এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫

খুফুর পিরামিডের ছায়ায় দাঁড়িয়ে থাকলে মানুষ প্রথমে আকাশের দিকে তাকায়—যেন বোঝার চেষ্টা করে কতটা উঁচুতে পৌঁছেছে মানুষের নির্মাণশিল্প। কিন্তু আমি সেদিন আকাশ নয়, বরং মাটির দিকে তাকিয়েছিলাম। কারণ জানতাম, নিচেই লুকিয়ে আছে এমন কিছু, যা পিরামিডের মতো দৃশ্যমান নয়, তবু ইতিহাসের আরেকটি নিঃশব্দ বিস্ময়—খুফুর সৌর নৌকা।

 খুফুর পিরামিডের ছায়ায় দাঁড়িয়ে থাকলে মানুষ প্রথমে আকাশের দিকে তাকায়—যেন বোঝার চেষ্টা করে কতটা উঁচুতে পৌঁছেছে মানুষের নির্মাণশিল্প। কিন্তু আমি সেদিন আকাশ নয়, বরং মাটির দিকে তাকিয়েছিলাম। কারণ জানতাম, নিচেই লুকিয়ে আছে এমন কিছু, যা পিরামিডের মতো দৃশ্যমান নয়, তবু ইতিহাসের আরেকটি নিঃশব্দ বিস্ময়—খুফুর সৌর নৌকা।


একসময় এই নৌকাটি রাখা ছিল গিজার পিরামিডের পাশেই তৈরি করা একটি কাচঘেরা গ্যালারিতে। অনেকেই হয়তো গিজা ঘুরে সেই গ্যালারির কথা মনে করতে পারবেন, যেখানে নৌকাটি দাঁড়িয়ে ছিল ১৯৮০ সাল থেকে ২০২১ পর্যন্ত। তবে এখন সেই জাদুঘর আর নেই। ২০২১ সালে অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও প্রযুক্তিনির্ভর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই প্রাচীন নৌকাটিকে স্থানান্তর করা হয়েছে কায়রোর গিজা প্ল্যাটোর কাছেই নতুন করে নির্মিত গ্র্যান্ড ইজিপ্টশিয়ান মিউজিয়ামে (GEM)। এখন সেখানে আরও উন্নত পরিবেশে, বিজ্ঞানভিত্তিক সংরক্ষণের আওতায় সৌর নৌকাটি জুলাই মাস থেকে দেখানো হবে, যেখানে নানান মাল্টিমিডিয়া ও ব্যাখ্যা সংযুক্ত থাকবে দর্শনার্থীদের বোঝার সুবিধার্থে।


খুফুর এই সৌর নৌকাটি প্রায় ৪৪.৬ মিটার দীর্ঘ, আর কাঠামোটি সম্পূর্ণভাবে তৈরি করা হয়েছিল লেবানন থেকে আমদানি করা সিডার কাঠ দিয়ে। কোনো লোহার পেরেক বা আধুনিক যন্ত্রাংশ ছাড়া, কেবলমাত্র দড়ি ও কাঠের জোড়ায় গেঁথে বানানো হয়েছিল এটি। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, এটি ছিল ‘বার্ক অফ রা’—অর্থাৎ সূর্যদেবতার নৌকা, যাতে চড়ে রাজা খুফু মৃত্যুর পর আকাশে দেবতার সফরসঙ্গী হতেন। কেউ কেউ বলেন এটি কেবল প্রতীকী নয়, বাস্তব ব্যবহারের উপযোগী একটি নৌকাও ছিল—খোদ রাজা হয়তো কোনোদিন এ নৌকায় চড়েছিলেনও।


খুফুর সৌর নৌকার পিট ছিল পাঁচটি। তার মধ্যে একটিতে পাওয়া গিয়েছিল আস্ত নৌকাটি, যা জুলাই থেকে GEM-এ প্রদর্শিত হবে। কিন্তু অন্য আরেকটি পিট রয়েছে পিরামিডের দক্ষিণ পাশে, যেটি অনেকাংশে অবহেলিত, অথচ সমান গুরুত্বপূর্ণ। এটি পরিচিত ‘রাণির পিট’ নামে—অনুমান করা হয়, হয়তো খুফুর স্ত্রীদের কারো জন্য এটি প্রস্তুত করা হয়েছিল। যদিও এখান থেকে এখনো কোনো নৌকা তোলা হয়নি, কিন্তু ২০১১ সাল নাগাদ জাপানি ও মিশরীয় বিশেষজ্ঞরা এই পিট থেকে কাঠের কিছু অংশ বের করেছিলেন—যেগুলোর বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, এর মধ্যেও একটি পূর্ণাঙ্গ নৌকার কাঠামো রয়েছে, যা এখনো বালির নিচে সংরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।


এই নৌকাটিকে “The Second Solar Boat” হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। তবে এখনো পর্যন্ত তা সম্পূর্ণভাবে পুনর্গঠন করা হয়নি, এবং সংরক্ষণ প্রক্রিয়া চলমান। ভবিষ্যতে হয়তো এই নৌকাটিও GEM-এ স্থান পাবে, এবং তখন দর্শনার্থীরা একসাথে দেখতে পাবেন খুফুর দুইটি সৌর নৌকার কিংবদন্তি।


যখন আমি গিজার বালির মধ্যে দাঁড়িয়ে সেই পুরনো গ্যালারির জায়গাটির দিকে তাকালাম, তখন তার জায়গায় শুধুই শূন্যতা। কাচের দেয়াল নেই, ভিতরের বিশাল কাঠের নৌকাটিও নেই। কিন্তু জানতাম, সেটা এখন নতুন এক গন্তব্যে—এক নতুন জাদুঘরে, যেখানে সময়কে আরও নিখুঁতভাবে ধরে রাখা যাবে। আর বালির নিচে পড়ে থাকা সেই ‘রাণির পিট’ যেন আমাকে বলছিল, “সব কিছু একদিন আলোতে আসবেই।”


খুফুর পিরামিড শুধু রাজকীয় কবর নয়, তার পাশের প্রতিটি গর্ত—নৌকার পিট, এক একটি মিসরের আধ্যাত্মিক জাহাজঘর। আর সেই জাহাজে চড়ে, মৃত্যু নয়, বরং অমরতার দিকে যাত্রা করে প্রতিটি আত্মা—এই বিশ্বাসই ছিল নীলনদের পবিত্র সভ্যতার মজ্জায়।


১ম ছবিটি রাণির পিট

২য় ছবিটি খুফুর সৌর নৌকার পিট 

২য় ছবির ডান পাশে একটি ভবন দেখা যাচ্ছে। 

❓ ভবনটি কার ছিল?


- এস এম নিয়াজ মওলা

কোন মন্তব্য নেই:

সৌন্দর্যের দেবী ক্লিওপেট্রাআত্মহনন করেন, একটি বিষাক্ত সাপ তুলে নিয়েছিলেন হাতে, আর সেই মুহূর্তে সাপ ছোবল মারে তাঁর বুকে।

 সৌন্দর্যের দেবী ক্লিওপেট্রাআত্মহনন করেন, একটি বিষাক্ত সাপ তুলে নিয়েছিলেন হাতে, আর সেই মুহূর্তে সাপ ছোবল মারে তাঁর বুকে। ক্লিওপেট্রা ....মিশ...