাঝে-মাঝে সে তার বোনের কাছেও যায় স্পেনে। বছরে একবার যায় সাউথ আফ্রিকার জঙ্গলে। কাজের সময় হয়ে আসছে। সময় নেই হাতে। তাই যতখানি বিস্ময় নিয়ে তার সাথে আলাপ শুরু হয়েছিল; আলাপটি শেষ হল তার দ্বিগুন বিস্ময় নিয়ে।

.

আমরা বাঙ্গালীরা কাজের ন্যূনতম মূল্য, সন্মান বা মর্যাদা দিতে শিখি নি। শ্রমের মর্যাদা সম্পর্কে বাঙালি জাতির দৃষ্টিভঙ্গি উপনিবেশিক এবং নিকৃষ্টতম! শ্রমের যে মূল্য আছে, মর্যাদা আছে পাঠ্যপুস্তকে পড়া সত্ত্বেও কর্মজীবনে তা বেমালুম ভুলে যায়। অশিক্ষিত বাঙালিদের চেয়ে শিক্ষিত ও উচ্চশিক্ষিত বাঙালির মধ্যে এই প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়। বড়লোকি, মধ্যলোকি ও ছোটলোকি নামে কাজকে বিভক্ত করেছি আমরা। সম্ভাবত সেই মানসিক সমস্যার কারনেই আমাদের দেশে কাজের পরিধি সংকীর্ণ। সবাই বড় অফিসার হতে চায়। কেউই ছোট কাজ করবে না। সুতরাং মেধাহীনরাও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জন করে কম্পিটিশন বাড়ায়। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি সবার জন্য না। লন্ডনে দেখেছি উচ্চ শিক্ষা শুধু গুটি কয়েক মানুষের জন্য, সেখানকার মানুষ এ লেভেল (ইন্টারমিডিয়েট) পাস করলেই শিক্ষিত হয়ে যায়। 

বাঙালীর সস্তা সেন্টিমেন্ট আর মানুষিকতার আশু পরিবর্তন প্রয়োজন। চুরি করতে লজ্জা হয়না, হালাল ছোট কাজ করলে ইজ্জত চলে যায় এদের।

যৌবনাশ্রম খুঁজে দেখো!"

 " বাড়ি ঘর জায়গা জমি সন্তানদের লিখে দিবেন না । আপনার ঘরে আপনি বসবাস করবেন । দরকার হলে ছেলে মেয়েরা  বাড়ি ঘর তৈরি করে 'যৌবনাশ্রমে ' থাকবে "  :


পরিণত বয়সে এসে আমাদের অনেকেরই হয়তো কাজেও লাগতে পারে গল্পটি!!!


"যৌবনাশ্রম খুঁজে দেখো!"


আব্দুর রহমান সাহেব ক'মাস ধরেই কিছু আঁচ করছিলেন। উনি তিন বছর হয় রিটায়ার করেছেন। সরকারী উচ্চপদে ছিলেন। ভাল অঙ্কের পেনশন পান। স্ত্রী গত হয়েছেন বহুদিন আগে।


দুটি ছেলেকে বড় যত্নে মানুষ করেছেন। বাবা এবং মায়ের দুজনের স্নেহ দিয়ে ভালভাবে লেখাপড়া করে তারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তারপর বড় ছেলের বিয়ে দিলেন। একটি নাতি হল। উনার মনে আর আনন্দ ধরে না ।


এরপর ছোট ছেলে নিজের পছন্দের মেয়ে খুঁজে বাবাকে জানালে তিনি সানন্দে সেই মেয়েকে ঘরে নিয়ে এলেন। রিটায়ারের আগেই বড় ছেলের বিয়ে হয়েছিল। তারপর ছোট বৌমা এল।


আব্দুর রহমান সাহেব এখন নাতিকে নিয়ে বেশ সময় কাটান। সংসারের অনেকটা ব্যয় ভার বহন করেন।


একদিন ইজি চেয়ারে বসে সকালে কাগজ পড়ছেন বড় বৌমার গলা পেলেন, আজ বাজার শর্ট আছে.রাতে রান্না হবে না। সে চাকরী করে। বলছে জা কে।


এ বাড়িতে ছেলেদের জন্মের আগে থেকে কাজের মেয়ে জয়নব আছে। সে তাঁর ছেলেদের থেকে বেশ কিছুটা বড়। জয়নব মাতৃহারা দুই ছেলেকে অপার স্নেহে আগলে রেখেছিল।


সে বলল--ভাইজানরা কেউ এনে দেবে।


বড় বৌ বলল--কেন বাবা তো বসে আছেন বাজারটা রোজ করলেই পারেন।


আব্দুর রহমান সাহেবের কানে কথাটা বাজল। বুঝলেন সংসারে তাঁর প্রয়োজন ফুরিয়েছে।


নিজের মনকে বললেন-- মন তুই তৈরী থাক।


এরপর থেকে বৌদের নানা আচরণে তাঁর প্রতি বিরূপতা প্রকাশ পেতে থাকল।


একদিন সকালে বড় ছেলে রাগত গলায় বৌকে বলছে--আমার শার্টটা লণ্ড্রী থেকে আনা হয়নি?


বড় বৌ বললো-- না যাবার সময় হয়নি।


বড় ছেলে -বাবা একটু আনতে পারল না? সারাদিন তো বসেই থাকে।


আব্দুর রহমান সাহেবের কানে গেলে ভাবলেন-- যুগধর্ম!


এরপর একদিন এক ছুটির দিনে সকালে ব্রেকফাস্ট টেবিলে এসে দেখলেন--সবাই আগে ভাগেই উপস্থিত।


জয়নব প্লেটে গরম লুচি, আলু ভাজি আর সন্দেশ পরিবেশন করছে।


বড় ছেলে বলল --বাবা একটা কথা ছিল।


আব্দুর রহমান সাহেব বুঝলেন এরা সকলে কিছু প্ল্যান করেছে। বললেন, বল।


বড় ছেলে বললো, জানো বাবা কাল অফিসের কাজে গাজীপুর গিয়েছিলাম। কাজের ফাঁকে সময় পেয়ে ওখানকার দর্শনীয় জায়গা গুলো দেখতে বেড়িয়েছিলাম। দেখলাম নদীর ধারে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে একটা সুন্দর বৃদ্ধাশ্রম চালু হয়েছে। দেখেই ভাবলাম তুমি ওখানে মনোরম পরিবেশে শেষ জীবনটা থাকতে পারো। আমরা যাব আসব। কিরে ভাই কি বলিস?


ছোট ছেলে বলল, বেশ ভালো হবে।


আব্দুর রহমান সাহেব হেসে বললেন--সব তো শুনলাম। কিন্তু বাবারা তোমরা যেমন আমার জন্য ভাবো, আমিও তোমাদের জন্য ভাবি। তাই আমারও একটা প্রস্তাব আছে তোমাদের জন্য। তোমরাই বরং যুতসই এবং মনোরম পরিবেশের একটা যৌবনাশ্রমের খোঁজ করে নিয়ে সেখানে গিয়ে থাকোনা কেন। বাড়ীটাতো আমারই, পেনশনও পাই ভাল। জয়নব মাকে নিয়ে আমরা বাপ বেটিতে বেশ ভালই থাকব। তোমরাও আসবে যাবে।


এই ভাবে তিনি এক ছক্কায় বাজীমাত করে দিলেন। জয়নবকে বললেন--জয়নব মা, লুচিগুলো ঠাণ্ডা হয়ে গেল। গরম গরম নিয়ে আয় তো।


ছেলেরা আর ছেলেদের বৌয়েরা রীতিমতো হতভম্ব হয়ে গেল, বাকরুদ্ধ হয়ে বসে রইলো.....!!


দিন কাল পালটাচ্ছে। তাই যোগ্য জবাব দেবার জন্য তৈরী থাকা উচিৎ ........


তা নাহলে ভবিষ্যতে বড় বিপদে পড়বেন।

©❤️

অভ্যাস এবং দাম্পত্য ফেইসবুক থেকে নেওয়া 

 এক সাথে একই বিছানায় ঘুমালেই কিন্তু !!

মানুষটার কাছে যাওয়া যায়না। দুজন মানুষ একশো স্কয়ার ফিটের একটা রুমের ভেতর বছরের পর বছর থেকেও মাঝে মাঝে কাছে আসতে পারেনা।


আমি এরকম বেশ কিছু দম্পতিকে চিনি, যারা বহু বছর পরও সংসারের মানে বুঝে উঠতে পারেনি। সংসার করতে করতে একসময় মানুষ ধরে নেয়, একই বালিশে ঘুমানো, একই টেবিলে খাওয়া, একই রুমে ঘুরাঘুরি করা আর মাঝে মাঝে সঙ্গমে অংশগ্রহন করাটাই সংসার।


ব্যপারটা কি আসলে তাই? তাহলে, কিছু সংসার কখনো কখনো টিকে না কেন? তারাও তো একই বিছানায় ঘুমায়, একই টেবিলে খাবার খায়, একজন অন্যজনকে সঙ্গমে কো-অপারেট করে। তবুও, সংসারগুলো ভাঙে কেন?


তুমি একটা মানুষের সাথে আছো, পাশে আছো, চোখের সামনে আছো। তবুও মাঝখানে একটা দূরত্ব থাকে, এই দূরত্বটা অন্যরকম। বলা যায় না, বুঝানো যায় না, সহ্যও করা যায় না। কারো বুকের উপর শুয়েও মাঝে মাঝে নিজেকে একা লাগে। দাম্পত্য জীবনে আমি আসলে কি চাই?


সবই চাই, যা যা সবাই করে। আমি সেটাও চাই, যেটা অনেকেই করে না। সংসার মানে আসলে অভ্যাস, এই কনসেপ্টটা থেকে আমরা কেন জানি বের হতে পারি না। অভ্যাস অবশ্যই, তবুও সবই কি অভ্যাস?

নতুন কিছুই কি থাকে না? আমরা একই ছাদের নিচে থাকি, অথচ কখনো একসাথে আকাশ দেখি না।


কখনো সমুদ্র পাড়ে বসে কফির মগ হাতে নিয়ে নির্ভরশীলতার কাঁধে মাথা রাখি না। আমরা কখনো জিজ্ঞেস করিনা " তুমি কেমন আছো? তোমার মন খারাপ কেন? আমরা হাত ধরে বসে থাকি না। আমরা সঙ্গম ছাড়া একজন অন্যজনকে জড়িয়ে ধরি না।


আমরা বুঝি না, আমার সমস্ত সময় তার সাথে কাটানোর পরও তাকে সময় দেওয়া প্রয়োজন। আমরা শরীরের দিক থেকে কাছে আসি রোজ রোজ। অথচ, আমাদের মনের দূরত্ব বেড়ে চলে। রান্না করার জন্য বুয়া রাখলেও হয়, সঙ্গমের জন্য পতিতাই এনাফ। তবুও সংসার কেন করা লাগে?


সংসারের ডেফিনেশনটা শুধু নিঃশ্বাসের আদ্রতা অনুভব করার মাঝেই সীমাবদ্ধ না, এর বাইরেও অনেক কিছু থাকে। আমি একা, তুমি একা, আমরা একা; প্রচন্ড রকমের একা। একই বিছানায় নগ্ন শরীরের উপরও একা, সঙ্গম শেষেও আমরা একা।


অথচ, দিনশেষে আমার একটা আশ্রয় প্রয়োজন হয়। একজন মানুষ প্রয়োজন হয়, একটা ব্যক্তিগত নির্ভরশীলতার জায়গা প্রয়োজন হয়। সমঝোতা প্রয়োজন হয়, কারো কন্ঠস্বরে আমার জন্য একটু গভীর ভালোবাসা প্রয়োজন হয়। একটা পবিত্র স্পর্শ প্রয়োজন হয়।


এই স্পর্শটা কামনার স্পর্শ নয়, এটা একটা ভালোবাসার স্পর্শ। কাম ছাড়া ভালোবাসা পূর্নতা পায়না এটা ঠিক, তবে কাম ও যে সবসময় ভালোবাসার জন্ম দিতে পারে না, এটাও ঠিক। সংসারকে অভ্যাস বলে চালিয়ে দেওয়া মানুষরা আসলে ভালোবাসার দায়বদ্ধতাকে এড়িয়ে যেতে চায়।


যে দাম্পত্যে প্রেম থাকে না, সেখানে অভিনয় করে বাঁচতে হয়। এরকম অনেক দম্পতিই আছে, যারা শুধু অভিনয় করেই একটা জীবন একটা অপছন্দের মানুষের সাথে একই ছাদের নিচে কাটিয়ে দেয়। সারাদিন কাজ করে ঘরে ফিরে স্ত্রীকে সময় দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করা স্বামীও নিয়ম করে সঙ্গমটা ঠিকঠাক করে।


ব্যস্ততা আসলে একটা অজুহাত, অত'টা ব্যস্ত আসলে মানুষ থাকে না। চাইলেই একটু সময় বের করা যায়। কি জানি, আমরা হয়তো চাই ই না। প্রাক্তন প্রেমিক প্রেমিকার জন্মদিন আমাদের মনে থাকে। অথচ, নিজের স্ত্রীর জন্মদিনটা মাঝে মাঝে ভুলে যাই। সংসারের গুরুত্বটা যেন তেমন কিছুই না।


যার সাথে সারা জীবন কাটাতে হবে, যার জন্য সারাদিন পরিশ্রম করি। যাকে ভালো রাখার চেষ্টা করি,

মাঝে মাঝে বুঝিই না, সে ভালো নেই। দাম্পত্য জীবনে কলহ থাকবেই। এটাকে ইন্সটেন্ট সমাধান করার ক্ষমতা সবার থাকে না। ঝগড়া হওয়ার পর কান্না কাটি না করে, মানুষটাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকলে কেমন হয়।


মানুষ কি এতটাই নি'ষ্ঠুর, যে ভালোবাসাকে অবহেলা করতে পারে। সংসার শুধু একটা অভ্যাস, এটা থেকে বের হতে হবে। সংসার একটা স্বর্গ, এখানে শুধু যো'নী, লি'ঙ্গ, দুবেলা খাবার আর একই বিছানায় ঘুমানোর বাইরেও প্রেম, ভালোবাসা, নির্ভরশীলতা, গুরুত্ব, প্রায়োরিটি, শ্রদ্ধাবোধ, এডজাস্টমেন্ট সব প্রয়োজন হয়, সব মানে সব।


দাম্পত্য জীবন সুন্দর তখনি হয়, যখন আমরা অভ্যাস থেকে বের হতে পারি। মানুষটা একটা অস্তিত্ব হোক! অধিকার হোক, বেঁচে থাকার ডেফিনেশন হোক। একটা এডিকশন হোক, আমাদের সংসার হোক আমাদের নে'শাগ্রস্থ থাকার অ্যালকোহল। আমাদের মাঝে ভালোবাসার মাদকতা থাকাটা জরুরী, ভীষন জরুরী !!


অভ্যাস এবং দাম্পত্য

ফেইসবুক থেকে নেওয়া 

সোমবার, ৬ মে, ২০২৪

দুই বিঘা জমি,,,,

 শুধু বিঘে দুই ছিল মোর ভুঁই   আর সবই গেছে ঋণে।

বাবু বলিলেন, "বুঝেছ উপেন,   এ জমি লইব কিনে।'

কহিলাম আমি, "তুমি ভূস্বামী,   ভূমির অন্ত নাই।

চেয়ে দেখো মোর আছে বড়ো-জোর   মরিবার মতো ঠাঁই।'

শুনি রাজা কহে, "বাপু, জানো তো হে, করেছি বাগানখান

পেলে দুই বিঘে প্রস্থে ও দিঘে   সমান হইবে টানা--

ওটা দিতে হবে।' কহিলাম তবে   বক্ষে জুড়িয়া পাণি

সজল চক্ষে, "করুণ বক্ষে   গরিবের ভিটেখানি।

সপ্ত পুরুষ যেথায় মানুষ   সে মাটি সোনার বাড়া,

দৈন্যের দায়ে বেচিব সে মায়ে   এমনি লক্ষ্মীছাড়া!'

আঁখি করি লাল রাজা ক্ষণকাল   রহিল মৌনভাবে,

কহিলেন শেষে ক্রূর হাসি হেসে,  "আচ্ছা, সে দেখা যাবে।'

পরে মাস দেড়ে ভিটে মাটি ছেড়ে   বাহির হইনু পথে--

করিল ডিক্রি, সকলই বিক্রি   মিথ্যা দেনার খতে।

এ জগতে, হায়, সেই বেশি চায়   আছে যার ভূরি ভূরি--

রাজার হস্ত করে সমস্ত   কাঙালের ধন চুরি।

মনে ভাবিলাম মোরে ভগবান   রাখিবে না মোহগর্তে,

তাই লিখি দিল বিশ্বনিখিল   দু বিঘার পরিবর্তে।

সন্ন্যাসীবেশে ফিরি দেশে দেশে   হইয়া সাধুর শিষ্য

কত হেরিলাম মনোহর ধাম, কত মনোরম দৃশ্য!

ভূধরে সাগরে বিজনে নগরে   যখন যেখানে ভ্রমি

তবু নিশিদিনে ভুলিতে পারি নে   সেই দুই বিঘা জমি।

হাটে মাঠে বাটে এই মতো কাটে   বছর পনেরো-ষোলো--

একদিন শেষে ফিরিবারে দেশে   বড়ই বাসনা হল।

নমোনমো নম সুন্দরী মম   জননী বঙ্গভূমি!

গঙ্গার তীর স্নিগ্ধ সমীর,   জীবন জুড়ালে তুমি।

অবারিত মাঠ, গগনললাট  চুমে তব পদধূলি,

ছায়াসুনিবিড় শান্তির নীড়   ছোটো ছোটো গ্রামগুলি।

পল্লবঘন আম্রকানন   রাখালের খেলাগেহ,

স্তব্ধ অতল দিঘি কালোজল--  নিশীথশীতল স্নেহ।

বুকভরা মধু বঙ্গের বধূ   জল লয়ে যায় ঘরে--

মা বলিতে প্রাণ করে আনচান,   চোখে আসে জল ভরে।

দুই দিন পরে দ্বিতীয় প্রহরে   প্রবেশিনু নিজগ্রামে--

কুমোরের বাড়ি দক্ষিণে ছাড়ি   রথতলা করি বামে,

রাখি হাটখোলা, নন্দীর গোলা, মন্দির করি পাছে

তৃষাতুর শেষে পঁহুছিনু এসে   আমার বাড়ির কাছে।

ধিক্‌ ধিক্‌ ওরে, শতধিক্‌ তোরে,   নিলাজ কুলটা ভূমি!

যখনি যাহার তখনি তাহার,   এই কি জননী তুমি!

সে কি মনে হবে একদিন যবে   ছিলে দরিদ্রমাতা

আঁচল ভরিয়া রাখিতে ধরিয়া   ফল ফুল শাক পাতা!

আজ কোন্‌ রীতে কারে ভুলাইতে   ধরেছ বিলাসবেশ--

পাঁচরঙা পাতা অঞ্চলে গাঁথা, পুষ্পে খচিত কেশ!

আমি তোর লাগি ফিরেছি বিবাগি   গৃহহারা সুখহীন--

তুই হেথা বসি ওরে রাক্ষসী,   হাসিয়া কাটাস দিন!

ধনীর আদরে গরব না ধরে !   এতই হয়েছ ভিন্ন

কোনোখানে লেশ নাহি অবশেষ   সেদিনের কোনো চিহ্ন!

কল্যাণময়ী ছিলে তুমি অয়ি,   ক্ষুধাহরা সুধারাশি!

যত হাসো আজ যত করো সাজ   ছিলে দেবী, হলে দাসী।

বিদীর্ণ হিয়া ফিরিয়া ফিরিয়া   চারি দিকে চেয়ে দেখি--

প্রাচীরের কাছে এখনো যে আছে,   সেই আমগাছ একি!

বসি তার তলে নয়নের জলে   শান্ত হইল ব্যথা,

একে একে মনে উদিল স্মরণে   বালক-কালের কথা।

সেই মনে পড়ে জ্যৈষ্ঠের ঝড়ে  রাত্রে নাহিকো ঘুম,

অতি ভোরে উঠি তাড়াতাড়ি ছুটি   আম কুড়াবার ধুম।

সেই সুমধুর স্তব্ধ দুপুর,   পাঠশালা-পলায়ন--

ভাবিলাম হায় আর কি কোথায়   ফিরে পাব সে জীবন!

