অতীতের পৃষ্ঠা থেকে শুভ জন্মদিনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
১৮৮৭ সালে কবির ২৬ বছর বয়সে তাঁর প্রথম জন্মদিন উৎসব পালন কবির ভাগ্নি সরলা দেবীর আত্মজীবনী ‘জীবনের ঝরাপাতা’ বইটিতে উল্লেখ করে গেছেন।
আক্ষরিক অর্থে সেই থেকে পরিজনদের মধ্যে কবিগুরুর জন্মদিনের উৎসব আরম্ভ হল।
এবং পরবর্তী বাইশ বছর ঠাকুরবাড়ির অন্দর মহলের আড়ালে ছিল কবির জন্মদিন। সেখানে হাতেগোনা কিছু মানুষ ছাড়া বাইরের কারও প্রবেশাধিকার ছিলো না। তবে জনসমক্ষে রবীন্দ্রজয়ন্তী প্রথম পালিত হয়েছিল ১৯১০ সালে শান্তিনিকেতনে। ‘আত্মীয়দের উৎসব’ এই আনুষ্ঠানিক নামে বিপুল উৎসাহে আশ্রমিকরা রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করেছিলেন।
এরপর রবীন্দ্রজয়ন্তী প্রথমবার মহাসমারোহে পালিত হয়েছিল ১৯১২ সালে। সেই শান্তিনিকেতনেই। সে বছর পঞ্চাশ পূর্ণ করে একান্নতে পা দিয়েছিলেন কবি। রবীন্দ্রজয়ন্তীকে সফল করার জন্য বিখ্যাত বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ প্রশান্ত মহলানবিশের নেতৃত্বে শান্তিনিকেতনে গিয়েছিলেন কলকাতার বেশ কিছু গুণীজন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন, সত্যেন দত্ত, সুকুমার রায় ও রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়। বেদ-উপনিষদ পাঠ করে এবং মালা পরিয়ে কবিকে বরণ করা হয়েছিল।
তবে ১৯৩১ সালে, মহা সমারোহে উদযাপিত হয়েছিল কবির ৭০ তম জন্মজয়ন্তী। সেই রবীন্দ্রজয়ন্তীর মুখ্য উদ্যোক্তা ছিলেন অমল হোম। উদযাপন কমিটির সভাপতি ছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু। কমিটিতে সদস্য হিসেবে ছিলেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রফুল্লচন্দ্র রায়, সুভাষচন্দ্র বসু, প্রশান্ত মহলানবিশ, সি.ভি.রমণ, রাজশেখর বসু, নজরুল ইসলাম, ইন্দিরা দেবী, কালিদাস নাগ, সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতো প্রথিতযশা ব্যক্তিরা। কবির সম্বর্ধনা উপলক্ষে দুটি বই প্রকাশিত হয়েছিল বাংলা আর ইংরেজিতে। ইংরেজি বইটির নামকরণ করেছিলেন রঁমা রঁলা। নাম দিয়েছিলেন,’গোল্ডেন বুক অফ টেগোর’। বইটিতে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে নিবন্ধ লিখেছিলেন কবির গুণমুগ্ধ আইনস্টাইন, ন্যুট হামসুন, হ্যারল্ড ল্যাসকি’র মত বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিরা।
আর ১৯৪১ সালের ৮ই মেতে অত্যন্ত অনাড়ম্বর ভাবে শান্তিনিকেতনে পালিত হয়েছিল বিশ্বকবির জীবনের শেষ রবীন্দ্রজয়ন্তী।
শুভ জন্মদিনে স্মরণ করি তাঁর সেই বিখ্যাত উক্তি---
"মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক
আমি তোমাদেরই লোক ;
আর কিছু নয়
এই হোক শেষ পরিচয় "।।
তথ্যসূত্র ও ছবি নেট থেকে সংগৃহীত। সু ঘো।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন