এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪

বয়ঃসন্ধির মতো ৪০ এর পরের জীবনেরও একটা নাম থাকা উচিত।  বুড়িও না, আবার ছুঁড়িও না, অদ্ভুত একটা বয়স। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এরা সংসারী ১৫/২০ বছর ধরে। 

 বয়ঃসন্ধির মতো ৪০ এর পরের জীবনেরও একটা নাম থাকা উচিত।  বুড়িও না, আবার ছুঁড়িও না, অদ্ভুত একটা বয়স। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এরা সংসারী ১৫/২০ বছর ধরে। 


🎇 এক/দুই সন্তানের মা হলেও মনের ভেতরকার কিশোরীটা কোথাও যেন রয়ে যায়। সেই মনের কিশোরীটাকে অবদমনের ক্লান্তিকর প্রচেষ্টা সবসময়। কারন, পরিবেশ পরিস্থিতির কাছে ছুঁড়ি হয়ে থাকাটা নিছক হাস্যকর। 


🎇 যা পাওয়ার ছিল, আর যা পাওয়া হয় নি, মনটা সেই হিসেব করতে বসে যায়, মন না চাইতেও। কতোই বা আর ব্যস্ত থাকা যায়, সংসার, রান্নাবান্না, কিংবা অফিস নিয়ে? দিনের শেষে না পাওয়াগুলো কেমন যেন খোঁচাতে থাকে, দিনের শেষে মনে হয় কেউ তো থাকুক, কেউ তো শুনুক, মনের সব কথা, কোন জাজমেন্ট ছাড়া। 


🎇 এদিকে সংসার, বাচ্চাকাচ্চা মানুষ করতে করতে জীবনটা বন্ধুহীন হয়ে যায়, সবাই যার যার জীবনে ব্যস্ত। 


🎇 ৪০ পেরোনো মেয়েরা একটা কঠিন রোগে ভোগে। নস্টালজিয়া! কারণে অকারণে শুধু পুরনো কথা মনে পড়ে। পুরোনো ক্ষতগুলো  দগদগে হয়ে ওঠে!  আবার মনে পড়ে ফেলে আসা শৈশব, তারুন্যের চঞ্চল মন, স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটির সোনালি দিনগুলো, তার সঙ্গে প্রথম দেখার ক্ষণটি, কখনো বা না ফুরানো কতো গল্প, বৃষ্টিবিলাস!!  

যে কিছু সময়ের জন্য নিজের হয়েছিল, যে কষ্ট দিয়েছিল, কিংবা না চাইতেও যাকে কষ্ট দিতে হয়েছিল, সব মনে পড়ে যায় সময়ে অসময়ে। 


🎇 রাতের বেলা সব কাজ সেরে আয়নার সামনে দাঁড়ালে বড় অসুন্দর মনে হয় নিজেকে। চুল পড়ে অর্ধেক, মুখে বলিরেখারা সবে আঁকিবুকি শুরু করেছে, এক সময়ের মেদহীন শরীরটা স্বপ্নের মতো লাগে, পেটে স্ট্রেচ মার্কের দাগ, সব মিলিয়ে ভীষণ অনাকর্ষণীয় লাগে নিজেকে। সেই বিষণ্ণতা ঢাকতেই হয়তো শাড়ি-গয়নায় মেতে থাকতে চায় মেয়েদের মন। 


🎇 জীবনের অর্ধেকটা পার করে এসে ৪০ পেরোনো মেয়েদের দুর্নিবার প্রেমের ইচ্ছা জাগে। নাহ, প্রেম করার জন্য প্রেম না। মনে হয় কেউ থাকুক, কেউ শুনুক সব কথা, আবার কারো আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে মন চায়। মনটা আবার সবকিছু নতুন করে শুরু করতে চায়। 


🎇 মন নতুন কাউকে চায় না, পুরাতন মানুষটাকেই আবার নতুন করে চায়। আবার তার চোখের তারা হয়ে থাকার বড় সাধ হয়। সংসার, বাস্তবতা সব অস্বীকার করতে চায় মনটা মাঝে মাঝেই। 


🎇 ৪০ পেরোনো মেয়ের বাবা-মায়ের কথা খুব মনে পড়ে। সেই জীবনটা খুব মনে পড়ে প্রতিনিয়ত। যা করতে ইচ্ছা করে তাঁদের জন্য, কিন্তু চাইলেই করা যায় না। শুধু মেয়ের বাবা-মা বলে অধিকারবোধ সীমিত করে রাখতে হবে এই ব্যাপারটাই খুব ভাবায়।


🎇 শুধু ফাইন্যান্সিয়ালি ইন্ডিপেনডেন্ট হলেই কি সমাজ ইন্ডিপেন্ডেন্স দেয়? মেয়েরা কখনই সমাজের দাসত্ব থেকে পুরোপুরি বের হতে পারে না। 


🎇 ৪০  পেরোনো মেয়েটার মাঝে মাঝেই খুব একা থাকতে মন চায়। নিজের মতো করে, নিজের জন্য। পরমুহূর্তেই সন্তানদের জন্য মন কাঁদে। মায়েরা সবচেয়ে ভয় পায় মৃত্যু। শত অভিমানেও সে বেঁচে থাকতে চায়, তার সন্তানদের জন্য। অন্তত যতোদিন সন্তানদের জীবনে তার প্রয়োজন আছে ততোদিন। চিৎকার করে কাঁদতে বড় সাধ হয়, যেন সেই কান্না কেউ শুনতে না পায়, এমন জায়গার খোঁজে মনে হয় জীবনটাই পার হয়ে যায়। 


🎇 ৪০ এর কাছে এসে মেয়েদের সবুজ মনটা আস্তে আস্তে নীল হতে শুরু করে, প্রথমে, হাল্কা, তারপর আস্তে আস্তে গাঢ় হয়। এক সময়, বেশি কথা বলা মেয়েটা চুপচাপ হয়ে যায়, মেনে নিয়ে বেঁচে থাকা শিখে যায়। পান থেক চুন খসতেই যে মেয়ের চোখের জল, নাকের জল এক হয়ে যেতো, তার নিঃশব্দ কান্না খুব কাছের না হলে কেউ টেরই পায় না। 


🎇 ৪০ পেরোনো মেয়েগুলো ব্যালেন্স করতে করতে নিজেদের কথা ভুলে যায়। ভুলে যায় কি করলে ভালো লাগবে, ভুলে যায় মনটা কি চায়।


🎇 ৪০ পেরোনো শরীরটাও আগের মতো সাপোর্ট দেয় না। অপারেশনের ধকল, মেরুদন্ডে দেওয়া ইঞ্জেকশন শরীরটাকে অকেজো করে দেয়। ভাঙা কোমর নিয়ে দিব্যি রান্নাবান্না, বাচ্চার দেখাশোনা, ঘরের কাজ, জার্নি সব করে যায়। তবুও দিন শেষে শুনতে হবে কিছুই করে না।


৪০ পেরোনো মেয়েগুলো যত্ন চায়, তারা চায় কেউ তার মনের যত্ন করুক।।

কাজী হায়াৎ,মান্না,মৌসুমী ও আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল মিলে সাতটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছিল এবং সাতটি চলচ্চিত্র ছিল সুপার ডুপার হিট

 ♦️কাজী হায়াৎ,মান্না,মৌসুমী ও আহমেদ ইমতিয়াজ

বুলবুল মিলে সাতটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছিল এবং সাতটি চলচ্চিত্র ছিল সুপার ডুপার হিট। 


(১) লুটতরাজ - ১৯৯৭

(২) আম্মাজান - ১৯৯৯

(৩) কষ্ট - ২০০০

(৪) বর্তমান - ২০০০

(৫)পাঞ্জা - ২০০১

(৬) তান্তবলীলা - ২০০১

(৭) মিনিস্টার - ২০০৩


♦️পরিচালক, নায়ক, নায়িকা এবং গীতিকার ও সুরকার জুটি'র কোন চলচ্চিত্র ফ্লপ ছিলো না।বরং সুপার ডুপার হিটের পাশাপাশি বছরের সর্বোচ্চ আয়কারী 'আম্মাজান' মত সর্বজন স্বীকৃত চলচ্চিত্র ছিল।


♦️শ্রুতিমধুর গানের সংখ্যায় ছিল অতুলনীয় :


(১) অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে

 শিল্পীঃ আইয়ুব বাচ্চু ও কনক চাঁপা। 


(২) তোমার আমার প্রেম এক জনমের নয়

শিল্পীঃ আইয়ুব বাচ্চু ও শাকিলা জাফর।


(৩) তোমার প্রেমের জন্য হইয়াছে মন

শিল্পীঃ কনক চাঁপা ও কুমার বিশ্বজিৎ। 


(৪) জানে জানুক জগৎবাসী

শিল্পীঃ কনক চাঁপা ও কুমার বিশ্বজিৎ। 


(৫) আমার এই অন্তরে তুমি ছাড়া 

শিল্পীঃ খালিদ হাসান মিলু ও কনক চাঁপা। 


(৬) আমার জীবন নামের ফুল

শিল্পীঃ মনির খান ও কনক চাঁপা। 


(৭) আরে ও মিনিস্টার মিনিস্টার 

শিল্পীঃ কনক চাঁপা ও এন্ড্রু কিশোর। 


♦️পরিচালক কাজী হায়াৎ-এর প্রতিটি সিনেমাতেই মান্না ও মৌসুমী জুটির অভিনয় পারফরম্যান্স ছিল দুর্দান্ত।

আমি বল্লভ। বিক্রমপুরের জমিদারদের উত্তরসূরী ছিলেন আমার বাবা, আমি বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান

 আমি বল্লভ। বিক্রমপুরের জমিদারদের উত্তরসূরী ছিলেন আমার বাবা, আমি বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। বাবার প্রাণের কবি ছিলেন রবিঠাকুর তাই কতকটা রবিঠাকুরের টানে আর কিছুটা চাকরিসূত্রে বাবা বোলপুরে থাকার সিদ্ধান্ত নেন আর জায়গা কিনে বাড়ি তৈরি শুরু করেন। আমরা সপরিবারে উঠি সেখানে, পরিবার বলতে আমি বাবা আর মা। আমি বোলপুরের স্কুলেই ভর্তি হই এখনকার মতো শহুরে হাওয়া লাগেনি তখন বোলপুরে, আনমনে মেঠো পথ ধরে হেঁটে যেতো বাউল একতারা বাজিয়ে গাইতে গাইতে। আমি শাল মহুয়া সোনাঝুরির জঙ্গলে একা একাই ঘুরে বেড়াতাম পিঠে থাকতো আঁকার সরঞ্জাম, ভালো সিনারি পেলেই আঁকতে শুরু করতাম সেখানে বসে। সন্ধ্যায় হাত পা কেটে বাড়ি ফিরলে মা বকতে বকতে ওষুধ লাগিয়ে দিতো। তারপর সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে যখন পড়তে বসতাম ছমছম করে নূপুর পায়ে সারা বাড়ি ঘুরে বেড়াতো আমাদের বাড়ির রান্নার লোক মালু মাসির মেয়ে কাজল, সাঁওতাল পল্লিতে ওদের ঘর বড় গরীব ওরা তাই রাতের খাবার খেয়ে ওরা মা মেয়ে বাড়ি যেতো। আমার বাবা বলেকয়ে মাস ছয়েকের মধ্যে কাজলকে একটা স্কুল ভর্তি করিয়ে দেয়। কোনো কঠিন অঙ্ক বা পড়া বুঝতে না পারলে কাজল খাতা হাতে আমার কাছে এসে বড় বড় চোখ করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতো আমি তখন মাষ্টার মশাইয়ের মতো গম্ভীর হয়ে পড়া বোঝাতাম, ওর চোখে তখন ভয় আর সমীহ। আমার মনে মনে হাসি পেলেও ওকে তা বুঝতে দিতাম না। কাজল আমার চেয়ে বছর তিনেকের ছোট ছিল কিন্তু বেজায় ভক্ত ছিল আমার, কখনো মাছের চার করে দেওয়া কিংবা আমার ঠিক করা আঁকার জায়গা পরিষ্কার করে দেওয়া এমন সাহায্য সে করেই থাকতো। আমি যখন আঁকতাম ও মুগ্ধ হয়ে দেখতো একটা শব্দ অব্দি করতো না, মাঝে মাঝে জলের বোতল নিঃশব্দে এগিয়ে দিয়ে বুঝিয়ে দিতো অনেকক্ষণ জল খাইনি আমার তেষ্টা পেয়েছে। একটু একটু করে কাজল আমার ছায়াসঙ্গী হয়ে উঠলো আমি ওকে পড়াতাম বকতাম কিন্তু কষ্ট পেলে যখন ওর চোখ ভরে জল আসতো সহ্য করতে পারতাম না আমি, দুহাত দিয়ে মুছিয়ে দিতাম ওর চোখের জল। এই ভাবে একটু একটু করে আমরা বড় হতে থাকলাম। 


যতো বড় হতে থাকলাম একটু একটু করে কাজলের প্রতি আমার অধিকারবোধ বাড়তে লাগলো, মনে হতে লাগলো ওকে বকার বা আগলে রাখার অধিকার শুধু আমারই আছে। কাজল যে আমাকে নিয়ে সচেতন তা আমিও বুঝতাম সেবার যখন সোনাঝুরির জঙ্গলে পড়ে গিয়ে চোট পেলাম পা কেটে গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছিল  দেখেছিলাম কাঁদতে কাঁদতে কাজল ওড়না দিয়ে আমার কাটা জায়গা বেঁধে দিচ্ছে তখন অবশ্য এটা ভাবিনি যে কেনো ও কাঁদছে, আমার মতো চঞ্চল ছেলের তখন সে সময় ছিল না। তখন আমার বয়স তেরো একবার কাজলকে একটা ছেলে খারাপ কথা বলেছিল, শান্ত লাজুক কাজল সেসব আমায় না বললেও আমি ওর মুখে কষ্টের ছাপ দেখে আন্দাজ করে নিয়েছিলাম। সেবার প্রচন্ড রাগ হয়েছিল আমার, প্রথমবার আমাকে কারো সাথে মারামারি করতে দেখে অবাক হয়েছিল বটে আমার বাবা মা। এইভাবে আমরা আরও বড় হয়ে গেলাম, আমি ব্যস্ত হয়ে পড়লাম আমার আঁকা আর লেখাপড়ার জগত নিয়ে। কাজল আমার জন্য ভালো ভালো রান্না করে আনলে এখন চুপচাপ খেয়ে নিই তারিফ করার কথা মনে থাকে না। মাঝে মাঝে দেখি কাজল আমার দিকে অপলক চোখে তাকিয়ে থাকে, আমার চোখে চোখ পড়তেই চোখ সরিয়ে নেয়। কাজলের উপস্থিতির গুরুত্ব না বুঝলেও অনুপস্থিতিতে বড় অস্থির লাগতো। সেবার শুনলাম কাজলের জ্বর ওর মা কাজে আসেনি তাই, ফল আর ওষুধ নিয়ে নিজে গেছিলাম ওদের বাড়ি। সাঁওতাল পল্লিতে ঢুকতেই দেখলাম পর পর মাটির কুঁড়েঘর মাথায় খড়ের ছাউনি, বাড়িতে বাড়িতে মুরগির ছানা ঘুরছে, একদল লোক মহুয়ার নেশায় বুঁদ হয়ে মাদল বাজিয়ে গান ধরেছে, খালি গায়ে খালি পায়ে একদল বাচ্চা খেলে বেড়াচ্ছে। মালু মাসি আমাকে আদর যত্ন করে ঘরে নিয়ে গিয়ে খাওয়ালেও, কাজলের অসুস্থ শুকনো মুখটা দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেছিল। 


বছর ঘুরলো ডাক্তারিতে চান্স পেলাম, বাবা মায়ের মন খারাপ থাকলেও কলকাতায় কলেজে পড়তে হবে তাই তাদের ছেড়ে যেতেই হতো। বাবা বললেন আমার পড়া শেষ হলে যদি সেরকম হয় মাকে নিয়ে কলকাতায় চলে আসবেন। বোলপুর ছেড়ে যাওয়ার দিন তিনেক বাকি তখন জঙ্গলের একটা স্কেচ মন দিয়ে আঁকছি শুনলাম ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নার শব্দ, তাকিয়ে দেখি কাজল। বললাম কেঁদো না, আমি তো ফিরে আসবো। সেদিন আঁকা বন্ধ করে হয়তো আমি ওর সাথে একটু কথা বলতে পারতাম, ওর মনের কথা শুনতে পারতাম কিন্তু শুনিনি, পরে সেই কথা গুলো শোনার জন্য হাহাকার করে বেড়িয়েছি। বাবার সাথে কলকাতা এলাম হোস্টেল ঠিক করে বাবা ফিরে গেলেন। এখন বাড়ির কথা খুব মনে পড়ে সেই রাঙামাটির গ্রামটাকে মনে পড়ে, বাবা মাকে মনে পড়ে আর স্মৃতিতে ভেসে আসে ওই শ্যামলা সাঁওতাল মেয়ের কালো দীঘল চোখগুলো। আমি বুঝি আমার মন ছটফট করছে কাজলের জন্য এটা কি ভালোবাসা, আচ্ছা কাজল আমাকে নিয়ে কি ভাবে! কতো প্রশ্ন ভিড় করে মনের মধ্যে, আমার আঁকা প্রতিটা নারীর ছবির সাথে যেনো কাজলের মিল পাই, আঁকতে আঁকতে কতো ছবিই কাজলের এঁকে ফেললাম। তাহলে তো আমিও কাজলকে দেখেছি মনের অজান্তেই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে। মাস ছয়েক লেখাপড়ার ধরন আয়ত্তে আনতেই কেটে গেলো, ঠিক করলাম বাড়ি যাবো। অনেক আশা নিয়ে বাড়ি ফিরলাম ভাবলাম কাজলকে মনের কথা জানাবো, কিন্তু বাড়ি ফিরে শুনলাম মালু মাসি মেয়েকে নিয়ে বোনের বাড়ি গেছে দিন দশেকের ছুটি নিয়ে মন ভেঙে গেল, এতোদিন থাকা সম্ভব ছিল না বাড়িতে। 


এরপর আরও মাস ছয়েক কাটলো বাড়ি ফেরার আগে একজোড়া নূপুর নিলাম কাজলের জন্য, ভাবলাম নিজের হাতে পরিয়ে মনের কথা বলবো ওকে। দুপুরে বোলপুরের বাড়ি ফিরে বেরোলাম আঁকার সরঞ্জাম নিয়ে। সেবার পলাশ গুলো গাছে লালে লাল হয়ে ফুটেছিল মাদল বাজিয়ে একদল ছেলেমেয়ে নাচগান করছিল আমি সেটা আঁকার কথা ভেবে এগিয়ে গেলাম। কিন্তু গিয়ে চমকে উঠলাম ওদের মধ্যে কাজল নাচছে। উঁচু করে পরনে লাল পাড় শাড়ি, মাথায় পলাশ ফূল, হাতে চুড়ি আর কপালে সিঁদুর ওর। সে যে কি ভীষণ যন্ত্রণা চোখ ফেটে জল এলো আমার, কাজল বিয়ে করে নিলো! তবে কি ভালোবাসা একতরফা ছিল! আমি অনেক কষ্টে নিজেকে আটকালাম, মনে হচ্ছিল ওর হাত ধরে টেনে এনে বলি তুমি শুধু আমার, তোমাকে ভালোবাসার অধিকার একমাত্র আমার। বুঝলাম ওর পাশে মাদল বাজিয়ে গান গাওয়া লোকটা ওর বর মাঝে মাঝে হাসতে হাসতে ওকে দেখছে, দেখবেই তো সদ্য বিয়ে হয়েছে মনে হচ্ছে। খুব জানতে ইচ্ছে করছিল লোকটা কি আমার থেকে বেশি কাজলকে ভালোবাসে? আর কিছু জানা হয়নি পরের দিন ফিরে এসেছি কলকাতায় একরাশ কষ্ট বুকে নিয়ে,  তারপর আর যাইনি বোলপুর। বাবা মাকে নিয়ে চলে এসেছে কলকাতায় বছর কয়েক পর। পড়া শেষ হয়েছে, ডাক্তার তকমা পেয়েছি। মা বহুবার বলার পরেও বিয়ে করতে ইচ্ছে করেনি, কাউকে ভালোবাসার কথা ভাবিওনি। এই করে বছরের পর বছর গড়াল বয়স বাড়লো, মা মারা গেল বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লো। দিন দিন বড় একা হয়ে পড়লাম আমি, সব থাকার পরেও মনে হতো কিচ্ছু নেই। 


বাবার মৃত্যুর পর ফিরলাম বোলপুরের বাড়িতে ওখানেই নিজের চেম্বারে রুগী দেখা শুরু করলাম, গরীব বা আদিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য চিকিৎসা করতাম বিনামূল্যে। নিজের পেট চালানো ছাড়া বেশি টাকার দরকার ছিল না। একদিন আমার মালি বললো রান্নার কাজের জন্য একটা সাঁওতাল মেয়ে এসছে। বললাম পাঠাও একমাথা ঘোমটা দিয়ে সে এলো আমার ঘরে। সেই মুখ, সেই চোখ, আমি অস্ফুটে বললাম কাজল! কাজল মৃদু গলার বললো -"মা তো আর বেঁচে নেই, আমাকে কাজে নেবেন?"

তুমি থেকে আপনিটা বড় অদ্ভুত শোনালো।

বললাম -"ছেলে হয়েছে নাকি মেয়ে? কোন ক্লাসে পড়ে?" সে চোখ মুছে বললো -"মা হতে পারিনি আমি সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতাই ছিল না আমার, বিয়ের দুবছরের মাথায় স্বামী মারা গেল সেই থেকে মায়ের ঘরে থাকি।" আমি নিশ্চুপ রইলাম। কাজল রয়ে গেল আমার রান্নার লোক হিসাবে অথচ আমি ওকে ঘরনী বানাতে চেয়েছিলাম।


মাস তিনেক পর একবার প্রচন্ড বর্ষা। আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা তিনদিন ধরে বৃষ্টি হয়েই চলেছে, তার মধ্যে আমি জ্বরে বেঁহুশ। যখন একটু ঠিক হলাম দেখলাম কাজলের কোলে মাথা রেখে শুয়ে আমি। ক্লান্ত গলায় বললাম -"বাড়ি যাওনি তুমি?"

বললো -"দুদিন লাগলো আপনার ঠিক হতে, আপনাকে এই অবস্থাতে ছেড়ে যাই কি করে!"

বললাম -"একা মেয়ে একটা ছেলের ঘরে রয়ে গেলে,  বদনাম হয়ে যাবে তো।"

-"হলে হোক তাও আপনাকে ছেড়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না।"

জিজ্ঞেস করলাম -"কেনো?"

বললো-"যে কারণে আপনি এতোদিন বিয়ে না করে জীবনটা নষ্ট করেছেন সেই কারণে।"

ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম -"বাসতে ভালো আমাকে?"

-"প্রচন্ড।"

-"তাহলে বিয়ে কেনো করলে?"

-"অনেক অপেক্ষা করেছি আপনার জন্য, জোর করে বিয়ে দিল পাশের পল্লির ছেলের সাথে। মুখ ফুটে বলতে পারিনি আপনাকে ভালোবাসি, কোথায় আপনি আর কোথায় আমি!"

কি যে শান্তি পেলাম মনে! শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললাম -"অনেক ভালোবাসি তোমায়, ঠিক যতোটা ভালোবাসলে অন্য কাউকে ভালোবাসার ইচ্ছে চিরকালের মতো মরে যায়।"

আলমারি থেকে বের করে আনলাম ওর জন্য আনা নূপুর, ওর পায়ে পরিয়ে দিলাম। ও লজ্জা পেয়ে আমার বুকে মুখ গুঁজলো।


অনেক বছর কেটে গেছে আমাদের দাম্পত্য জীবনের, ভীষণ খুশি আছি আমরা। বয়স হয়েছে বলে কাজল নূপুর পরতে চায় না, আর আমি ওর পা থেকে নূপুর খুলতে দিই না। এখন রোজ সকালে আমার রান্নাঘর থেকে শোনা যায় সাঁওতালি গান, বেলায় কাজল গরীব বাচ্চাদের পড়ায় আমাদের কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে বসে। আমি বিনামূল্যে চিকিৎসা করি আর বিকালে হাতে হাত রেখে ঘুরে বেড়াই দুজনে। এখন আঁকতে বসলে যখন কাজল আমার দিকে তাকিয়ে থাকে, আমি আর আঁকাতে মনোনিবেশ করতে পারি না ওর কপালে চুমু খেয়ে বলি আমার শুধু তোমাকেই চাই যতোদিন পৃথিবীতে আছি। 


ছবি : সংগৃহীত

সকাল ৭টার সংবাদ তারিখ ৩১-১২-২০২৪ খ্রি:।

 সকাল ৭টার সংবাদ

তারিখ ৩১-১২-২০২৪ খ্রি:।


আজকের সংবাদ শিরোনাম:


জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরি করবে অন্তর্বর্তী সরকার - জুলাই বিপ্লবের আদর্শকে ধারণ করে কাজ করার জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা।


জুলাইয়ের শহিদ পরিবারগুলোকে মামলায় সহায়তার জন্য সাত দিনের মধ্যে গঠন করা হবে লিগ্যাল এইড সেল - বললেন আইন উপদেষ্টা।


আজ বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ শীর্ষক কর্মসূচিতে জমায়েত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।


প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান ও এ প্রক্রিয়ার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে কমিশন প্রস্তুত।


আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামী করে ৯ জনের বিরুদ্ধে গুমের লিখিত অভিযোগ দায়ের।


রাশিয়া ও ইউক্রেন মধ্যে তিন শতাধিক যুদ্ধবন্দি বিনিময় ।


গাজার হাসপাতালগুলোতে হামলা বন্ধে আহ্বান জানালেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।


বিপিএল-এ ফরচুন বরিশাল এবং রংপুর রাইডার্স নিজ নিজ খেলায় জয়ী।

ভারত বর্ষের সর্ব্বোচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি!! বলতে গেলে, তিনিই পৃথিবীর সবচেয়ে শিক্ষিত ব্যাক্তি!! 

 ভারত বর্ষের সর্ব্বোচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি!!

বলতে গেলে, তিনিই পৃথিবীর সবচেয়ে শিক্ষিত ব্যাক্তি!! 


পয়সার গরম তো জীবনে অনেক দেখলেন । কিন্ত বিদ্যার এমন গরম দেখেছেন না শুনেছেন কখনও? সবটা শুনলে মাথা ঝিমঝিম করবে, হাত পা’ও অবশ হয়ে যেতে পারে বৈকি।এক জীবনে এত পড়াশোনা কোন রক্ত মাংসের মানুষ করতে পারে, না পড়লে বিশ্বাস হবে না।তাও আবার সেই ভদ্রলোক যদি ভারতীয় হন !!


মারাঠি এই ভদ্রলোকের নাম ‘শ্রীকান্ত্ জিচকার’।


পড়াশোনার কেরিয়ারটা একবার হাল্কা করে চোখ বুলিয়ে নিন শুধু , তাহলেই মালুম পড়বে ভদ্রলোক কি কাণ্ডটাই না করেছেন।


১.জীবন শুরু MBBS, M.D দিয়ে।


২.এরপর L.L.B করলেন।সাথে করলেন ইন্টারন্যাশানাল ল-এর ওপর স্নাতকোত্তর।


৩.এরপর বিজনেস ম্যানেজমেন্ট এর ওপর ডিপ্লোমা,সাথে M.B.A ।


4. এরপর জার্নালিজম নিয়ে স্নাতক।


এতদূর পড়ার পর আপনার যখন মনে হচ্ছে লোকটা পাগল নাকি,তখন আপনাকে বলতেই হচ্ছে এ তো সবে কলির সন্ধ্যে । এখনো গোটা রাত বাকি।


এই ভদ্রলোকের শুধু স্নাতকোত্তর ডিগ্রীই আছে দশটা বিষয়ের ওপর! স্নাতকোত্তরের বিষয়ের তালিকাটা একবার দেখুন খালি-


১.পাবলিক আ্যডমিনিস্ট্রেশন


২.সোশিওলজি


৩.ইকোনমিক্স


৪.সংস্কৃত(ডি.লিট)


৫.হিস্ট্রী


৬.ইংলিশ


৭.ফিলোসফি


৮.পলিটিক্যাল সায়েন্স


৯.এনসিয়েন্ট ইন্ডিয়ান হিস্ট্রী, কালচার,এন্ড আর্কেওলজি


১০.সাইকোলজি


ওপরের যতগুলো বিষয় দেখছেন সব ক’টিতেই প্রথম শ্রেণীর সঙ্গে স্নাতকোত্তর, এবং ২৮টি স্বর্ণপদক বিজয়ী।সব মিলিয়ে ১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত প্রতি গ্রীষ্মে ও প্রতি শীতেই উনি কোনো না কোন স্নাতকোত্তরের বিষয়ের পরীক্ষা দিয়ে গেছেন।


মাথা ঝিমঝিম করছে তো!তা মাথার আর দোষ কি বলুন!তবে মাথা ঘুরে পড়ে যাবার আগে একবারটি শুধু শুনে যান।এতসব পড়তে পড়তে ওনার যখন একঘেয়েমি লাগছিল,ঠিক করলেন এবার একটু স্বাদ বদলানো যাক! তো স্বাদ বদলাতে আমি আপনি বেড়াতে যাই,আর উনি “আই.পি.এস(IPS)” পরীক্ষায় বসলেন আর পাশ করলেন।সেটা ১৯৭৮ সাল।কিন্তু পোষালো না চাকরীটা।চাকরীটা ছেড়ে দিয়ে বসলেন “আই.এ.এস(IAS)” পরীক্ষায়।১৯৮০ তে “আই.এ.এস(IAS)” হলেন।


নটে গাছটা তাহলে মুড়োলো শেষ অবধি।আজ্ঞে না মুড়োয় নি এখনো।চারমাসের মধ্যে “আই.এ.এস(IAS)” এর চাকরীটাও ছেড়ে দিলেন মহারাষ্ট্রের বিধান সভা ভোটে লড়বেন বলে।১৯৮০ তে উনি যখন বিধায়ক নির্বাচিত হলেন তখন ওনার বয়স সবে ২৫।উনি হলেন ভারতের সবচেয়ে কমবয়সী বিধায়ক।সবই হল যখন তখন মন্ত্রী হওয়াটাই বা আর বাকী থাকে কেন!সেটাও হলেন এবং একটা দুটো দপ্তরের নয়,একেবারে ১৪ টা দপ্তরের।১৯৯২ সাল নাগাদ রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচিত হলেন।


ওনার এই ‘সামান্য’ কয়েকটি গুণ ছাড়াও তিনি


অসাধারণ চিত্রশিল্পী,


পেশাদার ফটোগ্রাফার,


মঞ্চাভিনেতা,


সখের বেতার চালক


ও জ্যোতিষশাস্ত্রে বিশেষ পারদর্শী ছিলেন।সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ ও ইউনেস্কোতে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।


ব্যক্তিগত সংগ্রহে ৫২০০০ বই রয়েছে ওনার। ‘লিমকা বুক অফ রেকর্ডস’ ওনাকে “ভারতবর্ষের সবথেকে শিক্ষিত ব্যক্তি”র শিরোপা দিয়েছে।১৯৮৩ তে উনি ‘বিশ্বের অসামান্য দশজন তরুণ’ হিসেবে নির্বাচিত হন।


২০০৪ এ পথ দুর্ঘটনায় ওনার মৃত্যু হয়। বয়স হয়েছিল ৪৯


কার্টেসী: সংকর চক্রবর্তী

সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪

এই এতো বছরের জীবন থেকে বড় কিছু শিক্ষা 

 🌸এই এতো বছরের জীবন থেকে বড় কিছু শিক্ষা 🎉💕


১। যাই কর না কেন টাকা ছাড়া তোমার দাম নাই। সাকসেস ছাড়া তুমি শূন্য। বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজনদের কাছে তুমি ভ্যালুলেস হবে যদি তুমি নিজে বড় কিছু না কর। 


২। তোমার আশে পাশে যারা কোন প্রোডাক্টিভ কাজে ব্যস্ত না তারা মানুষ হিসেবে সুবিধার না। কোন না কোন ভাবে তারা তোমাকে নিয়ে টানা টানি করবে। তোমার পিছে লাগবে। তোমার দায়িত্ব হচ্ছে এদেরকে পাত্তা না দেয়া।


৩। যারা পরিবারের জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দেয় তারা কোন না কোন ভাবে জীবনে সফল হয়। বিশেষ করে বাবা মায়ের জন্য তুমি যা স্যাক্রিফাইস করবা তার পুরোটাই তোমার লাইফে ফেরত আসবে। 


৪। মানুষের জীবন কখনও এক থাকে না। আজ যে অভাব আছে কাল তা দূর হবেই। আজ না নেই কাল তা হবে। তবে এ জন্য দরকার পরিশ্রম আর আল্লাহ্‌র কাছে কন্টিনুয়াস দোয়া করা। 


৫। কাউকে অন্ধভাবে ভালোবেসে মারা খেও না। জীবনে প্রেম ভালোবাসা সব না। কেউ একজন ভালো না বাসলে তোমার জীবন চলবে না ব্যাপারটা এমন না। বরং তোমার উচিত তাকে দেখিয়ে দেয়া যে তাকে ছাড়া তুমি হাজার গুনে ভাল আছ। প্রুভ ইট। 


৬। তোমার সময়গুলো আরেকজনকে দিয়ে দিও না। Your time is limited, so don't waste it living someone else's life. নিজেকে সময় দাও। নিজের জন্য কিছু একটা কর। আর যদি নিজের জন্য কিছু না কর তাহলে একটা সময় যাবে আফসোস করতে করতে। 


৭। নিজেকে শক্ত কর। মনকে শক্ত কর। মানসিকভাবে শক্তিশালী না হলে তুমি এই দুনিয়ায় টিকতে পারবে না। সব থেকে বড় ব্যাপার হচ্ছে মানসিকভাবে শক্ত না হলে মানুষের দেয়া সামান্য আঘাতেই তুমি শেষ হয়ে যাবে। 


৮। তোমার পিছনে যারা লেগেছে তাদের পাত্তা দিও না। বরং focus on your dreams. Focus on your growth. তোমার হিউজ সাকসেস দিয়ে শত্রুদের পিষে ফেল। এমনভাবে বড় হও যেন শত্রুরা তোমাকে সমীহ করে। 


৯। মানুষকে ভালোবাস। কারও ক্ষতি কর না। পারলে উপকার কর। Everything you done to me, already done to you. অন্যের জন্য যাই করবে তা তোমার জীবনে ফেরত আসবেই। 


১০। People like to judge other people. তুমি যাই কর না কেন মানুষ তোমাকে জাজ করবেই। এসবে পাত্তা দিলে জীবন চলবে না। 

জাস্ট ইগ্নোর......


#collected #Collected_Post #life #Awareness #motivational #lifelessons #highlight #lessonslearned #abroadlife

হাড্ডিসার গরু কিভাবে মোটাতাজা করতে হয়।

 হাড্ডিসার গরু কিভাবে মোটাতাজা করতে হয়।

কি কি ইনজেকশন এবং খাবার দিতে হয় এগুলো নিয়ে। 

হাড্ডিসার গরু পালন করা সব থেকে বেশি লাভ জনক যদি সেটা সঠিক দামে ক্রয় করতে পারেন।

খামারে লাভ করতে হলে কম দামে গরু কেনা হলো প্রথম শর্ত। হাড্ডিসার গরু কম দামে পাওয়া যায়, তাই এই গরু ভালো ভাবে পালন করতে পারলে লাভ বেশি করা সম্ভব।

আজকে আপনাদের হাড্ডিসার গরু মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি সম্পর্কে জানাবো।

হাড্ডিসার গরু মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি হলো প্রথমে গরু কে কৃমি মুক্ত করে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন দিয়ে গরুর হাড্ডি গুলোতে মাংস লাগানো।

হাড্ডি তে মাংস লাগাতে পারলে আমরা লাভবান হতে পারবো।

হাড্ডিসার গরু গুলো মূলত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন এর অভাবে গরু গুলোর হাড্ডি দেখা যায়।

আমরা এই ঘার্তি গুলো পূরণ করতে পারলে হাড্ডিসার গরু মোটাতাজাকরণ করতে সক্ষম হবো।

এই সকল হাড্ডি বের হওয়া গরু গুলো শরিরে কিছু ঔষধ ও যত্নের মাধ্যমে হাড্ডি গুলোতে মাংসে ঢেকে যাবে।

গরু মোটাতাজাকরণ প্রথম ঔষধের নাম হলো কৃমি মুক্ত করা ঔষধ, কারণ আপনি প্রথমে যদি গরু কে ক্যালসিয়াম বা ভিটামিন জাতীয় কোনো ঔষধ দেন তাহলে কৃমি তে সেই ঔষধ খেয়ে ফেলবে। তাই আমাদের প্রথম কাজ হবে কৃমি মুক্ত করা।

গরু মোটাতাজাকরণ ঔষধের নাম হলো ভালো একটি কৃমির ঔষধ, ক্যাটাফস ইনজেকশন, রেনাসল এডি ৩ ই ভেট, লিভার টনিক ও জিংক।

গরু মোটাতাজাকরণের এই ঔষধ গুলোর ব্যবহার সম্পর্কে এই পোস্ট এ সম্পর্ণ ভাবে আলোচনা করা হবে।


হাড্ডিসার গরু মোটাতাজাকরণ


গরু মোটাতাজাকরণ এর জন্য আমাদের দেখতে হবে গরুটার সমস্যা কি। সমস্যা বুঝে ঔষধ দিয়ে গরু মোটাতাজা করতে হবে। হাড্ডিসার গরু মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি হলো প্রথমে গরু কে কৃমির জন্য ঔষধ দিতে হবে।

কৃর্মির ঔষধ দেওয়ার পর হাড্ডিসার গরু গুলো লিভার টা স্ট্রং করার জন্য লিভার টনিক খাওয়াতে হবে, পাশাপাশি জিংক দিতে হবে।

এরপর খাগরের সাথে হাড্ডিসার গরু গুলোকে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন মেডিসিন দিতে হবে।

গরু গুলোকে পর্যাপ্ত পরিমানে খর, ums বা ঘাস ও পাশাপাশি দানা দার খাবার খেতে দিতে হবে।

এই ভাবে আমরা হাড্ডিসার গরু গুলো খুব সহজে মোটাতাজাকরণ করতে পারবো।


গরু মোটাতাজাকরণ ঔষধের নাম


হাড্ডিসার গরু মোটাতাজাকরণ করার জন্য যে সকল ঔষধের প্রয়জন হবে তা আজকে আলোচনা করবো।

গরু মোটাতাজাকরণ ঔষধের নাম হলো কৃমির ঔষধ, ক্যাটাফস, এডি3 ইত্যাদি। 

আমরা গরু মোটাতাজাকরণ এর জন্য কি কি ঔষধ কি পরিমান এ ও কখন খাওয়াবো তা নিম্নে দেওয়া হলো-


Tab. Renadex Vet  প্রতি ৫০ কেজি ওজনের জন্য একটি করে সকালে খালি পেটে খাওয়াতে হবে।

গরুর ওজন যদি ১০০ কেজি হয় তাহলে ২ টি tab. খাওয়াতে হবে।


এখন ৫-৭ দিন পর  inj. Nitronex vet প্রতি ১০০ কেজি ওজনের জন্য ৩ মি.লি. চামড়ার নিচে প্রয়গ করতে হবে।

কৃমির ইনজেকশন দেওয়ার আগে এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ইনজেকশন দেওয়া ভালো যেমন রেনাসিন বা এস্টাভেট তাহলে গরুর এলার্জি ঘটিত কোন সমস্যা হয় না।


কৃমির ঔষধ দেওয়ার পর এবং চামড়ার নিচে Nitronex vet দেওয়ার পর দিন থেকে সকালে লিভার টনিক এবং বিকালে জিংক খাওয়াতে হবে ৫ দিন করে।


লিভার টনিক ও জিংক খাওয়ানো শেষ হওয়ার পর প্রতি ১ সপ্তা পর পর inj. Ranasol AD3E Vet ৫ মি.লি ও inj. Cataphos vet প্রতি ১০০ কেজি ওজনের গরুর জন্য ১০ মি.লি. করে মাংসে প্রয়োগ করতে। এটা ২-৩ বার করা যেতে পারে। বেশি করলেও সমস্যা নেই তবে প্রয়োজন হয় না। 

পাশাপাশি ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, অ্যামাইনো এসিড যুক্ত দানাদার খাদ্য তৈরি করে গরুকে দিতে হবে।

কিভাবে কি কি উপকরণ দিয়ে দানাদার খাবার তৈরি করতে হয় 


আশা করি সবকিছু দেখলে এবং সঠিকভাবে নিয়মে পরিচর্যা করলে আপনি অবশ্যই পুণ্য ফলাফল পাবেন এবং লাভবান হবেন।


সবাই সবার টাইমে শেয়ার করে রাখুন একদিন কাজে দিবে।


অবশ্যই পেজটি ফলো করবেন ধন্যবাদ ❤️

কিছু মসলা তৈরির পদ্ধতি ❤️ নিত্য প্রয়োজনীয় মসলা রেসিপি টিপস্ সহ দেখুন কাজে লাগবে 

 ☘️❤️কিছু মসলা তৈরির পদ্ধতি ❤️ নিত্য প্রয়োজনীয় মসলা রেসিপি টিপস্ সহ দেখুন কাজে লাগবে 🌶️👇👇,☘️

🌶️☘️⚫ ১.চাট মসলা👇

উপকরণঃ

সরিষা দানা হাফ চামচ

মেথি ১/৪ চা চামচ

শুকনো মরিচ ১০-১২ টি

জিরা ৩ টেবিল চামচ

ধনিয়া ২ টেবিল চামচ

গোটা গোলমরিচ ১ টেবিল চামচ

আমচূর পাউডার ২চামুচ

আদা পাউডার ১চা চামুচ 

মৌরি ১ টেবিল চামচ

লবঙ্গ ১০টি

পাঁচফোড়ন দেড় টেবিল চামচ

লবণ ১ টেবিল চামচ

বিট লবণ ৩ টেবিল চামচ


প্রণালিঃ


১। প্রতিটি উপকরণ শুকনা তাওয়া বা ফ্রাই প্যানে ভালোভাবে টেলে নিতে হবে। 


২। খেয়াল রাখতে হবে যেন পুড়ে না যায়। 


৩। এরপর সব একসঙ্গে গুঁড়ো করে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে মজাদার চাট মসলা।


☘️⚫ ২.ম্যাগী ম্যাজিক মসলা / নুডুলসের মসলা তৈরি👇


উপকরনঃ


মরিচগুড়া ১ চা চামচ

হলুদগুড়া ১/২ চা চামচ

ধনিয়াগুড়া ১ চা চামচ

জিরাগুড়া ১ চা চামচ

পেয়াজ গুড়া ১ টে. চামচ

আদা গুড়া ১ চা চামচ

রসুন গুড়া ১ টে. চামচ

গরম মসলা গুড়া ১ চা চামচ

গোল মরিচ গুড়া ১ চা চামচ

মেথি গুড়া ১/২ চা চামচ

আমচুর পাউডার ১/২ চা চামচ

টেস্টিং সল্ট ২ চা চামচ

বিট লবন ১/২ চা চামচ

চিলি ফ্লেক্স ২ চা চামচ

কর্ণফ্লোয়ার ১ টে. চামচ

চিনি ২ টে. চামচ

লবন ১ চা চামচ


প্রণালীঃ


১। সব উপকরন একসাথে ব্লেন্ডারে মিহি গুড়া করে নিন।


২। এরপর শুকনো কাঁচের বয়ামে বা এয়ারটাইট বক্সে সংরক্ষণ করুন।


⚫ ☘️৩.চটপটির মশলা তৈরি👇


উপকরনঃ


মৌরী ১ চা চামচ

শুকনা মরিচ ১০/১২টা

জিরা ১ চা চামচ

মেথি ১ চা চামচ

ধনিয়া ১ চা চামচ

গোলমরিচ ১/২  চা চামচ

কালোজিরা ১/২ চা চামচ

লবঙ্গ ১/২  চা চামচ

রাঁধুনি ১ চা চামচ

পাচঁফোড়ন ১ চা চামচ

বিট লবন ২ টে. চামচ


প্রণালীঃ 


১। সব মসলা হালকা টেলে ঠান্ডা করে নিন।


২। চটপটির মসলা বেশী টালা ঠিক না, বেশী টালা হলে মসলা কালো হয়ে চটপটির রং নষ্ট হয়ে যায়।


৩। এবার ব্লেন্ডারে দিয়ে গুড়া করুন।


৪। দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করতে চাইলে তৈরি মশলা কাঁচের বয়াম অথবা এয়ারটাইট বক্সে করে রেফ্রিজারেটরের নরমাল অংশে রাখতে পারেন।


⚫ ৪☘️.শাহী গরম মসলা তৈরি👇


উপকরণঃ


এলাচ ১২-১৪ টি

দারুচিনি ৪ টুকরো (মাঝারি)

তেজপাতা ৪ টি

কালো গোল মরিচ ২ টে. চামচ

লবঙ্গ ১ টে. চামচ 

জিরা ২ টে. চামচ 

ধনিয়া ২ টে. চামচ 

মৌরি/মিষ্টি জিরা ১ টে. চামচ

জয়ফল অর্ধেক টা

জয়ত্রী ছোট ১ টুকরো 


প্রণালীঃ


১। সব উপকরণ শুকনো তাওয়ায় অল্প আঁচে টেলে নিন ঘ্রান ছড়ানো পর্যন্ত। 


২। টালা মসলা ঠান্ডা হলে ব্লেন্ডারে দিয়ে পছন্দসই মিহি গুঁড়ো করে নিন।


৩। শুকনো এয়ারটাইট পাত্রে সংরক্ষণ করুন এক-দুই মাস পর্যন্ত। 


৪। এরপর আবার তৈরি করে নিবেন।


৫। নিরামিষ রান্না, সবজির আইটেম কিংবা যেকোন মাংস রান্নাতে এই গরম মশলা ব্যবহারে খাবারের স্বাদ এবং সুগন্ধ দুটোই বহুগুণ বেড়ে যাবে☺️


🍀🍀😍#ইউনিক রেসিপি টিপস্ পেতে পেইজটি ফলো দিয়ে শেয়ার করে রাখতে পারেন ☘️☘️☘️🌶️


Jerin's  Kitchen & Vlog 


#tips #kitchentools #highlightseveryone #everyoneシ゚ #reelsviralシ #fypシ゚viralシ #highlightsシ゚ #fbreelsfypシ゚ #viralreels #fbreels #reelsvideo #fypシ゚ 

#reelsvideoシ #reelsfbシ #reelsfypシ #viralvideoシ #viralreelsシ

 #trendingreels #trandingreels 

 #viralvideochallenge #Bangladesh

আকাশবাণী কলকাতা গীতাঞ্জলি, (DTH বাংলা ও News on AIR Appও শোনা যাবে) অনুষ্ঠান সূচী

 আকাশবাণী কলকাতা গীতাঞ্জলি, (DTH বাংলা ও News on AIR Appও শোনা যাবে)

অনুষ্ঠান সূচী

প্রথম অধিবেশন

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৪, মঙ্গলবার

সকাল

৬.০০ সুভাষিত – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনা থেকে পাঠ 

৬.০৫ সঙ্গীতাঞ্জলি   

৬.৩০ আজকের চাষবাস – কথিকা – ‘পশ্চিমবঙ্গে স্কোয়াশ চাষের সম্ভাবনা’ বলবেন ডঃ তপন কুমার দলুই

৬.৪০ আপনার স্বাস্থ্য – কথিকা – ‘টনসিল ও এডিনয়েড গ্রন্থির সমস্যা’, বলবেন ডাঃ মনোজেন্দ্র নারায়ণ ভট্টাচর্য

৬.৪৫ প্রাত্যহিকী – উপস্থাপনায় শৈলেন চক্রবর্তী

৭.২৫ বাংলা সংবাদ 

৭.৩৫ স্থানীয় সংবাদ

৭.৪৫ রবীন্দ্রসঙ্গীত - শিল্পী শ্রাবণী নাগ

৮.০০ জানা অজানা – কথিকা – ত্রুপার, সংকলন – মানস ভট্টাচার্য

৮.০৫ গজল - শিল্পী সানন্দা ঘোষ মজুমদার

৮.২০ উত্তরণ - বিশেষভাবে সক্ষম বিশ্বজিৎ বর্মণের সাক্ষাৎকার, স্টুডিওর বাইরে থেকে রেকর্ড করে এনেছেন অরুশ্রী চট্টোপাধ্যায় 

৮.৩০ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠান – খেয়াল পরিবেশনায় নীলাঞ্জনা দত্ত ও সিলাঞ্জনা দত্ত, রাগ - টোড়ী

৯.০০ গানের ভেলা - উপস্থাপনায় শৈলেন চক্রবর্তী

৯.১৫ বাংলা সংবাদ  

৯.২৫ জেলার চিঠি

৯.৩০ গানের ভেলার পরবর্তী অংশ 

১০.০০ গানের ভেলা – উপস্থাপনায় হৈমন্তী দে

১১.০০ যুববাণী অনুষ্ঠান – ‘আড্ডায় অ্যাডভেঞ্চার’, উপস্থাপনায় সুভাষ বিশ্বাস এবং মেঘা মান্না

দুপুর

১২.০০ গানের ইন্দ্রধনু – অতুলপ্রসাদী, দ্বিজেন্দ্রগীতি ও রজনীকান্তের গান, উপস্থাপনায় অনিরুদ্ধ ঘোষ এবং শুক্লা রায়

১২.৩০ গ্রামীণ সংবাদ 

১২.৩৩ পরবর্তী অংশ গানের ইন্দ্রধনু

১.০০ হাওয়াইয়ান গীটার বাজিয়ে শোনাবেন শিল্পী মনমোহন প্রামাণিক

১.১৫ লোকগীতি – শিল্পী রবি অধিকারী

১.৩০ বাংলা সংবাদ  

১.৪০ স্থানীয় সংবাদ

১.৪৫ মাননীয়েষু – উপস্থাপনায় কৌশিক সেন

২:২০ আবহাওয়ার বিজ্ঞপ্তি 

২.৩০ সাঁওতালী অনুষ্ঠান 

৩.০০ প্রথম অধিবেশনের সমাপ্তি

৩.০০ ডি টি এইচ বাংলা পরিষেবা এবং এফ এম ১০৭ মেগাহার্টজে নাটক – ‘শ্যাম সাহেব’, রচনা - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, বেতার নাট্যরূপ- চন্দন ঘোষ, প্রযোজনা - সমরেশ ঘোষ

দ্বিতীয় অধিবেশন  

৫.০০ ক্রীড়াঙ্গন – উপস্থাপনায় শুভজিৎ সরকার

৫.৩০ বিদ্যার্থীদের জন্য (লাইফ ফোন ইন অনুষ্ঠান) - দ্বাদশ শ্রেণীর জন্য ইংরেজি পাঠ, বলবেন যাদবপুর বিদ্যাপীঠের শিক্ষিকা মিস্টুনী দত্ত

৬.০০ আবহাওয়ার বিজ্ঞপ্তি 

৬.০৫ সাঁওতালী অনুষ্ঠান – লোকগীতি পরিবেশনায় ফিলিপ মান্ডি ও সহশিল্পীবৃন্দ

৬.১০ সাঁওতালী সংবাদ   

৬.১৫ সাঁওতালী অনুষ্ঠান 

৬.৩৫ গ্রামীণ সংবাদ

৬.৪০ কৃষি কথার আসর – ‘সুন্দরবন কৃষ্টি মেলা ও লোকো সংস্কৃতি উৎসব’, এই বিষয়ে স্টুডিওর বাইরে থেকে রেকর্ড করে এনেছেন সুব্রত চক্রবর্তী 

৭:১০ তরজা গান – পরিবেশনায় শেখর কুমার মণ্ডল 

৭.৩০ সমীক্ষা – শিরোনাম – বর্ষ শেষে, বলবেন ডঃ মানস প্রতিম দাস

৭.৩৫ বাংলা সংবাদ 

৭.৫০ স্থানীয় সংবাদ

রাত 

৮.০০ খবরের আয়নায়

৮.১৫ শহর কলকাতা - স্টুডিওর বাইরে থেকে রেকর্ড করে এনেছেন অংশুমান চক্রবর্তী

৮.৩০ কথায় কাহিনী – ঝাপসা আলো, রচনা - উত্তম জানা, প্রযোজনা – আশিস গিরি

৮.৪৫ অর্থনীতির দুনিয়া - কথিকা – ‘ভারতীয় অর্থনীতিতে পরিষেবা খাতের ভূমিকা’, বলবেন অধ্যাপক সরোজ উপাধ্যায়

৯.০০ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠান - ঠুমরি-দাদরা পরিবেশনায় নীলাঞ্জনা দত্ত ও সিলাঞ্জনা দত্ত, মন্দ দাদরা, মিশ্র পিলু ঠুমরি, মানঝ খাম্বাজ ঠুমরি

৯.৩০ শ্রবণী - কথিকা - ১) রম্য রচনা, বলবেন - কেকা বসু দেব, ২) মুক্তগদ্য - অনিমেষ বৈশ্য

১০.০০ বর্ষ-শেষে বিশেষ অনুষ্ঠান: ‘রসে বসে পঁচিশ’, উপস্থাপনায় - অর্ণব চক্রবর্তী, প্রিয়াস্মা গঙ্গোপাধ্যায়, সৌরিক ঘোষ, সম্পূর্ণা চক্রবর্তী, সৈকত গুপ্ত, প্রিয়াশা চক্রবর্তী, রাহুল আচার্য, অর্পিতা পাল, ব্রতদীপ মুখোপাধ্যায়, পৌলমী বাগ, শুভদীপা চক্রবর্তী, সুভাষ বিশ্বাস, জয়মাল্য দেশমুখ, মৌলি সরকার, বীতশোক চক্রবর্তী, সহেলী মজুমদার ও  দেবজিৎ অধিকারী

১২.০০ দিল্লী কেন্দ্রের হিন্দী ও ইংরেজী সংবাদ 

১২.১০ অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা

* প্রয়োজনে শেষমুহুর্তে অনুষ্ঠানের পরিবর্তন হতে পারে *

বেশি শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে দিতে Share করুন


আকাশবাণী কলকাতা সঞ্চয়িতা, (DTH বাংলা ও News on AIR Appও শোনা যাবে)

অনুষ্ঠান সূচী

৩১ শে ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার

প্রথম অধিবেশন

সকাল

৬.১৫ সুবদ্ধসঙ্গীত – খেয়াল পরিবেশনায় পন্ডিত এ কানন, রাগ - বিলাওয়াল, গুর্জরি ও ভাঙ্কর

৬.২৫ রবীন্দ্র সঙ্গীত - শিল্পী শ্রাবণী নাগ

৬.৩৫ রামচরিত মানস - পর্ব ১৯

৬.৪৫ ভক্তিগীতি - শিল্পী সত্যশুভ সরকার

৭.১০ যুববানী অনুষ্ঠান – 'সুপ্রভাত', উপস্থাপনায় অঙ্কিতা ঘোষ

৭.৩০ শুভা সবেরে – উপস্থাপনায় পুনম সিং এবং শর্মিষ্ঠা ভট্টাচার্য

৮.৩০ লঘু সঙ্গীতের সুরে হাওয়াইয়ান গীটার বাজিয়ে শোনাবেন মনমোহন প্রামাণিক

৮.৫০ গজল - শিল্পী সানন্দা ঘোষ মজুমদার

৯.১০ রসধারা – উপস্থাপনায় পুনম সিং এবং শর্মিষ্ঠা ভট্টাচার্য

১০.১৫ তরানে পুরানে - উপস্থাপনায় পুনম সিং এবং শর্মিষ্ঠা ভট্টাচার্য

১০.৩০ অঞ্জুমন – উপস্থাপনায় সারফরাজ আহমেদ

১১.০০ পাশ্চাত্য সঙ্গীত – উপস্থাপনায় সিসিলিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

দুপুর

১২.০০ সুরভী - উপস্থাপনায় পুনম সিং এবং শর্মিষ্ঠা ভট্টাচার্য

১২.২০ পাশ্চাত্য সঙ্গীত – উপস্থাপনায় সিসিলিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

১.১০ পাশ্চাত্য সঙ্গীত - উপস্থাপনায় সিসিলিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

২.৩০ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠান – বাঁশি বাজিয়ে শোনাবেন পরমানন্দ রায়, রাগ - পটদীপ

 ৩.০০ প্রথম অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা 

দ্বিতীয় অধিবেশন

৫.১০ রবীন্দ্রসঙ্গীত - শিল্পী শ্রাবণী নাগ

৫.২০ উর্বশী - উপস্থাপনায় পপি নাগ

৬.১০ হিন্দি অনুষ্ঠান – উপস্থাপনায় পপি নাগ

৭.১০ লোকগীতি - শিল্পী রবি অধিকারী

৭.৩০ দর্পন - উপস্থাপনায় পপি নাগ

৮.০০ ছায়াছবির গান 

৮.১৫ নানা রঙের গান

৯.১৬ স্পটলাইট

১০.১০ পাশ্চাত্য সঙ্গীত -  কণ্ঠসঙ্গীত -প্রিয়াঙ্কা শর্মা

১০.৩০ পাশ্চাত্য সঙ্গীত - উপস্থাপনায় অভিষেক মন্ডল

১১.১০ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠান – সেতার বাজিয়ে শোনাবেন অয়ন সেনগুপ্ত, রাগ - বাগেশ্রী ও সোহিনী

১২.০০ দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গরুখোর পাঁচটি দেশ,,,,

 বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গরুখোর পাঁচটি দেশ 👇🌎


১.৫ নাং, ব্রাজিল 🇧🇷

একজন ব্রাজিলিয়ান বছরে ৩৫ থেকে ৩৮ কেজি গরুর মাংস খেয়ে থাকেন। 


২.৪ নাং,অস্ট্রেলিয়া 🇦🇺

একজন অস্ট্রেলিয়ান মানুষ বছরে ৩৭ থেকে ৪০ কেজি গরুর মাংস খেয়ে থাকেন। 


৩.৩ নাং,যুক্তরাষ্ট্র 🇺🇲

একজন আমেরিকান বছরে ৩৯ থেকে ৪২ কেজি গরুর মাংস খেয়ে থাকেন। 


৪.২নাং,জিম্বাবুয়ে 🇿🇼

একজন জিম্বাবুয়ের মানুষ বছরে ৪০ থেকে ৪৭ কেজি গরুর মাংস খেয়ে থাকেন। 


৫.১.নাং,আর্জেন্টিনা 🇦🇷

একজন আর্জেন্টাইন বছরে ৪৪ থেকে ৫০ কেজি গরুর মাংস খেয়ে থাকেন। 


উপরোক্ত সবগুলো দেশের থেকে বেশি গরুর মাংস খায় একজন ইন্ডিয়ান মুসলিম, যেহেতু ইন্ডিয়ায় মুসলিমরা সংখ্যালঘু তাই তারা অনেক নির্যাতনও হচ্ছে গরুর মাংস খেতে গিয়ে 😔


আর বাংলাদেশের কথা বলে লজ্জা দিবেন না 

একজন বাঙালি বছরে ৭ থেকে ১০ কেজি গরুর মাংস খেয়ে থাকেন, বেশিরভাগ মানুষের কিনার সামর্থ্য নাই তাই অনেকেই কুরবানির ঈদ ছাড়া খেতেও পারে না, আর সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আপনার আমার সোনার বাংলায় সবচেয়ে বেশি গরুর মাংসের দাম।

গরিব কেন সারা জীবন গরিব থাকে,,,,,,,,

 🔴গরিব কেন সারা জীবন গরিব থাকে🔴


আয় ৩ ধরনের হয় -

১. একটিভ ইনকাম

২. প্যাসিভ ইনকাম 

৩. পোর্ট ফলিও ইনকাম


🔴১. একটিভ  ইনকাম 🔴

নিজের সরাসরি পরিশ্রম ও সময় দিয়ে যা আয় হয় সেটাই এক্টিভ ইনকাম যেমন চাকরি কিংবা এমন কোন ব্যবসা যেটা আপনি যতক্ষন চালান ততক্ষন চলে। যেমন হতে পারে দোকান। বসে থাকেন ত ইনকাম হয় নইলে নাই। এক্টিভ ইনকাম সহজ ও কুইক বলে বেশিরভাগ মানুষই এই একটিভ ইনকাম এর দিকে ছোটে। নিজেকে একটা গন্ডির মধ্যে বেঁধে ফেলে। যদি একটা চাকরি পেতাম, যদি মাস এ এত টাকা ফিকস্ড স্যালারি  হত! আর এই সকল মানুষ খুব কমই আছে যারা মুলত ধনী হতে পারে । কারন সে তত টুকুই আয় করে যত টুকু পরিশ্রম করে। আর একটা মানুষের পক্ষে সর্বোচ্চ ১০-১৩ ঘন্টা পরিশ্রম করার সুযোগ থাকে। এর বেশি কখোনই সম্ভব না । ফলে একটা লিমিট থাকবেই সেটা আপনি যত বড় ডাঃ ইঞ্জিনিয়র কিংবা অভিনেতা হন । 


🔴২.প্যাসিভ  ইনকাম 🔴


আর যারা প্যাসিভ ইনকাম করেন তাদের কোন ইনকাম লিমিট নেই। কারন তাদের এই ইনকামটা তাকে ছাড়াই আসে। অর্থাৎ সে ঘুমে থাকলেও ইনকাম হয়। আর এই ইনকাম যারা করে তারাই মুলত এক সময় ধনী হয়ে ওঠে। কোন দিন অর্থ কষ্টে পড়তে হয় না। দোকান ভাড়া নিয়ে আবার ভাড়া দেয়া, বই লেখা, বাগান ভাড়া দেয়া, ফেসবুক, ইউটিউব বা ওয়েব সাইট থেকে আয়, আফিলিয়েট মার্কেটিং , সিপিএ এগুলো সবই প্যাসিভ ইনকাম। প্যাসিভ ইনকাম হুট করে শুরু হয় না, এর পিছনে একটা নির্দিষ্ট টাইম পর্যন্ত কাজ করতে হয় এরপর আয় আসতে থাকে। এই কষ্টের কারনে অধিকাংশ মানুষই প্যাসিভ ইকামে আগ্রহী নয় ফলে তাদের আর ধনী হয়ে ওঠা হয় না। তাই অর্থ কষ্টে না পরতে না চাইলে এক্টিভ ইনকাম থেকে টাকা বাচিয়ে ছোট ছোট প্যাসিভ ইনকাম এর উৎস গড়ে তুলুন এক সময় পার্মানেন্ট ধনী হয়ে যাবেন।


🔴৩. পোর্ট ফলিও ইনকাম🔴


আর পোর্ট ফলিও ইনকাম হল যাদের টাকা আছে তারা সেই টাকা ইনভেস্ট করে আয় করে।  এই ইনভেস্ট এ সাধানত তাদের নিজেদের কোন কাজ করতে হয় না। যেমনঃ বিজনেস ফান্ডিং, শেয়ার বাজারে কিংবা মিচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ । প্রায়সকল ধনী মানুষ ই এই কাজটা করে কারন ব্যাংক এ টাকা রাখা মানে আপনার আসল দিন দিন কমবে দিনে দিনে গরিব হবেন। কারণ সময়ের সাথে অর্থের ভ্যালু কমে।


সাধারনত মানুষজন প্যাসিভ কিংবা পোর্টফ্লিও ইনকামে আগ্রহী না। এই কারনেই ২০-৮০ সিস্টেম কাজ করে। দেশের ২০ ভাগ মানুষ ধনী, সকল সম্পদই ২০ ভাগ মানুষের কাছেই। এখন যে প্রফেশনেই আছেন না কেন চেস্টা করুন প্যাসিভ ইনকাম শুরু করতে নইলে অই ৮০ ভাগ মানুষের হয়েই মরতে হবে।

স্ত্রীকে কেন ভালো লাগে না পুরুষের??সকল পুরুষের পড়া উচিত,,,,

 📌স্ত্রীকে কেন ভালো লাগে না পুরুষের??সকল পুরুষের পড়া উচিত।🙏👇(আমি ১০০% সিওর আপনি যদি আমার এই পোস্টটি পড়েন খুব দ্রুত আপনি আপনার wife কে অনেক ভালোবাসবেন)


আমার স্ত্রী দেখতে সুন্দর । তবু কেনো জানি তাকে এখন আর ভালো লাগে না। আমাদের বিয়ে হয়েছে আট বছর হলো। পাঁচ বছর বয়সী একটা মেয়ে সন্তান রয়েছে। 👇


অফিস থেকে বেরিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে চলে যাই। ফিরি রাত করে। কারণ বাসায় যেতে ইচ্ছে করে না। অথচ বিয়ের শুরুর দিকে শুধুমাত্র স্ত্রীর টানে অফিস থেকে বেরিয়ে ছুটতাম বাসার দিকে। অফিস না থাকলে সারাদিন বাসায় থাকতাম। ওকে নিয়ে ঘুরতে যেতাম। কী যে ভালো লাগতো স্ত্রীকে তখন!👇


আর এখন ওর দিকে তাকাতে ইচ্ছে করে না। কথা বলতে ইচ্ছে করে না। ও আশেপাশে থাকলে বিরক্ত লাগে। 👇


বাইরে থাকা অবস্থায় ওর ফোন এলে ধরি না। মেসেজ পাঠালে দেখি না। আর বাসায় থাকা অবস্থায় ও কিছু বললে অনাগ্রহের সাথে হু হা করে চুপ করে থাকি। 👇


আর রাতে যদি ও কাছে আসতে চায় আমি রূঢ় ভাষায় বলি, "জ্বালাতন করো না। সারাদিন অফিস করে ক্লান্ত হয়ে আছি। ঘুমাতে দাও।"👇


আসলে ক্লান্তি ট্লান্তি কিছু না। স্ত্রীকে ভালো লাগে না এটাই মূল কথা। 👇


কেনো এমন হচ্ছে বুঝতে পারছি না। এই সমস্যা যে একা আমার হচ্ছে তা নয়। আমি আরো অনেক পুরুষের মধ্যে এই সমস্যা দেখেছি। তাদের কেউ কেউ স্ত্রীর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে পরকীয়া করছে। আমি নিজে এখনো পরকীয়া করি নি। তবে করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। 👇


কেনো পুরুষেরা একটা সময় স্ত্রীর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এটা জানার জন্য আমি যতো পুরুষের সাথে কথা বলেছি তাদের সবার উত্তর ছিলো এরকম, "এটাই তো স্বাভাবিক। এক জিনিস কী আর বেশিদিন ভালো লাগে?"👇


তাদের উত্তরটা আমার কাছে সঠিক মনে হয় নি। কারণ এক জিনিস বেশিদিন ভালো না লাগা যদি স্বাভাবিক হতো তাহলে স্ত্রীদের ক্ষেত্রেও সেটা হতো। কিন্তু তা তো হচ্ছে না। স্ত্রীরা বিয়ের যতো বছর পরই হোক তারা ঠিকই আগ্রহ নিয়ে স্বামীর সাথে কথা বলতে চায়। ঘুরতে যেতে চায়। মিলিত হতে চায়। 👇


একটা সময় আমার মনে হলো এটা কি পুরুষের কোনো মানসিক সমস্যা? ডাক্তার দেখালে কি ভালো হয়ে যাবে? 👇


আমি দ্বিধান্বিত মনে একদিন গোপনে এক মানসিক ডাক্তারের কাছে গেলাম। 👇


ডাক্তার আমার সমস্যার কথা শোনার পর বললেন, "আপনি কি আল্লাহকে বিশ্বাস করেন?"👇


বললাম, "জী করি।"👇


"আল্লাহর একটা নির্দেশের কথা আপনাকে বলবো। যদি মানতে পারেন তাহলে আপনার এই সমস্যা দূর হয়ে যাবে। কোনো ওষুধপত্র লাগবে না। গ্যারান্টি দিচ্ছি।"👇


"কী সেটা?"


"সুরা আন নূরে আল্লাহ বলেছেন, 'হে নবী, পুরুষদের বলে দাও, তারা যেনো নিজেদের দৃষ্টিকে সংযত করে রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানসমূহের হেফাজত করে। এটা তাদের জন্য বেশি পবিত্র পদ্ধতি'।"👇


এরপর ডাক্তার দৃঢ় কণ্ঠে বললেন, "আল্লাহর এই নির্দেশ আপনি এক মাস পালন করুন। তারপর নিজেই পরিবর্তন বুঝতে পারবেন।"👇


সন্দেহ নিয়ে বললাম, "এটাতেই কাজ হয়ে যাবে?"


ডাক্তার হেসে বললেন, "অবশ্যই হবে। তবে আমাকে কথা দিতে হবে আল্লাহর এই নির্দেশ আপনি নিখুঁত ভাবে পালন করবেন। কোনো ফাঁকি দেবেন না।"👇


"কথা দিলাম। ফাঁকি দেবো না। নিখুঁত ভাবে পালন করবো।"👇


শেষে ডাক্তার বললেন, "এক মাস পর আমার কাছে আসবেন।"👇


আসবো কথা দিয়ে ডাক্তারের চেম্বার থেকে বেরুলাম। চেম্বার থেকে বেরুনোর সময় দেখলাম একটা যুবতী রূপবতী মেয়ে একজন বৃদ্ধাকে নিয়ে ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকছে। মেয়েটার দেহ দুর্দান্ত আকর্ষণীয়। আমি লোলুপ দৃষ্টিতে মেয়েটার পুরো অঙ্গের দিকে তাকাতে গেলে আচমকা মনে পড়ে গেলো আল্লাহর নির্দেশের কথা। আমি সঙ্গে সঙ্গে চোখ সরিয়ে নিলাম। এবং মাথা নিচু করে হেঁটে চলে গেলাম। এরপর পথে ঘাটে যদি কোনো মেয়ের দিকে চোখ পড়তো তবে চোখ সরিয়ে নিতাম। দৃষ্টি নত করে হাঁটতাম।👇


এভাবে দুদিন যাওয়ার পর অনুভব করলাম নারী শরীর দেখার জন্য ভেতরে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। কিন্তু তখনো স্ত্রীর প্রতি টান বোধ করি নি। অস্থিরতা দূর করার জন্য মোবাইল হাতে নিলাম। এবং পর্ণ দেখার সিদ্ধান্ত নিলাম। তারপর হস্তমৈথুন করে নিজেকে শীতল করবো।👇


গুগলে পর্ণ ওয়েবসাইটের নাম লিখে সার্চ করার মুহূর্তে আল্লাহর নির্দেশের কথা মনে পড়ে গেলো। সাথে সাথে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলাম। এবং মোবাইল রেখে দিলাম। 👇


এর পরদিনের কথা বলি। আপনাদের বলেছিলাম, আমি পরকীয়া না করলেও পরকীয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ঘটনা হলো, আমার এক বন্ধুর পরিচিত এক মেয়ের সাথে গোপন এক সম্পর্ক গড়ে উঠতে শুরু করেছে। মেয়েটি প্রবল যৌন আকর্ষণীয়। ঠিক করেছিলাম মেয়েটিকে নিয়ে কয়েকদিনের জন্য কক্সবাজার থেকে ঘুরে আসবো। আমি যে বিবাহিত এটা মেয়েটিকে বলি নি। 👇


সেই মেয়েটি ঐদিন সন্ধ্যায় ফোন দিলো। আমি তখন অফিস থেকে বেরিয়েছি। ওর ফোন দেখে মনটা খুশিতে ভরে উঠলো। কিন্তু ফোনটা ধরার সময় মনে পড়লো আল্লাহর নির্দেশের কথা। তৎক্ষণাৎ মনকে শক্ত করলাম। এবং ফোনটা ধরলাম না। মেয়েটা যতোবারই ফোন দিলো ধরলাম না।👇


এভাবে দৃষ্টি সংযত রেখে এবং লজ্জাস্থান হেফাজত করে পনেরো দিন কাটানোর পর লক্ষ্য করলাম আমার মাথায় স্ত্রীর ভাবনা ছাড়া আর কিছু কাজ করছে না। 


সেদিন অফিস থেকে বেরিয়ে বন্ধুদের আড্ডায় না গিয়ে  উন্মাদের মতো ছুটলাম বাসার দিকে। 👇


বাসায় ঢুকেই ব্যাকুল হয়ে ডাকলাম, "এষা, কোথায় তুমি?"👇


স্ত্রী তখন রান্নাঘরে ছিলো। আমার চিৎকার শুনে দৌড়ে এলো। কারণ স্ত্রীর নাম ধরে বহুদিন ডাকি নি।


ও আশ্চর্য হয়ে বললো, "কী হয়েছে তোমার? ডাকছো কেনো?"👇


সে কথার জবাব না দিয়ে কাঁধ থেকে অফিসের ব্যাগ ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে স্ত্রীকে ঝট করে পাঁজা কোলে তুলে নিলাম। বিয়ের শুরুর দিকে যেমন করতাম।👇


সে ততোক্ষণে আমার উদ্দেশ্য বুঝে গেছে। 


সে লজ্জায় লাল হয়ে বললো, "ছেলেটা ঘুমাচ্ছে। ও জেগে যাবে। কী করো, কী করো?"👇


স্ত্রীকে পাঁজা কোলে করে রুমে যেতে যেতে আচ্ছন্ন স্বরে বলতে লাগলাম, "ভালোবাসি এষা। ভালোবাসি।"


পরদিন ডাক্তারের কাছে গেলাম। 👇


ডাক্তার বললেন, "এখনো তো এক মাস পার হয় নি।"


হেসে বললাম, "সমস্যা দূর হয়ে গেছে। আমি এখন বুঝতে পেরেছি কেনো পুরুষেরা স্ত্রীর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে? অতীতের ভুল আর কখনো করবো না।"👇


ডাক্তার বললেন, "স্বাগতম আপনাকে। আপনার সংসারের জন্য আন্তরিক শুভ কামনা রইলো।"


ডাক্তারের চেম্বার থেকে বেরিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে খুশিয়াল গলায় বললাম, "ধন্যবাদ আল্লাহ। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।"

আমার মনে হয় এই সমস্যাটা শুধু আমার না আমাদের দেশের প্রায় ৯০% পুরুষেরই হয়। আমি আমার নিজের লাইফের টা শেয়ার করলাম আপনাদের কারো লাইফে যদি এমন হয়ে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন🙏👍

লোকটা মারা যাওয়ার আগে তার নাতিকে তিনটা উপদেশ দিয়ে গেল,,,,,

 লোকটা মারা যাওয়ার আগে তার নাতিকে তিনটা উপদেশ দিয়ে গেল....😴😴😴

১. ঘরের বউকে কখনও মনের কথা বলবি না!!🤐😶

২. বাড়ির সামনে কখনও বড়ই এর গাছ লাগাবি না!!✌😑

৩. পুলিশের সাথে কখনও বন্ধুত্ব করবি না!!🙃🤐

দাদা মারা যাওয়ার পর নাতির মাথায় সারাক্ষণ একটাই চিন্তা। দাদা কেন এই কাজগুলো নিষেধ করে গেল? নাতির মনে একটা সময় জেদ চেপে বসলো, সে ভাবলো দাদার নিষেধ করা কাজগুলো সে করবে, এবং দেখবে কী ঘটে!😴😴🤥

যেই কথা সেই কাজ। সে সর্বপ্রথম একজন পুলিশের সাথে ইনিয়ে বিনিয়ে বন্ধুত্ব করলো। মাঝে মাঝেই সেই পুলিশ বন্ধুকে বাড়িতে নিয়ে এসে দাওয়াত খাওয়ানো শুরু করলো। পাশাপাশি বাড়ির সদর দরজার সামনে একটি বড়ই গাছ লাগালো। বাকি থাকলো বউয়ের কাছে মনের কথা বলা...🤭🤭🤭

সে বসে বসে প্লান করলো, বউকে মনের কোন কথাটা বলা যায়...😑

সে বাজারে গেল। তিনটা ডাব কিনলো। তিনটা গামছা কিনলো। তারপর দোকান থেকে কিছু লাল রং কিনলো। তারপর বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে পুকুরঘাটে বসে ডাবের উপর লাল রং মেশালো। রং মেশানোর পর গামছা দিয়ে ডাব এমনভাবে পেচিয়ে ফেললে যাতে দেখে মনে হয় গামছার ভিতরে মানুষের কাটা মাথা...🥴🥴🥴

তারপর দৌড়াতে দৌড়াতে বাড়িতে এসেই ভং ধরে বউকে বললো, আমি তো তিনটা মানুষকে খুন করে ফেলছি! তুমি এই কথা কাউকে বইলো না প্লিজ...😰🙏

তারপর স্বামী স্ত্রী দুজনে মিলে একটা গর্ত করলো, সেই গর্তে তিনটা ডাব ( পড়ুন কাটা মাথা ) পুঁতে রাখলো। তারপর অনেক দিন কেটে গেল। কোনো প্রকার সমস্যায় হল না...😯😯

নাতি বসে বসে দাদার কথা ভাবছে আর হাসছে। শালা বুইড়া সবই তো করলাম। কিছুই তো হল না। হা হা হা....😂🤣

সবকিছুই ঠিকঠাক যাচ্ছিলো। ব্যাপারটা একসময় সে ভুলেই গেল। হঠাৎ একদিন বউয়ের সাথে তার প্রচুর ঝগড়া হল। রেগে গিয়ে বউ বললো, তোর গোপন কথা ফাঁস করে দিবো ওয়েট...🥴😐😐

বউ তখন স্বামীর পুলিশ বন্ধুকে ফোন করে বাড়িতে ডাকলো...🤒

পুলিশ আসার পর লোকটির বউ পুলিশকে গর্তের কাছে নিয়ে গিয়ে বললো, এখানে তিনজন মানুষের মাথা আছে, আমার স্বামী এদের খুন করছে...

গর্ত থেকে পুলিশ গামছা পেঁচানো তিনটা মুন্ডু বের করলো। গামছা খুলে দেখা গেল, তিনটা ডাব! বউ তখন বললো, এখানে মানুষের মাথা ছিল, আমার স্বামী মাথা চেইঞ্জ করে ডাব পুঁতে রাখছে!

 আমি সাক্ষী...

"ঢাবির রিটেনের জন্য রিটেন সামিট ও জাবির আই-কিউ এর জন্য আই-কিউ সামিট পড়বেই"।

পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে বললো, এরেস্ট হিম!

লোকটি দৌড় দিতে যাবে ঠিক তখনই সদর দরজায় বড়ই গাছের কাটা পায়ে লেগে লোকটি পড়ে গেল। পালাতেও পারলো না...

পুলিশ তাকে ধরে ফেললো, মারতে মারতে জিজ্ঞেস করলো, বল! মুন্ডু গুলা কোথায় লুকিয়ে রাখছিস?

লোকটা আকাশের দিকে মুখ করে কাঁদতে কাঁদতে বললো, দাদা আমারে বাঁচাও, আমার শিক্ষা হয়ে গেছে!! আমারে বাঁচাও!!😬😬

এক গ্রামে এক বৃদ্ধ মালী বাস করতেন। তিনি তার জীবনের প্রায় সবটাই গাছপালা লাগিয়ে এবং তাদের যত্ন নিয়ে কাটিয়েছেন

 এক গ্রামে এক বৃদ্ধ মালী বাস করতেন। তিনি তার জীবনের প্রায় সবটাই গাছপালা লাগিয়ে এবং তাদের যত্ন নিয়ে কাটিয়েছেন। তার বাগান ছিল গ্রামের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা। বাগানের প্রতিটি গাছ তার নিজের সন্তানের মতো ছিল।


তার বাগানে একটি সাদা বক বাস করত। বকটি প্রতিদিন সকালে বাগানের লতা-পাতার ফাঁকে পোকামাকড় খেত এবং বাগানকে রোগমুক্ত রাখত। বৃদ্ধ মালী তাকে খুব ভালোবাসতেন এবং তার জন্য নিয়মিত খাবার রাখতেন। বকটি মালীকে দেখলেই তার চারপাশে উড়তে শুরু করত। তাদের সম্পর্ক ছিল যেন একে অপরের প্রতি অগাধ বিশ্বাসের।


একদিন সকালে মালী বাগানে কাজ করছিলেন। তখন তিনি দেখতে পান, তার প্রিয় একটি আমগাছের গোড়ায় মাটি খুঁড়ে যেন কেউ গর্ত করেছে। তিনি মনে করলেন, এটি নিশ্চয়ই কোনো বেজি বা বড় পোকা করেছে। গাছটি শুকিয়ে যাওয়ার ভয়ে তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েন।


ঠিক তখনই বকটি তার ডানা ঝাপটাতে ঝাপটাতে এসে মাটির গর্তের কাছে বসে। মালী দেখলেন, বকটি যেন গর্তটি আরও বড় করার চেষ্টা করছে। এটি দেখে মালী খুব রেগে গেলেন। তিনি ভাবলেন, বকটি হয়তো তার গাছের ক্ষতি করছে। রাগে তিনি একটি কাঠি হাতে তুলে নিলেন এবং বকটির দিকে তেড়ে গেলেন।


বকটি ভয়ে উড়ে গাছের ডালে গিয়ে বসে, কিন্তু কিছুক্ষণ পর আবারও নিচে নামে এবং একই গর্তের কাছে ফিরে যায়। এবার মালী আর সহ্য করতে পারেননি। তিনি কাঠি দিয়ে বকটির ডানা আঘাত করেন। বকটি কাতর শব্দ করে উড়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু আহত হয়ে মাটিতে পড়ে যায়।


এতদিনের সঙ্গী বকটির এই অবস্থা দেখে মালী হতভম্ব হয়ে যান। তিনি বুঝতে পারেন, তার রাগ তাকে কত বড় ভুল করিয়েছে। বকটি রক্তাক্ত অবস্থায় নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে।


মালী গর্তের দিকে তাকিয়ে দেখেন, সেখানে একটি বিষধর সাপ বসে আছে, যা হয়তো আমগাছের গোড়া নষ্ট করার পাশাপাশি তাকে আক্রমণও করতে পারত। বকটি আসলে গর্তের সাপটিকে তাড়ানোর চেষ্টা করছিল। মালী এক লাঠি দিয়ে সাপটিকে মেরে ফেলেন, কিন্তু ততক্ষণে বকটি মারা গেছে।


মালী দীর্ঘ সময় ধরে বকটির নিথর দেহ হাতে নিয়ে বসে থাকেন। তার হৃদয় অনুশোচনায় ভরে ওঠে।


শিক্ষা:

এই গল্প আমাদের শেখায় যে, রাগ ও ভুল বোঝাবুঝি মানুষকে অনুশোচনায় ডুবিয়ে দিতে পারে। প্রিয়জনের কাজের গভীর অর্থ বোঝার চেষ্টা না করে তাদের ওপর রাগ করা কখনোই সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে না।

কপি পোস্ট

ইলিয়াস কাঞ্চন (১৯৫৬) –

 ইলিয়াস কাঞ্চন (১৯৫৬) –


আমাদের চলচ্চিত্রের আশি ও নব্বইয়ের দশকের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা,প্রযোজক ও পরিচালক। 

প্রকৃত নাম ইদ্রিস আলী।

জন্ম কিশোরগঞ্জে।

পিতা হাজী আবদুল আলী ও মাতার নাম সরুফা খাতুন।

সুভাষ দত্তের আবিষ্কার ইলিয়াস কাঞ্চন। তাঁর বসুন্ধরা (১৯৭৭) ছবিতে ববিতার বিপরীতে প্রথম নায়ক হয়ে আসেন।তারপর থেকে এখন পর্যন্ত ২৫৩ টি ছবিতে নানান চরিত্রে অভিনয় করেছেন।অনেক হিট ছবির নায়ক তিনি। হয়েছেন দর্শকনন্দিত। সারাজীবনের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন দুইবার(পরিণীতা ও শাস্তি ছবির জন্য) জাতীয় চলচ্চিত্রের শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতার পুরস্কার। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্রের আজীবন সম্মাননাও।২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে পেয়েছেন একুশ পদক।

ব্যক্তিগত জীবনে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন জাহানারা কাঞ্চনকে।এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রীর মৃত্যু ঘটে।তারপর থেকে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের লক্ষে নিরাপদ সড়ক চাই নামে একটি সংগঠনের মাধ্যমে দেশব্যাপী কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।প্রয়াত নায়িকা দিতিকে দ্বিতীয়বারের মত বিয়ে করেছিলেন।সে বিয়েও টেকেনি।মিরাজুন মঈন জয় ও ইশরাত জাহান ইমা নামে দুটি সন্তান রয়েছে।

বাবা আমার বাবা ও মায়ের স্বপ্ন নামে দুটি ছবি পরিচালনা করেছেন।

কিশোর মুক্তিযোদ্ধা, নিরাপদ সড়ক চাই এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাবেক সভাপতির প্রতি আমাদের পক্ষ থেকে রইল নিরন্তর শুভেচ্ছা।


কার্টেসি – গোলাম সারওয়ার

নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায় __সৈয়দ শামসুল হক।

 নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়

__সৈয়দ শামসুল হক।


নিলক্ষা আকাশ নীল, হাজার হাজার তারা ঐ নীলে অগণিত আর

নিচে গ্রাম, গঞ্জ, হাট, জনপদ, লোকালয় আছে ঊনসত্তর হাজার।

ধবল দুধের মতো জ্যোৎস্না তার ঢালিতেছে চাঁদ-পূর্ণিমার।

নষ্ট খেত, নষ্ট মাঠ, নদী নষ্ট, বীজ নষ্ট, বড় নষ্ট যখন সংসার

তখন হঠাৎ কেন দেখা দেয় নিলক্ষার নীলে তীব্র শিস

দিয়ে এত বড় চাঁদ?


অতি অকস্মাৎ

স্তব্ধতার দেহ ছিঁড়ে কোন ধ্বনি? কোন শব্দ? কিসের প্রপাত?

গোল হয়ে আসুন সকলে,

ঘন হয়ে আসুন সকলে,

আমার মিনতি আজ স্থির হয়ে বসুন সকলে।

অতীত হঠাৎ হাতে হানা দেয় মানুষের বন্ধ দরোজায়।

এই তীব্র স্বচ্ছ পূর্ণিমায়

নুরুলদীনের কথা মনে পড়ে যায়।

কালঘুম যখন বাংলায়

তার দীর্ঘ দেহ নিয়ে আবার নূরলদীন দেখা দেয় মরা আঙিনায়।


নূরলদীনের বাড়ি রংপুরে যে ছিল,

রংপুরে নূরলদীন একদিন ডাক দিয়েছিল

১১৮৯ সনে।

আবার বাংলার বুঝি পড়ে যায় মনে,

নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়

যখন শকুন নেমে আসে এই সোনার বাংলায়;

নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়

যখন আমার দেশ ছেয়ে যায় দালালেরই আলখাল্লায়;

নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়

যখন আমার স্বপ্ন লুট হয়ে যায়;

নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়

যখন আমার কণ্ঠ বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যায়;

নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়

যখন আমারই দেশে এ আমার দেহ থেকে রক্ত ঝরে যায়

ইতিহাসে, প্রতিটি পৃষ্ঠায়।


আসুন, আসুন তবে, আজ এই প্রশস্ত প্রান্তরে;

যখন স্মৃতির দুধ জ্যোৎস্নার সাথে ঝরে পড়ে,

তখন কে থাকে ঘুমে? কে থাকে ভেতরে?

কে একা নিঃসঙ্গ বসে অশ্রুপাত করে?

সমস্ত নদীর অশ্রু অবশেষে ব্রহ্মপুত্রে মেশে।

নূরলদীনের কথা যেন সারা দেশে

পাহাড়ী ঢলের মতো নেমে এসে সমস্ত ভাসায়,

অভাগা মানুষ যেন জেগে ওঠে আবার এ আশায়

যে, আবার নূরলদীন একদিন আসিবে বাংলায়,

আবার নূরলদীন একদিন কাল পূর্ণিমায়

দিবে ডাক, “জাগো, বাহে, কোনঠে সবায়?”


ছবির কপিরাইট :

A Freedom fighter in 1971: Photographed by the French photographer Anne de Henning

চার্লি চ্যাপলিন 💕

 চার্লি চ্যাপলিন 💕

১৯৭২ সালে ৮৩ বছর বয়সে যখন অস্কার নিতে মঞ্চে ওঠেন , টানা বারো মিনিট হাততালির ঝড় বয়ে যায় অস্কার মঞ্চে। অস্কারের ইতিহাসে সেটাই ছিল দীর্ঘতম অভ্যর্থনা। আবেগে প্রায় কিছুই তিনি বলতে পারেননি সে দিন | 


ব্রিটিশ এই কিংবদন্তি মাত্র ১৮ বছর বয়সে ইংল্যান্ডে কুড়ানো তুমুল জনপ্রিয়তাকে সঙ্গী করে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেই দেশ কত চেয়েছে তাকে নাগরিকত্ব দিতে। তিনি নেননি। তিনি কখনই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে চাননি। পরে যুক্তরাষ্ট্র একসময় 'কমিউনিস্ট' বলে 'গালি দিয়ে' তার জন্য দরজা বন্ধ করে দেয়। তাই বাকি জীবন কাটানোর জন্য তিনি বেছে নিয়েছিলেন সুইজারল্যান্ডকে। 


যখন খ্যাতির শীর্ষে তখন একবার দুই দিনের জন্য জন্মভূমি ইংল্যান্ডে গেলেন। আর এই সময়ের মধ্যে ঘটে গেল অবাক কাণ্ড। মাত্র দু’দিনে তাঁর কাছে প্রায় ৭৩ হাজার চিঠি আসে !


তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন, তাঁর কাছে সৌন্দর্য মানে নর্দমায় ভেসে যাওয়া একটা গোলাপ ফুল। এই যে বীভৎস দ্বন্দ্ব থেকে সৃষ্টি হওয়া সৌন্দর্য, এখানেই বাস্তবতার সব নিষ্ঠুর দরজা খুলে যায়। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি দুঃসহ শৈশব বয়ে নিয়ে বেড়িয়েছেন। যেখানে তাঁর মাতাল বাবা, মাকে নির্যাতন করত ছোট্ট শিশুটির সামনেই। একসময় সেই বাবা মাকে ছেড়ে যায়, তাতে সামান্য সময়ের জন্য হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন । কিন্তু কতক্ষণের জন্য? পরেরবার খিদে লাগার আগেপর্যন্ত! 


মা কখনও সস্তা নাটকে অভিনয় করতেন, কখনও সেলাই করতেন, কখনও বা মা–ছেলে মিলে ভিক্ষা করতেন। কখনও নরম নিষ্পাপ হাতে দিব্যি চুরি করতেন। এর মাঝেই অসুখে পড়ে ভুগে মারা যান মা। আর তাঁর নির্বাক কমেডি নাড়া দিতে থাকে সমগ্র ইংল্যান্ডকে। তাই তো তিনি বলেছেন, সত্যিকারের কমেডি তখনই করা যায়, যখন নিজের সব দুঃখ, বঞ্চনা সফলভাবে গিলে ফেলা যায়। 


আর তাঁর জনপ্রিয়তা ?


রাশিয়ার এক ভক্ত নভোবিজ্ঞানী তাঁর আবিষ্কৃত উপগ্রহের নাম রাখেন ৩৬২৩ চ্যাপলিন ! আর এদিকে জাঁদরেল চলচ্চিত্র নির্মাতা জঁ লুক গদার চ্যাপলিনকে তুলনা করেছিলেন লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির সঙ্গে | 


তিনি কমেডিয়ান নন, অভিনেতা নন, সব ছাপিয়ে তিনি মহান শিল্পীর ঢিলেঢালা কোট গায়ে এক তুখোড় বিপ্লবী। তিনি চার্লি চ্যাপলিন |


- সংগৃহীত

বাংলা চলচ্চিত্রের এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা লিমা।যিনি অমর নায়ক সালমান শাহ্ - এর সাথে জুটি

 🌺বাংলা চলচ্চিত্রের এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা

লিমা।যিনি অমর নায়ক সালমান শাহ্ - এর সাথে জুটি

বেঁধে ১৯৯৪ সালে 'প্রেমযুদ্ধ' ও ১৯৯৫ সাকে 'কন্যাদান'

সিনেমায় সাবলীল অভিনয় করেছেন। তিনি নিজেকে

ঢালিউডের প্রথম সারিতে নিয়েছিলেন।কিন্তু অশ্লীলতা

যখন চরম মাত্রায় পৌঁছেছিল, তখন নিজেকে সিনেমা থেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন।এখন অবশ্য বোনের সংসার

নিয়ে বেশ সুখেই আছে।ব্যক্তি জীবনে আজও বিয়ের

পিঁড়িতে আবদ্ধ হননি সুপারহিট এই নায়িকা।অভিনেত্রী 

লিমা বোনের ৩ টি সন্তানসহ ঢাকার বারিধারায় থাকে।


♦️চিত্রনায়িকা লিমা অভিনীত চলচ্চিত্রের তালিকা :


১। প্রেমযুদ্ধ (সালমান শাহ্)

২। কন্যাদান (সালমান শাহ্)

৩। সতর্ক-শয়তান (রুবেল)

৪। লড়াই (রুবেল)

৫। সুখের আগুন (রুবেল)

৬। নীল সাগরের তীরে (রুবেল)

৭। ক্ষমতার লড়াই (রুবেল)

৮। গরীবের সংসার (শাহীন আলম)

৯। বনের রাজা টারজান

১০। হাবিলদার 

১১। ঘরের শত্রু (রুবেল)

১২। দুঃসাহস (রুবেল)

১৩। প্রেমগীত (বাপ্পারাজ ও ওমর সানী)


©️ রহমান মতি

উল্টো দেশে উল্টো প্রথা  কলমে - রাহিবুল মোল্লা    তারিখ - 30. 12. 24

 উল্টো দেশে উল্টো প্রথা

 কলমে - রাহিবুল মোল্লা  

 তারিখ - 30. 12. 24


 উল্টো দেশে উল্টো প্রথা

 উল্টো রীতি-নীতি।

 সত্যের চেয়েও মিথ্যা সেথা 

 প্রাধান্য পাই বেশি।

 ন্যায়ের সাথে কেউ থাকেনা 

 অন্যায় ভূরি ভূরি।

 গুরুত্বহীন সত্যবাদী সব 

 দুর্বল কম-বেশি।

 ক্ষমতাশীল মিথ্যাবাদী দল 

 চেঁচাই বেশি বেশি।


 উল্টো দেশে উল্টো প্রথা 

 উল্টো রীতি-নীতি।

 প্রজার পেটে থাকলেও ক্ষুধা 

 মুখে বাধ্য হাসি।

 প্রতিবাদ কখনো হয় না সেথা 

 হোক না যতই ফাঁসি।

 আন্দোলনে নামলে প্রজা  

 হবে-ই দেশদ্রোহী।

 ক্ষমতার জোরে বিচার ব্যবস্থা 

 পাল্টাই রাতারাতি।


 উল্টো দেশে উল্টো প্রথা 

 উল্টো রীতি-নীতি।

 মূর্খরা সব পণ্ডিত সেথা 

 করে দাপাদাপি।

 অহিংসার চেয়ে হিংসা সেথা 

 ছড়ায় বেশি বেশি।

 শিক্ষিতরা বেজায় বোকা

 চলে চুপি চুপি।

 ভন্ডরা সব সাধু সেথা 

 নেশায় থাকে ডুবি।


 উল্টো দেশে উল্টো প্রথা 

 উল্টো রীতি-নীতি 

 রাজার পায়ে সোনার জুতা 

 হিরেই মোড়া বাড়ি।

 প্রজার পেটে ভাত জোটে না  

 নেই বাড়ি, গাড়ি।

 অবৈধ টাকায় দেশের নেতা 

 করছে বিলাসী।

 সরকারী সব কর্মকর্তা 

 ঘুষ পেলে হয় খুশি।

আমি হেলাল হাফিজ বলছি জান্নাতুল মেহেকা মুন্নী  ২৩/১২/২০২৪

 আমি হেলাল হাফিজ বলছি

জান্নাতুল মেহেকা মুন্নী 

২৩/১২/২০২৪


হেলেন, 

আমি তোমার সকল অভিযোগের পাতাগুলোকে অভিমান বলে ধরে নিলাম। 

কিন্তু আমি প্রেমিক হতে পারিনি এ অপবাদ মানতে পারলাম না। 


আমি যদি ভালো সন্তান হতাম, আমার একটি সংসার হতো।  আমার বাবা আমার যাযাবর জীবনের দুশ্চিন্তা নিয়ে পৃথিবী ছাড়তেন না। 


আমি যদি ভালো ভাই হতাম, আমার ভাইয়ের বিপদে ঢাল হয়ে দাঁড়ানোর জন্য একজন ভাতিজা থাকতো। তাঁকে দুর্বল একটি জীবন দিতাম না। 

আমি যদি ভালো বন্ধু হতাম আমার নিঃসঙ্গতায় জীবন যেত না! 


হেলেন, 

পৃথিবী পরাজিত প্রেমশক্তির কাছে। কিন্তু ক্ষুধার কাছে প্রেম পরাজিত এটা বোধ হয় তুমি জানো না। সেদিনের নিরবতায় তুমি ব্যর্থতা দেখলেও আমি আমাদের ভবিষ্যৎ দেখেছিলাম। একটা সংসার যেখানে অভাব আমাদের সুখ ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে। 

আমি একজন স্বামী যার শরীরের কোথাও, তোমার চোখে এক-ফোঁটা সম্মান নেই। 

বেকার প্রেমিকের মুখের বুলি প্রেম হলেও, 

বেকার স্বামীর প্রেম মনে হয় ছলনা। এটা বোধ হয় তুমি জানো না। 

আমি স্বামী হতে গিয়ে প্রেমিককে হত্যা করতে চাইনি বলেই, সুখের নৌকায় তুলে দিয়েছিলাম তোমাকে। অথচ আজ নির্দ্ধিধায় বলে দিলে আমি প্রেমিক হতে পারিনি! 


২৪ শে এসে তুমি বেপরোয়া একজন প্রেমিক চাইবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু তুমি হয়তো ভুলে গেছো, আমরা ৯০ দশকের প্রেমিক প্রেমিকা। আমাদের প্রেম মানে যৌনতা না! 


তোমার প্রেমে পড়ে জগতের প্রেম, সংসারের প্রেম, বিসর্জন দিয়েছি।

তোমার প্রেমে পড়ে, যৌবনের ক্ষুধার সাথে যুদ্ধ করেছি। সঙ্গীময় জীবনের সুযোগ পেয়েও, নিঃসঙ্গ জীবন বেছে নিয়েছি। 


আমি প্রেমিক বলেই আমার কবিতায় তোমার স্থান দিয়েছি। 

বেঈমান হলে নির্দ্ধিধায় ভুলে যেতাম, হেলেন নামে আমার কোন প্রেমিকা ছিলো। 

আমি প্রেমিক বলেই আমার কবিতায় তোমার প্রসাংশা করেছি। 

আমি প্রেমিক বলেই তোমার শরীর ডিঙিয়ে 

হৃদয় ছুঁয়ে তোমাকে কারাগার জীবন দিয়েছি। 

পৃথিবীর কোন পুরুষের কী এ দুঃসাধ্য সাধন করার ক্ষমতা ছিলো বলো? 


তুমি হয়তো জানো না, 

প্রেমিক বলেই আমার মৃত্যু হয়েছে বাথরুমে। না হলে আমার মৃত্যু হতো কোন এক রমনীর কোলের উপর মাথা দিয়ে। 

সন্তানের হাতের পানি গালে নিয়ে। 


এত ত্যাগ এত বিসর্জনের প্রতিদান হিসাবে আজ পেলাম  অপবাদের তীর। 

মানতেই হবে তুমি দারুণ প্রেমিকা, ২৪ শের প্রেমিকা, কিন্তু হেলাল হাফিজের প্রেমিকা হেলেন না।


সংস্পর্শে না থেকেও মৃত্যু পর্যন্ত বাঁচিয়ে রেখেছে যে প্রেম, তাঁকে যদি তোমার প্রেমিক না মনে হয়। 

শুধু শরীর ছুঁতে না পারায় যদি প্রেমিক হিসাবে ব্যর্থ মনে হয়, তবে তুমিও প্রেমিকা হওয়ার যোগ্য না। 

হেলাল হাফিজের প্রেমিকা তো কখনোই না। 


আমি হেলেন বলছি কবিতার কাউন্টার।

মুঘল-এ-আজম সিনেমায় পরিহিত সমস্ত পোশাক দিল্লিতে সেলাই করা হয়েছিল এবং এই পোশাকগুলিতে নকশা খোদাই করা হয়েছিল সুরাটে

 #ফিল্মি_Friday

মুঘল-এ-আজম সিনেমায় পরিহিত সমস্ত পোশাক দিল্লিতে সেলাই করা হয়েছিল এবং এই পোশাকগুলিতে নকশা খোদাই করা হয়েছিল সুরাটে। হায়দ্রাবাদে গহনা তৈরি করা হয়েছিল এবং মুকুট তৈরি হয়েছিল কোলহাপুরে। একই সময়ে রাজস্থান থেকে অস্ত্র আমদানি করা হয়েছিল। কোটি টাকা খরচ করা এই ছবিতে 2000 উট ও 4000 ঘোড়া ব্যবহার করা হয়েছিল।


শীশ মহল সেটে মধুবালার সাথে শ্যুট করা 'পেয়ার কিয়া তো ডরনা কেয়া...' গানটি লিখেছেন শাকিল বন্দউনি। সঙ্গীত পরিচালক নওশাদের অনুমোদন পাওয়ার আগে এটি 105 বার লেখা হয়েছিল। এই গানটি সেই সময়ে 10 লক্ষ টাকায় শ্যুট করা হয়েছিল, যা একটি সম্পূর্ণ চলচ্চিত্র তৈরির জন্য যথেষ্ট ছিল।


কে. আসিফ পরিচালিত বলিউডের আইকনিক চলচ্চিত্র মুঘল-এ-আজম 1960 সালে মুক্তি পায়। বড় পর্দায় প্রেম, আনুগত্য, পরিবার এবং যুদ্ধকে দুর্দান্তভাবে চিত্রিত করা এই চলচ্চিত্রটি তৈরির পিছনের গল্পও এই ছবির মতোই বিশেষ!


আপনি কি জানেন যে, এই সিনেমাটি তৈরি করতে প্রায় 16 বছর সময় লেগেছিল!! চলচ্চিত্রটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল 1944 সালে এবং 1960 সালে ছবিটি মুক্তি পায়। মনে প্রশ্ন আসে কেন? এত বছর সময় লাগলো কেন?


কারণ 1947 সালে ভারত ভাগ হয়। এরপর দেশের পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হয় এবং এর প্রভাব পড়ে কে. আসিফের চলচ্চিত্রে উপরও। এরই মধ্যে এই ছবির কাস্টও বদল হয় বেশ কয়েকবার। প্রথম কাস্টে আকবরের চরিত্রে চন্দ্রমোহন, সেলিম চরিত্রে ডি কে সাপ্রু এবং আনারকলির ভূমিকায় নার্গিস অভিনয় করেছিলেন। 1949 সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চন্দ্রমোহন মারা যান। এরপর প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়া ছবিটি আবার নতুন কাস্ট নিয়ে শুরু হয়। যেখানে মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন পৃথ্বীরাজ কাপুর, দিলীপ কুমার, মধুবালা। ছবিটির বিলম্বের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল।


দ্বিতীয় কারণ ছিল, এই ছবির জাঁকজমক সেট। এটি সেই সময়ে সবচেয়ে ব্যয়বহুল চলচ্চিত্র ছিল, এবং এর দুর্দান্ত সেটগুলির জন্য শুটিংয়ের সময় বিশ্বের আলোচনায় পরিণত হয়েছিল। মুঘল-এ-আজম-এর শুটিং চলাকালীন, শীশ মহলের সেট তৈরি করতে প্রায় দুই বছর লেগেছিল। আসিফ জয়পুরের আমের ফোর্টের শীশ মহল থেকে এর অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন।


ভারতে যে রঙিন কাঁচ পাওয়া যায় তা তেমন ভালো ছিল না, তাই আসিফ এই সেটের জন্য বেলজিয়াম থেকে কাচের অর্ডার দিয়েছিলেন। খাতিজা আকবর তাঁর জীবনী 'দ্য স্টোরি অফ মধুবালা'-তে লিখেছেন, "শীশ মহলের সেট তৈরির সময় ঈদ এলো।"


মুঘল-এ-আজমের শুটিংয়ের জাঁকজমক এমন ছিল যে, অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এর শুটিং দেখতে আসেন। এতে চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই, বিখ্যাত উর্দু কবি ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ এবং জুলফিকার আলী ভুট্টোও ছিলেন, যিনি পরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন।


যাই হোক.. এত সময়, ধৈর্য এবং অর্থ ব্যয় করার পরে, এই ছবিটিও প্রচুর প্রশংসাও পেয়েছে। কে. আসিফের অনবদ্য পরিচালনা, দুর্দান্ত সেট, চমৎকার সঙ্গীতের জন্য মুঘল-এ-আজম আজও স্মরণীয়।


কেমন লাগলো আজকের #ফিল্মি_Friday এর বিষয়? কমেন্ট বক্সে আমাদের জানাতে ভুলবেন না যেন। এরকম আরও নতুন নতুন ও অজানা তথ্য জানতে হলে ফলো করুন দ্য বেটার ইন্ডিয়া বাংলা কে।


#FilmyFriday #MughalEAzam #DilipKumar #Madhubala #Bollywood #CinemaLovers #MovieLovers #ClassicMovie #BengaliNews #Bengali #Kolkata #TheBetterIndiaBangla

এত সুর আর এত গান,,,,,,

 ॥ এত সুর আর এত গান ॥


সা রে গা মা পা ধা নি — এর বাইরে কখনো সুর হয় না। আর যখন কিছু কথা এই সাত স্বরের মধ্যে ঘোরাফেরা করে, ছুঁয়ে যায় আমাদের মনকে, আমরা বলি ‘গান’।


গানকে ঘিরে থাকে নানান ঘটনার ঘনঘটা। কখনো গায়ক, কখনো গীতিকার, আবার কখনো বা সুরকারের অকপট স্বীকারোক্তিতে এইসব ঘটনা সামনে আসে আমাদের। আর সেইসব গল্প নিয়েই “কিছু কথা ॥ কিছু সুর।”


আজকের গল্প সেই শিল্পীকে নিয়ে, যার গলাকে বলা হয় স্বর্ণযুগের স্বর্ণকন্ঠ। যার দাপট শুধু বাংলা আধুনিক গানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, হিন্দি ছায়াছবির গানেও ছিল অসামান্য। তিনি সুবীর সেন। আজকের দিনে তিনি আমাদের ছেড়ে পাড়ি দিয়েছিলেন অজানার উদ্দেশ্যে। শিল্পীর প্রয়াণ দিবসে তাঁকে নিয়েই আজ আমাদের এই বিশেষ পর্ব।


একদিন গীতিকার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভূপেন হাজারিকা গ্র্যান্ড হোটেলের প্রিন্সেস এ গিয়েছেন। সেখানে প্রায়ই বিদেশি ক্যাবারে আসত, ফলে নিত্যনতুন সুর পাওয়া যেত।


দুজন গিয়ে দেখলেন বিশাল বিশাল ট্রিপল কঙ্গো বাজাচ্ছেন বিদেশি কৃষ্ণাঙ্গ বাদ্যযন্ত্রীরা। ভূপেনবাবু পুলকবাবুকে বললেন — “ছন্দটা ধরে ফেলুন”। পুলকবাবু সেই ছন্দের ভাঁজে ভাঁজে কথা বসিয়ে ওখানেই লিখে ফেললেন গানটি। অনবদ্য সুর করলেন ভূপেন হাজারিকা।

গান তো তৈরি হল। এইবার প্রশ্ন, গাইবে কে?

দুজন একসাথে বললেন — “সুবীর সেন!”


তৈরি হল–

“কালো মেঘে ডম্বরু

গুরু গুরু ওই শুরু!

তবু তো ভাসাই তরী...

বিভীষিকা ঘন আধারে..

ডেকেছ তুমি যে আমারে।”


সুবীর সেনের বাড়ি এবং বেড়ে ওঠা আসামের ডিব্রুগড়ে। বাড়িতে তখন গানের একটা পরিবেশ ছিল। সেই সময় ভারতবর্ষে বসুমতী পত্রিকায় গানের স্বরলিপি প্রকাশিত হত। আর এই পত্রিকা গুলো বাড়িতেও আসত। বাবা সেই স্বরলিপি দেখে গান তোলার চেষ্টা করতেন। আর মা গুনগুন করে গান গাইতেন ঘরোয়াভাবে খালি গলায়। কিন্তু এতকিছুর পরেও বাড়ির সবাই চেয়েছিলেন সুবীর সেন যেন ডাক্তার হন। কারণ বাবা ছিলেন পেশায় ডাক্তার, আর তাঁদের পারিবারিক ওষুধের ব্যবসাও ছিল। কিন্তু গান যার নেশা, তার পক্ষে কি আর ডাক্তারি পড়া সম্ভব?


ডিব্রুগড়ে একটা গানের স্কুল ছিল। পারিবারিক নানা বাধানিষেধ কাটিয়ে সুবীর সেখানে ভর্তি হলেন। সেখানেই মাঝেমধ্যে আসতেন রাগাশ্রয়ী গায়ক- পন্ডিত রতন ঝংকার। তাঁর কাছে গানের হাতেখড়ি সুবীরের। গানের পরীক্ষায় সেখানে প্রথম হলেন সুবীর সেন। তারপর ওখানেই ম্যাট্রিক পাশ করে চলে এলেন কলকাতায়। ভর্তি হলেন আশুতোষ কলেজে। থাকতেন মামাবাড়িতে। তখন তাঁর স্বপ্নের গায়ক হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, তালাদ মাহমুদ, ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য প্রমুখরা। ভাবলেন এঁদের মতো গান গাইতে গেলে তো গানটা ভালো করে শিখতে হবে আগে।


প্রথমেই গেলেন চিন্ময় লাহিড়ীর কাছে। সেখানে কিছুদিন শেখার পর চিন্ময়বাবু সুবীর সেনকে পাঠালেন ঊষারঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের কাছে ঠুমরি শিখতে।


সুবীর সেন তখন নিয়ম করে প্রতি রবিবার বিখ্যাত বিখ্যাত শিল্পীদের বাড়িতে গিয়ে হাজির হতেন। এরকমই একদিন গিয়ে হাজির অনুপম ঘটকের বাড়িতে। বাড়িতে তখন অন্য অনেকের ভীড়। জায়গা না পেয়ে বসলেন ছোট্ট ডিভানের একটা কোনে। ভীড় ফাঁকা হতে অনুপম ঘটককে বললেন যে তিনি গান শিখতে চান।

অনুপম ঘটক কিছুক্ষণ সুবীরের দিকে তাকিয়ে বললেন — “তোমার গান না শুনেই বলছি, তোমার গান হবে। দেখে নিও”। 


পরে একদিন বলেছিলেন যে “যে জায়গায় সুবীর সেন অজান্তেই বসেছিলেন, সেটি ছিল গানের জায়গা। কারন সেখানেই একদিন এসে বসেছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, কে.এল. সায়গলের মতো দিকপালেরা।”


দূর্ভাগ্যবশতঃ অনুপম ঘটক বেশিদিন পৃথিবীতে ছিলেন না। ফলে তাঁর কাছে গান শেখাও হল না। কিন্তু তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী অক্ষরে অক্ষরে মিলে গিয়েছিল। সুবীর সেন সত্যিকারের বড় গায়ক হয়েছিলেন।


এখন যেমন “সুপার সিঙ্গার”, “সারেগামাপা” “ইন্ডিয়ান আইডল” এর রমরমা, এতটা না হলেও পঞ্চাশের দশকেও কিন্তু ট্যালেন্ট হান্ট হত। তার মধ্যে অন্যতম সেরা ছিল HMV আয়োজিত “কেরেজু কম্পিটিশন ফর নিউ ট্যালেন্টস্”। এখানে নাম দিলেন কলেজ পড়ুয়া সুবীর সেন। প্রায় ১৪০০ প্রতিযোগীদের মধ্যে প্রথম হলেন তিনি। আর তারপর HMV-র সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি। নতুন গান বাছাই করার দায়িত্ব গায়কের। সুবীর পড়লেন মহা চিন্তায়। এর আগে বন্ধুদের সঙ্গে রেকর্ড কোম্পানিতে এসেছেন ঠিকই, রেকর্ডও করেছেন চিত্ত রায়ের সুরে, তবে সেই গানগুলো তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি। তাহলে কি করা যায়? এইরকম সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে হাজির হলেন উত্তর কলকাতার সিঁথি অঞ্চলে। ঠিকানা– 19/D গুপ্ত লেন। বাড়িটি একজন সঙ্গীত পরিচালকের।

তাঁকে গিয়ে সুবীর বাবু বললেন — “আমায় একটা ভালো গান দিন। আমি রেকর্ড করতে চাই।”


সুরকার ভদ্রলোক সব শুনে বললেন — “ভালো গান?” কিছুক্ষণ ভেবে তারপর একটা গান শোনালেন। তবে গানটা ঠিক পছন্দ হল না সুবীর সেনের। কিন্তু মুখের উপর “না” বলাও যায় না।

তাই সুবীরবাবু একটু চালাকি করে বললেন — “আচ্ছা আর একটা গান যদি শোনান....”

তখন ওই সুরকার ভদ্রলোক আরো একটা গান গাইলেন। আর সেটা শুনেই পছন্দ হয়ে গেল সুবীর সেনের।

বললেন — আমি এটাই গাইব!

কিন্তু সুরকার কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। তারপর আমতা আমতা করে বললেন — “মানে, আসলে, এটা তো আর একজনকে দেওয়ার কথা আছে..”

সুবীর সেন বললেন — “বেশ! ঠিক আছে। তাহলে আমি গাইব না। আমার কোনো গানই দরকার নেই।”

সুবীর সেনের এই নীরব অভিমান ছুঁয়ে গেল ওই সঙ্গীত পরিচালকের হৃদয়।

খানিক চুপ থেকে বললেন — “আচ্ছা গানটা গাও তো দেখি একবার।”

সুবীর বাবু গাইলেন।

শুনে সুরকার বললেন— “ঠিক আছে। গানটা তুমিই গাইবে।”

সেদিনের ওই সুরকার ছিলেন সুধীন দাশগুপ্ত। গানটি লিখেওছিলেন তিনি। আর এই একটা গানেই বাংলা গানের শ্রোতাদের কাছে নতুন গায়ক হিসেবে পরিচিত হলেন সুবীর সেন।

গানটি ছিল —


“ওই উজ্জ্বল দিন,

ডাকে স্বপ্ন রঙিন।

ছুটে আয় রে

লগন বয়ে যায় রে,

মিলনবীণ ওই তো তুলেছে তান

শোনো ওই আহ্বান”


১৯৫৮। গায়ক চললেন বম্বেতে। তাঁর রবীন্দ্রসঙ্গীত ও আধুনিক গান শুনে স্বয়ং গুরু দত্ত তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছেন। সেখানে গিয়ে সুবীরের পরিচয় হল সঙ্গীত পরিচালক শঙ্কর জয়কিষান এর সঙ্গে। ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ল তাঁর নাম। বলরাজ সাহানি, রাজেন্দ্র কুমার, শাম্মি কাপুর, মেহমুদ এর লিপে একের পর এক হিট গান উপহার দিয়ে চললেন সুবীর সেন।


আর বাংলাতেও তখন শিল্পীর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। যেমন সুদর্শন, তেমনই গানের গলা। ধীরে ধীরে ডাক আসতে লাগল অভিনয়ের জন্য। সুবীর সেনের বেশ ভালো পরিচয় ছিল ঋষিকেশ মুখার্জীর সঙ্গে। ঋষিবাবুও তাঁকে অভিনয়ের অফার দিলেন। কিন্তু সুবীরবাবু সবিনয়ে তা প্রত্যাখ্যান করলেন।

পরবর্তীকালে ওই ঋষিকেশ মুখার্জীরই অন্যতম সেরা ছবি “অভিমান” এ অমিতাভ বচ্চনের অভিনীত চরিত্রটির নাম ছিল “সুবীর কুমার”।


এইরকম নানান রঙিন ঘটনার সমাহার রয়েছে সুবীর সেনের সঙ্গীত জীবন জুড়ে।


এই বম্বেতে থাকাকালীনই তাঁর জীবনের আরও একটি সেরা গান তৈরি হয়েছিল। চলুন শোনা যাক সেই গল্প...


তখন বম্বেতে বাঙালিদের চাঁদের হাট। সুরকার, গায়ক অনেকেই। অনেকে আবার নিয়মিত বম্বে-কলকাতা করেন। বম্বেতে একই জায়গায় থাকতেন সুধীন দাশগুপ্ত ও সুবীর সেন।

একদিন সকালবেলা সুধীনবাবু বেশ গলা চড়িয়ে ডাক দিলেন— “অ্যাই সুবীর! এদিকে এসো। একটা গান লিখেছি, শোনো।”

এই বলে পড়ে শোনালেন সেই গান। গানের লিরিক্স শুনেই উচ্ছসিত সুবীর।

বললেন— দূর্দান্ত হয়েছে!

সুধীনবাবু বললেন— “গানটা তুমিই গাইবে।”

“কিন্তু সুর?”— ভ্রু কুঞ্চিত সুবীরের প্রশ্ন।

“ভাবছি..” — গালে হাত দিয়ে সুধীনবাবুর উত্তর।


পরদিন সকালেই আবার জরুরি তলব সুবীরবাবুকে। সুর হয়ে গেছে। আর তাও তিনি নিজেই করেছেন। গেয়ে শোনালেন সুবীরবাবুকে। গানটায় একটা ইংরেজি গানের ছায়া আছে। কিন্তু বাংলা কথার মোড়কে সুরকার যেভাবে সেটাকে মুড়ে নতুন রূপে উপস্থাপন করলেন, তা এককথায় অনবদ্য। রেকর্ডিং হল কলকাতায়। সুবীর সেনের গাওয়া সেরা গানগুলোর অন্যতম—


“এত সুর আর এত গান

যদি কোনদিন থেমে যায়,

সেইদিন তুমিও তো ওগো

জানি ভুলে যাবে যে আমায়...”


১৯৫৭ সালের এই গানের রেকর্ডের উল্টোপিঠে ছিল আরও একটা গান। আর সেটা নিয়েও রয়েছে গল্প–


গান লিখেছেন অনল চট্টোপাধ্যায়, আর নিজেই সুর করেও নিয়ে এসেছেন। শোনালেন সুরকার সুধীন দাশগুপ্ত কে।

সুধীনবাবু শুনেই বললেন — “দারুন হয়েছে লেখাটা। কিন্তু সুর আমি করব!”

অনলবাবু বললেন — “সুর তো আমি করেই এনেছি অলরেডি।

সুধীনবাবু বললেন — “শুনুন না অনলবাবু, কথাগুলো যখন আপনি শোনাচ্ছিলেন, তখনই আমার মাথায় একটা দারুন সুর এসে গেছে। আমি সেটাই করতে চাই।”


অবশেষে ঠিক হল যে, সুধীনবাবুও ওই একই গানে সুর করবেন। তারপর যার সুরটা বেশি ভালো লাগবে, সেটাই ফাইনাল করা হবে। সুর করে নিয়ে এলেন সুধীনবাবু। সবাই শুনে বললেন সুধীনবাবুর সুরটাই থাক!

আর এভাবেই আরও একটা অন্যধরনের গান তৈরি হল —


“তোমার হাসি লুকিয়ে হাসে

চাঁদের মুখেতে..

আমার হাসি শ্রাবণ মেঘের

ধারার বুকেতে।”


বম্বেতে থাকাকালীন বিখ্যাত গায়ক-গায়িকা এবং সুরকারদের বাড়িতে অবাধ যাতায়াত ছিল সুবীর সেনের। এভাবেই একদিন তিনি গেছেন লতা মঙ্গেশকরের বাড়িতে। গিয়ে দেখলেন সেখানে রয়েছে লতাজীর বাবার ছবি, উস্তাদ বড়ে গোলাম আলী খান এর ছবি, এবং এক বিদেশী কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের ছবি।

সুবীরবাবু লতাজীকে জিজ্ঞেস করলেন — “ইনি কে?”

লতাজী বললেন — “ওই বিদেশী মানুষটির নাম- ন্যাট কিং কোল। অন্য অনেকের গান হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হয়, আর কিং কোল এর গান লোমকূপ দিয়ে হৃদয়ে প্রবেশ করে।”

এই বলে লতাজী কিং কোল এর একটি রেকর্ড সুবীর সেনকে দিলেন। গান শুনে অভিভূত সুবীরবাবু। তখন তিনি বেশ কিছু অনুষ্ঠানে হিন্দি ও বাংলা গানের পাশাপাশি ইংরেজি গানও গাইতেন। সুতরাং এ গানও অনায়াসেই গলায় তুলে নিলেন।

পরবর্তীকালে একটি গান রেকর্ড হয়েছিল, যার সুরকার ছিলেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার।

সেই গানের মধ্যেও ন্যাট কিং কোল এর গানের ছায়া খুঁজে পাওয়া যায়—


“নয় থাকলে আরো কিছুক্ষন,

নয় রাখলে হাতে দুটি হাত..

নয় ডাকলে আরো কিছু কাছে,

দ্যাখো জোছনা ভেজা এই রাত.....”


অসম্ভব সুন্দর দেখতে ছিলেন সুবীর সেন। ফলে ছবিতে হিরো হবার অফার সবসময়ই আসত তার কাছে।

একদিন উত্তমকুমার তাকে ডেকে বললেন — “অভিনয় করো না কেন?”

সুবীর সেন কি আর বলেন! একথা সেকথা বলে কাটিয়ে দিলেন।

সে যাত্রায় তো রক্ষে হল, কিন্তু এরপর হঠাৎ একদিন পরিচালক সলিল দত্ত এসে হাজির তার বাড়িতে।

বললেন — “উত্তমকুমার আমাকে পাঠিয়েছেন। বলেছেন ওই ছবিতে তোমাকে অভিনয় করতে হবে। তোমার বিপরীতে নায়িকা সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। এবং ছবিতে ডাক্তারের ভূমিকায় স্বয়ং উত্তমকুমার।”


উত্তমকুমারের আদেশ কিকরে অগ্রাহ্য করবেন! অগত্যা রাজি হলেন। ছবির নাম – “মোমের আলো”। সেখানে প্লেব্যাক তো করলেনই, ছবিতে লিপও মেলালেন।

ছবির একটি দৃশ্যে লং ড্রাইভে গাড়িতে বসে নায়িকা সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে এই গানটি অবশ্যই এই ছবির একটা অমূল্য সম্পদ—


“ওগো কাজল নয়না...

বলো বলো,

ওগো বলো,

তুমি কি গো সেই মধুমালা

মোর শত জনমের কামনা।

ওগো কাজল নয়না...”


শুধু বাংলা ছবিই নয়, হিন্দি ছবিতেও ছোটখাটো ভুমিকায় অভিনয় করেছেন সুবীর সেন।

পরিচালক বাসু ভট্টাচার্যের হিন্দি ছবি –“অনুভব”। নায়ক সঞ্জীব কুমার, নায়িকা তনুজা। এ ছবিতেও এক উল্লেখযোগ্য মুহূর্তে তাকে দেখা গেছে গান গাইতে।

পুরো হিন্দি ছবিতে একটিই মাত্র বাংলা গান। রবীন্দ্রসঙ্গীত— 


“সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে,

ফুলডোরে বাঁধা ঝুলনা...”


রবীন্দ্রসঙ্গীতেও তাঁর দক্ষতা ও জনপ্রিয়তা ছিল অতুলনীয়। একবার রবীন্দ্রসঙ্গীতের রেকর্ড বের হবার পর তার একটি কপি নিয়ে হাজির হলেন দেবব্রত বিশ্বাসের বাড়িতে। প্রিয় “জর্জদা” কে সেটি দিলেন শুনবার জন্য। এর দিনকয়েক পর আবারও সেখানে গেছেন। গিয়ে দেখলেন দেবব্রত বিশ্বাস গানের প্রথম লাইন শুনেই রেকর্ডের পিন টা তুলে নিচ্ছেন, আবারও চালাচ্ছেন, আবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। এভাবে বেশ কয়েকবার শুনলেন।

তারপরে সুবীরবাবুর দিকে তাকিয়ে বললেন— “কি অসাধারণ গাইসো তুমি!”

সত্যিই সেই গানটা অসাধারণ গেয়েছিলেন সুবীর সেন। 

ফাংশনে তার জনপ্রিয় গানগুলোর মাঝে এই রবীন্দ্রসঙ্গীতটিও বারবার গাইতে হত তাকে—


“তুমি যে আমারে চাও...

আমি সে জানি...

কেন যে মোরে কাঁদাও

আমি সে জানি...”


গানের জগতে সুবীর সেন যখন এসেছিলেন, তখন বাংলা গানে রথী-মহারথীদের ভীড়। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, শ্যামল মিত্র, ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় প্রমুখরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন রীতিমতো। সকলের মাঝে থেকেও কন্ঠমাধুর্য এবং প্রতিভার জোরে শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন সুবীর সেন। পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি থেকে টানা সত্তরের দশক পর্যন্ত খ্যাতির শীর্ষে ছিলেন তিনি। 


আজকের এই ছোট্ট প্রতিবেদনে কতটুকু আর তাঁকে ধরা সম্ভব? তবুও আজ তাঁর প্রয়াণের দিনে তাঁকে কিছুটা স্মরণ করার প্রয়াস করলাম মাত্র।

এখন এক পলকে দেখে নিই তাঁর গাওয়া কিছু গান–


চাঁদ তুমি এত আলো কোথা হতে পেলে

কথা- বঙ্কিম ঘোষ, সুর- অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।


মোনালিসা, তুমি কে বলো না

কথা ও সুর - অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।


সারাদিন তোমায় ভেবে

কথা ও সুর - অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।


সন্ধ্যালগনে স্বপ্ন মগনে

কথা- শ্যামল ঘোষ। সুর- অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।


নগর জীবন ছবির মতন

কথা - অমিয় দাশগুপ্ত। সুর - অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।


স্বর্ণঝরা সূর্যরঙে

কথা ও সুর - সুধীন দাশগুপ্ত।


ডাকলেই সাড়া দিতে নেই

কথা- পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়। সুর- অনিল চট্টোপাধ্যায়।


চন্দন আঁকা ছোট্ট কপাল

কথা- পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়। সুর- অনিল চট্টোপাধ্যায়।


তুমি আমার প্রেম

কথা- মিল্টু ঘোষ। সুর- অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।


আকাশ যেখানে গল্প বলে পথকে

কথা- সুনীলবরন। সুর- সুধীন দাশগুপ্ত।


তুমি বলেছিলে কোনো মনের মুক্তো

কথা- অমিয় দাশগুপ্ত। সুর- অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।

_____________________________

তথ্য সহায়তা: সারেগামা (HMV), আনন্দবাজার পত্রিকা ও অন্যান্য পত্র পত্রিকা।

প্রখ্যাত শিল্পী কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য একবার বাউল শাহ আবদুল করিমকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, "মানুষ আপনার গান বিকৃত সুরে গায়। আপনার সুর ছাড়া অন্য সুরে গায়। অনেকে আপনার নামটা পর্যন্ত বলে না। এসব দেখতে আপনার খারাপ লাগে না?"

প্রখ্যাত শিল্পী কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য একবার বাউল শাহ আবদুল করিমকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, "মানুষ আপনার গান বিকৃত সুরে গায়। আপনার সুর ছাড়া অন্য সুরে গায়। অনেকে আপনার নামটা পর্যন্ত বলে না। এসব দেখতে আপনার খারাপ লাগে না?"


শাহ আবদুল করিম বললেন, "কথা বোঝা গেলেই হইল। আমার আর কিচ্ছু দরকার নাই।"


কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য আশ্চর্য হয়ে বললেন, "আপনার সৃষ্টি, আপনার গান। মানুষ আপনার সামনে বিকৃত করে গাইবে। আপনি কিছুই মনে করবেন না। এটা কোনো কথা, এটার কোনো অর্থ আছে!"


জবাবে শাহ আবদুল করিম বললেন, "তুমি তো গান গাও, আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দাও তো। ধরো, তোমাকে একটা অনুষ্ঠানে ডাকা হলো। হাজার হাজার চেয়ার রাখা আছে, কিন্তু গান শুনতে কোনো মানুষ আসেনি। শুধু সামনের সারিতে একটা মানুষ বসে আছে। গাইতে পারবে?" কালিকাপ্রসাদ কিছুক্ষণ ভেবে উত্তর দিলেন, "না, পারব না।"


শাহ আবদুল করিম হেসে বললেন, "আমি পারব। কারণ আমার গানটার ভেতর দিয়ে আমি একটা আদর্শকে প্রচার করতে চাই, সেটা একজন মানুষের কাছে হলেও। সুর না থাকুক, নাম না থাকুক, সেই আদর্শটা থাকলেই হলো। আর কিছু দরকার নাই৷ সেজন্যই বললাম শুধু গানের কথা বোঝা গেলেই আমি খুশি।"


কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য জানতে চাইলেন, "সেই আদর্শটা কী?"


শাহ আবদুল করিম আবার হেসে বললেন, "একদিন এই পৃথিবীটা বাউলের পৃথিবী হবে।"


বৃহত্তর সিলেটের সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের একটি এলাকা দিরাই। সেই দিরাইয়ের উজানধল নামক গ্রামে আজ থেকে শতাধিকবর্ষ পূর্বে এক হতদরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন শাহ আবদুল করিম। ছোটবেলা থেকেই দারিদ্র আর ক্ষুধার যন্ত্রণা নিয়ে বেড়ে উঠেছেন, দেখেছেন অর্থনৈতিক বৈষম্য। পরিবারের হাল ধরতে রাখাল বালকের চাকরি নেন। কিন্তু তার ছিলো গানের প্রতি, সুরের প্রতি প্রচণ্ড ঝোঁক। কালনী নদীর পাড়ে বসে একসময় তাই গান লিখতে আর সুরে সুরে গাইতে শুরু করেন। এভাবে গাইতে গাইতেই হয়ে ওঠেন ভাটি-বাংলার অন্যতম বাউল ও গণমানুষের কণ্ঠস্বর।


মাত্র আট দিন ব্রিটিশদের পরিচালিত নৈশ বিদ্যালয়ে পড়েছিলেন তিনি। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে গুজব রটানো হলো বিদ্যালয়ের ছাত্রদের ব্রিটিশ বাহিনীতে যোগ দিয়ে যুদ্ধ করতে হবে। সেই আশঙ্কায় সকল ছাত্রের সাথে সাথে তিনিও ছাড়লেন বিদ্যালয়। কিন্তু নিজের চেষ্টা আর সাধনায় কাজ চালানোর মতো পড়াশোনা ঠিকই শিখেছিলেন তিনি। সেই পড়াশোনা আর জীবনের বাস্তবতাকে কাজে লাগিয়ে রচনা করে ফেলেন প্রায় দেড় হাজার গান। যার অনেকগুলোই এখন মানুষের মুখে মুখে ফেরে।


আপাদমস্তক অসাম্প্রদায়িক এই বাউল গানের মধ্যেও করেছেন সাম্য ও মানবাধিকারের চর্চা। পুরোপুরি নির্লোভ মানুষটি কখনো টাকার নেশায় মশগুল হননি। সারাজীবন অভাব-অনটন ও কষ্টে-সৃষ্টে কাটালেও নির্লোভ ছিলেন জীবনের শেষদিন পর্যন্ত। তার গান গেয়ে কতজন কতভাবে টাকা কামিয়েছে, কতজন তাকে কেন্দ্র করে কত ধরনের ব্যবসা করেছে, কিন্তু তিনি এসব জেনেও ছিলেন নির্বিকার। তাকে তার গানের অ্যালবাম থেকে প্রাপ্ত সোয়া তিন লাখ টাকা দেয়া হলে তিনি নিতে চাননি। বলেছিলেন, এত টাকা তার দরকার নেই, তাকে যে সম্মান দেওয়া হচ্ছে এটাই যথেষ্ট। এমন নির্লোভ মানুষ আজকাল খুঁজে পাওয়া সত্যি বিরল!


#collecte

বাংলা সিনেমার খবর ফেইসবুক থেকে নেওয়া

 রাজ্জাক-ববিতা অভিনিত-অনন্ত প্রেম ---🔹

বাংলাদেশের একটি সিনেমায় এমন একটা দৃশ্য ছিল যা পৃথিবীর আর কোনো সিনেমায় নেই। নায়ক আর নায়িকা পালিয়ে জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে। নায়কের দাড়ি শেভ করা দরকার,কিন্তু আয়না নেই। অগত্যা নায়িকার চোখের আয়নায় নায়ক দাড়ি কাটছে। নায়িকার মুখের বেশ কাছে নায়ককে ঝুঁকে আসতে হয়েছে। তাঁরা দুজনের নিঃশ্বাসের উত্তাপ অনুভব করছে। একই সিনেমায় পলাতক নায়ক পরিশ্রান্ত হয়ে ঘুমাচ্ছে। নায়িকা ঘুমন্ত নায়কের শিয়রে বসে গাইছে - আলো তুমি নিভে যাও …যাও… রাত আঁধার হয়ে যাও …যাও।


সিনেমার ইতিহাসে সবচেয়ে রোমান্টিক এইসব দৃশ্য আর দেখার উপায় নেই। কারন সিনেমাটা হারিয়ে গেছে। ১৯৭৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাটার নায়ক রাজ্জাক,নায়িকা ববিতা। এই সিনেমাতেই দেশের সিনেমার ইতিহাসে প্রথম নায়ক নায়িকার চুম্বন দৃশ্য ছিল "যদিও পরে তা বাদেই সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হয়" এখন সিনেমাটা খুঁজে পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো যদি কারো ব্যক্তিগত সংগ্রহে থেকে থাকে। 


অনন্ত প্রেমের গল্প ---🔹

একেবারেই নতুন ভিন্ন গল্পকাঠামো নিয়ে নির্মিত হয় "অনন্ত প্রেম" ছবিতে রাজ্জাক এবং তার তিন বন্ধু খলিল এটিএম শামসুজ্জামান ও ব্লাক আনোয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। ববিতাও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। খলিল ববিতাকে পছন্দ করে,কিন্তু ববিতা তাকে পাত্তা দেয় না। সে ক্ষেত্রে খলিলকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে রাজ্জাক,ব্ল্যাক আনোয়ার ও এটিএম শামসুজ্জামান। পরিকল্পনা করতে থাকে কীভাবে ববিতাকে পটানো যায়। সেই মতে নির্জন স্থানে ববিতাকে আক্রমণ করে তিন বন্ধু। আর ববিতার সাহায্যে এগিয়ে আসে খলিল। সাজানো মারামারির কারণে সবাইকে হারিয়ে ববিতার চোখে হিরো হয়ে যায় খলিল।


পরবর্তীতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ববিতাকে নির্জন জায়গায় নিয়ে ইজ্জত লুটতে চায় খলিল। চিৎকার শুনে রাজ্জাক ও বন্ধুরা এগিয়ে যায়। তবে এবার সত্যিকারের মারামারির একপর্যায়ে রাজ্জাকের হাতে খলিল খুন হয়। ববিতাকে তার বাসায় পৌঁছে দিয়ে রাজ্জাক পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। ঘটনার সঙ্গে ববিতার নাম জড়ালে তার বদনাম হবে ভেবে রাজ্জাক পুলিশের কাছে বলে টাকা নিয়ে ঝগড়ার কারণে বন্ধুকে একাই খুন করেছে।


পরে পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে যায় রাজ্জাক। এ দিকে শৈশবে মাতৃহীন ববিতাকে অত্যাচার-অনাচারের অংশ হিসেবে এক লম্পটের সঙ্গে সৎমা বিয়ে দিতে চাইলে বিয়ের আসর থেকে ববিতাও পালিয়ে যায়। রাজ্জাক ও ববিতা দুজনই পালিয়ে যায় দুদিক থেকে,

তবে ট্রেনে দেখা হয়ে যায় তাদের। এবার তারা পালিয়ে চলে যায় পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম অরণ্যে। যেখানে নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে তারা একে অপরের প্রেমে পড়ে যায়,

শুরু হয় এক অনন্ত প্রেম কাহিনির যাত্রা। গভীর পাহাড়ি অরণ্যে ভেসে ওঠে মধুর সেই সুর - ও চোখে চোখ পড়েছে যখনই,তুমি হলে মনের রানি।


এ দিকে ব্ল্যাক আনোয়ার ও এটিএম শামসুজ্জামান পুলিশের হাত থেকে পালাতে গিয়ে গুলি খেয়ে মারা যায়। ফলে প্রকৃত ঘটনার সাক্ষী দেওয়ার মতো আর কেউ থাকে না। রাজ্জাকের নামে পুলিশের হুলিয়া জারি হয়,হন্য হয়ে পুলিশ খুঁজতে থাকে তাকে। একপর্যায়ে তাদের সন্ধানও পেয়ে যায়,গভীর অরণ্যের মাঝে তাদের ধাওয়া করে পুলিশ। জীবন বাঁচাতে পালিয়ে যাবার সময় একটি ঝর্ণার কাছে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় দুজনের। মৃত্যুর সময় ভালোবাসার নির্দশন স্বরূপ পরস্পরকে চুম্বন করেন তারা। শেষ পর্যন্ত ঝর্ণার তীরে পড়ে থাকে তাদের আলিঙ্গনবদ্ধ প্রাণহীন দেহ। মূলত এটাই কালজয়ী চলচ্চিত্র "অনন্ত প্রেম" এর মূল কাহিনি৷


ছবির শেষ দৃশ্যের দিকে রাজ্জাক ববিতার একটি চুম্বন দৃশ্য ছিল,যা পরবর্তীতে বাদ দেওয়া হয়। যার একমাত্র কারণ ছিলেন ববিতা। তিনি কিছুতেই এরকম একটি দৃশ্যে অভিনয় করতে রাজি হচ্ছিলেন না,তবে রাজ্জাক সাহেব এমনভাবে বুঝিয়েছিলেন তাতে আর ববিতা দৃশ্যটি না করে থাকতে পারেননি।


তবে শুটিংয়ের পরই ববিতা আফসোস করতে থাকলেন,রীতিমত কান্নাকাটি শুরু করেন। ভাবলেন এরকম দৃশ্য দেখলে তো তাকে আর কেউ বিয়ে করবে না। ঠিক তখন রাজ্জাক সাহেব আশ্বস্ত করে ববিতাকে বললেন "আগে তুমি দৃশ্যটি দেখ,যদি ভালো না লাগে এটি বাদ দিয়ে দেবো" অবশ্য পরে ববিতা দৃশ্যটির শিল্পরূপ দেখে বাদ না দেওয়ার জন্য বলেছিলেন,কিন্তু তখন রাজ্জাক সাহেব ববিতার ভবিষ্যতের কথা ভেবে দৃশ্যটি আর রাখেননি। তিনি ভেবেছিলেন এরকম একটি দৃশ্যের জন্যে হয়তো ববিতার ভবিষ্যতের উপর কোন প্রভাব পড়তে পারে। সহশিল্পীর প্রতি এমন দায়িত্ববোধ ও ভালোবাসা দেখিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্জাক - ববিতারা।


তবে ছবি মুক্তির আগে এক বিবৃতিতে রাজ্জাক এটাও বলেন,আমার ছবির শেষ দৃশ্যে একটি চুম্বন দৃশ্য ছিল। পত্রিকায় সে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর আমার অগণিত ভক্ত,অনেক মা-বোন ব্যক্তিগতভাবে অনেক চিঠি এবং টেলিফোনে আমার কাছে প্রশ্ন রেখেছেন যে,

চুম্বন দৃশ্যটি ছবিতে না থাকলেই কি নয়? আমি পুরো ছবিটি আবার দেখে উপলব্দি করলাম যে চুম্বন দৃশ্য না থাকলে ছবির এতটুকুও সৌন্দর্যহানি হয় না। ঐটুকু ছাড়াই এ ছবি দর্শকদের ভালো লাগবে। তাই ভক্ত এবং মা-বোনদের অনুরোধ রক্ষার্থে আমি চুম্বন দৃশ্য বাদ দিয়ে দিয়েছে।


তূমুল দর্শকপ্রিয় ছবিটির সবকটি গানও পেয়েছিল সমান জনপ্রিয়তা। সংগীত পরিচালক ছিলেন আজাদ রহমান সাহেব,অবশ্য "ঐ আকাশ যতদিন থাকবে,এই পৃথিবী যতদিন থাকবে,আমি যে তোমারই থাকবো" গানটির পরিচালক ছিলেন জনাব খন্দকার নূরুল আলম সাহেব,গীতিকার ছিলেন কাজী আজিজ আহমেদ সাহেব৷


আজাদ রহমানের সুরে_আলো তুমি নিভে নিভে যাও যাও_ঐ কোর্ট কাচারির এমনই রায়_তোমারই কাছে আমি বারবার আসবো_ও চোখে চোখ পড়েছে যখনই। গানগুলো এখনো সমান জনপ্রিয় বিশেষ করে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখায় খুরশীদ আলম ও সাবিনা ইয়াসমিনের কন্ঠে_ও চোখে চোখ পড়েছে যখনি_গানটি সময়ের স্পর্শকে বাঁচিয়ে রেখে বাংলা চলচ্চিত্রের একটি ক্ল্যাসিক গানে পরিণত হয়েছে। গানটির শুটিং হয়েছিল কাপ্তাইয়ের অসাধারণ সুন্দর সব লোকেশনে!


লিখেছেন - আরিফুল হাসান

বাংলা মুভি ডেটাবেজ থেকে সংগ্রহ করা।

জী নজরুল সম্পর্কে যে ২০টি তথ্য আপনি না-ও জেনে থাকতে পারেন।,,,,,

 কাজী নজরুল সম্পর্কে যে ২০টি তথ্য আপনি না-ও জেনে থাকতে পারেন।


কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ছিল বিচিত্র আর বহুবর্ণিল। তাঁর সেই জীবনের কতটুকুই-বা আমরা জানি? আজ নজরুলজয়ন্তীতে নজরুল-গবেষকদের লেখা বিভিন্ন বই ও পত্রিকা ঘেঁটে এখানে বিদ্রোহী কবি-সম্পর্কিত এমন ২০টি তথ্য তুলে ধরা হলো, যেগুলো আপনি না-ও জেনে থাকতে পারেন!


🌹১. নজরুলের জীবন কোনো নিয়মের জালে আটকা ছিল না। যখন যা ভালো লাগত, তিনি তা-ই করতেন। দিন নেই, রাত নেই হই হই রব তুলে উঠে পড়তেন কোনো বন্ধুর বাড়িতে। তারপর চলত অবিরাম আড্ডা আর গান!


🌹২. নজরুলের লেখার জন্য কোনো বিশেষ পরিবেশ লাগত না। গাছতলায় বসে যেমন তিনি লিখতে পারতেন, তেমনি ঘরোয়া বৈঠকেও তাঁর ভেতর থেকে লেখা বের হয়ে আসত।


🌹৩. নজরুল ইসলাম কোনো অনুষ্ঠানে গেলে ঝলমলে রঙিন পোশাক পরতেন। কেউ তাঁকে রঙিন পোশাক পরার কারণ জিজ্ঞাসা করলে বলতেন, রঙিন পোশাক পরি অনেক মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য। অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত তথ্য দিয়েছেন, নজরুল তাঁর ঝলমলে পোশাকের ব্যাপারে বলতেন, ‘আমার সম্ভ্রান্ত হওয়ার দরকার নেই। আমার তো মানুষকে বিভ্রান্ত করবার কথা!’


🌹৪. নজরুলের পাঠাভ্যাস ছিল বহুমুখী। তিনি পবিত্র কোরআন, গীতা, বাইবেল, বেদ, ত্রিপিটক, মহাভারত, রামায়ণ যেমন পড়তেন, তেমন পড়তেন শেলি, কিটস, কার্ল মার্ক্স, ম্যাক্সিম গোর্কিসহ বিশ্বখ্যাত লেখকদের লেখা। রবীন্দ্রনাথের ‘গীতবিতান’-এর সব কটি গান মুখস্থ করে ফেলেছিলেন তিনি!


🌹৫. বাংলা গানে নজরুলই একমাত্র ব‌্যক্তি, যিনি সব ধরনের বিষয় নিয়ে গান লিখেছেন। তাঁর গানের সংখ্যা অনেকে চার হাজার বললেও আসলে তিনি গান লিখেছিলেন প্রায় আট হাজারের মতো, যার অধিকাংশই সংরক্ষণ করা যায়নি।


🌹৬. বাঙালি কবিদের মধ্যে নজরুলই ছিলেন সবচেয়ে বেশি রসিক। তাঁর কথায় হাসির ঢেউ উঠত। হিরণ্ময় ভট্টাচার্য ‘রসিক নজরুল’ নামে একটি বই লিখেছেন। যাঁরা বইটি পড়েননি, তাঁদের পক্ষে বোঝা কষ্টকর নজরুল কী পরিমাণ রসিক ছিলেন! একটা উদাহরণ দেওয়া যাক, একবার এক ভদ্রমহিলা নজরুলকে খুব স্মার্টলি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনি কি পানাসক্ত?’ নজরুল বললেন, ‘না, বেশ্যাসক্ত!’ কবির কথায় ভদ্রমহিলার মুখ কালো হয়ে গেল। আর তক্ষুনি ব্যাখ্যা করলেন নজরুল, ‘পান একটু বেশি খাই। তাই বেশ্যাসক্ত, অর্থাৎ বেশি+আসক্ত = বেশ্যাসক্ত!’


🌹৭. নজরুলের প্রেমে পড়েননি, এমন পুরুষ কিংবা নারী খুঁজে পাওয়া ভার। তাঁর চরম শত্রুরাও তাঁর ভালোবাসার শক্তির কাছে হার মেনেছেন। কবি বুদ্ধদেব বসু নজরুলকে প্রথম দেখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে। তিনি লিখেছেন, ‘সেই প্রথম আমি দেখলাম নজরুলকে। এবং অন্য অনেকের মতো যথারীতি তাঁর প্রেমে পড়ে গেলাম!’ শুধু বুদ্ধদেব বসু নন, তাঁর স্ত্রী প্রতিভা বসুও নজরুলের প্রেমে পড়েছিলেন। সেই কাহিনি নিয়ে তিনি লিখেছেন ‘আয়না’ নামে একটি গল্প। কী অবাক কাণ্ড! স্বামী-স্ত্রী দুজনেই একই লেখকের প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছেন!


🌹৮. কাজী নজরুল ইসলাম প্রচুর পান ও চা খেতেন। লিখতে বসার আগে পর্যাপ্ত পরিমাণ চা আর এক থালা পান নিয়ে বসতেন তিনি। পান শেষ করে চা, এরপর আবার চা শেষ করে পান খেতেন। তিনি বলতেন, ‘লেখক যদি হতে চান/ লাখ পেয়ালা চা খান!’


🌹৯. নজরুল ছিলেন সত্যিকারের হস্তরেখা বিশারদ। তিনি অনেকের হাত দেখে যা বলতেন, তা-ই ঘটতে দেখা গেছে। একবার এক লোককে বললেন, আপনার বিদেশযাত্রা আছে, লোকটি সত্যিই কয়েক দিনের মধ‌্যে বিদেশ চলে গেল! আরেকজনকে বললেন, ‘আপনি পৃথিবীর বাইরে চলে যেতে পারেন।’ পরে ওই লোকটির মৃত্যু ঘটেছিল!


🌹১০. মাঝেমধ্যে রাগান্বিত হলে নজরুল তাঁর সামনে যদি কোনো বই-খাতা পেতেন বা কাগজ পেতেন, তা ছিঁড়ে কুচি কুচি করে ফেলতেন।


🌹১১. অর্থের ব্যাপারে নজরুল ছিলেন ভয়াবহ বেহিসাবি। হাতে টাকা এলেই তা বন্ধুবান্ধব নিয়ে আমোদ-ফুর্তি করে শেষ করে দিতেন। আর বলতেন, ‘আমি আমার হাতের টাকা বন্ধুদের জন্য খরচ করছি। আর যখন ওদের টাকা হবে ওরাও আমার জন্য খরচ করবে, চিন্তার কোনো কারণ নেই।’


🌹১২. নজরুল তাঁর দুই পুত্রের ডাকনাম সানি (কাজী সব্যসাচী) আর নিনি (কাজী অনিরুদ্ধ) রেখেছিলেন তাঁর দুই প্রিয় মানুষ সান ইয়াত-সেন ও লেনিনের নামানুসারে।


🌹১৩. নজরুল তাঁর সন্তানদের খুবই ভালোবাসতেন। এমনকি তিনি তাঁদের নিজ হাতে খাওয়াতেন আর ছড়া কাটতেন, ‘সানি-নিনি দুই ভাই/ ব্যাঙ মারে ঠুই ঠাই।’ কিংবা ‘তোমার সানি যুদ্ধে যাবে মুখটি করে চাঁদপানা/ কোল-ন্যাওটা তোমার নিনি বোমার ভয়ে আধখানা।’


🌹১৪. নজরুল ছিলেন সত্যিকারের জনদরদি মানুষ। একটি ঘটনা দিয়ে তার প্রমাণ দেওয়া যেতে পারে। দক্ষিণ কলকাতার এক দরিদ্র হিন্দু মেয়ের বিবাহ। কোনোরকমে কন্যা বিদায়ের আয়োজন চলছে। নজরুল খবরটি পেলেন। তিনি দ্রুত বাজারে গেলেন। এক হিন্দু বন্ধুকে নিয়ে বিয়ের বাজার করলেন। তারপর ধুমধাম করে মেয়েটির বিয়ে হলো। মেয়ের বাবা নজরুলকে প্রণাম করে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘আমরা আপনাকে ভুলব না কোনো দিন।’ এমনই ছিলেন কবি। তাঁর বাড়িতে সাঁওতাল, গারো, কোল—সবাই দল বেঁধে আসতেন। আপ্যায়িত হতেন উৎসবসহকারে।


🌹১৫. নজরুল কবিতা ও গানের স্বত্ব বিক্রি করে উন্নত মানের একটি ক্রাইসলার গাড়ি কিনতে পেরেছিলেন। এই গাড়ি ছিল সেই সময়ের সবচেয়ে বিলাসবহুল ও দামি।


🌹১৬. নজরুল ট্রেনের প্রথম শ্রেণির কামরা ভাড়া করে মাঝেমধ্যে প্রমোদভ্রমণে যেতেন।


🌹১৭. নজরুলের দৃষ্টিশক্তি ছিল অসামান্য। তিনি গভীর অন্ধকারেও বহুদূরের কোনো জিনিস স্পষ্ট দেখতে পেতেন।


🌹১৮. নজরুল ছিলেন অসম্ভব রকমের ক্রীড়াপ্রেমী। সময় পেলেই তিনি ফুটবল খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে ছুটতেন বন্ধুবান্ধব নিয়ে। যেদিন বাড়ি থেকে সোজা খেলা দেখতে যেতেন, সেদিন দুই পুত্র সানি আর নিনিকে সঙ্গে নিতেন। একবার খেলা দেখতে গেছেন। স্টেডিয়ামে পাশে বসে আছেন হুমায়ূন কবির। খেলা ভাঙার পর ভিড়ের মধ্যে দুই পুত্র খানিকটা আড়ালে চলে গেল। হঠাৎ পেছন থেকে নজরুলের হাঁকডাক শোনা গেল, ‘সানি কোথায়? নিনি কোথায়?’ মাঠসুদ্ধ লোক হাঁ হয়ে নজরুলকে দেখছে। এরই মধ্যে দুই পুত্রকে ঠেসে ধরে ট্যাক্সি করে বাড়ি নিয়ে এসে তিনি স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন।


🌹১৯. নজরুল বেশ দক্ষ দাবাড়ু ছিলেন। যেদিন বিশেষ কোনো কাজ থাকত না, সেদিন তিনি দাবা খেলতেন। খেলায় এমন মগ্ন হতেন যে খাওয়া-নাওয়ার খেয়ালও থাকত না। মাঝেমধ্যে নজরুলের বাড়িতে দাবার আসর বসাতে আসতেন কাজী মোহাতার হোসেন ও হেম সোম।


🌹২০. কলকাতায় নজরুলের তিনতলা বাড়ির সামনে ছিল একটা ন্যাড়া মাঠ। খেলা নিয়ে বহু কাণ্ড ঘটেছে ওই মাঠে। একবার জোর ক্রিকেট খেলা চলছে। নজরুল গ্যালারি অর্থাৎ বারান্দায় দাঁড়িয়ে খেলারত তাঁর দুই পুত্রকে জোর উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে বড় পুত্র সানি এল ব্যাট করতে। প্রথম বলেই ছয়! নজরুলের সে কি দাপাদাপি! ঠিক পরের বল আসার আগে তিনি চিৎকার করে বলে উঠলেন, ‘সানি, ওই রকম আরেকটা মার।’ ব্যস বাবার কথায় উত্তেজিত হয়ে দিগ্‌বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে ব্যাট চালাল পুত্র। ব্যাট অবশ্য বলে লাগল না। লাগল উইকেটকিপারের চোয়ালে! বেশ রক্তারক্তি অবস্থা! অবশেষে খেলা বন্ধ করা হলো।


এমনই নানা রঙের মানুষ ছিলেন নজরুল। যাঁর জীবনে দুঃখ-কষ্টের অভাব ছিল না, আবার রং-রূপেরও অভাব ছিল না। পৃথিবীর খুব কম মানুষই বোধ হয় এমন  মহাজীবনের অধিকারী হন। বুদ্ধদেব বসু যথার্থই বলেছিলেন, ‘কণ্ঠে তাঁর হাসি, কণ্ঠে তাঁর গান, প্রাণে তাঁর অফুরান আনন্দ—সব মিলিয়ে মনোলুণ্ঠনকারী এক মানুষ।’


___ নজরুল অঞ্জলি 

(সংগৃহীত)

হাসন রাজাঃ বাংলাদেশের  বিখ্যাত এক মরমী কবি

 হাসন রাজাঃ

বাংলাদেশের  বিখ্যাত এক মরমী কবি

-----------------------------------------------------

লোকে বলে বলেরে

ঘর বাড়ি ভালো না আমার

কি ঘর বানাইমু আমি শূন্যের মাঝার...

বিখ্যাত এই  মরমী গানের  কবি ও সাধক হাসন রাজা। হাসন রাজা  ১২৬১ বঙ্গাব্দের ৭ পৌষ ও ১৮৫৪ সালের ২১শে ডিসেম্বর সিলেট জেলার সুনামগঞ্জে লক্ষ্মণশ্রী গ্রামের এক জমিদার পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। উনার প্রকৃত নাম ছিল দেওয়ান হাসন রজা চৌধুরী। 


তাঁর পিতার নাম দেওয়ান আলী রজা চৌধুরী। হাসন রাজার পিতৃকুল ও মাতৃকুল উভয়ই ছিল অযোধ্যাবাসী এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বী। হাসন রাজারা পরে  ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তাঁরা সুনামগঞ্জ আসেন এবং সেখানেই জমিদারি পত্তন করে স্থায়িভাবে বসবাস শুরু করেন।


হাসন রাজার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না। মাত্র পনেরো বছর বয়সে পিতৃবিয়োগ হলে সংসার ও জমিদারি পরিচালনার দায়িত্ব তাঁর ওপর ন্যস্ত হয়। যৌবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সৌখিন ও ভোগবিলাসী, কিন্তু পরিণত বয়সে সব বিষয়-সম্পত্তি বিলিবণ্টন করে দরবেশ জীবন যাপন করেন।


 তাঁরই উদ্যোগে সুনামগঞ্জ হাসন এম ই স্কুল, অনেক ধর্ম-প্রতিষ্ঠান ও  আখড়া স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়ের অনেক মেধাবী ছাত্রের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও তিনি করতেন।


প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও হাসন রাজা ছিলেন একজন স্বশিক্ষিত ব্যক্তি। তিনি সহজ-সরল সুরে আঞ্চলিক ভাষায় প্রায় এক হাজার আধ্যাত্মিক গান রচনা করে সুর দিয়ে নিজ আখড়ায় পরবেশন করতেন। 


স্থানীয় বাউল-ফকিরেরা পর্যায়ক্রমে  সেসব গান গেয়ে হাসন রাজাকে আরও বেশি  পরিচিত করে তোলে। হাসন রাজা ছিলেন একজন ঐশীপ্রেমী এবং সেই প্রেমে মাতোয়ারা হয়েই তিনি সকল  গান রচনা কতেন।


 তাঁর গানে প্রেম ও বৈরাগ্যময় আধ্যাত্মিক চেতনার প্রকাশ ঘটেছে। তাঁর গানগুলি যেন হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের একটি মিলন ক্ষেত্র। তাই সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষজন তার গানের প্রতি গভীর আগ্রহী। 


তিনি গানের ভণিতায় নিজেকে ‘পাগলা হাসন রাজা’, ‘উদাসী’, ‘দেওয়ানা’,  ‘বাউলা’ ইত্যাদি বলে অভিহিত করেছেন। এক সময়ে তিনি কৈশোর ও যৌবনে শ্রীকৃষ্ণের নানাবিধ লীলায় অভিনয়ও করেছেন।


হাসন রাজার মুখ্য পরিচয় একজন মরমি কবি হিসেবে। তাঁর সম্পর্কে  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একবার ভারতীয় দর্শন কংগ্রেসের অধিবেশনে সভাপতির ভাষণে বলেছিলেন: ‘পূর্ববঙ্গের একজন গ্রাম্য কবির গানে দর্শনের একটি বড় তত্ত্ব পাই সেটি এই যে, ব্যক্তিস্বরূপের সহিত সম্বন্ধসূত্রেই বিশ্ব সত্য।


বর্তমানে হাসন রাজার যাবতীয় গানের সংগ্রহ গুলো  হাছন উদাস (১৯০৭), শৌখিন বাহার, হাছন বাহার ইত্যাদি গ্রন্থে তাঁর গানগুলি পর্যায়ক্রমে  সংকলিত হয়েছে।


 ১৯২২ সালের ৬ই ডিসেম্বর মরমী কবি গীতিকার ও সুরকার হাসন রাজা ইহকাল ত্যাগ করে পরপারে চলে যান। 


এই মহান মানুষটিকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

(Alim Al Rashid)

শুভ জন্মদিন নীনা হামিদ জন্মঃ ২৬ ডিসেম্বর ১৯৪৯

 আমার সোনার ময়না পাখি কোন দেশেতে গেলা উইড়া রে দিয়া মোরে ফাঁকি রে আমার সোনার ময়না পাখী...অসাধারণ এই গানটি গেয়েছেন পল্লীগীতি সম্রাজ্ঞী শিল্পী নীনা হামিদ। নীনা হামিদের কণ্ঠে আমার খুব ছোটবেলায় শোনা এই গান। নীনা হামিদের সেই দরদী কণ্ঠ ভুলবার নয়। নীনা হামিদের অসাধারণ গায়কী যারা শুনেছেন তারা আজীবন মনে রাখবেন এই শিল্পীকে। গানটির কথা ও সুরঃ মোহাম্মদ ওসমান খান। এই গানটি খুব জনপ্রিয় বাংলা ছায়াছবি ’মনপুরা’ ছবিতে গেয়েছেন অর্ণব। ওয়াসিম ও অঞ্জু অভিনীত রাজকুমারী ছবিতে গেয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন।

শুভ জন্মদিন

নীনা হামিদ

জন্মঃ ২৬ ডিসেম্বর ১৯৪৯

----------------------------------------------------

নীনা হামিদের জন্ম শিক্ষিত, সাংস্কৃতিক ও প্রগতিশীল সম্‌ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। তার বাবা আবু মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ খান ছিলেন পুলিশ অফিসার। মা সফুরুন নেছা। ভাই বোনদের মধ্যে নীনা হামিদ ছিলেন সবচেয়ে ছোট। তার পৈতৃক ভিটা ছিল মানিকগঞ্জ জেলার পারলি নওদা গ্রামে। কোনদিন যাওয়া-আসা ছিল না গ্রামের বাড়িতে। তবে তাদের পরিবার গোড়া থেকেই গান-বাজনা, কবিতা-আবৃত্তির চর্চা করতো। তার বাবার পক্ষে সাংস্কৃতিক চর্চা সম্ভব হয়নি, কেননা তিনি ছিলেন পুলিশ বিভাগে কর্মরত, কর্মজীবনে তিনি ব্যস্ত সময় কাটাতেন। তবে তাঁর ছেলেমেয়ে সংস্কৃতিমনস্ক হোক এটা তিনি সব সময় চাইতেন। ১৯৫৬ সালে নীনা হামিদ ধ্রুপদী সংগীতে বুলবুল ললিতকলা একাডেমীতে ভর্তি হন। সেইসঙ্গে তার ভাই মোজাম্মেল হোসেনও ভর্তি হন সেতারে। বোন রাহিজা খানম ঝুনু নৃত্যে এবং আরেক বোন রাশিদা চৌধুরী রুনু ভর্তি হন রবীন্দ্রসংগীত বিভাগে।

নীনা হামিদ দীর্ঘদিন যাবত দেশের বাইরে। স্বামী শিল্পী এম এ হামিদের সাথে বসবাস করছেন সুদূর আমেরিকার আটলান্টিক সিটিতে। একসময় তাঁর কণ্ঠমাধুর্যে মুগ্ধ হত শ্রোতা-দর্শক। যাঁর গান শুনে বাংলাদেশের লাখো শ্রোতা চোখের পানি ফেলতেন। জীবনে তিনি অনেক কিছুই পেয়েছেন -”গানের কোকিল” পদবি, বাংলাদেশের শ্রোতাদের ভালোবাসা। 

নীনা হামিদ খুব ছোটবেলা থেকেই গান করেন। নিখিল দেবের কাছে তার গানের হাতেখড়ি। প্রতিবছরই স্কুলে গানের প্রতিযোগিতায় তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাসন্তী গুহ তার নাম লেখাতেন। তিনি নীনা হামিদের নাম দেন ”কোকিল” তখন তিনি পল্লীগীতি ছাড়াও সব ধরনের গান গাইতেন। সুরকার আবদুল আহাদ নীনা হামিদের বড় বোন আফসারী খানমকে গান শেখাতেন। একদিন তিনি নীনা হামিদের কণ্ঠ শুনে বিস্মিত হলেন। এরপর তিনি নীনা হামিদকে উচ্চাঙ্গসংগীত শেখাতে শুরু করলেন। তারপর ওস্তাদ বিমল দাস, বারীণ মজুমদার তাঁদের কাছে গান শিখলেন। ওই বয়সে একবার সরকারি আমন্ত্রণে নীনা হামিদ পাকিস্তানের মুলতানে গেলেন। সেখানে সালামত আলী, নাজাকাত আলী, নুরজাহান, মেহেদি হাসান, সুরাইয়া সুলতানিকা, এনায়েত ভাট্টি এঁরাও গান করবেন। সেই অনুষ্ঠানে নীনা হামিদও গাইলেন। এরপর রেডিওতে খেলাঘরের অনুষ্ঠানে আবদুল আহাদ নিয়ে গেলেন। সেখানে মোটামুটি নিয়মিত ক্লাসিক্যাল গান গাইতে শুরু করেন। স্কুল ব্রডকাস্টিং প্রোগ্রামে নিলুফার ইয়াসমিন, ওমর ফারুক ও হোসনা ইয়াসমীন বানুর সঙ্গে গেয়েছেন। 

একদিন মানিকগঞ্জের ওসমান খান (গীতিকার ও সুরকার) তাদের বাড়িতে এলেন। তিনি নীনা হামিদের মেঝো বোন রাশীদা খানমকে দিয়ে এইচএমভি কোম্পানির জন্য একটা গান করাবেন। রাশীদা গাইতেন রবীন্দ্রসংগীত। প্রস্তাব শুনে রাশীদা ’না’’ করে বসলেন। তখন সুযোগটা নিলেন নীনা এবং ওই গানটা গাওয়ার আবদার করে বসলেন। ওসমান খান রাজি হলেন। এরপর সেই রেকর্ডিং। সেই গানের সঙ্গে শ্রেষ্ঠ যন্ত্রশিল্পীরা ছিলেন কানাই লাল শীল (দোতারার স্রষ্টা), বাঁশিতে ধীর আলী মিঞা, তবলায় বজলুল করিম, একতারায় যাদব আলীসহ (তিনি সুপণ্ডিত আলাউদ্দীন আলীর বাবা) আরও অনেকে বাজালেন। এরপর ’কোকিল আর ডাকিস না...’ রেকর্ডটি বের হলো। এর কিছুদিন পর এইচএমভির আখতার আব্বাস বললেন, এ রকম বাংলা গানের এলপি রেকর্ডসের এত কাটতি অনেক দিন দেখিনি। 

নীনা হামিদের রূপবান পালার কথা অনেকেই জানেন। রূপবান যাত্রাপালা রেকর্ড করা হতো, এটার স্রষ্টা ছিলেন খান আতাউর রহমান। ছোট ছোট গান ছিল এতে। ’ও দাইমা কিসের বাদ্য বাজে গো আমার দাইমা দাই মা গো...’,

’শোন তাজেল গো মন না জেনে প্রেমে মইজো না’... ’সাগর কূলের নাইয়া...’ এমন অপূর্ব শক্তিশালী গান ছিল সেগুলো। সেগুলো এত জনপ্রিয় হলো, সেখান থেকে তৈরি হলো রূপবান ছবি। রূপবান ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৬৫ সালে। এর অনেক ডিমান্ড ছিল। গ্রাম থেকে নৌকায়,গরুর গাড়িতে বোঝাই করে দলবেঁধে মানুষ যেতো শুধু রূপবান দেখতে। সেই রূপবান-এর গানের পরে একটা হিড়িক পড়ে গেল ফোক ছবি বানানো। পাতালপুরীর রাজকন্যা, জংলি মেয়ে, সুয়োরানী দুয়োরানী, গুনাই বিবি, গোলাপী এখন ট্রেনে, কুচবরণ কন্যা এমন অনেক রূপকথার গানের ছবি। এই গানগুলোর জন্যই নীনা হামিদ ও আবদুল আলিম সারা পৃথিবী ঘুরেছেন। বিদেশে ওখানকার মানুষ বাংলা ভাষা না বুঝলেও সুরেই তারা চোখ ভাসাত। এখানেই নীনা হামিদের সার্থকতা। আমাদের গানের ইতিহাস, জসীমউদ্দীনের নকশিকাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট, পল্লীগানের ইতিহাস সংরক্ষণ করা উচিত।

নীনা হামিদের বিখ্যাত গান গুলোর মধ্যে রয়েছে - আমার সোনার ময়না পাখি, ওহ কি গাড়িয়াল ভাই, আগে জানিনারে দয়াল, আইলাম আর গেলাম, আমার বন্ধু বিনোদিয়া, আমার গলার হার, আমায় কি যাদু করলি রে, এমন সুখ বসন্ত কালে, যারে যা চিঠি লিইখা দিলাম, যোগী ভিক্ষা লয় না, ওরে ও কুটুম পাখি, উজান গাঙের নাইয়া- এ রকম আরো অনেক গান।

আমাদের দেশের গ্রামগঞ্জের মানুষ পল্লীগীতি শুনতে খুব পছন্দ করেন। এখন কেমন তা জানিনা, তবে আগেকার দিনে অর্থাৎ ষাটের দশকে গ্রামগঞ্জে বিয়ে-শাদি,খতনা ইত্যাদিতে কলের গান ছিল অত্যন্ত জনপ্রিয়। কোনো অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত, জমজমাট করার জন্য কলের গান ছাড়া যেন ভাবাই যেত না। নীনা হামিদ, আব্বাসউদ্দিন, আবদুল আলীম, মুস্তফা জামান আব্বাসী, ফেরদৌসী রহমানের কণ্ঠে কলের গানের ভাওয়াইয়া, পল্লীগীতির কথায় আজও গ্রামের প্রবীণরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

১৯৫০ সালে প্রকাশিত জসীমউদ্দীনের ’পদ্মাপার’ গ্রন্থে ৪২টি গান ও একটি গীতিনাট্য স্থান পেয়েছে। এ বইয়ের গানগুলোয়ও পল্লীর সাধারণ মানুষের জীবনযাপন তাদের হাসি-কান্না, প্রেম-বিরহ, ঘরকন্না, আধ্যাত্মিক চেতনা ইত্যাদি নিপুণভাবে প্রকাশিত হয়েছে। বেদে-জীবনের নিখুঁত চিত্র পাই এই গানটিতে - ও বাবু সেলাম বারেবার, আমার নাম গয়া বাইদ্যা বাবু, বাড়ি পদ্মাপার। মোরা পঙ্খি মারি পঙ্খি ধরি মোরা পঙ্খি বেইচা খাই, মোদের সুখের সীমা নাই, পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের লেখা এই গানটি সুর করেছেন আলতাফ মাহমুদ। বেদের মেয়ে ছবিতে এই গানটি গেয়েছেন আবদুল আলীম ও নীনা হামিদ। গানটি রেকর্ড করা হয় ১৯৬৮ সালে। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৬৯ সালে। নীনা হামিদ বেশ কিছু ছায়াছবির গানেও কণ্ঠ দিয়েছেন।

নীনা হামিদের আরেকটি বিখ্যাত গান - ওহ কি গারিয়াল ভাই কত রব আমি পন্থের দিকে চাইয়া রে...অসাধারণ গেয়েছেন। নীনা হামিদের মত এমন শিল্পী আর হবে না। তখনকার দিনের আব্বাসউদ্দিন, আবদুল আলীম, নীনা হামিদ, ফেরদৌসী রহমান, আঞ্জুমান আরা, বশির আহমেদ, নিলুফার ইয়াসমিন, শাহনাজ রহমত উল্লাহ, মাহমুদুন্নবী, আব্দুল জব্বার, আপেল মাহমুদ, রুনা লায়লা এবং সাবিনা ইয়াসমিন সহ আরো অনেকেই আমাদের সংগীতের পিপাসা মিটিয়েছেন নিঃশব্দে, যার জন্য আমরা আরো বেশী সংগীত পিপাসু হয়েছি। আমার মতে সেই সময়টা বাংলা গানের স্বর্ণযুগ ছিল। সে সময়ে গানের যেমন ছিল সুর তেমনি ছিল গানের কথা।

নীনা হামিদ দেশ ছেড়ে যাবার অনেক পরে তাকে দেয়া হয়েছে একুশে পদক। ১৯৯৪ সালে একুশে পদক পেলেন পল্লীগীতি সম্রাজ্ঞী শিল্পী নীনা হামিদ। তার পক্ষে তার ছোট ভাই সেই পদক গ্রহণ করেছিলেন।

শিল্পী  নীনা হামিদ দীর্ঘদিন ধরে সপরিবারে বাস করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে। 

রওশন আরা বিউটি

সঙ্গীত গবেষক ও প্রাবন্ধিক


✍️মানিক বিশ্বাস ✍️

মির্জ গালিব ৷

 মির্জ গালিব ৷

মোগল সাম্রাজ্য অস্ত যাওয়ার কালে ছিল উর্দু কাব্যের সবচেয়ে অহঙ্কারের যুগ। এর কারণ বোধ হয় এই যে, উর্দু কাব্য বাইরের প্রকৃতির চাইতে মানুষের মনোজগতের প্রকৃতির দিকেই বেশি মনোযোগী। আর দীর্ঘ দিনের শাসনের, সংস্কৃতির অধিকার থেকে সরে যাওয়ার এমন দুর্যোগ ভারতবর্ষের বুকে কমই নেমেছে।  মির্জা গালিব সেই বেদনার শ্রেষ্ঠ রূপকার। একজন মান্য কাব্য আলোচকের মতে—ভারতবর্ষে দু’টো মাত্র প্রেরিত পুস্তক আছে, একটি পবিত্র বেদ আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে গালিবের কাব্য সংকলন। ১৭৯৭ সালে আগ্রায় জন্ম নিয়ে ছিলেন মির্জা আসাদুল্লাহ খান। কবি নাম ‘গালিব’, যার অর্থ বিজয়ী।  কৈশোরের পর জীবনের বাকি অংশ কাটিয়েছেন দিল্লিতে। ভারতবর্ষের প্রথম আধুনিক মানুষদের মধ্যে অন্যতম তিনি।  বলা হয়—কাব্য যদি ধর্ম হয়, তবে গালিবকে না বোঝা মানে কাফের হওয়া! গালিব দৃশ্যকল্পের কবি। মাত্র ২৩৪টি গীতিকবিতা আছে তাঁর চলতি কাব্য সঙ্কলনে।  তাতেই তিনি উর্দু কাব্যের অধীশ্বর।]

শ্রদ্ধার্ঘ্য | ঋত্বিক ঘটকের জীবন সম্পর্কে জানতে অবশ্যই পড়ুন তাঁর স্ত্রী সুরমা ঘটকের লেখা বই ঋত্বিক । এই বই সংগ্রহে রাখার মত বই ।

 "সাদা রংয়ের একটা এ্যাম্বাসেডরের পিছের সিটে হেলান দিয়ে বসে আছেন সুচিত্রা। তীব্র দাবদাহ, পুরো কলকাতা পুড়ছে। এ্যাম্বাসেডর পার্ক স্ট্রিটে ঢুকে একটু আগাতেই ফুটপাতে একজনকে দেখে সোজা হয়ে সিটে বসলেন সুচিত্রা। 


ড্রাইভারকে গাড়ি সাইড করতে বলে নিজেই নেমে এগিয়ে গেলেন সেই মানুষটার দিকে। এই কাঠফাটা গরমে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করছেন স্বয়ং ঋত্বিক ঘটক। 


হাত জোর করে প্রণাম করতে করতে সুচিত্রা বললেন

– আমাকে চিনতে পারছেন ঋত্বিক দা? আমি সুচিত্রা, গত বছর শান্তিনিকেতনে দেখা হলো।

চশমার উপর দিকে তাকিয়ে ভালো করে মুখটা দেখলেন ঋত্বিক, তারপরে বললেনঃ

– ও হ্যা। তুমি সুচিত্রা রায় তো? টালিগঞ্জ বাড়ি। অন্নদাশঙ্কর রায় তোমার কী রকম জ্যাঠা হন না? ঠিক বলেছি তো?


সুচিত্রা আপ্লুত হলেন। কি সৌভাগ্য! এত বড় মানুষটা সব মনে রেখেছে। সুচিত্রা কলকাতার শিল্পপ্রেমী বনেদি পরিবারের মেয়ে, জন্মের পর থেকেই কলকাতার সব মহিরুহদের সামনে দেখে বড় হয়েছেন; ইদানিং প্রায়ই বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকায় চলচ্চিত্র বিষয়ে প্রবন্ধনিবন্ধ লেখেন। ঋত্বিক ঘটক এর মূল্য সে বোঝে। ঋত্বিক ঘটক কে মনে মনে গুরু মানে সুচিত্রা। 

ঋত্বিকদার পরনে ধুলিমলিন পাজামা-পাঞ্জাবি। চোখে কালো ফ্রেমের চশমা। এক মাথা এলোমেলো চুল। মুখে খোঁচা খোঁচা। সে মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম।এই জবুথবু অবস্থাতেও ঋত্বিকের চোখের আগুন একফোটা কমে নি, ঋত্বিক ঘটক মানেই এক আগুনের নাম। মেঘে ঢাকা তারা, কোমল গান্ধার, সুবর্ণরেখা-এসব ছবিগুলোয় যে আগুনের ছাপ স্পষ্ট।


সুচিত্রা খেয়াল করলেন ঋত্বিকের পিছনে একটা ব্যানারে বড় করে লেখা “বাংলা দেশের শরণার্থীদের জন্য দান করুন।”। ব্যানারের পাশেই একটা বড় বাক্স, সেখানে রাস্তার মানুষ টাকা ফেলে যাচ্ছে। 


বাক্সের পাশেই লম্বা একটি টুল। তার ওপর গিটার হাতে এক বিদেশি তরুণ বসে আছে। গায়ের রং তামাটে, হিপিদের মতো লম্বাচুল, চোখে সানগ্লাস আর মুখ ভর্তি লালচে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। পরনে ঢোলা বেলবটম প্যান্ট আর রঙ্গিন হাওয়াই শার্ট। মাথায় একটি সাদা রঙের সোলার হ্যাট। 

গিটার আর মাউথ অর্গান বাজিয়ে নাকি গলায় তরুণটি গাইছে:

Come senators, congressmen

Please heed the call

Don’t stand in the doorway

Don’t block up the hall


গানটা সুচিত্রার পরিচিত, কিংবদন্তি গায়ক বব ডিলানের গান। ঋত্বিক তরুণকে দেখিয়ে বললেন, ও হল স্টিভ টার্নার। গায়ক ও সাংবাদিক। সপ্তাহ খানেক হল আমেরিকা থেকে এসেছে। স্টিভ-এর সঙ্গে কবি অ্যালান গিনসবার্গও কলকাতা এসেছেন।


স্টিভকে হ্যালো বলে কৌতুহলী সুচিত্রা জানতে চাইলেন গিনসবার্গ কোথায়। ঋত্বিক বললেন,অ্যালান আজ সকালে শক্তির সঙ্গে বারাসাত শরনার্থী শিবিরে গিয়েছে।


– শক্তি? মানে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়?

– হ্যা। গতকাল অবধি টাকাপয়সা যা জমেছিল তা দিয়ে ওরা ওষুধ আর খাবার কিনে নিয়ে গেল ।

ঋত্বিক সুচিত্রাকে বললেন ‘এলেই যখন, দুটো টাকা দিয়ে যাও’, বলে ঋত্বিক হাত বাড়ালেন। লজ্জায় মাথা নিচু করে সুচিত্রা বললেন ‘ছিঃ দাদা। এমন করে বলছেন কেন? আমি কি দূরের কেউ?’। বলেই কড়কড়া কয়েকটা ১০০টাকার নোট দিলেন ঋত্বিকের হাতে। হঠাৎ করে ঋত্বিক সুচিত্রাকে প্রশ্ন করলেনঃ

– সুচিত্রা তুমি একসঙ্গে কত লাশ দেখেছ? ১০০? ২০০? ৩০০? ৪০০? ৫০০? ৬০০? ৭০০? ৮০০? ৯০০?

এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই অদ্ভুত এক ঘোরলাগা নিয়ে সুচিত্রা আবার এ্যাম্বাসেডরে চড়ে বসলেন। 


যে ভূখন্ডের অসহায় মানুষের জন্য এই পাগলাটে মানুষটা  তীব্র তাপদাহে পুড়েছেন, কেঁদেছেন,চিৎকার করেছেন সেই ভূখন্ডে তো ঋত্বিকদা আর কখনোই ফিরে যাবেন না জেনেও। ঋত্বিকদারা পরিবারসহ ’৪৭ সালেই এ পাড়ে চলে এসেছেন । 


তবুও … এত বড় ফিল্ম ডিরেক্টর, ভাবলে আশ্চর্য হতে হয়, যে ঋত্বিক ঘটককে জগদ্বিখ্যাত চলচ্চিত্রকারদের সঙ্গে তুলনা করা হয় সে মানুষটি কেমন নাওয়াখাওয়া ভুলে জ্বলন্ত ফুটপাতে দাঁড়িয়ে তৎকালীন পূর্ব বাংলার শরণার্থীদের জন্য ভিক্ষে করছেন।


তাঁর সৃষ্টি এখনও বাঙালিকে ভাবা প্র্যাকটিস করে। ক্রমাগত বলেই চলেছেন, “ভাবো, ভাবো, ভাবা প্র্যাকটিস করো।”


শ্রদ্ধার্ঘ্য |


ঋত্বিক ঘটকের জীবন সম্পর্কে জানতে অবশ্যই পড়ুন তাঁর স্ত্রী সুরমা ঘটকের লেখা বই ঋত্বিক । এই বই সংগ্রহে রাখার মত বই ।

সৌন্দর্যের দেবী ক্লিওপেট্রাআত্মহনন করেন, একটি বিষাক্ত সাপ তুলে নিয়েছিলেন হাতে, আর সেই মুহূর্তে সাপ ছোবল মারে তাঁর বুকে।

 সৌন্দর্যের দেবী ক্লিওপেট্রাআত্মহনন করেন, একটি বিষাক্ত সাপ তুলে নিয়েছিলেন হাতে, আর সেই মুহূর্তে সাপ ছোবল মারে তাঁর বুকে। ক্লিওপেট্রা ....মিশ...