সহসা বাতাস ফেলি গেল শ্বাস   শাখা দুলাইয়া গাছে,

দুটি পাকা ফল লভিল ভূতল   আমার কোলের কাছে।

ভাবিলাম মনে বুঝি এতখনে   আমারে চিনিল মাতা,

স্নেহের সে দানে বহু সম্মানে   বারেক ঠেকানু মাথা।

হেনকালে হায় যমদূত-প্রায়  কোথা হতে এল মালী,

ঝুঁটি-বাঁধা উড়ে সপ্তম সুরে   পাড়িতে লাগিল গালি।

কহিলাম তবে, "আমি তো নীরবে   দিয়েছি আমার সব--

দুটি ফল তার করি অধিকার,   এত তারি কলরব!'

চিনিল না মোরে, নিয়ে গেল ধরে  কাঁধে তুলি লাঠিগাছ--

বাবু ছিপ হাতে পারিষদ-সাথে   ধরিতেছিলেন মাছ।

শুনি বিবরণ ক্রোধে তিনি কন,   "মারিয়া করিব খুন!'

বাবু যত বলে পারিষদ-দলে   বলে তার শতগুণ।

আমি কহিলাম, "শুধু দুটি আম  ভিখ মাগি মহাশয়!'

বাবু কহে হেসে, "বেটা সাধুবেশে   পাকা চোর অতিশয়।'

আমি শুনে হাসি আঁখিজলে ভাসি,   এই ছিল মোর ঘটে--

তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ,   আমি আজ চোর বটে!

রবীন্দ্রনাথের রসবোধ ও বাকচাতুর্য

 || রবীন্দ্রনাথের রসবোধ ও বাকচাতুর্য ||


একবার রবীন্দ্রনাথ ও গান্ধীজি একসাথে বসে প্রাতরাশ করছিলেন। গান্ধীজি খাচ্ছিলেন রোজকারের মত পরিজ এবং রবীন্দ্রনাথ গরম লুচি। গান্ধীজি বললেন, "গুরুদেব তুমি জানো না যে তুমি বিষ খাচ্ছ" উত্তরে রবীন্দ্রনাথ বললেন, "বিষই হবে, তবে এর অ্যাকশন খুব ধীরে, কারণ আমি বিগত ষাট বছর যাবৎ এই বিষই খাচ্ছি।"

রবীন্দ্রনাথ একবার এক ভদ্রলোককে বললেন, "আপনাকে আমি দন্ড দেব।" ভদ্রলোক ভীষণ বিব্রত হ'য়ে বললেন, "কেন গুরুদেব ! আমি কী অপরাধ করেছি ?" রবীন্দ্রনাথ বললেন, "গতকাল আপনার লাঠি, মানে দণ্ডটি আমার বাসায় ফেলে গেছেন, এই নিন আপনার দণ্ড।" 

একবার শরৎচন্দ্র একখানা টেলিগ্রাম পাঠালেন রবীন্দ্রনাথকে। সেকালে সাধারণত কোনও গুরুতর সংবাদ হ'লেই টেলিগ্রাম করা হ'ত। কাজেই টেলিগ্রাম এলে সকলেই কিঞ্চিৎ ভীত হতেন। তা, সেই টেলিগ্রাম খুলে দেখা গেল, শরৎবাবু লিখেছেন "গুরুদেব, আমি ভালোই আছি" অর্থাৎ মস্ত এক ঠাট্টা! 

রবীন্দ্রনাথও কি আর যে সে পাত্র ! তিনিও এর উত্তরে বিশাল এক পাথরখন্ড পার্সেল করলেন শরৎচন্দ্রকে, তার সাথে চিরকুটে লিখলেন, "তব কুশল সংবাদ পাইয়া আমার হৃদয় হইতে এই পাষাণভার  নামিয়া গিয়াছে"। 

একবার রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে তাঁর একটি নাটক পাঠ করছেন, শরৎচন্দ্র সেই আসরে উপস্থিত হলেন। একদা জুতো চুরি হবার কারণে তিনি জুতোজোড়া কাগজে মুড়ে বগলদাবা করে আসরে ঢুকতেন। রবীন্দ্রনাথ জানতে পেরে একদিন বলে উঠলেন,"শরৎ তোমার বগলে ওখানি কী ? পাদুকপুরাণ ?" এ নিয়ে বিস্তর হাসাহাসি হয়েছিল। 

একবার দোলপূর্ণিমার দিনে নাট্যকার দ্বিজেন্দ্রলাল জামার পকেট থেকে আবির বের করে কবিগুরুকে রাঙিয়ে দিলেন। আবিরে রঞ্জিত রবীন্দ্রনাথ বলে উঠলেন,"এতদিন জানতাম দ্বিজেনবাবু গান ও নাটক লিখে সকলের মনোরঞ্জন করে থাকেন, আজ দেখছি দেহরঞ্জনেও তিনি একজন ওস্তাদ"।

মরিসসাহেব ছিলেন শান্তিনিকেতনে ইংরেজি ও ফরাসি ভাষার অধ্যাপক। একদা তিনি তৎকালীন ছাত্র প্রমথনাথ বিশীকে বললেন, "গুরুদেব চিনির ওপর একটি ভারি মিষ্টি গান লিখেছেন। তারপর গাইতে শুরু করলেন, 'আমি চিনি গো চিনি তোমারে'...প্রমথনাথ জিজ্ঞেস করলেন, "চিনির ওপর, এই ব্যাখ্যা আপনি কোথায় পেলেন?" উত্তরে মরিসসাহেব জানালেন, "কেন স্বয়ং গুরুদেবই আমায় বলেছেন একথা"। 

রবীন্দ্রনাথ একদিন বিকেলে ছেলেমেয়েদের নিয়ে নৃত্যনাট্যের রিহার্সাল করাচ্ছেন, একজন এসে বললেন, "গুরুদেব চা খাবেন ?" রবীন্দ্রনাথ বললেন, আমি না-চা'র দলে ( অর্থাৎ নাচের দল, আবার চা না খাবার দল) সেই ব্যক্তি বুঝলেন রবীন্দ্রনাথের রসিকতা, ভাবলেন গুরুদেবকে ইংরেজিতে প্রশ্ন করে জব্দ করবেন। তিনি বললেন, "won't you have tea?" রবীন্দ্রনাথ তেমনই মুচকি হেসে বললেন, "আমি no-tea'র দলে"(নটী)।

সাহিত্যিক 'বনফুল' তথা শ্রী বলাইচাঁদ-এর এক ভাই অধ্যয়নের জন্য শান্তিনিকেতনে পৌঁছে কার কাছে শুনলেন গুরুদেব কানে একটু কম শোনেন। দেখা করতে গেলে রবীন্দ্রনাথ বললেন, "তুমি কি বলাইয়ের ভাই কানাই নাকি?" তখন বনফুলের ভাই চেঁচিয়ে জবাব দিলেন, "আজ্ঞে না, আমি অরবিন্দ"! রবীন্দ্রনাথ তখন হেসে উঠে বললেন, "না কানাই নয়, এ যে দেখছি একেবারে সানাই !" 


জীবনের শেষদিকে রবীন্দ্রনাথ একটু সামনে ঝুঁকে উপুড় হয়ে লিখতেন। তা দেখে এক শুভাকাঙ্ক্ষী বললেন , "গুরুদেব, আপনার নিশ্চয়ই ওভাবে লিখতে কষ্ট হচ্ছে, একখানা চেয়ারে হেলান দিয়ে তো আয়েশ করে লিখতে পারেন"! চুপচাপ কিছুক্ষণ তাকিয়ে রবীন্দ্রনাথ বললেন, "তা তো পারি, তবে কি জানো, উপুড় হ'য়ে না লিখলে কি আর লেখা বেরোয় ? পাত্রের জল ক'মে তলায় এসে ঠেকলে একটু উপুড় তো করতেই হয়"।...


#সংগৃীত

#রমানাথ_নিশি

রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ ২৫-০৬-২০২৫

 রাত ৮টা ৩০ মিনিটের সংবাদ তারিখ ২৫-০৬-২০২৫ আজকের সংবাদ শিরোনাম বিশ্ব পরিবেশ দিবসের উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা --- পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টি...